নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু গণতন্ত্র কবে নিজ পায়ে দাঁড়াবে?

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৯



ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পরে পরেই এই উপমহাদেশে গণতন্ত্রের আগমন। আসলে প্রায় দুইশত বছর গোলামীর পর আমাদের দেশের শিক্ষিত শ্রেণিটি ইউরোপের শেখানো চিন্তা চেতনার বাইরে ধারণা করতে শেখেনি। তাই ইউরোপীয়রা যখন আপসে স্বাধীনতা দিয়ে গেল তখন এদেশীয় শিক্ষিত শ্রেণিটি ইউরোপিয়ানদের চর্চিত গণতন্ত্র ছাড়া আর কোন জীবনব্যবস্থা তাদের জাতীয় জীবনে বাস্তবায়নের কল্পনাও করতে পারে নি। পাকিস্তান এবং ভারত দু’টি দেশ ধর্মের ভিত্তিতে আলাদা হলেও ধর্মের নির্দেশনা দিয়ে দেশ শাসিত হতে পারে তা তাদের ধারণারও বাইরে। এটি ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য যতটা না উপযুক্ত, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম পাকিস্তানের জন্য ততই অনুপযুক্ত। কারণ, হিন্দু ধর্মে জাতীয়ভাবে প্রযোজ্য আইনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অর্থাৎ হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়। কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে তা নয়। এর প্রায় সব বিধানই রাষ্ট্রীয় অর্থাৎ সমষ্টিগতভাবে পালনের জন্য রচিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান প্রথমত ধর্মের আদলে যাত্রা শুরু করলেও কিছুদিনের মধ্যেই তা থেকে সরে আসে। সে দেশে একের পর একজনের হাত ধরে শুরু হয় সামরিক শাসনের পদযাত্রা। যে ধর্মীয় আবেগের মধ্য দিয়ে এ যাত্রার শুরু তা থেমে যায় গোড়াতেই। অন্যদিকে শাসকগণ প্রকৃতভাবে ধর্মের রক্ষক না হয়ে নিজেদের মনমত শাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখায় পাকিস্তানের রাজনীতিতে ধর্ম হয়ে উঠে একটি বিতর্কিত বিষয়। ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দুটি ধারায় শিক্ষিত জনগণের বিভক্তির কারণে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। এ দ্বন্দ্বের কারণে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি কোমর সোজা করে দাঁড়াতে সক্ষম হয় নি। অন্যদিকে ভারত শুরু থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতার আদলে গ্রহণ করে পাশ্চাত্য গণতন্ত্র। স্বাধীনতা পরবর্তী কিছু (প্রায় ২১ বছর) সময় পার করে বাংলাদেশও গ্রহণ করে পাশ্চাত্যের আদলে গড়া গণতন্ত্রকে। কিন্তু দীর্ঘ ৪২ বছর অতিক্রম করে এই দেশে গণতন্ত্র এদেশের মানুষকে কি দিলো? আমরা যদি গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখতে পাব কথিত গণতন্ত্র এখনো সম্ভবতঃ মায়ের গর্ভেই রয়ে গেছে। অবশ্য আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা প্রায়শঃই বলে থাকেন গণতন্ত্র এখনো তার শিশুকাল অতিক্রম করে নি।

তাই অবাক হতে হয় ইউরোপে যে জীবন ব্যবস্থাটি দীর্ঘ ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে জীবন ব্যবস্থাটি এখন পর্যন্ত ইউরোপ আমেরিকাকে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত করতে পারলেও তাদেরকে আত্মিকভাবে পশুপর্যায়ে নামিয়ে দিয়েছে, তাদের দেশকে অপরাধের তালিকায় শীর্ষস্থানে পৌঁছে দিয়েছে- তা স্বচক্ষে দেখেও শুধুমাত্র তাদের বাহ্যিক উন্নতি ও চাকচিক্য দেখে আমরা আকৃষ্ট হচ্ছি। আমাদের দেশের প্রবর্তন করতে চাচ্ছি সেই গণতন্ত্রকে। প্রশ্ন হচ্ছে কতকাল একে চর্চা করলে আমরা অন্ততপক্ষে বাহ্যিকভাবে হলেও তাদের সমপর্যায়ে উন্নীত হতে পারব? আত্মিক দিকটির কথা না হয় বাদই দিলাম। যদিও আত্মিক শূন্যতা নিয়ে কোন জাতি কোনদিন তার স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না। ঠিক যেভাবে মানুষ এক পায়ে হাটতে পারে না।

গণতন্ত্রে নির্বাচন এবং ভোট দুটি অপরিহার্য এবং মৌলিক বিষয়। কিন্ত আমাদের অবস্থা এই যে এখনও আমরা এই স্তরে পৌঁছাতে পারি নি যে জনগণ দ্বারা নির্বাচিত একটি দলের অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। অনেক আন্দোলন, অনেক রক্ত দিয়ে তাই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামে একটি সরকার ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছি। বর্তমান সময়ে যদিও তা আদালত দ্বারা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আইন করে কি মানুষের বিশ্বাসে পরিবর্তন আনা যায়? বিশ্বাস মানুষের অন্তর্গত বিষয়। বর্তমান বিরোধীদল এবং তাদের সমমনা দলগুলো মনে করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের অধীনে কোন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কিন্তু আওয়ামীলীগ চাইছে ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করতে। এমন কি তারা এও বলছে যে যদি কোন বিরোধীদল নির্বাচনে অংশ নাও নেয় তবুও তারা নির্বাচন করেই ছাড়বে।

এমতবস্থায় জনসাধারণের একটি অংশ প্রশ্ন তুলছে এই কী তাহলে আমাদের গণতন্ত্রের অর্জন? এখন পর্যন্ত আমরা গণতন্ত্রের প্রাথমিক ও মৌলিক অংশটুকুই অর্জন করতে পারছিনা, বাকীটুকু কবে হবে? এখনও যদি গণতন্ত্র শিশুকালই অতিক্রম করে থাকতে না পারে তবে কবে সে বড় হবে, কবে সে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং কবে সে নিজের পায়ে হাটবে?

মূল কথা হলো, গণতন্ত্র আমাদের মনমানসিকতার সাথে সামঞ্জস্য নয়। কোন রোগের উপযুক্ত চিকিৎসার পরিবর্তে যদি ভুল ঔষধ দেওয়া হয় তাহলে ক্ষেত্র বিশেষে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। এমন কি ঐ ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। আমাদের অবস্থা প্রকৃতপক্ষে তাই দাঁড়িয়েছে। আমাদের জন্য যে ঔষধ দরকার তা আমরা পাইনি। জোর করে গণতন্ত্র গেলানোয় এখন আমাদের মধ্যে এর পার্শ¦প্রতিক্রিয়া স্বরূপ নিজ জাতির মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এখন আমরা এক দল আরেক দলকে বিশ্বাস করতে পারি না। সুযোগ পেলেই একদল আরেক দলকে নির্মূল করে দেওয়ার চিন্তা করি। ক্ষমতায় গেলে জনগণের চিন্তা না করে ব্যক্তিস্বার্থ ও দলীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করি। দাবি আদায়ের নামে হরতাল, মিছিল-মিটিং, ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও করি। জনগণের জানমালের ক্ষতি করে গণতন্ত্রের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করি।

কিন্তু সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেবার- আমরা কি শুধু গণতন্ত্রের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করব নাকি শান্তি ও সমৃদ্ধির সাথে বসবাস করব। আর কোথায় পাওয়া যাবে এমন একটি জীবনব্যবস্থা যা সব মানুষের মন-মানসিকতা বুঝে তাদের জন্য বিধান দেবে? এটা করার মত যোগ্যতা কি মানুষের রয়েছে?





মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৪:৫৬

পাগলাগরু বলেছেন: এইসব বাল ছাল বাদ দিয়া কাম কাইজ করেন ভাইজান।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৬

উড়োজাহাজ বলেছেন: আহা! খুব লেগেছে ভাইজান?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.