নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার ২৭ দফার রূপরেখা ও আমার ভাবনা।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৩


ছবি -jugantor

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সোমবার (১৯/১২/২০২২) রাজধানীর একটি হোটেলে দেশে প্রচলিত রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পরিবর্তনের অংগীকার (রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না) সহ সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন সহ ২৭ দফা কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছে বিএনপি।

এসময় তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল, সেটির মালিকানা আজ জনগণের হাতে নেই। আর তাই রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। ওই ‘জাতীয় সরকার’ রাষ্ট্র রূপান্তরমূলক এসব সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা

দফা - ১ - বিগত এক দশকের অধিককাল ব্যাপী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার হীন উদ্দেশে অনেক অযৌক্তিক মৌলিক সাংবিধানিক সংশোধনী এনেছে। একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করে সকল বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনগুলো পর্যালোচনা করে এসব রহিত/সংশোধন করা হবে এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সাংবিধানিক সংস্কার করা হবে। সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা পুনর্প্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃস্থাপন করা হবে।

দফা - ২ - প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক ‘রেইনবো নেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য অব্যাহত আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যতমুখী এক নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। এজন্য একটি ‘জাতীয় সমঝোতা কমিশন’ গঠন করা হবে।

দফা - ৩ - বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি “নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

দফা - ৪ - অর্থবিল, আস্থা ভোট, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন এবং সংবিধান সংশোধনী বিল ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হবে।

দফা - ৫ - প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে। পরপর দুই মেয়াদে কেউ রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।

দফা - ৬ - বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা” প্রবর্তন করা হবে।

দফা - ৭ - রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত এবং বিশিষ্টজনের অভিমতের ভিত্তিতে স্বাধীন, দক্ষ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে বর্তমান ‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন’ সংশোধন করা হবে। ইভিএম নয়, সব কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হবে। আরপিও, ডেলিমিনেশন অর্ডার এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা হবে।

দফা - ৮ - সংকীর্ণ রাজনৈতিক দলীয়করণের ঊর্ধ্বে উঠে সব রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা হবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রদান করা হবে।

দফা - ৯ - বাংলাদেশের সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা হবে। জুডিশিয়াল সার্ভিসে পেজ ২ নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ চাকরির শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক পরিচালিত হবে। বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক সচিবালয় থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে বর্ণিত ইতোপূর্বেকার ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করা হবে। এজন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা করা হবে। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে কেবল জ্ঞান, প্রজ্ঞা, নীতিবোধ, বিচারবোধ ও সুনামের কঠোর মানদণ্ডে যাচাই করে বিচারক নিয়োগ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৫(গ) অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও মানদণ্ড সম্বলিত ‘বিচারপতি নিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করা হবে।

দফা - ১০ - দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিষেবা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে যোগ্য ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন পুনর্গঠন করা হবে। মেধা, সততা, সৃজনশীলতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

দফা - ১১ - সুপ্রিম কোর্টের একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা হবে। সৎ সাংবাদিকতার পরিবেশ পুনরুদ্ধার করা হবে এবং চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাসহ সব সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।

দফা - ১২ - দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না। বিগত দেড় দশক ধরে সংগঠিত অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং শ্বেতপত্রে চিহ্নিত দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশের বাইরে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।

দফা - ১৩ - সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ ও মানুষের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং অমানবিক নিষ্ঠুর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অবসান ঘটানো হবে। ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটস চার্টার অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ প্রদান করা হবে। গত দেড় দশক ধরে সংগঠিত সব বিচারবহির্ভূত হত্যা, ক্রসফায়ারের নামে নির্বিচারে হত্যা, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্মম শারীরিক নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সব ব্যক্তির সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।

দফা - ১৪ - অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ, অভিজ্ঞ ব্যাংকার, কর্পোরেট নেতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নিরিখে প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা হবে। উপরোক্ত সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন, প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন, জুডিশিয়াল কমিশন, মিডিয়া কমিশন এবং অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশনগুলো সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্ব-স্ব প্রতিবেদন দাখিল করবে যেন সংশ্লিষ্ট সুপারিসগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

দফা - ১৫ - ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবেন। দলমত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতিগোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্ম-কর্মের অধিকার, নাগরিক অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে।

দফা - ১৬ - শ্রমজীবী মানুষ এবং চা-বাগান, বস্তি, চরাঞ্চল, হাওর-বাওর ও মঙ্গাপীড়িত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সুষম উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

দফা - ১৭ - সব কালাকানুন বাতিল করা হবে এবং অপ্রয়োজনীয় কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করা হবে। আমদানি নির্ভরতা পরিহার করে নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জি-নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং উপেক্ষিত গ্যাস/খনিজ সম্পদ আহরণ/আবিষ্কারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দফা - ১৮ - বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে কোনোরকম সন্ত্রাসবাদী তৎপরতাকে বরদাশত করা হবে না এবং কোনো সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবে না। ভিন্নমতের বিরোধী শক্তি দমনে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা এবং সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে বিরোধী দল দমনের অপতৎপরতা বন্ধ করা হবে।

দফা - ১৯ - দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসংগঠিত, যুগোপযোগী এবং সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা হবে। স্বকীয় মর্যাদা বহাল রেখে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হবে।

দফা - ২০ - ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে যেন তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও অন্য কোনো জনপ্রতিনিধির খবরদারি মুক্ত স্বাধীন স্থানীয় সরকার নিশ্চিত করা হবে এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ বন্ধ করা হবে। আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশবলে সাসপেন্ড/বরখাস্ত/অপসারণ করা হবে না।

দফা - ২১ - রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এ তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণার্থে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে একটি সঠিক তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

দফা - ২২ - যুবসমাজের ভিশন ও চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বেকার যুবকদের যথাযথ কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত অথবা ন্যূনতম এক বছর পর্যন্ত (যা আগে ঘটে) বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। যুব-দক্ষতা বৃদ্ধি করে ‘ডিমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ আদায়ের লক্ষ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে নানামুখী বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

দফা - ২৩ - নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্ব প্রদান এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

দফা - ২৪ - বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান নৈরাজ্য দূর করে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদা ভিত্তিক শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা-কারিকুলামকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

দফা - ২৫ - ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

দফা - ২৬ - শ্রমিকদের প্রাইস-ইনডেক্স বেজড ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হবে। শিশু-শ্রম বন্ধ করা হবে।

দফা - ২৭ - কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্য বিমা, পশু বিমা, মৎস্য বিমা এবং পোল্ট্রি বিমা চালু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার বন্ধ করা হবে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন উপস্থাপিত তথা বিএনপির ২৭ দফা নিরপেক্ষভাবে পর্যালোচনা করলে একথা বলা যায় যে, প্রায় সবগুলোই বা এর অনেক গুলোই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তথা মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাস্তবায়ন করছে বা করার চেষ্টা করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা নেই এমন নয় তবে সরকার প্রধান তথা ক্ষমতাশীন সরকার সেগুলো দূর করার চেষ্টা করছে। তবে আমাদের দেশের জনবহূলতা,সম্পদের সীমাবদ্ধতা সহ আরো নানা কারনে সবগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যে কারো পক্ষেই কঠিন বলেই মনে হয়। ক্ষমতাশীন সরকার তার কাজ করছে আর সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি তার করণীয় কাজের তালিকা জনগনের সামনে তুলে ধরেছে। বিএনপি তাদের ২৭ দফায় তাই বলতে চেয়েছে, জনগন যদি তাদের পরবর্তী ভোটে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করে তবে তারা আলোচ্য দফার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবে।(রাজনৈতিক দল হিসাবে তারা তাদের আকাংখা জনগনের সামনে তুলে ধরেছে ,যাতে জনগন তাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে)।

আবার , ক্ষমতাশীন দলও আগামী নির্বাচনের আগে তাদের করণীয় কাজের তালিকা জনগনের সামনে তুলে ধরবে। যার উপর ভিত্তি করে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেশের জন্য পরবর্তী শাসক নির্বাচন করবে। আর গণতন্ত্রের এটাই মূল বিষয়। (রাজনৈতিক দল তাদের করণীয় তুলে ধরবে এবং জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাকে ভাল লাগে তাকে নির্বাচিত করবে)।

সকল রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য যদিও দেশের কল্যাণ সাধন তারপরও দল ভেদে রাজনৈতিক দলের করণীয় বা অবশ্য করণীয় কাজে কিছুটা প্রার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বিএনপি দেশ পরিচালনার যে ২৭ দফা জনগণের সামনে তুলে ধরেছে তার সবগুলোই দেশের মংগলের জন্য একথা ঠিক, তবে তারা ক্ষমতাশীন হলেই তাদের প্রণীত ২৭ দফার সবগুলোই শতভাগ পালন হবে এমন কোন নিশ্চয়তাও নেই । তবে তাদের প্রণীত -

**দফা ৩ - (নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন) - যা বর্তমান সরকারের আমলে উচচ আদালতের রায়ে বাতিল করা হয়েছে।এবং

** দফা ৫ - ( প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে। পরপর দুই মেয়াদে কেউ রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না)

বিএনপি উপস্থাপিত ২৭ দফা নিয়ে দেশে-বিদেশে ও জনগনের মাঝে হবে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনা । তবে, যদি তারা নির্বাচিত হয় বা জনগণ তাদেরকে ভোট দিয়ে শাসকের আসনে বসায় এবং তারা পরিবার-দল-মত-স্বার্থের উপরে উঠে এ দুটি দফার যদি সফল বাস্তবায়ন করতে পারে তবে, বাকী সব দফার বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে বলেই মনে হয়। তবে এর জন্য অনেক কিছু করার (ত্যাগ-সমঝোতা) প্রয়োজন হতে পারে এবং এই দুই দফার সফলতার জন্য দেশে প্রচলিত সকল রাজনৈতিক দল ও এর নেতাদের মাঝে মিল ও একমত হওয়া অতীব জরুরী। কোন দলের একার পক্ষে এ দুই দফা বাস্তবায়ন শুধু কঠিনই নয় বরং দুরুহ বলেই মনে হয়। আর এই মুহূর্তে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে যেমন অবস্থা (দ্বন্দ্ব-অবিশ্বাস) তাতে তাদের মাঝে সর্বদলীয় ঐক্য আশা করা কঠিনই বটে। তবে রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই। হয়ত কোন একদিন আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও নেতারা এ বিষয়েও একমত হবে দেশের ও জনগণের প্রয়োজনে। সেই আশাবাদই আমার, একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে।


তথ্যসূত্র - টানা দুই মেয়াদের বেশি নয়, ভারসাম্য আনা হবে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় (যুগান্তর,১৯ ডিসেম্বর ২০২২) - লিংক - Click This Link

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৯

সোনাগাজী বলেছেন:



শেখ হাসিনার উচিত ২৭ দফাকে ১টা দফায় পরিণত করা; শেখ হত্যার পর, ক্যান্টনমেন্ট জন্মনেয়া মিলিটারীদের দল বিএনপি'কে মুছে দেয়া।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

শেখ হাসিনার উচিত ২৭ দফাকে ১টা দফায় পরিণত করা; শেখ হত্যার পর, ক্যান্টনমেন্ট জন্মনেয়া মিলিটারীদের দল বিএনপি'কে মুছে দেয়া।

- আপনার মন্তব্য হয়ত আপনার দৃষ্টিভংগীতে ঠিক আছে তবে তা গণতন্ত্রের মূলনীতির সাথে চরমভাবে সাংঘর্ষিক। গণতন্ত্রের মূলনীতিই হলো বিরোধী দলের প্রতি সহনশীল আচরন এবং বাকস্বাধীনতা । যা আপনার মতের সাথে পুরোপুরি বিপরীত এবং এ জাতীয় কাজের ফলে দেশের মাঝে বিশৃংখলা তৈরীর সম্ভাবনা থেকে যায়।

বিএনপি তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে, কিছুদিন পর আওয়ামী লীগও হয়ত তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে । এ দুয়ের মাঝে এবং সাথে আরো বাকী সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার থেকে যাকে জনগণের ভাল লাগবে তাকেই ভোট দিয়ে জনগণ দেশের শাসক নির্বাচিত করবে। এরকমটাই আশা করা ও হওয়া উচিত।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৯

সোনাগাজী বলেছেন:



ড: খন্দকার অনেক টাকা ডাকাতী করেছিলো; উহার জন্য শেখ হাসিনা উহাকে ধরবে বলে মনে হয়; তখন ১৯ দফা, ১০ দফা, ২৭ দফাকে যোগ করলেও কাজ হবে না।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ সোনাগাজী ভাই, আপনার প্রতি-মন্তব্যের জন্য।

ড: খন্দকার অনেক টাকা ডাকাতী করেছিলো; উহার জন্য শেখ হাসিনা উহাকে ধরবে বলে মনে হয়; তখন ১৯ দফা, ১০ দফা, ২৭ দফাকে যোগ করলেও কাজ হবে না।

- এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানা নেই।

তারপরও, দেশ শাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পরে যে বা যারাই সেই ক্ষমতার অপব্যবহার ও দূর্নীতি করে বা করবে তাদের সবারই বিচার হওয়া উচিত , তা সে যেই দলেরই হোক না কেন।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৯

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনি বলেছেন, "- আপনার মন্তব্য হয়ত আপনার দৃষ্টিভংগীতে ঠিক আছে তবে তা গণতন্ত্রের মূলনীতির সাথে চরমভাবে সাংঘর্ষিক। "

-মিলিটারী "গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শেখ সাহেবকে হত্যা করে বিএনপি গঠন করেছিলো"; ইহাই আপনার গণতান্ত্রিক মুলনীতি?

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: -মিলিটারী "গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শেখ সাহেবকে হত্যা করে বিএনপি গঠন করেছিলো"; ইহাই আপনার গণতান্ত্রিক মুলনীতি?


সোনাগাজী ভাই, :( :( :(

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩২

কামাল১৮ বলেছেন: বিএনপি কথা হয়তো ভালো বলে কিন্তু কাজ করে খারাপ।এটা অতীত অভিজ্ঞতা।তাই বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না।দল হিসাবে বিএনপি গনতন্ত্রের চর্চা করে না।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

বিএনপি কথা হয়তো ভালো বলে কিন্তু কাজ করে খারাপ।এটা অতীত অভিজ্ঞতা।তাই বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না।দল হিসাবে বিএনপি গনতন্ত্রের চর্চা করে না।

- কোন মানুষ বা দল শতভাগ খারাপ নয় বা থাকেনা।আবার কেউ শতভাগ ভালো কিংবা ফেরেশতাও হয়না।

সময়ের সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন হয় বা টিকে থাকার জন্য নিজেকে/দলকে পরিবর্তিত পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। একযুগ আগের বিএনপি আর আজকের বিএনপি এক নয়, এটা সত্যি।আবার, সারা দুনিয়া প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচছে আর এ পরিবর্তনের সাথে সাথে বিএনপি-আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য যে কোন রাজনৈতিক দলেও পরিবর্তন জরুরী। গরীব দেশে বিশেষ করে আমাদের দেশে এখনো পরিবারের বাইরে কেউ কিছু ভাবতে চায়না। এখানে সবাই ভাবে জমিদারের ছেলে না চাইলেও ও কোন যোগ্যতা না থাকলেও জমিদার। আর কৃষকের ছেলে যত যোগ্যতাই থাকুক না কেন, সমাজ ও এর মানুষ জন তাকে অন্য ভূমিকায় দেখতে অভ্যস্ত নয়।

যদি সবাই পারিবারিক ধ্যান -ধারনার বাইরে যেতে পারত এবং দলে ও সবাই গনতান্ত্রিক ধ্যান-ধারনার সঠিক চর্চা করত তবে এসব সমস্যা তৈরীই হতনা। আমাদের দেশে সবাই মুখে মুখে গনতন্ত্র গনতন্ত্র বলে ফেনা তুলে ফেলে কিন্তু বাস্তবে পরিবারতন্ত্রেরই চর্চা চলে। সমস্যাটা এখানেই।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এত দফা কেউ বিশ্বাস করবে না। দফা কম হওয়া ভালো।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

এত দফা কেউ বিশ্বাস করবে না। দফা কম হওয়া ভালো।

- আমাদের মূল সমস্যা ভাই এখানেই।
আমরা বলি বেশী,কাজ করি কম। অথচ হওয়া উচিত ছিল এর বিপরীত। তবে, আমাদের দেশের প্রচলিত নিয়মই হল বেশী বেশী ঢোল (প্রচারনা) বাজানো।

আর পাবলিক তাই বেশী খায় যার বেশী বেশী প্রচারনা চলে। আর কথাই যে আছে ভাই, " প্রচারেই প্রসার"।

৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আগে কিছু বলে লাভ নাই । ওরা চৌদ্দ বছর ক্ষমতার বাহিরে এবং যেতে পারে কিনা তাও অনিশ্চিত । গেলেও পনর বছর অতীত ভুলে যায় কিনা সন্দেহ আছে।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

আগে কিছু বলে লাভ নাই । ওরা চৌদ্দ বছর ক্ষমতার বাহিরে এবং যেতে পারে কিনা তাও অনিশ্চিত । গেলেও পনর বছর অতীত ভুলে যায় কিনা সন্দেহ আছে।

- সেই মানুষই সফল হয় যে মানুষ তার জীবন ও কর্মকে নিয়ে পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যায়। আর সে কোন রাজনৈতিক দলই যেহেতু জনগনের কল্যানের লক্ষ্যে পরিচালিত হয় কাজেই জনগনের জন্য তারা কি করতে চায় বা করবে তা নির্বাচনের আগে জনগনের সামনে তুলে ধরতে হয় , যার উপর ভিত্তি করে জনগন তাদের পছন্দমত ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেশের ও তাদের জন্য পরবর্তী শাসক নির্বাচন করতে পারেন।

এখন তারা তাদের করণীয় তুলে ধরেছেন এবং জনগন যদি তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসায়,তবেই তারা তাদের করা ওয়াদার
বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারবেন। আর যদি জনগন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে কিংবা জনগন তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে অন্য কাউকে শাসক হিসাবে গ্রহণ করে তবে তাদের আর কিছুই বলার থাকবেনা।

৭| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: শুনুন, বিএনপি একটা খারাপ দল। অযোগ্য ও অদক্ষ দল। এরা যতদিন ক্ষমতায় ছিলো, ততদিন শুধু দেশের ক্ষতি করেছে।
খালেদা জিয়া এরশাদের চেয়েও খারাপ ছিলেন।
আওয়ামীলীগ কি ভালো? হ্যাঁ বিএনপির চেয়ে হাজার গুণ বেশি ভালো।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৩৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।

শুনুন, বিএনপি একটা খারাপ দল। অযোগ্য ও অদক্ষ দল। এরা যতদিন ক্ষমতায় ছিলো, ততদিন শুধু দেশের ক্ষতি করেছে।খালেদা জিয়া এরশাদের চেয়েও খারাপ ছিলেন।

- হয়ত বা হয়ত না।
তবে আর যাই হোক , জীবনে দুইবার নিজের ভোট নিজে দিয়েছিলাম-দিতে পেরেছিলাম খালেদার আমলেই। তার পরে ইতিহাস ---------
আওয়ামীলীগ কি ভালো? হ্যাঁ বিএনপির চেয়ে হাজার গুণ বেশি ভালো।

- এটাও হয়ত বা হয়ত না।
সব জায়গায় হাজার গুন ভাল না হলেও কিছু কিছু জায়গায় আওয়ামীলীগ বিএনপি থেকে লক্ষ গুন ভালো এটাও মিছা নয়।

৮| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৩

নূর আলম হিরণ বলেছেন: এরা হোমওয়ার্ক না করেই দফা মফা দিয়ে দেয়, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এমনিতেই দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারেনা। আমাদের একটি স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন আছে এখানে একটি ইনভিটেশন কার্ড লেখার পরেও ৪-৫ বার রিভাইস করা হয়। বানানে বা ব্যাকরণগত ভুল আছে কিনা দেখা হয়। এত বড় একটা দল এখানে রাষ্ট্রপতি শব্দটাই দফার সাথে যায় না। যাইহোক বিএনপি যে ২৭ দফা রাষ্ট্র গঠনের জন্য দিয়েছে এর অধিকাংশই ৯১ ও ২০০১ এর নির্বাচনে দিয়েছে।ক্ষমতায় এসে সেগুলি তখনও তারা বাস্তবায়ন করেনি। তবে ভালো, এসব ভালো ভালো কথা ক্ষমতায় আসার পর এগুলো মাথায় থাকে না, সমস্যা এটাই। ক্ষমতায় আসলে যে এই দফা গুলি বাস্তবায়ন করবে সে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার এখন একটাই সুযোগ আছে। সেটা হলো নিজের দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, তাহলে মানুষ কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হতে পারে যে, তারা ক্ষমতায় গেলেও এগুলি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নূর আলম হিরণ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।

এরা হোমওয়ার্ক না করেই দফা মফা দিয়ে দেয়, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এমনিতেই দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারেনা।

- বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির পদ যদিও আলংকারিক এবং বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মেয়াদ সব মিলিয়ে (৫+৫=১০) বছর তথা দুই মেয়াদের এটা ঠিক আছে তবে আমার মনে হয় বিএনপি মূলতঃ প্রশাসনের মূল ক্ষমতাশালী তথা প্রধানমন্ত্রী পদকে লক্ষ্য করেই এ দফা ও সীমারেখার কথা বলেছে।যাতে করে এক ব্যক্তির হাতে অনির্ধারিত সময় পর্যন্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত না থাকে।

যাইহোক বিএনপি যে ২৭ দফা রাষ্ট্র গঠনের জন্য দিয়েছে এর অধিকাংশই ৯১ ও ২০০১ এর নির্বাচনে দিয়েছে।ক্ষমতায় এসে সেগুলি তখনও তারা বাস্তবায়ন করেনি। তবে ভালো, এসব ভালো ভালো কথা ক্ষমতায় আসার পর এগুলো মাথায় থাকে না, সমস্যা এটাই। ক্ষমতায় আসলে যে এই দফা গুলি বাস্তবায়ন করবে সে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার এখন একটাই সুযোগ আছে। সেটা হলো নিজের দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, তাহলে মানুষ কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হতে পারে যে, তারা ক্ষমতায় গেলেও এগুলি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে।

- ওয়াদা করা ও তার বাস্তবায়নের মাঝে সবসময়ই ফারাক থাকে। যেখানে কোন মানুষই শতভাগ ওয়াদা রক্ষা করতে পারেনা সেখানে আমাদের মত গরীব ও জনবহুল দেশে রাজনৈতিক দলের দেয়া ওয়াদা শতভাগ রক্ষা খুবই কঠিনই নয় দূরুহই বটে। তারপরও ভোটাররা ভোটের পর দেখে ক্ষমতাশীন দল তাদের দেয়া ওয়াদা কতটা পূরণ করেছে বা নানা কারনে সে সব পূরণ করতে না পারলেও কতটা আন্তরিক ছিল সে সব বাস্তবায়নে। আর তার উপরই পরেরবার ভোটাররা রায় প্রদান করে বা শাসক দলকে বিতাড়ন কিংবা তাদের পূণরায় ক্ষমতায় বসায়।

আর মজাটা এখানেই।
সকল রাজনৈতিক দল-ক্ষমতাশীন দল কিছুটা হলেও জনগণকে নিয়ে ভাবে একারনেই । কারন তাদের ক্ষমতা (জনগনের ভোটাধিকার) থাকে শাসক নির্বাচনের কিংবা বিতাড়নের।অবশ্য ভোটাধিকার যদি না থাকে তাহলে আর এ ভয় থাকেনা।

৯| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ ভোর ৪:২৬

জগতারন বলেছেন:


বাংলাদেশের মানুষ কেন খালেদা জিয়া ও খাম্বা তারেক চোরার কথা শোনা উচিত না।
বি-এন-পি'র প্রতিষ্ঠার মহা নায়ক জিয়াউর রহমান-এর কর্মকান্ডের বর্ননার যৎসামান্য নীচে তুলে ধরা হলোঃ

১) ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে সেনাবাহিনী প্রধান হিসাবে প্রমোশন না পাওয়ায় প্রথম পদত্যাগ করা এবং
পরের দিন আবার নিজে নিজেই তা প্রত্যাহার করে ফারুক রশিদ মোস্তাক গংদের সাথে
তথা জাতির পিতার হত্যাকারিদের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া এবং
হত্যাকারীদের এই বলে আশস্ত করা যে, তোমরা একাজে এগিয়ে যাও।(সূত্র: প্রথম আলো)

২। ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর ঐ দিনই মোস্তাকের মত খুনি অবৈধ, স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি এবং
খুনি ফারুক রশিদের সাথে সকল কাজে অংশ নেওয়া।

৩। স্বাধীনতার প্রানপুরুষ , হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা মুজিবের শিশু বাচ্চাসহ
পৃথিবির এ নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের মাত্র ৮ দিনের মাথায় খুনের পুরস্কার স্বরুপ খন্দকার মোস্তাক
নিজে জিয়াকে সেনাবাহিনী প্রধান হিসাবে প্রমোশন দিয়ে সেনা প্রধানের ব্যাচ পরিয়ে দেন।

৪। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত জিয়াউর রহমান নিজে প্রধান সামরিক আইন
প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ত্ব পালনকালে কর্নেল তাহের, সেনা বাহিনির প্রায় দেড় হাজার অফিসার- জোয়ান হত্যা করা,

৫। জেলখানায় জাতীয় ৪ নেতা হত্যাকান্ডসহ অসংখ্য হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষ এবং নেপত্যের নায়ক হিসাবে জড়িত ছিলেন জিয়া।

৬। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালিন রাষ্ট্রপতি সায়েমকে বন্ধুকের নলের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করে অবৈধভাবে পুন:রায় রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নিজেকে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষনা দেওয়া।

৭; ১৬। বর্তমানে জিয়ার বিধবা পত্নী খালেদা জিয়া অবশ্য জিয়ার সেই এক ই নীতি আরো কঠোরভাবে পালন করে চলেছেন। কারন তিনিও স্বাধীনতা বিরোধী আলবদর বাহিনী প্রধান রাজাকার আলবদর মুজাহিদ,
নিজামিদেরকে নিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৩৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জগতারন ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।

বাংলাদেশের মানুষ কেন খালেদা জিয়া ও খাম্বা তারেক চোরার কথা শোনা উচিত না। বি-এন-পি'র প্রতিষ্ঠার মহা নায়ক জিয়াউর রহমান-এর কর্মকান্ডের বর্ননার যৎসামান্য নীচে তুলে ধরা হলো -

- গণতন্ত্রে ভোটাধিকার মানুষের বৈধ অধিকার এবং গণতন্ত্রের মৌলিক শর্তও বটে।

এখন সকল রাজনৈতিক দল তাদের করণীয় ইচছা তথা তাদের ভবিষ্যতের কাজের পরিকল্পনা নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে। প্রশাসন সকল ভয়-ভীতি, আবেগ-অনুরাগ-বিরাগের বাইরে কাজ করবে এবং মানুষ নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের জন্য পরবর্তী শাসক নির্বাচিত করবে। এখন এসব করতে গিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত ও করণীয় কাজের তালিকা থাকবে। এসবই গণতন্ত্রের অংশ।

সব বিচার বিবেচনা করেই জনগণ তাদের রায় প্রদান করবে এবং সকল রাজনৈতিক দলকেই জনগনের রায়কে মেনে নিতে হবে তা তাদের পক্ষে-বিপক্ষে যাই হোক না কেন। তবে যে কোন অযুহাতেই জনগণের ভোটাধিকার হরণ বৈধ বা জায়েজ হতে পারেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.