নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জনগণের স্বার্থেই রাষ্ট্রের উৎপত্তি। নাগরিকগণ তাদের সুযোগ সুবিধা একটি ভূখ-ে সমভাবে ভোগ করার অভিপ্রায়ে তাদের প্রতিনিধির হাতে তাদেরকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ক্ষমতা প্রদান করে। কিন্তু বর্তমানে প্রায়শই দেখা যায় রাষ্ট্রনায়কদের অনেক সিদ্ধান্তই নাগরিকদের স্বার্থপরিপন্থি হয়। বিশ্বের দেশে দেশে দেখা যায় নাগরিকগণ তাদের প্রতিনিধিদের উপর ফুঁসে উঠছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশেই মানুষ রাষ্ট্রনায়কদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাদের এই বিরোধীতা প্রায়শই সহিংসতায় রূপ নেয়। সাম্প্রতিক গ্রিস, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সহিংসতা দমনে আবার আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে জনতার বিরুদ্ধে নামিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে দুই পক্ষেই তুমুল হাঙ্গামা, ভাংচুর, গোলাগুলিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রশ্ন আসে রাষ্ট্রপরিচালনাকারীরা জনতার রায়ের মাধ্যমেই ক্ষমতার মসনদে বসেন, এমন কি তাদের প্রায় সবাই সেই নাগরিকদের মধ্য থেকে উঠে আসা সাধারণ মানুষই। তবুও কেন তারা জনতার দাবীকে হৃদয়ঙ্গম করতে ব্যর্থ হন? এমন তো নয় যে শাসনযন্ত্রে যারা বসেন তারা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় বসেন, কিংবা এমনও নয় যে তারা ভিনদেশী কিংবা ভিন্নভাষী দিগি¦জয়ী কোন সেনাপতি- যিনি লড়াই করে শাসন ক্ষমতায় বসেছেন। একই ভাষাভাষী, একই ভূখ-ের অধিবাসী হওয়া সত্ত্বেও তারা জনগণের হৃদয়স্পন্দন বুঝতে ব্যর্থ হওয়ার এই রীতি সত্যিই অবাক করার মত। রাষ্ট্রীয় শক্তির দাপটে নির্ধারিত মেয়াদ পার করলেও দেখা যায় আমাদের দেশটির মত ক্ষুদ্র দেশটিতে একবারের মেয়াদ শেষে দ্বিতীয় বার তারা আর প্রায়শ:ই ক্ষমতায় আসতে পারছে না। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের সাড়ে চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পর প্রায় শেষ সময়ে ক্ষমতাসীন দলটি জনপ্রিয়তার নি¤œসীমায় অবস্থান করছে। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘ দুই বছর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে দেশটির শাসন ক্ষমতা ছিল। এর আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের হাতে ছিলো রাষ্ট্র ক্ষমতা। ঐ সময়ে তারা সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করে যা সেনা সমর্থিত শাসনের সময় বেরিয়ে আসে। এই সব অপকর্মে জড়িতদের অনেককেই সেসময় গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করা হয়। কিন্তু মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে তাদের অবস্থাও মোটেই এর চাইতে খারাপ বৈ ভাল নয়। তদুপরি সবকিছু মিলিয়ে তাদের নিজেদের দুরবস্থা তারা নিজেরাই এখন উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু তারাও বের হয়ে আসতে পারছেন না শাসন ক্ষমতার নির্ধারিত প্যাটার্নের বাইরে। প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য সে কথাই প্রমাণ করে। বৃহস্পতিবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দেয়া সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, “কোটা প্রথা নিয়ে আন্দোলনের নামে যারা ভাংচুর করছে তাদের ছবি সংগ্রহ করে রাখা হবে। ছবি দেখে পরীক্ষার সময় তাদের শনাক্ত করে ডিসকোয়ালিফাই করা হবে।” “যারা আন্দোলনের নামে ভাংচুর করে তারা কিসের মেধাবী” প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মেধাবীরা এ ধরনের কাজ করতে পারে না। যারা ভাংচুর করেছে তারা কখনোই চাকরি পাবে না।”
প্রধানমন্ত্রির এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিকমহলসহ আন্দোলনকারী নেতাকর্মীরা তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই তাদের হতাশা ব্যক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার গতকাল এ প্রসঙ্গে বলেন, “পিএসসি নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেই।” এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “যে সব ছাত্ররা তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করেছেন, তাদের যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাতিল করা হয়, তবে দেশ মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।” বিক্ষোভকারী অনেক ছাত্ররা শেখ হাসিনার এ বক্তব্যকে প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তারা আরো মনে করেন কোটা পদ্ধতিতে সংস্কার না আনলে দিন দিন দেশ মেধাশুন্য হয়ে পড়বে। বর্তমান কোটা পদ্ধতিকে তারা অবিচার এবং ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করেন। শেষ সময়ে গণ-অসন্তোষ বাড়ানোর এই নীতিকে অনেকে সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলেও মনে করছেন। তাই বলা যায় সরকার জনগণের দাবিকে বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে। বুঝতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি আরো বেশী করে প্রমাণিত হয় তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যে। তিনি গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী পরাজয়ের পর তিনি বলেন, “ হয় তো আমাদের কোথাও ভুল ছিল।” প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে প্রচলিত সিস্টেমটাই এমন হয়ে গেছে যে ক্ষমতাসীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য, গণবিরোধী হিসেবে প্রমাণ করার জন্য বিরোধী দল ছাড়াও সরকারের ভেতরেই নানামুখী কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। তাই সবধরনের ক্ষুদ্রতাকে কাটিয়ে উঠে প্রকৃতভাবে গণমুখী হওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু ও সমন্বিত জীবন ব্যবস্থা- যে ব্যবস্থায় কোন ধরনের অনৈক্য থাকবে না, বিরোধীতা করার খাতিরে বিরোধীতা করতে হবে এমন বিরোধীদল থাকবে না, সরকার এবং বিরোধীদল উভয়ের লক্ষ্য হবে গণমুখী সিদ্ধান্ত, দেশের কল্যাণ, জাতির কল্যাণ। শুধু ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করার এই ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ হোক, যত দ্রুত সম্ভব।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: সরকারের কী পরাজয়ে মাথা খ্রাপ হয়ে গেছে?
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:১৩
এম এস সোহেল বলেছেন: সম্পুর্ন গণ মুখী,এতে কোন সন্দেহ নেই। যারা দেশ পরিচালনায় যাওয়ার জন্য দেশ ভাঙ্গতে পারে তাদের এভাবেই শায়েস্তা করা উচিৎ।
এবং কি রাজনীতির দল গুলোকেও।
আমি একমত
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:০১
উড়োজাহাজ বলেছেন: ঘন্টাটা বাধবে কে?
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:১৫
একজন ঘূণপোকা বলেছেন: ধুর পাচ মাস পরে তাইনের চাকুরিই তো থাকবে না, আবার মাইনসেরে চাকুরি দেয়া না দেয়া।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:০১
উড়োজাহাজ বলেছেন: দেখেন এর আগে উল্টা পাল্টা করে যায় কি না?
৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১৮
মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: হের নিজের চাকরী থাকে কিনা তাই দেখেন আবার আইছে হুমকি দিতে। নিজে তো করে চুক্তিভিত্তিক চাকরী ওর কথার কোন দাম আছে নাকি। চুক্তি শেষ হলে তো চাকরীও শেষ হয়ে যাবে, তখন তো ওরই চাকরীর দরকার হবে।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৫
উড়োজাহাজ বলেছেন: ওদের চাকরি করতে হয় না রে ভাই! ওরা জন্মগতভাবে এমন পিতার সন্তান- যারা মনে করে পুরো দেশটা তাদের ব্যাক্তিগত সম্পদ। আমরা তাদের নিরীহ প্রজা সাধারণ।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৯
পরিযায়ী বলেছেন: কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী তার দেশের জনগনকে এভাবে হুমকি দেয় এরকম নজির কোথাও নাই।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১২
উড়োজাহাজ বলেছেন: সঠিক।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫১
খালিদ মুহাম্মদ ইফতেখার আবেদীন বলেছেন: আমি সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের ন্যাক্কারজনক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই । আমরাই তাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছি আর আজ তিনিই আমাদের ভয় ভীতি দেখান -- একবার বলেন চাকরী হবে না, আরেকবার বলেন বিদ্যুত বন্ধ করে দেবেন আরও কত কি । সুযোগ আসলে জনগণ আপনার এইসব তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আর অপমানের বদলা কড়ায় গন্ডায় মিটিয়ে গেছে । মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের ধোয়া তুলে সাময়িক ভাবে নতুন প্রজন্মকে হয়ত বিভ্রান্ত করা যাবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণ তাকেই ভোট দেবে যে তাদের জন্য কাজ করবে ।