নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি দিলো নির্বাচন, শান্তি না সমাধান?

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০৩



শেষ হয়ে গেলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪। বিরোধী দলহীন নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে নির্বাচিত হয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অবশ্য নির্বাচনের আগেই তারা রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকার নিশ্চিত করেছিলো। কারণ প্রায় ১৫৩টি আসনে জোটের বাইরে কোন প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিলো না, যেখানে আওয়ামী লীগ থেকে এককভাবে নির্বাচিত হয়েছিলো ১২৭টিতে। আর নির্বাচনের পরে যোগ হয়েছে আরো ১০৫টি আসন। ফলাফল বাকি আছে ৮টিতে। দেশি বিদেশি অনেক মাধ্যমই এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়নি বলে মন্তব্য করছে। ভোটার উপস্থিতিও ছিলো যে কোন সময়ের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে না বিতর্কিত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লাভ নেই। তা এখন অতীত। আশা করা হয়েছিলো নির্বাচনোত্তর দেশের পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিতর্কের উর্দ্ধে উঠতে পারে নি বলে পরিস্থিতি আরো জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেই মনে হচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত বিবাদের কোন ফয়সালা নির্ধারিত হয় নি। এই ধারণা থেকে সাধারণ মানুষ আশঙ্কা করছে যে জাতির সামনে আরো ভয়াবহ দুর্দিন অপেক্ষা করছে। তাই অধিকাংশ মানুষই নতুন করে বিনিয়োগ করা বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ টাকা পয়সা হাতছাড়া করছে না। তাই দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু স্থাবর সম্পত্তির মূল্য কমে যেতে শুরু করেছে। আর দাম বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। জীবন ধারণ হয়ে উঠছে ক্রমাগত কঠিন থেকে কঠিনতর। অথচ বিনিয়োগ নেই বলে যারা দিন আনে দিন খায় তাদের হয়েছে বড় সমস্যা। যাদের হাতে পয়সা আছে তারা চিন্তা করছেন এখন যদি সম্পদের বিনিময়ে টাকা হাতছাড়া করেন তাহলে দুর্দিনে সেই সম্পদ হয়তো কোন কাজে আসবে না।

সাধারণ মানুষের এই চিন্তা মোটেই অমূলক নয়। তারা দেখছে বিবদমান দলগুলো যার যার অবস্থান ধরে রাখার ব্যাপারে একেবারেই অনড়। তাছাড়া যারাই টুকটাক নমনীয়তার কথা বলছেন তারাও এমন প্যাঁচানোভাবে বলছেন যা দেখে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে সেটা মোটেই সমঝোতার কোন কথা নয়। আগে বলা হয়েছিলো সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আপাতত এই নির্বাচন হতেই হবে। সমঝোতা হলে পরে একাদশতম নির্বাচনের কথা ভাবা যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার সর্বশেষ ভাষণে বলেছেন, “আগামী” যখন আসবে তখনই আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে কথা।” অর্থাৎ এখন তিনি নির্বাচিত হয়ে গেছেন, অতএব এই নির্বাচনকে তিনি ‘ফাইনাল’ বলে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলার চেষ্টা করছেন। বন ও পরিবেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ তা আরো পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “৫ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে যে সরকার নির্বাচিত হয়েছে তা ৫ বছরের জন্যই। এই সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আগামী ৫ বছর দায়িত্ব পালন করবে।” অপরদিকে বিরোধী দলের কাছে এ নির্বাচন নির্বাচন হিসেবেই গণ্য হচ্ছে না। তারা বলছে ‘এটা জাতির সাথে তামাশা হয়েছে মাত্র, অধিকাংশ মানুষ এটাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

অতএব সমস্যা গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে মাত্র যা বুঝতে খুব জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এই সমস্যা যতই গভীর হোক না কেন তাতে নাটের গুরুদের কাছে এ ব্যাপারটি মোটেই সমস্যাজনক নয়। তারা যার যার অবস্থানে ঠিকই নিরাপদে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। তাছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তারা অনেক আগেই অবৈধ উপায়ে ইতোমধ্যে যথেষ্ট উপার্জন করে নিয়েছেন। খুব বেশি সমস্যা হলে দেশের বাইরে বাড়ি গাড়ি তো রয়েই গেছে। প্রয়োজনে সেখানে উড়াল দেবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের সেটা নেই। সামান্য কাঁটাতার ভেদ করে পার্শ্ববর্তী দেশেও ঢোকার মত ক্ষমতা তাদের নেই।

একদিকে রাজনৈতি অচলাবস্থার জন্য যেমন সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে তেমনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিও ঘটছে মারাত্মকভাবে। বাইরে গেলে সংঘাতে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা, ঘরে অন্যহীন সংসার। এই অবস্থা চলতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে রূপ নেবে প্রবল গৃহযুদ্ধের দিকে। এরই মধ্যে ক্রমাগত একটার পর একটা বিতর্কিত ও জটিল থেকে জটিলতর কর্মকাণ্ড করে চলেছেন রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকরা। এ ওর বাড়িতে আগুন দিচ্ছে ও দিচ্ছে এর বাড়িতে। কাউকে কিছু বলা যাচ্ছে না, ধরা যাচ্ছে না। ঘটনা ঘটার পর কে ঘটিয়েছে তা নিয়ে দেখা যাচ্ছে একে অন্যকে দোষারোপ নাটক। এ অবস্থায় মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা। কিন্তু এটাতো পরিস্কার যে যারা এসব করছে তারা রাজনীতির সাথেই জড়িত। সাধারণ মানুষের এতে সম্পৃক্ততা নেই ন্যূনতমও। ‘ভোট দেওয়া’র অপরাধে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হলো দিনাজপুরের একটি গ্রামে, যশোরেও ঘটে গেলো অনুরূপ ঘটনা। দোহারে ঘটে গেলো নির্বাচন পরবর্তী মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। এখন যদি ভোট ‘না’ দেওয়ার অভিযোগে প্রতিপক্ষ অন্যদের উপর হামলা করে বসে তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ এরা সবাই একই গোয়ালের গরু। কয়েক বছর আগে বিরোধী দল ক্ষমতার আসনে থেকে যা করেছে তৎকালীন বিরোধী দল এখন ক্ষমতায় এসে তাই করছে। আর তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বর্তমানে বিরোধীদের আসনে নেমে তখনকার বিরোধী দলের করা নাটক পুনমঞ্চস্থ করছে শুধু। এতে সাধারণ মানুষের জন্য পরিস্থিতি এখন শাঁখের করাতে পড়ার মত। এদিকে গেলেও বিপদ আবার ওদিকে গেলেও বিপদ। আবার চুপচাপ বসে থাকলেও সমস্যা বাড়বে বৈ কমবে না। নিয়ম রক্ষার এই নির্বাচনের পরেও স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে না। আবার নির্বাচন না হলেও যে পরিস্থিতি ভালো হতো তাও বলা যায় না। কারণ, সাধারণ মানুষকে শান্তি দেওয়া, স্বস্তি দেওয়ার মত ইচ্ছা তাদের নেই। তারা আছে ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করার মানসে। তাই এই মোহ দূর হওয়া পর্যন্ত যত উদ্যোগই নেওয়া হোক, যত নাটকই করা হোক আর বিদেশিদের পক্ষ থেকে যতই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আনার আহ্বান করা হোক-শান্তি আসবে না, নিরাপত্তা আসবে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: নির্বাচনের আগেও ছিলো পাবলিকের জন্য বাঁশ, পরেও বাঁশ

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩০

গ্রাম্যবালক বলেছেন: এই নির্বাচনে জনতা আওয়ামীলিগে রাজনীতিকে অপমান ও অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এই দেশে আওয়ামিলিগের ১০% ও জনসমর্থন নাই। এরা নাকি দেশ প্রেমিক???

হাসিনা এখন যেটা করতেছে তা শুধু নির্বাহি ক্ষমতা অপব্যাবহার। তবে এর পরিনতি খুবই ভয়াবহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.