নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনিবার্য পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশ। রাজনৈতিক অরাজকতায় লাশের সারিতে দিন দিন লাশের সংখ্যা বেড়েই চলছে। কেউ বা আন্দোলনকারীদের দেওয়া আগুনে, কেউবা ককটেলের আঘাতে আবার কেউবা আন্দোলন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হচ্ছেন। প্রতিটি মৃত্যুর সাথেই ঘিরে থাকে বহু মানুষের কান্না। তবে শুধু মৃত্যুই নয়, হাত পা হারানোর সংখ্যাও কম নয়। এর থেকেও বড় বিষয়টি হচ্ছে আতঙ্ক। কোথায় কখন কার উপর মৃত্যু আছড়ে পড়বে তা কেউ জানে না। তাই সকলেই ভুগছেন ভয়াবহ মৃত্যু আতঙ্কে। পথচারী, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এই আতঙ্ক নিয়েই চলাফেরার চেষ্টা করছেন। শিকার হচ্ছেন নির্মম মৃত্যুর। বাদ নেই রাজনীতির সাথে জড়িত উচ্চমহলও। কারণ ‘নগর পোড়ালে দেবালয় এড়ায় না’ এই প্রবাদ বাক্য সকল ক্ষেত্রেই অনস্বীকার্য।
ক্রমাগত হরতাল অবরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর এ্যাকশনের ফলে সৃষ্ট পরিবেশের কারণে সারা দেশেই মানুষের স্বাভাবিক চলাচল, আয়-উপার্জন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন চূড়ান্ত দুরবস্থায়। এদিকে সংঘাত-সংঘর্ষ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা সামাল দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলায় স্থানে স্থানে রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হচ্ছে। স্থানে স্থানে এসব প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে আক্রান্ত অঞ্চলে প্রশাসনিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াও প্রায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র ঢাকা ও এর আশে-পাশের এলাকাগুলো ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশের অধিকাংশ এলাকা প্রায়ই এসব কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে বেদখল হয়ে পড়ছে। ব্যাপক সদস্য নিয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হচ্ছে। এদিকে এসব ঘটনায় প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আহত নিহতের খবর আসছে। অপরদিকে চারদিক থেকে রাজধানী ঢাকাকে অবরুদ্ধ করার একটা পরিকল্পনাও রয়েছে আন্দোলনকারীদের। এটা যদি তারা করতে সক্ষম হয় তাহলে দেশ অচল হয়ে পড়বে। খাদ্য-শস্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে তখন ঢাকাবাসীকেও প্রত্যক্ষ সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে যেমনটা শিকার হচ্ছেন ঢাকার বাইরের লোকজন।
রাজনৈতিক সঙ্কটের শুরু থেকেই এই পরিণতির কথাটি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বার বার রাজনৈতিক নেতাদেরকে বিভিন্ন মহল থেকে এই বিভক্তিকরণ প্রসঙ্গে সতর্ক ও সাবধান করা হয়েছিল। বিদেশীদের পক্ষ থেকেও একটি সমঝোতার চাপ ছিল। কিন্তু ক্ষমতালোভী দুটি জোটই এসব কিছুকেই উপেক্ষা করে যার যার অনড় অবস্থানে থেকে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সঙ্কটের মাত্রা বাড়িয়েই গেছেন। প্রথমত, তত্ত্বাবধায় ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোটের ক্রমাগত আন্দোলনের হুমকি, অতপর যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া ও জামায়াত- বিএনপির নেতৃস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক ফাঁসিসহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড প্রদান, শাহবাগ কেন্দ্রীক জাগরণ মঞ্চের উত্থান, স্কাইপ কেলেঙ্কারী, শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত কর্মীদের উপর দমনাভিযান প্রভৃতি ঘটনা মিলেই আজকে দেশের এই পরিস্থিতির সূচনা ঘটেছে। এসব বিষয়ে দুই পক্ষের আপসহীন মনোভাবের কারণে পূর্ব সতর্কবার্তা অনুযায়ী দেশ এখন চূড়ান্ত পরিণতির পরিস্থিতিতে পতিত হয়েছে যা প্রায় গৃহযুদ্ধ সমতুল্য। নানা সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এই বিষয়টিকেই স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারী বার্তা দেওয়া হচ্ছিল যে ক্রমাগত হারে এই বিভক্তি ও সংঘাত দেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আজকে সিরিয়ায় যে, পরিমাণ হত্যাকাণ্ড ঘটছে, আফগানিস্তান- পাকিস্তানে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাচ্ছে এই দেশেও হতাহতের পরিমাণ তার কাছাকাছিই। তাছাড়া যে হারে সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামীতে পরিস্থিতি সকল পক্ষেরই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোন অলৌকিক কিছু না ঘটলে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধকেই মোকাবেলা করতে হতে পারে বলে এখন পর্যন্ত আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন রাজনীতি সচেতন বিভিন্ন মহল।
সূত্র: Click This Link
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫২
উড়োজাহাজ বলেছেন: মৃত মানুষের কিন্তু কোন চেতনা নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: টাকা পয়সা ভাত খাওয়া এসবের দরকার নাই চেতনা থাকলেই চলবে!