নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - আল জাজিরা
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা এবং পশ্চিমা বিশ্বের অবমাননাকর পশ্চাদপসরণ এবং কাবুল থেকে বিশৃঙ্খল প্রস্থান করার পর তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে ২০২১ সালের ১৫ ই আগস্ট। ইতিমধ্যেই,তালেবানদের ক্ষমতা দখলের এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই ১ বছরের দীর্ঘ সময়েও তারা বিদেশের কোন দেশের স্বীকৃতি, সমর্থন কিংবা সাহায্য পায়নি। এ সময়ে পশ্চিমারা তাদেরকে স্বীকৃতি না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে নানা শর্তের বেড়াজালে। আফগানদের কৃষিই প্রধান উপজীবিকা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সিংহভাগ বিদেশী অনুদান অর্থ্যাৎ দেশটির জিডিপির ৪০ শতাংশই পশ্চিমা সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল এবং সেই সাহায্য গত এক বছর ধরে বন্ধ। আফগানিস্তানের ১০ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আমেরিকা আটকে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ আফগানিস্তানের জন্য তাদের জরুরি ঋণের নির্ধারিত কিস্তি স্থগিত করে দিয়েছে। আটকে দেয়া এসব টাকা এখন তালেবানের ওপর প্রভাব খাটানোর জন্য আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের প্রধান অস্ত্র। তারা বলছে, নারীদের শিক্ষা এবং কাজের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারী এবং আফগান সমাজের বিভিন্ন অংশকে ক্ষমতার ভাগ দিতে হবে,তবেই মিলবে বিশ্বব্যাপী তাদের সমর্থন ও স্বীকৃতি। আর এসব সমস্যা ও শর্তের কারনে আফগান অর্থনীতি টিকে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত ধুকছে আর তালেবানরা চেষ্টা করছে সেই সব সমস্যার পাহাড় থেকে বের হয়ে আসতে তবে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তাদের কোন প্রচেষ্টাই ফলপ্রসু হিসাবে বিবেচিত হচছেনা।
এমনকি পাকিস্তান, রাশিয়া, ইরান সহ প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকেও স্বীকৃতি এবং সমর্থনের শর্ত হিসাবে সরকারে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী, সংখ্যালঘু এবং নারী প্রতিনিধিত্বের দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য চীন ও রাশিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে কাবুল তথা তালেবানরা। আমেরিকার দখলদারিত্ব থেকে ২০ বছর পরে কাবুলে গত বছর ১৫ ই আগস্ট তালেবানরা যে ক্ষমতা কেড়ে নেয়, তার প্রথম বার্ষিকী ছিল গত (১৫/০৮/২০২২) সোমবার। এই এক বছরে তালেবান শাসকদের সামনে পড়ে আছে সমস্যার হাজারো পাহাড়,যদিও তারা দেশের প্রাণহীন অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নের। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার ফলে এ লড়াইয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হচ্ছে না। আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা তথা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নানাভাবে তাদের সাহায্য করা দরকার। বার বার তাদের আবেদন জানানো ও নানারকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের কোনো দেশ। পশ্চিমাদের মূল কাজই যেন এখন তালেবানদের শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহযোগীতা কিংবা তালেবানদের সফলতা নয় বরং অশান্তি-অস্থিতিশীলতায় সহযোগিতা প্রদান করা এবং তালেবানদের ব্যর্থতাই যেন তাদের মূল চাওয়া।এ যেন অনেকটা " আমি থাকতে পারিনি তুমি কিভাবে থাকতে পার তা দেখে নেব"- এর মতই। অর্থ্যাৎ,পশ্চিমারা ব্যর্থ হয়েছে আর তাই তাদের এখন একটাই চাওয়া তালেবানদের ব্যর্থতা । অথচ আফগানদের সমস্যার জন্য তালেবানরা যতটা না দায়ী তার থেকে বহুগুণ বেশী দায়ী এ পশ্চিমারাই । এদিকে তালেবানদের অভিযোগ তাদের সরকারকে স্বীকৃতি না দিয়ে ২০২০ দোহা চুক্তি লঙ্ঘন করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ছবি - news.un.org
তালেবান শাসনের ১ বছরে সহিংসতা কমেছে আফগানিস্তানে
বিভিন্ন তথ্য ও সূত্র মতে, আফগানিস্তানে গত বছর তালেবানদের হাতে পশ্চিমা-সমর্থিত ঘানি সরকারের পতনের পর থেকে সহিংসতার হার দ্রুত হ্রাস পেয়েছে সেই সাথে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বাড়ছে দারিদ্র্যতা। তবে দেশটিতে দারিদ্র্যতা বাড়লেও রাজনৈতিক সহিংসতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এমন একটি এনজিওর আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট (অ্যাকলেড) অনুসারে, ২০১১ সাল থেকে তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতা গ্রহণের পর বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। ড্রোন এবং বিমান হামলা হ্রাস পেয়েছে ৯৬ শতাংশ। ল্যান্ডমাইন এবং ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এর বিস্ফোরণ কমেছে ৭৩ শতাংশ এবং গোলাগুলি ও সমর যানের আক্রমণ কমেছে ৯৭ শতাংশ। তবে এসব সাফল্য ম্লান হয়ে যাচছে দারিদ্রতার কষাঘাতে ।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য তৎপর তালেবান তবে তারা যা করছে তা কি যথেষ্ট আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য -
কাবুলে বিদেশি, বিশেষ করে প্রভাবশালী কয়েকটি আঞ্চলিক দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সাহায্য স্বীকৃতি নিয়ে কথা বলতে তালেবানরা তৎপর। প্রতিদিনই বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু বিদেশিদের দেওয়া শর্ত নিয়ে তালেবানের কাছ থেকে কোনো কথা বা প্রতিশ্রুতি নেই। বিশেষ করে সরকারে কারা থাকবে, কী থাকবে না - তা নিয়ে কোনো কথা তালেবান শুনতে চায় না। আমেরিকানদের সমর্থনে যেসব সরকার ছিল তাদেরকে তালেবানরা বিশ্বাস করে না। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বের ধারণাই তারা মানে না । তাদের কথা - এটি একটি ইসলামি সরকার, এর সাথে জাতি-গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের সম্পর্ক নেই।
সরকারে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সম্প্রতি তাজিকিস্তানের কাছ থেকে এক বিবৃতি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ তালেবানরা। বিবিসি পশতু বিভাগের সাথে সোমবার এক সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র আহমেদুল্রাহ ওয়াসিক বলেন, "যে তাজিকিস্তান আমাদের জন্য সমস্যা তৈরিতে ব্যস্ত তারা আমাদের সরকারের কাঠামো নিয়ে কথা বলার কে? তাদের উচিৎ নিজেদের সমস্যা সমাধান করা। আমাদের সরকার কেমন হবে তা নিয়ে বিদেশিদের কথা বলার কোনো অধিকার নেই।"
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছাড়া কিভাবে দেশ চালাবে বা টিকে থাকতে পারবে কি তালেবানরা ?
তালেবানরা ভরসা করছে আঞ্চলিক কয়েকটি দেশ বিশেষ করে চীন রাশিয়া, ইরান এবং পাকিস্তান এবং সেই সাথে কাতারের উপর। আফগানিস্তানে নারী অধিকার, নারী শিক্ষা নিয়ে এসব দেশের তেমন কোনো চিন্তা নেই । তালেবান মনে করে এসব দেশে তাদের কৌশলগত স্বার্থ নিয়েই বেশি উৎসাহী। কাবুলের সাথে গোপনে এবং প্রকাশ্যে আঞ্চলিক কয়েকটি দেশের যোগাযোগ যে চলছে তা স্পষ্ট। তালেবান সরকারের দিকে পশ্চিমা নয়, এমন দেশগুলো কিভাবে অগ্রসর হয়েছে তা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। চীন, পাকিস্তান ইরান সহ আফগানিস্তানের কিছু প্রতিবেশী দেশ তালেবানের কূটনীতিকদের মেনে নিয়েছে। এ তালিকায় আরও আছে মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব, রাশিয়া,ভারত ও তুর্কমেনিস্তান এবং তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানদের নিয়োগ করা কূটনীতিকদের স্বীকৃতিও দিয়েছে।
তালেবানদের সাথে যদিও ইরানের যোগাযোগ আছে তবে সরকারে হাজারা শিয়া সম্প্রদায়কে বাদ রাখায় খুশি হতে পারেনি ইরান তালেবানদের উপর। তাছাড়া ২০২১ সালের আগস্ট থেকেই তালেবানদের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ ও পানির অধিকার নিয়ে বিরোধ চলছে ইরানের। এদিকে, ১৯৯০ এর দশকে তালেবান সরকারকে যে তিনটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার মধ্যে তালেবানের দীর্ঘদিনের মিত্র পাকিস্তান অন্যতম। কিন্তু এবার তালেবানদের আফগানিস্তান দখল পরবর্তীতে তাদের বড় সমস্যা দেখা দেয়। তালেবান শাসকরা পাকিস্তানি তালেবানদের উৎসাহিত করেছে, যারা টিটিপি হিসেবে পরিচিত এবং আন্তঃসীমান্ত হামলায় জড়িত। এ ব্যাপারেও তালেবানদের উপর খুশি নয় পাকিস্তান।
পশ্চিমাদের মূল চাওয়া নারী শিক্ষাও সরকার কাঠামো নিয়ে রাশিয়া, চীন,ইরান বা পাকিস্তান তালেবানদের সাথে বড় কোনো রকম ঝামেলায় জড়াতে চায় বলে মনে হয় না। যেমন, চীনের বিশেষ দূত উ শাও উং-এর সাথে কাবুলে তালেবান প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে ২৩ শে সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, মি. উ বৈঠকে আবারও আশ্বস্ত করেছেন যে চীন আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মাথা গলাবে না। তবে আফগানিস্তান নিয়ে পাকিস্তানসহ সমস্ত প্রতিবেশীর প্রধান উদ্বেগ সন্ত্রাস এবং তা নিয়ে তারা তালেবানের কাছ থেকে জোড়ালো প্রতিশ্রুতি চায়।এদিকে,কাবুল দখলের বর্ষপূর্তিতে চীন আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানদের সাথে জড়িত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবারো আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘে চীনের দূত ঝাং জুন নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, " নতুন প্রশাসনকে দিকনির্দেশনা এবং আস্থা দেওয়ার জন্য তাদের সাথে জড়িত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ যাতে তারা এগিয়ে যেতে পারে"। ঝাং আরো বলেন,"যারা আফগানিস্তান ছেড়ে গেছে তাদেরও দায়িত্ব পালন করা উচিত। তারা কেবল বলতে পারে না যে, তারা চলে গেছে এবং সবকিছু ভুলে গেছে"। তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মার্কিন যুক্তরাষ্টের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আটক আফগান তহবিল মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন,"আফগানিস্তানের সম্পত্তি জব্দ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই"। - এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
তালেবানদের উপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কি হতে পারে -
পশ্চিমাদের সমস্যা সমাধানে তালেবানদের কোন সাহায্য না করে, বৈদেশিক রিজার্ভ বা অর্থ আটকে রেখে এবং নানা রকম বিধি-নিষেধ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে তালেবানদেরকে কোণঠাসা করার চেষ্টা কতটা কাজ করবে এবং তা হিতে-বিপরীত হয় কিনা তা নিয়ে এখন পশ্চিমা বিশ্বেও দ্বিধাবিভক্ত মতামত লক্ষ্য করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের এক প্রকাশনায় গবেষক ভান্দা ফেলবাব ব্রাউন তার এক বিশ্লেষণে লিখেছেন, "আর্থিক চাপে এবং নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তালেবানদেরকে উৎখাত বা আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা খুবই কঠিন হবে"। তিনি আরো বলেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিভেদকে কাজে লাগিয়ে এবং অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির ওপর ভর করে বিশ্বের অনেক দেশের সরকার পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও বহুদিন ক্ষমতা রাখতে সক্ষম হয়েছে - যেমন মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, ভেনিজুয়েলা"।
এমনিতে ভারত ও পাকিস্তানের চির বৈরিতা এবং সম্প্রতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে এশিয়ায় যে ভূরাজনৈতিক দলাদলি শুরু হয়েছে, তাতে তালেবানের পক্ষে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো তেমন কঠিন কিছু নাও হতে পারে।কারন, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ভারত তালেবানদের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক চালু করতে যাচছে এবং ইরান-পাকিস্তান-চীন-রাশিয়া সবাই নিজেদের প্রয়োজনেই তালেবানদের সাথে সম্পর্ক মেরামতে নজর দিচছে। - বিবিসি বাংলা - https://www.bbc.com/bengali/news-58729673
আফগানিস্তান নিয়ে কিছু লিখতে গেলেই যেতে হবে পিছন দিকে আর তখনই বাস্তবতা হিসাবে সামনে আসবে পুরনো ক্যাঁচাল - সেই তালেবান, আশরাফ গনি সরকার, যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্য, মানবাধিকার প্রভৃতি। তবে বাস্তবতা হলো, দেরিতে হলেও ক্ষুদ্র পরিসরে আমেরিকার গলছে আফগান ইস্যুতে। তাদের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকসহ পশ্চিমা জগৎ আফগান দেশে মানবিক ত্রান দেয়া শুরু করেছে। অর্থাৎ এতদিন তাদের নিজের কার্যক্রম যে, ‘অমানবিক’ বা নিষ্ঠুর ছিল, পক্ষান্তরে এটা স্বীকার করে নেয়া হলো। তা হলে কেন এত বিলম্ব? এক দিকে গণতন্ত্র, অন্য দিকে মানবাধিকারের অবমাননা। তালেবান তো এখন আফগান রাষ্ট্রের বাস্তবতা। তা স্বীকার না করে অন্যদের উপায় কী? আফগান জাতিকে কেউ কষ্টে ফেলার কোনো মানে হয় না। এটা বহু আগেই ভেবে দেখা উচিত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তা হলে চরম শীতে কারো দুর্ভোগ ঘটত না। তালেবানও কারো সমালোচনার সুযোগ পেত না। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য হতো প্রশংসিত সবার কাছে। তালেবানদের দুর্ভোগ ঘটাতে তারা সবাই যেন পুরো আফগানিস্তানেকে দুর্ভোগে ফেলে দিচছে তা ভেবে দেখছে না কেউ।
অতি সম্প্রতি কাবুলে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে আমেরিকা। এর ফলে তালেবান ও পশ্চিমাদের মধ্যে অবিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পাবে,তালেবানরা কূটনৈতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। পশ্চিমাদের দাবি, নারী অধিকারের বিষয়ে শিথিলতা দেখাতে হবে তালেবানদের এবং সরকার হতে হবে অধিক প্রতিনিধিত্বশীল। কিন্তু গত মাসে কাবুলে হত্যা করা হয় জাওয়াহিরিকে। এরপর থেকেই পশ্চিমা সরকারগুলো তালেবানদের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। তারা বলছে, দোহা চুক্তিতে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তালেবানরা আল কায়েদা ও সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে দেশে নিরাপদে অবস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। আবার ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসা প্রোভিন্স (আইএসকেপি) বেশ কিছু ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে আফগানে। এতে পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে জাওয়াহিরিকে হত্যা করার পর তালেবানদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আস্থা রাখা খুবই কঠিন হবে। তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে জোরালো সমর্থন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পশ্চিমারা অবস্থান দৃঢ় করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এম্বাসেডর এট লার্জ এবং সন্ত্রাস বিরোধী সমন্বয়ক নাথান সেলস বলেন, জাওয়াহিরিকে হত্যার পর ঝুঁকি রয়েই গেছে। তা হলো তালেবানদের কাছে অর্থ ছাড় দেয়া হলে অপরিহার্যভাবে তা সরাসরি চলে যাবে আল কায়েদার পকেটে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিস বলেন, যদিও পশ্চিমা ও আফগানদের মধ্যে যোগাযোগ খুব নিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে জাওয়াহিরিকে হত্যার মধ্য দিয়ে, তবু এই ঘটনা আঞ্চলিকতার ক্ষেত্রে কি প্রভাব ফেলতে তা পরিষ্কার নয়। আঞ্চলিক অনেক দেশের জন্যই আল কায়েদা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তালেবানদের নিকট আমেরিকার চাওয়া কি -
আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন চাচ্ছে, তালেবানরা যেন নিশ্চিত করে যে, "আফগানিস্তানকে কখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর মিত্রদের বিপক্ষে ব্যবহার করা হবে না অথবা এ দেশ সন্ত্রাসের আখড়া'রূপে যেন অপব্যবহৃত না হয়"। আমেরিকান কর্মকর্তাদের কথা হলো,"তালেবানরা কী অঙ্গীকার করেছিল, যা তাদেরকে পূরণ করতে হবে, তা নিজেদেরই বুঝতে হবে। এখন তারা আইএস-এর মোকাবেলা করছে যে ইস্যুতে আমরা ওদের সাথে অনেকবার আলোচনা করেছি। আইএস-এর হুমকি মোকাবেলার সক্ষমতা নিয়ে আমরা কথা বলেছি তাদের সাথে" ।
আমেরিকার নিকট আফগানিস্তানে তালেবানের চেয়ে অনেক বড় বিপদ, বহু বেশি ভয়ঙ্কর হলো, আইএস-আলকায়েদা প্রমুখ উগ্রবাদী গোষ্ঠী। এখন তারা তালেবান প্রশাসনের জন্যও মাথাব্যথার বিরাট কারণ হয়ে উঠেছে। তাদের ভয়াবহ সন্ত্রাসী তাণ্ডবে সবাই দিশাহারা ও আতঙ্কিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন তাই ‘ইসলামিক’ স্টেট খোরাসান (আইএসকে)-এর মোকাবেলায় আফগানিস্তানের তালেবান শাসক মহলের সাহায্য চাচ্ছে।
আফগানিস্তান থেকে সৈন্য দল সরিয়ে নিলেও এখনো আফগান ইস্যু আমেরিকার বিরাট মাথাব্যথার হেতু। আমেরিকা আফগান ত্যাগ করলেও তারা পুরোপুরি আফগান সমস্যা থেকে নিজেদের বের করে নিতে পারেনি। এ যেন "আমি কম্বল ফেলে দিয়েছি,কিন্তু কম্বল আমাকে ছাড়ে না"। ওয়াশিংটনে এক নিউজ বিফ্রিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন জানায়,"তালেবানদের সহযোগিতা নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। আইএসকের প্রধান গাফিরি এবং সহযোগীদের ধরার কাজে তালেবানরাও অংশ নিতে পারবে"। উল্লেখ্য, এ জন্য গত ৯ ফেব্রুয়ারি ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাইজ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের বক্তব্য, তালেবানের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং ২০২০ সালে (ট্রাম্প আমলে) করা দোহাচুক্তি'র দিকে অগ্রসর হওয়ার প্ল্যান আছে।
আইএসকে সংগঠন সম্পর্কে তথ্য দিলে তাদের পুরস্কৃত করার নিশ্চয়তা দিয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। আইএসকে প্রধান গাফারির অবস্থান এবং ২৬ আগস্টের হামলার ব্যাপারে। এসব বিষয়ে আমরা সবাইকে উৎসাহ জোগাব। এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী থেকে বিশ্বজনীন জোট বিবৃতি প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়, আইএসকে সংগঠনটি নির্মূল করতে যাবতীয় উপকরণ ব্যবহার করা হবে। ওদের হুমকির বিলুপ্তি না হওয়া নাগাদ আমরা পিছু হটছি না। প্রশ্ন হলো, ‘এ জন্য কি আবার মার্কিন সেনা বা ন্যাটো জোট আফগানিস্তানে আসছে? তারা কি পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হবে?
আমেরিকা বা ইউরোপের চাওয়া যেন অনেকটা এরকম, - " আমরা পারিনি তাই ছেড়ে দিলাম তবে এমন পরিস্থিতি তৈরী করব যাতে তোমরা কিভাবে সফল হও তাও দেখে নিব" টাইপের । আর তার জন্যই তালেবানদের সাথে সহযোগীতার পরিবর্তে সর্বক্ষেত্রে অসহযোগীতা তথা বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ ও বৈদেশিক রির্জাভ আটক এবং তাদের স্বীকৃতি না দেয়া সহ এমন সব পদক্ষেপ নিচছে তারা যাতে করে তালেবানরা দেশ শাসনে সফল না হয়। আর এসব সমস্যা থেকে বেরিয়ে তালেবানরা কিভাবে দেশ শাসনে সফল হতে পারে তাই এখন সারা দুনিয়ার কৌতুহল ও দেখার বিষয়।
ছবি - বিবিসি
বিগত ১ বছরে তালেবানরা যা করছে -
আফগানিস্তানে তালেবানদের পুনরায় ক্ষমতা দখলের এক বছর হয়ে গেল। এই এক বছরে দেশটির নাগরিকদের জীবন বদলে গেছে অনেকটাই। বিচরণের ক্ষেত্র সীমিত হয়েছে নারীদের, শিক্ষার সুযোগ হয়েছে সঙ্কুচিত সাথে দারিদ্র্যতাও বাড়ছে দেশটিতে। কিন্তু বিপরীতে সংঘাত-সহিংসতাও কমেছে। যে তালেবান যোদ্ধারা অস্ত্র হাতে লড়ছিলেন, তাদের জীবনেও এখন এসেছে পরিবর্তন। একদিকে তালেবানরা চেষ্টা করছে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়-ক্ষতি এড়িয়ে দেশকে পূর্ণগঠন করতে আবার অন্যদিকে সারা দুনিয়ার চাওয়াকে পাত্তা না দিয়ে চেষ্টা করছে আফগানিস্তানে ইসলামিক ব্যবস্থার কায়েম করতে।
নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিয়ে তারা এখনো কোন কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে বলে কারো নিকট মনে হয়নি। এ নিয়ে তালেবানদের অস্বস্তিতে আছে, সাথে সাথে সারা দুনিয়ার অস্বস্তিরও কোন পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেয়নি তালেবানরা।যদিও ছোট ছোট মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা করার ব্যবস্থা করে বর্তমান নারী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা শেষ করার সুযোগ করে দিয়েছে তারা তবে মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখার বিষয়ে তালেবান নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আফগানদের বড় একটি অংশের মধ্যে এবং এমনকি তালেবানের বিভিন্ন পর্যায়েও হতাশা রয়েছে।
ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তালেবানরা হাবুডুবু খাচছে সমস্যার পাহাড়ে এবং অর্থের অভাবে ভাল কোন সিদ্ধান্তও নিতে পারছেনা তারা। আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে পড়েছে। যেহেতু বিদেশি সহায়তা আসা বন্ধ হয়ে গেছে, কারণ আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো অর্থ ছাড় আটকে রেখেছে। দেশটির সরকারি খরচের ৭৫ শতাংশই এই বিদেশি সহায়তার উপর নির্ভরশীল। যার কারনে শহর এলাকার মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয় নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। এই সঙ্কটের কারণে সরকারি কর্মীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না এবং তাদের বেতনও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা এতদিন দিন আনি, দিন খাই অবস্থায় ছিলেন, তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ। যদিও অনেকেই এখনো মনে করেন যে, তারা দেশ গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তবে নানা সমস্যায় হাবুডুবু খাচছেন।
আবার, আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা বা পশ্চিমাদের মূল যে চাওয়া সেই ব্যাপারে তালেবানরা এমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি বা তালেবানরা এমন কোন কাজ করেনি যাতে তাদের আমেরিকা বা পশ্চিমারা খুশি হতে পারে। আমেরিকা ও পশ্চিমাদের মূল চাওয়া " নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার " - এ দু জায়গাতেই দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ দুয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচছে যাতে করে তালেবানদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচছে।। এদিকে মানবাধিকার পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটেছে আফগানে। এ যেন অনেকটাই ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনকার মতোই পরিস্থিতি। ফলে পশ্চিমা সরকারগুলোর পক্ষে তালেবানদের স্বীকৃতি দেয়া বা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সুযোগ কমে আসছে। তার পরও তালেবানরা বিশ্বাস করে সময় তাদের পক্ষে এবং তাদের শাসন যেমনই হোক পশ্চিমা এবং বাকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত তাদেরকে স্বীকৃতি দেয়া। আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো জাভিদ আহমেদ বলেন, তালেবানরা মূলত তাদের তালেবানি অধিকারের পক্ষে। তারা মানবাধিকারের পক্ষে নয়। প্রকাশ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিষয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা মনে করে বিশ্বই তাদের সামনে নত হবে।
তালেবানদের সামনে সবচেয়ে বড় যে সমস্যা বা আইএস ইস্যু -
তালেবানদের সামনে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ বা প্রতিপক্ষ বাহিনী থেকে উদ্ভূত তা হলো আইএস ইস্যু। তালেবান ও আইএস উভয়ই সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী, কিন্তু তারা মিত্র নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী । আইএসের উদ্দেশ্য আফগানিস্তানে আইএস খোরাসান প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করা। আইএস ও তালেবান ২০১৫ সাল থেকে আফগানিস্তানে আইএস প্রবেশের সময় থেকে যুদ্ধে রয়েছে।বিশ্লেষকরা তালেবানকে আইএসের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে দেখছেন। আফগানিস্তানে আইএসের উপস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের জন্য একটি সাধারণ সম্পর্কের ভিত্তি রচনা করে ফেলেছে। ক’দিন আগে দোহা আলোচনায় আইএস দমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কমান্ডো পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল যদিও তালেবানরা বাইরের শক্তির প্রয়োজন নেই বলে সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
এছাড়াও, জাতিগত তাজিকরা আফগানিস্তানের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি। তালেবান সদস্যরা প্রধানত সবচেয়ে বড় জাতিগত গোষ্ঠী পশতুনদের অন্তর্ভুক্ত। রেষারেষি ও উত্তেজনার মধ্যে তালেবান-তাজিকরা যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হলে কেউ সমর্থন পাবে না। তাজিকিস্তানের রাষ্ট্রপতি এমোমালি রাহমন অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আফগানিস্তানে সক্রিয় থাকায় আবারো দেশটি সন্ত্রাসবাদের প্লাটফর্ম হতে পারে।উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের তাখার প্রদেশ তাজিকিস্তানের সাথে আফগান সীমান্ত। তাজিকিস্তানের গোর্নো-বাদাখশান স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে রাশিয়ান সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। ভারতেরও শক্তিশালী বিমান ঘাঁটি রয়েছে ওই অঞ্চলে। ভারতের তীর পাকিস্তানের দিকে হলেও এখন পুরো এলাকা তাদের লক্ষ্যবস্তু। উল্লেখ্য, ভারত, রাশিয়া ও তাজিকিস্তান তালেবান সরকারের সমালোচনা করে চলেছে এবং কেউ স্বীকৃতি দেয়নি। কাবুলকে চাপে রাখতে তালেবান-সীমান্তে উসকানি তাজিকিস্তানের একটি কৌশল।
তালেবানদের সাফল্যের জন্য যা করা প্রয়োজন -
১। ৩০ বছর যুদ্ধ, সঙ্ঘাত, অস্থিরতা ও দুর্নীতির ফলে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়েছে যা কোন রকম জোড়াতালি দিয়ে এতদিন আমেরিকানরা চালিয়েছিল।এখন তালেবানরা যদি ১৪টি জাতিগোষ্ঠী সমন্বয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন ও পরিচালনায় সফলতা দেখাতে পারে, রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটিয়ে এবং সামাজিক শৃঙ্খলা, সুশাসন ও জননিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে পারে, তবে তিন ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের উত্তোলনযোগ্য যে পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে এগুলোর প্রযুক্তিভিত্তিক সদ্ব্যবহার করার পথ খুলে যাবে। তখন বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসতে আগ্রহী হবে। আর তালেবান শাসিত আফগানিস্তানও অর্থনৈতিকভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
২। এসবের জন্য তালেবান সরকারকে মুসলিম বিশ্বসহ গোটা দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আধুনিক বিশ্বে একলা চলো নীতি অচল। ইসলামের বিধিবিধানের আওতায় অবস্থান করলেও তালেবানদেরকে উদারতা দেখাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন বিবেচনায় রাখতে হবে। ন্যায়বিচার, সামাজিক নিরাপত্তা, সুশাসন, নারীশিক্ষা, সংখ্যালঘুর অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে। সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে ভারতের সাথেও ।এক কথায় , সারা দুনিয়ার সবার সাথে সুসম্পর্ক এবং বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তই তালেবানদের সফল হতে সাহায্য করতে পারে।
৩। মোটকথা হলো,বৈদেশিক সাহায্যনির্ভরতা কমিয়ে অর্থনৈতিকভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইলে তালেবানদেরকে আরো দায়িত্বশীল, চৌকস ও কুশলী ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজেদের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠির মধ্যে মধ্যে ঐক্যের বন্ধন তৈরি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী শক্তিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে তালেবানদেরকে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। দেশ পরিচায়নায় ইতিপূর্বে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বকেও এগিয়ে আসতে হবে তালেবানদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য যাতে করে তারা এসব সমস্যার সমাধান করে কাংখিত লক্ষ্যে পৌছতে পারে এবং উপহার দিতে পারে আফগান জনগন ও বিশ্বকে একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তান ।
ছবি - এপি
আফগানিস্তানের সর্বশেষ খবর কাবুলে একটি মসজিদে গতকাল বুধবার (১৭/০৮/২০২২) এশার নামাজের সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ওই মসজিদের ইমামও রয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন মুসুল্লি। বুধবার সন্ধ্যায় মুসল্লিরা প্রার্থনারত অবস্থায় ওই মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে আশেপাশে বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাবুল পুলিশ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে। - রয়টার্স
এর আগে, আল জাজিরা এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, নিহতের সংখ্যা ২০ এবং আহত হয়েছেন ৪০ জন। ওই কর্মকর্তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনাস্থলে দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছায় এবং আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে শিশুসহ ৩৩ জন আহত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
ছবি- বিবিসি
পরিশষে - তালেবানরা যদি খারাপ বা মন্দ বলে ধরে নেয়াও হয় তাহলেও বাকীদেরতো তাদের চেয়ে উত্তম বা ভাল হতে বা হওয়া দরকার,এ উপলব্ধি সংশ্লিষ্ট সবার থাকা উচিত। তাদের প্রতি সাহায্য-সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিলে তারা ভাল কিছু করতেও পারে, এ ব্যাপারে তাদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। কোন প্রকার সুযোগ না দিয়ে শুধু অবরোধ আর সমালোচনায় সমাজ-দেশ-পরিবেশের উন্নয়ন আশা করা যায়না। আবার কোন কিছু না দিয়ে খালি , " যদি তারা এ করে - ও করে তবেই সাহায্য করব" (এ যেন ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল দেওনের গোসাই এর মত) বলে এবং এ যাবৎ সবাই " যদি ও কিন্তু"র ওপর তাদের ব্যাপারে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা নেই ও অযৌক্তিকও বটে। কারণ, ভবিষ্যতে বা আগামী দিনে কে কেমন হবে, তা আগে থেকে বলা যায় না। আমেরিকা যে সাম্রাজ্যবাদী দেশ হয়ে উঠবে, তা কি আব্রাহাম লিংকন ধারণা করেছিলেন? কেননা, এ দেশের প্রতিষ্ঠাই হয়েছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে। অথচ আফগানিস্তানে এই আমেরিকাই চিত্রিত হয়েছে দখলদার হিসেবে। সে জন্যই তালেবানের ক্ষমতারোহণ এবং জনগণের তাতে প্রায় সবার সম্মতি,অথচ সে দেশে যদিও কোনো নির্বাচনও হয়নি তারপরও বাস্তবতা এটাই। আর তালেবানদের অস্বীকার বা অবরোধ করে রেখে নয় বরং তাদের প্রতি সাহায্য -সহযোগীতার বাড়ানো হাতই মাধ্যম হতে পারে পরিস্থিতির উন্নয়নের সূচক। ফলে আসতে পারে আফগানে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং বাকী দুনিয়া পেতে পারে আইএস থেকে মুক্তি।
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - রয়টার্স, বিবিসি বাংলা (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১) ,আল জাজিরা,এপি
===============================================================
পূববতী পোস্ট -
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট -৮ Click This Link
" আফগানিস্তান তুমি কার " - আমেরিকা - রাশিয়া - ভারত - পাকিস্তানের না আফগানদের ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৭ Click This Link
" আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখলের ৩ মাস " - কাবুলে কি ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে তালেবানদের জন্য বা আফগান জাতির ভবিষ্যত গন্তব্য কোথায় ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৬ Click This Link
" বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ ও বৈদেশিক রির্জাভ আটক এবং আফিম চাষ বন্ধ " কিভাবে বের হবে তালেবানরা এ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ? বিকল্প কোন জিনিষ টেকসই হতে পারে আফগান অর্থনীতির জন্য ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৫ Click This Link
"ঝড়ের গতিতে আফগানিস্তান দখল করা তালেবানদের এক মাসেই ঘরে-বাইরে'র নানা সমস্যায় বেহাল অবস্থা । টিকে থাকতে পারবে কি তালেবানরা বা তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু" ?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৪ Click This Link
" আমেরিকার আফগানিস্তান থেকে বিদায় " - এর ফলে বিশ্ব ব্যবস্থা ও পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা আছে কি বা বিশ্বে পশ্চিমা আধিপত্যের প্রভাবের পরিবর্তনের সম্ভাবনা কতটুকু?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৩ Click This Link
"তালেবানদের আফগান শাসনের রোডম্যাপ (ইশতেহার) প্রকাশ । কোন পথে এবং কতদূর নিয়ে যেতে চাচ্ছে তালেবানরা আফগানিস্তানকে"?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ২ Click This Link
" তালেবানদের আফগানিস্তান দখল " - কেন এবং কি কারণে আফগান সেনাদের এত দ্রুত পরাজয়?
তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ১ Click This Link
" আফগানিস্তানে আমেরিকার ২০ বছর " - আমেরিকা কি নিয়ে এবং আফগানিস্তানকে কোথায় রেখে যাচছে ? এ ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের প্রতিক্রিয়া কি ?
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শূন্য সারমর্ম ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।
আফগানিস্তানে নামাযও শান্তিতে পড়া যায় না, মসজিদে বোমা হামলা হয়।
- - মানুষের মাঝে যখন একের প্রতি অন্যের সহযোগীতা-সহনুভূতি কমে যায় ও ব্যক্তিগত স্বার্থ বা স্বার্থের দ্বন্দ্ব বড় হয়ে উঠে তখন মানুষের মাঝে মানবিকতা লোপ পেয়ে পাশাবিকতা জেগে উঠে। তখন তার কাছে মসজিদ-মন্দির বা উপাসনালয়-হাসপাতাল বিবেচ্য বিষয় থাকেনা।
হায়েনার মানষিকতা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে তারা মানব সংহারে। অথচ যেখানে মানব রক্ষাই মানব ধর্ম হওয়ার কথা ছিল।
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
এইদেশটি সম্পর্কে আমি খুব কম জানি। আসলে যেকোনো দেশ সম্পর্কেই আমি খুব কম জানি।
ওদের দেশটি ওরা ওদের মতো করে সাজানোর একটি সুযোগ পেয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়।
১০ বছর পরে হয়তো কিছুটা বুঝা যাবে ভালোর কিছু হবে কিনা। আর তার আগেই যদি লোভের সীমা অতিক্রম করে নেতারা তাহলে খেলা শেষ।
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মরুভূমির জলদস্যু ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।
এইদেশটি সম্পর্কে আমি খুব কম জানি। আসলে যেকোনো দেশ সম্পর্কেই আমি খুব কম জানি।
- আমিও যে খুসব বেশী জানি ভাইজান তা নয়।
তবে শিক্ষার ( বিশ্ববিদ্যালয়ের ) সর্বোচ্চ ডিগ্রি এ বিষয়ের হওয়ায় "আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক" বরাবরই আমাকে টানে। আর ভূগোল নিয়ে আমার আগ্রহ সেই শৈশব থেকেই । যার ফলশ্রুতিতে মাধ্যমিক স্তরেও ভূগোলে লেটার মার্ক পেয়েছিলাম।(ভাই আপনি আবার এটা অন্যভাবে নিবেন না বলে আশা রাখি, শুধু কথা প্রসংগে বললাম)।
ওদের দেশটি ওরা ওদের মতো করে সাজানোর একটি সুযোগ পেয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়।
১০ বছর পরে হয়তো কিছুটা বুঝা যাবে ভালোর কিছু হবে কিনা। আর তার আগেই যদি লোভের সীমা অতিক্রম করে নেতারা তাহলে খেলা শেষ।
-আমারও কথা সেটাই । অনেক বছরে পরে ,অনেক চড়াই-উতরাই ও ঘটনা প্রবাহের পর তারা সুযোগ পেয়েছে নিজেদের দেশ নিজেদের মত করে গড়ার।যাতে তা করতে পারলে সবারই সহযোগীতা করা উচিত আর না পারলে নাই। তবে , এমন কিছু করা কারোরই উচিত নয় যে তারা কিভাবে সফল হবে তা দেখে নিব।
আর তাদেরও অতীতের ভূলগুলি এড়িয়ে সবার সাথে (নারী-পুরুষ) মিলেমিশে দেশ গঠনের জন্য চেষ্টা করা উচিত । কারন, দেশের অর্ধেক অংশ (নারী) কে আধারে রেখে দেশের আলোতে এগিয়ে যাবার আশা করা বাতুলতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: বরাবরই বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে প্রথু অথেনটিক তথ্য দিয়ে লেখেন আপনি।
ভাল লেগেছে।
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ( আমার বড়ই প্রিয়) ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।
বরাবরই বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে প্রথু অথেনটিক তথ্য দিয়ে লেখেন আপনি। ভাল লেগেছে।
- আপনার নিকট ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগলো ভাইজান।
অফটপিক -
এলিনার ব্যাপারটা মাথা থেকে যাচছেনা। আজও এক রাশিয়ান সুন্দরীর সাথে কথা হলো এবং আমি যতটুকু জানি যৌনতার ব্যাপারে রাশিয়াতেও খুব বেশী যে চাপান-উতোর আছে তা মনে হয়না। তারপর এত ভাল একজন নারী - এলিনার সাথে কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা ভেবে ভেবে হিসাব মিলাতে পারিনা।
এলিনার সর্বশেষ খবর কি তা জানতে মন চায়, যদি পারেন-জানা থাকে তাহলে ------------
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রে সান্তি ফিরে আসুক।
বন্ধ হোক যুদ্ধ, হানাহানি। নীরাপদে
থাকুক সকিল শিশু, বাসযোগ্য হোক
ধরনী। এ প্রত্যাশা হোক সবার।
১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৩০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ নূরু ( ছড়াকার ) ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।
পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রে সান্তি ফিরে আসুক। বন্ধ হোক যুদ্ধ, হানাহানি। নীরাপদে থাকুক সকিল শিশু, বাসযোগ্য হোক ধরনী। এ প্রত্যাশা হোক সবার।
- আপনার মত আমার-আমাদের সব আম জনতার সবারই চাওয়া যুদ্ধ, হানাহানি ব্যতীত সুখী-শান্তিময় এক পৃথিবীর। তবে আমাদের চাওয়া যতই ভাল হউকনা কেন , এ চাওয়া পূরণ হবার নয় কিছু সাম্রাজ্যবাদী- রক্তপিপাসু-অস্ত্র ব্যবসায়ী নরঘাতকদের কল্যাণে।
কারন, সারা দুনিয়ায় যখন তখন তাদের প্রয়োজনে ও স্বার্থে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয় যাতে তাদের স্বার্থের বলী হয় লাখো নিরীহ মানুষ।
৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:০৪
তানভির জুমার বলেছেন: বিদেশীরা যাদের কে সরকারে নিতে বলছে তারা মূলত গত ২০ বছর তালেবানদের কচুকাটা করেছে, আব্দুর রশিদ দোস্তম, নর্দান এলাইন্স, আমরোল্লাহ সালেহ, ঘানি, হামিদ কারজাই এরা গত ২০ বছর এক সেকেন্ডের জন্যও তালেবানদের শান্তি দেয় নাই।
পৃথীবিতে যদি কোন সাহসী, আর আত্ববিশ্বাসী জাতি থাকে তাহলে সেটা আফগান তালেবানরা, চিন্তা করেন তো খালি হাত, ছেড়া জুতা, ক্ষুদার্থ পেটে পৃথীবির সবগুলো সুপার পাওয়ারের (বৃটিশ, রাশিয়া, ন্যাটো আমেরিকা) সাথে লড়াই করে নিজের দেশ কে মুক্ত করা কতটা কঠিন। এমন না যে পৃথীবির কোন দেশ বা মানুষ তালেবানদের সাহায্য করেছে। ২ লাখ তালেবান একদিকে আর সারা পৃথিবীর মানুষ একদিকে এবং আফগানিস্থানের মানুষরাও তালেবান বিরোধীছিল একটা বড় সময় জুড়ে। শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ওয়েপন ছাড়া এমন কোন অস্র্ নাই যা বৃটিশ, রাশিয়া, ন্যাটো আমেরিকা আফগানিস্তানে ব্যবহার করেনি তারপরও তালেবানদের শেষ করা যায়নি।
ইউটিউবে আফগান যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ন্যাটোর এক আর্মি জেনেরালের ইন্টারভিউ দেখেছিলা। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন আপনারা মনে করেন ২০ বছর যুদ্ধ করার পরও তালেবানদের ধ্বংস করা সম্ভব না। তার উত্তরটা ছিল এরকম: you can't defeat those who think death as success।
পশ্চিমা আর আমেরিকা যারা সবসময় মানবতার গান গায়, তারা আফগান আর তালেবান ন্যাজ্য পাওনা টাকা আটকিয়ে রেখেছে। মগজে যারা পশ্চিমা দাসত্ব মেনে নিয়েছে, যারা পশ্চিমাদের নিজের প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছে তারা বলেছিল তালেবান ৬ মাস টিকতে পারবে না, আগামী ৬ মাস পরে আফগানিস্তানের অর্ধেক মানুষ না খেয়ে মারা যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এরকম কোন কিছুই হয়নি। হ্যাঁ তালেবানদের অনেক সমস্যা আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হল আইএস যারা বিভিন্ন মসজিদে হামলা চালায়। আইএস হল উগ্র আর ইসলাম বিরোধী একটি দল। তালেবান সময়ের সাথে সাথে সব সমস্যা কাটিয়ে উঠবে ইনসেআল্লাহ। আমি যদিও তাদের সব মতবাদের সাথে একমত নই।
যা যাই বলুক আর যত শর্তিই দিক, তালেবানদের সাথে আর কোন জাতি পাঙ্গা নিতে আসবে না, পৃথিবীর সুপার পাওয়ারদের হারিয়ে তারা আজকের জায়গায় এসেছে।
১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:০৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ তানভির জুমার ভাই,আপনার চমতকার বিশ্লেষণাত্মক ও বাস্তব মন্তব্যের জন্য।
বিদেশীরা যাদের কে সরকারে নিতে বলছে তারা মূলত গত ২০ বছর তালেবানদের কচুকাটা করেছে, আব্দুর রশিদ দোস্তম, নর্দান এলাইন্স, আমরোল্লাহ সালেহ, ঘানি, হামিদ কারজাই এরা গত ২০ বছর এক সেকেন্ডের জন্যও তালেবানদের শান্তি দেয় নাই।
- এখানে বিদেশীরা যা চাচছে তা তাদের লোকই চাচছে যারা তাদের চাটুকার এবং যাদের দিয়ে তাদের স্বার্থ রক্ষা হবে। এখানে নারী শিক্ষা-স্বাধীনতা এসব ফাকা বুলি । আর সারা দুনিয়াতেই তাই চলে আসছে স্বার্থের দ্বন্দ্বে ও স্বার্থের জন্য যে কোন কিছুই করে ফেলে মানুষ অবলীলায়। আর তা যদি রাষ্ট্রীয় ও ক্ষমতাশীলদের স্বার্থ তাহলেত কথাই নেই।
পৃথীবিতে যদি কোন সাহসী, আর আত্ববিশ্বাসী জাতি থাকে তাহলে সেটা আফগান তালেবানরা, চিন্তা করেন তো খালি হাত, ছেড়া জুতা, ক্ষুদার্থ পেটে পৃথীবির সবগুলো সুপার পাওয়ারের (বৃটিশ, রাশিয়া, ন্যাটো আমেরিকা) সাথে লড়াই করে নিজের দেশ কে মুক্ত করা কতটা কঠিন। এমন না যে পৃথীবির কোন দেশ বা মানুষ তালেবানদের সাহায্য করেছে। ২ লাখ তালেবান একদিকে আর সারা পৃথিবীর মানুষ একদিকে এবং আফগানিস্থানের মানুষরাও তালেবান বিরোধীছিল একটা বড় সময় জুড়ে। শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ওয়েপন ছাড়া এমন কোন অস্র্ নাই যা বৃটিশ, রাশিয়া, ন্যাটো আমেরিকা আফগানিস্তানে ব্যবহার করেনি তারপরও তালেবানদের শেষ করা যায়নি।
- আফগানরা আসলেই সাহসী জাতি।অবশ্য তারা এ সাহস অর্জন করেছে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহে।আর যখন দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে কোন জাতি ঝাপিয়ে পড়ে তকন তারা কি করতে পারে তার নজীর ত আমরাই।
ইউটিউবে আফগান যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ন্যাটোর এক আর্মি জেনেরালের ইন্টারভিউ দেখেছিলা। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন আপনারা মনে করেন ২০ বছর যুদ্ধ করার পরও তালেবানদের ধ্বংস করা সম্ভব না। তার উত্তরটা ছিল এরকম: you can't defeat those who think death as success।
- এটাই । যারা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে মনে প্রাণে লক্ষ্য ঠিক করে তা হাসিলের জন্য ঝাপিয়ে পড়ে তখন তা অর্জন হয়েই যায়, অজেয় থাকেনা । এটাই হয়েছে তালেবানদের ক্ষেত্রে।
পশ্চিমা আর আমেরিকা যারা সবসময় মানবতার গান গায়, তারা আফগান আর তালেবান ন্যাজ্য পাওনা টাকা আটকিয়ে রেখেছে। মগজে যারা পশ্চিমা দাসত্ব মেনে নিয়েছে, যারা পশ্চিমাদের নিজের প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছে তারা বলেছিল তালেবান ৬ মাস টিকতে পারবে না, আগামী ৬ মাস পরে আফগানিস্তানের অর্ধেক মানুষ না খেয়ে মারা যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এরকম কোন কিছুই হয়নি। হ্যাঁ তালেবানদের অনেক সমস্যা আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হল আইএস যারা বিভিন্ন মসজিদে হামলা চালায়। আইএস হল উগ্র আর ইসলাম বিরোধী একটি দল। তালেবান সময়ের সাথে সাথে সব সমস্যা কাটিয়ে উঠবে ইনসেআল্লাহ। আমি যদিও তাদের সব মতবাদের সাথে একমত নই।
- পশ্চিমাদের মানবতার বুলি হল তাদের স্বার্থ হাসিলের একটা উপায় । মানবতার নামে তারাই সারা দুনিয়ায় যুদ্ধের ফেরি করে অস্ত্র বেচে তাদের দেশ ও অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখে।
আর তালেবানদের সামনে যদিও সমস্যার পাহাড় , তারপরেও তারা তা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছে - এটা ঠিক। আর যে কোন ভাল কিছুর জন্য সময়ের কোন বিকল্প নেই । সময়ের সাথে সাথে প্রকৃতি অনেক কিছুই বদলে দেয় ও যায়। আর তাই আশা করা যায় , সময়ের সাথে সাথে তালেবানরাও সাফল্য ও পরিবর্তনে অভ্যস্ত হবে এবং আফগান জনগণ পাবে সুখের দেখা ও ভাল দিনের।
যা যাই বলুক আর যত শর্তিই দিক, তালেবানদের সাথে আর কোন জাতি পাঙ্গা নিতে আসবে না, পৃথিবীর সুপার পাওয়ারদের হারিয়ে তারা আজকের জায়গায় এসেছে।
- নিজেদের মাঝে অনৈক্য ও বিভেদ এড়িয়ে কাধে কাধ মিলিয়ে যখন তালেবানরা এগিয়ে যাবে তখন সাফল্য আসবেই ।তবে তাদেরকে সতর্কতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে এতটুকুই। তবে প্রাথমিক ধাককা যেহেতু কাটিয়ে উঠতে পেরেছে আশা করা যায় তারা টিকে যাবে দীর্ঘমেয়াদে।
আবারো ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:০৫
কামাল৮০ বলেছেন: তারা শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট।কোরান হাদিসের কোথায় লেখা আছে অন্য দেশের স্বীকৃতি লাগবে।গৃহযুদ্ধ এখনো শেষ হয় নাই।এটা হবে আরেকটা ইয়েমেন বা পেলেষ্টাইন।
১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:১৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল ৮০ ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।
তারা শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট।
- এটা দোষের কিন কিছু নয় ভাইজান। যে কোন জাতিরই অধিকার আছে নিজেদের পছন্দমত জীবন প্রণালী বেছে নেয়ার এবং সে অনুযায়ী জীবনে চলার।
কোরান হাদিসের কোথায় লেখা আছে অন্য দেশের স্বীকৃতি লাগবে।
- আল কোরআন ও হাদীসে এ ব্যাপারে অনেক উপদেশ ও নিষেধ আছে। আল কোরআন ও হাদীস অধ্যয়ণ করলে এ ব্যাপারে বিশদ পাবেন । তবে ,এখানে স্বল্প পরিসরে সে আলোচনা সম্ভব নয়।
গৃহযুদ্ধ এখনো শেষ হয় নাই।এটা হবে আরেকটা ইয়েমেন বা পেলেষ্টাইন।
- ভাই , আফগানে যা এতদিন চলেছে এবং এখনো চলছে তা গৃহযুদ্ধ নয় এ সাম্রাজ্যবাদীদের লোভের ফসল। আর ইয়েমেন কিংবা প্যালেষ্টাইন কি নিজেরা নিজেদের সমস্যা তৈরী করেছে না অন্যের স্বার্থের বলী হয়েছে?
৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:৪৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খাদ্য, চিকিৎসা আর জীবনের নিরপত্তা থাকলেই চলবে। ওদের চাহিদা কম। ওদের দেশের সাধারণ জনগণের চলার মত আয় রোজগার আছে কি? বেকারত্ব কেমন? আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলি নিরপেক্ষ না। তাই সঠিক খবর পাওয়া কঠিন। আমি আপনার কাছে জেনুইন খবর চাচ্ছি ওদের দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা সংক্রান্ত আর্থসামাজিক বিষয়ে।
১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশকেও স্বীকৃতি অর্জনের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে অ্যামেরিকা বাংলাদেশের বিজয় ভালোভাবে নেয়নি এবং বিভিন্নভাবে আমাদের শত্রুদের সাহায্য করেছে। আফগানিস্তান ওরা ছেড়েছে, আর কোন পথ ছিল না বলে। তাই আফগানিস্তানকে ধ্বংস করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অ্যামেরিকা ও তার দোসররা করবে।
আফগানিস্তানের সমস্যা ওদের দেশের ভিতরে না। সমস্যা হোল আন্তর্জাতিক মহল যারা যে কোন মূল্যে আফগানিস্তানকে ধ্বংস করবে বলে পণ করেছে।
২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:৫৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দেরিতে জবাব দেবার জন্য দুঃখিত ।
খাদ্য, চিকিৎসা আর জীবনের নিরপত্তা থাকলেই চলবে। ওদের চাহিদা কম।
-এটা আপনি একদম সঠিক বলেছেন। আর গরীব দেশের গরীব মানুষের চাহিদা এমনিতে কমই থাকে।
দের দেশের সাধারণ জনগণের চলার মত আয় রোজগার আছে কি? বেকারত্ব কেমন? আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলি নিরপেক্ষ না। তাই সঠিক খবর পাওয়া কঠিন। আমি আপনার কাছে জেনুইন খবর চাচ্ছি ওদের দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা সংক্রান্ত আর্থসামাজিক বিষয়ে।
-- আসলে আফগানদের তাদের ভূপ্রতির রুক্ষতার ( পাহাড়-পর্বত, পাথুরে জমি,মরুপ্রবণ আবহাওয়া,কম বৃষ্টিপাত) আধুনিক শিল্প কল-কারখানার অভাবে সেভাবে/ব্যাপক ভাবে কর্মের সুযোগ নেই । যতটুকু আছে তা শুধু চাষাবাস তাও আবার সব ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন সম্ভব নয় বা হয়না। আর তাই সকল মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন খুবই কঠিন তাদের জন্য। তবে পরিবর্তন যে একেবারেই সম্ভবনা এমন নয় তবে তা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করবে ও সময় সাপেক্ষে।
১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশকেও স্বীকৃতি অর্জনের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে অ্যামেরিকা বাংলাদেশের বিজয় ভালোভাবে নেয়নি এবং বিভিন্নভাবে আমাদের শত্রুদের সাহায্য করেছে। আফগানিস্তান ওরা ছেড়েছে, আর কোন পথ ছিল না বলে। তাই আফগানিস্তানকে ধ্বংস করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অ্যামেরিকা ও তার দোসররা করবে।
- সমস্যা এখানেই । যে কোন ভাল কিছু অর্জনের জন্য সময়ের সাথে সাথে ধৈর্য্য ধারন ও পরিশ্রম করতে হয়। দেশের পরিচালক (সরকারকে) দেরকে নিতে হয় দূরদর্শী ও বাস্তবমূখী সিদ্ধান্ত এবং দেশের সকল নাগরিক (নর-নারী) দেরকে কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হয় দেশ বির্নিমাণে । এর জন্য সকলের সাথে ভাল সম্পর্কের কোন বিকল্প নেই।
আর ছেড়ে যাওয়া দখলদাররা সবসময়ই চায় যাদের কাছে হেরে গেছে তারা যেন সাফল্য লাভ না করে। তাদের ধ্বংস বা হারানোর জন্য তাদের চেষ্টার কোন কমতি থাকবেনা এটাও ঠিক । আর তাইতো তালেবানদের খুবই সর্তকতার সাথে এগুতে হবে।
আফগানিস্তানের সমস্যা ওদের দেশের ভিতরে না। সমস্যা হোল আন্তর্জাতিক মহল যারা যে কোন মূল্যে আফগানিস্তানকে ধ্বংস করবে বলে পণ করেছে।
- এটাও আপনি ঠিক বলেছেন। কম চাহিদা স্বাভাবিক ভাবেই অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়। আর আফগানদের এখন জনগনের চাহিদা পূরণ থেকে বেশী যে সমস্যার মোকাবিলা করতে হচছে-হবে তা হলো দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র । এ সব দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র যদি ভালভাবে সামাল দিতে পারে তাহলে সাফল্য আসবেই । না হলেই বিপদ।
৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:২৮
শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ। বিষয়টা অফটপিক তাই এখানে আলোচনাটা সমীচীন নয় বলে ছোট্ট করে শেষ করছি। দু'একদিনের মধ্যে শেষ পর্ব আসবে। সেখানেই তার বিষয়ে বেশ খানিকটা জানতে পারবেন। শুভরাত্রি- ভাল থাকবেন।
১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:২৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সাথে সাথে কৃতজ্ঞতা রইলো শেরজা তপন ভাই,আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য।
অপেক্ষায় ----------------------
সেই পর্যন্ত আপনিও ভাল থাকবেন - শুভরাত্রি।
৯| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৭:২৭
তানভির জুমার বলেছেন: তালেবানদের কিছু দৃষ্টান্ত পৃথিবীর বুকে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যেমন: গত বিশ বছর যারা তালেবানদের কচুকাটা করেছে তাদেরকে হাতের কাছে পেয়েও কিছু করেনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছে। তালেবানদের যে কি ভয়ানক নির্যাতন করে হত্যা করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না।
১) এরকম শত শত ফ্যামেলী আছে যাদের সুধু মা বেচে আছে ৩ ভাই, বোন, বাবা সবাই যুদ্ধে শহীদ হয়েছে।
২) আবার কিছু ফ্যামেলী শুধু তালেবান যুদ্ধা বেচে আছে ফ্যামেলীর অন্য সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। এই কারণে যে কেন তার ছেলে তালেবানদের সাথে যোগ দিয়েছে।
৩) ক্যারাবাইন অফ ডেথ নামে ইউটিউবে তালেবান যুদ্ধাদের হত্যা করার সিরিজ ভিডিও আছে। ২০০১ যখন তালেবান ক্ষমতাচুত্য হয় তখন তালেবান যুদ্ধাদের হাতে ভারী মানের অনেক আধুনিক অস্র ছি. আব্দুর রশিদ দুস্তম শর্ত দেয় যদি তালেবান যুদ্ধারা তাদের অস্রসহ আত্বসমর্থন করে তাহলে তাদের কে সাধারণ ক্ষমার আয়তায় ছেড়া দেওয়া হবে। লিডারবিহীন সরলমনা তালেবান যুদ্ধারা দুস্তম কে বিশ্বাস করে আত্বসমর্থন করে। তারপর কুখ্যাত দুস্তম উক্ত প্রায় ৭-১০ হাজার তালেবান যুদ্ধাদের ন্যাটো বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। ন্যাটো বাহিনী এই ৭-১০ হাজার তালেবান যুদ্ধাদের কিভাবে হত্যা করেছিল তা কোন সভ্য মানুষ চিন্তাও করতে পারবে না।
তালেবানরা চেষ্টা করতেছে ভালো কিছু করার জন্য বিবিসির এই ভিডিওতে আছে. যদিও মিডিয়া সত্যের সাথে মিথ্যা কে মিশ্রন করে খবর প্রকাশ করে.
২০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ তানভির জুমার ভাই,আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য এবং দেরিতে জবাব দেবার জন্য দুঃখিত ।
তালেবানদের কিছু দৃষ্টান্ত পৃথিবীর বুকে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যেমন: গত বিশ বছর যারা তালেবানদের কচুকাটা করেছে তাদেরকে হাতের কাছে পেয়েও কিছু করেনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছে। তালেবানদের যে কি ভয়ানক নির্যাতন করে হত্যা করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত
-"তুমি অধম তাই বলিয়া আমি কি উত্তম হবোনা" - আর তাইতো তালেবানরা সুযোগ পেয়েও সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছে এবং তারা দুনিয়াবাসীর ভাল উদাহরণ স্থাপন করেছেন। এটা যে ভাল তা তালেবান বিরোধীরা সরাসরি না বললেও মনে মনে ঠিকই বলে বা জানে।
১) এরকম শত শত ফ্যামেলী আছে যাদের সুধু মা বেচে আছে ৩ ভাই, বোন, বাবা সবাই যুদ্ধে শহীদ হয়েছে।
২) আবার কিছু ফ্যামেলী শুধু তালেবান যুদ্ধা বেচে আছে ফ্যামেলীর অন্য সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। এই কারণে যে কেন তার ছেলে তালেবানদের সাথে যোগ দিয়েছে।
- দীর্ঘ সময়ের দখলদারীদের শাসনামলে তার যে ভূগেছে এবং সবাই যে কম বেশী আপনজন হারিয়েছে তা যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যার দিকে তাকালেই বুঝা যায়।তবে সকল যুদ্ধই এমন -অকারণে প্রাণহানী ও সম্পদের অপচয়।
৩) ক্যারাবাইন অফ ডেথ নামে ইউটিউবে তালেবান যুদ্ধাদের হত্যা করার সিরিজ ভিডিও আছে। ২০০১ যখন তালেবান ক্ষমতাচুত্য হয় তখন তালেবান যুদ্ধাদের হাতে ভারী মানের অনেক আধুনিক অস্র ছি. আব্দুর রশিদ দুস্তম শর্ত দেয় যদি তালেবান যুদ্ধারা তাদের অস্রসহ আত্বসমর্থন করে তাহলে তাদের কে সাধারণ ক্ষমার আয়তায় ছেড়া দেওয়া হবে। লিডারবিহীন সরলমনা তালেবান যুদ্ধারা দুস্তম কে বিশ্বাস করে আত্বসমর্থন করে। তারপর কুখ্যাত দুস্তম উক্ত প্রায় ৭-১০ হাজার তালেবান যুদ্ধাদের ন্যাটো বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। ন্যাটো বাহিনী এই ৭-১০ হাজার তালেবান যুদ্ধাদের কিভাবে হত্যা করেছিল তা কোন সভ্য মানুষ চিন্তাও করতে পারবে না।
- আসলে ভাইজান, দুনিয়ার ইতিহাস এমনই । আর রাজা-বাদশা-ক্ষমতাসীনরা অহরহ তাদের দেয়া ওয়াদা ভংগ করে নিজেদের শাসন ক্ষমতা দৃঢ় করার জন্য এবং বিরোধী পক্ষকে দমনের জন্য। এরকম বিশ্বাসঘাতকতার নজীর সারা দুনিয়ায় অনেক আছে। কি আর করা । এই নিয়তি কারোর কারো সমাধিসৌধের উপরই কারোর কারোর ক্ষমতার সৌধ গড়ে উঠে।
তালেবানরা চেষ্টা করতেছে ভালো কিছু করার জন্য বিবিসির এই ভিডিওতে আছে. যদিও মিডিয়া সত্যের সাথে মিথ্যা কে মিশ্রন করে খবর প্রকাশ করে.
- তালেবানরা চেষ্টা করতেছে ভালো কিছু করার জন্য - এটা মিথ্যা নয় তবে বিপক্ষে যা বলে তার সব যেমন সত্যি নয় তেমনি পক্ষে যা বলে তার সবি সত্যি - এমনও নয়।
১০| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:৩০
ঢাবিয়ান বলেছেন: ভাল নেই তালেবানি জনগন। পশ্চিমাদের আগ্রাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে ঠিকই কিন্ত এখন গিয়ে পড়েছে কট্টর মৌলবাদীদের কবলে। নারী পুরুষ সমতা যদি কোন রাস্ট্রে না থাকে তাহলে সেই দেশের জনগন কোনভাবেই ভাল থাকতে পারে না।
২০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাবিয়ান ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দেরিতে জবাব দেবার জন্য দুঃখিত ।
ভাল নেই তালেবানি জনগন।
- আসলেই ভালো নেই আফগানরা। তবে , তারা যে তালেবানদের ১ বছরের শাসনামলে ভালো নেই এমনটাও নয় ভাইজান। তারা বিগত কয়েক যুগ ধরেই ভাল নেই দখলদারদের কল্যাণে।
পশ্চিমাদের আগ্রাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে ঠিকই কিন্ত এখন গিয়ে পড়েছে কট্টর মৌলবাদীদের কবলে।
- যদি বলা হয় ' জলে কুমির আর ডাংগায় বাঘের " মাঝে কোনটা বেশী ভয়ংকর ? তাহলে জবাব যেমন ভিন্ন ভিন্ন আংগিকে হবে ঠিক তেমনি পশ্চিমা ও তালেবানদের মাঝে কে সবচেয়ে বেশী খারাপ ? এর জবাব পশ্চিমা সুবিধাবাদীদের যেমন হবে তেমন টা আবার সাধারন আফগান বাসীর হবেনা । তবে এটাও ঠিক,পশ্চিমাদের আমলে যেভাবে পাখীর মত ঝাকে ঝাকে মানুষ মরত এবং যতটা সহিংসতা ছিল তালেবানদের আমলে তা অনেকটাই কমেছে,। আর বাকী সব কিছু ভাল হতে/করতে কিছুটা সময় তালেবানদের যেমন দিতে হবে ঠিক তেমনি জনগনকেও ত্যাগ করতে হবে।
নারী পুরুষ সমতা যদি কোন রাস্ট্রে না থাকে তাহলে সেই দেশের জনগন কোনভাবেই ভাল থাকতে পারে না।
- একটা দেশের ভাল কিছু করার জন্য নর-নারী উভয়ের অংশগ্রহণ জরুরী। যে কোন দেশের অর্ধেক অংশই থাকে নারী। আর একটা দেশের অর্ধেক অংশকে সব কিছু থেকে আলাদা করে রেখে ভাল কিছুর আশা করা বোকামী। এ ব্যাপারে তালেবানদের অনেক কিছু করার ও ভাবার আছে। আর যত তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে ভাববে ও করবে তত তাড়াতাড়িই সমস্যার সমাধান মিলবে।
১১| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:১৭
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ভাল নেই আফগান জনগন। দখলদার তালেবান নিজেদের মধেই যুদ্ধ চলছে।
পাকিস্তানের মত ভিন্নমতের মসজিদে বোমা ফাটিয়ে রক্তগঙ্গা বইছেই।
তালেবান কমান্ডার মৌলভি মাহদি মুজাহিদ কে গতকাল খতম করা হল।
মাহদি ছিলেন আফগানিস্তানের 'হাজারা মুসলিম' গোষ্টির তালেবান কমান্ডার,
শুরু থেকে তালেবানের সাথে যুক্ত থেকে ১৩ বছর আগে মাহদি তালেবানের গুরত্বপুর্ন পদে যুক্ত হন। তখন আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনী অবস্থান করছিল। আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে রিপাবলিকান পার্টির পতনে মাহদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
গত বছরের আগষ্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ক্ষমতা দখলের প্রায় ১০ মাস পর গোষ্ঠীটির সংগে মাহদির বিতর্ক বিতন্ডা শৃষ্টি হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মাহদি তালেবান সরকারে 'হাজারা মুসলিম' সম্প্রদায়ের অধিক অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন। কিন্তু তালেবান নেতারা তাঁর দাবি উপেক্ষা করেন।
তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়,
"মাহদি একজন অসন্তুষ্ট তালেবান কমান্ডার ছিলেন। তিনি পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশ দিয়ে ইরানে যাওয়ার পথে তিনি তালেবান সীমান্ত বাহিনীর হাতে নিহত হন"। (প্রথম আলো)
২১ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান কালবৈশাখী ভাই,আপনার তথ্যবহুল মন্তব্যের জন্য এবং দেরিতে জবাব দেবার জন্য দুঃখিত ।
ভাল নেই আফগান জনগন। দখলদার তালেবান নিজেদের মধেই যুদ্ধ চলছে। পাকিস্তানের মত ভিন্নমতের মসজিদে বোমা ফাটিয়ে রক্তগঙ্গা বইছেই।
- আসলেই ভাল নেই আফগান জনগন।তবে তালেবানদের দখলদার বলা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারন, তারা বাহিরের কোন দেশ থেকে আফগানে যায়নি। তারা আফগানেরই জনগণ যারা দেশের বহিরাগত দখলদারদের তাড়িয়ে নিজেরা নিজেদের দেশ গঠনের চেষ্টা করছে। আর এখন আফগানে যা হচছে তা হলো আইএস রা তালেবানদের ব্যর্থ করার জন্য দেশজুড়ে বোমা হামলা চালাচছে ( এটা আমার অভিমত, বাস্তবতা ভিন্নও হতে পারে)।
তালেবান কমান্ডার মৌলভি মাহদি মুজাহিদ কে গতকাল খতম করা হল।মাহদি ছিলেন আফগানিস্তানের 'হাজারা মুসলিম' গোষ্টির তালেবান কমান্ডার,শুরু থেকে তালেবানের সাথে যুক্ত থেকে ১৩ বছর আগে মাহদি তালেবানের গুরত্বপুর্ন পদে যুক্ত হন। তখন আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনী অবস্থান করছিল। আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে রিপাবলিকান পার্টির পতনে মাহদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
গত বছরের আগষ্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ক্ষমতা দখলের প্রায় ১০ মাস পর গোষ্ঠীটির সংগে মাহদির বিতর্ক বিতন্ডা শৃষ্টি হয়।স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মাহদি তালেবান সরকারে 'হাজারা মুসলিম' সম্প্রদায়ের অধিক অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন। কিন্তু তালেবান নেতারা তাঁর দাবি উপেক্ষা করেন।
তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, "মাহদি একজন অসন্তুষ্ট তালেবান কমান্ডার ছিলেন। তিনি পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশ দিয়ে ইরানে যাওয়ার পথে তিনি তালেবান সীমান্ত বাহিনীর হাতে নিহত হন"। (প্রথম আলো)
- একেই মতের ও পক্ষের মানুষের বিরোধী পক্ষে থাকা ও ক্ষমতায় থাকা কালীন সময়ের ভূমিকা ভিন্ন রকম হতে পারে এবং ক্ষমতায় থাকার সময়ই স্বার্থের সংঘাত বেশী দেখা দেয় সমমনাদের মাঝেও। আর স্বার্থের দ্বন্দ্বে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যা সাধারণতঃ ঘটার কথা নয় । তা শুধু আফগান কিংবা তালেবানদের মাঝেই হয় এমন নয় বরং এরকমটা সারা দুনিয়াতেই দেখা যায়।
১২| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৭
শাহনেওয়াজ আলম বলেছেন: শরিয়া আইন ইসলামি আইন এগুলা নাম মাত্র
এই মুর্খ গুলাকে অন্যান্য দেশ গুলা অস্ত্র দিয়ে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টায় আছে
২১ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৫৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শাহনেওয়াজ আলম ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দেরিতে জবাব দেবার জন্য দুঃখিত ।
শরিয়া আইন ইসলামি আইন এগুলা নাম মাত্র । এই মুর্খ গুলাকে অন্যান্য দেশ গুলা অস্ত্র দিয়ে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টায় আছে
- সারা দুনিয়াতেই আছে এরকম ঘটনা ক্ষমতা ও স্বার্থের দ্বন্দ্বে। যেখানে ভাইকে ভাইয়ের পিছনে লাগিয়েও স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে মানুষ সেখানে এগুলো সাধারন ব্যাপার।
তবে তাদেরকে সর্তকতার দেশ পরিচালনা করতে হবে এবং যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আগ-পিছ ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে । আবেগের বশে যে কোন সিদ্ধান্ত তাদেরকে যেমন বিপদে ফেলবে ঠিক তেমনি আফগান জনগনের ভোগান্তীকেও দীর্ঘায়িত করবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৩
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আফগানিস্তানে নামাযও শান্তিতে পড়া যায় না, মসজিদে বোমা হামলা হয়।