নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মহত্যা কারো জীবনে কোন ফলাফল নয়।

bangla51214

মন ভাল নেই

bangla51214 › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুলনায় তরুণদের পাশাপাশি তরুণীরাও মাদকের নীল ছোবলে

১৪ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

খুলনা মহানগরীতে তরুণদের পাশাপাশি তরুণীরাও মাদকের নীল ছোবলে আসক্ত হচ্ছেন। যার কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছেনা এই মাদকাসক্তদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে। যার জ্বলন্ত উদাহরণ সম্প্রতি সময় সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় র‌্যাবের দুই গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও নগরীর রায়ের মহলের অবসর প্রাপ্ত সেনা সার্জেন্টের স্ত্রীর উপর মাদকাসক্তদের হামলার ঘটনা।

অনুসন্ধানীতে দেখা যায়, নেশা আমাদের সমাজকে এমনভাবে ঘিরে ধরেছে, অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় নেশার নির্মম ছোবল থেকে আমাদের উদীয়মান প্রজন্মকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। অনেকেই পারছেন না নেশাগ্রস্থ ছেলে-মেয়েদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে। ঘরের ছেলে কখন যে নষ্ট হয়ে যায় তা অভিভাবকরা বুঝতেই পারছেন না। সবচেয়ে বড় কথা হলো হাত বাড়ালেই যেখানে নেশার সামগ্রী হাতের নাগালে পাওয়া যায়, সেখানে ছেলেরা নেশায় বিভোর হবেই। এমনকি মেয়েরাও মনের অজান্তে নেশার মরণ ফাঁদে পা বাড়াচ্ছে।

অনুসন্ধানীতে আরও জানা যায়, নেশার টাকা জোগাড় করার তাগিদ থেকে ভালো ভালো ঘরের ছেলেরা বিভিন্ন অপরাধজনক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তারা দিনে-দুপুরে চুরি করে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচারীদের আটকিয়ে ছুরি-চাকু দেখিয়ে যা পায় তা নিয়ে যায়। মহিলাদের গলার হার, কানের দুল ছিনতাই করে। এমনও নজির আছে, নেশাগ্রস্থ ছেলেরা অন্ধকারে আপন বোনের গলা থেকে চেইন ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে। একটা ভদ্র ঘরের ছেলে যখন এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তখন সে নিজেও জানেনা বা বোঝেনা সে কি রকম ভয়ানক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

গাঁজা, ফেনসিডিল, বাংলা মদ ইত্যাদি একটা উদীয়মান প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ ছেলের অনুভূতিকে একেবারে ভোঁতা করে দেয়। নেশাগ্রস্থ যুবকের বিন্দুমাত্র বোধদয় হয় না, সে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একসময় যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় তখন তাকে আর ফেরানো যায় না। সে নিজেও শত চেষ্টা করে সুন্দর জীবনে ফিরতে পারে না। নেশার টাকা না পেলে বাবা, মায়ের শরীরেও হাত তুলতে দ্বিধাবোধ করে না। ওর অনুভূতির শিরা উপশিরাগুলো এতটাই বোধহীন হয়, ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতাটুকুও সে হারিয়ে ফেলে।

জানা যায়, নেশার ভয়াবহ করালগ্রাস সমাজের সর্বস্থরের মানুষের জীবনকে তছনছ করে দিচ্ছে। নেশার ভয়াবহ করালগ্রাসে আক্রান্ত হচ্ছে নগরীর উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণী ছাড়াও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, উচ্চবিত্ত মহিলারা। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনও নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। সমাজের সচেতন জনগোষ্ঠীর লোকজন হলেন ডাক্তার, প্রকৌশলী, চাকরিজীবী, আইনজীবী, বড় বড় ব্যবসায়ী, উচ্চবিত্ত সমাজের লোকজন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। আইন শৃঙ্খলনা রক্ষা বাহিনীও জানে নগরীর দুই শত স্পটের অধিক স্থানে মাদক বিক্রি হয়। বলা যায় হাত বাড়ালেই গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, বাংলা মদ, হেরোইনসহ নানারকম নেশার সামগ্রী পাওয়া যায়। অবস্থা এমন হলে দিন কয়েক পরে হাত বাড়ানোর আগেই আমাদের নেশায় আক্রান্ত সন্তানদের হাতে পৌঁছে যাবে নেশার সামগ্রী। নগরীর অভিভাবক মহল মনে করেন আইন প্রয়োগ করে মাদক ব্যবসায়ীদের ঠান্ডা করা যাবে। তার জন্য কঠিন আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। আইন প্রণয়ন করলেই যদি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত, তা হলে তো এতদিন আমাদের সমাজ থেকে সব ধরনের নেশার সামগ্রী চিরদিনের জন্য উধাও হয়ে যেত। কেবল আইন প্রণয়ন করলেই হয় না। আইন প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গে আইনের যথাযথ প্রয়োগও করতে হয়। আবার একথাও ঠিক, আইন প্রয়োগ করলেই যদি সমস্যার সুন্দর সমাধান হতো, তা হলে আজ একজন মাকে নেশায় আসক্ত পুত্রের হত্যাকারী হতে হতো না।

আইনের লোকরা বলছেন, আমরা প্রতিদিন মাদকের মামলায় অনেক মাদক সেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে থাকি। তাতে তো চিরতরে আমাদের সমাজ থেকে নেশার ভয়াবহতা নির্মূল হচ্ছে না। মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করতে হলে প্রথমেই যে কাজটা করতে হবে, তা হলো জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মাদকের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা। মানুষকে বুঝতে হবে মাদক গ্রহণ করলে আমাদের কি পরিমাণ দৈহিক, মানসিক ক্ষতি হয় এবং সামাজিক দুর্নাম নিজের জীবন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। অবশ্য একদিনে কোনো কিছু হয় না। তার জন্য সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা বলেন, মাদক তরুণ-তরুণীদের মেধা ও মনন ধ্বংস করে ফেলে। এই মাদকের ছোবলে অনেক পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। নেশার টাকা না পেয়ে ছোট ভাই বড় ভাইয়ের ওপর হাত তোলে। শরীরে যে মাদক নেয় তার কোনো বোধ-জ্ঞান থাকে না। সে জানেনা কি করছে। এই নেশার জন্য কত দা¤পত্য জীবন ভেসে গেছে বন্যার জলে, ভেসে যাওয়া খড়-কুটোর মতো। এতদিন আমরা জানতাম শুধু ছেলেরাই বিভিন্ন ধরনের নেশাজাতীয় জিনিস গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু এখন দেখছি ছেলেদের সঙ্গে সঙ্গে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাও বিভিন্ন ধরনের মাদক সামগ্রী গ্রহণ করে থাকে। যা দেখে ভয়ে আঁতকে উঠতে হয়। সমাজের সচেতন জনগোষ্ঠী মনে করে, যুব সমাজকে মাদকের নীল বিষ থেকে রক্ষা করতে হলে আমাদের প্রথমেই সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.