নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ সেই ভয়াল ৯/১১। আজ থেকে ১৩ বছর আগে, অর্থাৎ ২০০১ সালের এই দিনে বর্তমান বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত শক্তিধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ছিনতাইকৃত চার-চারটি বিমান আছড়ে পড়ে। এর মধ্যে সামান্য সময়ের ব্যবধানে দুটি বিমান আঘাত করলে মার্কিনীদের গর্বের টুইন টাওয়ার মাটির সঙ্গে মিশে যায়। পরিকল্পিত এই বিমান হামলার কারণে মার্কিন নাগরিকসহ প্রায় ৩ হাজার লোকের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনা এতটাই সাংঘাতিক ও দুঃসাহসী ছিল যে তা বর্তমান সভ্যতার ভূ-রাজনীতি তথা সামগ্রিক পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
কি ঘটেছিল সেদিন: অন্য দিনগুলোর মতো সেদিনও সকালে সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অপরদিকে ১৯ জনের একটি আত্মঘাতী বাহিনী ৪টি যাত্রীবাহী মার্কিন বিমান ছিনতাই করে। এর মধ্যে তারা ২টি বিমান দিয়ে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে হামলা চালায়। মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ধসে যায় ম্যানহ্যাটনে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম এই সু-উচ্চ ভবনটি। বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে ৭টি ভবনের একটি কমপ্লেক্স। ১৯৭৩ সালের ৪ এপ্রিল এর যাত্রা শুরু হয়। ১১০ তলার টুইন টাওয়ারের সঙ্গে বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রের অন্য ভবনগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেন্ট নিকোলাস গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ, নর্থ টাওয়ার, সাউথ টাওয়ার, ম্যারিয়ট হোটেল (৩ ডব্লিউটিসি) ও ৭ ডব্লিউটিসি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। আরেকটি বিমান আঘাত হানে ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগনে। চতুর্থ বিমানটি হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথে পেনিসেলভেনিয়াতে বিধ্বস্ত হয়। হামলার পরপরই এ ঘটনার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়দাকে দায়ী করে। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের হামলার প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, যা এখনো বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সমানভাবে প্রকট।
ঘটনার পর পর আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ দলটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এ সময় ওসামা বিন লাদেন তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে অবস্থান করছিলেন। জর্জ বুশ আফগানিস্তানকে প্রথমত লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া অথবা যুদ্ধের আল্টিমেটাম প্রদান করেন। আফগানিস্তান অতিথির মর্যাদা রক্ষার দোহাই দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া দ্বিতীয় শর্তটাকেই গ্রহণ করে। ফলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই পরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবেলায় তালেবানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ওসামা বিন লাদেন পালিয়ে যান। পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশে আস্তানা গাঁড়া আল-কায়েদাকে নির্মূল করতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ। পাশাপাশি লাদেনের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্র বহু দেশ চষে বেড়ায়। বুশ সে সময় বিশ্বের সকল দেশকেই হয় এ পক্ষে কিংবা ওই পক্ষে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি ঘোষণা করেন, এই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। যারা নিরপেক্ষ থাকবে তাদেরকে বিপক্ষ শক্তি বলে ঘোষণা প্রদান করেন তিনি। এ সময় বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। এভাবেই দুর্ধর্ষ এই হামলা মুহূর্তেই পাল্টে দেয় বিশ্ব রাজনীতির গতি প্রকৃতি। বিশ্ব জড়িয়ে পড়ে এক নতুন যুদ্ধে। দীর্ঘ দিনের ব্যবধানে লাদেন ধরা পড়ে নিহত হয়েছেন, কিন্তু এ চলমান এ যুদ্ধের শেষ কবে তা কেউ জানে না। প্রতিনিয়তই এর শিকার শুধুই সাধারণ মানুষ।
নাইন-ইলেভেন খ্যাত এই ঘটনাটির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুসলমান স¤প্রদায়। সারা বিশ্ববাসীর সম্মুখে তাদের চরিত্রের উপর উগ্রবাদিতা ও অসহিঞ্চুতার কালিমা যুক্ত হয়েছে। ফলে ইউরোপ-আমেরিকায় মুসলমান স¤প্রদায়ের বসবাস করা এক প্রকারে দুঃসাধ্য হয়ে ওঠেছে। মাত্র ১৩ বছর আগেও অন্য আট দশজন নাগরিকের মতোই ইউরোপ-আমেরিকার মুসলমানরা সে দেশে নিরুপদ্রব জীবন যাপন করতো। সন্তান-লালন পালন, বিয়ে-শাদী, জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ, সামাজিক দায়িত্ব পালন, রাষ্ট্রীয় কাজে অংশ নেয়া, ব্যক্তিগত ব্যবসা-বাণিজ্য-চাকুরি, কর দেয়া কোনো কিছুতেই ব্যাঘাত ঘটতো না। ধর্ম-কর্ম পালনেও তারা ছিল স্বাধীন। কিন্তু তাদের স্বাভাবিক জীবনে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটায় খুব সাদামাটা এই একটি তারিখ।
মার্কিন তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যারা এই হামলার সাথে জড়িত ছিলো তাদের অধিকাংশই সৌদি আরবের নাগরিক এবং তারা আল-কায়েদার সদস্য। কিন্তু এই ঘটনা থেকে কাদের স্বার্থসিদ্ধি হয়েছে তার দিকে খেয়াল করলে বোঝা যায় ১৯ জন আরব যুবক হামলা করেছে বটে, তবে কলকাঠি নেড়েছে অন্যরা। ঘটনার পূর্বাপর বিবেচনা করলে বোঝা যায়, এই ঘটনায় জড়িত ১৯ জন মানুষের অপরাধে পিছিয়ে থাকা পুরো মুসলিম জাতিকে আরো কঠিনভাবে ঘায়েল করা হয়েছে। একথা হলফ করে বলা যায় যে এ ঘটনার ফলে মুসলমানরা যতটুকু পিছিয়ে পড়েছে তা থেকে উঠে আসতে তাদের বহু সময় অপেক্ষা করতে হবে। এ ঘটনা তাদের উপর স্থায়ীভাবে কালিমা লিপ্ত করেছে। অথচ মুসলমানদের বোকা বানিয়ে যারা লাভবান হয়েছে তারা রয়ে গেছে ধরা-ছোয়ার বাইরে। বিপরীত দিকে তছনছ হয়ে গেছে বহু দেশের স্থিতিশীলতা, পাল্টে গেছে ভূ-রাজনৈতিক চিত্র। তবে সামগ্রিকভাবে এই ঘটনায় পুরো বিশ্ববাসীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, একটি দলের অপকর্মের দায়িত্ব পুরো জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়ায় সাধারণ নিরপরাধ মুসলিমগণও অবিচারের মুখোমুখি হয়েছে। তাই তারাও এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে হাতে অস্ত্রধারণ করেছে। তাই মার্কিনীরাও আজ আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অত্যধিক হুমকির মুখে। বাইরের দেশে তারা অনিরাপদ। তাই এ ঘটনা যারাই ঘটিয়েছে অথবা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে, তারা মানবতার শত্র“, পুরো মানবজাতির শত্র“। যে উদ্দেশ্যই নিয়েই তারা এ কাজ করে থাকুক, তারা যুগ যুগ ধরে পৃথিবীবাসীর অভিশাপ কুড়াবে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: আর গেইনার আক্রান্ত(!)রাই!!
২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১১
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: !!!!
@উড়োজাহাজ।।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫১
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: টুইন টাওয়ার ধ্বংস,কে বা কারা জড়িত, তদন্ত সবই বিতর্কিত হয়ে এক জগা-খিচুরীতে পরিনত। তর উপর ঘি ঢেলেছে তদন্ত রিপোর্টের কিছু অংশ গোপন করায়।
আর লাদেনকে খোজা তো বিরাট রহস্য।মৃত্যু তো আরো বেশী। সুতরাং পুরো ব্যাপারটাই বিতর্কিত।।
তবে এটা ঠিক যে সাফারার বা ভুক্তভোগী মুসলিমরা।।