ঘটনা সত্যি হলে আসলেই হৃদয়বিদারক
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৯
রাজধানীর মিরপুরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন মা শিউলি বেগম (২৭)। তিন সন্তানের জননী। স্বামী আবুল কাশেম সামান্য একজন কেয়ারটেকার। স্বামীর মাসিক আয় সাত হাজার টাকা। এ নিয়েই টানাপোড়েনে চলে তাদের সংসার।
পুলিশের রোষানলে পড়ে শিউলি বেগম এখন তিন মামলার আসামি। তাও যা-তা মামলা নয়। অস্ত্র আইন, বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন এবং দ্রুত বিচার আইন। শিউলিকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। অস্ত্র আইনের মামলায় পুলিশ তাকে রিমান্ডেও নিয়েছে।
শিউলি যখন আদালতে হাজির হন, তখন তার কোলে সাত মাসের শিশু। কী হচ্ছে তা বোঝার ক্ষমতা নেই তার। তবে পাশে থাকা বড় মেয়ে বোঝে তার মায়ের সাথে সে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে। তার হাউমাউ করে কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।
জানা গেছে, বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেন তার জীবদ্দশায় বাড়ির নিচতলার একটি রুমে থাকতে দিয়েছিলেন শিউলিদের। তার মৃত্যুর পর পিতার ওই মহানুভবতা থেকে সরে যাননি তার সন্তানরা। তাই ওই পরিবারটি এখনো থাকছে সেই রুমে।
মিরপুরের ওই বাড়িটির বর্তমান মালিক বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট ডাব্লিউ। তার পিতা খন্দকার দেলোয়ার হোসেন জীবিত থাকতেই বাড়ির কেয়ারটেকার ছিলেন আবুল কাশেম। ২৫ ডিসেম্বর বুধবার ওই বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। বাড়ির পাঁচতলা থেকে পুলিশ চার যুবককে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারের দাবি করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিউলি ওই বাড়িরই নিচতলায় থাকেন। পুলিশ যাওয়ার পরে বাড়ির গেট খুলতে সামান্য দেরি হয় শিউলির। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় পুলিশ। পরে চার যুবকের সাথে শিউলিকেও ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের কাছে শিউলি অনেক মিনতি করেছেন। বলেছেন, আমার সাত মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। আমি একজন সামান্য গৃহবধু। তিনটি সন্তান নিয়ে আমার সংসার। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই।
পুলিশ তার কথা শোনেনি। তিনটি মামলায়ই তাকে আসামি করা হয়েছে। শুধু আসামি করেই খান্ত হয়নি পুলিশ। তাকে আদালতে হাজির করে ২৪ দিনের রিমান্ড আবেদনও জানিয়েছে পুলিশ।
শিউলির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম বলেন, অস্ত্র আইনের মামলায় শিউলিকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেপ্তারকৃত যুবকরা একটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। আর শিউলি তাদের সহযোগী। শিউলির স্বামী আবুল কাশেমও তাদের সহযোগী।
জানা গেছে, মামলায় আবুল কাশেমকেও আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তারের ভয়ে বাসা থেকে লাপাত্তা আবুল কাশেম।
কী কারণে শিউলিকে গ্রেপ্তার করা হলো সে সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মিরপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার ডিউটি অফিসার জানান, এ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না তিনি।
সূত্র
১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: ঘোর কাল ইউগ।