নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেকেই মনে করে থাকেন যে যারা মানবতাবাদী কিন্তু ধর্মচর্চা করেন না তাদের সে মানবতা পরকালে কোন কাজে আসবে না। স্রষ্টার কাছ থেকে কোন প্রতিদান তারা পাবেন না। কিন্তু অপরদিকে যারা খুব ধর্ম-কর্ম করেও যথেষ্ট মানবিক হতে পারলেন না, প্রতিবেশি, ইয়াতিম, দুঃস্থদের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেন না, নিজে পেট পুরে খেলেন, সম্পদের পাহাড় গড়লেন এবং সেই সম্পদের হক পূর্ণ করলেন না তাদের সেই ধর্মাচার আদৌ কি পরকালে কোন কাজে আসবে? না, মোটেও না। বরং যারা ধর্মকর্ম না করেও মানবিক হয়েছে, অন্যের বিপদে এগিয়ে গেছে, আর্ত-পীড়িতের সহায়তা করেছে তারা কিন্তু সেই কথিত ধার্মিকদের চেয়ে একদিক দিয়ে সামান্য হলেও এগিয়ে থাকবে। কিভাবে, সেটাই ব্যাখ্যা করছি।
হাশরের ময়দানে আল্লাহর এক আদেশে মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। একদল জান্নাতি ও অপরদল জাহান্নামী। তাদের যার যার হাতে নিজেদের আমলনামা ধরিয়ে দেওয়া হবে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে তাদের প্রতি কোন প্রকার জুলুম হয়েছে কি না। কেউ বলতে পারবে না যে তাদের উপর জুলুম করা হয়েছে। এবারে আসবে মিজানের প্রশ্ন। অর্থাৎ কার পূণ্য কতটুকু আর পাপই বা কতটুকু তার বিচার হবে। জান্নাতিদের মধ্যে যারা অধিক পূণ্য করেছেন তাদেরকে দেওয়া হবে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন স্তর, আর যাদের পূণ্যের পরিমাণ কম তাদেরকে দেওয়া হবে নিন্মস্তরের জান্নাত। জান্নাতের যে প্রধান আটটি স্তর রয়েছে তার মধ্যেও আরো অনেক স্তর থাকবে। যার যার আমল অনুসারে তাদেরকে সেই স্তরে পাঠানো হবে। অপরদিকে জাহান্নামে যারা যাবে তাদেরও পাপের পরিমাপ করা হবে। যারা ঘোরতর পাপী (মোনাফেক) তাদেরকে দেওয়া হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। অন্যরা থাকবে তুলনামূলকভাবে কম শাস্তি দেওয়া হয় এমন স্তরে।
এখন কথা হচ্ছে, যারা মানবতাবাদী, দুনিয়াতে অন্যের বিপদে যারা সবার আগে সাড়া দিয়েছেন তাদের কি কোন ফায়দাই নেই? পাঠক এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছেন যে তাদের এই কাজেরও প্রতিদান আছে। অর্থাৎ তাদেরকে তুলনামূলকভাবে কম শাস্তির স্তরে পাঠানো হবে। এর সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত রসুলাল্লাহর চাচা আবু তালেব। সত্য দীনকে আলিংগন না করার অপরাধে তাকেও জাহান্নামে যেতে হবে। কিন্তু তার শাস্তি হবে কম।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে সবচেয়ে কম শাস্তিই আসলে কতটুকু কম? জাহান্নামের সামান্য আগুনইতো মারাত্মক! হ্যাঁ, এটাও সত্য। কিন্তু দুনিয়ার বুকে নানা ধরনের আমল করে, রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ে, না খেয়ে থাকার ব্রত করে যারা এত এত আমল করলেন, সেটা যদি তাদেরকে যথেষ্ট মানবিক হতে সহযোগিতা না করে তবে তাদের অবস্থা কি আরো করুণ হবে না? হ্যাঁ, লোক দেখানো আমল, নিজেকে মানুষ সম্মান করুক এই আশায় করা আমল, আর্তপীড়িতের ডাকে ছুটে না গিয়ে স্বার্থপরের মত যে আমল করা হয় সেগুলোকে বরং আল্লাহ বেশি ঘৃণা করেন। আল্লাহকে ধোঁকা দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয় যে আমলের মাধ্যমে তা তাঁর ক্রোধকে উদ্দীপ্ত করে। সুতরাং যে ধর্ম-কর্ম করেও মানবিক হতে পারল না সে ধর্ম-কর্মহীন মানবতাবাদী কি পাবে না পাবে তা নিয়ে চিন্তা না করে ধর্ম-কর্মের দেওয়া শিক্ষা অনুযায়ী তাকে মানবিক হবে হবে। মানবিক হওয়াই সব ধর্ম-কর্মের মূল লক্ষ্য। কেউ ধর্ম-কর্ম না করে যদি মানবিক হতে পারে তবে ধর্ম-করেও কেউ যদি মানবিক না হতে পারে তবে চেয়ে হতভাগা আর কে?
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪
উড়োজাহাজ বলেছেন: কোথায় হলে খুশি হবেন? আপনার চান্দিতেও হাশর অনুষ্ঠিত করা সম্ভব।
২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১৪
স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: চমৎকার ব্যাখ্যা ! এই লেখা থেকে ধর্মান্ধদের শিক্ষণীয় বিষয় হলো কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক ইবাদতে নয়, মানবসেবী ইবাদতকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে । কেনোনা, আনুষ্ঠানিক ইবাদতগুলো মূলত মানবতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাক-ইবাদত বা প্রশিক্ষণ । আর যারা ধর্মচর্চা বাদ দিয়ে মানবতায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন, তাদেরকে আরেকটু ভাবিয়ে তুলবে । সেটা হলো তাদের এই নিঃস্বার্থ পার্থিব কর্মকান্ড কি পারলৌকিক ফলাফলের সাথে সম্পর্কযুক্ত?
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
"হাশরের ময়দানে আল্লাহর এক আদেশে মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। "
-ময়দানটা কোথায়?