নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাযজ্ঞের সাথে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার যোগসূত্র

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮

আমরা হেযবুত তওহীদের সদস্যরা সংখ্যায় খুব অল্প। আমরা জানি আমরা কত বড় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমরা এটাও জানি যে আমাদের বিরুদ্ধবাদীদের সংখ্যাটা কত বড়। বলা যায় আমরা এক উত্তাল মহাসমুদ্রের মাঝখানে একটু টুকরো ভেলার মত। কিন্তু আমরা যে সত্যটি তুলে ধরছি সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সাথে এই দেশের স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতি অথবা পিছিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে। এমনকি দেশের অস্তিত্বও নির্ভর করছে।

আমাদের দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে এদেশের ধর্মীয় বিভক্তি এবং ধর্মের বিকৃত ব্যাখ্যা দ্বারা উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের চর্চা। আমরা দীর্ঘ দিন থেকে আমাদের সাধ্য ও সামর্থের গণ্ডী থেকে বলে আসছি যে ধর্মকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে দেশে জংগীবাদী কার্যক্রম, উগ্রতার বিস্তার ও দাঙ্গা বাঁধানোর জন্য একটা শ্রেণি সর্বদা ইস্যু খুঁজছে। তারা চায় দেশে যেকোনভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে এবং পরিস্থিতি ঘোলা করে দেশকে তালেবানী কায়দায় শাসন করতে। "আমরা হব তালেবান-বাংলা হবে আফগান" হয়তো তারা অতীতে মিছিল করে বলেছে। কিন্তু এখন মিছিল করতে পারছে না। কিন্তু তারা সেই মনোভাব থেকে একটুও সরে আসেনি। তারা কায়মনোবাক্যে সেই তালেবানি শাসন কামনা করতে চায়। তারা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঠিকই বিভিন্ন তৎপরতা চালায়। রাষ্ট্রের ভেতর রাষ্ট্র তৈরি করে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করে। রাষ্ট্র তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

কিন্তু সাবির্ক পরিস্থিতি, আইনশৃংখলাবাহিনীর তৎপরতা, বৈশ্বিক পরিবেশ ইত্যাদি কারণে তাদের সীমানা হয়তো এখনো ছোট্ট পরিসরে রয়ে গেছে। পরিবেশ তাদেরকে খুব একটা সুযোগ দিচ্ছে না। কিন্তু এদের দরকার একটা বড় ধরনের ইস্যু। যেটাকে কাজে লাগিয়ে তারা পরিস্থিতি ঘোলা করতে পারবে।
এই ইস্যু সৃষ্টির জন্যই তারা রামুতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, বাড্ডায়, দিনাজপুরে এখানে ওখানে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। নোয়াখালীতে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে তারা সেই ধরনেরই একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। আল্লাহর ঘর মসজিদে দাঁড়িয়ে তারা হেযবুত তওহীদকে খ্রিষ্টান আখ্যা দিয়ে, মিছিল করে হেযবুত গির্জা নির্মাণ করছে বলে মানুষকে উত্তেজিত করেছে। যেহেতু তারা ধর্মের ধ্বজাধারী, টুপি-পাঞ্জাবি, পায়জামা, গাপড়ি পরিহিত তাই মানুষ তাদের কথাকে বিশ্বাস করেছে নির্দ্ধিধায়। তারা উন্মত্তের মত গির্জা ধ্বংস এবং খ্রিষ্টান হত্যার জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এমনকি এরা এই ইস্যুকে বাড়িয়ে নিয়ে হিন্দু উচ্ছেদ করতে চায়।


এখন আবার হেযবুত তওহীদকেই বিপদে ফেলার জন্য তারা হেযবুত তওহীদই গ্রামবাসীকে আক্রমণ করেছে এই মিথ্যা বলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ আবারও তাদের কথায় বিশ্বাস এনে হেযবুত তওহীদকেই দোষী মনে করছে। এমনকি সরকারের কর্তাব্যক্তিরা হেযবুত তওহীদের গুটিকয় মানুষের উপর খড়্গহস্ত হবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আক্রান্তদেরকে মামলায় জড়াচ্ছেন, আহতদেরকে হেফাজতে নিয়ে গ্রেফতার দেখাচ্ছেন।

কথা হলো, আমাদের এই গুটিকয়েক লোককে নির্মূল করা গেলেও, আমাদের সবাইকে কারাবন্দী করা গেলেও সমস্যা কিন্তু শেষ হচ্ছে না। যদি সমস্যা শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয় তবে আমরা স্বেচ্ছায় কারাববন্দিত্ব গ্রহণ করতে রাজি আছি। আমরা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য শুধু জেলখানায় প্রবেশ নয়- জীবন দিতেও প্রস্তুত। আমরা জীবন দিয়েছি, আগুনে পুড়েছি, আরও পুড়ব, আরও মরব। আমাদের এই ত্যাগ যদি দেশের কল্যাণ বয়ে আনে তবে আমাদের এই মৃত্যুকে আমরা সার্থক মনে করব।





কিন্তু আমাদেরকে মেরে, আমাদেরকে জেলে ঢুকিয়ে সরকার কাদেরকে বাঁচিয়ে রাখবে? বাঁচিয়ে রাখবে ঐ সাপগুলোকে যারা আবার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে নতুন একটা ইস্যু সৃষ্টি করে রাষ্ট্রকে ছোবল মারবে, ক্ষমতাসীন সরকারকে উচ্ছেদ করবে (ছবিযুক্ত)। তারা নানা ধরনের ইস্যুতে হয়তো ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু একটা যদি তাদের পক্ষে চলে যায় তবে দাবানলের মত তা বিস্তার করে এই সরকার, এই রাষ্ট্র ভয়াবহ সংকটের মুখে পতিত করবে। হাজার হাজার মানুষের প্রাণ যাবে। এদেশের অসংখ্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি মারা পড়বে। দেশ পরিণত হবে তালেবানি রাষ্ট্রে। দেশ হয়ে যাবে আফগানিস্তানের মত। তখন বাইরের রাষ্ট্রগুলো আমাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেবে সেটা অত্যন্ত পরিষ্কার। আমরা সিরিয়ার মত চারদিক থেকে অবরুদ্ধ হয়ে ঘাস খেয়ে মরব, দেশ ছাড়তে গিয়ে বঙ্গোসাগরে ডুবে মরব।
আমাদের দোষ হচ্ছে আমরা তালেবানি ইসলাম চাইনা, আমরা জোর জবরদস্তির ইসলাম চাই না। আমরা তালেবানি ইসলামের চাইতে বর্তমান পরিস্থিতিকেই উত্তম মনে করি। আমরা মনে করি বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি ধর্মীয় নৈতিকতা ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা করা হয়, ধর্মকে এবং মানুষের ঈমানী শক্তিকে কাজে লাগানো যায় তবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

তাই প্রশাসন ও সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ- আপনারা অন্যায়ের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন না।সংখ্যাল্পতার কারণে যদি আমাদের উপর অন্যায় চাপিয়ে দেন আর সংখ্যাধিক্যের কারণে তাদেরকে বাঁচিয়ে দেন তবে এই অন্যায়ের ফল রাষ্ট্রের সবাইকে ভোগ করতে হবে। ঐ সংখ্যাধিক্যরা আপনাদেরকে কাউকে রেহাই দেবে না। আজকে আমাদেরকে পুড়িয়েছে , কালকে তারা আইএসের ন্যায় আপনাদেরকে পোড়াবে, গলা কাটবে, শিরোচ্ছেদ করবে, গান শোনার অপরাধে ফাঁসি দেবে, দাড়ি না রাখার অপরাধে বেত্রাঘাত করবে, নারীদেরকে ঘরে বন্দী করবে। ভিন্ন ধর্মের (ইয়াজিদিদের মত) নারীদেরকে দাসী ও কুফফার আখ্যা দিয়ে ধর্ষণ করবে। ভিন্নমতকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে।

সুতরাং সেই দিকে যদি যেতে চান তবে আমাদেরকে নির্মূল করুন, আমাদেরকে জেল দিন, ফাঁসি দিন। ঐ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে আমাদের মরে যাওয়াই উত্তম। আর বেঁচে থাকলে আমরা যথাসাধ্য আপনাদেরকে সাবধান করেই যাব। আমাদের মুখ থামবে না। পোড়াবেন, পোড়ান। মরতে তো হবেই। মুরগী জবাই করার পর তাকে কাবাব বানাবেন না ঝোল রান্না করবে সেটা ভেবে মুরগীর কি লাভ? যা ইচ্ছা করেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

বিজন রয় বলেছেন: নির্মম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.