নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আওয়ামী লীগের সাথে জান্নাতেও যাব না, নির্বাচনে গেলে দেশবাসী বেঈমান বলবে, জনগণ আমাকে থুতু দেবে এগুলো হচ্ছে অনেকগুলো অমৃত বচনের মধ্যে কয়েকটি বচন যা এদেশের এককালের দাপুটে স্বৈরশাসক লে.জে (অব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অতি সা¤প্রতিক উচ্চারণ করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে একাধারে এদেশটি শাসন করেছেন ৯ বছর। অতঃপর ’৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার গদি থেকে পতিত হন। পরে শাসনকালে করা বিভিন্ন দুর্নীতির দায়ে তিনি আদালত কর্তৃক ১০ বছরের শাস্তিপ্রাপ্ত হন। যদিও পরবর্তীতে বাংলাদেশের কূটিল রাজনীতিতে তিনি একটি বড় নিয়ামক হয়ে দাঁড়ান এবং তাকে পুরো মাত্রায় সাজা ভোগ করতে হয় নি। পৃথিবীতে সম্ভবত তিনিই একমাত্র স্বৈরশাসক যিনি পতিত হওয়ার পরও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে দাপটের সাথে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিতর্কিত এবং এলোপাথাড়ী কথা বলে নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। জোট করেছেন দুটি বিপরীত মেরুর বড় দলের সাথেই। এমনকি বিভিন্ন তরিকার পীর সাহেবদের সাথেও তার ছিল সখ্যতা। শাসনকালে তিনি প্রায়ই এদেশের একটি বিখ্যাত পীরের দরবারে নিয়মিত হাজিরা দিতেন। এ কারণে সে সময় ঐ বিশেষ দরবারটি রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যতা লাভ করে। সা¤প্রতিক তিনি তেতুল তত্ত্বের জনকখ্যাত হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শফীর কাছে দোয়ার জন্য হাজির হয়েছিলেন যা রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা সমালোচনার খোরাক যোগায়।
বিভিন্ন সময়ে তার করা বিভিন্ন উক্তিতে মানুষ হাস্যরস খুঁজলেও অনেকে আবার বলছেন এটাই তার কৃতিত্ব। তিনি বিভিন্ন সময় ভোল পাল্টালেও এমনকি সকালে এক কথা বলে আবার বিকেলে আরেক কথা বলার মাধ্যমেই এখন পর্যন্ত বাংলার রাজনীতিতে সদর্পে টিকে থাকতে পেরেছেন। তাই অনেকে তাকে ধূর্ত রাজনীতিক বলেই মনে করেন। তার এই বিশেষ গুণটির কারণে সংবাদকর্মীরাও সংবাদ প্রকাশ করতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগে থাকেন। কারণ, সংবাদ ছাপা হওয়ার আগেই নতুন কোন তথ্য হাজির হয়ে যেতে পারে। এতে আগের বক্তব্য পুরনো হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
সর্বশেষ তিনি মহাজোট সরকারের সাথে জোটবদ্ধ ছিলেন। তবে এই সরকারের মেয়াদান্তে তিনি এই জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুর তোলেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় জোটে যোগ না দেওয়াতে তিনিও নির্বাচনে যাবেন না বলে প্রথমে ঘোষণা দেন। কিন্তু কয়েকদিন পরেই ৭ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিনিময়ে তার দল সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেয়। এরপরেই তাকে নিয়ে মানুষ হাস্যরস শুরু করে। দেশের বিভিন্ন যায়গায় তার বিরুদ্ধে জুতা মিছিল, ঝাড়– মিছিল এবং গণ থুতু নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যম, ব্লগ এবং টেলিভিশনের টকশোগুলোতে তিনি পুরনো ‘জাতীয় বেঈমান’ এর সাথে ‘থুতুবাবা’ নামে নতুন খ্যাতি পান। তবে এই ঘটনায় তার দলের অনেক নেতাকর্মীই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ এরশাদের সা¤প্রতিক এই কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন।। ঘটনা পরম্পরায় সর্বশেষ এরশাদ তার আমলের এই প্রধানমন্ত্রীকে গতকাল বহিস্কারের ঘোষণা দেন।
বহিষ্কার আদেশের ব্যাপারে এরশাদ বলেন, কাজী জাফরের বহিষ্কারাদেশে আমি স্বাক্ষর করেছি। আজ থেকে তিনি আমার সঙ্গে নেই। এরশাদ বলেন, তিনি (জাফর) একজন অকৃতজ্ঞ মানুষ। পুরোনো ইতিহাস ভুলে গেছেন। জাফর যখন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, চিকিৎসার খরচ যোগাতে পারছিলেন না, তখন তাকে আমি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে পাঠিয়েছিলাম। এর সবকিছুই ভুলে গেছেন তিনি। সেই জাফর এখন জাতীয় পার্টি নিয়ে অনেক ধরনের উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন। বাস্তবের সঙ্গে এসবের কোনো মিল নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন ।
তিনি আরো বলেন, কাজী জাফর ইজ মাই ফ্যামেলী মেম্বার। আবার বলেন, হু ইজ কাজী জাফর? আই এ্যাম দ্যা ফাদার অব দ্যা জাতীয় পার্টি। হি ইজ নাথিং।
অপরদিকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদে থাকার সব ধরনের অধিকার হারিয়েছেন মন্তব্য করে তাকে দলের সব পর্যায়ে কোনো প্রকার অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ। বহিষ্কারাদেশের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে এরশাদকে দেওয়া এক চিঠিতে কাজী জাফর এ অনুরোধ করেন। এরশাদকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে কাজী জাফর বলেছেন, আপনি বারবার গঠনতন্ত্র লংঘন করে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র এরশাদতন্ত্রে পরিণত করেছেন। এ কারণে আপনাকে গঠনতন্ত্রের ৩৭ ধারা মোতাবেক দলের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করতে অবিলম্বে জাতীয় কাউন্সিলের বিশেষ অধিবেশনে গৃহীত হবে।
এদিকে দেশের বৃহত্তর দুটি রাজনৈতিক জোটের অনড় ও অসহিঞ্চু আচরণের ফলে দেশে সৃষ্টি হয়েছে অরাজক পরিবেশ। আগুনে পুড়ছে যানবাহন, দোকান পাট, ককটেলের আঘাতে ঝলসে যাচ্ছে জীবিকার তাগিদে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষের দেহ। কারো মৃত্যু হচ্ছে ঘটনাস্থলেই আবার কারো মৃত্যু হচ্ছে হাসপাতালের বেডে কাতরাতে কাতরাতে। হৃদয়বিদারক এই দৃশ্য দেখলে যে কোন কঠিন প্রাণ মানুষও না কেঁদে পারবে না। শোকের ভারে বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে। পুড়ে যাওয়া, পঙ্গু হওয়া, কাটা ছেড়া আহত মানুষের আর্তচিৎকারে হাসপাতালগুলো বীভৎস্য রূপ ধারণ করেছে। এ আগুনের যেন শেষ নেই। অবরোধের কবলে পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে সরকারী সম্পদ, পর্যুদস্ত হয়েছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। চারিদিকে আতঙ্ক। তবে শত কষ্টের মধ্যেও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের বার বার ভোল পাল্টানো, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাফর আহমদকে বহিষ্কার ও পাল্টা জাফর আহমদের পক্ষ বহি®কৃত হওয়ার হুমকি মানুষকে সামান্য হলেও আনন্দ দিতে সক্ষম হয়েছে।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনার সাথে একমত।
আমরা কাউকেই সমরথন করছি না, আমরা তামশা দেখি আর আপনাদের হিংসার শিকার হই।
২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩২
rafiq buet বলেছেন: চরম বিনোদন ................
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০১
উড়োজাহাজ বলেছেন: ব্যাফুক বিনুদুন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৪
রানার ব্লগ বলেছেন: মজার কথা হল এরশাদ চাচা নির্বাচনে এশে সবথেকে বেশি সমস্যায় ফেলছে বি এন পি কে, জামাতের সহজগিতায় দেশে জালাও পোরাও আন্দলন করেও যখন সাধারন মানুশের সহজগিতা পাচ্ছিল না তখন ভেবেছিলো এরশাদ কে নিয়ে এইটুকু বলা যাবে যে আ লী এর সাথে কেউ নেই, কিন্তু সব উল্টে পাল্টে গেল এরশাদ চাচা নির্বাচনে আসার ফলে। আমরা সধারন জনগন এই দুই + দুই নেতা নেত্রীর তামশা দেখে ক্লান্ত কেউ যদি ভেবে থাকে দেশের আপামর জনতা তাকে সমরথন করছ্র তবে ভুল করবেন, আমরা কাউকেই সমরথন করছি না, আমরা তামশা দেখি আর আপনাদের হিংসার শিকার হই।