|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
 বিএইচ মাহিনী
বিএইচ মাহিনী
	I am a social worker.
ঈদ মোবারক। 
হযরত ইবরাহিম ও ইসমাইল আ. এর স্মৃতি বিজড়িত ইসলামের অন্যতম একটি ওয়াজিব ইবাদত হলো কুরবানী। পিতার ত্যাগ ও সন্তানের অনুগত্যের এক ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো কুরবানী। হৃদয়ের পাপ-পংকিলতা, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ ও কুরিপুগুলো দুর করার উত্তম উপায় হলো কুরবানী। কুরবানী শব্দটি এসেছে আরবি “কুরবানুন” বা “কুরবানান” হতে যার অর্থ হলো নিকটবর্তী হওয়া বা সন্নিধ্য লাভ করা। কুরবানী শব্দের আরেকটি আরবি প্রতিশব্দ হলো “উযহিয়্যাহ” বা “নুসুকুন”। যার বাংলা অর্থ হলো ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন পার্থিব বস্তু উৎসর্গ করা’। পক্ষান্তরে এর উদ্দেশ্য যদি হয় গোসত খাওয়া, তবে এর ফল হবে বিপরীত। তখন এর দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টির পরিবর্তে বান্দার কল্যাণ সাধন হবে মাত্র। কেননা আল্লাহ তায়ালা সুরা হাজ্বের ৩৮ নং আয়াতে বলেছেন-“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট পৌছায় না কুরবানীর পশুর গোস্ত বা রক্ত, কেবল পৌছে তোমাদের অন্তরের পরিশুদ্ধতা তথা ‘তাকওয়া’। কুরবানী শুরু হয়েছিল হযরত আদম আ. এর যুগে আর তা পরিপক্কতা লাভ করে হযরত ইবরাহিম আ. এর সময়ে। কুরবানী করা সুন্নাত ইবরাহিমী। তবে নবী পাক স. সামর্থবানদের জন্য তা আবশ্যক করে দিয়েছেন। এ প্রসংগে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-“আপনি আপনার প্রভূর উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন ও কুরবানী করুন। এছাড়াও সুরা হাজ্বে বলা হয়েছে-“আমি (আল্লাহ) প্রত্যেক জাতির জন্য কুরবনীর নিয়ম করে দিয়েছি, যাতে তারা চতুষ্পদ জন্তুর উপর আল্লাহ নাম স্মরণ করে। কুরবানী করা ওয়াজিব হলেও তা সকলের জন্য আবশ্যক নয়, শুধুমাত্র যারা সদকাতুল ফিতর ও যাকাত দিয়ে থাকে তাদের উপর ওয়াজিব। 
 কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহঃ
১. মুসলিম হওয়া। অমুসলিমের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। 
২. স্বধীন হওয়া। পরাধীন বা দাস-দাসীর উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। 
৩. মুকীম হওয়া। মুসাফিরের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। যেমন আলী রা. বলেছেন-“মুসাফিরের জন্য ‘জুময়া’ ও কুরবানী জরুরী নয়”।  
৪. নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হওয়া। অর্থৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রোপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ পরিমান সম্পদ যদি কারো নিকট থাকে তবে তা যাকাতর নিসাবে ন্যায় এক বছন পূর্ণ হওয়া শর্ত নয়। বরং এ পরিমান সম্পদ সাহিবে নিসাবের কাছে ১০ জিলহজ সুবহে সাদিকের পূর্বে থাকলেই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। 
 পশু কুরবানীর জরুরী মাসয়ালাঃ
১. কুরবানী করা ওয়াজিব। 
২. যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, সে যদি কুরবানীর উদ্দেশ্যে পশু ক্রয় করে তাবে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়ে যা। 
৩. পশু কুরবানী প্রত্যেক বছরই ওয়াজিব, এমন নয় যে, এক বছর দিলে আর পরবর্তিতে দিতে হবে না। 
৪. যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার নিজের নামেই কুরবানী দিতে হবে। 
৫. জিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিক কুরবানী করা যায়। রাতেও কুরবানী করা যাবে, তবে দিনে করা উত্তম । 
৬. কুরবানীর বৈধ পশু হলো- ১. উঠ,  যার বয়স পাঁচ বছর পূর্ন হতে হবে। 
 ২. গরু ও মহিষ, যার বয়স দুই বছন পূর্ণ হতে হবে। 
 ৩. ভেড়া, দুম্বা ও ছাগল যার বয়স এক বছর পূর্ণ হতে হবে। তবে ছয় মাসের ছাগল যদি এক বছরের ন্যায় মোটা তাজা মনে হয় তবে তা দ্বারাও কুরবানী করা যাবে। 
৭. কুরবানীর জন্য অযোগ্য পশু- ১. উক্ত ৬ শ্রেণির পশু ছাড়া অন্য যে কোন পশু। 
 ২. উভয় বা এক চোখ অন্ধ পশু্ 
 ৩. লেংড়া বা খোড়া পশু্ 
 ৪. অতিশয় দুর্বল পশু
 ৫. দাতহীন পশু
 ৬. জন্মগত কান নেই যে পশুর
 ৭. যে পশু ময়লা আবর্জনা বা মলমুত্র ভক্ষণ করে
 ৮. যে পশুর এক-তৃতীয়াংশ কান কাটা
 ৯. যে পশুর এক-তৃতীয়াংশ লেজ কাটা
৮. কুরবানীর গোস্ত নিজে খাবে ও অন্যদের মাঝে বন্টন করতে হবে। তবে তা তিন ভাগ করে একভাগ নিজে, একভাগ আত্মীয়-স্বজন ও একভাগ অসহায়, গরীবদের দান করতে হবে। 
৯. কুরবানীর উদ্দেশ্যে মানত হলে তা নিজে খেতে পারবে। তবে শুধু মাত্র মানত হলে তা নিজে খাবে না, বরং সমস্ত মাংস সদকা করতে হবে। 
১০. ইচ্চা করলে কুরবানীর সব গোস্ত বিলিয়ে দেয়া যাবে। 
১১. বিক্রি করা বৈধ নয়। 
১২. মুসলিম অমুসলিম সকলকে কুরবানীর গোস্ত দেয়া যাবে। 
১৩. মুজুরী পরিশোধ বৈধ নয়। 
১৪. অংশীদারের ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করা। 
১৫. অনুমান করে বন্টন নয়। 
১৬. ইচ্ছাকৃত কমবেশি করলে সকলের কুরবানী বাতিল হয়ে যাবে। 
১৭. চামড়া সদকা করতে হবে। 
১৮. জুতা বা ব্যাগ তৈরি করে নিজে ব্যবহার করা যাবে। 
১৯. বিনিময় বা বিক্রি করে উপকার লাভ করা যাবে না। 
২০. ফকির বা অভাবী, মিসকিন বা নি:স্ব, অমুসলিমের মন জয় করা উদ্দেশ্যে, সম্বলহীন পথিক, আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম কারী, ইসলামী দাওয়াত বা প্রচারে, অনাথ, এতিমদের মাঝে কুরবানীর পশুর চামড়া বা তার মূল বন্টন করা যাবে। 
২১. নিজের মাল থেকে সন্তানের কুরবানী বা আকিকা ওয়াজিব নয় তবে দেয়া যাবে। 
২২. সুবহে সাদিকের পরই কুরবানী শুরু করা যাবে, আর শেষ সময় ১২ই জিলহজ সুর্যাস্ত পর্যন্ত। 
 কুরবানীর গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও শিক্ষাঃ
পার্থিব জীবনে অহংকার ও পাপ মুক্ত থাকা এবং পরকালীন জীবনে সফলতার জন্য কুরবানী করা অতীব জরুরী। সামর্থবানদের জন্য কুরবানী করার গুরুত্ব বর্ণনা করে মহানবী স. বলেছেন-“সামর্থ থাকার পরও যদি কেউ কুরবানী না করে তবে সে যেন আমাদের ইদগাহে না আসে”। কুরবানীর প্রথম শিক্ষা হলো ‘তাকওয়া’ অর্জন করা। দ্বিতীয় শিক্ষা হলো, ত্যগের মানসিকতা অর্জন কর। মহানবী স. বলেছেন “তোমরা কুরবানী কর, কেননা কুরবানীর পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে রয়েছে একটি করে নেকী”। কেয়ামতের দিন একটি নেকির কী মূল্য তা বিবেচনা করেই আমাদের কুরবানী করতে হবে। সেদিন একটি নেকির জন্য মানুষ দারে দারে ঘুরবে, কিন্তু কেউ কারো সামান্যতম উপকারে আসবে না। তাই আসুন ত্যাগের মহিমায় উজ্জিবিত হয়ে তাকওয়া অর্জনের মাসসে কুরবানী করি। আল্রাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি। আল্লাহুম্মা আমিন।  
 ১ টি
    	১ টি    	 +০/-০
    	+০/-০©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩  সকাল ১০:৩৮
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩  সকাল ১০:৩৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কুরবানীর গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও শিক্ষাঃ
পার্থিব জীবনে অহংকার ও পাপ মুক্ত থাকা এবং পরকালীন জীবনে সফলতার জন্য কুরবানী করা অতীব জরুরী।
হায় কি দূভার্গ্য!!! সেই কোরবানী এখন হয়ে গেছে অহংকারের প্রতীক! সৎ সত্য মানুষের হিমশিম জীবনে চেয়েচেয়ে দেখে দূর্নীতিবাজ, আর অসৎদের গরম পয়সার গরম প্রতিযোগীতা লক্ষ্য টাকার পশু কেনার পাশবিক প্রতিযোগীতা....
সাধারন মুমিন হিমশিম খায় কোরবানী নামের এই অসম খেলায়!
আমাদের কোরবানীর প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জিত হোক। এই ঈদে এই কামনা।
ঈদ মোবারক।