নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কতজন বখাটেকে শাস্তি দেওয়া যাবে?

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৬

বখাটেদের যন্ত্রণায় আরেক স্কুল ছাত্রী উম্মে কুলসুমের আত্মহত্যার ঘটনা বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। মাদারটেক-নন্দীপাড়ায় সৎ পিতার সংসাদের যত্নে লালিত উম্মে কুলসুম স্থানীয় মাদকাসক্ত ও বখাটে ছেলে শিমুল চন্দ্রের দ্বারা উত্যক্ত হয়ে আসছিলো অনেক দিন থেকেই। ঘটনার দিনও একইভাবে শিমুল উম্মে কুলসুমকে অপমান ও অকথ্য গালি-গালাজ করায় অভিমানে, দুঃখ ও ক্ষোভে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ঐ কিশোরীটি। সবাই এ ঘটনার পেছনে দায়ী বখাটে যুবক শিমুল চন্দ্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর নারীদেরকে উত্যক্ত করতে সাহস না করে। প্রতিবারই কোন বড় ধরনের ঘটনা ঘটলে, অর্থাৎ বখাটেদের উৎপাতে একমাত্র আত্মহত্যা করলেই মানুষের মধ্যে সাড়া পড়ে। মিটিং হয়, মিছিল হয়, মানববন্ধন হয়। কিন্তু ঘটনার ক’দিন পরেই সবাই সব ভুলে যায়। আরেকটি আত্মহত্যা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভিন্ন কোন টপিক নিয়ে রত থাকি। যেন বিবেকবানদের বিবেকের তাড়না জাগাতে প্রতিবারই একজন নারীকে আত্মহত্যা করতে হবে, একজন নারীকে বলিদান করতে হবে। না হলে সুশীল দেবতা প্রসন্ন হবেন না। আর সমাজের সুশীলতার চর্চাকারীরাও এ নিয়ে আলোচনা করবে না। কোন প্রতিরোধ হবে না। আসলে আমাদের এই প্রতিবাদ, আত্মহত্যাকারীর প্রতি সহমর্মীতা কি সত্যিকার অর্থেই আন্তরিক, নাকি শুধুই লোক দেখানো, শুধুই আমাদের কপট সুশীলতার অংশমাত্র?



আমাদের সমাজের এই দুরাবস্থার কারণ কি, আমরা এত নিচে নেমে গেলাম কেন? আমাদেরকে এত ভণ্ডামী ও কপটতার আশ্রয় নিয়ে থাকতে হচ্ছে কেন? এর পেছনে কী শুধু অপরাধীরাই দায়ী? না, মূলত তা নয়।



মহাভারতের কাহিনী অনুসারে কুরুরাষ্ট্রের ভরা সভায় যুবরাজ দুর্যোধনের আদেশে তারই ভাই দুঃশাসন পঞ্চপান্ডবের স্ত্রী নিরপরাধ দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ করার চেষ্টা করেছিল। সে সভায় সবাই ধর্মের দোহাই দিয়ে এ অন্যায় কাজকে প্রতিরোধ না করে মৌন থাকে। সবাই যার যার ধর্মের দোহাই দিয়ে সম্মতি প্রদান করেছিল একজন নারীকে ভরা সভায় বস্ত্রহীন করার মত সাংঘাতিক অধর্মের। কিন্তু নিয়তি সে সভায় দ্রৌপদিকে বস্ত্রহীন করে নি, বস্ত্রহীন করেছিল মুখোশধারী সকল ধার্মিকের।



আমাদের বর্তমান সমাজেরও অনুরূপ দশা হয়েছে। আমরা ভাবছি উম্মে কুলসুমরা আত্মহত্যা করছে, বিষপান করছে। কিন্তু হায় মুখোশধারী সুশীলগণ, তোমাদেরকে কে বলে দেবে যে কুলসুমরা বেঁচে যাচ্ছে আর আমরাই প্রতিনিয় মরে যাচ্ছি, নিঃশ্বেষ হয়ে যাচ্ছি। আমাদের আত্মার মৃত্যু ঘটছে প্রতিনিয়ত। অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা উপলব্ধি করার মত বোধ শক্তিও আমাদের নেই। পশুরও হয়তো এর চেয়ে বেশি বোধ শক্তি থাকে।

আমরা শাস্তির কথা বলি, কিন্তু কাকে শাস্তি দেবেন? আমরাইতো ঘরে ঘরে জন্ম দিচ্ছি এই বখাটেদের। এই বখাটেরা আমাদের ঘরে, আমাদের সংসারে বসবাস করে। এদেরকে বাঁচিয়ে রাখি আমরাই। তারা যদি শক্তিশালী হয়, পয়সাওয়ালা হয় তবে রাষ্ট্রীয় শক্তি দৈব শক্তির মত আবির্ভূত হয় আপস করিয়ে দেওয়ার জন্য। নারীকে যে ভুলিয়ে ভালিয়ে ধর্ষণ করে তার সাথেই বিয়ে করিয়ে দেয়। এভাবেই আমাদের মমতা, আমাদের ভালবাসা জন্ম দেয় বখাটেদের। তাই এক দিকে বখাটেদের জন্ম দেব আর অন্যদিকে তাদের নির্মূল করবো এমন কুসুমের মত কোমল আর বর্জ্রের ন্যায় কঠিন আত্মিক শক্তি আমাদের আছে? বখাটে এখন ঘরে ঘরে। বখাটেরা রাষ্ট্রীয় পতাকা উড়িয়ে ঘোরা-ফেরা করে। বখাটেরা বিচার করে। বখাটেরা টকশো করে, বখাটেরা মানববন্ধন করে, বখাটেরাই বখাটেদের বিচার দাবি করে। আপনি আমার কথার প্রতিবাদ করবেন? উম্মে কুলসুমরা যখন বখাটেপনার শিকার হয় তখন আপনি মৌন ছিলেন। তাই মৌন সাধুরাও আজ বখাটে। আগে নিজেদের বিচার করুন, তারপর শিমুলদেরকে ধরুন। হ্যা, শিমুলদের নির্মূল হওয়া নির্ভর করছে আপনার আত্ম বিচারের উপর। আপনি যতটা ন্যায়কে ধারণ করবেন ততটাই নির্মূল করতে পারবেন এই শিমূলদের। না হলে অযথা মায়া কান্না করে লাভ নেই। কুলসুমরা ওপার থেকে করুণার হাসি হাসবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২২

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:


ছাত্রীদের রক্ষক স্কুল, স্কুলকে সব জানতে হবে, শক্ত ব্যবস্হা নিতে হবে; একজন শিক্ষকের দায়িত্ব হওয়া উচিত ছাত্র ছাত্রীদের সব ব্যাপারের সাহায্য করা।


আমি শঈগ্রই সব বখাটে ও বাউন্ডুলের ছামড়া তুলে নেবার ব্যবস্হা করবো।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪১

উড়োজাহাজ বলেছেন: ভাল বলেছেন। তবে তা কী প্রকারে সম্ভব বলবেন কী?

আর আপনি কেমন আছেন?

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: কাদম্বিনীর মরিয়া প্রমান করিতে হইবে যে,সে মরে নাই।।
হ্যাঁ এটা ঠিক যে,যে পর্যন্ত আমরা আমাদের সন্তানদের প্রশ্রয় দিয়ে যাবো,সে পর্যন্ত এর সমাধান হবে না।। কালোকে কালো বলা আর সাদাকে সাদা বলা না শেখা পর্যন্ত এ দূর্গতি ঘুচবে না।।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আগে ভন্ডামী ত্যাগ করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.