![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খোমেনীর স্বৈরসাশন ও ইরানের কালো ইতিহাস:
============================
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ইরানে যে 'ধর্মনির্ভর রাষ্ট্রশাসন' প্রতিষ্ঠিত হয়, তার মূল স্থপতি ছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নামে তিনি দেশটিকে এক কঠোর ধর্মতন্ত্রমূলক শাসনের অধীনে আনেন যেখানে বিরোধিতা মানে মৃত্যুদণ্ড, মতপ্রকাশ মানে শত্রুতার দায়, আর স্বাধীনচেতা জীবন মানেই কারাবরণ কিংবা অনির্দিষ্টকালের জন্য নিঃশব্দ করে দেওয়া।
স্বৈরশাসনের সূচনা: ধর্মীয় বিপ্লব থেকে রক্তাক্ত দমন
খোমেনীর ক্ষমতা দখলের পরপরই রাজনৈতিক বিরোধী, বামপন্থী, ধর্মনিরপেক্ষ, সংখ্যালঘু ও নারীবাদীদের ওপর একের পর এক অভিযান শুরু হয়। ১৯৮৮ সালের “কারাগারে গোপন গণবিনাশ” অভিযানে কয়েক হাজার বন্দিকে কোনো বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়, শুধু ইসলামি শাসনের বিরোধী সন্দেহে।
শরীয়াহ আইন ও রাষ্ট্রীয় কালো বিধান
খোমেনীর সময়ে চালু হয় ধর্মীয় আইনের এক অমানবিক রূপ:
নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব ও চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ,
শিশুদের বিয়ে বৈধ ঘোষণা,
মতপ্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে চিন্তাকে “ধর্মদ্রোহ” হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি,
সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ড, প্রকাশ্যে চাবুক বা দেহচ্ছেদের মতো শাস্তি।
এই আইনগুলি ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে যে কেউ কথা বললেই ‘ধর্মবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে নির্মম নিপীড়ন চালানো হয়।
মাইশা আমিনী: নারী স্বাধীনতার প্রতীক থেকে শহীদ
২০২২ সালে নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাইশা আমিনী। পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয় হৃদরোগের অজুহাত দিলেও, পরিবারের দাবি ও অটোপসি অনুযায়ী, মাথায় গুরুতর আঘাতই তার মৃত্যুর কারণ। এ ঘটনার পর সারা ইরানে ছড়িয়ে পড়ে "Women, Life, Freedom" আন্দোলন। সে আন্দোলনে আমরা ঢাকার রাজপথে আমরা ছিলাম।
এই আন্দোলনে অংশ নেয়া হাজার হাজার নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়, অনেক তরুণ-তরুণীকে হত্যা করা হয়, অনেকের মৃত্যু হয় কারাগারে, বিচার ছাড়াই।
নোবেল বিজয়ী, লেখক ও সাংবাদিক: সত্য বলার অপরাধে জীবন হারানো
ইরান সরকার বহু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত লেখক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীর ওপর দমনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
নারগিস মহাম্মদি – নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী (২০২৩)
নারী অধিকার ও কারাগারে নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করা এই সাংবাদিককে বারবার গ্রেফতার করা হয়।
তাঁকে ২০২৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হলেও তিনি এখনো কারারুদ্ধ।
জাহরা কাজেমি – সাংবাদিক হত্যা (২০০৩)
কানাডিয়ান-ইরানি সাংবাদিক জাহরা কাজেমিকে কারাগারে বন্দিদের ছবি তোলার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়।
কিছুদিন পর তার মৃত্যু হয়।
তার মাথায় মারাত্মক আঘাত এবং যৌন নির্যাতনের আলামত পাওয়া যায়।
রাষ্ট্র তার মৃত্যুর দায় স্বীকার করেনি।
আরও হত্যাকাণ্ড
২০০০ সালের দিকে একাধিক লেখক, কবি ও সাংবাদিককে “অদৃশ্য” করা হয় তাদের কেউ কেউ সড়ক দুর্ঘটনার নামে হত্যা, কেউবা নিখোঁজ অবস্থায় মৃত উদ্ধার হয়। এসব ছিল সংগঠিত রাষ্ট্রীয় গুপ্তহত্যা।
বর্তমানেও একই ধারা
আয়াতুল্লাহ খোমেনীর মৃত্যুর পর ক্ষমতা গ্রহণ করেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী। বর্তমানে তার নেতৃত্বে ইরানে:
২০২৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল ১,০০০-এর বেশি, গত ৩০ বছরে সর্বোচ্চ;
সংখ্যালঘু, কুর্দ, বালুচ, এবং নারী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দমন বহাল;
সাংবাদিক, ছাত্রনেতা, মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেফতার ও গোপন বিচার অব্যাহত।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের জুনে আন্দোলনে অংশগ্রহণের দায়ে আব্বাস করকুরি-কে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হয়।
তাকে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্যাতন করা হয়েছিল, যেটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু হয়।
উপসংহার: ইরান শুধু ইতিহাস নয়, এখনো রক্তাক্ত বাস্তবতা
ইরান এখনো খোমেনীর কালো ছায়া থেকে বের হতে পারেনি। ধর্মের নামে শাসনের নামে নিপীড়ন অব্যাহত। নারীদের ওপর নির্যাতন, মতপ্রকাশের অধিকার হরণ, সাংবাদিক হত্যা এসবই সে দেশের বাস্তবতা।
ইরান শুধু মধ্যপ্রাচ্যের ইস্যু নয় এটি বিশ্ব বিবেকের প্রশ্ন।
যেখানে নোবেল শান্তি বিজয়ীকে কারাগারে রেখে জাতি এগোয় বলে দাবি করা হয়, সেখানে মানবাধিকার মানেই পরিহাস।
আমরা যারা বহির্বিশ্বে বসে কলম ধরতে পারি, তাদের উচিত এই অত্যাচারিতদের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা। খোমেনীর শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আজ শুধু ইরানের নয়, সমগ্র মানবতার দাবি।
সালাউদ্দিন রাব্বী
সভাপতি, সংখ্যালঘু বাঁচাও আন্দোলন,
বাংলাদেশ
২| ১৭ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: এক সময়ের সমৃদ্ধশালী ইরানকে এই খামোনি সরকার রীতিমত প্রেগন্যান্ট করে দিয়েছে, তার পতন এখন অনিবর্য। খামেনির পরিণতি হতে পারে সাদ্দাম হোসেনের মতো।
৩| ১৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ৮:৪২
কামাল১৮ বলেছেন: প্রাচীন সভ্যতার একটি দেশকে অধঃপতনে নিয়ে গেছে ইসলামী শাসন।আমাদের দেশ সেই পথে হাটছে।
৪| ১৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কামাল১৮@শেখ হাসিনার সব দোষ ।
৫| ১৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৭:৫০
রিফাত হোসেন বলেছেন: সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কামাল১৮@শেখ হাসিনার সব দোষ ।
৬| ১৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৮:৪৯
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: স্ত*ন বের করা ছবি চেয়ে ঢাকা স্ত*ন অনেক ভালো, লুচ্চারা স্ত*ন বের করা কথা বলে।
৭| ১৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৮:৫০
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: @জ্যাক স্মিথ, ইরান কী শাহ-দের সময় সমৃদ্ধ ছিল?
৮| ১৮ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: খোমেনিকে থামানো দরকার। তাহলেই মঙ্গল।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: খামেনীর শাসন যাই হোক যদি পশ্চিমাদের চাটাচাটি ভালোভাবে চাটতে পারতো তাহলে এসব বিপদে আজ পড়তে হতো না।
বহু রাজতন্ত্র টিকে আছে চেটে!