নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়, ঘিরে নিলো কালে। আর কি হবে মানব জনম, বসব সাধু মেলে ।

ভুল বানান

হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়, ঘিরে নিলো কালে। আর কি হবে মানব জনম, বসব সাধু মেলে ।

ভুল বানান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেমন্ত

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫০

বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে।।আমি শুয়ে আছি জানালার কাছের এক সিটে।।মেসের বেড গুলোকে বলা হয় সিট,এই সিটের এক পাশের থেকে কিছুটা ভাঙ্গা,এভাবেই এর উপর শুতে হয়,শুতে শুতেই শুরু হয়ে যায় যন্ত্রণা।।যন্ত্রণাটা আপাতত কোন ব্যাপার না।।আমি বাইরের শব্দ খুব মনোযোগ সহকারে শুনছি।টিপটিপ টিপটিপ টিপটিপ করে একটানা কিছুক্ষণ শব্দ বাড়ছে,তারপর হঠাত করে কমে যাচ্ছে,আবার বাড়ছে।।এই সিটের আরো সুবিধা আছে এখানে শুয়েই জানালা খোলা যায়।এই জানালার কোন গ্রিল নেই।।আমি যে রুমে আছি,এই রুমে আরো দুইটা সিট আছে,যাদের কোনটাই এই জানালার সুবিধা নেই।।জানালার সুবিধার কাছে পিঠ যন্ত্রণা কোন ব্যাপার ই না।।আস্তে আস্তে টিপটিপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমি জানালা খুলে দিলাম, এখানে রাতে জানালা খুলে রাখা রিস্ক।যখন তখন যে কোন কিছু চুরি হয়ে যেতে পারে তবুও খুললাম।সাথে সাথে একটা শীতল বাতাস আসল ভেতরে,আমি বাতাসটাকে অনুভবের চেষ্টায় নামলাম।শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে।।টিপটিপ শব্দ এখন আর শোনা যাচ্ছে না।।আমি চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করলাম,চোখের পাতা শক্ত হয়ে গেছে।আমি তাকে তার মত থাকতে দিলাম জোর করলাম না।।থাকুক সবাই নিজের মত।।


সন্ধ্যা বেলায় বিএল কলেজের ভেতরে ঢুকে হাঁটতেছি,জীবনানন্দ দাশের মত উদ্দেশ্যহীন ভাবে হাঁটা না,উদ্দেশ্য সহ হাঁটতেছি,নজরুল হলের পাশে কি একটা হল আছে যে হলে একজনের পেট দা ঢুকিয়ে এমাথা ওমাথা করে দেওয়া হয়েছিল ওইটাতে যাচ্ছি।। প্রতিমাসে দুই একজনকে জবাই টবাই করা এখানকার স্টুডেন্টরা তাদের পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করে।।২/১ দিন বিড়ি না খেলেও চলে কিন্তু মাসে ২/১ টা লাশ বি এল কলেজে না পড়লে মনে হয় এই মাসে কি যেন একটা হয় নি।।সারা মাস স্টুডেন্ট রা অপেক্ষা করে কখন একটা লাশের খবর আসবে।।খবর পাওয়ার সাথে সাথে ফেসবুকে ফ্রেন্ডরে ট্যাগ দিয়ে স্টাটাস দেয় মামা চলে এসো খবর আছে,সাথে দুইটা গোল্ডলিফ আইনো,আমি বকুল তলায় আছি,কাকী এইখানে ৯ টাকা নেয় তুমি তো জানো,বাইরে ৮ টাকা তুমি নিয়ে আসো,এক টাকা বাঁচুক,আমার বাঁচা মানে তোমার বাঁচা।।
ওখানে জামিল নামের আমার এক ক্লাসমেট থাকে।।পৃথিবীতে যত জন মেধাবী ছাত্র জন্মেছে সে তার মধ্যে অন্যতম।।এমন কোন প্রশ্ন নেই যার উত্তর সে জানে না।।তার রুমে যখনই যাওয়া হয়,দেখা যায় সে বই নিয়ে বসে পড়তেছে।।যে চ্যাপ্টার পড়বে সেটা না শেষ হওয়া পর্যন্ত তার পাশে বোমা মারলেও সে কোন কথা বলবে না।।যখন চ্যাপ্টার শেষ হবে মুখ উঁচু করে বলবে,কি অবস্থা তোর?? পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখানে কি করিস?? আর মাত্র ১৫ মাস পর পরীক্ষা। হিসাব আছে তোর কোনো??
তুই হিসাব রাখছিস তো এতেই হবে।।
বিরক্ত হয়ে বলে,আমি হিসাব রাখলে কিভাবে হবে?? যার পড়া তাকেই তো পড়তে হবে।।যা এখানে সময় নষ্ট না করে পড়।।
একটা প্রশ্ন ছিল??
অতিমাত্রায় খুশি হয়ে বলল 'গুড বল কি জানতে চাস'
মনে কর,আধা ঘন্টা পরে পৃথিবী উল্টে যাবে।।এখন আমার কি করা উচিত??
সাথে সাথে জামিল মুখটা বেকিয়ে বলল, ' আমার চোখের সামনে থেকে যা,আগামী দশ দিন যেন তোর মুখ আমাকে না দেখতে হয়'
আমি বেরিয়ে আসলাম।।জানার ইচ্ছা কোন সাধারণ ইচ্ছা না।।এই ইচ্ছা সবার থাকে না।।কিছু কিছু মানুষ কোন কিছু না জেনেই জীবন পার করে দেয়,তাদেরকে যদি যেয়ে বলা হয়,ভাই এখন কয়টা বাজে জানেন??
এখন ৫ টাও বাজতে পারে,ছয়টা ও বাজতে পারে,ফিফটি ফিফটি চান্স,এই দুনিয়া চলে আল্লাহর ইশারায় ভাইজান,এখন যদি ২ টা বাজে আল্লাহ ইচ্ছা করলেই ৩ টা করে দিতে পারে।।শুধু কুন বলার দরকার।।কুন মানে হও।।আল্লাহর খেলা মানুষের বোঝার সাধ্য নাই ভাইজান।।
এরকম প্রাণীর সম্মুখীন আমি কয়েকবার হয়েছি।।এদের পার্মানেন্ট ঠিকানা হয় সাধারণত গাজার আড্ডায়।।গাজায় টান দেওয়ার পর এরা আর এই দুনিয়ায় থাকে না।।তখন এদের সাথে গল্প করে মজা পাওয়া যায়।।


এখন প্রায় রাত ১০ টা বাজে আমি বসে আছি এক গাঁজার আড্ডায়।। তিনজন মিলে গাঁজা তৈরী করছে।।একজন সিগারেটের ফিল্টার থেকে তামাক বের করছে,একজন গাঁজা ছোট ছোট করছে, অন্যজন এই দুইজনকে হেল্প ।।গাঁজা বানানো কোন সহজ কাজ না।।এর জন্য পরিশ্রম করতে হয়।।বানানোর পর এক এক করে টানতে শুরু করলো।।কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি পাল্টে গেল।।তিন জনই মাথা নিঁচু করে বসে আছে।।কারোর যেন কোন হুঁশ নেই।।আমি এসেছিলাম এদের সাথে কথা বলতে, এরা বোধ হয় আজকে আর কথা বলতে পারবে না।।আমি উঠে আসছিলাম,পেছন থেকে ডাক এলো
কই যান ভাইজান বহেন,আমরা এহনো মরি নাই ভাইজান,এই রাইতে আপনারে একা ছাড়ুম না,বাইরের অবস্থা ভালা না।।আমি বসলাম।।
ভাইজান
হুঁ
দুনিয়ার অবস্থা ভালা না ভাইজান,যে কোন সময় যে কোন কিছু ঘটবার পারে।।
সেতো ঠিক।।
সাবধান থাইকেন ভাইজান।।
অবশ্যই।।
কোন সমস্যা হইলে আমারে কইবেন,এই মজিদ বাঁইচ্চা থাকতে আফনের ধারে পাশেও কেউ আইবার পারবো না ভাইজান।।
ঠিক।।
ভাইজান
হুঁ
আমি আপনারে বহুত পেয়ার করি।।
জানি
আপনার লাইগগা জান কোরবানি দিয়া দিমু ভাইজান।।
গাঁজা কেন খাও??
ভাইজান আমি গাঁজা খাই,আবার খাই না।।এই দুনিয়ায় কোন কিছু সিউর কইরা কওন যাই না।। আমি মজিদ আবার আমি মজিদ না।।সব জায়গায় ফিফটি ফিফটি চান্স।।
সবই আল্লাহর খেলা ভাইজান।।
হুঁ আমি যাই
এত রাইতে কই যাইবেন ভাইজান,বহেন।।
না আমার অনেক কাজ।।
দাঁড়ান আমি আফনারে লগে লইয়া যায়।।
বলে মজিদ যেই দাঁড়ালো উল্টে পড়ে গেলো।।আমি তারে শোয়াই দিয়ে চলে এলাম।।
হেমন্ত কাল চলছে বাইরে হালকা হালকা ঠান্ডা ।আকাশ ফেঁটে জোঁছনা পড়ছে ।এই জোঁছনা দেখতে দেখতে আমি এগুচ্ছি।।এই জোঁছনার কাছে ঠান্ডা কোন ব্যাপারই না ।হঠাৎ করে একটা কুকুর করুণ সুরে ডেকে উঠলো।।
শীতের সময় যেদিন চাঁদনি রাত থাকে সেদিন কুকুর দের মাঝে একরকম বিভ্রম জাগে।।তারা করুণ সুরে ডাকতে থাকে।।কেউ আবার শুধুই ঘেউ ঘেউ করতে থাকে।।এ যেন একটা খেলা।।এই খেলার নানা নিয়ম কানুন আছে।।প্রথমে কুকুররা সোজা হয়ে বসে,তারপর গলা লম্বা করে টান দিয়ে ডাক দেয়।।ডাক শেষ হয়ে গেলে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি খায়,এবার শুয়েই গলা লম্বা করে ডাক দেয়।।
এই স্বভাবটা মানুষের মাঝেও আছে।।রাত দুপুর হলেই কষ্ট পাওয়া মানুষগুলো দরজা জানালা বন্ধ করে প্রথমে চেয়ারে বসে।।মুখ হাত দিয়ে চেপে রাখে,দুচোখ বেয়ে অবিরাম ধারায় পানি পড়তে থাকে,এক পর্যায় তারা বেডে শুয়ে পড়ে হালকা শব্দ করে কাঁদতে থাকে।।এই মানুষ গুলোর কষ্ট শোনার মত কোন মানুষই কখনো থাকে না।।তারা একাই কাঁদে,আবার হঠাৎ করে একাই হেসে ওঠে।এটাও একটা খেলা।।
এই মানুষগুলোর মত কুকুর গুলোর ও নিশ্চয় কোন কষ্ট থাকে,তারা ডেকে ডেকে মানুষকে কিছু বলতে চায়।।

প্রতি চাঁদনি রাতে আমার মাঝেও একরকম বিভ্রম জাগে।।আমি রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি,হাঁটতে থাকি,হঠাৎ করে কোথা থেকে একটা কুকুর ডেকে ওঠে।।বুকটা ছ্যাৎ করে ওঠে।।হায়
যদি আমি কুকুরের ভাষা বুঝতে পারতাম।।
আমি আবার চলা শুরু করি।।চাঁদনি রাতে নব বিবাহিতদের মাঝেও বিভ্রম জাগে,,তারা রাত জেগে সাদে বসে গল্প করে কাঁটায়,এদের গল্প করার স্টাইল ও আলাদা।।একজন আসন গেঁড়ে বসে থাকে অন্যজন তার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকে,আর সে চুলের মধ্যে হাত বোলাতে থাকে।।এদের দেখলে মনে হয় এরাই হয়ত পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ এর জোড়া।।
আসলে চাঁদের আলো সবার মাঝে অস্থিরতা ছড়িয়ে দেয়।।এই অস্থিরতা যেন তেন অস্থিরতা না।।এই অস্থিরতা আস্তে আস্তে মনে গেঁথে যেতে থাকে,তারপর অনেক দিনের ধুলো পড়া পুরোনো কষ্টগুলোকে আবার জাগিয়ে তোলে।।কষ্ট ছাড়া কোন মানুষ হয় না।।মানুষ কষ্ট পেতে ভালোবাসে।।না চাইলেও তাকে পেতে হয়।।তাই হয়ত চাঁদের আলো মানুষের এত প্রিয় ।।

কোথা থেকে যেন আবার একটা কুকুর ডেকে উঠল।।লম্বা ডাক।।তারপর কিছুক্ষণ কুই কুই করল।।আমার ভেতরে আবার বিভ্রম জেগে উঠল।।আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম, হায় যদি আমার কুকুরের ভাষা বোঝার ক্ষমতা থাকত।।
আমি আবার চলা শুরু করলাম।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ভুল বানানের মেহন্ত শিরোণামের গল্প সুখ পাঠ্য হয়েছে
তবে যে সবাই বলে দীর্ঘ লেখা কেউ পড়েনা, তাই হয়তো
মন্তব্য খড়া চলছে।

২| ১৬ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


নষ্ট পরিবেশে নিজের মতো থাকা

৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯

স্রাঞ্জি সে বলেছেন:




নতুন পোস্ট দেন, ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.