![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি গোলাপ ফুলের কাছে যেতে চাই। সু-গন্ধের কাছে মাথা নত করি। রসগোল্লা দর্শনে জিভে আমার জল আসে। ব্যক্তি কিংবা বস্তুর সোন্দর্য আমায় উৎফুল্ল করে।এ সব আমার চরিত্রের স্বচ্ছতা নষ্ট করে কিনা ভেবে,মনোবিজ্ঞানির শরণাপন্ন হই। তিনি আমায় প্রশ্ন করেন-আপনি কি গোলাপের গন্ধ আকর্ষনে গোলাপ বন্দনায় নিশি জেগে থাকেন ? সু-গন্ধ পছন্দ বলে সেন্টের বালতি গলায় নিয়ে ঘোরেন ? সোন্দর্য বিরহে গলায় কলসি বেঁধে জলাশয়ে গমন করেন ? উওরে একবাক্যে বলি-না, এতটা বাড়াবাড়ি আমার নেই। মনোবিজ্ঞানি বলেন-তবে আর ভয় কিসের ? আমি আবারো বল্লাম-তাহলে এ সব যে হচ্ছে ! তিনি বল্লেন -এগুলো মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।এ সব কম-বেশি সবার মাঝেই থাকে।পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারিনি বলে-আবারো বল্লাম, ক্ষমতাবান হতে ইচ্ছে করে।দেশের নেতৃত্ব দিতে মন চায়। অর্থ-সম্পদের মালিক হতে চাই। আর প্রয়োজনে এ সব কিছুর জন্যে শক্তিধর মোড়ল শ্রেণির ব্যক্তি কিংবা রাষ্ট্রের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা কী অপরাধ ? স্বার্থ বাগিয়ে আনতে আদাব-সালাম দেওয়া কি অপরাধ ? তিনি বল্লেন- না,তা ঠিক গুরুতর কোন অপরাধ নয়। তবে তা হতে হবে-সৎ উদ্দেশ্য রেখে,ব্যক্তিত্ব অক্ষুন্ন রেখে পরিবার,সমাজ,রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের জনগণের মর্যাদাকে ধূলিস্মাৎ না করে । আমি আশ্বস্ত হলাম। দুদিন বাদে চা পান করতে-করতে পত্রিকা পড়ছি। লক্ষ্য করলাম,পত্রিকার সারা গাত্র মোদি বন্দনায় আবৃত। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও । মোদিকে সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অভিনন্দন .....ইত্যাদি । পররাষ্ট্রনীতি বা কুটনৈতিক সভ্যতার বিচারে অভিন্দন জানানোর মাহাত্মটি বোধগম্য হতে আমার খুব বেশি কষ্ট হলো না। কিন্ত , দেশের প্রতিষ্ঠিত কিছু রাজনৈতিক দলের মোদি উন্মাদনার বিষয়টি আমার কাছে পরিস্কার ভাবে প্রতিভাত হলো না। দেখা গেল নির্বাচিত হবার পূর্বেই মোদিকে দূতাবাসের মাধ্যমে টেলিফোনিক অভিনন্দন ও দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক বস্তা দয়া প্রার্থনার পাহাড় পরিমান কান্নাকাটি ! বলা হলো-আমন্ত্রনের অপেক্ষায় আছি, আপনাদের সাথে ধর্মান্ধ (ধর্ম পুঁজি করে রাজনীতি) ঘাটের তীরে বহু পূর্ব থেকেই আমাদের পিরীতির মাখামাখি । আরু কত কি.....! অর্থাৎ উন্মাদনা একবারে চরম পর্যায়ে । মুখে কসটেপ না চাপলে-উন্মাদনার জ্বরের প্রলাপে হয়তো বলে বসবেন,আমন্ত্রন নিস্প্রয়োজন-আমি নিজেই আসছি-প্লিজ একটু দেখা দিন ! .....প্রকৃতার্থে এসব মিনতি, দল ও দেশের স্বার্থে নয় বরং ব্যক্তি স্বার্থ,অস্তিত্ব,অহংকার ও প্রতিশোধ নেবার অপকৌশল মাত্র। আর তাই যদি সত্য হয়,তবে প্রশ্ন থেকে যায়-এতে স্বার্থ রক্ষা হবে তো ? মনে রাখা দরকার,২১ মে শপথ নেবার কথা থাকলেও মোদি সেদিন শপথ নেননি । কারণ, ঐ দিন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধীর মৃত্য দিবস বলে সম্মান জানালেন । সুতরাং, কংগ্রেস বন্ধুদের মোদি কবর রচনা করবেন এমন ভাবনাটি. ঐ উন্মাদনারই বাস্তবতা । এছাড়াও আমাদের লীগ কিংবা দলের অতীত কর্মকান্ড মোদির অজানা নয়।কারন, তিনি অন্য কোন গ্রহ থেকে অবতরণ করেননি বরং গুজরাট থেকে দিল্লি এসেছেন মাত্র । যা হউক,মনে রাখা দরকার -আমরা শেরেবাংলা,ভাসানি,বঙ্গবন্ধু ,ওসমানি,জিয়া কিংবা কবি নজরুলের আশির্বাদপুষ্ট সোনার বাংলার বীর বাঙ্গালি । বিদ্রোহী কবি নজরুলের ভাষায়, বাঙ্গালির উন্নত শীর । রাজনৈতিক দলের উন্মাদপূর্ণ দেউলিয়াপনায় বাঙ্গালি জাতি আজ ফেল করা ছাত্রের ন্যায় লজ্জিত। লজ্জায় জাতির লাল বর্ণের মুখমন্ডল যেন কালসে হয়ে আছে । লক্ষ-কোটি মুখে জনতার তিরস্কারেও রাজনৈতিক দলগুলোর যেন অপমান বোধ হয় না। তাই দল গুলোর চরিত্রের সাথে মিলিয়ে কবিতাকারে দুটো লাইন বলছি... শশ্মাণে চিতা-কাষ্ঠে,মায়ের দেহে জ্বলছে আগুন, তাই বলে কি আনন্দ ত্যাজিব ? মদের নেশায়,হেলে-দোলে বলছে ছেলে,মাগো আমি যে ডোম । শেষ করতে হচ্ছে বলে -শুধু বলি যে, ভূল-ত্রুটির উর্দ্ধে আমরা কেউ নই। আসুন,সকলে মিলে সম্মান.মর্যাদা রক্ষার আমল করি । এমন বাক্য না বলি-যাতে জাতি লজ্জায় কালসে লাল বর্ণ ধারণ করে ।
©somewhere in net ltd.