নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বহুল আলোচিত দিল্লীতে চাঞ্চল্যকর চলন্তবাসে মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ অতঃপর সেই চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় সারা ভারতের ভিত কাপিয়ে দেওয়া ঘটনায় নয় মাসের বিচার শেষে অভিযুক্ত চারজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে নয়া দিল্লীর একটি আদালত। গতকাল বেলা আড়াইটায় দিল্লীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক যোগেশ খান্না এ রায় ঘোষণা করেন। তিনি এই জঘন্য অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে মন্তব্য করেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চার আসামী হলো- মুকেশ সিং, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুর। উক্ত ঘটনায় ঐ মেডিকেল ছাত্রীর ছেলে বন্ধুও ধর্ষণকারীদের হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয় এবং তাকেও বাস থেকে ঐ মেয়েটির সাথে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা হয়।
ভারতসহ সারা বিশ্বে এ নিয়ে প্রবল জনরোষের মুখে ঘটনার কয়েক দিন পর ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে চলতি বছরের ১১ মার্চ তিহার জেলে থাকা অবস্থায় প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং আত্মহত্যা করেন। এ ছাড়া, ঘটনার সময় একজনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় সম্প্রতি একটি কিশোর আদালত তাকে তিন বছরের কারাদ- দিয়েছে। বাকি চার অভিযুক্তকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করে যোগেশ খান্নার আদালত। গতকাল প্রদত্ত আদালতের রায়ে বলা হয়- আসামিরা ঠা-া মাথায় গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।
রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামী পক্ষের আইনজীবী এ পি সিং তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “রাজনৈতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।” “অভিযুক্তদের ফাঁসি দিলেই ধর্ষণ বন্ধ হবে না” মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আগামী দুই মাসের মধ্যে যদি দেশে একটিও ধর্ষণ না হয়, সেক্ষেত্রে এই শাস্তির যৌক্তিকতা মেনে নিয়ে তিনি আপিল করা থেকে বিরত থাকবেন।”
একই সাথে পাশবিক নির্যাতন এবং চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার মত জঘন্য অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদ- যথোচিত হলেও এ রায়ের মাধ্যমে ভারতে ধর্ষণের মাত্রা কতটা কমবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিশেষ করে দিল্লিতে এই ধর্ষণ এবং হত্যাকা-ের পর যতই আলোড়ন সৃষ্টি করুক না কেন, যতই মানুষকে প্রতিবাদী করে তুলুক না কেন- বাস্তবে এর পর থেকে ভারতে ধর্ষণের হার বেড়েছে বৈ একটুও কমেনি। ধর্ষণের ঘটনা এখন রাস্তা থেকে মন্দিরে পর্যন্ত প্রবেশ করেছে। কয়েকদিন আগে সে দেশেরই মধ্যপ্রদেশ থেকে আশারাম বাপু নামে একজন ধর্মগুরুকে আটক করা হয়েছে মন্দিরেরই এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে।
একথা সত্য যে আইন করে কিংবা শাস্তি দিয়ে ধর্ষণের মাত্রা কিছুতেই কমানো সম্ভব নয়- যদি না মানুষকে নৈতিকভাবে শুদ্ধ করে তোলা যায়। এর সব চাইতে বড় প্রমাণ ভারত কন্যা ধর্ষণ এবং হত্যাকা-ের পরেও ঘটে যাওয়া বহু ঘটনা। ভারতে ধর্ষণের মাত্রা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকার পেছনে আসলে ভারতীয়দের নৈতিক অন্তসারশূন্যতাই প্রমান করে। ভারতে হিন্দু এবং মুসলমান উভয় ধর্মের লোকের বসবাস যারা ধর্মীয় দিক থেকে প্রচ- রক্ষণশীল। কিন্তু আধুনিকতার চাপে এবং পশ্চিমা সভ্যতার অন্ধ অনুকরণে ভারত আজ নৈতিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক রীতিনীতি বিসর্জন দিতে বসেছে।
টেলিভিশন, সিনেমায় প্রবল জোয়ার এখন নগ্নতাস ও বেহায়াপনার। চলচিত্র এবং নাটকে অভিনয় করা এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরকে তারা রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও বেশি ভক্তি করে। এমনকি রাজনীতিবিদরাও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকা-ে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন, ভোট প্রাপ্তির কৌশল মনে করে তাদের সমর্থন ও এসব অনুষ্ঠানে হাজির করানোকে। অশ্লীলতা, নগ্নতাকে মনে করা হচ্ছে আধুনিকতা। আধুনিক হতে গিয়ে মানুষ বিশেষ করে নারীরা পরিণত হয়েছে আধুনিক বেশ্যায়, যা তাদের নৈতিক শক্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
তাই ধর্ষণের মত এমন জঘন্য অপরাধ তাদের দ্বারা ঘটা নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। ভারতের পেটে ঢুকে থাকা বাংলাদেশেও পড়ছে এর প্রভাব। বাংলাদেশের আকাশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের ছড়াছড়ি। এসব দিকে কোন অংশেই বাংলাদেশ ভারত থেকে পিছিয়ে নেই। ভারতে মুক্তি পাওয়া সিনেমা সাথে সাথেই বাংলাদেশে সিডি ডিভিডি আকারে পাওয়া যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার জয় জয়কার থাকায় বর্তমানে রাষ্ট্র ধর্মীয় দিকগুলো দেখে থাকেনা। ব্যক্তি উদ্যোগে মানুষকে ধর্মীয় দিকগুলো আয়ত্ব করতে হয়। আর এটি স্বাভাবিক যে সমষ্টিগত জীবন যেভাবে চলে ব্যক্তি জীবন ধীরে ধীরে সে দিকেই ধাবিত হয়। ব্যক্তি এবং সামষ্টিকের এই লড়াইয়ে ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবেই পরাজিত হয়।
সুতরাং মানুষকে নৈতিকভাবে চরিত্রবান এবং সচেতন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাষ্ট্রেরই ভূমিকা পালন করা উচিত। এতে করে রাষ্ট্রেরই লাভ। কারণ মানুষ ভোগ বিলাস প্রিয় হলেও ভোগ বিলাসে ডুবে গিয়ে তারা এক সময় নৈতিক চরিত্র হারিয়ে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। সেই অপরাধ ঠেকাতে কিন্তু রাষ্ট্রকেই বেগ পেতে হয়। সুতরাং প্রাথমিক পর্যায় থেকেই মানুষকে নৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার কোন বিকল্প নেই। এই কথাটি যত দ্রুত আমাদের নেতা-নেত্রী ও দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হবেন- মানব জাতির জন্য, মানবতার জন্য তা ততই মঙ্গলজনক। নতুবা শাস্তির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক, কঠোর থেকে কঠোরতম ইত্যাদি চিত্তাকর্ষক শব্দ জোড়া হলেও অপরাধ কমবে না- যেমন এখন পর্যন্ত কমেনি।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার সব গুলো কথার সাথে ১০০% একমত হতে পারছিনা। তবু আপনার মানবপ্রেমের প্রসংসা করছি। ধন্যবাদ।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০১
উড়োজাহাজ বলেছেন: ১০০% সহমত আশা করছিনা । তবে যেটুকুতে একমত হয়েছেন তাতেই নিজেকে ধন্য মনে করছি।
তবে যে ব্যাপারে একমত হতে পারছেন না তা জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। সেই সাথে নিজেকে শোধরাতেও পারব বলে মনে করছি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০
শাহ আলম বাদশাহ বলেছেন: সহমত