নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টিআইবি এবং সুজনের গবেষনায় দেখা গেছে শতকরা ৯৭ভাগ সংসদ সদস্য কোন না কোন নেতিবাচক কর্মকা-ে জড়িত। দেশের ৪২টি জেলার ৪৪টি দলগত আলোচনার ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। এসব জেলার ২২০ জন সংসদ সদস্যদের মধ্যে ১৪৯ জন সংসদ সদস্যদের ব্যাপারে আলোচনাগুলো পরিচালনা করা হয়। এদের মধ্যে ১৪১ জন পুরুষ ও ৮ জন নারী সদস্য রয়েছেন এবং ১৬৩ জন সরকারদলীয় ও ১৩ জন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য রয়েছেন। এছাড়া মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন ২৭ জন। গবেষণায় দেখা গেছে, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে ২৭ জনের মধ্যে ২৭ জন, বিরোধী দলের ১৩ জনের মধ্যে ১২ জন এবং নারী সংসদ সদস্যদের ৮ জনের মধ্যে ৭ জনই কোনো না কোনো নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত।
কথা হচ্ছে রাজনীতিবিদ তথা সংসদ সদস্যরা হচ্ছেন মানুষের প্রতিনিধি। জনতা তাদেরকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠান তাদের হয়ে কাজ করার জন্য। কিন্তু যখন দেখা যায় সেই জনপ্রতিনিধিরাই বিভিন্ন নেতিবাচক কাজের সাথে জড়িত, বিশেষ করে যখন দেখা যায় এর পরিমাণ শতকরা ৯৭ ভাগ, তখন হতাশ না হয়ে আমরা পারি না। আবার ঐ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে শতকরা ৬০শতাংশ সংসদ সদস্য ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন, অর্থাৎ তিনি একই সাথে একজন সংসদ সদস্য এবং ব্যবসায়ী। এক্ষেত্রে দেখা গেছে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা আদায় করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং তা গ্রহণও করছেন।
এভাবে চলতে থাকলে দেখা যায় এর প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের উপরেও। তারা প্রভাবিত হয়ে সকল কাজে এর প্রতিফলন ঘটায়। সরকারী কর্মকর্তারাও তাদের এই কাজ থেকে উৎসাহ পেয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেন। আবার তারা সেই সব অনৈতিক কাজ থেকে বাঁচার জন্য এমপি মন্ত্রীদেরকে ম্যানেজ করেন। এতে করে দেখা যায় রাষ্ট্রের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত দুর্নীতিতে ডুবে যায়। সরকার কিন্তু তাদের নির্ধরিত কাজের জন্য নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক বহন করেই থাকে। এরপরেও উপরি কামাই করতে গিয়ে তারা দেশ ও জাতির সর্বনাশ করেন। ক্ষমতার পালা বদলে চেহারার পরিবর্তন হলেও অবস্থার কোন পরিবর্তন আসে না। সুতরাং যেহেতু সরকার এমপি মন্ত্রিদেরকে পারিশ্রমিক বহন করছেই, সেহেতু এই শ্রেণীতে যারা আছেন তাদের উচিত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রভাব ফেলা যায় না এমন কোন পেশা ধারন করা। অন্যথায় বরবরের মত বেড়ায় ক্ষেত খেয়ে যাবেই। পাশাপাশি যারা তাদের বিশ্বাস করে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠায় তাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা হবে, দুর্নীতি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করবে। সুতরাং এই ধারা থেকে বের হতে হলে আমাদেরকে প্রচলিত ধারার পরিবর্তন আনতে হবে। এমন ধারা কায়েম করতে হবে যেন চাইলেই যে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, রাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসতে না পারে। আসলে আমরা ভুলে গেছি যে আমাদের রসুল বলে গেছেন, “যারা নেতৃত্ব কামনা করে তাদেরকে আমরা নেতা নির্বাচন করি না।” কারণ যারা নেতা হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তারা আসলে সুবিধা আদায়ের জন্য কিংবা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করার জন্যই নেতা হওয়ার বাসনা প্রকাশ করে। সুতরাং যারা এত নেতা হওয়ার, সাংসদ হওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করে তাদেরকে বাদ দেওয়ার সিস্টেম প্রবর্তন করতে হবে।
©somewhere in net ltd.