নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মহত্যা কারো জীবনে কোন ফলাফল নয়।

bangla51214

মন ভাল নেই

bangla51214 › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা আমাদের নিকট একটা শব্দ মনে হয়। কিন্তু স্বাধীনতা শুধু একটা শব্দ নয়। স্বাধীনতা ‘ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি’ ‘পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন’ উঠানে জড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপানো স্বাধীনতা এক আশ্বার্য চেতনা।

প্রত্যেক জাতির জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। সোনার অক্ষরে লেখা এ দিনটি জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। বুকের গভীরে বরণ করে রাখে দিনটিকে এবং দিনটি এলে জাতি জানায় তাকে সহস্র সালাম আর বিনম্র বিনীত শ্রদ্ধা। স্বাধীনতা একটা দেশ ও জাতির এক চরম পূলক, এক অনন্য চেতনা ও অনূভুতি। মানুষ তথা জাতি নিজের অন্তরের ভেতর লালন করে এই আকাঙ্খার ধনটিকে। মানুষ ও জাতি যখন স্বাধীনতা সম্পদটিকে ভোগ করে তখন সুখ সুবিধার অন্ত থাকে না। স্বাধীনতা মানুষকে প্রকৃত ও সুখী মানুষ করে গড়ে তোলে। আমরা বাঙ্গালী, আমরা বাংলাদেশী এবং আমাদেরও স্বাধীনতা দিবস আছে। আর সে দিনটি ২৬ মার্চ। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সেই ভয়াবহ কালো রাতের পর ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

জন্ম সূত্রেই মানুষ স্বাধীন হওয়ার কথা। কারণ-ব্যাক্তি থেকেই জাতি, প্রতিটি ব্যক্তির একটা অধিকার আছে। আর সেই অধিকারটাই হলো তার স্বাধীনতা। অধিকারহীন ব্যাক্তিইতো অধীন। তাই ব্যাক্তির চেতনা ও উপলব্ধি ধীরে ধীরে এই স্বাধীনতা দেশ ও জাতির পর্যায়ে বৃহত্তর বেষ্টনীতে এসে ধরা পড়ে। সে কারণে কেউই অন্যের স্বাধীনতা চায়না। চায়না নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ঐতিহ্য ও ভাষাকে বিষর্জন দিতে। ফলে তখনই সচেতন ও স্বাধীনতা পাগল মানুষ নিজেদেন পূণ্য স্বতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করতে ইস্পাত দৃড় হয়ে ওঠে এবং এভাবেই যুগে যুগে প্রস্তত হয়েছে স্বাধীনতার আন্দোলন ক্ষেত্রগুলো। কথায় কথায় মানুষে বলে স্বাধীনতা কেউ কাউকে দেয় না, স্বাধীনতা সব সময় আদায় করে নিতে হয়। কথাটি আসলেই সত্য এবং এর বাস্তব প্রমান হলো- আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভিয়েতনাম, ল্যাটিন আমেরিকার দেশ সমূহ, গিনিবিসাউ এবং বাংলাদেশর স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় প্রাণ দিয়েছে ত্রিশ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা এবং দুই লক্ষ নারী দিয়েছে সম্ভ্রম অঞ্জলি। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ঢাকার সেনানিবাসে সব সময় আট জন ডোম কাজ করতো পাকিস্তানী বাহিনীর ট্রাক ভরে আনা মুক্তিযোদ্ধাদের মৃতদেহ মাটি চাপা দেওয়ার জন্য। একটা লাশ একজন চাপা দিলে সে পেত পঁচিশ পয়সা করে এবং প্রত্যেক ডোম প্রতিদিন আয় করতো আশি থেকে পঁচাশি টাকার মতো। তাহলে একজন ডোম যদি প্রতিদিন তিনশত কুড়িটি মৃতদেহ চাপা দিতো তাহলে আট জনে দিতো দুই হাজার পাঁচ শত ষাটটি। যুদ্ধ থামার পরপরই খুলনার গল্লামারী এলাকা থেকে কয়েক ট্রাক শুধু হাড় অন্য যায়গায় নেওয়া হয়েছে। হিসাব করে দেখা গেছে দেশে ২০০০ সাল পর্যন্ত ৩৬টি জেলায় ৩৪২টি বধ্যভূমি আবিস্কৃত হয়েছে। যার সঠিক শহীদের হিসাব আমাদের নিকট না থাকলেও এটা স্পষ্টযে গননার সংখ্যা কম নয়।

স্বাধীনতার চেয়ে বড় সম্পদ পৃথিবীতে আর কিছুই নেই। পরাধীন জাতির জীবনের উন্নতির সব দ্বার রুদ্ধ করে দেয়। তাই পরাধীন মানুষকে অন্যের আদেশ পালন করে পশুর মতো জীবন যাপন করতে হয়। পরাধীন ব্যাক্তি কখনো মুক্তির স্বাদ পায় না। নিজের স্বাদ ও ইচ্ছা প্রতিটি মুহুর্তে তাকে জলাঞ্জলি দিতে হয়। পরাধীন জাতিও অধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ থাকার জন্যে নিজের স্বতন্ত্রকে বিকশিত করে তুলতে পারে না। যে কোন মূল্যে তাই স্বাধীনতা লাভ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রয়োজন হলে জীবনকেও তুচ্ছ জ্ঞান করতে পছিপা হয় না এবং বাংলাদেশই এর উজ্জ্ব¡ল দৃষ্টান্ত।



আবার বলা যায়, স্বাধীনাতা ছাড়া কেউ বাঁচতে চায় না। কেননা আগেই বলেছি। স্বাধীনতা না থাকলে কোন মানুষই মানুষের মতো জীবন যাপন করতে পারে না। তাকে তখন ক্রীতদাসের মতো জীবন যাপন করতে হয়; যাকে কোন দিন মানুষের জীবন বলা চলে না। তাই পৃথিবীতে মানুষের জন্য স্বাধীনতা অনেকটা বেহেশতের মেওয়ার মতোই। স্বাধীনতা না থাকলে দেশের ভৌগলিক সীমারেখা মুছে যায় ও জাতির অস্তিত্ব লোপ পায়। স্বাধীনতাহীন দেশ ও জাতির জীবনে স্বাধীনতার কোন বিকল্প নেই। সে জন্যই যুগে যুগে দেশে দেশে স্বাধীনতা অর্জন করতে মানুষ অকাতরে প্রাণ উৎসর্গ করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটি চিরদিনের স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে।

অন্যের চাপিয়ে দেয়া অধীনতাকে অস্বীকার করে মুক্ত জীবন যাপনের মাধ্যমে নিজের প্রতিফলন করার নামই স্বাধীনতা হলেও যা ইচ্ছে তাই করলে কখনও তাকে স্বাধীনতা নামে অবিহিত করা যাবে না। তখন তাকে বলা হয় স্বেচ্ছাচারিতা। কারণ স্বাধীনতার ভিতর দেশ, দেশের জনগন ও সরকারের প্রতি দায়িত্ব পালন করার একটা শুভ বোধ থাকলেও স্বেচ্ছাচারিতার ভিতর কোন রকম দায়িত্ব বোধ নেই। বরং স্বেচ্ছাচারিতার এক নাম উচ্ছৃঙ্খলতা এবং এটা হচ্ছে স্বাধীনতার শত্র“, কেননা এটি স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে তোলে। পক্ষান্তরে স্বাধীনতা মানুষের মনে মুক্তির স্বপ্ন জাগিয়ে তোলে এবং সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্যে অনুপ্রাণিত করে।

তাইতো বলা যায়, একটি জাতির প্রাণই হচ্ছে তার স্বাধীনতা। তবে এটা অর্জনের চেয়ে আরও কঠিন এটা রক্ষা করা। তাই স্বাধীনতার তাৎপর্য উপলদ্ধির চেতনায় এনে এর মর্যাদা রক্ষার জন্য জীবন বাজী রাখা উচিৎ ও প্রতিটি দেশবাসীর মনে রাখা উচিৎ; সকিনা বিবির কপাল ভেঙ্গে, হরিদাসীর সিঁথির সিদুর মুছে অনেক বার রক্ত গঙ্গায় ভেসে ’ তবেই স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে এবং এটাই প্রতিটি দেশবাসীর চেতনার লিলালিপিতে খোদাই করে রাখতে হবে।

স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের প্রত্যয়ে প্রতি বছর বাঙ্গালীর স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপিত হলেও দরিদ্রবিমোচন, স্বনির্ভরতা, এক বিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সবার জন্য ডাল- ভাত প্রভৃতি নানান কর্মসূচী বিগত বছর গুলোতে গৃহিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের যা অর্জন তা প্রত্যাশার তুলনায় খুবই সামান্য। আর সামাজিক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাতো অনেক দূরের কথা। তবে এগুলো যদি সত্যি সত্যিই আমাদের হাতের মুঠোয় এসে যায় তাহলেই বলতে পারবো স্বাধীন আমার বংলাদেশ ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.