নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কে বৈধ শাসক আর কে অবৈধ শাসক?

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫

আমাদের দেশে ইদানিং বৈধ শাসক আর অবৈধ শাসক নিয়ে একটি বিতর্কের সূচনা হচ্ছে। আসুন জেনে নেই কে বৈধ আর কে অবৈধ!

এ কথা সকল যুক্তির ঊর্দ্ধে যে, কোন জিনিসের স্রষ্টাই ঐ জিনিসের ন্যায়সঙ্গত বিধাতা। কারণ যিনি সেটা সৃষ্টি করেছেন তার চেয়ে ঐ জিনিসের রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবহার, পরিচালনা-পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে ভালোভাবে জানা আর কারও পক্ষে সম্ভব নয়। এই বিশাল বিশ্বজগতের স্রষ্টা আল্লাহ মানুষ জাতি সৃষ্টি করেছেন, এটা প্রশ্নাতীত। প্রথমেই বলে নেই যে, আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাসী অর্থাৎ নাস্তিকদের আমরা এই আলোচনা থেকে বাইরে রাখছি। কারণ সৃষ্টি আছে, নিখুঁত সৃষ্টি আছে কিন্তু তার স্রষ্টা নেই এমন কথায় বিশ্বাসী নিরেট, স্থূল, জড়বুদ্ধিদের কাছে আমার কোন বক্তব্য নেই।

মানবজাতির স্রষ্টা কি জানতেন না তিনি যে সামাজিক জীব মানুষ সৃষ্টি করলেন তার জন্য একটি নিখুঁত জীবনব্যবস্থাও প্রয়োজন? না হলে তাঁর সৃষ্ট ঐ জীব অর্থাৎ মানুষ জাতি নৈরাজ্যের মধ্যে বাস করতে বাধ্য হবে? স্রষ্টা চান না যে তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানবজাতি অন্যায়, অবিচার, রক্তপাত, ক্রন্দন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, এক কথায় অশান্তিতে নিপতিত হোক। তিনি চান তাঁর এই প্রিয় সৃষ্টি সুখে, সমৃদ্ধিতে এক কথায় শান্তিতে থাকুক। এইজন্য তিনি একটি জীবনবিধান পাঠিয়েছেন। আল্লাহর প্রদত্ত এই জীবনব্যবস্থারই নাম হোচ্ছে দীনুল হক বা সত্য দীন অর্থাৎ ইসলাম। এসলামের সর্বশেষ সংস্করণ আল্লাহ পাঠিয়েছেন তাঁর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসুল মোহাম্মদ (দ:) এর মাধ্যমে।



আল্লাহ তাঁকে এই দীনটি সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব অর্পণ করেন। তাঁকে এই দায়িত্ব অর্পণের পর ধারণাগতভাবে এই পৃথিবীতে প্রচলিত সকল জীবনব্যবস্থা, বিধি-বিধান মানবজাতির ন্যায়সঙ্গত বিধাতা আল্লাহ কর্তৃক বাজেয়াপ্ত (Banned) ঘোষিত হয় এবং রসুলাল্লাহ হয়ে গেলেন পৃথিবীতে তখন আল্লাহ’র পক্ষ থেকে একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ। এজন্যই আল্লাহ তাঁর রসুলকে বোলেছেন এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য যে, ‘হে মানবজাতি, আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসুল’ (সুরা আরাফ ১৫৮)। যেহেতু এই সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা ও মালিক (রাজা) আল্লাহ, কাজেই এখানে স্রষ্টা ও মালিকের বিধানই কার্য্যকরী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং তাঁর প্রদত্ত বিধান, হুকুম, জীবনব্যবস্থাকে যারা অস্বীকার কোরবে তারাই হোচ্ছে প্রচলিত ভাষায় বিদ্রোহী (Rebel)। যেমন কোন রাজার রাজত্বে থেকে তার বিরুদ্ধাচারণ কোরে পৃথক শাসন যারা কায়েম করতে চায় তাদেরকে বলা হয় রাজদ্রোহী।

একদল বিদ্রোহীর প্রতি বৈধ শাসকের যে কথাটি বলার থাকে তা হোল, প্রথমত, তোমরা আমার আনুগত্য স্বীকার করো। তোমাদেরকে ক্ষমা করা হবে। দ্বিতীয়ত, যদি আনুগত্য স্বীকার না করো, তোমরা আমার এলাকায় থাকতে পারবে না। তোমরা এই ভূখণ্ড ছেড়ে অন্যত্র চোলে যাও। আমি তোমাদেরকে আটকাবো না। তৃতীয়ত, তাও যদি না যাও, তবে তোমাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দেব এবং আমার শাসনকে নিষ্কণ্টক করব।

মানুষের প্রতি মানুষের স্রষ্টা, প্রভু ও বিধাতা আল্লাহর কথাও তাই। তিনি বোলছেন, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, তাঁর রসুলের আনুগত্য করো এবং আনুগত্য করো তোমাদের আদেশকারীর (আমীর)’ (সুরা নেসা ৫৯)। তাহোলে, “তিনি তোমাদের আমল-আচরণ সংশোধন কোরবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা কোরবেন। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন কোরবে (সুরা আহযাব ৭১)”।

দ্বিতীয়ত আল্লাহ বলেন, “সৃষ্টি যার বিধান তার (সুরা আরাফ-৫৪)। অতএব যারা আল্লাহর সৃষ্টি পৃথিবীতে বসবাস কোরে আল্লাহকে বিধাতা মানতে চায় না, তাদের প্রতি আল্লাহর কথা, “নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের প্রান্ত অতিক্রম করো যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায় (সুরা রহমান ৩৩)। প্রভুর এই ঘোষণা মোতাবেক পৃথিবীতে আল্লাহ ছাড়া আর কারও বিধান বৈধ নয়। যেহেতু আল্লাহই সকলকে সৃষ্টি কোরে তাদের আহার, বাসস্থান, আলো, পানি, বায়ু সমস্তকিছু নিরন্তরভাবে যোগান দিয়ে যাচ্ছেন, তাই এখানে তিনি ছাড়া আর কারও বিধান বৈধ হোতে পারে না। যারা অন্য কোন বিধান দিয়ে পৃথিবী চালাতে চায় তাদের উচিৎ নিজেরা একটি অনুরূপ নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করা, সেখানে মানবজাতির বিকাশ ঘটানো এবং তাদের লালন পালনের যাবতীয় বন্দোবস্ত করা, আলো, পানি, বায়ু, খাদ্য সরবরাহ করা, অতঃপর তাদের বিধাতা হিসাবে নিজেদের তৈরি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদি দিয়ে তাদেরকে শাসন করা। এখানে যারা আল্লাহর হুকুম দিয়ে শাসন কোরবে না তারা আল্লাহর ভাষায় কাফের জালেম ও ফাসেক অর্থাৎ হুকুম অস্বীকারকারী, অন্যায়কারী, অবাধ্য (সুরা মায়েদা ৪৪, ৪৫, ৪৭)। একজন প্রতাপশালী সম্রাট তার হুকুম অমান্যকারী, অবাধ্য প্রজাদের বেলায় যে কাজটি কোরে থাকেন আল্লাহও সেটাই কোরবেন, সেটা হোচ্ছে তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া। সুতরাং এই আল্লাহদ্রোহীরা যদি এই পৃথিবী থেকে বিদায় না হয়, তবে তাদেরকে অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে উৎখাত করা এবং তাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি প্রদান সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত হয়ে যায়। এটাই আল্লাহ বোলেছেন, ‘আমি যখন কোন জনপদ ধ্বংস করতে চাই তখন তার সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিদেরকে সৎকর্ম (আল্লাহর বিধান মানা) করতে আদেশ কোরি, কিন্তু তারা সেখানে অসৎকর্ম (আল্লাহর বিধান অমান্য করা) করে; অতঃপর ঐ জনপদের প্রতি দণ্ডাজ্ঞা ন্যায়সঙ্গত হয়ে যায় এবং আমি সেটা সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করি (সুরা বনী এসরাঈল ১৬)।

আল্লাহর রসুল বিদায় নেওয়ার ৬০/৭০ বছর পর থেকে আল্লাহর নাজেলকৃত দীন বিকৃত হোতে আরম্ভ করে এবং উম্মতে মোহাম্মদী তাদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ সারা পৃথিবীকে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের অধীনে এনে শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠা করার জেহাদ (সর্বাত্মক সংগ্রাম) ত্যাগ করে। যতদিন এই উম্মাহ সঠিক পথে ছিল, তারাই ছিল পৃথিবীতে আল্লাহর নিয়োগকৃত প্রতিনিধি অর্থাৎ খলিফা। যখন তাদের আকীদা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা (Comprehensive Concept) বিকৃত হয়ে গেল, তাদেরকে আল্লাহ ত্যাগ কোরলেন। গত ১৩শ’ বছর পৃথিবীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন বৈধ কর্তৃপক্ষ ছিল না, সুতরাং আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন ঘোষণা প্রদান করার অধিকারীও কেউ ছিল না। সারা পৃথিবীতে ধর্মব্যবসায়ীদের কুক্ষিগত যে ধর্মটি আছে এটা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রকৃত ইসলাম নয়, কাজেই সেটা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আল্লাহর কোন সাহায্য নেই। যদি কেউ কোথাও সেই বিকৃত ধর্মটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কায়েম কোরেও থাকে, সেটা মানুষকে শান্তি দিতে পারে নি, কারণ বিকৃত ইসলাম মানুষকে শান্তি দিতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.