নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - businessinsider.in
"ফিলিস্তিন সমস্যা" - সমাধান কোন পথে কত দূর? - লিংক - Click This Link
পশ্চিমা নানা হুমকি-ধামকি-অনুরোধ উপেক্ষা করে ও সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এবং ইউক্রেনকে নিরস্র ও আমেরিকা-ইউরোপের প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে মিসাইল ছুড়ে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরু করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইতিপূর্বে,পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকেই ওই অঞ্চলে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং তাদের রক্ষায় সেনা প্রেরনের ঘোষনায় যুদ্ধ শুধু সময়ের অপেক্ষার বিষয় হয়ে দাড়ায়। অবশেষে, ২৪ ফেব্রুয়ারি-২২, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মিসাইল ছুঁড়ে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া এবং প্রায় ৮ মাসে রাশিয়া ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝজিয়ার এক পঞ্চমাংশ ভূমি দখল করে এবং দখলকৃত এলাকাগুলোকে রাশিয়ার সাথে চিরস্থায়ীভাবে সংযুক্তির জন্য এক গণভোটের আয়োজন করেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলোতে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে , সে গণভোট থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গিয়েছে যে সেখানকার ব্যাপক সংখ্যক মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেবার পক্ষে তাদের মত দিয়েছে। লুহানস্ক-দোনেৎস্ক-খেরসন ও জাপোরিঝজিয়ার অঞ্চলের নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে যে ৯০ শতাংশের বেশী মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেবার পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর সেই গণভোটের ফলাফলে ভিত্তি করে পুতিন সেই এলাকাগুলোকে রাশিয়ার সাথে চিরস্থায়ীভাবে সংযুক্তি করে ডিক্রি জারি করেছেন। অর্থ্যাৎ, এ এলাকাগুলো এখন থেকে রাশিয়ার ভূমি বলে বিবেচিত হবে এবং এসব এলাকার নাগরিকরা রাশিয়ার নাগরিকদের মত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। তবে, এই গণভোটকে 'জালিয়াতি' আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলো।
পুতিন লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝজিয়া গণভোট নিয়ে চারটি ইউক্রেনের অঞ্চলকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্তির ঘোষণা দিয়ে তার ভাষণে বলেন, " চারটি অঞ্চলের লোকজন চিরদিনের জন্য রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত থাকবে। তাদের নাগরিকরা রাশিয়ার নাগরিকে রূপান্তরিত হবে ও সবাই একই রকম সুযোগ সুবিধা পাবে এবং চারটি এলাকাকে রাশিয়ার ‘নতুন অঞ্চল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পুতিন জনগণের গণতান্ত্রিক ইচ্ছার প্রতিফলনের জন্য গণভোটের আয়োজন করেছেন এবং ইউক্রেনের সাথে আলোচনার আহ্বানও জানিয়েছেন"। তার এই সংযুক্তিকরণ নিয়ে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গেছে এবং এর বিপক্ষে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন দেশ-সরকার নানা প্রতিক্রিয়া দেখাচছে এবং এ দখলদারী মেনে নেয়া হবেনা বলছেন।
রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝজিয়া দখলে জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
১। জাতিসঙ্ঘের প্রতিক্রিয়া - জাতিসঙ্ঘ রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝজিয়া দখল ও রাশিয়ার সাথে এই ভূমি সংযুক্তিকরণের আদেশকে অবৈধ বলেছেন। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই সংযুক্তিকরণের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, "এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন "। জাতিসঙ্ঘ সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধে এটিকে বড় বিপজ্জনক মোড় বলেও অভিহিত করেছেন। গুতেরেস আরো পরিষ্কারভাবে বলেন,"হুমকি বা বল প্রয়োগের ফলে অন্য রাষ্ট্রের কোনো ভূখণ্ডের যেকোনো সংযুক্তি জাতিসঙ্ঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন"।
২। আমেরিকার প্রতিক্রিয়া - পুতিনের এই ভূমি সংযুক্তিকরণকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন "প্রতারণামূলক ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ" করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "রাশিয়া আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে, জাতিসঙ্ঘের সনদ পদদলিত করছে এবং সর্বত্র শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে"। তিনি আরো বলেন, " যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্তের প্রতি সম্মান জানাবে"।
৩। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া - পুতিনের এই ভূমি সংযুক্তিকরণের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে,"ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝজিয়া ও খেরসন অঞ্চল রাশিয়ার অবৈধ সংযুক্তির বিষয়টি আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই"।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো আরো দাবি করেছে," এই পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাশিয়া বৈশ্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তারা মস্কোকে "ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা হ্রাস করার ও স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য ইউক্রেনের মৌলিক অধিকার, জাতিসঙ্ঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনে বর্ণিত মূল নীতিগুলো লঙ্ঘন করার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন"। ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেন, "রাশিয়ান আক্রমণকারীদের অবৈধভাবে দখল করা সমস্ত অঞ্চল ইউক্রেনের ভূমি ও সর্বদা এই সার্বভৌম জাতির অংশ হিসেবেই পরিগণিত হবে"। তিনি আরো বলেন,"আমি আনন্দিত যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এমন একটি নিপীড়নমূলক রাষ্ট্র বা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে যা অন্যের স্বার্থের ক্ষতি করে এবং তাদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকারকে হ্রাস করে"।
জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের এতসব প্রতিক্রিয়া দেখে বাকী সবার মনে স্বভাবতই যে প্রশ্ন আসে , তা হলো - " রাশিয়ার যদি অন্যের জমি দখল করা এতই অপরাধমূলক হয় তবে ইসরাইল যে দিন দিন ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করে তাদের ভূমি দখল করে নিচছে, বসতি নির্মাণ করছে, সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে রেখেছে" - সে বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা জগৎ?
ছবি - sadaka.ie
কেন ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করার সুযোগ পাচ্ছে?
ইসরাইল রাষ্ট্রটি গঠিত হয়েছে মুসলমানদের জমি কেড়ে নিয়ে। আর এই দুষ্কর্ম টা শুর করেছিল ব্রিটিশরা। বৃটিশরা ইউরোপ থেকে মার খাওয়া ইহুদীদের জন্য জায়গা বরাদ্ধ করে দিল ফিলিস্তিনে। থিউডরের স্বপ্নের সেই দেশ প্রতিষ্ঠিত হলো ফিলিস্তিনীদের রক্তের উপর। লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হলো,ঘরবাড়ী এবং জীবন হারালো। ইসরাইল তৈরী হবার আগে পুরো দেশটাই ছিল প্যালেস্টাইন। কিছু আরব ইহুদী আছে, যারা আগে থেকেই ফিলিস্তিনে ছিল। আর কিছু অন্যান্য আরব দেশ থেকে এসেছে। এদেরকে বলা হয় মিজরাহি জিউশ। হিস্পানিক কিছু জিউশ আছে। তবে এলিট শ্রেণী হচ্ছে - আশকেনাজি জিউশ। এরাই মূলত জার্মান আর ফ্রান্স থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিলিস্তিনীদের জমি দখল করেছে। জোর করে মুসলিম অধিবাসীদের উচ্ছেদ করে সেখানে জার্মানি থেকে আগত উদ্বাস্তু ইহুদীদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়। ইজরায়েলে যারা শাসন করে তারা মূলত ইউরোপীয় ইহুদী। এদেরকে বলা হয় আশকেনাজি জিউশ। এরা ইউরোপ থেকে এসে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে গেঁড়ে বসা ইহুদী। এরা অসম্ভব উগ্র, জেনোফোবিক এবং ধণী। ইসরায়েলের এলিট শ্রেণী হচ্ছে এরা। এদের কালচারের সাথে আরব ইহুদীদের কালচার কোনোভাবেই মিলেনা। ধর্মীয় দেশ দাবী করলেও ইসরাইল মূলত কোনো ইহুদী দেশ নয়, এটা একটা জায়োনিস্ট দেশ। সহজ ভাষায় বললে- জায়োনিজম হচ্ছে ইহুদী জাতীয়তাবাদের একটি পলিটিক্যাল টার্ম। জায়োনিস্ট হওয়ার জন্য ইহুদী হওয়া শর্ত নয়। অর্থাৎ ইহুদী নন এমন ব্যক্তিরাও জায়োনিস্ট হতে পারেন। আবার ইহুদী মানেও জায়োনিস্ট নয়। জায়োনিজমকে বাংলায় ইহুদীবাদ বলা হয়। হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদ যেমন এক নয়, অনেকটা সেরকম। ইহুদী ধর্মকে বলা হয় জুদাইজম। তো জায়নবাদের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে স্টেট অব ইসরাইলের জাতির পিতা থিউডর হার্ৎজেল। যার স্বপ্ন ছিল তার মুভমেন্টের সমর্থক ইহুদীদের জন্য আলাদা একটা দেশ হবে এবং সেটা হবে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে। অবশ্য সে তার জীবদ্দশায় ইসরাইল দেখে যেতে পারেন নাই।
প্রথমে ইহুদীদের সাথে মুসলিমদের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। পরে যখন দলে দলে ইহুদীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইসরাইল আস্তে শুরু করলো তখনই ঝামেলা শুরু হলো।মুসলিমরা নিজেদের বাসভূমি থেকে উৎখাত হতে লাগলো। ফলে ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে প্যালেস্টানিরা নিজের বাস্তভূমির জন্য। ইসরাইল এই সশস্ত্র আন্দোলন দমনের নামে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে।অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পায়।প্যালেস্টাইন দেশটা চলে বিদেশী সাহায্যে,তার নিজস্ব কোনো সামরিক বাহিনী নেই। ফিলিস্তিনীদের সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ ফোর্স রাখারও অনুমতি নাই। ফিলিস্তিনী সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটা বাহিনী আছে, তাদেরও ভারী কোনো অস্ত্র রাখার অনুমতি নাই। হামাসের সামরিক বাহিনী আছে নগণ্য মাত্রায়। ইসরাইল হলো খুব শক্তিশালী রাষ্ট্র তারা ১৯৬৭ সালের আরব ইসরাইল যুদ্ধে আরবদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে যার ফলে এখন কোন আরব রাষ্ট্রও আর ফিলিস্তিনীদের পক্ষে জোরালোভাবে কিছু বলেনা।সারা দুনিয়ার সকলেরই ইসরাইলকে নিয়ে ভয় আছে কেউ তাকে বাধ্যকরতে কিছু বলেনা এবং তাদের বিপরীতে নেয়না কোন পদক্ষেপ। আর তাইতো ফিলিস্তিনীরা প্রতিনিয়ত মার খাচ্ছে ইসরাইলের হাতে , হারাচছে তাদের ভূমি অথচ কেউ তাদের সাহায্য করছেনা।
ইসরাইল শুরু থেকেই বৃটিশ এবং আমেরিকানদের প্রত্যক্ষ সাপোর্ট পেয়ে আসছে। আরব ইসরাইল যুদ্ধে আমেরিকান সৈন্যরা ইসরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছে বলেও বলা হয়। এখনো যখন ইসরায়েল ফিলিস্তিনীদেরকে হত্যা করে, নারী-শিশুদেরও হত্যা করে, ধরে নিয়ে যায় এ নিয়ে জাতিসংঘ ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব আনলে আমেরিকা ভেটো দিয়ে সরাসরি ইজরাইলকে রক্ষা করে।জাতিসংঘের আইন, আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার, যুদ্ধাপরাধ আইন সব কিছুই তারা নিয়মিত লংঘন করে। কিন্তু তাতে তাদের কোনো কিছুই হয় না,কারণ আমেরিকা আছে। তারা প্রকাশ্যেই ইসরাইলকে রক্ষা করে নেয়, একদম নগ্নভাবে। সারা দুনিয়ায় ইসরাইলই একমাত্র রাষ্ট্র যার কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই। কারণ, তারা প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে চলেছে। তাছাড়া, ইহুদীদের জন্য ঘরবাড়ী বানানোর জন্য যে টাকা খরচ হয়, তার জন্যও আমেরিকা থেকে সরকারী এবং বেসরকারিভাবে টাকা আসে। আবার আমেরিকা প্রতিবছর ইসরাইলের জন্য প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়। পশ্চিমের দেশগুলোতে ইসরাইলীদের জন্য ভিসা প্রায় ফ্রী। নামী দামী ইউনিভার্সিটি গুলোতে তারা স্কলারশিপ পায়। এর বাইরে আবার প্রায় সব বড় বড় কোম্পানীর বিলিয়ন ডলারের ইনভেস্টমেন্ট আছে ইসরাইলে। তারা শিক্ষাখাতে ইনভেস্ট করে, গবেষণা খাতে ইনভেস্ট করে, ট্যুরিজম খাতে ইনভেস্ট করে। ইসরাইলীরা পৃথিবীর ১৬০টি দেশে প্রায় ভিসা ফ্রী ঘুরতে পারলেও ফিলিস্তিনীরা নিজের দেশেই এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যেতে ইসরাইল থেকে অনুমতি নিতে হয়। ফিলিস্তিনের গাযা উপত্যকা থেকে যদি কেউ ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে যেত চায়, তাহলে অনেকদিন আগে তার জন্য আবেদন করতে হয়। তাও ৯০% ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া যায় না, তাদের জিজ্ঞাবাদে ইসরাইল প্রশাসন সন্তুষ্ট হলেই কেবল অনুমতি দেয়া হয়।
প্রায় চার বিলিয়ন ডলার বার্ষিক সামরিক সহায়তা, বিলিয়ন ডলারের শিক্ষা এবং রিসার্চের ইনভেস্টমেন্ট, প্রায় ভিসা ফ্রী ট্রাভেল, নামী ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের একনিষ্ঠ সাপোর্ট এত কিছু পাওয়া ইসরাইল তাই নির্বিচারে ফিলিস্তিনের হত্যা করে এবং বিনা বাধায় ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে।
ছবি - বিবিসি
ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনি দখলের ধারাবাহিকতা -
১৯৬৭ সালে ইসরাইল ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুসালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা স্ট্রিপ দখল করে নেয়, সিরিয়ার গোলান হাইটস ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপও দখল করে। পশ্চিম তীর ও গাজা স্ট্রিপ দখল করার সাথে সাথেই ইসরাইল জেরুসালেমের পৌর সীমানায় পশ্চিম তীরের বিরাট অংশ সংযুক্ত করে এবং তাদের আইন-কানুন বলবৎ করে।
ছবি - thinc.info
১। সিরিয়ার গোলান হাইটস দখল - ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান মালভূমি এলাকা দখল করে নিয়েছিল - তা আর ফেরত দেয়া হবে না, বলেছিলেন ইসরায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, "কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই 'গোলান হাইটস' বা গোলান মালভূমি এলাকা সবসময় ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে"। দখলকৃত গোলান হাইটসে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলী মন্ত্রীসভার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আমলে।বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যে, " গোলান মালভূমি ইসরায়েলের অংশ - বিশ্বে এ বার্তা দেয়া"। সেখানে নেতানিয়াহু বলেন, " গোলান চিরদিনের জন্য ইসরায়েলের অংশ হয়ে থাকবে। ইসরায়েল কখনই গোলান ছেড়ে যাবেনা"। তবে আন্তর্জাতিক মহল কখনই ইসরায়েলের এই দাবির স্বীকৃতি দেয়নি এবং গোলানকে ইসরাইলী দখল থেকে মুক্ত করতে কোন পদক্ষেপও নেয়নি।
২। মিসরের সিনাই উপদ্বীপ - ১৯৬৭ সালের জুনে সংঘটিত আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী মিসরকে পরাজিত করে এবং মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করে নেয়। পরে মিসর ইসরায়েলের সাথে এক শান্তি চুক্তি করে সিনাই উপদ্বীপ ফেরত পায়।
৩। ইসরাইলের ফিলিস্তিন দখল - মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন নামের যে এলাকা, একসময় সেটি ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বৃটেন সহ পশ্চিমা বিশ্ব সেখানে এক ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এক নীল নকশা তৈরী করে।এর ফলে উনিশশো বিশ থেকে ১৯৪০ দশকের মধ্যে ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে যেতে শুরু করে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ইউরোপে ইহুদী নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়ংকর ইহুদী নিধনযজ্ঞের পর সেখান থেকে পালিয়ে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে জড়ো হতে থাকে এবং সেখানে নতুন এক মাতৃভূমি (ইহুদী রাষ্ট্র ) তৈরির স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। উনিশশো সাতচল্লিশ সালে জাতিসংঘে এক ভোটাভুটিতে আমেরিকা-পশ্চিমারা ফিলিস্তিনকে দুই টুকরো করে দুটি পৃথক ইহুদী এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হলো। জেরুজালেম থাকবে একটি আন্তর্জাতিক নগরী হিসেবে। ইহুদী নেতারা আমেরিকা-পশ্চিমাদের এই প্রস্তাব মেনে নেন, কিন্তু আরব নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। ব্রিটিশরা এই সমস্যার কোন সমাধান করতে ব্যর্থ হয়ে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ছাড়েন। এরপর ইহুদী নেতারা ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। জাতিসংঘের এই পরিকল্পনা (দ্বি-রাষ্ট্র) পরে আর কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি।
দু'পক্ষের মধ্যে যেহেতু কখনোই কোন শান্তি চুক্তি হয়নি, তাই উভয় পক্ষই অপর পক্ষকে দোষারোপ করতে থাকে। দুই পক্ষের মধ্যে পরের দশকগুলোতে এরপর আরও বহু যুদ্ধ হয়েছে। উনিশশো সাতষট্টি সালের যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীর অঞ্চল দখল করে নেয়। ইসরায়েল এখনো পশ্চিম তীর দখল করে আছে। গাযা থেকে তারা যদিও সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে এটি এখনো ইসরায়েলের দখলে থাকা একটি এলাকা এবং গত ৫০ বছর ধরে ইসরায়েল এসব দখলীকৃত জায়গায় একের পর এক ইহুদী বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে।।
ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুসালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা ও গোলান হাইটস দখলে জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
১। জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া - আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জাতিসঙ্ঘের প্রতি ইসরাইলের এই ভূমি দখল ও সংযুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলের পদক্ষেপগুলোকে অবৈধ অভিহিত করে প্রস্তাব পাস করার ও ইসরাইলকে প্রকল্পগুলো বাতিল করার আহ্বান জানায়। সে সময় জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলা হয়- "ইসরাইলের গৃহীত সব আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ, ভূমি ও সম্পত্তির দখল, জেরুসালেমে আইনি অবস্থার পরিবর্তন অবৈধ"। জেরুসালেমের ঐতিহাসিক অবস্থার পরিবর্তন সাধন করা ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক অপরাধ। কেন না, এটি হাজার হাজার নবী-রাসূলের শেষ অবস্থান এবং মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র নগরী। রয়েছে সব ধর্মের ও সবার ধর্মীয় অধিকার। তাই এককভাবে এই শহরের অবস্থার কোনো পরিবর্তন করার অধিকার ইহুদিদের নেই।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কখনোই জাতিসঙ্ঘে কোনো বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি শুধু নামমাত্র বিবৃতি ব্যতীত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ ধরনের দুর্বল প্রতিক্রিয়া ও আরব বিশ্বের নিষ্ক্রিয়তা ইসরাইলি পার্লামেন্টকে ১৯৮০ সালের ২৯ জুলাই দখলকৃত পূর্ব জেরুসালেম এবং ১৯৮১ সালে দখলকৃত গোলান হাইটস সংযুক্ত করতে উৎসাহিত করেছিল।
জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ গোলান হাইটসের সংযুক্তিকরণের নিন্দা জানিয়েছে, কিন্তু ইসরাইলকে এই পদক্ষেপ বাতিল করার জন্য চাপ দেয়ার মতো কিছুই করেনি। এটিও একটি কূটনৈতিক ভণ্ডামি। সবসময়ই দেখা গেছে, এ ধরনের কোনো নিন্দাবাদ বা নিষেধাজ্ঞার পরপর ইসরাইল আবারো একই অপরাধ করছে। সাংবাদিকরা বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর বন্ধ দরজার পেছনে ‘হাসি ও সম্মতি’ কাজ করে চলেছে এবং সংযুক্তিতে সমর্থন দিয়েছে।
২। আমেরিকার প্রতিক্রিয়া - আমেরিকা তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ইসরাইলের সকল কাজকর্ম তথা দখলদারিত্বকে শতভাগ সমর্থন জানিয়েছে যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে । ট্রাম্প ২০১৮ সালে অবৈধভাবে সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের জমি ইসরাইলের অধিগ্রহণের বৈধতা প্রদানের জন্য কুখ্যাত হয়ে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশকের নীতি থেকে সরে এসে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবং একতরফাভাবে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাসকে ইসরাইলের শাশ্বত ও ঐক্যবদ্ধ রাজধানী জেরুসালেমে স্থানান্তরিত করেছিলেন এবং গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন । এই প্রক্রিয়াটিতে আমেরিকার আগের সব প্রেসিডেন্ট অসম্মতি জানান এ জন্য যে, এর ফলে মুসলিম বিশ্বের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠবে। ট্রাম্প কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে এ কাজ করেন। ট্রাম্পের এ চালের পর দেখা গেল, আরব বিশ্বের অনেক দেশ এখন ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ-এর মধ্যে উন্নয়ন ও শান্তি খুঁজে পাচ্ছে।
৩। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া - ইউরোপীয়ান ইউনিয়নও সবসময়ই ইসরাইলের সকল কাজকর্ম তথা দখলদারিত্বকে শতভাগ সমর্থন জানিয়েছে যদিও মাঝে মাঝে তার বিরুদ্ধে লোক দেখানো কিছু বিবৃতি দিয়েছে ও দিয়ে থাকে তবে ইসরাইলকে বাধ্য করার মত কোন পদক্ষেপ কখনো গ্রহন করেনি। ইসরাইলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যখন দখলকৃত পশ্চিম তীর ও জর্দান উপত্যকা সংযুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নও সতর্ক করেছিল যে, এই ধরনের পদক্ষেপ সহিংসতা উসকে দেবে। অতি সম্প্রতি ১৫টি ইউরোপীয় দেশ ইসরাইলকে পশ্চিম তীরে আরো অবৈধ বসতি স্থাপনের কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেছে,"নতুন হাউজিং ইউনিটগুলো দুই-রাষ্ট্র সমাধানের পথে অতিরিক্ত বাধা তৈরি করবে"।
পূর্ব জেরুসালেমসহ পশ্চিম তীরকে আন্তর্জাতিক আইনে ‘দখলকৃত অঞ্চল’ হিসেবে দেখা হয়। ফলে সেখানকার সব ইহুদি বসতি অবৈধ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশির ভাগের মতো, ইইউ ১৯৬৭ সাল থেকে দখল করা অঞ্চলগুলোর ওপর ইসরাইলের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি। ২০০১ সাল থেকে, ইইউ বারবার ইসরাইলকে সব বসতি স্থাপন বন্ধ করতে ও বিদ্যমান বসতিগুলো ভেঙে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে।
ইইউ ইসরাইলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। তারা ঘোষণা দেয়, ইসরাইলি অবৈধ ভূমি দখলদারি প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য কূটনৈতিকভাবে অগ্রসর হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত সেরকম কিছুই দেখা যায়নি। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন কিয়েভ সফর করেছেন, আবার কিছু দিন আগে ইসরাইলও সফর করেছেন। ইসরাইলে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি জনগণকে বলির পাঁঠা করার বহু বছর ধরে চলে আসা হুমকিকে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে দেখছি। আমি জানি, ইসরাইল ইউক্রেনকে টন টন মানবিক সহায়তা ও একটি ফিল্ড হাসপাতাল দিয়ে সহায়তা করেছে এবং আপনি হাজার হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আপনার ভূমিতে স্বাগত জানিয়েছেন। রাশিয়ানরা একটি গণতান্ত্রিক ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘denazification’-এর ঘৃণ্য কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
"রাশিয়া-ইসরাইল " দুই দেশই দখলদার তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেন এরকম ভিন্ন প্রতিক্রিয়া
১। ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্বের কারনে আজ পর্যন্ত না কোনো দেশ না ইসরাইলের ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, না কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বরং পশ্চিমারা ইহুদিবাদী এ রাষ্ট্রকে নিঃশর্ত কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা অনেক রাষ্ট্রে ইসরাইলের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বয়কট, বিভাজন, নিষেধাজ্ঞা, আন্দোলন বা বিক্ষোভকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
২। অপর দিকে - রাশিয়া ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল সংযুক্ত করেছে তারা রাশিয়ান ভাষায়ই কথা বলে। রাশিয়া গণভোটেরও ব্যবস্থা করেছে। রাশিয়াপন্থী নাগরিকরা সংযুক্তির ও গণভোটের বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
৩। ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাশিয়ার উল্টোটিই করেছে। আদিবাসী ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জমি দখল করা হয়েছে, বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে, বাসস্থানের অনুমতি প্রত্যাহার করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে, প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের সব সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে একা ইসরাইল কখনোই ঘোষণা করেনি যে, তার সীমানা কোথায় অবস্থিত ও কতটুকু বরং ইসরাইলি গোয়েন্দাদের জন্য তৈরি প্রটোকল বইয়ে ভবিষ্যৎ ইসরাইলের যে মানচিত্র রয়েছে তার মধ্যে মক্কা-মদিনা ব্যতীত সৌদি আরবের অনেক এলাকাও অন্তর্ভুক্ত করে দেখানো হয়েছে। সে ম্যাপে মূল জর্দান, সিনাইসহ মিসরের অনেক এলাকাও রয়েছে। রয়েছে ইরান ও আমিরাতের বড় অংশ। বইটির শুরুতে বলা আছে," ইহুদিরাই সৃষ্টিকর্তার মনোনীত জাতিগোষ্ঠী, তাই তারাই এই বিশ্বকে শাসন করবে। মুসলিম বিশ্বকে তারাই নেতৃত্ব দেবে"।
ইসরাইল চলতি মাসের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি সাংস্কৃতিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুসালেম ও গোলান হাইটসে নির্মিত অবৈধ বসতির শিল্পীদের বাদ দেয়ার প্রতিবাদে ইসরাইল ক্ষিপ্ত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সৃজনশীল ইউরোপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাখ লাখ ডলার অনুদান দেয়। ইইউ ‘ক্রিয়েটিভ ইউরোপ’-এর জন্য মোট দুই বিলিয়ন ডলার রেখেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় আকর্ষণীয় ইসরাইলি অনুষ্ঠান ছড়িয়ে দেয়া হয়, যার অনেকগুলো ইসলামী সংস্কৃতির সাথে সঙ্ঘাতপূর্ণ। ইসরাইলি ওয়েবসাইট ‘ওয়ালাহ’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইইউতে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত সরকারের কাছে গোপন বার্তায় চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কেননা, প্রত্যাখ্যান করা হলে ইসরাইলের আর্থিক ক্ষতি হবে।
৪। আইরিশ আইন প্রণেতা রিচার্ড বয়েড ব্যারেট আইরিশ সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি ইসরাইলের দখলদারিত্বের সাথে রাশিয়ার আগ্রাসনের তুলনা করেছেন। তার ভাষায়, " পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য পাঁচ দিন সময় লেগেছিল কিন্তু ফিলিস্তিনিদের ওপর ৭০ বছর ধরে নিপীড়নের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি"। মুসলমানদের সাথে এ দ্বৈতমান অনুসরণের জন্যও তিনি সরকার ও বিশ্বসভার সমালোচনা করেন।
এই বাম আইনপ্রণেতা সরকারকে উদ্দেশ করে আরো বলেন," ভ্লাদিমির পুতিনের মানবতাবিরোধী অপরাধের বর্ণনা দিতে শক্তিশালী রূঢ় ভাষা ব্যবহার করতে পেরেছেন কিন্তু ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলি আচরণের বর্ণনা দেয়ার ক্ষেত্রে একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করেননি কেন "। সংসদে তিনি বলেন, ‘বর্ণবাদ’ শব্দটি পর্যন্ত উচ্চারণ করা হয়নি।
বয়েড ব্যারেট তার সহকর্মী এমপিদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বর্ণবাদসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে। বর্ণবাদী ব্যবস্থার জন্য পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শুরু করা হয়েছে অথচ আরো জঘন্য বর্ণবাদী আচরণের জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে কিছু করা হয়নি।
৫। জেরুজালেমকে অবৈধ সংযুক্তিকরণের পর ইসরাইল জেরুজালেম শহরের ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের সাথে অবাঞ্ছিত অভিবাসী হিসেবে আচরণ করেছে এবং তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করার জন্য পদ্ধতিগতভাবে কাজ করেছে। পূর্ব জেরুজালেমে রয়েছে অসংখ্য মুসলমানের বসতি। এখানেই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাজধানী হওয়ার কথা, অথচ এখন মুসলমানরা সেখানে অবাঞ্ছিত। অথচ রাশিয়া ইউক্রেনের যে সব অঞ্চল সংযুক্ত করেছে সেখানকার সব নাগরিককেই তার নিজ দেশের নাগরিকদের মত সমান মর্যাদা ও অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছে, " দখলীকৃত এলাকার নাগরিকরা রাশিয়ার মূলভূখণ্ডের নাগরিকদের মত সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে"।
সবশেষে - এটাই বলা যায় যে, জোর করে বা অন্য যে কোন উপায়েই হোক না কেন, যে কোন দেশের ভূমি দখল কোন ভাবেই বৈধ বলে বিবেচিত হতে পারেনা। তারা দখলদার হিসাবেই বিবেচিত হয় আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতিতে এবং সাধারনভাবে সকল দখলদারদের প্রতি একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে,কয়েক দশকের দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কিংবা পাশ্চাত্য কর্তৃক না কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ছে না ফিলিস্তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ইসরাইলি উপনিবেশ থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করার জন্য লাখ লাখ ডলার এবং অস্ত্র দেয়া হয়েছে । অথচ ইউক্রেনে মাত্র কয়েকমাসের দখলদার রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বের ৫০ টিরও বেশী দেশ যেভাবে অর্থ-অস্ত্র সহ অন্যান্য উপকরনের সাথে সাথে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শয়ে শয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা একথায় বিরল। এটি অনেকটাই জাতিসংঘ কিংবা পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী আচরন ও তাদের গণতন্ত্র - মানবাধিকার দাবীর সাথে সাংঘর্ষিক হিসাবেই বিবেচনা করা যায়।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গত কয়েক দশক ধরেই সেই ইসরাইল রাষ্ট্রকে সমর্থন করছে - অর্থায়ন করছে ও সশস্ত্র করছে, যারা প্রতিদিন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চলেছে। যেখানে ভুক্তভোগীরা তাদের ভূমির দখলদারিত্ব ও উপনিবেশ স্থাপনের বিরুদ্ধে বৈধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার কারনে, যারা তাদের গায়ে সন্ত্রাসীর লেবেল লাগিয়ে দিচ্ছে সেই তারাই আবার ঘোষণা করছে যে - রাশিয়া ইউক্রেনের ভূমি দখল করে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে। এ জন্যই পুতিন বলেছেন, "এ ধরনের বিষয়ে পাশ্চাত্যের কোন নৈতিক উচ্চ ভিত্তি নেই এবং অবশ্যই গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলার কোনো নৈতিক অধিকারও আমেরিকা ও তার দোসরদের নেই"।
===============================================
তথসূত্র -বিবিসি,এএফপি,আল জাজিরা,সিএনএন,নয়া দিগন্ত ।
AP - Occupied Ukraine holds Kremlin-staged vote on joining Russia - https://apnews.com/article/
বিবিসি বাংলা -রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: অধিকৃত এলাকায় 'জালিয়াতির' গণভোটে রাশিয়ার বিজয় দাবি - লিংক -
https://www.bbc.com/bengali/news-63057110
উপসম্পাদকীয় (নয়া দিগন্ত - ১৩ অক্টোবর ২০২২ )- রাশিয়াকে না ইসরাইলকে হ্যাঁ - লিংক - https://mybangla24.com/newspapers/naya-diganta
বিবিসি বাংলা - গোলান মালভূমি আর কখনো ফেরত দেবে না ইসরায়েল - লিংক - https://www.bbc.com/bengali/news/
বিবিসি বাংলা - ইসরায়েল ফিলিস্তিন সংকট: যে যুদ্ধের শেষ নেই - লিংক - https://www.bbc.com/bengali/news-57115011
==================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (৪র্থ পর্ব) Click This Link
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (৩য় পর্ব) Click This Link
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (২য় পর্ব) Click This Link
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (১ ম পর্ব) Click This Link
এবং
" ইউক্রেন সংকট " - (শেষ পর্ব) - Click This Link
" ইউক্রেন সংকট " - ২ য় পর্বের লিংক - Click This Link
" ইউক্রেন সংকট " - ১ ম পর্বের লিংক - Click This Link
১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার আশাবাদী মন্তব্যের জন্য।
আপনার চাপে পড়ে পুটিন শেষে যুদ্ধই বন্ধ করে দেবে।
- এমনটা হলেত ভালই হতো।
তবে খালি পুতিনকে চাপলেই হবেনা , সাথে সাথে বাকীদেরও চাপতে হবে ভাই ।
তাহলেই হয়ত ফলাফল বের হবে।
নয়ত চলতে থাকবে তা অনেক দিন।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনি আরবী জানলে, আরবীতে লেখেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিন থেকে পালিয়ে যাবে।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:৫৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য।
আপনি আরবী জানলে, আরবীতে লেখেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিন থেকে পালিয়ে যাবে।
- ভাই ইসরাইল যদিও আরব এলাকায়ই এবং আরবী ইসরাইলের সরকারী ভাষা হলেও তারা নিজেদের মধ্যে বেশীরভাগই হিব্রু ভাষায় কথা বলে।
এখন আমি আরবী জানি কিনা আর জানলেও কিছু লিখলে তা ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের নজরে আসবে কিনা তা এক বিশাল প্রশ্ন ।
তবে সামুতে যে আসবেনা তাদের কেউ এটা মনে নিশ্চিত । তবে আপনি যেহেতু তাদের দেশে , তাদের সাথে এবং নীতি নির্ধারনী জায়গায় আছেন , আপনি চাইলেই মনে হয় এ সমস্যার একটা সমাধান বের করতে পারবেন।
আমরা সব সামুবাসী জানি - আপনি কতটা পাওয়ারফুল ও জানাশোনা মানুষ। চাইলেই আপনি ওয়ান-টুতে এর চেয়ে বড় সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারেন। দেখেন না ভাই একটু চেষ্টা করে । আল্লাহ আপনার ভালা করবেন।
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:১২
সোনাগাজী বলেছেন:
সোভিয়েত থেকে শুরু করে আজ অবধি রাশিয়ানরা ফিলিস্তিনীদের পক্ষে আছে; কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১২:০০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য।
সোভিয়েত থেকে শুরু করে আজ অবধি রাশিয়ানরা ফিলিস্তিনীদের পক্ষে আছে; কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
- আগের সোভিয়েত ইউনিয়ন কিংবা আজকের রাশিয়া ফিলিস্তিনীদের সাথে থাকলে কি ঐব ভাইজান, কেমনে ঐব ? কইনছেন দেহি?
আপনি ইসরাইলীদের সাথে কে কে আছে , সেটা দেখেন আগে বা কইনছেন দেহি কোন কোন মামুরা ইসরাইলের আগে পিছে আছে?
আপনার তালিকার প্রথম ৩/৪ জন না থাকলেই এ সমস্যা সমাধান হয়ে যেত । আর তাদের কারনেই যা এখন ইহজীবনেও আর সমাধান হবার সুযোগ আছে বলে মনে হয়না
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার পোস্টের শিরোনামের জবাবঃ ইজরায়েল যাদের বসতভিটা দখল করেছে তাদের ধর্ম ইসলাম, তাই দখলদারত্ব বৈধ। ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো দিন সমাধান হবে না, কারণ- ভুক্তভোগীরা মুসলিম।
পোস্টে প্লাস।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১২:৪৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জুল ভার্ন ভাই, আপনার বাস্তব মন্তব্যের জন্য।
আপনার পোস্টের শিরোনামের জবাবঃ ইজরায়েল যাদের বসতভিটা দখল করেছে তাদের ধর্ম ইসলাম, তাই দখলদারত্ব বৈধ। ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো দিন সমাধান হবে না, কারণ- ভুক্তভোগীরা মুসলিম।
- মূল সমস্যাটা এখানেই। মানবতা-ব্যক্তি স্বাধীন-গণতন্ত্র এসব অর্থহীন গালভরা বুলি ও তাদের স্বার্থ ও সামাজ্রবাদের হাতিয়ার এবং এগুলি তারা তৈরী করেছে ও লালন পালন করে তাদের নিজেদের প্রয়োজনে।
আর মুসলিমরা হলো অচ্যুৎ বা নিজ জাতি। কাজেই তাদের মারা-কাটার কিংবা তাদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত করা কিংবা তাদের বাড়ীঘর দখল করা কোন অন্যায় কাজই নয়।
আর তাইতো এ বিষয়ে সকল কবি ( মানবতার ভেকধারী) রাই নিরব এবং ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান এ দুনিয়া টিকে থাকা অবধি হবার সম্ভাবনা নাই ( যদিও ধর্মের বাণী অনুসারে একসময় এ সমস্যার সমাধান হবে তবে আমরা তা দেখে যেতে পারব না , এটা নিশ্চিত)।
পোস্টে প্লাস।
- শুকরিয়া ভাইজান।
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৪৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোহামমদ কামরুজজামান,
'' ভূমি দখলদারিত্ব " রাশিয়ার ক্ষেত্রে যদি অবৈধ এবং অন্যায় হয় তবে ইসরাইলের ক্ষেত্রে তা অবৈধ এবং অন্যায় নয় কেন?
অবৈধ এবং অন্যায় হবেনা এই কারনে যে, ইসরাইলের পেছনে আমেরিকা আর বৃটেনের মত মামুরা আছে। ইহুদিরা বিশ্বের অর্থনীতি যে ভাবে নিয়ন্ত্রন করে তেমনি করে ঐসব মামুদের দেশের রাজনীতি্ও। তাই ইসরাইলের সব অপকর্ম জায়েজ।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই, আপনার চরম-পরম ও বাস্তব মন্তব্যের জন্য।
'' ভূমি দখলদারিত্ব " রাশিয়ার ক্ষেত্রে যদি অবৈধ এবং অন্যায় হয় তবে ইসরাইলের ক্ষেত্রে তা অবৈধ এবং অন্যায় নয় কেন?
অবৈধ এবং অন্যায় হবেনা এই কারনে যে, ইসরাইলের পেছনে আমেরিকা আর বৃটেনের মত মামুরা আছে। ইহুদিরা বিশ্বের অর্থনীতি যে ভাবে নিয়ন্ত্রন করে তেমনি করে ঐসব মামুদের দেশের রাজনীতি্ও। তাই ইসরাইলের সব অপকর্ম জায়েজ। |
- হাজার কথার এক কথা। আমি করমুই , পারলে ঠেকা !!!!!!!!!!!
দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ৩ শয়তান (আমেরিকা-বৃটিশ-ইসরাইল) ও লুটেরা যখন একসাথে তখন সেখানে ন্যায়ের প্রশ্ন আসে কোথা থেকে?
তাদের থেকে যারা ন্যায় আশা করে তাদেরই শুলে চড়ানো উচিত। কারন, জেনে বুঝে শিয়াল কখনো মুরগীকে ছেড়ে দেয় বা দিয়েছে এমন নজির এই দুনিয়ায় নেই জেনেও কেন তাদের কাজকে অবৈধ এবং অন্যায় বলার দুঃসাহস দেখায় । এ দুঃসাহস দেখানোর জন্য তাদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
এ যেন দেশীয় প্রবাদ প্রচনেরই প্রতিফলন, " চোরের মায়ের বড় গলা, চোরে খায় দুধ কলা"।
আর যাদের হাতে ৩ টি জিনিষ আছে (অর্থ-ক্ষমতা-মিডিয়া) তারা কখনো কোন অন্যায় করতেই পারেনা। আর যদিও তা করে ফেলে তাহলে এ ৩ ব্যাবহার করে অতি সেই অন্যায়কে সফেদ করে নিতে পারে।
৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:৩৬
কামাল৮০ বলেছেন: কিছু সর্ত দুদিক থেকেই আছে।যোগ বিয়োগ করে মেনে নিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।সমস্যাটা জিইয়ে রাখলে অনেকের লাভ।যেমন আপনি লিখতে পারছেন।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৪১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল৮০ ভাই, আপনার চরম মন্তব্যের জন্য।
কিছু সর্ত দুদিক থেকেই আছে। যোগ বিয়োগ করে মেনে নিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
- এটা সমস্যার একটা পূবশর্ত যে , যে কোন সমস্যায় দুটি পক্ষ থাকা বাঞ্ছনীয় । যেখানে একটাই পক্ষ থাকে সেখানে কোন সমস্যা থাকেনা যদিও মাঝে মাঝে নিজেরা নিজেরাই কামড়া-কামড়ি করে ভাগাড়ের গরু খাওয়ার জন্য । তবে, আবার কেউ কেউ নিজে ইচছা করে সমস্যা ও বিপক্ষ তৈরী করে যাতে ক্যাচাল বাধিয়ে আরো বেশী করে নিজের ফায়দা হাসিল করা যায়।আর এসব ইচছাকৃত তৈরী সমস্যার সমাধান বের করা কঠিন ভাইজান। এখানে মরাকেই আরো মারা হয় । এ যেন অনেকটা এরকম,
" - মরাকে ভাই মারেন কেন ?
-- ইডা নরে চড়ে না কেন"? - এর মত।
সমস্যাটা জিইয়ে রাখলে অনেকের লাভ।যেমন আপনি লিখতে পারছেন।
- ভাই আমার মত আমজনতার লিখে কি হবে আর আখের কিই বা লাভ বলেন? সমস্যার সমাধান হয়ে গেলেই আসল লাভ ঐত। দুনিয়া সুখে শান্তিতে থাকত।
৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৪১
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনি যতটুকু জেনে ফিলিস্তিন নিয়ে লেখেন, বেশীরভাগ ফিলিস্তিনীও তা' বলে থাকে; সেজন্য আসল সমস্যার সমাধান হয় না। আপনি যতটুকু বারবার লেখেন, উহাতে সব সমস্যার কথা নেই, আসল সমস্যা আরো বড়।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য।
আপনি যতটুকু জেনে ফিলিস্তিন নিয়ে লেখেন, বেশীরভাগ ফিলিস্তিনীও তা' বলে থাকে; সেজন্য আসল সমস্যার সমাধান হয় না। আপনি যতটুকু বারবার লেখেন, উহাতে সব সমস্যার কথা নেই, আসল সমস্যা আরো বড়।
- ভাই, "মোল্লার দৌড় যেমন মসজিদ পর্যন্ত" অন্যদিকে "নেশাখোরের দৌড় মদের ভার পর্যন্ত" ঠিক তেমনি " আমার দৌড়ও এই পর্যন্তই"।
সমস্যা বড় এতে কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ নেই আর পিছনে আরো নানা কারন আছে তা নিয়ে।
তবে এসব বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও একটা বিষয়ে সন্দেহ নেই যে, "একজন মানুষ কখনো সবজান্তা হতে পারেনা " - এটা নিয়ে।
৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৮:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল তথ্যবহুল লেখা!
পুতিন ধীরে ধীরে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠবে- তাঁর অপেক্ষা ছিল শুধু শীতকালের। ফ্রান্সে ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে। আরেকটু ঠান্ডা পড়লে অন্যান্য ইইউভুক্ত দেশেও শুরু হবে( যারা রাশিয়াএ তেল গ্যাসের উপর নির্ভরশীল- পণয় মুল্য একটা ফ্যাক্টর)। যারা পুতিনকে বোকা মাথামোটা ভাবছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
রাশিয়া ছেড়ে যারা ভয়ে ( সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামুলক অংশগ্রহনের জন্য) চলে যেতে চেয়েছে তাদের কাউকে পুতিন আটকায়নি। এরা ফিরে আসার সময়ে খেলা টের পাবে। পুতিন চাচ্ছে রাশিয়া খালি হোক। বড় রকম গেম প্লান আছে হয়তো।এটা অফ টপিক আলোচনা।
ফিলিস্তিন আর ইসরাইল নিয়ে বেশ আগে আমি দুট নিবন্ধ লিখেছিলাম।
এদের দন্দ্ব নিয়ে ভাল করে আরেকটু জানতে চাইলে নেট ফ্লিক্সে 'ফাউদা'( ক্যাচাল) সিরিজটা দেখবেন। ফিল্মটা যদিও ইসরাইল করেছে( পৃথিবীর আর কোন দেশের করার ক্ষমতা নেই) সেজন্য সুক্ষভাবে তাদের পক্ষ টেনেছে। তবুও কোনভাবেই ফিলিস্তিনিদের একেবারে হেলাফেলা করেনি। দু-পক্ষেরই নিঃস্বংশতা দেখিয়েছে।
লেখা খানিকটা পড়ার বাকি আছে। পুরোটা পড়তে হবে। পোস্টে প্লাস।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৫০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই, আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য।
বিশাল তথ্যবহুল লেখা!
- গরুর রচনা লাগতাছে ভাইজান। কি করি কইনছেন দেহি?
পুতিন ধীরে ধীরে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠবে- তাঁর অপেক্ষা ছিল শুধু শীতকালের। ফ্রান্সে ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে। আরেকটু ঠান্ডা পড়লে অন্যান্য ইইউভুক্ত দেশেও শুরু হবে( যারা রাশিয়াএ তেল গ্যাসের উপর নির্ভরশীল- পণয় মুল্য একটা ফ্যাক্টর)। যারা পুতিনকে বোকা মাথামোটা ভাবছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। রাশিয়া ছেড়ে যারা ভয়ে ( সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামুলক অংশগ্রহনের জন্য) চলে যেতে চেয়েছে তাদের কাউকে পুতিন আটকায়নি। এরা ফিরে আসার সময়ে খেলা টের পাবে। পুতিন চাচ্ছে রাশিয়া খালি হোক। বড় রকম গেম প্লান আছে হয়তো।এটা অফ টপিক আলোচনা।
- আপনি দীর্ঘদিন রাশিয়ায় ছিলেন। খুব কাছে থেকে রাশিয়ানদের জীবন মান কিংবা আর্থ সামাজিক পরিবেশ দেখেছেন-জেনেছেন। আপনার আছে চমতকার বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা । আর তাই এ বিষয়ে আপনার যে কোন লেখা আমাকে - আমাদেরকে
বাস্তব অবস্থা -পরিস্থিতি জানতে সাহায্য করবে।
আশা করি ভাইয়ের অনুরোধ রেখে একটা লেখা হলেও লেখবেন এ বিষয়ে ( গড়ুর রচনা হলেও সমস্যা নাই। যাগো সমস্যা হেগো লাই চুলকানীর মলম আইনে রাখখুম)।
ফিলিস্তিন আর ইসরাইল নিয়ে বেশ আগে আমি দুট নিবন্ধ লিখেছিলাম।
- আমি পড়িনি তবে সময় সুযোগে ঘুরে আসব এর পরের পর্ব লেখার আগেই।
এদের দন্দ্ব নিয়ে ভাল করে আরেকটু জানতে চাইলে নেট ফ্লিক্সে 'ফাউদা'( ক্যাচাল) সিরিজটা দেখবেন। ফিল্মটা যদিও ইসরাইল করেছে( পৃথিবীর আর কোন দেশের করার ক্ষমতা নেই) সেজন্য সুক্ষভাবে তাদের পক্ষ টেনেছে। তবুও কোনভাবেই ফিলিস্তিনিদের একেবারে হেলাফেলা করেনি। দু-পক্ষেরই নিঃস্বংশতা দেখিয়েছে।
- ফাউদা'( ক্যাচাল) সিরিজটা দেখতে চেষ্টা করব শীঘ্রই করব। যে কোন ঘটনায় দুপক্ষেরই দায় থাকে। তবে ফিলিস্তিনিদের ইচছা করে খাদে ফেলেছে।
লেখা খানিকটা পড়ার বাকি আছে। পুরোটা পড়তে হবে। পোস্টে প্লাস।
- আশা করি ইতিমধ্যেই পড়ে ফেলেছেন ( যেহেতু আবারো এসেছেন) তার জন্য ও + এর জন্য শুকরিয়া ভাইজান।
৯| ২০ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:০৭
বিটপি বলেছেন: আমেরিকা নিজেও তো হিংস্র জানোয়ারের মত আফগানিস্তানে আর ইরাকে নিরীহ মানুষের উপর হামলে পড়ে দেশ দুটোকে শেষ করে দিল - কে কি বলল? আমেরিকা বা ইসরাইলের জন্য সব জায়েয। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা না করে মুসলিম দেশ কাজাখিস্তানে করত, তাহলে কারো কোন মাথব্যাথা থাকত না।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:২১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বিটপি, আপনার চমতকার বাস্তব মন্তব্যের জন্য এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য ।
আমেরিকা নিজেও তো হিংস্র জানোয়ারের মত আফগানিস্তানে আর ইরাকে নিরীহ মানুষের উপর হামলে পড়ে দেশ দুটোকে শেষ করে দিল - কে কি বলল? আমেরিকা বা ইসরাইলের জন্য সব জায়েয। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা না করে মুসলিম দেশ কাজাখিস্তানে করত, তাহলে কারো কোন মাথব্যাথা থাকত না।
- সমস্যাটা ত এখানেই ।
একই রকম ঘটনায় একজায়গায় গণতন্ত্র হরন -মানবাধিকার লংঘন কিংবা দখলদার হিসাবে খেতাব জুটলেও অন্য জায়গায় এ ব্যাপারে কোন কিছু বলারই থাকেনা।
ইসরাইল সিরিয়ায় প্রতিনিয়ত নানা রকম হামলা চালাচছে। জবর দখল করে নিচছে-আচে সিরিয়া-প্যালেস্টাইন-জর্দানে। আমেরিকা সিরিয়া-ইরাকে । এগুলো কোন দোষের কাজই নয়।
দোষ যা করেছে তা শুধু রাশিয়াই করেছে বাকী সবাই সুফী দরবেশ। আর এসবের পিছনে ধর্ম যে গুরুত্বপূর্ণ সত্য , এ ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। এ যেন , মুসলমানদের মারলে কিংবা তাদের ভূমি-দেশ দখল করলেও মানবতা লংঘন হয়না। সব মানবতার দাবীদার ,সংরক্ষক ও সুবিধাভোগী অমুসলিমরাই। মুসলিমরা এর বাইরে।
১০| ২০ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:১৭
সোনাগাজী বলেছেন:
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল তথ্যবহুল লেখা!
-গরুর রচনা লেখকদের সংঘ।
২০ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: সোনাগাজী ভাই, ইবার আপনাকে আর ধন্যবাদ দেয়া গেল না বলে দুঃখিত ।
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল তথ্যবহুল লেখা!
- মিছা কি বলেছে ?
-গরুর রচনা লেখকদের সংঘ।
- " নিষ্কর্মা মানুষের অর্থহীন প্রলাপ " - তাই নয় কি ভাইজান?
১১| ২০ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:৪৪
সোনাগাজী বলেছেন:
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল তথ্যবহুল লেখা!
-আপনার লেখা বিশাল, কিন্তু ইহাতে ফিলিস্তিন সমস্যার সঠিক কারণ, অচল অবস্হার সঠিক তথ্য নেই; বরং বিভ্রান্তিকর এনালাইসিস আছে।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:১৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: সোনাগাজী ভাই,
মানুষে মানুষে মত ও মনের অমিল থাকবেই। থাকবেই একই বিষয়ে একেক জনের একেক রকম দৃষ্টিভংগী। আর তাইতো দুনিয়াতে এত বৈপরীত্য ও বিপরীত দিকে সুন্দর।
আর তাইতো, এখানে যা তপন ভাইয়ের নিকট তথ্যবহুল লেখা মনে হয়েছে সেখানে তা আপনার নিকট মনে হয়েছে বিভ্রান্তিকর ও সঠিক তথ্যের অভাব । এ দোষের নয় ভাইজান। এটাই জীবন।
আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে সঠিক বলে দাবী করি । তবে দাবীর সাথে সাথে আমাদের সকলের এটাও মনে রাখা উচিত সর্বজনীন সঠিক বলে কোন জিনিষ এ দুনিয়ায় নেই। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে তা পরিবর্তনশীল।
১২| ২০ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:৪৮
শেরজা তপন বলেছেন: সোনাগাজী সাহেব কি এখনো গরুর রচনা লিখতে শিখেছেন? শিখলে আমাদের সংঘে যোগ দিয়ঃ)।
গাজী সাহেব, আপনার জোকসগুলো চমৎকার হয়- বড্ড রসিক মানুষ আপনি
২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:১৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: তপন ভাই,
কিতা কইতাম ।
" জীবন যখন যেখানে যেমন,
কখনো পাজেরোয়
কখনো নৌকায়" - জীবন বড্ড রসিক
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১১
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার চাপে পড়ে পুটিন শেষে যুদ্ধই বন্ধ করে দেবে।