নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শীতকাল এসে গেছে। এসে গেছে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ। সারা বছর এই সময়টির জন্য ওয়ায়েজরা অধীর অপেক্ষায় থাকেন। রুটি-রুজির মৌসুম এটা। শুধু তাই নয়, উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষকে কিছু বলতে হলে এটাই মোক্ষম সময়। অন্যান্য সময় ঝড়, বৃষ্টি- কাদা-পানি থাকার কারণে এসব মাহফিলের আয়োজন করা যায় না। এসব মাহফিলে ইসলামের শিক্ষণীয় অনেক বিষয় আলোচিত হয়ে থাকে। আজ থেকে পনের বিশ বছর আগে দেখতাম আমাদের এলাকার লোকজন দূর-দূরান্তে চলে যেতেন মাহফিল শুনতে। যদিও ইদানীং দূরের মাহফিল শোনার প্রবণতা অনেকটা কমে গেছে। তবে অন্যান্য এলাকার কথা বলতে পারি না
আমাদের এলাকায় দূর-দূরান্তে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার পেছনে একটা কারণ হচ্ছে মসজিদে মসজিদে প্রতিবছর মাহফিলের আয়োজন। আগে যেখানে গ্রামে গুটিকয়েক মসজিদ ছিলো সেখানে এখন পাড়ায় পাড়ায় নতুন নতুন মসজিদ হচ্ছে। আর প্রায় প্রতি মসজিদের উদ্যোগেই উচ্চমূল্যে খ্যাতিমান বক্তা দাওয়াত করায় দূরে যাওয়ার দরকার পড়ছে না। ঘরের কাছে, বাড়ির কাছের মসজিদেই দেখা পাওয়া যাচ্ছে বিটিভি, ইটিভি, বাংলাভিশন, (সাবেক) পিসটিভির বক্তাদেরকে।
যাই হোক, আসল কথায় আসি। বর্তমানে এসব মাহফিল আর নির্দোষ দীন শিক্ষার মাহফিল থাকছে না। কে কার চাইতে খ্যাতিমান বক্তা আনতে পারে, কে কত বড় রাজনীতিক অতিথিকে হাজির করতে পারে চলছে এসবের প্রতিযোগিত। মাইকের উচ্চ আওয়াজ এবং মাইকের সংখ্যারও প্রতিযোগিতা হয়। আর চলে ইসলামেরই ভিন্ন ফেরকার প্রতি আক্রমণাত্মক ভাষা। চলে ভিন্ন ধর্মীদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো।
শুরু হয়ে যাওয়া এবারের শীতের মাহফিলগুলো নিয়ে আমার কেন জানি শংকা জাগছে। মাত্র কিছুকাল আগে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার থেকে উগ্রবাদী বৌদ্ধ ও সেদেশের সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতন ও জাতিগত নিধনের মুখে মুসলিম রোহিঙ্গারা দেশ ছেড়ে এদেশে শরণার্থী হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে আনুষ্ঠানিক শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেনি। রোহিঙ্গা নির্যাতনের সময়ে এদেশ থেকে অনেকেই মায়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সরকারকে তাগাদা দিয়েছে, সীমানা খুলে দিতে বলেছে। তারা নিজেরাই নাকি মায়ানমারকে শায়েস্তা করে ফেলবে। অপরদিকে বিশ্বজুড়েই আজকে মুসলিম সম্প্রদায় দেশ হারাচ্ছে, ঘর হারাচ্ছে, স্বজন হারাচ্ছে। এর পেছনে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর জড়িত থাকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষও ক্ষোভে ফুঁসছে।
তাদের এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিভেদকামী বক্তাগণ ফুসলিয়ে না জানি কি করে ফেলে! যদি কোথাও তাদের উত্তেজিত বক্তব্যে কিছু একটা ঘটে যায় তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এসব বক্তার কথায় এমনি আবেগ আছে যে মানুষকে তারা ক্ষণে হাসাতে পারে, ক্ষণে কাঁদাতে পারে। আবার উত্তেজিত করে অকাম ঘটিয়ে ফেলাও অসম্ভব নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যা হয় তা হচ্ছে- বক্তারা গরম বক্তব্য দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়েন। আর সাধারণ মানুষ ধর্মপ্রাণ তওহীদি জনতার ব্যানার লাগিয়ে বা উত্তেজিত মুসুল্লির নাম ভাঙ্গিয়ে তাণ্ডব চালায়। নিয়ন্ত্রণহীন এসব উচ্ছৃঙ্খল জনতার মাঝে গুজব বিস্তৃত হয় ডালপালার মত। হৈ হৈ রৈ রৈ করে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটাকে মনে করা হয় ইসলামের পবিত্র কর্তব্য জেহাদ হিসেবে। চলমান তাণ্ডবেই কেউ কেউ "বাঁচলে গাজী, মরলে শহীদ" শ্লোগান তুলে রক্তে আগুন ধরিয়ে দেন। ব্যস, আর যায় কোথায়? নিয়ন্ত্রণহীন উত্তেজিত জনতার স্রোতে ঠেলা, তাণ্ডব আর আগুনের লেলিহান শিখায় সবকিছু ছাই হয়ে যায়। রামু, নাসিরগনগর, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি, রংপুরের পাগলাপীরে সংগঠিত ঘটনা তারই নজীর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদ্যসরাও তাণ্ডবের মুখে অসহায় হয়ে পড়েন। তাণ্ডবকারীদের দাপডে অনেক সময় হতাহতও হয়ে থাকেন।
এমতাবস্থায় এই শীতের মৌসুমে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানে সরকারের দৃষ্টি রাখা একান্ত কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ধর্মীয় সভায় উস্কানীমূলক বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো, জঙ্গিবাদকে উস্কে দেয় এমন বক্তব্য যাতে না দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া সামনে এগিয়ে আসছে জাতীয় নির্বাচন। এসব মাহফিল থেকে কেউ যেন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল না করতে পারে সেই দিকেও নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি সমস্ত বক্তব্য রেকর্ড করার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে উস্কানীমূলক বক্তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
এ্ই পদক্ষেপগুলো সরকারকে আমি নিতে বলছি তার কারণ এই না যে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। কথাগুলো এই জন্য বলা যাতে ধর্মকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে কোনো মহল ধর্মকে কলঙ্কিত করতে না পারে, দেশকে অস্থিতিশীল না করতে পারে।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: জ্বী, একদম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৯
কালীদাস বলেছেন: এই ব্যাপারটা খুবই সেনসেটিভ। এমনে দেখবেন ওয়াজের সময় অর্ধেক পাবলিকই ঘুমায়, কিন্তু যদি টের পায় প্রশাসন নজর রাখছে, পাবলিকের ঈমানি জোস দেখবেন কারে বলে।
বুঝি না, ওয়াজ মাহফিলগুলো থার্টি ফার্স্টের নাইটে করে না কেন। করলে, হিন্দি অশ্রাব্য গান বিকট আওয়াজে বাজানোর অসুস্হ কম্পটিটিশন হয়ত চাপা পড়ত।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৪৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: হুম, আসলেই সেন্সেটিভ। নজরদারী করা হচ্ছে শুনলে অনুভূতি চাঙ্গা হয়ে যাবে। বাকিটার ব্যাপারে
৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা উচিত।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
উড়োজাহাজ বলেছেন: ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা মানে মাথা ব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলা। তবে পয়সার বিনিময়ে বক্তা ভাড়া করে পরিচালিত ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করতে হবে। সেখানে যাতে বিদ্বেষ ছড়ানো না হয় সে ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে।
৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪১
মঈনুদ্দিন অারিফ মিরসরায়ী বলেছেন: সর্বশেষ কবে কোথায় ওয়াজ শুনে তান্ডব চালিয়েছিল বলতে পারবেন??
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: ওয়াজ শুনে সাথে সাথেই যে তাণ্ডব চালিয়েছে এমন কথা আমি কোথাও বলিনি। তবে ওয়াজে যেসব সাম্প্রদায়িক বক্তব্য, প্রতিপক্ষ ফেরকার প্রতি যে বিদ্বেষ ছড়ানো হয় তার প্রতিক্রিয়াতেই মানুষ বিদ্বেষপ্রবণ হয়। সেগুলোই তাদেরকে তাণ্ডব চালাতে উৎসাহী করে তোলে।
৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: প্রচলিত ওয়াজ শুনে কোন লোক দ্বীনদার, ফরহেজগার হয়েছে এরকম নজীর নাই।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: আসলেই নেই।
৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫২
রাসেল উদ্দীন বলেছেন: কবে? কোথায়? কোন বক্তার ওয়াজ থেকে সাম্প্রদায়িক উস্কানী দেয়া হয়েছে?
ওয়াজ শুনে উত্তেজিত হয়ে কি নাসিরনগর, রামু বা রংপুরে হামলা হয়েছিল? কারা করেছিল এ হামলা? মুসল্লিরা?
কোন মাহফিল থেকে ধর্মীয় উস্কানী দেয়া হয়েছে? কোন বক্তা জঙ্গীবাদ উস্কে দিয়েছে?
ওয়াজ মাহফিল নিয়ে এত মাথাব্যাথা কেন?
ওয়াজ মাহফিল থেকে এমন ঘটনা ইতিহাসে কোনদিন ঘটেছে বলে আমার জানা নেই!
রেফারেন্সসহ আপনি একটা উদাহরণ দেন!
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: ওয়াজ শুনে সাথে সাথেই যে তাণ্ডব চালিয়েছে এমন কথা আমি কোথাও বলিনি। তবে ওয়াজে যেসব সাম্প্রদায়িক বক্তব্য, প্রতিপক্ষ ফেরকার প্রতি যে বিদ্বেষ ছড়ানো হয় তার প্রতিক্রিয়াতেই মানুষ বিদ্বেষপ্রবণ হয়। সেগুলোই তাদেরকে তাণ্ডব চালাতে উৎসাহী করে তোলে। ওয়াজ মাহফিলের ব্যাপারে আমার মাথাব্যথার কারণ এগুলোই। তাছাড়া বর্তমানের ওয়াজ মাহফিলগুলোতে পয়সার বিনিময়ে বক্তা ভাড়া করা হয়, যা ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ। পয়সাওয়ালাদের অতিথি করা হয় যাতে চাঁদা বেশি ওঠে। এগুলো বন্ধ করতে হবে- মাহফিল বন্ধ নয়।
৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩
রাসেল উদ্দীন বলেছেন: হ্যাঁ, টাকার বিনিময়ে কেউ কেউ ওয়াজ মাহফিল করছে সেটা ঠিক আছে্ ,তবে এমন সবাই নয়। কোন মাহফিল থেকে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গীবাদে উৎসাহ বা ধর্মীয় উস্কানী দেয় হয় না। । সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, জঙ্গী হামলা এসবের পেছনে ইসলাম ও দেশের শত্রুদের পরোক্ষ মদদ রয়েছে। এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষা ও দেশপ্রেমের অভাবসহ অনুষঙ্গি কিছু কারণে এ অপরাধগুলো হয়। ওয়াজ মাহফিল তো প্রকাশ্যে হয়। পূর্বে এমনটা ঘটলে সরকার বা প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা নিত। যতদূর জানি, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব মাহফিল থেকে ইসলাম ও দেশ প্রেমের কথা বলা হয়!
ধন্যবাদ!!
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: কিছু মাহফিল টাকার বিনিময়ে বক্তা ভাড়া হয় না- আজকাল অধিকাংশই টাকার বিনিময়ে বক্তা ভাড়া করা হয়। প্রকাশ্যেই হয়, কিন্তু সেগুলোতে উচ্চারিত বক্তব্যকে আমলে নেওয়া হয় না। আমার চাওয়া এটাই যাতে সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেওয়া হয়। এখানে আরেকটা বিষয়ও কাজ করে। যে সব বক্তা ওয়াজ মাহফিল করেন তারাই আবার খুতবায়, ঘরোয়া আলোচনায় সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখেন। যেগুলো আমরা ইউটিউব ফেসবুকে দেখতে পাই। যেহেতু বক্তা ওয়াজ করেন সে কারণে তার পরিচিতি হয়, তার বক্তব্য প্রভাব ফেলে সেহেতু তাদের ঘরোয়া বক্তব্যও গুরুত্ব রাখে।
ঘুরিয়ে বললে বলতে হয় উস্কানিমূলক বক্তব্য যারা রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করেন তাদেরকে ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখতে বাধা প্রদান করা উচিত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০০
আবু তালেব শেখ বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। ঘন্টা চুক্তি যারা বড় অংকের পয়সা হাতায় তাদের কাছ থেকে এরকম হতেই পারে।
ধর্মকে কিছু লোকে ব্যবসায় পরিনত করেছে।