নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চৈত্র পূর্ণিমায় বসছে মেলা খ্রি. ১৫ শতাব্দীর অভয়নগরের প্রাচীন ঐতিহ্য বাশুয়াড়ী খানজাহান আলী দিঘি

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১৬


বি.এইচ.মাহিনী

ইসলামে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ধর্মের আগমন ঘটে হিজরি ২য় শতক তথা সপ্তম খ্রিষ্টব্দে। তবে কোনো কোনো ঐতিহাসিক রাসুলের যুগেই ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশে ইসলামের আগমন বলে ধারণা করেছেন। এসময় থেকে ইসলামের খেদমতে যারাই এ ভূখন্ডে আগমন করেছেন তাঁরা সবাই তাদের কিছু অলৌকিক নিদর্শন রেখে গেছেন ভবিষৎ প্রজন্মের জন্যে। তেমনি একটি নিদর্শন হলো অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের বাশুয়াড়ির পীর খানজাহান আলীর দীঘি। এ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বাশুয়াড়ী খানজাহান আলী দিঘি অন্যতম। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চৈত্র পূর্ণিমায় বসছে সেখানে বাৎসরিক মেলা। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে মেলা চলবে সপ্তাহ ব্যাপি। মেলায় সমাগম ঘটবে আশেপাশের কয়েকটি জেলার মানুষের। ইতিহাস নন্দিত জননায়ক ও কামেল দরবেশ খানজাহান আলী জৌনপুর হতে যশোর আসেন। তিনি পায়গ্রাম কসবা হতে দলবল নিয়ে রাস্তা, দীঘি ও মসজিদ নির্মাণ করতে করতে পূর্বাভিমুখে অগ্রসর হতে থাকেন। কিছুদূর আসার পর ভৈরব পার হয়ে অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের বাশুয়াড়ী গ্রামে বিশ্রামের জন্য আস্তানা ফেলেন। খানজাহান আলীর বিশ্রামেরও একটি উদ্দেশ্য থাকত। তার বিশ্রাম মানে দীঘি, রাস্তা ও মসজিদ ও নগর। যেখানে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন সে স্থান হয়ে উঠেছে ঐশ্বর্যময়। বাশুয়াড়ীতে তিনি উচু পাড় সম্বলিত ২৭৫ গজ দৈর্ঘ্য ও ২২৫ জগ প্রস্থের আয়তনে একটি বিশাল দীঘি খনন করেন। পাড়সহ দীঘির আয়তন প্রায় ৭০ বিঘা। দীঘির চর্তুপার্শ্বে পাড়ের উপর রোপন করেন প্রচুর বৃক্ষ। স্থাপন করেন ঘাট। দীঘির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ঈদের জামায়াতের জন্য সুউচ্চ মিনার সম্বলিত ‘ঈদগাহ’। কথিত আছে, তিনি একদিন একরাতের মধ্যে এ বিশাল দীঘি খনন করেন। পঞ্চাশ হাজার লোক দীঘিখননে অংশ নিয়েছিলেন। প্রতিবছর চৈত্রপূর্ণিমায় দীঘির চার পাশে বিশাল মেলা বসে। হাজার হাজার মানুষ পূণ্য অর্জনের জন্য এ দীঘিতে সমবেত হন।শুধু মুসলমান নয় বরং বিভিন্ন ধর্মের লোকজন খানজাহান আলীর উদ্দেশ্যে দীঘীতে মানতের মোরগ-মুরগী, কবুতর, হাঁস, দুধ ইত্যাদি নিক্ষেপ করেন। কিছু লোক ছেড়ে দেয়া মোরগ-মুরগী, ও কবুতর ধরার জন্য পানিতে নেমে সচকিত হয়ে থাকে। মেলা ছাড়াও প্রতিদিন খানজাহান পীরের নামে শত শত লোক শিরনি মানত করেন। জনশ্রুতি, পুকুরে প্রধান ঘাটে একটি পাথর ছিল। ভৈরব নদীর ¯্রােত-উজানের বিপরীত দিক হতে পাথরটি ভেসে এসেছিল। পাথরের ওজন ছিল ষাটমন। যে কেউ খাস দিলে হাত দিলে পাথরটি শোলার মতো হালকা হয়ে হাতে চলে আসত। কিন্তু বদ অন্তরে এক হাজার লোকও পাথরটি সামান্যও নড়াতে পারতো না। শুভরাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি নেতা মোঃ শাহ্জাহান মুন্সী জানান, একসময় পাথরটি ছিল এখন নেই। মানুষের পাপাচার সহ্য করতে না পেরে পাথরটি আত্ম গোপন করেছে। দীঘির পাড় বৃক্ষময় প্রকৃতি ও নীল সলিলের স্বচ্ছ পরিস্ফুটন অবাক করে দেয় প্রান আর মন। এখানে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বসছে ঐতিহ্যবাহী দীঘির মেলা। মেলার নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বাশুয়াড়ি পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা জানান, এবারের মেলাকে ঘিরে বাশুয়াড়ি দীঘির পাড় ও আশেপাশের এলাকায় শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। যাতে সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে চলাচল করতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.