নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একা আমি

ধূসর সন্ধ্যা

ধূসর সন্ধ্যা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বিতীয় রিপাবলিক কেন প্রয়োজন হয়?

০২ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:২৮

রিপাবলিক কি?
রিপাবলিক হচ্ছে জনতন্ত্র। জনগণের আশা আকাংখা মত দেশ পরিচালনার নীতিমালা। রিপাবলিক নিশ্চিত করে রাষ্ট্রের কাছে জনতার অধিকার, আর রাষ্ট্রের প্রতি জনতার দায়বদ্ধতা। নাগরিকদের সকল প্রকার অধিকার নিশ্চিত করা রিপাবলিকের দায়িত্ব।

দ্বিতীয় রিপাবলিক কেন প্রয়োজন?
একটি দেশের প্রথম রিপাবলিক যখন ফাংশনাল হয় না, অথবা কোলাপ্স করে, তখনি প্রয়োজন পরে দ্বিতীয় রিপাবলিকের।
বেশ কয়েকটি কারণে দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রয়োজন হতে পারে।
যেমন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বৈরশাসন, অর্থনৈতিক মন্দা, বিপ্লবের পরে, যুদ্ধের পরে...

বাংলাদেশে কেন দ্বিতীয় রিপাবলিক প্রয়োজন?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রথম রিপাবলিক শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীন দেশে। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধানের প্রয়োজন পড়ে, রচিত হয় প্রথম রিপাবলিকের সংবিধান।
এরপরে দশ বছর বাংলাদেশ পার করেছে একনায়কতন্ত্র, বিপ্লব, প্রতিবিপ্লব অস্থির এক সময়।
তারপরে একদশক ছিল এরশাদের স্বৈরশাসন।
২০ বছর পরে স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্ত। মূলত তখনি প্রয়োজন ছিল দ্বিতীয় রিপাবলিকের। কিন্তু সেটা তখন না করে আগের রিপাবলিকের নীতিতেই দেশ পরিচালিত হয়েছে আরো ২০ বছর।
সর্বশেষ বিগত সরকার ১৬ বছর বিতর্কিত পদ্ধতিতে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছিল। এই সুযোগ পেয়েছে মূলত ঐ ৩৬ বছর আগে দ্বিতীয় রিপাবলিক ঘোষণা না করার ফলশ্রুতিতে।
দেরীতে হলেও এখন দ্বিতীয় রিপাবলিকের দাবি শুধুই দাবি নয়, বরং এটি একান্ত প্রয়োজন।
দ্বিতীয় রিপাবলিক মূলত প্রয়োজন হয় প্রথম রিপাবলিকের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে এর সাথে নতুন নীতি যুক্ত করে সম্পূর্ণ নতুন একটি রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণ ও নীতিমালা গ্রহণের জন্য।

নতুন রিপাবলিক কি কি পরিবর্তন হতে পারে?
সবথেকে বড় পরিবর্তন হয় সংবিধানে। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক সময়ের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সংবিধান নতুন করে লিখার বিকল্প নেই। সংবিধান সংশোধন মূলত জোড়াতালি প্রক্রিয়া। যখন আর জোড়াতালি দেয়ার অবস্থা থাকে না, বা সংবিধানের অপব্যবহার শুরু হয়, প্রয়োজন পড়ে নতুন সংবিধানের।
একটি রাষ্ট্রের সংবিধান কোন ধর্মীয় পবিত্র গ্রন্থ নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না। জনগণের চাহিদা ও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এর পরিবর্তন আনতেই হবে।
দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রয়োজন ভঙ্গুর রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত করতে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামো নতুন করে সাজাতে। আইনের শাসন কায়েম করতে, মানুষের নতুন মৌলিক অধিকার যুক্ত করতে এবং তার বাস্তবায়ন করতে। জনতন্ত্রকে স্বৈরশাসনের থাবা থেকে মুক্ত রাখতে। রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া অন্য, অবিচার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অপকর্মকে বিনাশ করতে।

রাজনীতিতে দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রভাব কি?
দ্বিতীয় রিপাবলিক একেক রাজনৈতিক দলের জন্য একেক রকমের প্রভাব ফেলবে।
যেমন অন্যতম পুরোনো দল বিএনপি তাদের কর্মপদ্ধতি ঢেলে সাজাতে বাধ্য হবে দ্বিতীয় রিপাবলিকের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হলে। তাদের ভাবতে হবে দলের আয়ের উৎস নিয়ে, দল পরিচালনায় আগের চাঁদা পদ্ধতির বিকল্প খুঁজতে হবে। স্বজনপ্রীতি ছাড়তে হবে। নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে।
জামায়াত ইসলামী বেশ লাভবান হবে দ্বিতীয় রিপাবলিক হলে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করার কলঙ্ক থেকে মুক্তি মিলবে তাদের। দ্বিতীয় রিপাবলিক হবে স্বাধীন দেশের পক্ষে তাদের নতুন রিপাবলিকে পদার্পণ।
আওয়ামীলীগ কোনদিন রাজনীতিতে ফিরতে গেলে তাদের জন্য দ্বিতীয় রিপাবলিক হবে চ্যালেঞ্জিং। দ্বিতীয় রিপাবলিক থেকে তৃতীয় রিপাবলিকে যাওয়া সম্ভব, কিন্তু কোনোদিন আর প্রথম রিপাবলিকে ফিরে যাওয়া সম্ভব না। দ্বিতীয় রিপাবলিকের ভিত্তি হবে তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে, সুতরাং তাদের ফিরে আসতে হলে প্রথম রিপাবলিক কোলাপসের দায় মাথায় নিয়েই আসতে হবে।
এনসিপি বা ছাত্রদের নতুন দলের ফায়দা সবথেকে বেশি। যেহেতু দ্বিতীয় রিপাবলিক তাদের দাবি, তাই যতদিন এই রিপাবলিক চলবে, এর কৃতিত্ব তারা পাবে। বিপ্লবের ফলে প্রথম রিপাবলিক পতনের ক্রিমিনাল পক্ষ হবে আওয়ামীলীগ।
এবং যেহেতু প্রথম রিপাবলিকের পতন ঘটবে, সেহেতু এই বিপ্লব অস্বীকার করার কোন সুযোগ থাকবে না আওয়ামীলীগের। ভবিষ্যতে তারা ফিরে এলেও বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারবে না। এটি করতে গেলে তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চলে যাবে এবং রাষ্ট্রদ্রোহী বিবেচিত হবে।
সাধারণ মানুষেরও ফায়দা আছে দ্বিতীয় রিপাবলিক থেকে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ পাবে নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ, যেখানে আগের প্রতিহিংসার স্থান থাকবে না। রাজনৈতিক আক্রমণ থাকবে, কিন্তু তা শিষ্টাচার বহির্ভূত হবে না।
ঘুষ, দুর্নীতি, অবিচার, অনিয়ম থেকে মুক্তি মিলবে যদি দ্বিতীয় রিপাবলিক ফাংশন করে। মিলবে অর্থনৈতিক মুক্তি।
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, প্রথম রিপাবলিকেই কেন সম্ভব নয় ঘুষ, দুর্নীতি , অনিয়ম থেকে মুক্তি?
সম্ভব নয় কারণ এসব সিস্টেমে এমনভাবে ঢুকে গেছে যে এসবই এখন সিস্টেম হয়ে গেছে। দ্বিতীয় রিপাবলিক এই সিস্টেমকেই উপড়ে ফেলবে। নতুন সিস্টেম স্থাপন করবে, যেখানে এসবের কোন স্থান থাকবে না।

তাহলে দ্বিতীয় রিপাবলিক মানেই কি মুক্তি?
না, ব্যাপারটা এমন না। দ্বিতীয় রিপাবলিক এখন শুরু হলে কয়েক বছর লেগে যাবে সর্বক্ষেত্রে প্রথম রিপাবলিকে প্রতিস্থাপন করতে। তারপরে সময়ের সাথে এই রিপাবলিককে ফাংশনাল হতে হবে। এই রিপাবলিক ফাংশন করতে না পারলে ডাক আসবে তৃতীয় রিপাবলিকের। যেমন ফ্রান্সে এখন পঞ্চম রিপাবলিক চলছে। একটি রিপাবলিক আজীবন ফাংশনাল হতে পারে না, একসময় নতুন রিপাবলিকে স্থানান্তর হতেই হয়।



মূল লেখক - হাফিজুর রহমান

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪০

ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:



মগজে জংগীবাদ ঢুকলে ৪ স্ত্রী, সাথে ২য়, ৩য়, ৪র্থ রিপাবলিকের দরকার হয়।

২| ০২ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪১

ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:



২য় রিপাবলিকের সংবিধান হবে কোরান, বেদ, বাইবেল ও ত্রিপিটক।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪২

ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:



রাজৈিতি ২য় রিপাবলিকে প্রভাব হবে, "রগ কাটো"।

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২৫

কু-ক-রা বলেছেন: উহা (ধুলোপরা চিঠি) ওরফে পাঁদগাজী প্রচুর পরিমানে পাঁদড়ামি আরম্ভ করিয়াছে। উহাকে গ্যাসট্রিকের ট্যাবলেট খাওয়াইতে হইবে। অন্যথায় উহা ব্লগে অতিরিক্ত বায়ুদুষন করিতেই থাকিবে।

৫| ০৩ রা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:১১

রাজীব নুর বলেছেন: বেশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.