![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a social worker.
শুভ বুদ্ধির উদয় হোক...
---বি.এইচ.মাহিনী
আজ বিবেকে একটি প্রশ্ন বড়ই নাড়া দিচ্ছে। আসলে আজও কী আমরা (বিশ্ববাসী) মানুষ হতে পেরেছি? বনের পশুও বুঝি আজ হার মানছে আমাদের তথা মানুষের হিং¯্রতায়। কাকে মানুষ বলছি! মানুষ (মান ও হুশ) হলে কী মানুষ হয়ে আর একজন মানুষকে এভাবে ছিড়েভুড়ে, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে, ধর্ষণ ও সম্ভ্রমহানী করে অকাতরে মাইন পুতে মারতে পারতাম। আমরা (পৃথিবীবাসী) আজ বুঝি আর মানুষ নই। একদিকে হয়েছি পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট, অন্যদিকে বধির আর অন্ধ।
রহিঙ্গাদের মারছে বর্মীরা। কিন্তু তারাতো মানুষ। ধর্ম বিশ্বাস যার যেটা হতে পারে। কিন্তু সর্বপরি আমরা মানুষতো! আজ তারা (বর্মীরা) যা করছে আমরাও কী সেই পথ অর্থৎ বুদ্ধদের হত্যার পথ বেছে নিব। কখনোই না। তবে তো মানুষ আর কুকুরে কোনো পার্থক্য থাকে না। সংখ্যালঘু বুদ্ধদের মেরে এমন হিংস ও মানবতা বিরোধী কাজ কোনো কালেই আমরা করব না। কিন্তু তারা (মিয়ানমারের বুদ্ধরা) কীভাবে করছে এমন মানবতা বিরোধী গণহত্যা? তাদের ধর্মে তো ‘অহিংসা পরম ধর্ম’। ‘জীবহত্যা মহাপাপ’। এগুলো তো তাদের বুদ্ধদেবের শুদ্ধ বাণী। পরিস্থিতি দৃষ্টে মনে হচ্ছে রহিঙ্গারা হয়তো জীব নয়। তা না হলে এভাবে মারবে কেন তাদের? কী অপরাধ তাদের? বিশেষত শিশু, নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও অসুস্থ রোগীদের। আর অপরাধ যদি করেই থাকে তবে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদরে বিচার হোক। কিন্তু তাই বলে এমন বিভীষিকাময় হত্যযজ্ঞ? জানি না কীভাবে বিশ্ববাসী অন্ধ বধির হয়ে আছে। কীভাবে আজ বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ, রুদ্ধ? ইসলাম বলে, মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। আশরাফুল মাকলুকাত। সনাতন ধর্ম বলে, মনুর সন্তান বলে আমাদের মানুষ বলা হয়। জিশু তাই বলেছেন। অথচ, আমরা আজও মানুষ হতে পেরেছি কী? আমরা কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, কেউ বুদ্ধ, কেউ বা খৃষ্টানসহ অনেক কিছুই হয়েছি। কিন্তু মানুষ হতে পেরেছি কী? মানুষ হিসাবে আমাদের পরিচয় কখনো হয়নি। আর হয়তোবা হবেও না। আমরা নিজ ধর্মের পরিচয়েই নিজেকে শ্রেষ্ঠ দাবী করি। তাই আজ বিশ্বজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে রহিঙ্গাদের কেন্দ্র করে। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের মান্ষু ভাবতে পারতাম, তাহলে হয়তো বিশ্ব বিবেক গর্জে উঠতো। মানবতা শান্তি পেত, পেত স্বস্তিও। পৃথিবীটা হতো বাসযোগ্য শান্তি পৃথিবী। পৃথিবীতে চলত মাত্র একটি যুদ্ধ। আর তা চলত অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধ। তাহলে হয়তো রহিঙ্গাদের এমন পরিনতি হতো না। পৃথিবীর সকল ধর্মই তাই বলে। অথচ, বকধার্মিকের ধর্মজ্ঞানে, স্লোগান-স্লোগান আর স্লোগানে ধর্ম খাতার কর্মকথা আজ মর্মব্যথায় পরিণত হয়েছে। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে রহিঙ্গাদের পাশে দাড়াই। মুসলিম হিসাবে নয়, শুধুই মানুষ হিসেবে। আসুন, আমরা ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে ‘মানুষ’ পরিচয় ধারণ করে রহিঙ্গাদের পাশে নয়, অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মানুষের পাশে দাড়াই। কাজী নজরুল বেঁচে থাকলে হয়তো নতুন সাম্যের গান রচিত হতো, কবিতা-প্রবন্ধ সৃষ্টি হতো। এমন হাজারও নজরুলের পৃথিবীব্যাপী বড়ই প্রয়োজন আজ। হে দয়াময় সৃষ্টিকর্তা, সর্বশক্তিমান, তুমি আমাদের অন্তরে মানবপ্রেম জাগিয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন!
১৬-০৯-২০১৭
©somewhere in net ltd.