![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
An average person, always lack of perfection
“ব্যর্থতা একটি শেখার অভিজ্ঞতা। যে কখনো ব্যর্থ হয়নি, সে জীবনে কিছুই করেনি।”
এই সুন্দর উক্তিটির জনক Wilson Greatbatch (1919-2011) । নিউ ইয়র্কে ব্রিটিশ ইমিগ্র্যান্ট দম্পতি Warren and Charlotte Greatbatch এর ঘরে ১৯১৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন এই প্রচারবিমুখ বিজ্ঞানী।
Fig: Dr. Wilson Greatbatch with his circuit.
এক মিনিটে কতোকিছুই না হতে পারে। বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের জগতে এক মিনিটও অনেক গুরুত্ববহ। একটি স্ফুলিঙ্গ জন্ম দিতে পারে জীবন বদলে দেয়া আইডিয়ার, আবার এই ষাট সেকেন্ডই যথেষ্ট বিশাল ভুল করার জন্য।
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে হয়তো দুটো বিষয়ই ঘটে যেতে পারে একসাথে। তা-ই ঘটেছিলো Dr. Wilson Greatbatch এর ক্ষেত্রে। ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার ড. উইলসন ছিলেন University of Buffalo-র এসিসট্যান্ট প্রফেসর। তিনি এক মিনিট সময়ের মধ্যে এমন একটি ভুল করেছিলেন, যা তাকে জীবন রক্ষাকারী আবিস্কারকের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। তার এই অসামান্য ভুল চিরতরে বদলে দিয়েছে কার্ডিওভাস্কুলার চিকিৎসা ব্যাবস্থা। ভুল থেকেই জন্ম নিয়েছিলো বিশ্বের প্রথম স্থাপনযোগ্য পেসমেকার।
সময়টা তখন ১৯৫৬ সাল। ড. উইলসন তার ব্যক্তিগত ল্যাবে একটি অসিলেটর নিয়ে কাজ করছিলেন। ফাস্ট হার্ট বিট রেকর্ড করার জন্য অসিলেটর তৈরীর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কয়েকদিন ধরেই। আজকের দিনটা ব্যাতিক্রম। তিনি কাজে কিছুতেই মনোযোগ বসাতে পারছিলেন না। তার ফলস্বরুপই কি না, তিনি ভুল করে বসলেন।
অসিলেটরের ট্রানজিস্টর বেসে দরকার ছিলো 10,000 ohm রেজিস্টর। তিনি তার রেজিস্টর বক্সের দিকে হাত বাড়ালেন। কালার কোডিং পড়তে ভুল করে ফেললেন এবং 10,000 ohm এর পরিবর্তে 1 mega ohm এর একটি রেজিস্টর তুলে নিলেন। যখন তিনি রেজিস্টরটি প্লাগ ইন করলেন, এটি 1.8 mili second পালস এবং ১ সেকেন্ড বিরতি দিয়ে “squeg” করতে শুরু করলো। এই কর্মযজ্ঞ চলাকালীন ট্রানজিস্টরটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো এবং কোনো কারেন্ট ড্র করলোনা। ড. উইলসন অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রইলেন। তিনি বুঝতেই পারছিলেন না কি ঘটেছে। হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে যখন আসল কাহিনী দেখলেন, তার বুঝতে বাকি রইলো না তিনি কি আবিস্কার করে ফেলেছেন। তিনি তৎক্ষণাৎ বুঝতে পেরছিলেন যে, এই মেকানিজমে মানুষের হার্ট চালনা করা সক্ষম।
পেস মেকার তখনকার সময়ে নতুন ছিলোনা। ড. উইলসনের আবিস্কারের আগে থেকেই পেইস মেকারের ব্যাবহার ছিলো। কিন্তু, সেগুলো মানুষের দেহে স্থাপনযোগ্য ছিলোনা। এক্সটার্নাল পাওয়ার সোর্স যেমন- পাওয়ার লাইন, ব্যাটারি কিংবা ভ্যাকুয়াম টিউব থেকে পেস মেকারে পাওয়ার সাপ্লাই দিতে হতো। আকারেও ছিলো অনেক বড়। আর তাই যেসব রোগীর দেহে পেসমেকার বসানো হতো তারা নড়াচড়া করতে পারতোনা।
ড. উইলসন তার এই মেকানিজমের কথা জানালেন বেশ কয়েকজন কার্ডিওভাস্কুলার সার্জনকে। কেউই তার কথা বিশ্বাস করতে চাইলেন না। তার এই কৌশল কাজে লাগাতে ইচ্ছুক সার্জন পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়লো। Buffalo's Veteran's Hospital এর সার্জারী বিভাগের প্রধান Dr. Wiliam Chardack প্রথম ড. উইলসনের স্থাপনযোগ্য পেসমেকার দেখে বিস্মিত হলেন। তিনি তাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন।
Fig: First Implantable Pacemaker in the history
১৯৫৮ সালের ৭ই মে Veterans Hospital-এ Dr. Chardack এবং আরেকজন সার্জন Dr. Andrew Gage একটি কুকুরের হার্টের সাথে পেসমেকারের তার সংযুক্ত করলেন। অবিশ্বাস্যভাবে, কুকুরের হার্ট ডিভাইসটির সাথে একই ছন্দে তাল মেলাতে লাগলো। তিনজন একে অপরের দিকে তাকালেন। Dr.Chardack সেই মুহুর্তের কথা স্মরণ করে তার অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন এভাবে, “Well, I’ll be damned.”
Fig: Patient with greatbatch’s pacemaker.
এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলো। একদিন ড. উইলসন তার ল্যাবরেটরিতে বসে ডায়রী লিখছেন। তিনি বসে বসে সেই অভূতপূর্ব দিনের কথা ভাবছিলেন আর ডায়রীর সাদা পাতায় খচখচ করে লিখে যাচ্ছিলেন,
“আমার নিজের তৈরী ২ কিউবিক ইঞ্চির একটি যন্ত্র একটি জীবন্ত হার্টকে নিয়ন্ত্রণ করছে দেখে আমার দেহে যে শিহরণ তৈরী হয়েছিলো, আমার সন্দেহ হয় আর কোনো কাজ আমাকে এভাবে উদ্দীপিত করবে কি না!”
দুই বছর নানা এক্সপেরিমেন্ট চালানোর পর, ১৯৬০ সালে বিজ্ঞানীত্রয় অনুভব করলেন, মানুষের দেহে এটা স্থাপন করে সুফল পাওয়া সম্ভব। তারা চারজন রোগী পেলেন যাদের টার্মিনাল হার্ট ডিজিজ ছিলো এবং যেকোনো ধরণের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলো। সেই চারজন ব্যাক্তির দেহে স্থাপনের মাধ্যমেই বর্তমান আধুনিক পেসমেকার এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো। ৪ জনের মধ্যে ৩ জন এক বছরের মতো এবং ১ জন আরো বেশি সময় ধরে সুস্থভাবে জীবন যাপন করেছিলেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:২৯
কালো গুপ্তচর বলেছেন: ভুল থেকে জন্ম নিক দারুণ কিছু। শুভকামনা।
২| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৬
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: কোন কথা নাই, প্রিয়তে।
ভাই আপনার আগের লেখাগুলো চেক করলাম, আপনি ছবি দেন না কেন?
ছবি দিলে আগ্রহ বাড়ে।
আপনার লেখার হাত ভালো, আপনি রোর বাংলায় যোগ দেন। সাড়া পাবেন।
https://roar.media/bangla/
ওখানে লেখক নেয়।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩২
কালো গুপ্তচর বলেছেন: ছবি দিতে হবে এটা ভাবিনাই । আপনি মনে করিয়ে দিলেন, ধন্যবাদ। আসলে নিয়মিত লিখতে পারিনা, সময়ের অভাবে। তাই এদিকে মনোযোগ দেইনি। শখের বশে অর্জিত জ্ঞান থেকে লিখার চেষ্টা করি। আপনার পরামর্শের জন্য আন্তরিক ৃতজ্ঞতা।
৩| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:২১
আখেনাটেন বলেছেন: অসাধারণ কাহিনি। বিজ্ঞানের বড় বড় অাবিষ্কারের অনেকগুলোই অজান্তেই পাওয়া গেছে। যদিও প্রত্যেকটির পেছনেই বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল। সেটা ফ্লেমিং এর আ্যন্টিবায়েটিক বলেন আর এডিসনের ইলেক্ট্রিক লাইট বলেন।
চমৎকার ঘটনা। এগুলো আমাদের শিশু কিশোরদের বেশি করে পাঠ্য করার দরকার।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
কালো গুপ্তচর বলেছেন: অজান্তে আবিস্কারের কাহিনীগুলো নিয়ে আরো লিখার ইচ্ছা আছে। সময়ের অভাবে হয়ে উঠছেনা। আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
৪| ২৩ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: এক কথায় চমৎকার পোষ্ট।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
কালো গুপ্তচর বলেছেন: ভালোবাসা নিবেন।
৫| ২৩ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
মীর সাজ্জাদ বলেছেন: অনুপ্রেরণামূলক পোষ্ট, ভালো লাগলো।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৫
কালো গুপ্তচর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৬| ২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৪
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমার কাছে অজানা এই তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টটি খুবই ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাই কালো গুপ্তচর।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৫
কালো গুপ্তচর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। শুভকামনা।
৭| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০৯
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: খুবি ভালো একটি পোস্ট....
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
কালো গুপ্তচর বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
৮| ২৭ শে মে, ২০১৮ ভোর ৪:৩০
অক্পটে বলেছেন: খুব ভালো লাগল পোস্টটি। অবিভুত হলাম জেনে।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
কালো গুপ্তচর বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভকামনা।
৯| ২৭ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩
Noman Islam Nirob বলেছেন: ভুল ই তো মানুষ্কে নতুন কিছু শেখায়
২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭
কালো গুপ্তচর বলেছেন: যথার্থ বলেছেন।
১০| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৮
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: A person who never made a mistake never tried anything new
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬
কাইকর বলেছেন: অনেক সময় ভুল থেকেই বড় বড় প্রাপ্তি মিলে। এরকম ভুল করতে চাই।