নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিষক্ষয়

Bengal_gypsi

বিষক্ষয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ নিম্ম মানের ভিটামিন এ ক্যাপসুল আমদানিতে জড়িত???

১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪২

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ নিম্ম মানের ভিটামিন এ ক্যাপসুল আমদানিতে জড়িত????

দৈনিক সমকালের অনুসন্ধানে জানা গেছে ক্যাম্পেইনে সরবরাহকৃত ভারতীয় ওলিভ হেলথকেয়ার যে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমদানি করা হয়নি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ) এতে জড়িত।

সমকাল প্রতিবেন:

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিয়ে কোটি কোটি টাকা মূল্যের নিম্নমানের ভিটামিন এ ক্যাপসুল আমদানি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের স্বার্থান্বেষী কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের এসব ভিটামিন-এ আমদানি করা হয়। ১২ মার্চ জাতীয় ক্যাম্পেইনে ভিটামিন-এ ও কৃমিনাশক খাওয়ানোর পর শত শত শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। কয়েক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক একাধিকবার গণমাধ্যমে বলেছেন, সরবরাহকৃত ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সেবনে কোনো শিশুর মৃত্যু হয়নি। কোনো শিশু অসুস্থও হয়নি।

সমকাল অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্যাম্পেইনে সরবরাহকৃত ভারতীয় ওলিভ হেলথকেয়ার যে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমদানি করা হয়নি। বাংলাদেশে ওষুধনীতি অনুযায়ী যে কোনো বিদেশি ওষুধ আমদানি করতে হলে নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের ওলিভ কোম্পানির ভিটামিন-এ ক্যাপসুল বাংলাদেশে নিবন্ধিত নয়। কোম্পানিটি ৭টি উন্নত দেশের কোনোটিতেই নিবন্ধিত নয়। অর্থাৎ, তাদের প্রয়োজনীয় এফএসসি সার্টিফিকেট নেই। ভারতের ওই কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক দরপত্রে সর্বনিম্ন হলেও সরকারের ওষুধনীতির আলোকে তারা যোগ্য নয়। ওই কোম্পানির ভিটামিন-এ ক্যাপসুল ক্রয়ের ক্ষেত্রে তাদের দরপত্র প্রাক-মূল্যায়ন পর্যায়েই বাদ পড়ার কথা। এমনকি বিশ্বব্যাংকও ওই কোম্পানির ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সরবরাহের ক্ষেত্রে তাদের প্রাক-যোগ্যতা নেই বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্রয় বিভাগ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে (সিএমএসডি) পরিষ্কারভাবে জানিয়ে

দেয়। এতদসত্ত্বেও নিয়মবহির্ভূতভাবে অনাপত্তিপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ওষুধগুলো আমদানি করা হয়েছে।

ওষুধনীতিতে এনওসির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার ওষুধ আমদানির সুযোগও নেই বলে অভিমত দেন ওষুধ শিল্কসংশ্লিষ্টরা। কেবল সীমিত ক্ষেত্রে মুমুর্ষূ রোগীদের কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এনওসির মাধ্যমে ওষুধ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। অথচ ভারতীয় কোম্পানির ওষুধ আমদানিতে এনওসি নিয়মেরও ব্যত্যয় ঘটেছে। এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া এ ব্যাপারে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। একইভাবে বাংলাদেশে নিবন্ধিত নয় এবং যাদের এফএসসি নেই এমন একটি ভারতীয় কোম্পানির ওষুধ কীভাবে আমদানির অনুমোদন পেল তারও সদুত্তর মেলেনি মন্ত্রণালয়ের ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান সিএমএসডি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা যায়, স্থানীয় যে এজেন্ট ভারতীয় ভিটামিন-এ ক্যাপসুল আমদানি করেছে, তারা ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদপুষ্ট। যে কারণে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর অনন্যোপায় হয়ে ভারতীয় কোম্পানি ওলিভকে এনওসির মাধ্যমে ওষুধ আমদানির অনুমোদন দেয়। বিদেশ থেকে মান পরীক্ষার কথা বলা হলেও আমদানিকৃত ৬৮টি ব্যাচের ওষুধের মধ্যে মাত্র ১১টি ব্যাচের মান পরীক্ষা করিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ অবশিষ্ট ৫৭টি ব্যাচের ওষুধ মান যাচাই ছাড়াই খাওয়ানো হয়েছে। নিম্নমানের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল আমদানি, শিশুদের অসুস্থতা ও শিশুমৃত্যুর অভিযোগের যথাযথ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে অভিমত দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও চিকিৎসকরা।

অভিযোগগুলো সম্পর্কে কথা বলতে গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ভিটামিন-এ খেয়ে শিশুদের গণহারে হাসপাতালে ভর্তির পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই দিন স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন জানান, তদন্ত কমিটি ভিটামিনের ক্রয় প্রক্রিয়া, শিশুদের অসুস্থতাসহ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. সিফায়েত উল্লাহ সমকালকে বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ল্যাবে পরীক্ষা করিয়ে ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তথাপি সরকার অভিযোগগুলো তদন্তে কমিটি করেছে।

এদিকে খুলনায় এবারের জাতীয় ক্যাম্পেইনে ব্যবহৃত ওলিভ ও ব্যানার ফার্মা ছাড়াও গ্গ্নোব ফার্মাসিউটিক্যালসের ভিটামিন সরবরাহের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সিএমএসডি জানায়, এক লাখ ইউনিটের কিছু ক্যাপসুল সেখানে পাঠানো হয়েছে। এগুলো ২০১১ সালে গ্গ্নোবের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল। এর আগে ওলিভ ও ব্যানারের ওষুধ ব্যবহৃত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. সিফায়েত উল্লাহ গতকাল জানান, তদন্ত কমিটি অন্য একটি কোম্পানির ওষুধ কীভাবে খুলনায় গেল তাও যাচাই করবে।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি এসএম শফিউজ্জামান সমকালকে বলেন, জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক টেন্ডারে ওষুধ কিনলেও মান নিয়ে সামান্যতম সন্দেহ থাকলে তা প্রয়োগ করা উচিত হয়নি। তার মতে, মান নিয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ অনেক শিশুর অসুস্থতার মধ্য দিয়ে অপর্যাপ্ত প্রমাণিত হয়েছে।

মান নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রশ্ন :ভারতের ওলিভ হেলথকেয়ারের সরবরাহ করা ১০ কোটি ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল কেন্দ্রীয় সিএমএসডির গুদামে পেঁৗছায় গত বছরের অক্টোবরে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের স্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জ্যাকলিন টিএফ মোহন স্ব্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে মান সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে ক্যাপসুল বিতরণ না করার কথা বলেন। সরবরাহকারী কোম্পানির যোগ্যতা সম্পর্কেও চিঠিতে প্রশ্ন আছে। দরপত্র প্রক্রিয়ায় ওলিভ বলেছিল, নাইজেরিয়ায় ২০ কোটি ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে তারা। 'মেডফোড নাইজেরিয়া' নামে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা সরবরাহ করেছে। ব্যানার বিশ্বব্যাংকে অভিযোগ দিয়েছে, নাইজেরিয়ার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা আড়াই কোটি। ইউনিসেফ ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ এ ক্যাপসুল সরবরাহ করে। কাজেই অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি ক্যাপসুল সরবরাহের দাবিটি মিথ্যা।

কাগজপত্রে দেখা যায়, ১২ মার্চের ক্যাম্পেইনের জন্য সারাদেশে মোট আড়াই কোটি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সরবরাহ করা হয়েছিল। ওলিভের কাছ থেকে কেনা ওষুধ ঢাকা বিভাগের ১৮টি জেলাসহ মোট ২৪ জেলায় সরবরাহ করা হয়।

এনওসি দিয়ে কোটি কোটি টাকার ওষুধ আমদানির অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, পরিচালক গোলাম কিবরিয়াসহ তিনজন দায়িত্বে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার অধিদফতরে গিয়ে মহাপরিচালক জরুরি মিটিংয়ে অফিসের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরিচালক গোলাম কিবরিয়া সমকালকে বলেন, 'জাতীয় স্বার্থে' অনাপত্তিপত্রের মাধ্যমে ওষুধ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে সিএমএসডি ওষুধ ক্রয় করলে অনাপত্তিপত্র না দেওয়ারও সুযোগ থাকে না। অনভিজ্ঞ ও প্রশ্নবিদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া প্রসঙ্গে সিএমএসডি পরিচালক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সমকালকে বলেন, টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি নাইজেরিয়ায় যোগাযোগ করে ওলিভের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। কাগজপত্রে তার প্রমাণও রয়েছে। ৬৮টি ব্যাচের মধ্যে মাত্র ১১টি ব্যাচ পরীক্ষা করানো সম্পর্কে তিনি বলেন, র্যা নডম পদ্ধতিতে ১০ শতাংশ ওষুধ পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তিনি বলেন, ওষুধ সরবরাহে 'মনোপলি' বজায় রাখতে একটি কোম্পানি অভিযোগগুলো করে যাচ্ছে।

Click This Link

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

সাদা রং- বলেছেন: এ অপকর্মের সাথে যারা জড়িত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাবস্ত করে বিচারের মুখোমুখি দাড়করানো উচিত।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:০০

মদন বলেছেন: সব চাপা দেয়া হবে। মিডিয়া তো এখন টাকার দাস।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

সজল৯৫ বলেছেন: দেশের কোটি কোটি শিশুর জীবন জড়িত এমন একটা বিষয়ে এমন ঝুকিপূর্ন আচরণ না করে আরো দায়িত্বশীল ভুমিকা নেয়া উচিত ছিল। আর সত্যিই যদি শিশুদের জীবনকে ঝুকির মধ্যে ফেলে কেহ ফায়দা নিয়ে থাকে তার কঠিন সাজা হওয়া উচিত।

ধন্যবাদ লেখককে।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:২০

জেমস বন্ড ২০১২ বলেছেন: রাজাকার ট্যাগ এর জন্য তৈরে হন.

৫| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০০

জহির উদদীন বলেছেন: তারপরও সরকারের ও হানিফের চাপাবাজি বন্ধ হয় না......
এমন একদিন আসতে পারে এই হানিফ শরীরে মলম লাগানোর জায়গা খুঁজে পাবে না........তার মুখের কারণে....

৬| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪২

নস্টছেলে বলেছেন: এই সব কি?


অনুমোদনহীন ক্যাপসুলও পাঠানো হয়েছিল


দেশের কিছু এলাকায় শিশুদের অনুমোদনহীন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে খুলনার নয়টি উপজেলায় গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস নামের দেশি একটি কোম্পানির ক্যাপসুল খাওয়ানোর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। জাতীয় কর্মসূচিতে এই কোম্পানির ভিটামিনের অনুমোদন নেই। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এই ক্যাপসুল পাঠিয়েছিল।
১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির ও স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেছিলেন, ১২ মার্চ সারা দেশে কানাডার ব্যানার ও ভারতের অলিভ কোম্পানির ক্যাপসুল শিশুদের খাওয়ানো হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত একাধিক পরীক্ষাগারে ক্যাপসুলের মান পরীক্ষা করা হয়। এসব ক্যাপসুল মানসম্পন্ন, জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ।
তবে ব্যানার ও অলিভ ছাড়াও বাংলাদেশের গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুদের খাওয়ানো হয়েছে। খুলনার সিভিল সার্জন গোলাম মুর্তজা শিকদার গতকাল প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, খুলনা জেলার নয়টি উপজেলায় ব্যানারের পাশাপাশি গ্লোবের ক্যাপসুল শিশুদের খাওয়ানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে গতকাল স্বাস্থ্যসচিব প্রথম আলোকে বলেন, অন্য কোম্পানির অনুমোদনহীন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল কী করে জাতীয় কর্মসূচিতে ঢুকল, তা অবশ্যই তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হবে। যোগাযোগ করা হলে গ্লোবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হারুন অর রশিদ বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার ২০১১ সালে তাদের কয়েক লাখ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল কিনেছিল। কী জন্য কিনেছিল, তিনি এখন তা মনে করতে পারছেন না। তবে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে গ্লোব কখনো ক্যাপসুল সরবরাহের কাজ পায়নি। জাতীয় কর্মসূচিতে গ্লোবের ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন গ্লোবের এমডি।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টোরকিপার আবু হাসান জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পাঠানো দুই ধরনের ক্যাপসুল (এক লাখ ইউনিটের নীল ও দুই লাখ ইউনিটের লাল) ও কৃমিনাশক বড়ি তাঁরা ২৬ ডিসেম্বর পেয়েছিলেন। এর মধ্যে এক লাখ ইউনিটের নীল ক্যাপসুল গ্লোব কোম্পানির। অব্যবহূত কিছু প্যাকেট এখনো জমা আছে।
এসব ক্যাপসুল দেশের আর কোন এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে, গতকাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা তা বলতে পারেননি। তবে অসমর্থিত একটি সূত্র বলছে, আরও কয়েকটি জেলায় গ্লোবের ক্যাপসুল পাঠানো হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক আশরাফ হোসেন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় কর্মসূচিতে সব সময় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। গ্লোবের কাছ থেকে কখনোই জাতীয় কর্মসূচির জন্য ভিটামিন এ ক্যাপসুল কেনা হয়নি।’ তাহলে কীভাবে ও কারা জাতীয় কর্মসূচিতে অনুমোদনহীন ক্যাপসুল অন্তর্ভুক্ত করল, দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাই তা বলতে পারছেন না।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক (ভান্ডার ও সরবরাহ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১১ সালের মে মাসে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (এক লাখ ইউনিটের) কেনা হয়েছিল। ওই ক্যাপসুল জাতীয় কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যাবে না, এ রকম কোনো নিয়ম নেই। তিনি আরও বলেন, ‘পুরান মজুত তো ব্যবহার করতে হবে। নাকি আমরা তা ফেলে দেব?’ ক্যাপসুলের মানও যথার্থ বলে দাবি করেন তিনি।
১২ মার্চ দেশের ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও দুই বছর থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ক্যাপসুলের সঙ্গে একটি কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো হয়। ওইদিন ভিটামিনের মান নিয়ে প্রায় সারা দেশে বিরূপ প্রচার চলে। অন্যদিকে অনেক জেলায় শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে অনেক শিশু ভর্তি হয়। ঘটনা তদন্তে মন্ত্রণালয় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আজ শনিবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে তদন্তে যাওয়ার কথা।
সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক সূত্রে জানা যায়, জাতীয় কর্মসূচির জন্য ১০ কোটি ক্যাপসুল সরবরাহের দরপত্রে কানাডার ব্যানার (এ দেশের এসএস সায়েন্টিফিক), ভারতের অলিভ (এ দেশের জনতা ট্রেডার্স) এবং গ্লোব অংশ নেয়। সরবরাহের কাজ পায় অলিভ। কার্যাদেশ দেওয়ার পর অলিভের ক্যাপসুলের মান নিয়ে সন্দেহ দেখা দেওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় দুই দফায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করায়।
সচিব নিয়াজউদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ভিটামিন ‘এ’ কেনার প্রক্রিয়া, সংরক্ষণ, সরবরাহ পুরোটাই তদন্ত করে দেখা হবে। দায়িত্ব পালনে যাঁরা অবহেলা করেছেন, তাঁদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে।
{প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন খুলনা প্রতিনিধি কাজী আবদুল্লাহ}


অনুমোদনহীন ক্যাপসুলও পাঠানো হয়েছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.