নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ও নজরুল গবেষক খালিদ হোসেনের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর কলকাতায়। তিনি গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশে নজরুল গীতির ধারক, বাহক ও একই সাথে নজরুল সংগীতের উপর শিক্ষকতা করে গেছেন। বেতার ও টেলিভিশনে ছিল তার সরব উপস্থিতি। বিশুদ্ধ ও মূল সুরে নজরুল গীতি গায়ন ও শিক্ষাদানে তিনি একজন দিকপাল। তাঁর নজরুল গীতির রেকর্ড অতীতে এইচ এম ভি ও ঢাকা রেকর্ডস থেকে বের হয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে নজরুল অ্যাকাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, হিন্দোল এ কর্মরত থেকে নজরুল সঙ্গীতের প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ড কর্তৃক অর্পিত সংগীত বিষয়ক দায়িত্ব পালন করেছেন। নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুল সংগীতের আদি সূরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য তিনি। এছাড়াও তিনি নজরুল বিষয়ক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন।
তিনি নজরুল সংগীতে অনবদ্য অবদানস্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। এ ছাড়াও নজরুল সংগীতে কৃতিত্বস্বরূপ তিনি আরো বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। নজরুলের মূল সুরে তার গাওয়া গান শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক আগ্রহের বস্তু। যামানার এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী, যিনি নজরুল একাডেমির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, তিনি এই গুণী শিল্পীর গাওয়া ‘আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান কোথা সে মুসলমান’ গানটিকে পছন্দ করে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত আন্দোলন ‘হেযবুত তওহীদ’ এর দলীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তিনি তাঁর অনুসারীগণ যাতে এই গানটির কথার আলোকে প্রকৃত মো’মেন হিসেবে নিজেদের চরিত্রকে গঠন করতে পারে সে জন্য প্রায় প্রতিটি সমাবেশের শুরুতেই গানটি বাজিয়ে শোনার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিশিষ্ট এই গায়ক কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। এর আগে গত ২৩শে মার্চ সকালে শ্বাস-প্রশ্বাসে গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে তাকে ঐদিন সকালেই ইবনে সিনা হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ডা. আতিক মুস্তাফার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে। পরদিন শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে সর্বশেষ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হোন। সেখানে তিনি ৩০৩ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১২ এপ্রিল শনিবার দৈনিক দেশেরপত্রের পক্ষ থেকে তার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
তার সহধর্মিনী শাহানা হোসেনের সাথে আলাপ করে জানা যায় একদিন পরেই তিনি হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন। বিশিষ্ট এই শিল্পীরই স্নেহধন্য একজন ছাত্র এবং স্বনামধন্য গায়ক জিল্লুল শাহীন এর সহযোগিতায় দেশেপত্রের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন বিশেষ প্রতিনিধি আতাহার হোসাইন। সাথে ছিলেন দেশেরপত্রের স্টাফ রিপোর্টার ইয়াসীন পাভেল।
দেশেরপত্র: আপনি তো দীর্ঘ দিন যাবত নজরুল সংগীত এবং বিদ্রোহী কবির লেখনি নিয়ে গবেষণা করছেন। নজরুলের গানের প্রতি আপনার আগ্রহটা বিশেষ কোন জায়গা থেকে এসেছে- একটুা বলবেন কি?
খালিদ হোসেন: নজরুল সংগীতের অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের সবই এতটাই উচ্চমানের, এত আকর্ষণীয় যে এটার কাছে এসে ফিরে যাওয়া যায় না। তাই এর মধ্যেই আমি ডুবে গিয়েছিলাম। শৈশবেই আমি যে পরিবেশের মধ্যে বেড়ে উঠেছি সেটা ছিল সংগীত চর্চার জন্য অনুকূল পরিবেশ। সেটা শুধু নিজের চর্চার ক্ষেত্রেই অনুকূলের কথা বলছি না, মানে সেখানে হর-হামেশা গান বাজনা শুনেছি এবং তাতেই আমি আকৃষ্ট হয়েছি।
দেশেরপত্র: আপনার পরিবারে কেউ গান গাইতেন, মানে বাবা-মা বা অন্য কেউ?
খালিদ হোসেন: না, তারা কেউ গান গাইতেন না। তবে আমার গান গাওয়াকে সমর্থন করেছেন।
দেশেরপত্র: আমরা জানি যে আপনি প্রায় দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে নজরুল সংগীত এবং নজরুলের লেখনি নিয়ে আছেন। এখানে আসাটা কি আপনার নিজ উদ্যোগেই আসা নাকি এখানে অন্য কারো কোন অবদান আছে?
খালিদ হোসেন: হ্যাঁ, নিজ উদ্যোগেই আসা। নজরুল সংগীত সংগ্রহ, সঠিক সুর পাওয়া এই সব ব্যাপারগুলো নিজ থেকেই করতে হয়েছে। এসব অনেক কঠিন কাজ। এক্ষেত্রে তার আদি রেকর্ডগুলো সংগ্রহ করতে হয়েছে। সেই আঙ্গুর বালা, ইন্দু বালা, কমলা ঝুরিয়াদের রেকর্ড সংগ্রহ করতে হয়েছে। বিশেষত আমি সেই পুরনো রেকর্ডগুলো সংগ্রহ করেছি এবং প্রচার করেছি। সেই সাথে নিজে শিখেছি এবং অন্যদেরকেও শিখিয়েছি।
দেশেরপত্র: আপনি গান শেখার ক্ষেত্রে কোন কোন ওস্তাদের তালিম নিয়েছেন?
খালিদ হোসেন: গান গাওয়ার ক্ষেত্রে আমি অনেককেই অনুসরণ করি। আমি ওস্তাদ ওসমান গনির কাছে ক্ল্যাসিকেল গান শিখেছি। কিংবদন্তী ওস্তাদ আবু বকর খান আমার ওস্তাদ ছিলেন। মিস্টার পিসি গোমেজের কাছেও ক্ল্যাসিকেল গান শিখেছি। নজরুল চর্চা করেছি আমার নিজের আগ্রহে এবং নিজের ভালবাসায়।
দেশেরপত্র: আপনার কি কখনো কবির সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে?
খালিদ হোসেন: কবির সুস্থ অবস্থায় দেখা হয়নি। অসুস্থ থাকা অবস্থায় দেখা হয়েছে।
দেশেরপত্র: কোথায়?
খালিদ হোসেন: ধানমন্ডিতে, কবি ভবনে। যেখানে তিনি এসে উঠেছিলেন।
দেশেরপত্র: আমাদেরকে একটু বলবেন, কবিকে কেমন দেখলেন?
খালিদ হোসেন: উনি তো খুবই চঞ্চল ছিলেন। সব সময় যে স্থির হয়েছিলেন- তা নয়। তাকে আমি গানও শুনিয়েছিলাম। গান শোনাবার সময় তিনি একটু স্থির থাকতেন।
দেশেরপত্র: আপনি নিজ কণ্ঠে গান শুনিয়েছেন? শুনে খুব ভাল লাগলো।
খালিদ হোসেন: হ্যা, আমি নিজে গান শুনিয়েছি।
দেশেরপত্র: এই যে আপনার নজরুল সংগীত শিল্পী হয়ে উঠা, এ জন্য পরিবার থেকে আপনি কেমন সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন?
খালিদ হোসেন: না, এ ব্যাপারে আমি আমার পরিবার এবং স্ত্রীর কাছ থেকে পুরোপুরি সহযোগিতা পেয়েছি। আর সংগীত চর্চার পেছনে কখনো কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টিই হয়নি।
দেশেরপত্র: আমরা যতটুকু জানি, আপনার জন্মস্থান কলকাতায়। আপনার বাংলাদেশি হয়ে উঠার পেছনে ঘটনাটি কী?
খালিদ হোসেন: হ্যা, আমার জন্ম কলকাতায়। দেশ বিভাগের পরে ১৯৪৮ সালে আমরা বাংলাদেশে চলে আসি।
দেশেরপত্র: নতুন শিল্পীদের ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী? বিশেষ করে বর্তমানে ফিউশন জাতীয় গানগুলোর ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
খালিদ হোসেন: নতুন শিল্পীদের অনেকেরই চমৎকার গলা। ভাল গান করেন। তবে তাদের প্রতি আমার একটাই বক্তব্য: ‘যে নজরুলের যে গানই গাওয়া হোক না কেন, নজরুলের সঠিক সুরটিতে যেন গাওয়া হয়।’ বর্তমানে এদিক ওদিক হওয়ার ট্যান্ডেন্সি দেখা গিয়েছে, যা মোটেও সঠিক নয়। নজরুলের গান ঠিক যেভাবে গাওয়া হয়েছিল, যেভাবে তার সুর ছিল, কথা ছিল সেভাবেই আরেকজনকে গাইতে হবে। এর মধ্যে আর নিজস্ব কিছু যোগ করার কিছু নেই।
দেশেরপত্র: নজরুলের ‘সংগীত’ নিয়ে কী বলবেন?
খালিদ হোসেন: নজরুল সংগীত হচ্ছে একটি বিশাল ভাণ্ডার। একটা অগাধ সমুদ্রের মত। এর চর্চা করে শেষ করা যাবে না। যদি সত্যিকারের চর্চা করতে হয় তবে তিনি যত গান লিখে গিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের গান, প্রায় ৩৫/৩৬ ধরনের গান লিখেছেন এবং সব অংশ একজনের জন্য চর্চা করাও কঠিন। তো যাই হোক, এই থেকে চেষ্টা করে সঠিক পথে সঠিক সুরে অন্যদের গাওয়া উচিৎ। আমিও আমার সারা জীবন তাই চেষ্টা করে গিয়েছি।
দেশেরপত্র: নজরুল সংগীতের পেছনে আপনার সাফল্যের মূল্যায়ন কতটুকু, অর্থাৎ এ ব্যাপারে আপনাকে কতটুকু মূল্যায়ন করা হয়েছে?
খালিদ হোসেন: হ্যা, পুরষ্কার পেয়েছি। অনেক পুরষ্কার পেয়েছি। তবে পৃষ্ঠপোষকতা বলতে যা বোঝায় তা তেমন একটা অবশ্য পাইনি।দেশেরপত্র: আপনার অবদানের পেছনে সেটা প্রত্যাশা অনুযায়ী…
খালিদ হোসেন: না, না। পুরষ্কার আমি পেয়েছি। অনেক পুরষ্কারই পেয়েছি। একুশে পদক পেয়েছি। নজরুলের আদি বাসস্থান-পশ্চিমবঙ্গ নজরুল একাডেমি থেকে পেয়েছি। এখানে নজরুল ইনস্টিটিউট, নজরুল একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি থেকে ছাড়াও আরো বিভিন্ন পুরষ্কার পেয়েছি।
দেশেরপত্র: বাংলাদেশে নজরুল সংগীতের ভবিষ্যত কী?
খালিদ হোসেন: আমি খুব আশাবাদী। কারণ যারা গান করছে তাদের মধ্যে একটা চেতনা অন্তত জেগেছে যে, এটা নজরুলের আসল সুর নয়, এটা নজরুলের আসল সুর। এ সন্ধানটা যদি থাকে তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এবং যারা গাইছে তাদেরকে এই লাইনে থাকতে হবে। সঠিক সুরে যাতে গাওয়া হয়, সঠিক কথা যাতে থাকে। আমি আশাবাদী যে এখনকার বেশিরভাগ সংখ্যক গায়ক-গায়িকা এ বিষয়গুলো আস্তে আস্তে অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন।
দেশেরপত্র: একটা ভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করি। নজরুল, যিনি একটি ব্যক্তিত্ব ছিলেন, বিশাল মাপের মানুষ ছিলেন, সাধারণ মানুষ কি তাকে সেভাবে বুঝতে পেরেছে কিংবা তাকে সেভাবে ধারণ করতে পেরেছে?
খালিদ হোসেন: নজরুলকে ধারণ করা খুব কঠিন। কারণ ছোট জীবন হলেও বিচিত্র এক জীবন ছিল তার। তিনি নিজেও রাগ সৃষ্টি করেছেন, নিজে তাল সৃষ্টি করেছেন যেগুলো একজন সংগীত অনভিজ্ঞ লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি সংগীতের উপর এতই অভিজ্ঞ ছিলেন যে প্রায় কুড়িটারও বেশি রাগ, বারোটার বেশি তাল রচনা করেছেন। এগুলো ছোট-খাট ব্যাপার নয়। বড় বড় ওস্তাদদের ব্যাপার। কিন্তু তিনি তা সফলভাবে করতে পেরেছিলেন।
দেশেরপত্র: বর্তমান প্রজন্ম কিংবা নজরুলের সমসাময়িক যুগের মানুষ কি ব্যক্তি নজরুলের চেতনাকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে?
খালিদ হোসেন: নজরুল একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ ছিলেন। তিনি সংগীত রচনায় মগ্ন হয়েছিলেন শেষের কয়েকটি বছর। প্রথমত তিনি কবিতা রচনার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তবে তখনো যে গান রচনা করতেন না তা নয়। পুরোপুরি গান লেখা শুরু করেন (অসুস্থ হওয়ার আগের) শেষের কয়েকটি বছর। তিনি বিভিন্ন রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ফিল্মের সাথে জড়িত ছিলেন। নাটকের সাথে ছিলেন।দেশেরপত্র: ব্যক্তি নজরুলকে আমরা সাধারণত অসাম্প্রদায়িক হিসেবেই চিনি। কিন্তু আমরা তাকে ইসলামি সংগীত, কবিতা এবং ইসলামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার উপর কবিতা লিখতেও দেখেছি। আসলে ইসলাম সর্ম্পকে নজরুলের ধারণাটা কোন পর্যায়ের বলে আপনি মনে করেন?
খালিদ হোসেন: ইসলাম সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ছিল। যতগুলো ইসলামি গান তিনি লিখেছেন তা দেখলেই বোঝা যায় যে ইসলাম কেমনভাবে তার মর্মে প্রবিষ্ট হয়েছিলো। এছাড়াও তিনি হিন্দু ধর্ম সম্বন্ধে অনেক গান লিখেছেন। তিনি তা অত্যন্ত সততার সাথেই লিখেছেন। এ জন্য তাকে অনেক মাইথোলজি পড়তে হয়েছে এবং মনে রাখতে হয়েছে। তিনি শ্যামা সংগীত, কীর্তন, ভজন ইত্যাদিও লিখেছেন। ইসলামী গানের মধ্যে হামদ, নাত, ঈদের গানসহ বিভিন্ন গান তিনি লিখেছেন।
দেশেরপত্র: নজরুল তার লেখায় মোল্লা, পুরোহিত এদের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন…
খালিদ হোসেন: তিনি তাদের গোঁড়ামোটা বাদ দিতে বলেছেন। সঠিক পথে চলার জন্য বলেছেন। গোঁড়ামো-টা কোনক্রমেই কাম্য নয়।
দেশেরপত্র: ধর্মকে বাণিজিকিকরণ, ব্যবসায়ের উপকরণে পরিণত করার ব্যাপারে নজরুলের মনোভাব কেমন ছিল?
খালিদ হোসেন: এসবরে বিরুদ্ধে নজরুল অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন।দেশেরপত্র: ব্যক্তিগত জীবনে অর্থাৎ আপনি ব্যক্তি খালিদ হোসেন নজরুলের ধারণ করা চেতনাকে কতটুকু অনুকরণ-অনুসরণ করেন বা ধারণ করেন?
খালিদ হোসেন: অনুরকরণ তো করা যায় না, তবে অনুসরণ করা যায়। তিনি ধর্মকে যেভাবে দেখিয়েছেন সেভাবে চলার চেষ্টা করি। তিনি ধর্ম বিরোধী ছিলেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ইসলামে বিশ্বাসী সে ইসলাম মেনে চলুক, যে হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী সে তাই নিয়ে থাকুক। সংঘাত না হলেই হলো।
দেশেরপত্র: কিন্তু আমরা দেখি তার স্ব-ধর্মীরাই অর্থাৎ মোল্লারাই তাকে কাফের, মুর্তাদ ঘোষণা করেছিল।
খালিদ হোসেন: হ্যা, জীবনের দীর্ঘ সময় ধরে সেসব তাকে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু তেমন ছিলেন না মোটেই। তার লেখার মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়ে যায়। যেহেতু হিন্দু ধর্মের অনেক গান তিনি লিখেছেন সেহেতু তাকে মুর্তাদ কাফের ইত্যাদি ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল।
দেশেরপত্র: কিন্তু শুধু কি তাই? অন্য ধর্মের গান লেখার কারণেই কী তাকে মুর্তাদ কাফের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল? এক্ষেত্রে দেখা যায় একটা শ্রেণি ধর্মীয় ব্যাপারে সিন্ডিকেট তৈরি গড়ে তুলেছে যাতে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে যেতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকে তাদের স্বার্থ উদ্ধার হয়। নজরুল তা ভাঙ্গতে চেয়েছিলেন…
খালিদ হোসেন: নিশ্চয়, নিশ্চয়। ওসব কাজ যারা করতেন নজরুল তাদেরকে খুব অপছন্দ করতেন।
দেশেরপত্র: নজরুলকে নিয়ে আপনার লেখা কোন বই আছে কি?
খালিদ হোসেন: না, আমি কবিকে নিয়ে কোন বই লিখিনি। তবে আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আর্টিকেল লিখেছি যা বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে।
এছাড়াও শিল্পীর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানা যায় যে, আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমানের মত অনেক গানই নজরুল লিখেছেন, যেগুলো পড়ে অবাক হতে হয়। গানগুলো এত গভীর অর্থবোধ, এত হার্দ ভঙ্গিতে লেখা যে তাতে প্রভাবান্বিত না হয়ে পারা যায় না। যে কোনই শিল্পী মনের মানুষ তা উপেক্ষা করতে পারেন না। তার গাওয়া ‘আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান’ গানটি হেযবুত তওহীদের দলীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে শুনে তিনি প্রীত বোধ করেন।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১০
উড়োজাহাজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১২
উড়োজাহাজ বলেছেন: সাক্ষাতকার কেমন হয়েছে একটু জানাবেন। এটাই আমার প্রথম কারো নেওয়া সাক্ষাতকার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৫
ডি মুন বলেছেন: পোষ্টে ভালোলাগা রইলো ++++++