নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত ১৭ই মে শনিবার প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। প্রকাশিত ফলাফলে কৃতকার্যের সংখ্যা ৯১.৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১ লাখ ৪২ হাজার ২৭৬ জন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে গত বছর পাসের হার ছিলো ৮৯.০৩ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ৯১ হাজার ২২৬ জন। গত কয়েক বছরের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় প্রতি বছরই পাশের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকদের উচ্ছসিত হতে দেখা যায়। এমনকি শিক্ষামন্ত্রী ও সরকারের থাকা অন্যান্য প্রভাবশালী নেতাগণও এনিয়ে গর্ব করছেন। অর্থাত ফলাফল নিয়ে সবাই খুশি। কিন্তু আমরা কি খেয়াল করে দেখেছি এই অতি সফলতা আখেরে আমাদেরকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে?
গত বছরটি ছিলো ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়। এ সয়ম পুরো বছর জুড়েই হরতাল-অবরোধ ও নানা ধরনের সহিংসতার কারণে রাস্তা-ঘাটে বের হওয়াটাই ছিলো মুশকিল। স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঠিক মত শ্রেণিকক্ষে হাজির হতে পারেনি। সর্বত্র ছিলো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কিন্তু ফলাফল দেখে কিছুতেই সেসবের সাথে মেলানো যাচ্ছে না। মনেই হয় না এসকল পরিস্থিতি আমাদের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। এতদসত্ত্বেও অভাবনীয় ফলাফল কিভাবে পাওয়া গেল এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা দেখতে পাবো এর জন্য অনেকগুলো কারণই দায়ী। প্রথমত, আলোচিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার কথাই উল্লেখ করা যায়। একথা সর্বজন বিদিত যে, অনলাইনে ঘোষণা দিয়ে এবারের প্রশ্নপত্র অগ্রিম ফাঁস হয়েছে। অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও। এ নিয়ে চিন্তাশীলমহল ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে এসবকে গুজব হিসেবে আখ্যা দেওয়া হলেও পরে সেটি সত্য বলে প্রমাণ হয়েছে।
[ক্যাপশন: অনেকের প্রশ্ন আসতে পারে- শুধু মেয়েদের ছবি কেন? ছেলেরা কি পরীক্ষা দেয় না বা দিলে কি পাশ করে না? আমারও প্রশ্ন তাই।]
চিন্তাশীল মহলের উদ্বেগের কারণ হচ্ছে এই যে, যে মানের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যত প্রজন্ম এগিয়ে যাচ্ছে তাদের সময়টা কেমন যাবে? যে প্রজন্মের গোড়া থেকেই অসততার সূচনা, প্রশ্নপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে পরীক্ষায় পাশ করা, তারা যখন দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করবে তখন দেশের অবস্থা কেমন হবে? স্বাভাবিকভাবেই তাদের চরিত্রের নীতি-নৈতিকতা হবে অতিমাত্রায় দুর্বল। অপরদিকে যারা অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরীক্ষায় পাশ করতে শেখেনি সেই মেধাহীন প্রজন্ম হয়তো সরকারের প্রশাসন চালাতে সক্ষম হবে, কিন্তু তাদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা, উদ্ভাবন ক্ষমতা, কাজের যোগ্যতায় দেখে যাবে ব্যাপক ঘাটতি। ফলে মেধাহীন, অধ্যবসায়হীন একটি জাতি কখনোই দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে না। সচেতন নাগরিক মাত্রই মনে করেন আজকে যারা এদেশকে পরিচালনা করছেন তারা এসব বিষয় মোটেও অনবহিত নন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই হোক অথবা পারিপার্শি¦কতা বিবেচনা করেই হোক, অধিক সংখ্যায় পাশের মাধ্যমে আসলে জাতির স্থায়ীভাবে ক্ষতি করা হচ্ছে। তাদেরকে নীরব আত্মহননের দিকে ধাবিত করা হচ্ছে।
ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে এমন একটি মারাত্মক খেলার অধিকার কারোই নেই। আজকে যাদের সাময়িক খুশির জন্য এই কাজটি করা হচ্ছে তারাই হয়তো ভবিষ্যতে বর্তমান নেতৃত্বকে দায়ী করবে তাদের দুরবস্থা সৃষ্টির অভিযোগে। সুতরাং ভবিষ্যত প্রজন্মের এই আত্মহনন থেকে বাঁচানোর জন্য এখনই দরকার তাদেরকে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মন্ত্র শেখানো। কোনভাবেই কোন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা অসদুপায়ে সহজ পথে কৃতকার্য হওয়ার পথ বের না করতে পারে সেদিকে পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করতে হবে। কারণ এটি ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার প্রশ্ন। এটা আমাদের দায়িত্বও বটে।
১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: অবস্থাটা কেমন হবে একবার চিন্তা করে দেখুন। মুদ্রাস্ফীতির কারণে নাকি জিম্বাবুইয়েতে বাজার ভর্তি করে টাকা নিয়ে বেগে করে সদাই আনতে হয়! আর আমাদের দেশে খবর আসবে জিপিএ-৫ এ পাঁচে ধাক্কা-ধাক্কি!
উরে বাপ! যে দিকে তাকাই সেদিকেই খালি জিপিএ-৫।
২| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
জেরিফ বলেছেন:
৩| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ১:১৫
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মনে হচ্ছে সরকার বিরোধীদল দমনের ব্যাপারে যত কঠোর পরীক্ষায় পাশের হার বাড়ানোর ব্যাপারে তত উদার। মান বা প্রশ্নফাস কোন ফ্যাক্টরই না।।
২১ শে মে, ২০১৪ রাত ১:২২
উড়োজাহাজ বলেছেন: এই দ্বিমুখীতার যোগসূত্র কিন্তু একই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০২
হাসান মাহবুব বলেছেন: মুদ্রাস্ফীতির মত শিক্ষাস্ফীতি। মূল্যহীন হয়ে যাবে একসময়।