নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাধাসিধে কথার সাদাসিধে জবাব

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৮

জাফর স্যারের 'না, বাংলাদেশ মরে যায়নি' শিরোনামের সাধাসিধে কথার প্রেক্ষিতে একটা লেখা পাঠিয়েছিলাম দেশের প্রায় প্রতিটা সংবাদপত্রে। কিন্তু কোন পত্রিকাই লেখাটি ছাপায়নি। বুঝলাম, প্রতিষ্ঠিতদের বিরুদ্ধে কথা বলা এদেশের সংবাদপত্রগুলো পছন্দ করে না। তারা আমার লেখাটাকে ইগ্নোর করেছে। বড় বড় উপাধি আর নামের শেষে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক কিংবা কেউকেটা টাইপের কেউ না হলে তারা লেখা ছাপায় না। এরা একতরফা সুযোগ দিয়ে রেখেছে জাফর স্যারদের। তারা একমুখে যা বলবে তা সংবাদপত্রগুলো একযোগে প্রচার করে যাবে। বিপরীত কোন কথা থাকতে পারে তা তারা বিশ্বাস করে না। এভাবে তারা একতরফা বিষয় আমাদের মনে, মগজে গেথে দেয়। আমরা সেগুলো গোগ্রাসে খাই। আমরা প্রভাবিত হই। পাল্টা কথা হজম করা কিংবা প্রচার করার সত সাহস এদের নেই। এর প্রমাণ আমার এই লেখাটা। স্যার, আপনারা কায়েমী স্বার্থবাদীতে পরিণত হয়েছেন, অথবা আপনাদেরকে একতরফা সুযোগ দিয়ে কায়েমী স্বার্থবাদীতে পরিণত করা হয়েছে। ফলে আপনাদের চোখে এটেছে একধরনের রঙ্গিন চশমা, যা দিয়ে আপনারা শুধু সম্ভাবনাই দেখেন। আর আমরা উপলব্ধি করি হাজারো প্রতিভাবান সন্তানের গর্ভধারণকারী একটি বাংলাদেশ মায়ের, যে মা তার সন্তানদেরকে শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখাতে পারে না। এটা কী বন্ধ্যাত্ব নয়, স্যার?
সাধাসিধে কথার সাদাসিধে জবাব

--------------------------------------
শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার, আমি আপনার সরাসরি ছাত্র নই। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের একটা বড় সংখ্যা আপনার ছাত্রত্ব পেয়েছে। অনেকে সেটা না পেয়েও আপনার গুণমুগ্ধতায়, আপনার লেখা-লেখি পড়ে আপনাকে সম্মান করে ‘স্যার’ হিসেবে সম্বোধন করে থাকেন। আমিও তাদেরই সময়বয়সী। তাই তাদের সাথে সঙ্গতি ও শ্রদ্ধা রেখে আমিও আপনাকে ‘স্যার’ হিসেবেই সম্বোধন করছি। শ্রদ্ধেয় স্যার, গত ১৯ ডিসেম্বর দৈনিক যুগান্তরসহ দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত ‘না, বাংলাদেশ মারা যায়নি’ শিরোনামে প্রকাশিত আপনার নিবন্ধটি মনোযোগ দিয়ে পাঠ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। নিবন্ধটি পড়ার পর আমার মনে এ ব্যাপারে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে তা লিখে আপনাকে জানানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি। যদিও আমার এ লেখাটি কোন কাগজে স্থান পাবে কি না তা নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। কেন সন্দিহান তা আমি এ আলোচনার কোন একটি অংশে তুলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

আপনার লেখাটির প্রসঙ্গ বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা-ভাবনাকে ঘিরে। ‘বাংলাদেশ হচ্ছে মৃত চিন্তা-ভাবনার দেশ’- বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত একজন ব্রিটিশ লেখকের এমন মন্তব্যকে ঘিরেই এগিয়ে গেছে আপনার লেখাটি। এর একটি অংশে স্থান পেয়েছে আপনার ও আমার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব জনাব আবুল মকসুদ সাহেবের লেখা উক্ত মন্তব্য নিয়ে ‘ভাবসম্প্রসারণ’ও। বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশে বসবাস করা একজন মানুষের এমন বক্তব্যের পেছনে আপনার যথেষ্ট আপত্তি থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছেন তার অজ্ঞতাকে দায়ী করে। কিন্তু এদেশে বসবাসকারী একজন বুদ্ধিজীবী ও সচেতন নাগরিকও সেই কথায় সায় দেওয়া এবং বড়সড় একটি নিবন্ধ ফেঁদে বসায় আপনি চমকে উঠেছেন, অবাক হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে আমার কথা হচ্ছে, আপনারা দু’পক্ষই বিষয়টির চূড়ান্ত অবস্থাকে গ্রহণ করে একে সাংঘাতিক ঘটনা বানিয়ে ফেলেছেন। ব্যাপারটা অনেকটা একটা রশির দুই প্রান্তে ধরে টানাটানির মত। কেউ মাঝখানে ধরলেন না। ধরলেন এর শেষ প্রান্তে। এটা এক ধরনের চরমপন্থা। অথচ একটা রশির দুই মাথাকে একসাথে মিলিয়ে রশিটাকে আরো মোটা বানানো যায়, শক্তিশালী করা যায়- সেটা আপনারা ভুলেই গেছেন। কিন্তু তা আপনারা করবেন না। রশিটির দুই প্রান্তে ধরে টানাটানি করে শেষ পর্যন্ত ছিড়ে ফেলাতেই আপনারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম তারা অন্তত সেটাই দেখে আসছি।

যাই হোক, মূল কথায় আসি। ‘বাংলাদেশ মারা যায়নি বা বাংলাদেশ মৃত চিন্তার দেশ নয়’, আবার ‘বাংলাদেশ চিন্তা-চেতনায় মৃত বা বন্ধ্যা ভূ-খণ্ড’ উভয়টিই সত্যি। আপনারা সব বিষয়ই যার যার অবস্থান থেকে দেখে থাকেন এবং সেই অবস্থান থেকেই এর ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু যে অবস্থানে আপনি নেই সেই অবস্থান থেকে নতুন কোন ব্যাখ্যা এলে অবাক হন, আশ্চার্য্যান্বিত হন। সেটা নিয়ে আবার প্রতিক্রিয়াও লিখে ফেলেন। আপনাদের সেই প্রতিক্রিয়া একযোগে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাপত্রগুলো ছাপিয়েও ফেলে। আপনার ‘না, বাংলাদেশ মারা যায়নি’ শিরোনামেরর সাথে একমত পোষণ করে বলতে চাই, এদেশ মৃত চিন্তার দেশ নয়, আবার শ্রদ্ধেয় আবুল মকসুদের সাথেও একমত পোষণ করে বলতে চাই, হ্যা- সত্যিই এ‘দেশ চিন্তা-চেতনায় মৃত বা বন্ধ্যা ভূ-খণ্ড’।

এবার এর কারণটা বলছি। এদেশকে নিয়ে দেশে কিংবা বিদেশে চিন্তা করার বহু মানুষ আছেন। বহু মানুষ আছেন যাদের ধ্যান-জ্ঞানে শুধু দেশের উন্নয়নই কাজ করে। মাঝে মাঝেই তাদের মধ্যে কারো কারো সেই সৎ চিন্তার পরিস্ফুটন ঘটে। বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষিত হয় আমাদের প্রতি। আমরা আশান্বিত হই যে- না, ‘এদেশ মারা যায়নি’, এদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। অনেকে বলেন এবং আমিও বিশ্বাস করি, আমরা জাতি হিসেবে খুব আবেগপ্রবণ একটি জাতি। তাই হয়তো এমনটা হয়। কিন্তু বাস্তবতায় এদেশের কল্যাণকামী সেই চিন্তাশীল সফল মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। আপনি তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম তুলে ধরেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যেও কত জন কতটা দেশ হিতৈষী আর কতটা মানুষের ইমোশন নিয়ে ব্লাকমেইলকারী, পুঁজিবাদী কর্পোরেট ব্যবসায়ী তা হয়তো আপনি তলিয়ে দেখেন নি। হয়তো আপনি ‘সাদাসিধে’ মানুষ বলেই তাদেরকে সেভাবে ভাবতে পারেন না।

স্যার, আপনি লিখেছেন যে, এদেশে বহু সম্ভাবনাময় তরুণ দেখছেন, আপনাকে তারা ঘিরে আছে। আপনার চারপাশে শুধু প্রতিভার ছড়াছড়ি। তারা ড্রোন বানাচ্ছে, সাবমেরিন বানাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের এ্যাপস বানাচ্ছে, আপনি যা চাচ্ছেন তারা তা-ই আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে। খুব ভাল কথা। আমিও তাদের এই উদ্ভাবনা শক্তিতে আনন্দিত। কিন্তু আমার জিজ্ঞাস্য, এতে এত আশান্বিত হওয়ার কিছু আছে কী? আধুনিক বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান আর অন্যান্য আবিষ্কারের তুলনায় এগুলো মুড়ি-মুরকির মত বিষয়। তাছাড়া এগুলোর মধ্যে বেশিরভাই হয় ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বড় জোর কোন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ। কিন্তু রাষ্ট্র এখানে কী করছে কিংবা এসব বিষয়ে রাষ্ট্রের ভূমিকা কতটুকু? আপনি জীবনের একটা বড় সময় (আঠারো বছর) দেশের বাইরে কাটিয়ে এসেছেন। নিশ্চয় সেখানে থেকে সেই দেশগুলোকে আমাদের চেয়ে অনেক ভালোভাবে দেখে এসেছেন। আমাদের অনেকেরই সেই সৌভাগ্য হয়নি। তবে আমরা দেশে বসেই সংবাপত্রে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে খবরগুলো পাই তাতে দেখতে পাই সেইসব দেশে এই প্রতিভাবানদেরকে সরকার প্রণোদনা দিয়ে, বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানে অধিক বেতনে চাকুরি দিয়ে তাদের দিয়ে বড় বড় কাজ করিয়ে নিচ্ছে। অনেক বড় বড় হ্যাকারদেরকে আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক উচ্চ বেতনে চাকুরি দিয়ে ভাল কাজ করিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে থেকে এখন আপনি কি দেখছেন জানি না। তবে আমরা দেখছি সেই প্রতিভাবানদের প্রতিভার আলো বেশিরভাগ খবরের কাগজে স্থান পাওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকছে। এরপর ক’দিন পরেই ফুঁস। সরকার তাদেরকে নিয়ে বিশেষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে না। সরকারের দায়িত্বে থাকা এমপি-মন্ত্রীদের সেই সময়ও নেই। তাদের অর্ধেক সময় অতিবাহিত হয় প্রতিপক্ষ দলকে শায়েস্তা করার চিন্তায়। আর সরকারি আমলাদের কি অবস্থা সে বিষয়ে আশা করি আপনিও সবিশেষ অবহিত আছেন। সরকারে থাকা উভয় পক্ষের এই অবহেলায় কালের গর্ভেই আমাদের প্রতিভাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে অথবা তারা ব্যক্তিগতভাবে ভাগ্যবান হলে বিদেশে গিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করছেন। এই জ্ঞান, প্রতিভা টাকার কাছে, উদ্যোগের কাছে হেরে গিয়ে অন্য দেশকে উন্নত করছে, সমৃদ্ধ করছে। আর আমরা অধিকাংশ হতভাগারা থেকে যাই আগের অবস্থানে। আমরা অন্যের পিছু লেগে, অন্যের সমালোচনা করে সময়কে বৃথা কাজে অতিবাহিত করি। তাই আমরা চিন্তার দিক দিয়ে মৃত নই একথা যেমন সত্য, তেমনি সত্য আমরা সেই প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে পারি না। কেউ যদি গর্ভ ধারণ করে, কিন্তু সেই গর্ভের ভ্রুণকে আলোর মুখ দেখাতে না পারে তবে আপনিও নিশ্চয় স্বীকার করবেন যে- সেটাও নিশ্চয় এক ধরনের বন্ধ্যাত্ব।

স্যার, সত্যিই এদেশ প্রতিভার বিকাশের জন্য উর্বর নয়। সত্যিই এ ক্ষেত্রে এদেশ বন্ধ্যা। কিন্তু আপনারা কিছু কিছু ভাগ্যবান মানুষ আছেন যাদের ক্ষেত্রে কথাটা মানায় না। আর আমরা যারা বাকি ‘অধিকাংশ’রা রয়েছি তাদের ক্ষেত্রে সেটা খুবই মানায়। এর একটা বড় উদাহরণ হতে পারে আমার এই লেখাটা। স্যার, আপনার প্রতি ঈর্ষা করছি না। শুধু সত্যিকার বিষয়টি তুলে ধরার জন্য বলছি। আপনার লেখা প্রায় প্রতিটি কলাম এদেশের প্রায় প্রতিটি প্রথম সারির সংবাদপত্রে একযোগে ছাপানো হয়। কিন্তু আমার এই একটিমাত্র লেখাও হয়তো ছাপানো হবে না। হলেও শুধু ‘আমারটা ছাপানো হবে না’ এই মনোভাবকে মিথ্যা করার জন্য ব্যতিক্রম হিসেবে ছাপা হতে পারে। এর কারণ কী? এর কারণ হচ্ছে এদেশে প্রতিভার মূল্য নেই, এদেশে নতুনদেরকে স্থান দেওয়া হয় না। কোন লেখকের নামের আগে যদি কোন বড় বড় উপাধি থাকে, ডিগ্রি ঝোলানো থাকে তবেই তার লেখা ছাপা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠিতদের চাপে আমাদের মত নতুনদের স্থান হয় না। আমরা সেই হতভাগাদের অন্তর্ভুক্ত। আমরা নিজেদের নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগে থাকি। কেন? কারণ আমাদের প্রতিভা বিকশিত করার কোন সুযোগ এদেশ করে দেয়নি। দেশ আমাদের সেভাবে গড়ে তুলতে পারেনি। আমাদের যোগ্যতায় কুলোয়নি একটা বড় ডিগ্রি অর্জন করার। দেশের রাজনীতি আমাদেরকে শিক্ষাঙ্গনে খুন করে ফেলে, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদেরকে ঝরে পড়তে বাধ্যতে করে। এখনও পেটের ক্ষুধা মেটাতে গিয়ে আমাদের জ্ঞানের ক্ষুধাকে উপেক্ষা করতে হয়। এই যে আপনার লেখার প্রসঙ্গে আজকে যখন এই লেখাটি লিখতে বসেছি তখনও আমাকে প্রয়োজনীয় অন্য কাজ বাদ এটা লিখতে হচ্ছে। একটা লেখাকে পূর্ণতা দিতে কতটুকু শ্রম দিতে হয় তা নিশ্চয় আপনি ভালোভাবে জানবেন। সেই পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করে এই লেখা যদি না ছাপা হয় তবে আমার এক দিনের পুরো শ্রমই পণ্ডশ্রমে পরিণত হবে। পরবর্তীতে নিশ্চয় আমি আর কোন লেখার উৎসাহও পাব না। আমার প্রতিভার ইতি ঘটবে এখানেই। শ্রদ্ধেয় স্যার, এই হচ্ছে আমাদের অসুবিধা।

স্যার, আপনার লেখা নিয়ে অনেক কথাই বলার ছিল। কিন্তু লেখার আকার বড় হয়ে গেলে স্থান সংকুলানের কথা চিন্তা করে সেটা পত্রিকা কর্তৃপক্ষ আগে-ভাগেই বাদ দেয় কিনা- সেই ভয়ে আছি। সাহস পাচ্ছি না। তাছাড়া আপনার মত স্বনামধন্য লেখকের লেখার পিঠে লেখাকে অনেকে ধৃষ্টতা হিসেবেও নিতে পারে। তবুও সংক্ষেপে বলতে চাই, আপনার লেখা পড়ে কেমন জানি আপনাকে কল্পবিলাসী মনে হয়। মনে হয় এদেশে থেকেও আপনি এদেশে থাকেন না। মনে হয় এদেশের সাধারণ মানুষের সাথে আপনার মেলা-মেশা হয় না। আপনার চলাচল এদেশের সৌভাগ্যবানদের সাথেই সীমাবদ্ধ। আপনি আপনার লেখায় সাহস হারানো মানুষগুলোর সামনে কতগুলো উদাহরণ টেনে সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন- এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু আপনি যে উদাহরণগুলো টেনে এনেছেন তা আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমাদের সামসময়িক দেশগুলোর তুলনায় আমরা বহুগুণে পিছিয়ে আছি।

স্যার, এই দেশ, এই দেশের প্রশাসন, উপর সারি যতক্ষণ ঘুরে না দাঁড়াবে, সততাকে সম্বল হিসেবে গ্রহণ করে না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সাহস দিয়ে আমরা টিকে থাকতে পারব না। ‘টিকে না থাকা’ বলতে আমি শারিরীকভাবে অন্য জাতির পদানত হওয়াকে বোঝাচ্ছি না। প্রতিভা বিকাশের কথা বলছি, সুস্থ চিন্তার সফল প্রসবের কথা বলছি। এখন আমরা যেভাবে টিকে আছি তাকে টিকে থাকা বলা যায় না। আমরা এখন কোনোমতে খেয়ে-পড়ে দাঁতে দাঁত লাগিয়ে খিঁচিয়ে বেঁচে আছি। এর মধ্যে আপনারা সৌভাগ্যবান কেউ কেউ হয়তো আরেকটু ভালোভাবেই বেঁচে আছেন (যদিও তা সত্য নয়, কারণ অনেক সময়ই আপনাদের লেখায় আপনাদের অস্বস্তি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ফুটে উঠতে দেখি)।

স্যার, শত শত প্রতিভা নিয়েও আমরা আমাদের সেই প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সম্ভাবনা না দেখতে পেয়ে ঝিমিয়ে পড়ছি। আর স্যার, আপনার লেখায় বার বার জিয়া হায়দারকে ‘বিখ্যাত তরুণ লেখক’ বলে সম্বোধন করায় নিশ্চয় এই তরুণটিও এতে আহত বোধ করবেন, প্রতিভা হারিয়ে ফেলবেন। নতুনদেরকে আহত না করে তাদেরকেও দয়া করে একটু সুযোগ করে দিন। আশার কথা বলতে গিয়ে তরুণদেরকে এভাবে আহত করবেন না, প্লিজ। আর ঈর্ষণীয় সংখ্যার মানুষ আপনাকে অপছন্দ করে- এ ব্যাপারে আপনি সচেতন জেনে খুব খুশি হয়েছি। আশা করি এর পেছনে সঠিক কোন কারণটি কাজ করে তা খুঁজে দেখবেন। আশা করি সেই সঠিক কারণটি খুঁজে পেয়ে সংশোধিত হলে এদেশের মানুষগুলোর হৃৎস্পন্দন বুঝতে পারবেন, তাদের সত্যিকার ব্যথার স্থানটি স্পর্শ করতে পারবেন। একই সাথে আপনারা যারা রাষ্ট্রের উপরতলার লোকজনের সাথে উঠ-বস করেন, কথা বলার সুযোগ পান তারা তাদের নিজেদের দায়িত্বটুকু সঠিক ও সৎভাবে পালন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন, যাতে আমাদের আশাহত হওয়ার জায়গাটি মিইয়ে যায়, যাতে আমরা সত্যি সত্যি আমরা আশান্বিত হতে পারি।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩৩

খেলাঘর বলেছেন:


ঝামেলা

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

উড়োজাহাজ বলেছেন: কোথায় ঝামেলা, খেলাঘর?

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩

আদম_ বলেছেন:
পুরো লেখাটির সাথে শতভাগ সহমত।
আমিও কিছু একটা লিখতে চাইছিলাম এই প্রসংগে। যেখানে দিনে দিনে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কমছে। যারাও বা আছে তারা হাপাতে হাপাতে পড়া শেষ করে স্বপ্ন দেখে সোনালী ব্যাংকে কেরানীর চাকুরি, তাহলে এ দেশ কে মৃত ভাবনার দেশ বলাই যায়।

জাফরের লেখা-চিন্তা-ভাবনা সব সময়ই অবাস্তব অলীক ভেলকি দিয়ে ঘেরা। আপনি যর্থাথ বলেছেন "....তবুও সংক্ষেপে বলতে চাই, আপনার লেখা পড়ে কেমন জানি আপনাকে কল্পবিলাসী মনে হয়। মনে হয় এদেশে থেকেও আপনি এদেশে থাকেন না। মনে হয় এদেশের সাধারণ মানুষের সাথে আপনার মেলা-মেশা হয় না"

এ লেখায় মাত্র দুটো কমেন্ট পড়াও একটা জীবন্ত উদহারণ, অথচ এটা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে যাবার কথা।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৩

উড়োজাহাজ বলেছেন: ধন্যবাদ আদম_।
আর আলোচনার ঝড় হবে না রে, ভাই। কারণ, আমি কোন সিন্ডিকেট করি না যে! ব্লগেও যে সিন্ডিকেট চলে।

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

মাহাদি হাসান বলেছেন: উন্নত গনতান্ত্রিক! দেশের হাতে ড্রোন প্রযুক্তিটা বেশ আগেই এসেছে, তাতে ফলাফল কি হয়েছে আমাদের সেদিকে তাকানো দরকার। পাকিস্থান, আফগানিস্থান সহ মিডিল ইস্টের বহুদেশে ড্রোন হামলায় প্রচুর বেসামরিক নিরপরাধ মানুষের প্রান গেছে।

উইকিলিক্সের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজগুলো যারা দেখেছেন তারা সবাই তা জানেন। সেখানে বাংলাদেশের মত দুর্নীতিবাজ রাজনীতির দেশের পলিটিশিয়ানদের হাতে ড্রোন চালনার কনসোল পৌছালে কি হবে তা কল্পনা করতে চাই না। প্রতিপক্ষ ঘায়েলের যে খুনি মানসিকতার কথা প্রতিদিন এই রাজনীতিবিদদের মুখে শুনি তাতে প্রানঘাতি ড্রোনের নতুন কোন ডেফিনেশন তৈরী হবে না।
জাফর ইকবাল অবুঝ শিশু নন। তিনি কোন পত্রিকায় লিখছেন সে সম্পর্কে তার জ্ঞান অবুঝ শিশুর মত এটা বিশ্বাস করি না। তিনি ভাল করেই জানেন বাংলাদেশের পত্রিকার মালিক কারা হতে পারে। দুয়েকজন ছাড়া বাকি সবার প্রোফাইল ঘাটলে কি বের হয়ে আসবে সেটা আমাদের মত সাধারন জনগন জানতে পারলে জাফর ইকবালের আগেই জানার কথা।

তিনি যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন সেই শাবিতে কি ধরনের ঘটনা আমরা দেখছি। সেখানে ছাত্রদের হাতে যে ধরনের অস্ত্র আমরা দেখি তাতে এদের অনেককেই আমরা ছাত্র বলব নাকি উগ্র সন্ত্রাসী বলব তা নিয়ে কনফিউজ হয়ে যাই। যে ছাত্রদের কথা জাফর ইকবাল বলছেন, তার প্রতিষ্ঠানেই এই সংখ্যাটা খুবই নগন্য। তবে আশার ব্যাপার হল এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরে নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তার মানুষ আমরা দেখি, যদিও অকালে তারা ঝরে যায় সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে। কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় এমনই এক প্রতিভার আলো নিভে গেল যিনি স্বল্প খরচে তৈরী করেছিলেন মোটর বাইক ইঞ্জিন।

অনেকে তাকে নিয়ে এ্যাপোথিউসিস(Apotheosis) চর্চা করতে চান আমি এটাকে মানসিক ব্যাধি হিসেবে দেখি। বাংলাদেশের সমাজ ভাবনায় যে বন্ধ্যাত্ব তৈরী হয়েছে তাতে মধ্যবিত্তের একাংশের সুবিধাপ্রাপ্তির ব্যবস্থা বন্ধ হয় নি। বরং সেই প্রাপ্তির বিষয়টাকে মাথায় না রাখলে বাস্তবতার ব্যাখ্যা বিমূর্ত হতে বাধ্য। বাংলাদেশের শাসন যন্ত্রের ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে যখন রানা প্লাজার রানারা ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ট্রাজেডির জন্ম দেয়, যখন দেশের রেমিটেন্স আনতে গিয়ে জ্বলন্ত অগ্নিকান্ডে ঝাঁপ দিতে হয় দেশের নিম্নবর্গের মানুষগুলোকে, যখন প্রশ্নপত্রের ফাঁসের হিড়িকে মেধার হয় জলাঞ্জলি তখন বন্ধ্যা সমাজে ডিক্সো ডেন্সিং প্রফেসররা নাক সিটকায় আবুল মকসুদ অথবা অন্য কাউকে লক্ষ্য করে।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৭

উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু আমাদের দেশে একশ্রেণির মানুষ গজে উঠেছে যারা এই প্রতিষ্ঠিতদের ব্যাপারে কোন কথাই শুনতে চান না। কোন সমালোচনাও না। করলেই তাদেরকে পাকি সমর্থক, পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বিরুদ্ধ মতকে দমন করতে চায়। এভাবে কিন্তু তারা নিজেদের সমর্থকদেরকেও হারাচ্ছে। দু:খের বিষয়, আমাকেও 'আমার ব্লগ' এ এই পোস্টের জন্য পাকি হিসেবে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। এই অন্ধ সমর্থকদের জন্য করুণা হয়। এদের হুশ ফেরানো বোধ হয় দু:সাধ্য।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৬

উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু আমাদের দেশে একশ্রেণির মানুষ গজে উঠেছে যারা এই প্রতিষ্ঠিতদের ব্যাপারে কোন কথাই শুনতে চান না। কোন সমালোচনাও না। করলেই তাদেরকে পাকি সমর্থক, পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বিরুদ্ধ মতকে দমন করতে চায়। এভাবে কিন্তু তারা নিজেদের সমর্থকদেরকেও হারাচ্ছে। দু:খের বিষয়, আমাকেও 'আমার ব্লগ' এ এই পোস্টের জন্য পাকি হিসেবে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। এই অন্ধ সমর্থকদের জন্য করুণা হয়। এদের হুশ ফেরানো বোধ হয় দু:সাধ্য।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

মাহাদি হাসান বলেছেন: আসলে মতাদর্শিক অথবা বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই সংগ্রামটা কোন পপুলারিটি কনটেস্ট না, আমি যতটুকু বুঝি। আর যারা এটাকে পপুলারিটি কনটেস্ট মনে করেছে তারা বিভিন্ন গোষ্ঠী কেন্দ্রিক কাল্ট তৈরী করবে এটা সকলের জানা। মধ্যবিত্ত বেজায় একটা প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। এদের সাথে আপনি ক্রিটিক্যালি এনগেজ করতে গেলেই সমস্যা তৈরী হবে। তারপরও এই কাজটা করতে হবে, যদিও সেক্ষেত্রে এ ধরনের ট্যাগ হবার শিকার হতে হবে।

তবে এতে আমার মনে হয় মানসিকভাবে পীড়িত হবার কিছু নাই। কারন মূর্খতা মানুষকে দৈত্য দানবে পরিনত করে। আপনি যদি ইতিহাসের দিকে তাকান বিশেষ করে এই মধ্যবিত্তের তাহলে ব্রিটিশদের কেরানীর চাকুরী করে এদের উত্থান, প্রভুদের হ্যাঁ এর সাথে হ্যাঁ অথবা না এর সাথে না বলেই এদের ইতিহাস এগিয়েছে। তার রেশ থাকবে না কেন। আধা-ঔপনিবেশ অথবা নয়া-ঔপনিবেশ যাই বলেন না কেন মন মানসে এরা এখনও কেরানী।
এদের নীতিহীনতা এভারেস্টের চূড়াকে ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই।

এদের নির্দিষ্ট ইতিহাসবোধের বাইরে কোন জগত থাকতে পারে কুয়োর ব্যাঙগুলো তা জানে বলে মনে হয় না। তাই আপনি সেখানে নতুন চিন্তার খোরাক দিতে যাবেন তাহলে এই ট্যাগগুলো আপনার প্রাপ্য হিসেবেই ধরে নেন। আমার মতে এই ধরনের কাল্টের দোকানগুলোতে না যাওয়াই ভাল। আর আপনার প্রোফাইলের অনুসৃত বাক্যগুলো মানতে গেলে ভড়কে যাবার কিছু নাই। ধন্যবাদ

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৩৬

উড়োজাহাজ বলেছেন: সুন্দর কথা বলেছেন। আসলেই এদেরকে পাত্তা দেওয়া ঠিক নয়। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: দূর্ভাগ্যক্রমে লেখাটি আমার পড়া হয় নি কিন্তু আপনার আলোচনার ভিত্তিতে আমার মন্তব্য(যা আমি বরাবরই বলে আসছি) কিছু প্রতিভাবান এবং প্রতিষ্ঠিত লোকের মতামতের বিরূদ্ধে আমরা যেতে পারি না।। আমাদের দেশে একশ্রেণির মানুষ গজে উঠেছে যারা এই প্রতিষ্ঠিতদের ব্যাপারে কোন কথাই শুনতে চান না। কোন সমালোচনাও না। করলেই তাদেরকে পাকি সমর্থক, এটাই মূল উত্তর।। আর কিছু বলার নেই।।
যে কয়েকজন সত্যিকার প্রতিভাবান, তারা এমন একটা ভক্তের বলয় তৈরী করে রেখেছেন যে, তারা যা বলবেন তাই আমাদের মাথাপেতে নিতে হবে।।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩৭

উড়োজাহাজ বলেছেন: তথাস্তু।

৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯

রাজু রহমান বলেছেন: কমপ্লেক্স !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.