নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভেতর বাইরে আগুন নিয়ে সাজানো-গোছানো আওয়ামী সংসার

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩৭

অর্ধেক জনসংখ্যাকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিয়ে অবশেষে ক্ষমতায় আরোহন করেছে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসনামলে নিজেদেরকে প্রথমবারের মত ক্ষমতা কিংবা বিরোধী দলের বাইরে ঠেলে দিলো। অন্যদিকে এ দেশের গণতান্ত্রিক রীতি অনুসারে সাধারণ জনগণ পাঁচ বছর পর পর একদিন ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের স্বাদ পায়, এবার তারা সেই ভোটের ‘সুখ’ থেকেও বঞ্চিত হল। কিন্তু আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসায় তাতে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি। নির্বাচনের আগেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন ১৫৩টি আসনে জয়লাভ করে মহাজোট সদস্যরা। আর বাকী আসনগুলোয় নিয়ম রক্ষার নির্বাচনের মাধমে জয় অর্জিত হয়। কিন্তু নিয়ম রক্ষার সে নির্বাচনেও ছাড় দেয়নি বিএনপি-জামায়াতসহ আঠারো দলীয় জোটের কর্মী সমর্থক গোষ্ঠীটি। ফলস্বরূপ ৫ই জানুয়ারি সারা দেশে সহিংসতায় নিহত হয়েছে অন্তত ২৩জন। এদিকে বিরোধী দলের ভাষায় প্রহসনের নির্বাচনে নির্বাচিত সাংসদরা ইতোমধ্যে শপথও নিয়েছেন। কিন্তু বিপত্তি বেঁধেছে গণতন্ত্রের ‘অলঙ্ঘনীয় নিয়ম’ বিরোধী দলের অস্তিত্ব নিয়ে। সবাই যখন জোটের এমপি তখন বিরোধী আসনে কে থাকবে? এই প্রশ্নের সমাধানকল্পে জোট থেকে আলাদা করে জাতীয় পার্টিকে দিয়ে বিরোধী দল বানানো হলো। আর এরশাদপতœী রওশান এরশাদ বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। নির্বাচন বর্জন করেছেন দাবি করা জোটের অংশ জাপা চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাহার করতে মত প্রকাশ করার পর কৌশলে র‌্যাব পুলিশ দিয়ে অসুস্থতার অজুহাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়া হয়। এদিকে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাহার আবেদন গ্রহণ না করে নির্বাচনে অংশ নিতেও একপ্রকারে বাধ্য করা হয়। আর এর মধ্য দিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ১৪৭টি আসনের মধ্যে ১২ আসনে জয় পায় জাপা। এখন নবগঠিত সরকারে আবার তারা অন্তত ২টি মন্ত্রীত্ব পেতে পারেন।



সর্বশেষ মত পাল্টে এরশাদও এমপি হিসেবে শপথ নিলেন ৩৩ জন বিজয়ী প্রার্থীকে নিয়ে। একদিকে বিরোধী দল আবার অন্যদিকে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী, দুই মিলে এই সরকারটি হবে অনেকটা অদ্ভুত ও ‘বকচ্ছপ’ ধরনের সরকার। কিন্তু যত অদ্ভুতই হোক না কেন একে টলাবার মত কোমরের জোর অন্তত বিএনপি কিংবা আঠারো দলীয় জোটের নেই। তবে জোর থাক আর না থাক, কিছু করতে পারুক আর না পারুক, অন্তত অর্ধেক জনসংখ্যাকে আওয়ামী সরকার তুষ্ট করতে ব্যর্থ হবে এবং তা নিয়েই তাদেরকে শাসন কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কেননা কৌশলে ক্ষমতা দখল করার প্রতিবাদে তারা কিছু না করতে পারলেও মন থেকে এ নির্বাচনকে মেনে নিতে পারবে না। তারা সব সময়ই সরকারকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে সরকারকে অসহযোগিতা করে যাবে এবং দেশে সব সময় একটা গোলযোগপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখবে এটা সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায়। আর এই দলগুলোর সহিংসতা ভোগ করতে হবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকেই।





এত গেলো অভ্যন্তরীণ দিক। বহির্বিশ্বেও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে ম্যানেজ করতে হবে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে। নির্বাচন পরবর্তী কয়েকদিন পার না হতেই বাইরের দেশগুলো চাপ প্রয়োগ করছে দু’টি দলকে সংলাপ ও সমঝোতায় অংশ নিয়ে কোন একটা স্থায়ী সমাধানে পৌঁছতে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সিনেট কমিটির প্রধান রবার্ট মেন্দেস দুই নেত্রীর কাছে বার্তা দিয়েছেন। ৮ই জানুয়ারি লেখা ঐ চিঠিতে মেন্দেস বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে দিতে পারে এবং এটা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে দীর্ঘ মেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। এর আগেও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশই একটি সমঝোতার জোর তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। এমনকি জাতিসংঘের সহকারি পররাষ্ট্র সচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো দীর্ঘ ৬ দিনের সফরে এসে দু’পক্ষকে সংলাপে বসিয়ে কোন একটা সমঝোতার পথ বের করার জন্য ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর অনড় মনোভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। এমতবস্থায় বিদেশি ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রগুলো বিএনপি ও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক কেমন বজায় রাখে তাই দেখার বিষয়।





আওয়ামী লীগ যদি এই নির্বাচনকেই চূড়ান্ত নির্বাচন মনে করে আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে, তাহলে তাদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদীয় কর্তৃত্ব নিয়ে সাজানো গোছানো, নিরুপদ্রব সংসার নিয়েও দেশ এবং দেশের বাইরের এই দুই দিকের আগুন মোকাবেলা করে যেতে হবে। অন্যথায় আওয়ামী লীগকে এমন কোন পদক্ষেপ নিতে হবে যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসা যায় এবং বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের জন্য এমন একটি রাষ্ট্র কায়েম করা যেখানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তুলতে না পারে। কিন্তু এই পদক্ষেপ নেওয়া কি আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব? এমন পদক্ষেপ নেওয়ার মত নৈতিক জোর আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মানুষকে শান্ত করতে হলে তাদেরকে ১৬ কোটি মানুষের সামনে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে যা গত পাঁচটি বছরে তারা করতে পারে নি। তারা গতানুগতিক তৃতীয় বিশ্বের একটি দুর্নীতিবাজ ও বিরোধী মত দমনকারী সরকার যা করে থাকে তাই করে গেছে। এ ব্যাপারে তাদের কোন অনুশোচনাও নেই। তবে কী আওয়ামী লীগ নিজেদের সংশোধন করার মত এই সহজ পথটি বাদ দিয়ে জোর করে ক্ষমতা ধরে রেখে নিজেদেরকে পূর্ণাঙ্গ স্বৈরাচারে পরিণত করবে?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সময় জবাব দিয়ে দেয় ।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: জ্বী, সময়ই জবাব দেয়। কিন্তু এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.