![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্ত্যব(কুরআন ও হাদিসের আলোকে)
আল্লাহ বলেন ঃ তোমার পালনকর্তা আদেশ করছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবনদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে উহ! শব্দটিও বল না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। তাদের সামনে ভালবাসার সাথে নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল, হে পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশককালে লালন-পালন কবেছে। - ( বনী ইসরাঈল-২৩-২৪)
অর্থাৎ পিতা-মাতার সাথে নম্র আচরণ কর, সেবা-যতœ কর। তারা বার্ধক্যে উপনীত হলে কোন রুঢ় কথা বল না এবং ধমকও দিও না। তাদের সে ভাবে সেবা-যতœ করা উচিত যেভাবে তারা শৈশবকালে তোমার সেবা-যতœ করেছেন। তোমার স্মরণ রাখা উচিত,প্রথমে তারা নিঃস্বার্থভাবে তোমার সেবা-যতœ করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। এখন তাদের যতœ নিলেও তুমি তাদেও সমকক্ষ হতে পারবেনা। কারণ শৈশবে তারা নানা যন্তণা ভোগ করেও সেবা-যতœ করে তোমার দীর্ঘ জীবন ও সুস্থতা কামনা করেছেন। পক্ষাত্তরে বৃদ্ধ পিতামাতার কাছ থেকে একটু কষ্ট পেলে বা বকাঝকা শুনলেই তুমি তাদের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে যাও।
আল্লাহ বলেন ঃ তুমি আমার কাছে কৃতজ্ঞ হও এবং তোমার মাতা-পিতার কাছেও কৃতজ্ঞ হও। আমারই নিকট তোমাকে ফিরে আসতে হবে। ( লোকমান-১৪)
সুতরাং এখানে এটা লক্ষণীয় যে, আল্লাহপাক কিভাবে মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞতাকে তার কৃতজ্ঞতার সাথে যুক্ত করেছেন অর্থাৎ আল্লাহ তা’লা সেই কৃতজ্ঞতা গ্রহন করেন না যে মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হয়না।
কোরআনে তিনটি আয়াত তিনটি বিষয়ের সাথে যুক্ত হয়ে অবতীর্ণ হয়েছে, আর এর একটি অন্যটিকে ছাড়া গ্রহনযোগ্য নয়। * প্রথমটি হল , আল্লাহ বলেনঃ ” তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।” অতএব যে লোক আল্লহকে মানবে অথচ তার রাসূলকে মানবেনা, আল্লাহর তরফ হতে এই আনুগত্য গ্রহন করা হবেনা। * দ্বিতীয়টি হল, আল্লাহ বলেনঃ ”নামায কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর।” অতএব যে লোক নামায় পড়বে কিন্তু যাকাত দিবেনা, আল্লাহ তার নামায় কবুল করবেন না।* তৃতীয় হল, আল্লাহ বলেনঃ ”তুমি আমার কাছে কৃতজ্ঞ হও এবং তোমার মাতা-পিতার কাছেও কৃতজ্ঞ হও।” অতএব যে শুধু আল্লার প্রতি কৃতজ্ঞতা পালন করে কিন্তু মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হবেনা, আল্লাহর কাছে তা অর্থহীন।
আল্লাহ বলেন ঃ তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তার সাথে কাউকে শরীক করোনা, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। (আন-নিসা-৩৬)
এখানে আল্লাহ তা’লা তার বান্দাদেরকে তার ইবাদত করতে বলেছেন এবং তার সাথে কাউকে শরীক করতে নিষেধ করেছেন আর একই সাথে পিতা-মাতার সাথে ভাল ব্যবহার করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তাই এটা স্পষ্ট যে, মা-বাবার সেবা করা তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করা ও ইবাদতের অংশ। কেউ যদি শুধু মাএ আল্লাহর ইবাদত করে কিন্তু তার মা-বাবার মনে কষ্ট দেয় তাদের চাওয়া Ñপাওয়ার চাইতে নিজের সুখকে বেশি প্রধান্য দেয় তবে তার সেই ইবাদত বিশাল মরুভূমির বুকে এক ফোটা জলের মতই নিস্ফল।
আল্লাহ বলেন ঃ আমি মানুষকে নিজেদের পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। (আল-আনকবূত-৮)
আল্লাহ তা’লা কোরআনে যা মানুষকে নির্দেশ দিয়েছেন তাই পালন করা আমাদের জন্য ফরজ। আল্লাহ নির্দেশ করেন পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার, মা-বাবা বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হলে সবকিছুর চাইতে বেশী প্রধান্য দিতে হবে তাদের মনকে, তারা তখন সন্তানদের কাছে সবকিছুর চাইতেও উত্তম বলে বিবেচিত হতে হবে। কিন্তু আমাদের বর্তমান সমাজে আজ এই সম্মান দেখানো ও মা-বাবার মতামতকে মূল্যয়নকারীর সংখ্যা কমে যাচেছ যা ঐ সকল হতভাগা সন্তানদের জাহানামের সুসংবাদ দিচ্ছে।
আল্লাহ বলেন ঃ আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারন করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দুই বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। আমার কাছেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে। (লোকমান -১৪)
সূরা-লোকমানের এই আয়াতে আল্লাহ সন্তানদের তার মায়ের গর্ভধারনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সন্তানদেরকে সেই কৃতজ্ঞতার কথা সরণে রাখার তাগিদ দিয়েছেন। গর্ভকালীন মায়ের সেই কষ্ট সন্তান তার সারা জীবনের শ্রেষ্ঠ সেবা দিয়েও পূরণ করতে সক্ষম নয়, মায়ের বুকের দুধ যা সন্তানকে জীবিত রেখেছে এই ধরায় সেই দুধ খেয়ে যে সন্তানেরা বিবাহিত জীবনে এসে বউ ও সন্তানের সুখের জন্য মা কে কষ্ট দেয় তার চেয়ে হতভাগা হাশরের মাঠে আর কে হবে। পিতা-মাতাকে পেয়েও যারা নিজের কল্যাণ করতে পারলোনা কোনকিছুই শেষ বিচারের দিন তাদের কল্যাণে আসবেনা।
আল্লাহ বলেন ঃ পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে. যার জ্ঞান তোমার কাছে নেই,তবে তুমি তাদের কথা মানবেনা এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সহ অবস্থান করবে। (লোকমান-১৫)
কত মহান আমাদের রবের সত্তা যিনি মাতা-পিতার সম্মান বৃদ্ধি করেছেন সন্তানদের কাছে, মা-বাবা যদি সন্তানকে আল্লাহর সাথে শিরক এ বাধ্য করতে চায় তবে সন্তান যেন সেই আদেশ না মানে কিন্তু তারপরও মা-বাবার সাথে খারাপ আচবণ করা যাবেনা। সুন্দর ভাবে তাদের সেই অন্যায় আবদার পরিত্যাগ করতে হবে, তাদেরকে এই ভূল সংশোধনের জন্য বোঝাতে হবে কিন্তু কোন অবস্থাতেই তাদেরকে ত্যাগ করা যাবেনা এবং খারাপ আচরণও করা যাবেনা। পিতা-মাতা যদি বির্ধমীয়ও হয় তবু তাদের ত্যাগ করা যাবেনা। সুতবাং এখান থেকে এটা স্পষ্ট যে, আল্লাহ তা’লা পিতা-মাতার অবস্থান কতো উর্দ্ধে তুলে ধরেছেন ॥
হযরত বশির (রাঃ) বলেন. রাসূল (সাঃ) বলেন, ” যে লোক মায়ের কাছে অবস্থান করে তার নির্দেশ মতো চলে, সে তরবারী নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। মায়ের দিকে ভক্তি সহকারে তাকানোর চেয়ে মহৎ কাজ আর নেই।
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ মাতা-পিতার সন্তুুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মাতা-পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। (তিরমিযী)
নবী করিম (সাঃ) পিতা-মাতার যে সন্তুষ্টির কথা আমাদের বলেছেন প্রথমেই আমাদের সেই সন্তুষ্টি গুলো কি তা জানা আবশ্যক। মা-বাবা সন্তানদের যা করতে বলেন তা করা, যে বিষয় গুলো নিষেধ করেন সেগুলো না করা। তারা যখন সন্তানদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তখন তাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা, তাদেরকে যেন বোঝা মনে করা না হয়। পারিবারিক জীবনে আগে মা-বাবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া কেননা যে বউ আজ তোমার জীবন সঙ্গী তাকে তোমার মা-বাবাই পছন্দ করে এনেছে অথচ আজ তোমার পরিচালনার ভুলে তোমার বউ এর দ্বারা তুমি তোমার বেহশতের আশ্রয় মা-বাবাকেই কষ্ট দিচ্ছো।
এক লোক রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে তার সাথে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইল। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন ঃ
তোমার মাতা-পিতা কি জীবিত? সে জবাব দিলঃ জি হাঁ। রাসূল (সাঃ) বললেন ঃ তাহলে তাদের সেবা যতেœর জিহাদে শরীক হও। - (বুখারী. মুসলিম)
লক্ষনীয়, এ হাদিসে মা-বাবার খেদমতকে কিভাবে জিহাদেও চেয়েও বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ আমি কি তোমাদের সবচাইতে বড় কবীরা গুনাহের কথা জানাব না ? তা হচ্ছে, আল্লাহর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করা ও মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া।
চিন্তা করার বিষয় রাসূল (সাঃ) কিভাবে মা-বাবার অবাধ্যতাকে আল্লাহর তাওহীদের সাথে উল্লেখ করেছেন।
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, খোটাদানকারী এবং মদখোর জান্নাতে যাবেনা। -(বুখারী, মুসলিম)
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ উহ করার চেয়েও যদি কম কষ্টদায়ক শব্দ থাকতো, তবে আল্লাহ পাক তাও করতে নিষেধ করতেন। সুতরাং পিতা-মাতার অবাধ্যচারী যতই ভাল কাজ করুক না কেন, জান্নাতে যেতে পারবেনা, আর পিতা-মাতার সাথে সদাচারণকারী যাÑই করুক না কেন, জাহান্নামে যাবেনা। -(দায়লামী)
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানের উপর আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ যে মা-বাবাকে গালি দেয় আল্লাহ তাকে লা’নত করেন। -(ইবনে হাব্বান)
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ আল্লাহপাক সকল গুনাহের শাস্তি যত দিন ইচ্ছা বিলম্বে করেন, এমনকি তা কেয়ামত পযর্ন্ত বিলম্বিত করেন. কিন্তু মা-বাবার সাথে অবাধ্যতার শাস্তি মৃত্যুর পূর্বেই করে থাকেন। অর্থাৎ কিয়ামতের আগেই দুনিয়ার জীবনেই তার শাস্তি শুরু হয়ে যায়।-(হাকেম)
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ যে লোক পিতা-মাতার অবাধ্য কিংবা তাদের সাথে অসৎ ব্যবহার কওে, তাকে দ্রুত শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহ তার হায়াত কমিয়ে দেন। আর যে ব্যক্তি পিতা-মাতার বাধ্য, আল্লাহ তার হায়াত বাড়িয়ে দেন, যেন সে বেশী বেশী ভাল কাজ করে অধিক সওয়াব ও মঈল লাভ করতে পারে। মাতা-পিতার প্রতি এভাবেও ভাল আচরণ করা যায় যে, তারা যখন অক্ষম হয়ে পড়েন তখন তাদের চাহিদা অনুযায়ী অভার পূরণ করে দেওয়া।-(ইবনে মাজা)
এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে নিবেদন করলেন , ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার পিতা আমার সম্পদ বিন্ষ্ট করে দিতে চান। তিনি বললেন ঃ তুমি ও তোমার ধন-সম্পদ তোমার পিতার জন্য।
অর্থাৎ সন্তানের সম্পদ ও আয়ে পিতা-মাতার হক আছে। তারা যদি সন্তানের অর্থ কোথাও ব্যয় করেন তার জন্য পিতার-মাতার কাছে কৈফিয়াত চাওয়া বা বকাবকি করা উচিত নয়।
এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে বললো ঃ হে রাসূল কোন ব্যক্তি আমার খেদমত পাওয়ার সবচেয়ে বেশী যোগ্য ও হকদার? তিনি বলেনঃ তোমার ’মা’। সে আরয করলোঃ তারপর কে? তিনি বললেন তোমার ’মা’। সে আবার আরয় করলো তারপর কে? তিনি বললেন ঃ তোমার ’মা’। পুনঃ সে নিবেদন করলো তারপর কে? তিনি জবাব দিলেন তোমার ’পিতা’। তারপর পর্যায়ক্রমে তোমার আপনজ।-(বুখারী, মুসলিম)
সুতরাং পৃথিবীর বুকে সন্তানের জন্য সবচাইতে বেশী হকদার হল তার ’মা’। এই ’মা’ কে সন্তুষ্ট রেখেই সবকাজ করা উচিত। পারিবারিক সুখ শান্তি মা কে বাদ দিযে কখনোই সম্ভব নয়।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এব কাছে প্রশ্ন করা হল, আ’রাফ কি? সেখানে কারা বাস করবে? তিনি বললেনঃ আ’রাফ জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী একটি পাহাড়। একে আ’রাফ নাম করন করা হয়েছে কারণ, এখান থেকে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখা যাবে এবং এতে ফলবান গাছ, র্ঝনা সব কিছুই থাকবে। পিতা-মাতার অনুমতি ব্যতিত যারা জিহাদে গিয়ে শহীদ হয়েছে, তারা সাময়িকভাবে এখানে থাকবে। জিহাদে গিয়ে শহীদ হওয়ার কারণে জাহান্নামের পথ আর পিতা-মাতার অবাধ্যতার কারণে জান্নাতের পথ বন্ধ থাকবে। তাদের ব্যাপারে আল্লাহপাকের চুড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পযর্ন্ত তারা এখানে থাক।ে -(ইবনে মাজা)
বাসূল (সাঃ) বলেনঃ মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।- (ইবনে মাজা, নাসায়ী)
রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ চার শ্রেণীর লোককে আল্লাহ বেহেশতে প্রবেশ করতে দিবেন না, (১) মদখোর (২) সুদখোর (৩) ইয়াতীমের মাল আত্মসাতকারী (৪) পিতা-মাতার অবাধ্যচারী। তবে তওবা করলে ভিন্ন কথা।-(হাকেম)
এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ) এর কাছে এসে জানতে চাইলো ঃ”আমি এক মহিলাকে বিয়ে করেছি, অথচ আমার মা তাকে তালাক দিতে বলছেন”। রাসূল (সাঃ) বললেন ঃ ”মা” জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা। ইচ্ছা করলে তুমি তা নষ্ট করতে পারো আবার হেফাজতও করতে পারো। Ñ(ইবনে মাজা, তিরমিযী)
রাসূল সোঃ) বলেন ঃ তিন জনের দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, তাতে কোন সন্দেহ নেই। (১) মজলুমের (২) মুসাফিরের (৩) মাতা-পিতার। Ñ(তিরমিযী)
আল্লাহ পাক হযরত মুসা (আঃ)-কে ওহীর মাধ্যমে জানালেন, পিতা-মাতাকে সম্মান কর। কেননা যে ব্যক্তি মাতা-পিতাকে সম্মান করে, আমি তার হায়াত বাড়িয়ে দেই, তাকে এমন সন্তান দান করি যে তাকে সম্মান করে। আর যে পিতা-মাতাকে অসম্মান করে আমি তার হায়াত কমিয়ে দেই,তাকে অবাধ্য সন্তান দান করি।
হযরত আমর বিন মুররা আলজুহানী (রাঃ) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে এসে রললো,” হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ), আমি যদি পাচঁ ্ওয়াক্ত নামায পড়ি, রমযানের রোযা রাখি, যাকাত প্রদান করি এবং হজ্জ করি, তাহলে আমি কি পাবো ? তিনি বললেন, ”সঠিকভাবে এগুলো আদায় করলে, সে নবীগণ, সিদ্দীকগণ শহীদগণ ্ও সৎকর্মশীলদের সাথী হবে। তবে পিতা-মাতার অবাধ্যচারী এ প্রতিদান হতে বাদ পড়বে।- (আহমদ, তিবরানী)
উপদেশঃ হে পিতা-মাতার অবাধ্য ্ও অবহেলাকারী ! মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা তোমার জীবন ্ও ধর্ম। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহশত এই সত্য জানার র্পও যে সন্তানেরা নিজের সুখের জন্য বৌকে খুশি করার জন্য মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, বৌকে বসিয়ে রেখে মাকে দিয়ে কাজ করায় সেই সব সন্তানেরা কতই না কপাল পোড়া। বৌ এর কথায মাকে অবিশ্বাস করে, মায়ের খেদমতে নিজেকে এবং নিজের বৌকে নিয়োজিত করতে পারলো না তারাই তো প্রকৃত প্রাস্তাবে জাহান্নামি।
রাসূল (সাঃ) - এর মদীনার যুগে আলকামা নামক এক যুবক ছিল, সে নামায,রোয্ ্ওা সদকা প্রভুতি সৎকাজ করতো। একবার সে কঠিন রোগে আক্রান্ত হল। তার বৌ নবীজির নিকট সংবাদ পাঠালো, ইয়া রাসূলল্লাহ আমার স্বামী এখন মুত্যু শয্যায় আপনাকে জানানো প্রয়োজন মনে করছি। রাসূল(সাঃ) তখন হযরত বেল্লাল , আম্মার ্ও সুহাইব (রাঃ)-কে আলকামার নিকট প্রেরণ করলেন এবং তাকে কালিমায় শাহাদাত পাঠ করাতে বললেন কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে তাকে কালিমা ্উচ্চারণ করাতে ব্যর্থ হলেন আলকামার অনেক চেষ্টা করেও কালিমা উচ্চারণ করতে পারলেন না। এই সংবাদ নবীজি পাবার পর তিনি তাদের বললেন আলকামারের পিতা-মাতা কেউ কি জীবিত আছেন? তারা জানালেন তার মা জীবিত আছেন তখন নবীজি তার মাকে সংবাদ পাঠালেন। আলকামার এর মা নবীজির কাছে এলে নবীজি তাকে রললেন, তোমার সন্তান নামাযী, রোযাদার ও সৎকর্মপরায়ন অথচ সে কালিমা উচ্চারণ করতে পারছেন না এই সন্তান সর্ম্পকে তোমার মনোভার কি আমাকে সঠিকভারে জানাবে কি? আলকামারের মা তখন সত্যে গোপন করলেন না তিনি বললেন, আলকামার আমার কথার চাইতে তার বৌ এর কথার গুরুত্ব বেশী দিত আর আমাকে অবহেলা করতো এই কারণে আমি তার উপর অসুন্তুষ্ট ছিলাম। আল্লাহর নবী তখন বললেন এই কারণেই আলকামার কালিমা উচ্চারণ করতে পারছেনা কারণ তার উপর আল্লাহও অসুন্তুষ্ট। তখন নবীজি হযরত বেল্লালকে বললেন যাও , আমার কাছে কিছু লাকড়ী যোগাড় করে নিয়ে এসো। তখন ঐ বৃদ্ধা আরয করলো ইয়া রাসূলল্লাহ লাকড়ী দিয়ে কি হবে? নবীজি বললেন আমি আলকামারকে আপনার সামনে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবো। বৃদ্ধা বললেন,হে আল্লাহর রাসূল আমার সামনেই আপনি আমার সন্তানকে পুড়িয়ে ফেলবেন আমি তা সহ্য করতে পারবোনা। নবীজি বললেন হে আলকামারের মা, আল্লাহর শাস্তি এর চেয়েও কঠোর ও দীর্ঘস্থায়ী হরে। আপনি যদি চান আপনার সন্তানকে আল্লাহ ক্ষমা করুন তবে আপনি আপনার সন্তানের উপর সন্তুষ্ট হন এবং তাকে ক্ষমা করে দিন। অন্যথায় যে আল্লাহর হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! যে পযর্ন্ত আপনি তার উপর অসন্তুষ্ট থাকবেন ,সে পযর্ন্ত তার নামায,রোযা,সদকা কোন কিছুই তার কাজে আসবেনা। এ কথা শুনে আলকামার মা বললেন আমি আমার সন্তানের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম আল্লাহর রাসূল ও তার ফেরাশতারাগণ এবং এখানে উপস্থিত সকল মুসলমানগণ এর সাক্ষী।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৫৬
সত্যজিগীষা বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ভালো হযেছে , এরকম আরো লেখা চাই