নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই দিন হব শান্ত....

বিদ্রোহী ভৃগু

সকল অনাচার আর অনিয়ম জাগায় দ্রোহ.....

বিদ্রোহী ভৃগু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর দীর্ঘতম শহর গাজা : ফিলিস্তিনের প্রতি কবি কাজিম রেজার নৈবদ্য

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫

পৃথিবীর দীর্ঘতম শহর গাজা
(কবি ফজল শাহাবুদ্দিন শ্রদ্ধাষ্পদেষু)
কাজিম রেজা

অস্থির উটের ঘন্টা, হ্রেষা, ওই গাধার ডাক আজও মনে বাজে,
আমি তো চেয়েছিলাম তোমাদের সঙ্গে থেকে যেতে।
থাকতো যদিবা ময়লা ঝুপড়ি,
ঢাকতে পারতো কেউ প্রাণের নীলাভ্র?
ম্যান্ডোলিনের ঝংকারে হাজারো সুরের উম্মে কুলসুমে ডুবে যেত
এরিয়াল তোলা সুবিশাল রেডিওর বাদন।
ভেতরের বাল্বগুলো জ্বলতে থাকতো নিভে যাওয়া সূর্যের পরে,
গভীর রাত অবধি গান শোনার ব্যাকুল প্রতীক্ষায়।
মুরুব্বিরা ধমকাতো, কোন ছেমড়িতে তোরা মজেছিস?
তার চেয়ে যদি সেই সময়ের....।

দ্যাখো,
নিজ কালের নায়িকা পঞ্চাশ বছর পর,
বুড়োদের মনে কী টাটকা থাকে!
আমিও অকেজো বৃদ্ধ আজ।
চকচকে রাস্তা বিশাল বিকট ইমারত চাপা পড়া,
আমাদের যৌবন। বসত। ঘাম। রক্ত। বংশ
পরম্পরায় বাস করা সাকিন- সাবুদ।
কেউ যদি বলে প্রলাপ বকছ, কি প্রমাণ দেব?
নিরুত্তর খোদার উদ্দেশে রক্তের কসম ছাড়া
সশব্দে কি দাবি করার থাকলো আমাদের?

আহ, আমরা যে বিতাড়িত প্রিয় মাটি থেকে,
কত আগে জন্ম ভিটা মিশে গেছে বিজাতীয় গ্রাসে।
অন্ধ প্রাচীর ওদিক তাকানো পর্যন্ত রুদ্ধ করে!

আলো তুমি কত অবারিত
হাওয়া তোমায় কে-রুধিবে
ঘুর পথেও যেতে পার যত খুশীতে
আঁধার নিমিষে ঢেকে দিতে পার
বিলীয়মান পক্ষি সকল,
বাধার সীমান্ত যেমন ঝাপ্টে তাড়িয়ে বেড়াও।


২/৩
অথচ
আমাদের দীর্ঘশ্বাস,যারা প্রতিবেশী যারা ভাই তাদের কানে যায় না।
যাক বা না যাক তোমাদের জবর দখল সত্ত্বেও আমরা ফিরে আসবই।
আবার বলছি
শোন--
ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর থেকে তেল আল জাতারের আর
শাবরা-শাতিলায়
রেখে আসা এবং তার আগে,
তারও পরের অব্যাহত চিরঞ্জীবদের কাফনের ওয়াদা
পুরনো বাসিন্দা, তাদের আওলাদ-ফরজন্দ্,
সব রিশতা থাকবে আমাদের সঙ্গে।
উড্ডীন এক নিশান তলে।
মূসা, ঈসার, পাশে যেমন মুহাম্মাদ। সব শেষে।
তার ডাক কি শুনতে পাওনা নাসরাল্লাহ্র হাসিতে
লেবানন, গাজা, তেহরানে? আংকারা থেকে আগত,
অমিত তেজী শান্তিকামীদের রক্তস্নাত জাহাজে ।


ফিলিস্তিন যেন এক নদী
যার রক্তের ঢল বিপদসীমা পার হয়েছে কত বছর আগে।
তবু সাম্রাজ্যের বাবুর্চিখানার,
নিত্য খুন-রাঙ্গা স্যুপের নতুন রেসিপি বাতলে দেয়া হয়।
লন্ডনে ব্যর্থ গোল টেবিল বৈঠক শেষে,
মন-ভাঙ্গা মওলানা মোহাম্মদ আলীর অসুস্থ দেহ
কখনো পরাধীন ভারতে ফেরে নি।
তাঁকে স্বদেশে ফেরাতে ব্যর্থ হন জিন্নাহ ও গান্ধী
“আমার কবর যেন হয় স্বাধীন ভূখন্ডে”,
মসজিদুল আকসা প্রাঙ্গনে তিনি স্থিত।
মৃতের প্রশান্তি বুট পিষ্ট কতদিন আজ
দুশমন বন্ধনীতে জেরুজালেম।


৩/৩
তবু ফিলিস্তিন থাকে. দুনিয়ার সব গানে,মুক্তি মন্ত্র আনে
অদূরে তাকিয়ে দ্যাখো:
১৯৬৭
যুদ্ধে জর্দান ও ইরাকে শত্রুর প্রথম বিমান ধরাশায়ী করেন পিএএফের বাঙালী আজম।
১৯৭৩
বারলেভ লাইন বিজয়ীদের পরিতৃপ্তির চা হয়ে বাংলাদেশ পেয়ালায় পেয়ালায় ওঠে!
২৬ মার্চ, ১৯৮১
ঢাকায় আরাফাত, পাশে জিয়া, গিনির সেকেতুরে, স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ
আফ্রো-এশিয়ার অভিবাদনে অধীর প্রত্যাশার ফিলিস্তিনঃ স্বাধীনতা জেগে ওঠো।
১৯৮২
লেবাননে বাংলার ল্যান্সার আর হর্সের সেনারা জায়ন প্রতিরোধে থাকে শেষ তক।
২০০৬
দক্ষিণ লেবানন, নতুন মধ্যপ্রাচ্যের জন্ম দিল।

মনে রেখো
পৃথিবীর দীর্ঘতম শহর গাজা! অনড়, অতন্দ্র, অপরাজিত।
ঠিক, মা ফিলিস্তিনের মতো একরোখা।
বছরের পর বছর অবরুদ্ধের অতিক্রান্ত পল, অনুপল
তলোয়ারের ওপর রক্তের বিজয় অবিরাম গাঁথা!
বার্সেলোনাঃ‘দি লংগেষ্ট সিটি অব ইউরোপ’!
রক্তাক্ত প্রজাতন্ত্রীদের থেকে ফ্রাংকোর কেড়ে নিতে লেগেছিল ছয় মাস
এরপরে অজেয় লেনিনগ্র্রাদ*।
দ্যাখো সবাই গাজার পাশে শিশু বনে গেছে ।


বলোতো,
কোথায় প্রতিদিন মৃত সন্তানের লাশ বহনে
কোনো পিতার কেন ভার বোধ হয় না!
অবিরল রক্তের নহর
সুবাসিত সুফলের বার্তাবহ পায়রার চাইতেও পলকা করছে রোজ, যাদের।
আর ধরিত্রীর বুক ভারী হচ্ছে।
কোন্ জনপদে দাফনের জন্য শুকনো মাটি পাবে না!

উর্বর এই জমিনে স্বাধীনতা ছাড়া যে সবুজ ফলবে না।


*১৯১৭ সালে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পরে রাশিয়ায় জার আমলের রাজধানী “সেন্ট পির্টাসর্বাগ” নাম বদলে লেনিনগ্রাদ রাখা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর শহরটির পুরান নাম ফেরত আসে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদ ছিল অজেয়, অটল

নোট: কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় জাতীয় প্রেসক্লাব সদস্যকবিদের মাসিক প্রকাশনা "কবিতাপত্রে "(বর্ষ ১১ সংখ্যা ১১ প্রকাশকাল: নভেম্বর-২০১৩)।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মনে রেখো
পৃথিবীর দীর্ঘতম শহর গাজা! অনড়, অতন্দ্র, অপরাজিত।
ঠিক, মা ফিলিস্তিনের মতো একরোখা।
বছরের পর বছর অবরুদ্ধের অতিক্রান্ত পল, অনুপল
তলোয়ারের ওপর রক্তের বিজয় অবিরাম গাঁথা!
বার্সেলোনাঃ‘দি লংগেষ্ট সিটি অব ইউরোপ’!
রক্তাক্ত প্রজাতন্ত্রীদের থেকে ফ্রাংকোর কেড়ে নিতে লেগেছিল ছয় মাস
এরপরে অজেয় লেনিনগ্র্রাদ*।
দ্যাখো সবাই গাজার পাশে শিশু বনে গেছে ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৪৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বলোতো,
কোথায় প্রতিদিন মৃত সন্তানের লাশ বহনে
কোনো পিতার কেন ভার বোধ হয় না!
অবিরল রক্তের নহর
সুবাসিত সুফলের বার্তাবহ পায়রার চাইতেও পলকা করছে রোজ, যাদের।
আর ধরিত্রীর বুক ভারী হচ্ছে।
কোন্ জনপদে দাফনের জন্য শুকনো মাটি পাবে না!

উর্বর এই জমিনে স্বাধীনতা ছাড়া যে সবুজ ফলবে না।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে! চমৎকার!

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কবিকে আপনার ভাল লাগা পৌছে দিলুম।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দারুন !

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কবির পক্ষ থেকে।

আমার পক্ষ থেকেতো বটেই ;)

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৪৭

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: দারুন !

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনাদের প্রতিক্রিয়া নিশ্চয়ই আনন্দদায়ক। কবিকে সেই আনন্দ পৌছে দেব।

ধন্যবাদ পাঠে এবং মন্তব্যে।

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:০৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


অনবদ্য +++

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। এবং কবির পক্ষ থেকেও শুভচ্ছে আপনাকে এবং সবাইকে।

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:০৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
নাইস শেয়ার।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কবির পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ভালো লাগলো।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার ভালোলাগা লেখকের জন্য তোলা রইল

৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৫

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অপূর্ব একটি সংগ্রহ , সময়ের টাইমলাইন । পোস্টে শুভেচ্ছা ।

১০ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জ্বি। অনেক ধন্যবাদ।

সময়কে ধরে রাখলেই না সাহিত্য অনন্যতা পায়। নইলে যে তা নিছক বিনোদন হয়েই রয়ে যায়।

ধন্যবাদ।

৯| ১০ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:১০

লিরিকস বলেছেন: চমৎকার।

১০ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার ভালোলাগা লেখকের কাছে পৌছে দিলাম।

১০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ভালো লাগলো অনেক।

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পথ ভূলে যে উঁকি দিয়েছেন :)

১১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

উপপাদ্য বলেছেন: অসাধারন এক জিনিস শেয়ার করেছেন। রক্তে আগুন লাগিয়ে দিলোতো।

আজ সামুতে শুধু কবিতাই পড়ছি। কবিতাময় দিনের বেস্ট ওয়ান।

ধন্যবাদ। বিদ্রোহী ভাই

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:২৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখককে আপনার অনুভব পৌছে দিয়েছি। তিনি খুবই পুলকিত আপনার মন্তব্যে।

লেখকের এবং আমার ২টা ধন্যবাদ নেন :) উপপাদ্য ভাই।

১২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫২

বৃশ্চিক রাজ বলেছেন: +++++++

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

১৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১১

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: হা হা হা... আমি তো ভাই আগের মতো একটিভ না।

শুভ কামনা।

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনারা আর আগের মতো একটিভ নন বলেইতো কেমন পানসে হয়ে যাচ্ছে সব...

ফিরে আসুন আগের প্রাণময়তায়-
অন্য কারো জন্যে নয়-
স্রেফ নিজের জন্যেই ;)
স্ব-প্রাণের স্বতম্ফুর্ততায়!


১৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

লিরিকস বলেছেন: ভাইয়া পছন্দের কয়েকটা নজরুল গীতি বলেন তো প্লিজ।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবইতো তাঁর প্রিয়-ভালবাসী যখন তার সুর.. তবুও যেগুলো একেবারে সহজেই মনটা নাড়িয়ে দেয়-

# একি অপরুপ রুপে মা তোমায়
# কারার ঐ লৌহ কপাট
# ও ভাই খাটি সোনার চেয়ে খাটি
# আলগা করগো খোঁপার বাঁধন
# ব্রজগোপী খেলে হরি
# চেওনা সুনয়না..
# এই রাঙ্গামাটির পথে লো
# হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ
#কাবেরী নদী জলে কে গো বালিকা
# মোন ঘুম ঘোরে এলে মনোহর....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.