নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই দেশ থেকে পালানোটা অতি জরুরী- কিন্তু পালানোর পথ কই?

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০

দুটো গল্প বলি। গল্প দুটো একই রকম । শুধু ভার্সনটা আলাদা। অনেকেই হয়তো জানেন। তাও রিপিট করছি। কারণ, গল্পের বাস্তব সময় এখন উপস্থিত।

একদা এক সাধু তার অনুসারীদের নিয়ে একটি দেশে গমন করেন। তাবু খাটিয়ে তিনি শিষ্যদের নিয়ে বসবাস আরম্ভ করলেন। সাধু শিষ্যদের দিয়ে বাজার থেকে খাদ্য সামগ্রী কিনিয়ে অত:পর রান্না করে খেতেন। একদিন এক শিষ্য বললেন, গুরু চলুন আমরা এদেশে থেকে যাই। এখানে গুড়ের দামে সন্দেস পা্ওয়া যায়। এখানে থাকলে আমরা গুড় না ঐ দামে সন্দেস খেতে পারব। গুরু চোখ বড় বড় করে বললেন, তাই নাকি?

তারপর তিনি সব শিষ্যদের ডেকে নিয়ে বললেন, এখনি গাট্টি বোচকা বাধাই করো। এই দেশে আর একমূহুর্তও নয়। এ্ই দেশে থেকে যাওয়ার জন্য প্রস্তাবকারী তখন জিজ্ঞেস করলেন, গুরু এর কারণ কী?

তখন গুরু বললেন, যে দেশে গুড় আর সন্দেসের দাম এক, সে দেশে ভাল মন্দের কোন পার্থক্য নেই। দুটোই সমান। অতএব সাধুদের পক্ষে এখানে থাকা সম্ভব নয়।





দ্বিতীয় গল্পটি একই রকম। সাধুকে তার শিষ্য প্রস্তাব করলো, গুরু এদেশে মাছ গোস্তের চেয়ে সবজির দাম বেশি। চলুন আমরা এদেশে থেকে যাই । আর সবজির দাম দিয়ে গোস্ত কিনে খেয়ে মোটা হতে পারব। সুখে থাকত পারব। যথারীতি গুরু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে শিষ্য দের ডেকে বললেন, বাধো বোচকা, উঠাও গাট্টি। কিন্তু শিষ্য আপত্তি করলো। সে বললো, না, আমি যাবো না। আমি এখানে থেকে ভাল ভাল খেয়ে মোটা হবো। অগত্যা সাধু বললেন, এই দেশে থাকলে তুই মরবি। তু্ই থাক, আমি ভাগলাম।

শিষ্য সস্তায় গোসত, মাছ ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে অল্পদিনেই মোটা হয়ে গেল।

কিছুদিন পরে ঐ দেশে দেয়াল চাপা পড়ে এক চোর মারা গেলো। চোরের বউ রাজার কাছে নালিশ করলো যে গৃহস্ত দুর্বল দেয়াল তৈরি করেছে তাই ঐ দেয়াল ভেঙ্গে চোরের মৃত্যু হয়েছে। অতএব গৃহস্তকে জরিমানা দিতে হবে। রাজা গৃহস্থকে ডেকে এনে দোষী সাব্যস্ত করলেন। কিন্তু গৃহস্থ বললো আমি তো ঠিকই টাকা শোধ করেছি, কিন্তু মিস্ত্রি দেয়ালের মাটিতে বেশি পানি দিয়েছে তাই দেয়াল দুর্বল হয়ে গেছে। অতএব দোষ মিস্ত্রির। মিস্ত্রিকে ডেকে আনার পর মিস্ত্রি বললো, হুজুর! দোষ আমার নয়। আমি দেয়ালের মাটিতে পানি ঢালার সময় এক সুন্দরী পথ দিয়ে যাত্রা করছিল। তার দিকে চেয়ে থেকে আমার হাত থেকে পানি বেশি পড়ে গেছে। সুন্দরীকে ডাকা হলে সুন্দরী বললো, আমার কী দোষ? আমার কানের ঝুমকার কারণেই আমাকে এত সুন্দরী দেখাচ্ছিল। যে কর্মকার এই ঝুমকা বানিয়েছে সব তার দোষ। অতএব স্বর্ণকারকে দায়ী করা হলো। কিন্তু স্বর্ণকার বেচারা এতই রোগা ও শীর্ণকায় যে ফাসির রশি তার গলায় আটকানোর মত নয়। অতএব রাজা সিদান্ত নিলেন যে এই শীর্ণকায় লোককে শাস্তি দিয়ে লাভ নাই। রাজ্য থেকে খুজে একজন মোটা লোক নিয়ে আসা হোক। পাইক পেয়াদা খুজে খুজে গুরুর ঐ শিষ্যকে ধরে নিয়ে এলো। শিষ্য ভয়ে প্রমাদ গুনলেন। ফাসি দেওয়ার আগ মূহুর্তে তার গুরুর কথা মনে হল, 'তুই এখানে মারা পড়বি।' কিন্তু ততক্ষণে সব সময় শেষ।



আমাদের দেশে যেভাবে বর্তমানে মুর্খ ও অমানুষগুলো ক্ষমতার চূড়ান্ত পজিশনে উঠে এসেছে আর ভালো মানুষগুলো সিস্টেমের গ্যাড়াকলে পড়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছে, নাই হয়ে গেছে এতে মনে হয় দেশ গল্পের সেই রাজ্যের পর্যায়ে চলে গেছে। এখানে এখন অসত লোকেরা সম্মান পাচ্ছে, ক্ষমতা পাচ্ছে। সত লোকেদের উপর ছড়ি ঘোরানোর বৈধতা পেয়ে গেছে। অতএব এই দেশে থাকলে আমরা গুরু অবাধ্য শি্ষ্যের মত মারা পড়ব। যেমনটা করে মারা পড়ছি ককটেলের আঘাতে, চলন্ত বাসে বসে পুড়ে কাবাব হয়ে। এই দেশে এটাই এখন স্বাভাবিক। আর বিচার! বিচার চেয়ে এদেশে বিচার পাওয়া যাবে না। এর ঘাড় থেকে ওর ঘাড়ে। সব শেষে ভাল মানুষ সাজা পাবে। তাদের অপরাধ তারা এখানে থাকে কেন!



ভাগো! ভাগো!! কিন্তু কোথায়? ভাগারও কোন জায়গা নেই। বস্তুবাদী সভ্যতার যেখানেই যাবে তোমাকে সেখান থেকেই ধরে আনা হবে। আত্মিক দিক দিয়ে এই সিস্টেমের অবনতি হলেও যান্ত্রিক দিয়ে, বস্তুগত দিক দিয়ে এটা অনেক উপরে উঠে গেছে। পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি মাটি, প্রতি ইঞ্চি পানি এর করায়ত্বে।



মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৩

ফাহাদরক্স বলেছেন: যান ,বিএসেফ মেনেজ করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বলুন- আমি গর্বিত বাঙালি।
বাংলাদেশের বাঙালি হওয়া এখন একটা পাপ । এক আমিলিগ থেকে পোংগা মারা খাইতে খাইতে এখন নিজেদেরকে ইন্দিয়ান পরিচয় দিতে মুঞ্চায়। তাইলে মনে হয় এদেসে এখন আপনি ১০০% সিকিউর। দেশের এই পরিস্থিতিতে যখন কিনা বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ বাতিল, ওই সময় আর্মি স্টেডিয়ামে ভারতিয় জলসা চলতেছে, আরো কত কি চলবে কে জানে!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫০

উড়োজাহাজ বলেছেন: ইন্দিয়ায় গিয়া তো সংখ্যালগূর বাটানীতে পড়মু!

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

প‌্যাপিলন বলেছেন: উড়োজাহাজ নাম নিয়া ব্লগান আর কেমনে পালাবেন তা জানেন না :D

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

উড়োজাহাজ বলেছেন: ল্যান্ড করার একটা উপযুক্ত স্থান তো লাগবে। নইলে কুটুস করে দেবে।

আমি তো নো ফ্লাই জোনে আছি!

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১২

রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: দীর্ঘ ঘুম দেওয়া হয়েছে পাঞ্জেরী... এখন না জাগলে কখন?
রাজপথে নেমে দেখো, এ তো সেই দেশ না যা এতদিন স্বপ্নে ছিল!
যে প্রত্যয়ে পতাকা উড়িয়েছিলে, তার গর্ব এই রাপথেই লুটায়
ওদিকে যারা ঝলসে দেয় আরেক বাঙ্গালী, তারাই হয় কর্ণধার!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২০

উড়োজাহাজ বলেছেন: এটাই এদেশের অনিরার্য পরিণতি। আরো খারাপ হ্ওয়ার সমস্ত লক্ষণ জাগ্রত।

এখন চাই অলৌকিক কিছু।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: উড়োজাহাজ ভাই, আমি মনে মনে একটা লেখা তৈরী করছিলাম, "একটা ভিসা চাই"। সত্যি আর সহ্য হয় না। আমরা কি আদৌ ভাল হব না??? আসলে স্বাধীনতার মূল্যায়ন করার ক্ষমতা আমাদের নাই। সারাকাল আমরা মারামারি, কাটাকাটি করে কাটালাম। ইবনে বতুতা সেই কয়েক শতাব্দী আগে এই অঞ্চলকে 'বুলঘকপুর' বা 'অরাজকতার দেশ' বলে ট্যাগ মেরেছিলেন। এটা যে কত সত্য কথা ছিল-এতদিনে আমরা কয়েক লক্ষবার তা প্রমাণ করেছি।

আমার আব্বা একটা কথা মাঝে মাঝেই বলেন, তাহলো, 'হয়ত আমাদের দেশ অনেক টাকাপয়সার মালিক হবে। উন্নতিও হবে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ সভ্যতা, ভব্যতা কবে শিখবে এটা একমাত্র আল্লাহই জানেন'। এই কথাটিও সত্য।
আপনার লেখা বাল হয়েছে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: ভাই ভিসা নিয়ে কোথায় যাবেন? এই বিকৃত সভ্যতার ছোয়া সব যায়গায়ই পড়েছে। কোথা্ও গিয়ে শান্তি পাবেন না। সভ্যতার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। মানুষ আর সেটা পারবে না। স্রষ্ট্রার হস্তক্ষেপ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।



টাকা পয়সা হল্ওে লাভ নেই। নরওয়জিয়ানদের টাকার অভাব নেই। কিন্তু তারা আত্মহত্যার তালিকায় ১৩ তম অবস্থানে আছে। টাকায় সুখ নেই। সুখ আত্মিক ও বাহ্যিক এই ঊভয়ের সম্মিলনে।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

মোঃ তারিফ হাসান বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.