নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পেশাগত কারণে আমাকে সারাদিন বাইরে কাটাতে হয়। সকাল বেলা বের হলে অনেক সময় রাত দুটোয়ও বাসায় ফেরা হয়। আর দুপুরের খাওয়া ও সালাহ করতে হয় বাইরেই। মিশতে হয় প্রচুর মানুষের সাথে। তাদের সাথে আমার প্রচুর কথাবার্তা ও অভিজ্ঞতা আদান প্রদান হয়। তবে এটাই আমার প্রতিদিনের কার্যতালিকা নয়। যান্ত্রিক জীবনের সাথে আমার চলাচল হলেও যান্ত্রিকতা আমাকে এতটা আচ্ছাদন করতে পারে নি। বাইরে থাকার সময়েও আমার হাতে অনেক সময় থাকে। অনেক আগে থেকেই আমার একটা শখ হচ্ছে আমি কোর’আনের বাংলা অনুবাদগুলো পড়ে থাকি। বহু মসজিদে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং বহুরকমের অনুবাদ দেখেছি। অনুবাদের এই ভিন্নতা আমার কাছে চিত্তাকর্ষক মনে হয়। আর এই কাজ করতে গিয়ে আমি অসাধারণ কিছু অভিজ্ঞতাও লাভ করেছি। আমি দেখেছি প্রায় প্রতিটি মসজিদেই অনেকগুলো কোর’আ’ন হাদীস ছাড়াও ফাজায়েলে আমল, মকসুদুল মোমেনিন, বেহেস্তি জেওর, বেহেস্তের কুঞ্জি, জান্নাতী রমণী জাতীয় সওয়াবের অনেক বই থাকে। মসজিদে সালাহ কায়েম করতে গেলে আমি নিয়মিত সেখান থেকে কোর’আন নিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় খেয়াল করে অবাক হয়েছি যে, বেশীরভাগ মসজিদগুলোতে কোর’আন-হাদীস ছাড়া উপরে যে কিতাবগুলোর নাম বললাম সেগুলো খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। আর অন্যদিকে আল্লাহর কিতাব, মহাগ্রন্থ আল কোর’আনের উপর ধুলোবালি জমে থাকে! এর মানে দাঁড়ায়, মানুষ অন্য বইগুলো হাতে নেয়, নিয়মিত পড়ে এবং আল্লাহর কিতাব, আল কোর’আন কেউ পড়েনা। যদি পড়তো তাহলে কোর’আনের উপর ধুলোবালি, ময়লা জমার কোন যুক্তি দেখি না। কয়েকদিন আগে রাত নয়টার দিকে তেজগাওস্থ কুনিপাড়া জামে মসজিদে গেলাম। মসজিদটির চাকচিক্যতা বর্ণনা করার মত। টাইলস বসানো মেঝে, কাঁচের জানালা, অনেক বড় ফ্লোর। মাথার উপরে অনেকগুলো বৈদ্যুতিক পাখা ঝুলছে। মসজিদে তখন কোন মানুষ ছিলো না। স্বভাব অনুযায়ী একটা কোর’আন হাতে নিয়ে আরও একবার অবাক হলাম, এখানেও কোন ব্যতিক্রম নেই! যথারীতি কোর’আনের উপর বালির স্তর পড়ে আছে। অন্য জায়গার কথা বাদ দিলাম, কিন্তু এমন বড়, সুদৃশ্য মসজিদেও কোর’আনের এই হাল? এখানেও কোর’আনের পাঠক নেই? তাহলে এখানে, মসজিদগুলোতে কিসের চর্চা হয়?
আমি জানি এ সরল প্রশ্নগুলো মুসল্লীদের মনে জাগ্রত হয় না। তাদের সাথে সম্পর্ক শুধু মুসাল্লাহ অর্থাৎ যায়নামাজের। তাই তারা যায়নামাজ পরিস্কার রাখেন। আল্লাহর কোর’আন অপরিস্কার থাকলে তো আর সালাহ কায়েমে কোন সমস্যা নেই। তারা বিষয়টিকে ছোট করে দেখলেও আমার অন্তরে এটা গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। তাই আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এ অবস্থা সৃষ্টির যে কারণ আমি খুঁজে পেয়েছি তা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন বলে মনে করি।
আল্লাহর কোর’আনকে কেন এত অবজ্ঞা?
এর কারণ হিসাবে আমি বলবো, আমাদের ধর্মের অনুসারী, ‘ধর্মপ্রিয়’ হিসাবে যাদের বলা হয় তারা মূলত পথ খোঁজেন কিভাবে অল্প আমল করে, সহজ কোন পথ আবিষ্কার করে জান্নাতে চলে যাওয়া যায়। তারা খোঁজেন কোন আমল করলে বা কতবার সোবহান আল্লাহ বললে কত কোটি নেকী পাওয়া যায়, কয়বার আলহামদুলিল্লাহ বললে জান্নাতে কয়টি বৃক্ষ পাওয়া যায় ইত্যাদি ইত্যাদি। উপরে বর্ণিত বইগুলিতে সাধারণত এই রকম সহজে সওয়াব কামাইয়ের বিভিন্ন উপায়ের বর্ণনা থাকে। আর মসজিদে আগমনকারী লোকজন সেই বইগুলিই নিয়মিত পাঠ করেন। কিন্তু আল্লাহর কিতাব, যার মধ্যে মানবজাতির জন্য নির্দেশনা আছে কিভাবে সে জীবন যাপন করবে, কোন পদ্ধতিতে অর্থনীতি চলবে, কোন আইনে রাষ্ট্রীয় আইনকানুন চলবে -ফলশ্র“তিতে সমাজে শান্তি নেমে আসবে। আশ্চর্য হলে এটাই বাস্তবতা যে এ সম্বন্ধে তারা বেখেয়াল। সমষ্টিগত জীবন থেকে আল্লাহর আইন কানুন বাদ দিয়ে, মানবরচিত আইনকানুন মেনে নিয়ে, যে সুদকে আল্লাহ হারাম করেছেন তার মধ্যে আপাদমস্তক নিজেকে নিমজ্জিত করে মসজিদে গিয়ে কিতাব খোঁজেন কিভাবে সহজে জান্নাতে যাওয়া যায়। হাস্যকর! শুধু হাস্যকরই নয়, এটা একদিক দিয়ে আল্লাহর সাথে মশকরাও বটে। কেননা, সার্বিক জীবন থেকে কোর’আনের আইনকে উচ্ছেদ করে, সারাদিন তন্ত্র-মন্ত্রের পূজা করে পাঁচবেলা মসজিদে আসেন আল্লাহর এবাদত করে তাঁকে তুষ্ট করতে। যে সুদকে আল্লাহ হারাম করেছেন তার উপরই সারাদিন ব্যবসা বাণিজ্য করেন, ঘুষ খান নির্দ্বিধায়, মিথ্যা বলেন অহরহ। অথচ মাথায় টুপি, মুখে দাঁড়ি রেখে নিজেদের দাবী করেন মোমেন, মুসলিম, এমনকি উম্মতে মোহাম্মদী। এ কি শুধু আল্লাহর সাথে মশকরা? নিজের সাথেও প্রতারণা নয় কি? এর পেছনে আরো একটি কারণ আছে। একটা শ্রেনী রয়েছে যারা প্রচার করে যে কোর’আনের অনুবাদ পড়ে ইসলাম বোঝা যাবে না, সাধারণ মানুষ কোর’আনের কি বুঝবে? কোর’আন বুঝতে গেলে মাদ্রাসায় যেতে হবে, আরবী ব্যাকরণ জানতে হবে। আরবী একটা শব্দের অনেক অর্থ...। যারা এসব ভালোভাবে না শিখে কোর’আন পড়তে যাবে তারা ভুল শিখবে। কোর’আন পড়বে শুধু আলেম ওলামারা। তারা যা বলবে তা মেনে চললেই হবে। তারা সাধারণ মানুষের জন্য উপদেশ দেন সওয়াবের বই পাঠ করতে। সওয়াব কামাই করলেই জান্নাত নিশ্চিত। তাদের এই অপপ্রচারের কারণে বর্তমান মুসলিম নামের এই জাতি কোর’আন বিমুখ হয়ে পড়েছে। অপপ্রচার বললাম এ জন্য যে, আসলতে কত কোটি সওয়াব করলে জান্নাত পাওয়া যাবে তার হিসাব তারা দিতে পারেন না।
সব বই-ই পড়া হয়, কিন্তু উপেক্ষিত থাকে আল্লাহ কিতাব- মহাগ্রন্থ আল কোর’আন। কথা প্রসঙ্গে এই কথাও বলা যায় যে আল্লাহর নাজেল করা বই চর্চাকে তারা যেমন বাদ দিয়েছে তেমনি তাদের সার্বিক জীবনেও আল্লাহর দেয়া আইন-কানুন, হুকুম আহকাম রহিত হয়ে গিয়েছে। সমষ্টিগত জীবনে কোন অংশেই এর প্রভাব নাই। আলাপ আলোচনা আছে শুধু আমলের। কি লেখা-লেখিতে, কি প্রকাশনায়, কি কথাবার্তায়- সব জায়গায় দীনের মহিমা আলোচিত হয়। কিন্তু দীনকে প্রতিষ্ঠা করার কোন কথা নাই, আলোচনা নাই। এমনকি দীন যে প্রতিষ্ঠা নাই তার ধারণাও বেশীরভাগ মানুষের নাই। তারা যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, প্রচার করেন, প্রকাশ করেন- আধুনিক শিক্ষিত লোকজন তা দেখে-শুনে তাদেরকে কুপমণ্ডুক বলে মনে করে। আর তারা ধর্মব্যবসায়ীদের বানানো এইটাকেই ধর্ম মনে করে পুরো ধর্মেরই সমালোচনা করে। হ্যাঁ, ইসলাম যদি এমনই গালগল্প আর অলীক কিচ্ছা কাহিনীর বিষয় হয়, অমুক কামেল ব্যাক্তির কথা হয়, তমুক পীরের বর্ণনা হয় অথবা জনৈক বুযুর্গের দেখা স্বপ্ন হয়, ব্যক্তিগত বিষয়ের খুটিনাটি মাসলা মাসায়েল হয়, সার্বিক জীবনে এর কোন নির্দেশনাই না থাকে, তাহলে সেই ধর্ম সমালোচনারই যোগ্য। ধর্মের এই রূপ দেখার কারণেই কার্ল মার্কস ধর্মকে আফিম বলেছিলেন। কার্লমার্কস ইসলামের প্রকৃতরূপ দেখেন নি। তিনি যদি ইসলামের অর্থনীতিকে ভালো করে দেখতে পারতেন, তাহলে তাকে অর্থনৈতিক সাম্যতার জন্য সমাজতন্ত্র নামে আরেকটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আবিষ্কার করতে হতো না। এই দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে ধর্মীয় যে শ্রেনীটা আছে, তাদের দৃষ্টি এতটুকু অগ্রগামী হলো, যে তারা দীনকে জাতীয় জীবনে কায়েম করতে চান। কিন্তু সেই দীনকে প্রতিষ্ঠার জন্য তারা অন্যসব জীবনব্যবস্থার সাথে পাল্লা দিয়ে পাশ্চাত্য সৃষ্ট পদ্ধতিতেই নির্বাচনে যান, ভোট চান, মিছিল, মিটিং করেন। এতে করে একটা পণ্য যেমন বাজারে তোলা হয় তেমনি ইসলামকেও বাজারে তোলা হয়। ক্রেতারা যেমন সেই পণ্যের ভালোমন্দ যাচাই করেন, তেমনি ইসলামকেও অন্যান্য তন্ত্র-মন্ত্রের মতই আলোচনা সমালোচনা করা হয়। বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে শেষ নবী মোহাম্মদ (স এবং সর্বোপরি কোর’আনকে নিয়ে কিছু কিছু ধর্মবিমুখ, ধর্মদ্রোহী, প্রকৃতপক্ষে নির্বোধ মানুষ ব্যঙ্গ করছে, অবমাননাসূচক কথাবার্তা বলছে। আমি মনে করি এর জন্য দায়ী তথাকথিত সেই ‘ধর্মদরদী’ লোকজনেরাই। কারণ, তারা নিজেরা ব্যর্থ হয়েছে দীনের প্রকৃত মূল্যায়ণ করতে এবং মানুষের সামনে তার বিশালতা তুলে ধরতে। তারা দীনকে যেভাবে তুলে ধরেছে তাতে এই দুনিয়ার কোন কথা নাই, আছে শুধু সাত আসমান উপরের আর পাতালপুরির কল্প-কাহিনীর কথায় ভরা।
প্রসঙ্গক্রমে আরো একটা জিনিস দেখা যায় যে, আল হাদিসের বরাত দিয়ে মসজিদের দেয়ালে লেখা থাকে ‘মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলা হারাম।’ আল্লাহই জানেন তারা ‘দুনিয়া’ বলতে কি বোঝেন! দুনিয়া বলতে যদি পার্থিব জীবনকে বুঝে থাকেন তাহলে মুশকিল। আর যদি দুনিয়া শব্দের অর্থ ‘দীনের বিরোধী সব কিছু’কে বুঝিয়ে থাকেন তাহলে ঠিক আছে। তবে লোকজনের আচার আচরণ দেখে আমার মনে হয় তারা দুনিয়া বলতে পার্থিব জগতকেই বুঝিয়ে থাকেন। যদি তাই হয় তাহলে আমার প্রশ্ন, আমি কি মসজিদে বসে আমার দুনিয়া কোন আইনে চলবে, কার আইনে চলবে তা নিয়ে কথা বলতে পারবো না? আমি কি সমাজের অন্যায় অবিচারের কথা মোমেন মুসলিমদের সামনে তুলে ধরতে পারবো না? আমি যদি অবিচারের শিকার হই তার প্রতিকার নিয়ে মসজিদের মুসুল্লিদের সাথে আলোচনা করবো না? এই কথাগুলো মসজিদে বলা কি হারাম? ইতিহাস পড়ে তো জানি যে মসজিদই ছিলো মোমেন মোসলেম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র। মসজিদেই রসুল সালাহ করতেন, বিচার ফয়সালা করতেন, মসজিদই ছিলো রাষ্ট্র পরিচালনার সচিবালয়। তাহলে আজকের দিনে সামান্য কথা বলাও হারাম হয়ে যাবে? আসলে আমাদের ধর্মনেতাদের ব্যর্থতার কারণে, সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাবে দিন দিন এই জাতি চরম অধপতনের শিকার হচ্ছে। একদিকে এই জাতির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য, নির্দেশনা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কোন কর্তৃপক্ষ নেই, জাতীয় ঐক্যের কোন যোগসূত্রও নেই। অন্যদিকে তারা নিজেরাই নানা ধরণের কূটতর্কের সুচনা করে, যেটা ফরদ নয়, সুন্নাহ-নফল, যার ব্যপারে কোর’আনে কোন কথা নেই- সেসব বিষয়ের মাসলা-মাসায়েল আবিষ্কার করে আকাশের মতো উদার দীনকে জটিল মাকড়সার জ্বালে আবদ্ধ করে ফেলেছেন। এই অবস্থা থেকে তারা না নিজেরা বাইরে, না তাদের অনুসারীরা বাইরে। তাছাড়াও কোর’আনে আল্লাহ যেসব বিষয়কে দূর্বোদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন সেইসব বিষয় নিয়ে বাহাস করে নিজেদের ঐক্যকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এক আল্লাহ, এক রসুল এবং এক কোর’আনের অনুসারী হয়েও তারা বহু ফেরকায়, মাযহাবে বিভক্ত। আবার এই ফেরকা মাযহাবের ভেতরেও শত শত দলে উপদলে বিভক্তি। আজকের দিনে কেউ যদি চায় সে প্রকৃতভাবে ইসলামকে মেনে চলবে তাহলে তার দ্বারা কখনোই তা মেনে চলা সম্ভব নয়। কারণ, আল্লাহ যে দীনকে সেরাতাল মোস্তাকীম, অর্থাৎ সহজ সরল দীন বলেছেন তা আর সেরাতাল মোস্তাকীম- সহজ সরল নেই। আমাদের ধর্মীয় পণ্ডিতরা সংগ্রাম ও দুনিয়া বিমুখ হয়ে হুজরায়, খানকায় প্রবেশ করে হাজার বছরের কঠিন সাধনায়, অটল অধ্যবসায় আর চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাজার হাজার ফেকাহ, তাফসীর আর মাসলা-মাসায়েল আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু সেই হুজরা আর খানকা থেকে বের হয়ে তারা দেখতে পেলেন এই আইন, ফেকাহ প্রয়োগ করার জন্য যে আল্লাহর তওহীদ অর্থাৎ তাঁর সার্বভৌমত্ব দরকার, তাকেই আজকে পৃথিবী থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আর তাই বাধ্য হয়ে দীনের এই খুটিনাটি বিষয়গুলোকে ব্যাক্তি জীবনের ক্ষূদ্রগণ্ডিতে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে। যেহেতু কোর’আনের আইনকানুন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সমষ্টিগত বা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োগ করার জন্যই পাঠানো হয়েছে, আর সমষ্টিগত জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব না থাকায় তা কার্যতঃ পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে। আজ আর ব্যাক্তির জন্য কোর’আনের তেমন প্রয়োজন নেই। সুতরাং মসজিদগুলোর কোরানে ধুলোবালি জমে থাকাটাই স্বাভাবিক।
দৈনিক নিউজ
০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:৪৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:০১
বাঘ মামা বলেছেন: অসাধারণ
কিভাবে আমরা কোরআন থেকে দুরে সরে আছি তার একটা সুন্দর ব্যখ্যা এখানে উঠে এসেছে,এই বিষয় গুলো আমাকেও নানা ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে।আমি ঠিক ঠিক বুঝতে পারি পুর্ব থেকেই একটা মহল একটা গোষ্ঠী সুক্ষ্ম ভাবে কোরআন কে মুসলিমদের থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছে।এমন কিছু ফতোয়া ওরা দিয়ে আসতেন যেন কোরআন হাতে নিতেই মানুষ ভয় পায়।
আমাদের এক হুজুর আরবী পড়াতেন,মাওলানা টাইপের মানুষ,তাকে দেখতাম প্রতিদিন গিলাফ থেকে কোরআন শরীফকে বের করার সময় উনি অনেক সময় নিতেন,এমন ভাবে বের করতেন যে আমরা দুই ভাইবোন আড়ষ্ঠ হয়ে থাকতাম,না জানি আমরা কোন বেয়াদপি করে বসি, ওনার মুখে বির বির করে বলা কথা গুলো কি এবং কোরআন শরীফ খোলার সময় এত কি পড়তে হয় শিখতে হয় এত নিয়ম কানুন এসব কিছু দেখে সেই ছোট কাল থেকেই কোরআনের প্রতি একটা ভয় ঢুকে যায় আমার,এর পর বাসায় আম্মুকে দেখতাম তিনি আমাদের সবার হাতের নাগালের বাইরে অনেক উচুতে কোরআন শরীফ তুলে রাখতেন।একটা শ্রদ্ধা থেকে।
এইভাবে কোরআন আমাদের থেকে দুরে সরে যায়,যেখানে আমার প্রশ্ন ,শ্রদ্ধা কি এই বইটিকে ধরা আর পড়ার মধ্যেই? কখনোই না,এমন শ্রদ্ধা মনে হয় বিধাতা চাননা।কোরাণের শ্রদ্ধা হলো তার মধ্যে বলা কথা গুলো যথাযত মেনে চলায়,শ্রদ্ধা হলো এই কোরআন শরীফকে হাতের কাছে রেখে জীবনের ধর্মের যে কোন সংকটে খুলে দেখে সমাধান খোঁজার মধ্যে দিয়ে।কোরআন এখন যেহেতু বাংলা আসছে সেহেতু আমরা এই কোরআনকে আর সেই তথা কথিত শ্রদ্ধার নামে আলমিরা উপরে তুলে না রাখি,এটা থাকুন একদম নিকটে যেন চাইলেই খুলে পড়ে বুঝতে শিখতে পারি,যেনপাই জীবনের সকল সংকটে একটা সমাধান।
আমি এখন আমার খুব কাছেই কোরাআন শরীফ রাখি,যেন আমি প্রতিটা প্রয়োজনে সমাধান খুঁজতে পারি।
আপনি এখানে আরো অনেক গুলো ধর্মীয় অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন যা আসলেই ইসলাম এবং মুসলিমদের জন্য অত্যান্ত জরুরী কিছু বিষয়।আমার খুব ভালো লেগেছে,আবারও সময় করে এখানে আসার ইচ্ছে আছে।
শুভ কামনা সব সময়
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:২৫
উড়োজাহাজ বলেছেন: এত কষ্ট করে অনেক বড় করে আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আসলে আমরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। আমাদের নেতারা আমাদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারছে না। যারা আমাদের মাঝে পরিচিত আলেম নামে বর্তমান আছেন তাদের মধ্যে বেশীরভাগই প্রকৃত পক্ষে ধর্ম ব্যাবসায়ী অথবা প্রচলিত ধারার রাজনীতিবিদ। লেবাসই যাদের সাইনবোর্ড। সত্যিকার আলেম বলতে এখন কেউ নেই। সাথে থাকার জন্য আবারো ধন্যবাদ। আমার ব্লগে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৩
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: বাঘ মামার সাথে একমত, ছোটবেলায় নানা নিয়ম কানুনের জন্য কোরআন শরীফকে অনেক ভীতিকর বস্তু মনে হত, এতো বেশি হেভি ওয়েট নিতে পারতামনা দেখে শিখতে গিয়েও ডাব্বায় ছিলাম। এখন দিন বদলেছে, ট্যাবে কোরআন কপি করে নিয়েছি। যখন ইচ্ছা পড়তে পারি কোন ধরনের ভীতি ছাড়াই।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:২৪
উড়োজাহাজ বলেছেন: অনেক ভালো। মোল্লাদের গদাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:৪১
মুচি বলেছেন: +++