নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তোমাদেরই

আশমএরশাদ

শিশিরের শব্দের মত

আশমএরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তত্বাবধায়ক সরকার এবং রায়পরবর্তী আইনি বাস্তবতা

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডটির মালিক --এ দেশের আপামর জনগণ-- বাংলাদেশের এই প্রজাতান্ত্রিক ধারণাটা নিয়ে নিশ্চয় বৃহত্তর বাংলাদেশীদের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। বাংলাদেশের এই বেসিক স্ট্রাকচার নিশ্চয় কোন সংশোধী দ্বারা স্বল্প সময়ের জন্যও রহিত করা বাঞ্চনীয় নয়। মালিকানার কথা যখন এসেই যায় তাহলে বলতে হয়- মালিকানা জিনিসটা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও হাত বদল হতে দেওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের জনগনের এই মালিকানা দাবীটি প্রতিষ্ঠিত করা হয় নির্বাচিত একটি সংসদ দ্বারা এবং এই সংসদই হলো সার্বিক ভাবে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। মালিকানার নিশ্চয় কন্টিনিউটি থাকা চাই। মানে জবাবদিহীতা তথা নির্বাহী প্রধানের ক্ষমতার কন্টিউনিটি। একটা নির্বাচিত সংসদ আরেকটি নির্বাচিত সাংসদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেই মালিকানার কন্টিউনিটি রক্ষা হয়। মাঝ খানে কোন অনির্বাচিত উপদেষ্টা অথবা সামরিক সরকার অথবা ফখরুদ্দিন মইনুদ্দিন এসে গেলে -আইনগত এই মালিকানার দিকটি বিগ্নিত হয়। কিছু সময়ের জন্য এই মালিকানা না থাকুক এটা নিশ্চয় কারো কাম্য নয়। জনগণের দ্বারা নির্বাচিতদের মাধ্যমে শাসন কার্য পরিচালনার বিধান সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচারে বলা থাকলেও ত্রয়োদশ সংশোধনিতে সেটির বিচ্যুতি ঘটে এবং সেই বিচ্যুতির প্রত্যক্ষ ফল হলো উদ্দিনীয় অসংবিধানিক 2 বছরের শাসনামল ।



সংবিধানের 61 ও 58 খ (3) অনুসারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে একটি dichotomy of power struggle বা দুই সাংবিধানিক পদাধিকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মধ্যে পরস্পর বিরোধী একটি ক্ষমতার দ্বন্দ সৃষ্টি করিয়াছে কারণ একদিকে প্রধান উপদেষ্টা 58 খ (3) অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি সংসদ ও মন্ত্রী সভার অনুপস্থিতিতে 61 অনুচ্ছেদের অধীনে নিজেই সামরিক বাহিনীর প্রধান হইবেন।



তাছাড়া 48(3) 141 ক(1) এবং 141 গ (1) অনুচ্ছেদ এর অধীনে কোন পদক্ষেপ লইতে হইলে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও তাহার প্রতিস্বাক্ষর গ্রহণ করিবার বিধান রহিয়াছে কিন্তু 58ঙ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি নিজের বিবেচনা অনুসারে উপরোক্ত অনুচ্ছেদে ব্যক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন। ফলশ্রুতিতে তিনি মুল সংবিধানের খেতাবী রাষ্ট্রপতি হইতে প্রকৃত পক্ষে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হইবেন।



উপরোক্ত আলোচনাটা করা হলো ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় থেকে। আজকে হঠাৎ করে আমি সুপ্রিম কোর্টের উয়েভ সাইটে-http://www.supremecourt.gov.bd/scweb/judgments.php?div_id=1 ঢুকি এবং কৌতুহল বশত বিচারপতি খায়রুল হকের রায়টিতে চোখ বুলাতে চেষ্টা করি। কৌতুহলে অন্যতম কারণ হলো রায়টি তিনি যথাসম্ভব বাংলাতে লিখেছেন । যে কেউ এই রায়টি পড়লে বুঝতে পারবেন যে তিনি একটি শ্রমসাধ্য কাজ করেছেন এবং অনেক বই পত্র নজির ঘাটাঘাটি করেছেন। হালকার উপর তিনি রায়টি লিখেননি বলেই মনে হলো।



এখন কথা হলো যেহেতু উভয় দলের মধ্যে মুলত আস্থার সংকট প্রকট তাই এখানে একটা উইং উইং সিটিউশন তৈরী করা বেশ জটিল ।

একটা স্ট্যাটাসে আগে লিখেছিলাম -বাংলাদেশে কখনোই লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী হয়নি। তত্বাবধায়ক যেদিন শপথ গ্রহণ করে সে দিন মাঠে থাকে বিরোধী দল। আর সরকারী দল হয়ে যায় বাপ -মা মরা এতিম। রাস্তায় চামচিকায় ও লাথি দেবার চায়। শপথের দিন থেকেই নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত বিরোধীদলই মাঠ কাঁপায় এবং অঘোষিত ভাবে বিরোধী সিন্ডিকেটই নির্বাচনে জিতে আসে এবং আসবে।

তাহলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী করা যায় কিভাবে। একটা দল সরকারে থাকলে বিরোধীদলের জন্য মাঠ উপযুক্ত নয় আবার তত্ববধায়ক এলে সরকারী দলের জন্য মাঠ বেশ কর্দমাক্ত হয়।

নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্টান -- মুলত নির্বাচন করার দায়িত্ব তাদেরই। কিন্তু আমরা সে দিকে দৃষ্টিপাত করি কম। নির্বাচন কালীন সরকার কেমন হবে সেটাই মুখ্য হয়ে যাচ্ছে বাস্তবতার আলোকে।

কিন্তু পরিত্রাণের পথ কি? নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করা নাকি নির্বাচন কালীন সরকারকে নির্মোহ করা। আসলে এসব কথা গুলো আসছে সুশাসনের অভাবের ফলে। অপরাজনৈতিক কৌশলের কারণে। আমরা যতদিন এই অপরাজনীতি তথা সুশাসন না পাবো ততদিন কিন্তু এই রকম সংকট মাথায় নিয়ে চলতে হবে। সেখানে তত্বাবধায়ক হলেই কি আর সর্বদলীয় হলেই কি? নির্বাচিত হবেনতো আমাদের দুই ইচ্ছাপুরণ দেবী। যাহারা একবার করে তত্ববধায়ক চেয়েছিলেন এবং একবার করে তত্বাবধায়ককে পাগল শিশু এবং অসংবিধানিক বলেছিলেন।

আমরা যারা সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় তত্বাবধায়ক সরকারকে সমাধনের কুইনাইন মনে করছি তাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না যে এটি আসলে একটা সাময়িক ব্যবস্থাপত্রই ছিল । যে রাজনৈতি দল গুলাকে আমরা ৫ বছরের জন্য সব দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি তাদেরকে আমরা ২ মাসের জন্য বিশ্বাস করতে পারছি না। যতদিন না তারা এই বিশ্বাস অর্জন করবে না ততদিন আমাদেরকে খন্ডিত গণতন্ত্র নিয়েই পথ চলতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো তাদেরকে সেটা বিশ্বাস আমরা কখন করতে পারবো? অথবা একটা সরকারী দল কখন এই আস্থা অর্জন করেছে বলে বুঝতে পারবো? একটি সরকারের স্থানীয় এবং উপনির্বাচন গুলোর সার্বিক চিত্রই কি হবে মাণদন্ড? না হলে কি হবে বিশ্বাসের মানদন্ড?এই জন্য কি একবার কোন সরকারী দলকে সুযোগ দেয়া উচিত একটা নির্বাচন অনুষ্টানের -যদিও আইন মতে নির্বাচন করে নির্বাচন কমিশন ?

নির্বাচন কমিশন যদি সুষ্ঠু ইলেকশন করতেই না পারে তাহলে সে নির্বাচন কমিশন রেখে লাভ কি? তাদের আইনত বৈধতাই কি?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.