নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের শ্রম ব্যবস্থাকে পোপের ‘শ্রম দাস’ প্রথা আখ্যাদান জাতিকে চপেটাঘাত

০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ১:৩৩



খবরে প্রকাশ, সাভার ট্র্যাজেডিতে কয়েকশ’ মানুষ নিহত হওয়ার পরিস্থিতিকে ‘শ্রম দাস’ প্রথা আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেছেন, “যখন শুনেছি একজন শ্রমিককে মাসে মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার (প্রায় চার হাজার টাকা) বেতন দেওয়া হয় তখন ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি।” বুধবার ভ্যাটিকান রেডিওতে প্রচারিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস) উপলক্ষ্যে দেওয়া বিবৃতিতে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “এটাকে কেবল ‘শ্রম দাস’ প্রথাই বলা যায়।” তবে, বেকারত্ব দূরীকরণে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান পোপ। তিনি বলেন, “সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টি করার, কাজ করার মতো সৃজনশীল উপহার দিয়েছেন, দিয়েছেন সম্মানও। কিন্তু আজ এসব সৃজনশীলতার বিরুদ্ধে এ ধরনের দাসত্বের প্রয়োগ ঘটছে।” সাভ?ার ট্র্যাজেডিতে হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “কতজন ব্রাদার-সিস্টারকে (ভাই-বোন) এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে!” লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা থেকে নির্বাচিত পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “সঠিকভাবে বেতন পরিশোধ হচ্ছে না, চাকরি জুটছে না। কারণ, আপনারা শুধু লাভের দিকটা দেখছেন। এটা সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধবাদী কাজ।” ৭৬ বছর বয়সী এই পোপ সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের ভাষণে ‘স্বার্থবাদী লাভ’ প্রথার বিরুদ্ধে বৃহত্তর ‘সামাজিক ন্যায় বিচার’ প্রতিষ্ঠারও আহবান জানান।

খুব সম্ভবত পোপ অন্যায় কিছু বলেন নি। বর্তমান দুনিয়ার প্রকৃত অবস্থা সম্বন্ধে তিনি অনবহিত নন। নিশ্চয়ই তাঁর জানার কথা যে এর চাইতেও আরো অনেক কম বেতনে দারিদ্রপীড়িত দেশগুলোতে শ্রমিকরা কাজ করে থাকে। বর্তমান সভ্যতার ধ্বজাধারী ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো থেকে ক্রেতারা কেন বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের দিকে এত আগ্রহী। কারণ এই দেশের শ্রম সস্তা বলেই, কম টাকায় কাজ করানো সম্ভব বলেই তারা এদেশে আসে। সুতরাং এই অব্যবস্থাপনার ব্যাপারে তাদের ভূমিকাও কোন অংশেই কম নয়। তারা সঠিক মূল্যায়ন করে না বলে এদেশের শিল্প মালিকেরা শ্রমিকদেরকে মাসিক ৫০ ডলারের কম অর্থ দিয়ে কাজ করাতে বাধ্য হয়। বর্তমান সভ্যতার নেতৃত্ব বহন করছে খ্রীস্ট ধর্মের অনুসারীরাই। কাজেই তাদের অধীন পৃথিবীতে অনাচার, অবিচারের দায় তাদের উপরও বর্তায়। সুতরাং তারা কেউই এই অপরাধের দায় থেকে মুক্ত নন। এটা যেমন তাদের দেশগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনি বাইরের অনুন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাদের দেশেও আজকের দিনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, অবরোধ দেখলে মনে হয় তারাও মোটেই সুখে নেই। ফ্রান্স, গ্রীস, স্পেন ও ইতালীর শ্রমিক বিক্ষোভ, লকআউট, ছাটাই করার বিরুদ্ধে আন্দোলন, বেকারত্বের হার পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় সেদেশের শ্রমিকরাও বড় ধরণের নির্যাতনের স্বীকার। গরিব দেশগুলোর ব্যাপারে তাদের উপদেশমুলক বক্তব্য আছে। তাদের ব্যাপারে গাল ভরা বুলি আছে, মানবাধিকার সংগঠন আছে। কিন্তু এসব স্বত্ত্বেও তাদের দেশগুলোও প্রকৃত মুক্তি দেয়নি শ্রমিকদেরকে। পহেলা মে’র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলন সূচিত হয়েছিলো আমেরিকায়, তা তাদের দেশের পুঁজিবাদীরা অস্ত্রের ভাষায় দমন করেছিলো। অপরদিকে পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের প্রতিপক্ষ সমাজতান্ত্রিকরা তা লুফে নিয়ে আড়ম্বরের সাথে ঘটা করে পালন করে আসছে বিশ্ব শ্রকিমদিবস হিসাবে। কিন্তু শ্রমমুক্তির পথিকৃত, মানবতার ধ্বজাধারী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ও কানাডায় এ বিষয়ে নিশ্চুপ। সারা বিশ্বে এই দিনে সরকারী ছুটি থাকলেও আমেরিকা ও কানাডায় এ দিনটি পালন করা হয় না। সুতরাং এই সভ্যতার নিয়ন্ত্রণকারী ধর্মগুরু হিসেবে যেমন করে আমাদের দেশের শ্রমব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন, শ্রমদাস হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন তেমনি তার উচিৎ তাদের নিজেদের দেশগুলোর শ্রমব্যবস্থার দিকেও নজর দেওয়া।

সেতো গেলো তাদের ব্যাপার। আমাদের দিক দিয়ে বিচার করলে বলতে হয়, পোপের এই বক্তব্য আমাদের জাতির গালে একটা ভয়াবহ চপেটাঘাত। কারণ, একজন সর্বোচ্চ ধর্মগুরু যখন কোন একটা জনসমষ্টির ব্যাপারে জাতিগতভাবে কথা বলেন তখন বুঝতে হবে তা তার জাতির পক্ষ থেকেই বলা কথা। সুতরাং তার কথা, তার সমালোচনা মুসলিম নামধারী এই জাতির উপরই বর্তায়। অবশ্য যে কোন গুরুজন উপদেশ দিতেই পারেন। কিন্তু এ কেমন পরিহাস যে নব্বই শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশকে সততার উপদেশ দেয়, ইনসাফের উপদেশ দেয়, শ্রমের সঠিক মর্যাদা দেওয়ার উপদেশ দিচ্ছে এই সভ্যতা! যেখানে একসময় অর্ধেক দুনিয়াকে সততা ন্যায় বিচার আর ইনসাফের উপদেশ নয়, বাস্তবে ইনসাফ কায়েম করেছিলো মুসলমানরা নিজেরাই? আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে জাহেলিয়াতের যুগে ইসলামের আবির্ভাব হয়েছিলো সততা, সাম্য, ব্যক্তি স্বাধীনতার এক চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। যে ইসলামের আবির্ভাবের কারণে অমানবিক অত্যাচার আর নির্যাতনের স্বাক্ষর- ‘দাসপ্রথা’ যা বহু আগে থেকে চলে আসছিলো- তা কার্যত নির্মূল হয়ে গিয়েছিলো। যে সময়ে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে, অর্থাৎ আজকে আমরা যাকে বলি মধ্যযুগ- তাদের সেই মধ্যযুগে ইসলাম তুলে ধরেছিলো মানবতাকে, মানবিকতাকে। ইসলামের বার্তাবাহক ঘোষণা করেছিলেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার পারিশ্রমিক প্রদান করো।” আর আজ তারই অনুসারীদেরকে উপদেশ শুনতে হয় তাদের, যারা মধ্যযুগ পার করেছে চরম অন্ধকারের ভেতর দিয়ে। ঐ মধ্যযুগে যখন মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া মাইনর অঞ্চলে ইসলামের রেনেসাঁ ঘটে, তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃথিবীর শিক্ষকের আসনে সমাসীন হন মুসলিমরা। অথচ তখনও ভুমধ্য সাগরের অপর পাড়ে আজকের ইউরোপ ভুত-পেতœী আর দেব দেবীদের পুজা করতো। আর আমেরিকা মহাদেশ ছিলো তখনো অন্ধকারে- মূল বিশ্বের সাথে যার তখনও পরিচয়ই ঘটেনি। আজ চৌদ্দশত বছর পরে এসে সেই মুসলিম জাতি অন্ধকারে থাকা পশ্চিমা সভ্যতার উপদেশ কুড়ায়। সত্যিই এক নির্মম পরিহাস। যদি এই জাতির সত্যিই কোন বোধ শক্তি থাকতো তাহলে তারা তাদের নীতিকে শ্রমদাস প্রথার সাথে তুলনা করা এই বক্তব্যকে বড়ধরণের একটা চপেটাঘাত বলেই মনে করতো। এমতাবস্থায় এই জাতির সঠিক জবাব হবে প্রকৃত ইসলামের আলোকে গৌরবময় সেই আলোকিত সভ্যতার পূনপ্রবর্তনের মাধ্যমে শ্রম এবং শ্রমিকের পূর্ণ অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।



মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ১:৩৮

আhhহমেদ জিয়াঊস সালাম বলেছেন: হক কথা বলেছেন ভাই।+++

০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ২:০৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: হক কথার বেইল নাই আজকাল! জানেন তো?

২| ০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ২:১৬

ছািব্বর বলেছেন: দাস প্রথার প্রচলনকারী, শ্রমিকের রক্তশোষনকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী পোপ বাংলাদেশের গার্মেন্টস নিয়ে কথা বলে কোন মুখে ???

০৩ রা মে, ২০১৩ রাত ২:৫২

উড়োজাহাজ বলেছেন: আগেই পড়েছিলাম।

৩| ০৭ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

বিশ্বাস করি 1971-এ বলেছেন: পোপরে লাগাইতে মুন্চায়! মদনা নিজের হারামী ক্রেতাগুলারে ঠিক করতে পারে না। শালারে শুট কইরা মারা দরকার। শালা একটা চিটার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.