নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্মীয় সন্ত্রাস তথা জঙ্গিবাদ বর্তমান পৃথিবীর এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে মুক্ত নেই আমাদের দেশ এবং আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশীয় অঞ্চলটিও। পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ জঙ্গিবাদের শিকার হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ভারতেও। ভারতের পার্লামেন্ট ভবন এবং মুম্বাইয়ের হোটেল তাজ এবং ওবেরয় হামলা ছিল এ যাবতকালে সবচেয়ে আলোচিত জঙ্গি হামলা। বাংলাদেশেও কমবেশি রয়েছে জঙ্গিদের কার্যক্রম। ২০০৫ সালে একই দিনে একযোগে ৬৩টি জেলায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবি। এরপরে কিছু দিন তারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা করে বেশ কিছু মানুষ হতাহত করে। পরবর্তীতে এদের হোতাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানোর মধ্য দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এছাড়া আরও কিছু সংগঠনের কার্যক্রম ছিল যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোমা ফাটিয়ে অনেক মানুষ হতাহত করেছে। আপাতত নিয়ন্ত্রণে এলেও প্রকৃতপক্ষে তারা একেবারে নির্মূল হয়ে যায় নি। মাঝে মাঝেই তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। জঙ্গিবাদ এমন এক সমস্যা যা যে ধর্মের অনুসারীরাই করে থাকুক না কেন, যে সংগঠনের মানুষই করে থাকুক না কেন তা পুরো মানব জাতির জন্যই এক ভয়াবহ সমস্যা, বড় ধরনের এক অভিশাপ।
বর্তমানে আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। পাশাপাশি চলছে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান। তবুও দিন দিন জঙ্গিবাদ বেড়েই চলছে। এখানে বলা দরকার যে জঙ্গিবাদ নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ব্যাপক হাকডাক কিংবা মাথাব্যথা থাকলেও জঙ্গিবাদ উত্থানের কারণ এবং নিয়ন্ত্রণের সঠিক পন্থাটি তারা ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এছাড়াও আদৌ তারা জঙ্গিবাদ দমন করতে চান না কি জঙ্গিবাদ নিয়ে ইঁদুর বেড়াল খেলা চালিয়ে যেতে চান তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। জঙ্গিবাদের সংজ্ঞা এবং এর উত্থানের পেছনে এককভাবে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের টার্গেট করাও একটি বড় সীমাবদ্ধতা এবং সেই সাথে প্রতারণার শামিলও বটে।
জঙ্গিবাদী কর্মকা- পৃথিবীর প্রায় সব ধর্ম এবং বহু সংগঠন চালিয়ে গেলেও বর্তমানে শুধু ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের অর্থাৎ মুসলমানদেরকে জঙ্গিবাদী বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের একটি একচোখা দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। এখানে মনে রাখা ভাল যে জঙ্গি শব্দটি এসেছে ফার্সি জঙ্গ শব্দ থেকে। জঙ্গ থেকে জঙ্গি। যার অর্থ হচ্ছে যোদ্ধা, অর্থাৎ যে যুদ্ধ করে। ইংরেজিতে ঋরমযঃবৎ. কিন্তু বর্তমানে এই জঙ্গি শব্দটি শুধুমাত্র মুসলিম যোদ্ধাদের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে- যদি তা ভৌগোলিক স্বাধীনতার দাবিতে হয় তবুও। তাদেরকে যোদ্ধা কিংবা মুক্তিযোদ্ধা না বলে বলা হচ্ছে সন্ত্রাসী, ঞবৎড়ৎরংঃ. অথচ এ ভারত এবং বাংলাদেশেই চরমপন্থি, নকশালপন্থি বিভিন্ন দল রয়েছে যারা ধ্বংসাত্মক কাজে কোন অংশেই এই মুসলিম যোদ্ধাদের চেয়ে কম নয়। পরিসংখ্যান দাঁড় করালে দেখা যাবে ভারতবর্ষ ভাগ হওয়ার পর থেকে মুসলমান জঙ্গিরা যত হত্যা, গুম ও লুণ্ঠন করেছে তার তুলনায় তারা হাজার গুণের চাইতেও বেশি করেছে। এমনকি তারা থানা লুট করেছে, পুলিশের গাড়িতে বোমা ফাটিয়েছে, সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু তবুও তাদেরকে ঘুণাক্ষরেও জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করা হয় না। শুধুমাত্র মুসলমানরা এ ধরনের (তাদের তুলনায়) সামান্য কিছু করলেই সমস্ত মিডিয়াসহ সারা পৃথিবীতে তোলপাড় হয়ে যায়। হোয়াইট হাউস, পেন্টাগণ, ডাউনিং স্ট্রীটসহ সমস্ত পৃথিবী সরগরম হয়ে ওঠে। ঘটনা ঘটার সাথে সাথে মিডিয়া সন্ত্রাসীদের সকল অতীত কর্মকা-ের ডাটা ভয়াবহতা বহুগুণে বাড়িয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরে। কিন্তু সেই চরমপন্থিসহ অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা যখন হামলা করে তাকে কখনো জঙ্গি কর্মকা- বলে আখ্যা দেওয়া হয় না।
দুটো উদাহরণ দিচ্ছি। ২০১১ সালে ২২জুলাই নরওয়ের ওসলোর অটোয়া নামক একটি পর্যটন নগরীতে ব্রেইভিক (অহফবৎং ইবযৎরহম ইৎবরারশ) নামক এক উগ্রবাদী খ্রিস্টান যুবক এলোপাথারী গুলি করে ৯২ জন সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে এবং সেই সাথে আরো ২৪২জনকে আহত করে। সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে সে আবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস এলাকায় বোমা ফাটিয়ে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি করে। ঘটনার আকস্মিকতায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনী প্রথমে ধরেই নিয়েছিল এটি উগ্রবাদী মুসলিম জঙ্গিদের কাজ। প্রথমত এ নিয়ে বেশ হৈ চৈ হলেও পরে যখন দেখা যায় সন্ত্রাসী যুবক একজন উগ্রবাদী খ্রিস্টান, তখন সংবাদপত্রের পাতায় আর তেমন খবর আসেনি। স্বল্পকালীন সময় ধরে চলা বিচারে ৯২জন মানুষ খুন এবং আরো ২৪২ জনকে আহত করার দায়ে তাকে শাস্তি দেওয়া হয় মাত্র ২১ বছরের জেল। এখানেই থেমে নেই। তাকে নাকি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জেল থেকে সে নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনারত বাংলাদেশি এক যুবক রেজওয়ানুল আহসান নাফিস মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ফুসলিয়ে তাকে ফেডারেল ভবন উড়িয়ে দেবার কাজে জড়িত করে। তারা তাকে প্রথমত বোমা মেরে ফেডারেল ভবন উড়িয়ে দেবার জন্য প্ররোচিত করে এবং সেই সাথে বোমা সরবরাহ করে। অবশেষে যখন বোমা ফাটানো হবে তখন তাকে আটক করা হয়। পরে আদালতের বিচারে তাকে ত্রিশ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়। এফবিআইয়ের কথিত এ অভিযানের নাম স্ট্রিং অপারেশন (ঝঃৎরহম ঙঢ়বৎধঃরড়হ), যা যুক্তরাষ্ট্রে নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ বৈধ। এরকম হাজারো উদারহরণ দেওয়া যায় যেখানে ভিন্ন ধর্ম অবলম্বনকারীদের বড় বড় জঙ্গি কার্যক্রমের অপরাধকে জঙ্গি কার্যক্রম হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয় না। কিন্তু নিরপরাধ মুসলমানদের ধরে নিয়ে বছরের বছর জেলে বন্দি করে রাখা হয়, নির্যাতন করা হয়, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিন্তু নিজেদের ধর্মের লোক তা করলেও কোনভাবেই তা জঙ্গি কার্যক্রমের পর্যায়ে ফেলা হয় না।
এবার ভারত প্রসঙ্গে আসা যাক। ব্রিটিশ শাসনের আগে পর্যন্ত এই উপমহাদেশের মানুষ হিন্দু ও মুসলমানরা একসাথে মিলে মিশে বসবাস করতো। মাঝে মধ্যে রাজনৈতিক কারণে হিন্দু মুসলমানদের মধে যুদ্ধ বাধলেও তা রাজ-রাজড়াদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। সাধারণ মানুষের মাঝে এর কোন প্রভাবই পড়তো না। এমনকি সেসব বিষয় নিয়ে তারা চিন্তাও করতো না। ময়দানে লড়াই বাধলেও পাড়ায় পাড়ায় হিন্দু মুসলমানগণ ঠিকই মিলে মিশে বসবাস করতো। কিন্তু এই উপমহাদেশে ধূর্ত ব্রিটিশ খ্রিস্টানরা যখন বণিকের বেশে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে রাজ ক্ষমতার দিকে লোলুপ দৃষ্টি ফেলে তখন তারা হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষ ছড়িয়ে দেয়। ফলে এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাঙ্গনের সুযোগে তারা শাসন ক্ষমতা হস্তগত করে। এরপরে তারা দীর্ঘ দু’শো বছর এই দুটি সম্প্রদায়কে পদানত করে শাসন কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় এই ধূর্ত খ্রিস্টান বৃটিশদের নীতিই ছিল ভাগ কর এবং শাসন কর (উরারফব ধহফ জঁষব). এ সময়ে তাদের গৃহীত নীতি হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি করে ভয়াবহ অনৈক্য ও বিভেদ।
সে সময় তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দাঙ্গাও হয়। তারপর তারা চলে গেলেও এমন অবস্থা করে দিয়ে গেল যে এখন পর্যন্ত আর এ জাতিদ্বয়ের মধ্যে ঐক্যের সৃষ্টি হয়নি। তারা ভাগ করে দিয়ে গেলো হিন্দুস্থান এবং পাকিস্তান নামে দুটি দেশ। এবার হিন্দুস্থান এবং পাকিস্তান বর্ডারের এই পার থেকে ওপাড়ে গুলি ছোড়ে, বেড়া দেয় এবং একে অপরের বেড়া ভাঙ্গে এবং কখনো কখনো বেড়া ভেঙ্গে একে অপরের দেশ দখল করে। আর এদের মাঝে যে সংখ্যালঘু সদস্যরা থাকে তারা হয় উভয় পক্ষের নির্যাতনের শিকার, ঘর-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ। গুজরাট দাঙ্গা এবং সাম্প্রতিক উত্তর প্রদেশের মোজাফফরনগরের দাঙ্গা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অভিযোগ আছে ভারতের গুজরাটে এ দাঙ্গাগুলোতে হিন্দু উগ্রবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন স্বয়ং গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যিনি বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিজেপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী আধুনিক ভারতে ইসলামী জঙ্গিবাদ নামে যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তার পেছনে রয়েছে ভারতীয় প্রশাসনের দূর-দৃষ্টিভঙ্গির অভাব এবং সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি রাষ্ট্রীয় বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি।
এ বৈষম্য রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, সরকারি চাকুরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। আর এটি একটি জানা বিষয় যে কোন একটি সম্প্রদায় হোক সে মুসলিম, হোক সে হিন্দু, হোক সে বৌদ্ধ অথবা খ্রিস্টান কিংবা অন্যকোন জাতি, কিংবা কোন ব্যক্তি- সে যখন সামগ্রিকভাবে বঞ্চিত হয়, বিচার চেয়ে বিচার না পায় তখন তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদের হাতেই প্রতিরক্ষার ভার তুলে নিতে হয়। সামান্য একটা বিড়ালও যদি কুকুরের ধাওয়া খেয়ে কোন কোণে আশ্রয় নেয় এবং তার আর পেছনে পালাবার পথ থাকে না, তখন সেও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তখন সে কুকুরকেও তাড়া দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। আর বিক্ষুব্ধ ও বিপদের পড়া মানুষ কিংবা পশুর আচরণও তখন প্রচলিত নীতি মানে না। তেমনি মরিয়া মানুষের আচরণও স্বাভাবিক হওয়ার কথা নয়।
অন্য দিকে স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার নজির পৃথিবীর বুকে ভুরি ভুরি রয়েছে। ভারতেই কাশ্মীরী জনতা ছাড়াও সেভেন সিস্টারসখ্যাত (ঝবাবহ ঝরংঃবৎং) সাতটি প্রদেশের স্বাধীনতার দাবিকে ভারত পদদলিত করে যাচ্ছে এবং তাদের কার্যক্রমকে রাষ্ট্রদ্রোহী এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে আখ্যায়িত করছে, যেভাবে বৃটিশদের সময়ে ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা সেনদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। কিন্তু ভারতের মুসলমানদের এই দাবিকে হিসেব করা হচ্ছে ইসলামি সন্ত্রাসবাদ হিসেবে। কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন এর মধ্যে অন্যতম। এর অধিবাসীর বেশিরভাগই মুসলিম। তবে এটা সত্য যে ভারতে উগ্রবাদ একেবারেই নেই তা নয়। প্রকৃতপক্ষে এই উগ্রবাদের জন্মদাতা হিসেবে দায়ি স্বয়ং ভারত নিজেই। ভারতের এই মুসলমানদের পক্ষ থেকে উগ্রবাদের সূচনা হয়েছে ১৯৯২ সালে বিজেপি সরকারের আমলে উগ্রবাদী হিন্দু কট্টর মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের দ্বারা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পর থেকে। এর মধ্য দিয়েই ধীরে ধীরে সারা ভারত জুড়ে কমবেশি উগ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ, তল্লাশি, নির্যাতন দিন দিন এ আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামে একটি সংগঠনের শীর্ষ নেতা ইয়াসিন ভাটকাল নামক এক ৩২ বছর বয়সী যুবককে আটক করা হয়েছে। এ যুবককে গ্রেফতারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে খুব একটা তথ্য না থাকা সত্ত্বেও তিনি তড়িঘড়ি করে সংবাদ মাধ্যমে পুলিশের এই অভূতপূর্ব সফলতার কাহিনী প্রকাশ করেন। এর কারণ হচ্ছে গত পাঁচ বছর যাবত বেশ কিছু সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটিয়ে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামে একটি সংগঠন দায় স্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমের কাছে বার্তা প্রেরণ করে আসছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এ সংগঠনের একজন সদস্যকেও গ্রেফতার করা যায় নি। তাই সন্দেহ দেখা গিয়েছিল আসলেই এ সংগঠনের অস্তিত্ব ভারতে সত্যিই আছে কি না! ভাটকালের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এই সংগঠনটির অস্তিত্ব প্রমাণিত হলো। যার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এত উত্তেজনা।
ভারতে উগ্র সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গবেষণা করছেন কিশলয় ভট্টাচার্য নামে একজন গবেষক। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন সম্পর্কে তিনি বলেন, “ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন হলো পুরো হোম গোউন গ্রুপ (ঐড়সব এৎড়হি এৎড়ঁঢ়) বা স্বদেশে জন্ম নেওয়া সংগঠন। অর্থাৎ ভারতের মাটিতেই তাদের জন্ম। পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর কিংবা বাংলাদেশে তাদের শেকড় নেই। অন্যান্য আরো কিছু জঙ্গি সংগঠনের মত বিদেশের মাটি থেকে তারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। তিনি আরো বলেন, “১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর ভারতে যে নানা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটেছিল তখন থেকেই তরুণ মুসলিম সমাজের মধ্যে রেডিকেলাইজেশনের (জধফরপধষরংধঃরড়হ) সূত্রপাত হয়। এর মধ্য দিয়েই জন্ম নেয় স্টুডেন্ট ইসলামিক মুভমেন্ট ইন ইন্ডিয়া (ঝঃঁফবহঃ ওংষধসরপ গড়াবসবহঃ রহ ওহফরধ) বা সিমি।
সেই ইসলামিক ছাত্র সংগঠন সিমি যা পরে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। তাদের থেকে মতাদর্শ ধার করেই এগিয়েছে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন।” নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা কেউ কেউ ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-এ তৈয়বার যোগসাজসের কথাও বলেছেন। কিন্তু কিশলয় ভট্টাচার্য জোর দিয়ে বলেছেন এ সংগঠনের সদস্যরা সবাই ভারতীয়, ভারতের মাটি থেকেই তাদের উৎপত্তি এবং এটাই তাদের আসল শক্তি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই সহজ সত্যটি ভারতীয় প্রশাসন কিছুতেই আমলে আনতে চায় না। তারা এও অনুধাবন করেন না যে শক্তি দিয়ে কোন দমন করা যায় না। আদর্শ দিয়েই আদর্শকে দমন করতে হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে সংখ্যাগুরু এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক বা আরএসএস (জ.ঝ.ঝ) এর মত উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়া, মুসলমানদেরকে নির্যাতন, তাদের মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা এবং দাঙ্গা সৃষ্টি করাকে প্রশ্রয় দিয়ে কোনভাবেই ভারত নিজেকে জঙ্গি টার্গেট থেকে মুক্ত করতে পারবে না। কারণ জঙ্গিবাদের জন্য ক্ষেত্র সৃষ্টি করে দিচ্ছে স্বয়ং ভারত নিজেই। এ ছাড়াও আরও একটি বিষয় যা তারা তাদের অন্যতম সারথি ইসরাইল ও আমেরিকার কাছ থেকে শিক্ষালাভ করেছে, আর তা হলো নিজেরাই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটিয়ে দোষ ইসলামি জঙ্গিদের উপর চাপিয়ে দেওয়া। গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে দেখা যায় যে, মুম্বাইয়ের তাজ ও ওবেরয় হোটেলে হামলার ঘটনায় ছোট নৌকা দিয়ে পাকিস্তান থেকে শতাধিক মাইলের সাগর পথ পাড়ি দিয়ে সন্ত্রাসীরা ভারতের মুম্বাইয়ে এসে হামলা করে।
কিন্তু ভারতের নিজস্ব স্যাটেলাইট, রুশ-ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সমুদ্র পাহারা দেওয়ার শক্তিশালী রাডার ও সোনার স্ক্যানার, মহাকাশে থাকা প্রতিরক্ষা স্যাটেলাইটের দৃষ্টি এড়িয়ে, নৌবাহিনীর কোস্টগার্ডের টহল এড়িয়ে তা কিভাবে সম্ভব এর উত্তর আজও মেলেনি, যদিও এই মামলায় আহমদ আজমল কাসাভ নামে পাকিস্তানীকে ফাঁসি কার্যকর করে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (ঈইও) বিশেষ তদন্তকারী এক সদস্য জানিয়েছেন কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়, বরং ভারত সরকারই দেশটির পার্লামেন্ট এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা চালিয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ খবরটি ভারতে ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি আর.ভি.এস মানি দেশটির সুপ্রিমকোর্টে এক লিখিত জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, “সিবিআই-এসআইটি দলের সাবেক সদস্য সতীশ ভার্মা তাকে বলেছেন সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের স্বার্থে ভারত সরকারই দু’টি হামলা চালিয়েছে।
এছাড়াও ভারতীয় পুলিশ পুরস্কার পাওয়ার আশায় সাধারণ নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গি হত্যা করা হয়েছে মর্মে উপরস্থ কর্মকর্তাদের কাছে জানাচ্ছেন। এই যদি হয় বাস্তবতা, রাষ্ট্রই যখন সন্ত্রাসের জন্ম দেয় তখন সন্ত্রাসীদের দোষ দিয়ে লাভ কি? আর এর দায় মুসলিমদের উপর চাপানো হলে প্রকৃত জঙ্গি হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা থাকে কি?
এতো গেল একটি দিক। এখানে মনে রাখতে হবে আমার বক্তব্যের দ্বারা আমি জঙ্গিবাদকে জায়েজ করার চেষ্টা করছি না মোটেই। আমি আগেই বলেছি, জঙ্গিবাদ যে কারো দ্বারাই বাস্তবায়িত হোক না কেন তা পুরো মানবজাতির জন্যই হুমকিস্বরূপ। এর মধ্য দিয়ে এ পর্যন্ত কোন সমাধান আসেনি। বহু তরুণের প্রাণ ঝড়েছে, বহু পিতামাতা হারিয়েছে তার সন্তানকে, বহু সন্তান হারিয়েছে তারা পিতাকে। পৃথিবীতে বেড়েছে কেবল কান্না, ঘৃণা আর ধ্বংস। কিন্তু যারা এ জঙ্গিবাদের জন্ম দিচ্ছেন এবং জঙ্গিবাদে দীক্ষিত হচ্ছেন তারা উভয়ই ভুল করছেন।
নির্যাতিত হয়ে রাগে, দুঃখে, অভিমানে, ক্ষোভে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে বহু মানুষ তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। নিজের পেটে বোমা বেঁধে শত্রুসহ নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। এতকিছু করার পরও তাদের অর্জন কতটুকু? কোন অর্জন নয়, বরং দিন দিন তারা আরো হারাচ্ছেন। সারা পৃথিবীতে মুসলমানরা আজ উগ্র, হিং¯্র ও অসহিষ্ণু জাতি হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইসলাম বিদ্বেষী চক্র কৌশলে তাদের মধ্যে অন্য জাতির প্রতি ঘৃণাকে উস্কে দিয়ে তাদের ধ্বংস করার জন্য অস্ত্র সরবরাহ ও বিক্রি করছে। আবার তারাই তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করছে অতঃপর গুলি করে, বোমা মেরে, ড্রোন দিয়ে ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যা করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে এত ত্যাগ, এত কোরবানী করার পরও কেন তারা বিজয় লাভ করতে পারছেনা, বরং দিন দিন তাদের অবস্থা কেন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে? এর একটিমাত্র উত্তর হচ্ছে এ জাতি তাদের নেতা, শেষ রসুলের আদর্শ ত্যাগ করে আল্লাহর লানতের বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
লানতের বস্তু হওয়ায় এ জাতি আজ আল্লাহর সাহায্য পাচ্ছে না। তারা সন্ত্রাবাদের মত ভুল পথ বেছে নিয়েছে। তাদের একক কোন নেতৃত্ব নেই, বিভিন্ন জন বিভিন্ন ও বিচ্ছিন্নভাবে যে যার মত সংগ্রাম করছে, সেই সাথে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বিক্ষুব্ধ আচরণ করছে। তারা জানে না যে বিচ্ছিন্ন এ আন্দোলনে কোন জাতি নিজেদের উন্নয়ন ঘটাতে পারে না। ইসলামে কোন কতৃপক্ষ (অঁঃযড়ৎরঃু) কর্তৃক অর্থাৎ সার্বভৌম নেতার হুকুম ছাড়া সংগ্রাম বৈধ নয়। বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমানে তাদেরকে হুকুম দেওয়ার মত নেতৃত্ব কিংবা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত নেই।
সুতরাং এই মুহূর্তে সশস্ত্র সংগ্রাম করাও অর্থহীন। এখন সময় হচ্ছে নিজেদের মধ্যে বিবদমান মতভেদ ও অনৈক্যকে মিটিয়ে একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমার এ বক্তব্যে কেউ কেউ আপত্তি তুলতে পারেন এই বলে যে এমনভাবে নির্যাতিত হওয়ার পর শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে না নেওয়ার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। একদৃষ্টিতে এটা ঠিক যে, জাতির এ দুরাবস্থায় কিছু না করে বসে থাকাটাও সমীচিন নয়, কিন্তু এমন বিচ্ছিন্নভাবে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েও তো কোন লাভ হচ্ছে না।
বেহুদা ক্ষয় হচ্ছে প্রাণ। ট্যাঙ্ক, কামানের সামনে গুলতি নিয়ে মোকাবেলা করে শুধু মার খাওয়ার, আত্মহত্যার কোন মানে হতে পারে না। সুতরাং এই প্রাণহানী, ক্ষয়-ক্ষতি সবই বৃথা। যারা আল্লাহ ও রসুলের জন্য উৎসর্গীকৃত হয়ে নিজেদেরকে এ পথে কোরবান করছে তাদের মনে রাখতে হবে শত নির্যাতন সত্ত্বেও রসুলাল্লাহ মক্কায় থাকা অবস্থায় কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন নি। কিন্তু তিনি হেযরতের পর মদিনায় গিয়ে একটি ভূ-খ-ের সর্বময় কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর সামান্য সময়ের জন্যও আর অপেক্ষা করেন নি। দীর্ঘ তেরশত বছর আগেই এ জাতি তার নেতা, শেষ রসুলের আরদ্ধ কাজ ত্যাগ করার ফলে তার আল্লাহর লানতের শিকার হয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে উৎসর্গীকৃত এসব নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা আবার চাইছে আল্লাহর দীনকে পৃথিবীতে সমুন্নত করতে। কিন্তু রসুলের আদর্শ ত্যাগ করে, অন্যান্য মানব রচিত জীবন বিধানের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে তারা নিজেদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে। এমনকি দীন প্রতিষ্ঠার নীতি ও প্রক্রিয়া ত্যাগ করে ঐসব জীবন ব্যবস্থার আদলে একে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্ট করছে। সন্ত্রাসবাদ তার মধ্যে অন্যতম একটি। ঠিক এমনি ইহুদি জাতি তাদের নবী ঈসা (আঃ) কে প্রত্যাখ্যান করার শাস্তি হিসেবে আল্লাহর দেওয়া লানতের কারণে দীর্ঘ দুই হাজার বছর পৃথিবীর অন্যসব জাতিগুলোর হাতে নিগৃহিত হয়েছে, মার খেয়েছে, অপমানিত হয়েছে এবং সর্বশেষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের হাতে প্রচ- মার খাওয়ার মাধ্যমে সম্ভবত তাদের উপর থেকে আল্লাহর লানত উঠে গেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তারা পৃথিবীর উপর একটি ভূ-খ-ের মালিক হয়েছে। তাই আজ যারা জঙ্গিবাদে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছেন তাদের উচিত হবে প্রথমত, নিজেদের বিভেদ- ব্যবধান ঘুচিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, নির্দিষ্ট একটি প্লাটফর্মে দাঁড়ানো, শিয়া-সুন্নির মত বিভিন্ন বিভক্তি ত্যাগ এবং এক আল্লাহ, এক কোরআন এবং রসুলের উম্মাহ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং সর্বোপরি একজন নেতার হুকুমের অধীনে আসা। সেই সাথে ইসলামের সঠিক আকীদা অর্থাৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিজেদের ধারণাকে পরিষ্কার করা ও ইসলাম বিদ্বেষী ও ইসলামের শত্রুদের সৃষ্ট ইসলামকে কলঙ্কিত করার ফাঁদে না পড়ে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করা।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: ভুল বললেন, রাজনীতি থেকে অধর্মকে বিদায় করাই একমাত্র সমাধান।
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: সমাধান? নেই। বাড়ছে মানুষ জীবন জটিল হচ্ছে বাড়ছে সমস্যা।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: সব কিছুরই একটা শুরু যেমন আছে তেমন শেষও আছে। অন্ধকারের পেছনেই আলো আছে। হতাশ হতে নেই।
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০১
আিম এক যাযাবর বলেছেন: "হাজারো উদারহরণ দেওয়া যায় যেখানে ভিন্ন ধর্ম অবলম্বনকারীদের বড় বড় জঙ্গি কার্যক্রমের অপরাধকে জঙ্গি কার্যক্রম হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয় না। কিন্তু নিরপরাধ মুসলমানদের ধরে নিয়ে বছরের বছর জেলে বন্দি করে রাখা হয়, নির্যাতন করা হয়, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিন্তু নিজেদের ধর্মের লোক তা করলেও কোনভাবেই তা জঙ্গি কার্যক্রমের পর্যায়ে ফেলা হয় না।"
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: ভুল বললাম কী?
৪| ০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:১৪
বাংলার ঈগল বলেছেন: এই সত্যটি উপলব্ধির মত যোগ্যতা আজ মুসলমানরা হারিয়ে ফেলেছে! আর অন্য ধর্মের লোকেরা মিডিয়াকে ব্যবহার করে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে।
০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:৫২
উড়োজাহাজ বলেছেন: এই জন্য মুসলমাইন্যাদের দেখলে আমার মুঞ্চায় চাবাইয়া খাইয়া ফালাই। আমি সম্ভবত তাদরে চেয়ে বেশি ঘৃণা করি নামধারী এই সব মুসলমাইন্যাদেরকে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ধর্ম কে রাজনীতি মুক্ত করা গেলে হয়ত এ সমস্যার সমাধান সম্ভব ।।