নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান’ বিতর্কপ্রিয়দের নতুন খোরাক

২৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০০

বিতর্কপ্রিয় বাঙালি রাজনীতিকদের হাতে নতুন খোরাক তুলে দিয়েছেন প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে তারেক জিয়া। তারেক জিয়া বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ব্রিটেনে অবস্থান করছেন। অভিযোগ আছে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের নামে তিনি তাদের হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হন। পরে চিকিৎসার জন্য জামিনে মুক্ত হয়ে দীর্ঘ দিন যাবত তিনি ব্রিটেনে পরিবারসহ অবস্থান করছেন। খুব সম্ভবত তিনি এখনো শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ সুস্থতা লাভ করতে পারেন নি। কেননা সুস্থ হলেই তার দেশে ফিরে আসার কথা। বিদেশে অবস্থান করায় স্বাভাবিকভাবেই তারেক জিয়া দেশীয় রাজনীতিতে খুব একটা তৎপর ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তবে যতটুকু বোঝা যায়, বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দলীয় রাজনীতিকগণ প্রায়ই তার সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তার দেশে ফিরে আসার বিষয়টি আলোচনায় আসে। বলাবাহুল্য, ঝিমিয়ে পড়া নেতা-কর্মীদেরকে চাঙ্গা করতে তার ফিরে আসাটা দলের জন্য খুবই জরুরি। কেননা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী এ দলটির তরুণ থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতাগণও তারেক প্রশ্নে এক ধরনের প্রেরণা অনুভব করেন। জাতীয়তাবাদী মহলের তরুণদের মধ্যে তিনি একটা ক্রেজ। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও তরুণরা এসব বিষয় খুব কমই বিশ্বাস করে। কেননা দীর্ঘদিন যাবত চলমান বিভিন্ন মামলার মধ্যে অর্থপাচার মামলায় ইতোমধ্যে তিনি আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছিল আওয়ামী সরকার ক্ষমতা ত্যাগ করলে উপযুক্ত পরিবেশ বুঝে তারেক জিয়া দেশে আসতে পারেন। কিন্তু সরকার ক্ষমতা ত্যাগ না করে তা ধরে রেখে অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও নিজেদের তত্ত্বাবধানেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়ায় বিএনপি শেষ পর্যন্ত তাদের জোটসহ নির্বাচন বর্জন করে এবং আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণ করে। সুতরাং তারেকের আর দেশে ফেরা হয়ে উঠেনি। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার তারেক জিয়া লন্ডনের একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার পিতা জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করে বক্তব্য প্রদান করেন যা পরবর্তীতে দেশীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার বক্তব্যকে সমর্থন করে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাও একই কথা বলেন। এরপর একই দাবি করে বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়াও গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ অহংকার স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বীরোত্তম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কি না তা নিয়ে আলোচনা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আজকের আলোচ্য বিষয় আমাদের রাজনীতিকদের বিতর্কপ্রিয়তা। স্বাধীনতার ঘোষক কে, কার জন্মদিন কোনদিন, স্বাধীনতা যুদ্ধে কার কি ভূমিকা ছিল, কার বেয়াই রাজাকার, কোন দলে কত জন রাজাকার আছে ইত্যাদি নিয়ে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হর-হামেশাই বিতর্ক চলতে থাকে। এত সব বিতর্কের ভীড়ের মধ্যেই সম্প্রতি তারেক জিয়ার উপরোক্ত মন্তব্য বিতর্কের জগতে নতুন উপাদান যুক্ত করেছে মাত্র। আশা করা যাচ্ছে এ বিষয় নিয়ে বিতর্ক করে আমাদের রাজনীতিকরা ভালো সময় কাটাতে পারবেন। এ প্রশ্নে বিতর্কের আবহ ইতোমধ্যে শুরুও হয়ে গেছে। তারেক জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনায় বিপরীত প্রান্তের আওয়ামী লীগের রাজনীতিকগণ সমালোচনা করে কেউ কেউ বলছেন, ইতিহাস বিকৃতিতে এটা বিএনপির নতুন সূচনা। আবার কেউ বলছেন মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এটা বিএনপির হিটলারের প্রচার-সংযোগ মন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের ন্যায় গৃহিত নব্য প্রোপাগাণ্ডা। অন্যদিকে যারা সকল বিতর্কে আনন্দিত হন সেই অবিরাম জাবর কাটার অধিকারী কলাম লেখক, বুদ্ধিজীবীরাও কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। তথ্য প্রমাণ দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তারা পরিবেশ গরম করে তুলছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে দেশের এত এত সমস্যা বাদ দিয়ে আমাদের রাজনীতিকরা এ সকল বিষয় নিয়ে কেন বার বার বিতর্কে লিপ্ত হন? এছাড়া কি তাদের আর অন্য কোন কাজ নেই? দেশ যেখানে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত, দিন রাত কাজ করেও যে সমস্যা দূর করা সম্ভব নয় সেখানে কেন খামোখা বিতর্কের জন্ম দেওয়া এবং কেন খামোখা সেসব নিয়ে সময় নষ্ট করা? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, দল যখন ব্যাকফুটে চলে গেছে, নেতা-কর্মীদের অনেকেই যখন জেলে বন্দি আছেন, তৃণমূলের নেতা-কমী ও সমর্থকরা যখন হতাশায় ভুগছেন, দীর্ঘ সময় দল যখন ক্ষমতাহীন- সে সময় জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি প্রমাণে বিএনপির এত কি প্রয়োজন পড়ে গেল? আমি বলছিনা যে তারেক জিয়া, খালেদা জিয়া, সাদেক হোসেন খোকাসহ বিএনপির নেতারা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন এবং মুখ রক্ষার জন্য এখন তা জোর করে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। এ দাবি সত্য কি মিথ্যা তা প্রমাণে বিতর্ক উভয় দলের মধ্যে চলছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে এই বিষয়টি প্রমাণ করাটা এখন কি খুব জরুরি হয়ে পড়েছে? তাদের জন্য তার চাইতে কি বেশি জরুরি নয় আগে নিজেদের দল গোছানো? তারা যেখানে মনে করছে দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, মানুষ অশান্তিতে আছে- সেখানে আগে তাদের উচিৎ নয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, মানুষকে শান্তি দেওয়া? নাকি তারা সরকারের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উত্থাপন করছেন তা প্রকৃতপক্ষে জনগণের সমস্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, মিথ্যা? তাহলে মানুষ ধরে নেবে না বিএনপি শুধু বিরোধিতার খাতিরেই সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে? যদি তা না হয় তাহলে সে সবের সমাধান না করে বিএনপি কেন জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে? অন্যদিকে সরকারি দলের তরফ থেকে ব্যাপারটাকে এতই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে মনে হয় তারা চুপ থাকলে সত্যি সত্যি বিএনপি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বানিয়ে ফেলবে। তাই প্রায় প্রতিটি জনসভায় তাদেরকে এই বিষয়ে যথেষ্ট মূল্যবান সময় ব্যয় করে প্রতিবাদ করতে হবে। প্রিয় রাজনীতিকগণ, আপনাদের এসকল বেহুদা বিতর্কে কিন্তু সাধারণ মানুষ আড়ালে হাসাহাসি করছে। সুতরাং, সাবধান!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৫

রাকীব হাসান বলেছেন: Click This Link

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪৪

উড়োজাহাজ বলেছেন: ক্লিকাইছি। ইটস অল কোলাটেরেল ডেমেজ।

২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৪১

জাহিদবিডি বলেছেন: ভাই সপ্তম রাষ্ট্রপতির সাইটটি বন্ধ করলেন কেন। সংশোধনি আনার জন্য? করেন মনের মাধুরী মিশাইয়া করেন। https://bangladeshnationalistparty-bnp.org/

২৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

উড়োজাহাজ বলেছেন: একটু সময় দেন ওয়েব ডেভলপারদের।

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০০

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা এসব নিয়েই বেশ আছি। দেশে যেখানে কোন সমস্যাই নেই। দাওয়াত দেয়া আর খাওয়াতেই মগ্ন আমরা।মূল খুজতে গেলে কিন্তু আমরা (সাধারন মানুষই) সত্যিকারের দোষী,অপরাধী। তাই পাওনা সাজা নিয়েই আমাদের দিন কাটছে।

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: মূল খুজতে গেলে কিন্তু আমরা (সাধারন মানুষই) সত্যিকারের দোষী,অপরাধী। তাই পাওনা সাজা নিয়েই আমাদের দিন কাটছে- কথা সত্য বটে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.