নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন অভিনেতা

আমি চাকুরে.......

নতুন অভিনেতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক উপন্যাস : অস্বস্তি : পর্ব দুই

০৯ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭


দুই

আমার নাম আনিস, আমি দেখতে কেমন? আমি একেবারে ছা-পোষা কেরানীর মতো দেখতে। খুব বেশি লম্বা নই, আর খুব বেঁটে নই, একটি ভিড়ের মধ্যে আমি সহজেই হারিয়ে যাই। একবার রুবি মানে আমার বউকে নিয়ে গেছি নিউমার্কেটে। আমি ভিড়ের মধ্যে রুবির কাছে থেকে দূরে সরে গেছি। দূর থেকে দেখলাম রুবি আমাকে খুঁজচ্ছে, কয়েকবার ওর সামনে দিয়ে হাটলাম তবুও রুবি আমাকে দেখতে পারল না। এক সময় ওর চেহারায় যখন ক্রুদ্ধভাব ফুটে উঠছে তখনই আমি ওর হাত ধরে ওর সামনে দাঁড়াই।

আমার বন্ধু হামিদ আমাকে ‘কুঁজো বাবু’ বলে ডাকে। ও বলে “তুই যখন হাঁটিস তখন মনে হয় তুই কঁজো হয়ে হাঁটিস”।

হামিদকে আমি ইউনিভাসিটিতে পড়ার সময় থেকেই চিনি ও হিংসা করি। ও দেখতে অসম্ভব রূপবান একটি ছেলে, কথা বলে খুবই প্রফুল্লতার সঙ্গে। ওদের পারিবারিক অবস্থা খুবই ভালো। ইউনিভাসিটিতে পড়ার সময় আমি যখন টিউশনি করে হল ও পড়াশুনার খরচ যোগাড়ে ব্যস্ত, তখন ও ভাসিটিতে গাড়ী হাঁকিয়ে বেড়ায় । ওকে আমি হিংসা করতাম, আবার ওর মতোই একটা নিশ্চিন্ত জীবন চাইতাম। ও যে সেলুনে চুল কাটাত সেখানেও একবার চুল কাটিয়েছি ওর মতো হওয়ার জন্য। আমি মনে মনে যা যা করতে চাইতাম, ও তা-ই করতে পারত। এমকি পড়াশুনায়ও, ও আমার চেয়ে ভালো ছিল। মানুষ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে প্রেমে পড়ে। আর আমি ওর বিপরীত গুণের জন্য ওকে হিংসা করতাম, আবার ওকে পছন্দ করতাম । হামিদও আমার হিংসা ও পছন্দ দুটোই টের পেত।

রুবির সঙ্গে ওর প্রেমের গল্প আমাকে ও যখন বলত তখন আমি রুবিকে দেখিনি। কিন্তু ওর কাছে ওর প্রেমের গল্প শুনার পর আমি হিংসায় নীল হয়ে গেছি। রুবিকে কাছে পেতে চেয়েছি। ওর কাছে রুবির গল্প শুনতে শুনতে আমার মনে হয়েছে আমাকে রুবিকে পেতেই হবে, যেভাবেই হোক হামিদকে আমাকে হারাতে হবে। একদিন হামিদকে ধরলাম রুবির সঙ্গে পরিচয় করে দেয়ার জন্য । রুবির ছোটবোন মুক্তাকে, পড়ানোর কাজটা হামিদই আমাকে ঠিক করে দিয়েছিল। সেই সূত্রে রুবির সঙ্গে পরিচয়, পরিচয়ের সূত্র ধরেই আমি রুবির সঙ্গে প্রেম করেছি। হামিদকে প্রথমবারের আমি মতো হারিয়ে দিয়েছি। রুবিকে বিয়ে করেছি।

- আনিস সাহেব, ঘুমাচ্ছেন নাকি?

- না, না, কেন মুহিত সাহেব?

-এম. ডি স্যার, আপনাকে ডাকছেন, সকাল থেকেই দেখলাম স্যারের মেজাজটা খুবই খারাপ।

- আপনি যান, আমি স্যারের রুমে যাচ্ছি। এম. ডি স্যার, কখন অফিসে এসেছেন?

- আজ খুব সকালে এসেছেন, এসেই আমাকে একচোট ধমকালেন তার টেবিলে ধুলা জমে থাকার জন্য। কিছুক্ষন পর বললেন আপনাকে ডাকার জন্য।

হামিদ মানে এম. ডি স্যার আজকে সকাল বেলাতেই আমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে কেন? কয়েকদিন যাবতই দেখছি আমার টেবিলে নতুন কোন ফাইল আসে না। আশে পাশের অনেকে অনেক কথাই বলছে এটা নিয়ে। আমি কারো কাছেই কিছু জানতে পারিনি কারনটা, এমনকি শফিকের পি.এ এই মুহিত সাহেবের কাছ থেকেও নয়। অবশ্য আমি কারো কাছে জানতেও চাইনি ।

জীবন থেকে আমি এটা বিষয় শিখেছি, সব-সময় সবচেয়ে খারাপ মুহুর্তের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। তাহলে খারাপ কিছু ঘটলে চমকে উঠতে হয় না। বরঞ্চ প্রস্তুতির সময় পাওয়া যায়। আমার চাকুরী চলে গেলে আমি কি সংসার চালাতে পারব? আর একটা চাকুরী খুঁজে পাওয়া পর্যন্ত রুবি কি চালিয়ে নিতে পারবে? কিন্তু চাকুরী চলে যাওয়ায় মতো কিছু কি আমাদের মধ্যে ঘটেছে?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: সরলভাবে লিখছেন। হুমায়ুনি ঘরানার লেখা।

কিন্তু কাউকে হারানোর জন্য যে ভালোবাসা, সেইটা কতটা ভালোবাসা হয়ে উঠতে পারে সন্দেহ আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.