নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হতাশা দিবসের হতাশাজনক লেখা

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২১



দেশে বিদেশে পালিত দিবসের ছড়াছড়ি। কোন্ দিন কোন্ দিবস তা মনে রাখাই কঠিন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দিবস যেমন আছে তেমনি গুরুত্বহীন দিবসও আছে। গুরুত্বহীন এসব দিবসের নাম শুনে অনেককেই হাসাহাসিও করতে দেখা যায়। এবারে পালিত হোল এরকমই আরো এক অদ্ভুত দিবস, হতাশা দিবস। স্বাধীনতার পর থেকে ছিটমহল সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রটোকল চুক্তিটি দুই বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত শুক্রবার এ দিবসটি পালন করেছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা। ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের প্রটোকলটি স্বাক্ষরিত হয়।

সত্যিকার অর্থে এটা কোন দিবস না হলেও এটা নিপীড়িত মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, সভ্যতার উপর নিরূপায় মানুষের চপেটাঘাত। পৃথিবীর বুকে কল্পিত সীমারেখা একে মানুষ দেয়াল তুলেছে। মানুষকে আটকে দিয়েছে নির্দিষ্ট একটি ভূ-খ-ে। একসময় পৃথিবীতে কোন সীমারেখা ছিল না। মানুষ ছিল যাযাবর। যেখানে বাসযোগ্য ভূমি পেত সেখানেই বসবাস করতে থাকত তারা। আবার জলবায়ূ বিরূপ আচরণ করলে তারা স্থান ছেড়ে চলে যেত সুবিধাজনক স্থানে। সেই মানুষই বর্তমানে আধুুনিক হয়েছে। ভালো জায়গাগুলো দখল করে জোর করে তুলে দিয়েছে সীমানা প্রাচীর। এসব টপকে যাতে মানুষ প্রবেশ না করতে পারে সে জন্য এর দেওয়ালগুলোকে করে দিয়েছে বেশি উচু, কাটাতার দিয়ে বেধেছে সীমানা, বসিয়েছে কঠোর পাহারা, কোথাওবা বিদ্যুতায়িতও করা হয়েছে। উদ্দেশ্য মানুষের অনুপ্রবেশ ঠেকানো। পৃথিবীর ইতিহাসে যত যুদ্ধ-বিগ্রহ ঘটেছে তার পেছনে ছিল এই সীমান্ত সমস্যা। দেশের প্রতিটি অর্থবছরে বাজেটের একটি বিশাল অংশ ব্যয় হয় সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর পেছনে। দেশের নিয়মিত বাহিনী ছাড়াও একটি স্থায়ী এবং নির্দিষ্ট বাহিনী রাখতে হচ্ছে প্রতিটি দেশের জন্য। পৃথিবীর বহুদেশের রাজনৈতিক ইস্যু সীমানা গলানো অবৈধ মানুষের পক্ষ এবং বিপক্ষ নিয়ে। একদল চায় কঠোরতা তো অন্যদল চায় মধ্যপন্থা। এ নিয়ে বহু জল ঘোলা হয়।

যাই হোক, আজকের বিষয় সীমানা নয়, দিবস। বলছিলাম হতাশা দিবসের কথা। এই অদ্ভুত দিবসটি পালকারী মানুষদের সমস্যা হচ্ছে তারা ছিটমহলবাসী। অর্থাৎ কাগজে কলমে তারা নির্দিষ্ট কোন দেশের নাগরিক নন। অথবা তারা নাগরিক একদেশের অথচ বসবাস করছেন সীমান্তের বাইরে, অর্থাৎ অন্য দেশে। সুতরাং তারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হোন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এরকম ভারতের ১১১টি এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। এরা অনেকটা ভিনদেশে বসবাস করা শরণার্থীদের মত। কিন্তু তবুও শরণার্থীরা বাইরের মানুষের পক্ষ থেকে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু এই ছিটমহলবাসীরা তা থেকেও বঞ্চিত। বরং উভয় দেশ সুবিধাজনক হলে নিজেদের বলে দাবি করে আবার অসুবিধাজনক হলে অস্বীকার করে। সীমান্ত নিয়ে গোলাগুলি হলে তারা পড়ে মাঝখানে। অতএব দুই পক্ষেরই লক্ষ্যবস্তু হোন তারা।

সুতরাং ভুক্তভোগী ছিটমহলবাসীদের দাবি দাওয়ার প্রতি উদাসীন আধুনিক সভ্যতার মানুষগুলোর চোখের সামনে এই অদ্ভুত দিবস পালন করার মত চপেটাঘাতটা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। যদিও আমরা তা বুঝব কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.