নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ব্লগ পোকা। ব্লগ এর মাধ্যমে স্বাধীনতার কথা বলতে চাই।

আমি ব্লগ পোকা। ব্লগ এর মাধ্যমে স্বাধীনতার কথা বলতে চাই।

ব্লগ পোকা

আমি ব্লগ পোকা। ব্লগ এর মাধ্যমে স্বাধীনতার কথা বলতে চাই।

ব্লগ পোকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামায়াত এবং জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট... এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত:

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৪

রাজাকার (আল-বদর, আল শামস) বাহিনী গঠন করা হয়েছিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কেবিনেট সেক্রেটারী গোলাম ইসহাক খানের জারিকৃত একটি

অধ্যাদেশের অধীনে। রাজাকার (আল-বদর, আল-শামস) বাহিনীতে লোক নিয়োগ করা হয়েছিল

স্থানীয় প্রশাসনের সিও,

ওসি,

পৌরসভার চেয়ারম...্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের তত্ত্বাবধানে

হাটবাজারে ঢোল সহরাতের মাধ্যমে। আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্য থেকে লোক বাছাই

করে তাদের নিয়োগের জন্য সিও এবং ওসি, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারের

বরাবরে সুপারিশ করেছিল। কাজেই রাজাকার (আল-বদর, আল-শামস) বাহিনী গঠনের সাথে জামায়াতে

ইসলামীর কোন সম্পর্ক ছিল না।প্রকাশিত সরকারী গেজেটে রাজাকার (আল-বদর,

আল-শামস)

বাহিনীর সদস্য হিসেবে তালিকায় যে সব লোকদের নাম আছে তাতে জামায়াত

নেতৃবৃন্দের কারো নাম নেই। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের কেউ ঐ সব

বাহিনীর কমান্ডার হওয়া তো দূরের কথা সাধারণ সদস্যও ছিলেন না। উক্ত

বাহিনী গঠিত হয়েছিল পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগে এবং পরিচালিত হয়েছিল

সরকারেরই নিয়ন্ত্রণে। কাজেই সেই সময় সংঘটিত কোন অন্যায় কাজের জন্য জামায়াতে

ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে দায়ী করার কোন যুক্তি নেই। ঐ সময়

সংঘটিত কোন অন্যায় কাজের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে দায়ী করা প্রকৃতপক্ষে তাদের

ওপর বড় ধরনের জুলুম ও অবিচার ।



১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারী দালাল আইন জারী করা হয়। এই

আইনের অধীনে প্রায় ১ লাখ

লোক গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে অভিযোগ আনা হয়

৩৭ হাজার ৪শ' ৭১ জনের বিরুদ্ধে। তাদের

মধ্যে ৩৪ হাজার ৬ শত ২৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষী প্রমাণের অভাবে কোন মামলা দায়ের

করাই সম্ভ...ব হয়নি। ২ হাজার

৮ শত ৪৮ জনকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়। বিচারে

৭ শত ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রমাণিত হয় এবং ২ হাজার ৯৬ জন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। তাদের

মধ্যে জামায়াত নেতৃবৃন্দের কেউ ছিলেন না। ১৯৭৩ সালের

৩০ নবেম্বর, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান

সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। ক্ষমা ঘোষণার পরে অভিযুক্তদের মধ্যে

যারা সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়ে এমন সবাই মুক্তি লাভ করেন। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের

সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের ক্ষেত্রে

সাধারণ ক্ষমা প্রযোজ্য ছিল না। জামায়াতে

ইসলামীর কোন লোকই ঐ চারটি

অপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন না। তার

প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো-সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার

পরে আওয়ামী লীগ সরকার আরও দেড় বছর ক্ষমতায় ছিল। ঐ

সময়ের মধ্যে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে

মামলা রুজু হওয়া তো দূরের কথা, কোন

থানায় একটি জিডি পর্যান্ত করা হয়নি। যারা

অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেনি, যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেনি, তারা যুদ্ধাপরাধী হয় কী

করে? এখন তাদের যুদ্ধাপরাধী

অভিহিত করে বিচারের প্রহসন করা চরম

অন্যায় ও অযৌক্তিক।

মন্তব্য ৫৩ টি রেটিং +১৯/-৪২

মন্তব্য (৫৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৭

কথক পলাশ বলেছেন: যুদ্ধের সময় তাহলে জামায়াত নেতারা কি করেছে? যুদ্ধ করেছে?

২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৮

রুদ্রপ্রতাপ বলেছেন: তাই? গদাম খা হালার পুত

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৮

সৈয়দ মোহাম্মদ আলী কিবর বলেছেন: কোন ২ জনের ভাল লাগেনি এবং ভাল নালাগার কারণ কি ?

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২০

তাশফী বলেছেন: যুদ্ধের সময় তাহলে জামায়াত নেতারা কি করেছে? যুদ্ধ করেছে? তাই? গদাম খা হালার পুত

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৩

নষ্ট কবি বলেছেন: চায়া চায়া দেখছে আর পান খাইছে............... পো্ষ্ট আপত্তি কর.............

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৩

নুভান বলেছেন: শালা হারামী

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৩

সিউল রায়হান বলেছেন: "সৈয়দ মোহাম্মদ আলী কিবর বলেছেন: কোন ২ জনের ভাল লাগেনি এবং ভাল নালাগার কারণ কি ?"

- এই পোস্টের প্রিন্ট আউট নিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর শহীদ মিনারে এসে এই কোশ্চেন করিস.......... অ্যান্সার পাবি ***** এর বাচ্চা........ ( সত্যের পথে থাকলে ভয় পাবি না নিশ্চয়ই /:) )

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৪

ব্ল্যাকম্যাজিশিয়ান বলেছেন: খানকির পোলা তর বাপের কান্ধে খাড়ায় তর মায়ের পাছা চুদি।

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৮

ব্লগ পোকা বলেছেন: পতিতা পল্লিতে যার জন্ম তার কাছ থেকে এর বেশি কি আশা করা যায়।গালি না দিয়ে যুক্তি থাকলে দিন।যত সব বস্তা পচা লোক ব্লগিন করে।

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৪

ওরাকল বলেছেন: ১। জামাত যদি কোন অন্যায় না ই করে থাকে তবে ৭২-৭৯ পর্যন্ত নিশীদ্ধ ছিল কেন ?

২। তৎকালীন জামাত আমির গু-আজম কেন পালিয়ে পাকিস্তান ও পরে সৌদিআরবে গিয়েছিলেন ?

আপাতত এই দুইটার জবাব দিন -

১০| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৭

ওরাকল বলেছেন: @ব্ল্যাকম্যাজিশিয়ান: প্লিজ গালাগালি করবেন না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস ও জামাতের বেঈমানির ইতিহাস এত ছোট নয় যে গালাগালি করে তর্কে জিততে হবে।

১১| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৯

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: ঐ, নতুন রিক্রুট নাকি ??? কোন ব্যাচ ?? G-420 ( গেলমান ৪২০) নাকি ডায়রেক্ট k-840 ( করাচি-840) থেকে আসছিস ??? সোনা ব্লগে যাস না কেন ?? ঐখানে ডিউটি দিলে কি পেমেন্ট দেয় না ???? নাকি নিজের উদ্যাগেই আসছস ??? X(( X(( X(( X(( X((

গদাম খা


১২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩০

তাশফী বলেছেন: ওরাকল বলেছেন: @ব্ল্যাকম্যাজিশিয়ান: প্লিজ গালাগালি করবেন না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস ও জামাতের বেঈমানির ইতিহাস এত ছোট নয় যে গালাগালি করে তর্কে জিততে হবে।
সহমত ,
কুকুর তো রাস্তাতে ঘেঊ ঘেঊ করে ,তাই বলে কি মানুষ ও কি তা করে ?

১৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩২

আবদুল্লাহ আল জাফর মালেক বলেছেন: চোদে না মাঙ্গে মাল পড়ে ঠ্যাঙ্গে আর তুই সেইটা চাইটা খাছ

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৯

ব্লগ পোকা বলেছেন: পতিতা পল্লিতে যার জন্ম তার কাছ থেকে এর বেশি কি আশা করা যায়।গালি না দিয়ে যুক্তি থাকলে দিন।যত সব বস্তা পচা লোক ব্লগিন করে।

১৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৩

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: ঐ, নতুন রিক্রুট নাকি ??? কোন ব্যাচ ?? G-420 ( গেলমান ৪২০) নাকি ডায়রেক্ট k-840 ( করাচি-840) থেকে আসছিস ??? সোনা ব্লগে যাস না কেন ?? ঐখানে ডিউটি দিলে কি পেমেন্ট দেয় না ???? নাকি নিজের উদ্যাগেই আসছস ??? X(( X(( X(( X(( X((

গদাম খা


১৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৪

আবদুল্লাহ আল জাফর মালেক বলেছেন: পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: ঐ, নতুন রিক্রুট নাকি ??? কোন ব্যাচ ?? G-420 ( গেলমান ৪২০) নাকি ডায়রেক্ট k-840 ( করাচি-840) থেকে আসছিস ??? সোনা ব্লগে যাস না কেন ?? ঐখানে ডিউটি দিলে কি পেমেন্ট দেয় না ???? নাকি নিজের উদ্যাগেই আসছস ??? X(( X(( X(( X(( X((

গদাম খা


১৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৪

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন:





























































১৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৫

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন:

১৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৬

কপালপোড়া বলেছেন: শালা রাজাকারের পুত ।

১৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৮

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: জামাত-শিবিরের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপার। ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে এই চক্র ১৯৭১ সালে মানুষকে হত্যা করেছে, ঘরে আগুন দিয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে। এখনও হত্যা, রগ কাটা অব্যাহত রেখেছে। এখনও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা মেধাবী ছাত্র ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হত্যার কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে। এসব ঘটনা ’৭১ এর বুদ্ধিজীবি নিধনেরই ধারাবাহিকতা। মূলত তারা চায় দেশের শিক্ষাঙ্গনকে অস্থিতিশীল রেখে জাতির বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করতে। শিবিরের নৃশংসতার খতিয়ান অনেক লম্বা। কিছুদিন যাবৎ তাদের রগ কাটার কর্মসূচী বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে পাক হানাদারদের যারা সহযোগিতা করত সেই জামাতের তৎকালিন ছাত্রসংস্থার নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংস্থা। ১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ইসলামী ছাত্র শিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে। বর্বরোচিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য সর্বস্তরে নিন্দিত জামায়াতে ইসলামীর এই ছাত্র সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় জবাই করে হত্যার রাজনীতি শুরু করে চট্টগ্রাম থেকে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে হামলা-সহিংসতা-সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়। তবে এক্ষেত্রে অপরাপর ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে শিবিরের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। শিবির সরাসরি হত্যার মিশনে নামে। তাছাড়া এরা যাকে আঘাত করে তাকে চিরতরে পঙ্গু-অচল করে দেয়। এর মাধ্যমে তারা সংশিস্নষ্ট কর্মীটিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার এবং অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদেরকে সাবধান করে। এজন্য শিবিরের নৃশংসতার সাথে অন্য কারো তুলনা হয় না। হাতুড়ি, রড, ইট, মুগুর দিয়ে হাড় গুড়ো করে দেয়া, রিকশার স্পোক কানের ভেতর ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মগজ বের করে আনা, হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়া, চোখ উপড়ে ফেলা, মেরুদণ্ড ভেঙ্গে ফেলা, কব্জি কেটে নেয়া, কিরিচ, ছোরা, কুড়াল ব্যবহার করে হত্যা করার মতো নৃশংসতা এদেশের ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে কেবল শিবিরের নামের সাথেই যুক্ত। ফিরে তাকানো যাক একবার শিবিরের বর্বরতার দিকে।

মার্চ, ১৯৮১ / প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় শিবির ক্যাডাররা চট্টগ্রাম সিটি কলেজের নির্বাচিত এজিএস ছাত্রলীগ নেতা তবারক হোসেনকে কলেজ ক্যাম্পাসেই কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। কিরিচের এলোপাতাড়ি কোপে মুমূর্ষু তবারক যখন পানি পানি করে কাতরাচ্ছিল তখন এক শিবিরকর্মী তার মুখে প্রস্রাব করে দেয়।

১১ মার্চ, ১৯৮২ / চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৩ বাস বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে শিবির ক্যাডাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। এই সহিংস ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৮৪ / চট্টগ্রাম কলেজের সোহরাওয়ার্দী হলের ১৫ নম্বর কক্ষে শিবিরেরকর্মীরা ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও মেধাবী ছাত্র শাহাদাত হোসেনকে জবাই করে হত্যা করে।

১৯৮৬ / শিবির ডান হাতের কবজি কেটে নেয় জাতীয় ছাত্রসমাজের নেতা আবদুল হামিদের। পরবর্তীতে ঐ কর্তিত হাত বর্ষার ফলায় গেঁথে তারা উল্লাস প্রকাশ করে।

৩১ মে, ১৯৮৮ / রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মেইন হোস্টেলের সামনে, কলেজের প্রিন্সিপাল ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, ও শত শত শিক্ষাথীদের সামনে ছাত্রমৈত্রী নেতা ডাক্তার জামিল আক্তার রতনকে কুপিয়ে ও হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করে শিবিরের ক্যাডাররা।

১৯৮৮ / চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাসদ নেতা জালালকে তার নিজ বাড়ীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা।

জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮ / বহিরাগত শিবির ক্যাডারদের হামলায় আমির আলী হল ছাত্র সংসদের জিএস ও জাসদ ছাত্রলীগ নেতা প্রিন্স সহ ২০-২৫ জন আহত হয়।

১৭ জুলাই, ১৯৮৮ / ভোর সাড়ে চারটার দিকে এস এম হলে বহিরাগত শিবির ক্যাডাররা হামলা চালায় এবং জাসদ ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ও সিনেট সদস্য আইয়ূব আলী খান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য আহসানুল কবির বাদল এবং হল সংসদের ভিপি নওশাদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়।

১৯৮৮ / সিলেটে শিবির ক্যাডাররা মুনীর, জুয়েল ও তপনকে বর্বরভাবে হত্যা করে।
আগষ্ট, ১৯৮৮ / রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের বাসভবনে ছাত্র শিবির বোমা হামলা করে। এতে অধ্যাপক ইউনুস বেঁচে গেলেও তার বাড়ীর কর্মচারী আহত হয়।

রমজান মাস, ১৯৮৯ / ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফাকে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ্ববতী চকপাড়ায় ইফতারের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে হাতের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা।

নভেম্বর, ১৯৮৯ / নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে সন্ধ্যায় জাসদ ছাত্রলীগের নেতা-কমীদের ওপর শিবিরের বোমা হামলায় বাবু, রফিক সহ ১০ জন আহত হয়।
২২ ডিসেম্বর, ১৯৯০ / ছাত্রমৈত্রীর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ সভাপতি ফারুকুজ্জামান ফারম্নককে শিবিরের ক্যাডাররা জবেহ করে হত্যা করে।

১৭ মার্চ, ১৯৯২ / পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবীর সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেলা ১১ টার সময় অতর্কিত হামলা চালালে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসীর আরাফাত পিটু নিহত হয় এবং জাসদ ছাত্রলীগের আইভি, নির্মল, লেমন, রুশো, জাফু, ফারুক এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের রাজেশ সহ প্রায় দেড়শাতাধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। এদের অধিকাংশেরই হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয় এবং রাজেশের কব্জি কেটে ফেলা হয়। এই হামলার সময় শিবির ক্যাডাররা এস এম হল, আনোয়ার হল এবং লতিফ হল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ব্যাপক আকারে গান পাউডারের ব্যবহার করায় হলের জানালার কাঁচগুলো গলে গিয়েছিলো। লতিফ হলের অনেকগুলো কক্ষ এখনো অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে আছে। এই হামলার তীব্রতা এতই ছিল যে, বেলা ১১টায় শুরু হওয়া হামলা রাত ৩টায় বিডিআর নামানোর আগ পর্যন্ত বন্ধ হয়নি।

মে, ১৯৯২ / ইসলামী ছাত্রী সংস্থা রাজশাহী কলেজ শাখার নেত্রী মুনীরা বোমা বহন করার সময় বিষ্ফোরণে মারা যায় এবং তার সহযাত্রী-সহকমী আপন খালা এবং ঐ রিকসাওয়ালা আহত হয়।

১৯ জুন, ১৯৯২ / শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে হরতাল কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং ২৪ জুন তিনি মারা যান।

আগষ্ট, ১৯৯২/ বিশ্ববিদ্যালয় পাশ্ববর্তি নতুন বুথপাড়ায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলের বাড়ীতে বোমা বানানোর সময় শিবির ক্যাডার আজিবর সহ অজ্ঞাতনামা অন্তত আরো তিন জন নিহত হয়। বিষ্ফোরণে পুরো ঘর মাটির সাথে মিশে যায় এবং টিনের চাল কয়েকশ গজ দুরে গাছের ডালে ঝুলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে পুলিশ মহল্লার একটি ডোবা থেকে অনেকগুলো খন্ডিত হাত পা উদ্ধার করে। যদিও শিবির আজিবর ছাড়া আর কারো মৃতু্র কথা স্বীকার করেনি। পুলিশ বাদি হয়ে মতিহার থানায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলকে প্রধান আসামী করে বিষ্ফোরক ও হত্যা মামলা দায়ের করে। প্রায় ৫ বছর পলাতক থাকার পর মামলা ম্যানেজ করে মোজাম্মেল এলাকায় ফিরে আসে এবং জামাতের রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হয়।

৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩ / রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালালে ছাত্রদল ও সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ মিলে গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ওপর শিবিরের হামলায় ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপন সহ ৫ জন ছাত্র নিহত হয়।

১৯৯৯ / চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এনামুল হকের ছেলে ও ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ মুছাকে শিবিরকমীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে।

১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩ / বহিরাগত সশস্ত্র শিবির কমীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ক্রিকেটার জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

১৯৯৪ / পরীক্ষা দিতে আসার পথে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় ছাত্রমৈত্রী নেতা প্রদুৎ রুদ্র চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয় শিবির কমীরা।

১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ / শিবির কমীরা বিশ্ববিদ্যালয় পাশ্ববতী চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা দেবাশীষ ভট্টাচায রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার আগে বর্বর শিবির ক্যাডাররা তার হাত ও পায়ের রগ কেটে নেয়।

জুলাই, ১৯৯৫ / জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কমীদের ওপর সশস্ত্র শিবির কমীরা হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়। এ হামলায় প্রায় ২৫ জন ছাত্রদল নেতা-কমীর হাত পায়ের রগ কেটে নেয় শিবির ক্যাডাররা।

১৯৯৬ / জাসাস রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং ছাত্রদল নেতা ডুপ্লের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এদের বাঁচাতে এসে দুইজন সহপাঠি ছাত্রী এবং একজন শিক্ষকও আহত হয়।

১৯৯৭ / চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করার জন্য শিবির ক্যাডাররা ছাত্র সংসদের ভিপি মোহাম্মদ জমির ও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমদকে গুলি করার পর পায়ের রগ কেটে হত্যা করে।

১৯৯৭ / বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দ সহ প্রায় বিশ জন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নি সংযোগ করে ছাত্র শিবির।

১৯৯৭ / গভীর রাতে রাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা-কমীরা আহত হয়। রাবি জিমনেসিয়াম পুলিশ ক্যাম্পেও বোমা হামলা করে শিবির।

১৯৯৮ / শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্র শিবির। ছাত্র-কর্মচারীদের প্রতিরোধে অধ্যাপক ইউনুস প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মক আহত হন তিনি।

১৯৯৯ / রাবিতে অবস্থিত ’৭১ এর গণকবরে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য স্থাপিত ভিত্তি প্রস্তর রাতের আঁধারে ছাত্র শিবির ভাঙ্গতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী বাধা দেন। ফলে শিবির ক্যাডাররা তাকে কুপিয়ে আহত করে এবং ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙ্গে ফেলে।

২২ আগস্ট, ১৯৯৮ / চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী সঞ্জয় তলাপত্রকে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা।

২০০০ / চট্টগ্রামের বদ্দরহাটে শিবির ক্যাডাররা মাইক্রোবাসের মধ্যে থাকা ৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

২০০১ / রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে সশস্ত্র ছাত্র শিবির কমীরা কমাণ্ডো হামলা চালায় এবং ছাত্রীদেরকে লাঞ্ছিত ও রক্তাক্ত করে।

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ, ২০০১ / রাবি অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহাকে ছাত্র শিবির কমীরা হাত পা বেধে জবাই করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা টের পাবার ফলে, তাদের হস্তক্ষেপে তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

২০০২ / রাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেতা সুশান্ত সিনহাকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয় শিবির কর্মীরা।

২৫ জুলাই, ২০০৪ / শিবির ক্যাডার রবি, রোকনের নেতৃত্বে প্রায় ১৫/২০ জনের একটি দল রাবি ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সিনহার ওপর হামলা চালায়। ইট দিয়ে জখম করার পামাপাশি তার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চালায় শিবির ক্যাডাররা।

২০০৪ / রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে সশস্ত্র ছাত্র শিবির কমীরা হামলা চালায়।

২০০৪ / অধ্যাপক মোঃ ইউনুসকে ফজরের নামাজ পড়তে যাবার সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যদিও এই হত্যা মামলায় জেএমবির দুইজন সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তারপরও এলাকাবাসী অনেকেরই মতামত হচ্ছে ছাত্র শিবিরের ক্যাডাররাই তাকে হত্যা করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালে দুই দফায় ছাত্র শিবির তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৪ / বরিশালের বাবুগঞ্জের আগরপুর ইউনিয়নের ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শামীম আহমেদকে শিবির ক্যাডাররা হত্যা করে।

৩০ অক্টোবর, ২০০৪/ জামাতের বর্তমান রাজশাহী মহানগরের আমীর আতাউর রহমান এবং প্রক্টর নূরুল আফসারের উপস্থিতিতে ছাত্রীদের মিছিলে হামলা চালিয়ে শিবির ক্যাডাররা প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রীকে রক্তাক্ত করে।

১০ ডিসেম্বর, ২০০৫ / সন্ধ্যায় জুবেরী ভবনের সামনে রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এস এম চন্দনের ওপর হামরা চালিয়ে তার রগ কেটে নেয়ার চেষ্টা চালায় শিবির ক্যাডাররা।

২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ / বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাতপন্থী শিক্ষক মহিউদ্দিন এবং রাবি ছাত্র শিবির সভাপতি মাহবুব আলম সালেহীন সহ আরো দুইজন শিবির ক্যাডার মিলে একযোগে অতকিতে হামলা চালিয়ে রাবি’র ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবু তাহেরকে হত্যা করে।

২১ আগস্ট, ২০০৬ / রাবিতে অনুষ্ঠিত ‘সেকুলারিজম ও শিক্ষা’ শীষক সেমিনারে বক্তব্য দেয়ার অপরাধে অধ্যাপক হাসান আজিজুল হককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিবির। প্রকাশ্য সমাবেশে তারা অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের গলা কেটে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেয়।

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ / রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে হত্যা করে ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে রাখে শিবিরের ক্যাডাররা।

চশমুদ্দিন চশমুদ্দিন শিবির সংক্রান্ত আরেকটা পোষ্ট ছিলো, এইটায় জোড়া লাগায়া দিলাম, এইখানেই সবকিছু থাকা দরকার বলে মনে হচ্ছে......। শয়তান শয়তান

শিবির ধোয়া তুলসী পাতা!

শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিভিন্ন মহলে আলোচিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। কিন্তু শিবিরের নেতাকর্মীরা তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। যখনই কোনো শিবির কর্মী গ্রেপ্তার হয় তখনই তারা দাবি করে যে, ঐ কর্মী তাদের নয়। তারা বলে যে, তাদের দলে কোনো সন্ত্রাসী নেই। তারা সবাই ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু ইতিহাস এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে ভিন্ন কথা। বিগত ১০ বছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অপরাধে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রড়্গাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মী্র সংখ্যা হাজারেরও ওপরে। হত্যা, গুম, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নারী নিপীড়ন, অবৈধ অস্ত্র বহন, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং বোমা বানানোর সরঞ্জাম উদ্ধারসহ এমন কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা নেই যার সঙ্গে শিবিরের নেতাকর্মীদের যোগসাজশ নেই। রাষ্ট্র কতৃক শিবির পাকড়াওয়ের ইতিহাসই বলে দিচ্ছে শিবির কি ধোয়া তুলসী পাতা নাকি এদেশে সন্ত্রাসের অন্যতম হোতা। এখানে বিগত ১০ বছরের একটা ছোট্ট হিসেব দিতে চাই।

১৮ জানুয়ারি, ২০১০। চট্টগ্রাম শহরের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় শিবির নিয়ন্ত্রিত একটি মেস থেকে অস্ত্র ও বোমা বানানোর সরঞ্জামসহ ১২ জন শিবির ক্যাডারকে পুলিশ আটক করে।
৩১ ডিসেম্বর, ২০০৯। কতৃপক্ষের বিরম্নদ্ধে অপরাধমূলক তৎপরতা সংগঠনের দায়ে একজন বহিরাগতসহ ৩ জন শিবিরকর্মীকে পুলিশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আটক করে। কতৃপক্ষের উপস্থিতিতে পুলিশ শামসুজ্জোহা হলের দুটি শিবির নিয়ন্ত্রিত কক্ষ সিল করে দেয়।
২২ ডিসেম্বর, ২০০৯। সরকারি আযীযুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ২০ ডিসেম্বরে সহিংসতা সৃষ্টির দায়ে পুলিশ এদিন ৪ শিবির ক্যাডারকে আটক করে।
১৫ ডিসেম্বর, ২০০৯। চাঁদপুর থেকে আটক জেএমবি নেতাকে রিমান্ডে নেয়ার পর হাইমচর উপজেলা শিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন হিসেবে তাকে শনাক্ত করে পুলিশ।
১৫ নবেম্বর, ২০০৯। রাবির ৩টি হলে অভিযান চালানোর সময় পুলিশ শিবির ক্যাডার হাসমত আলী ওরফে লিটনকে গান পাউডার ও বিভিন্ন জীবনহানিকর রাসায়নিক দ্রব্যসহ আটক করে।
২৬ অক্টোবর, ২০০৯। মতিহার থানাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক অস্ত্র, নারী নিপীড়ন ও অধ্যাপক ইউনুস হত্যা মামলার আসামি শিবির ক্যাডার জাফর বাবুকে পুলিশ রাজশাহী শহরের কাটাখালি মিউনিসিপ্যালিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৯। রাবির সৈয়দ আমীর আলী হল শাখার সভাপতি শিবির ক্যাডার একরামুল পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলায় জড়িত থাকার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের হাতে আটক হয়।
২৪ আগস্ট, ২০০৯। ছাত্রলীগের ২ জন কমêীকে ২০ জুন ’০৯-এ ছুরিকাঘাতে আহত করার সঙ্গে যুত্ত্ন থাকার অভিযোগে রাবির ৯ শিবির ক্যাডারকে পুলিশ আটক করে।
২৮ মে, ২০০৯। রাবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় সহিংসতায় নেতৃত্বদানকারী শিবির ক্যাডার সাঈদুর রহমান ওরফে সাঈদুরকে পুলিশ রাবি সংলগ্ন একটি শিবির নিয়ন্ত্রিত মেস থেকে আটক করে।
১৭ এপ্রিল, ২০০৯। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতার দায়ে বানিয়ারগাতি মহিলা মাদ্রাসা থেকে শিবিরের যশোর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৯ শিবির ক্যাডারকে আটক করে পুলিশ।
১৩ মে, ২০০৮। চট্টগ্রামের আদালতে বিচারক একরামুল হক চৌধুরী শিবির ক্যাডার নাসিরকে একটি অস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ১৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ৩৫।
২৬ মার্চ, ২০০৮। চট্টগ্রামের আদালতে ৪ শিবির ক্যাডারকে মৃত্যুদন্ড এবং ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। আসামিদের বিরম্নদ্ধে ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দরহাটে ৬ ছাত্রলীগ নেতা ও তাদেরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের ড্রাইভার এবং রাস্তয় থাকা রিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় প্রদান করেন।
৪ মার্চ, ২০০৮। শিবির ক্যাডারদের লালন-পালন ও তাদেরকে সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার অপরাধে গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে রংপুর কারমাইকেল কলেজের ৫ জন শিক্ষক এবং ৫ জন কর্মচারীকে বিভিন্ন কলেজে বদলি করা হয়।
৮ নবেম্বর, ২০০৭। জরুরি আইন ভঙ্গের দায়ে শিবিরের গোপালগঞ্জ জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান আলমগীর ও সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান সিদ্দিকসহ ১০ শিবির ক্যাডারকে পুলিশ আটক করে।
১০ সেপ্টেম্বর, ২০০৭। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস হত্যা মামলার চার্জশীট উপস্থাপনের সময় সিআইডি জানায় যে, জেএমবি নেতা আব্দুর রহমান এই হত্যাকাণ্ডে ৫ শিবির ক্যাডারের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
৮ আগস্ট, ২০০৭। রাবিতে ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অপরাধে র্যাব কতৃক আটক ব্যক্তিকে রাবি প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা শিবির ক্যাডার মোকাররম আব্দুলস্নাহ মনি হিসেবে শনাক্ত করেন।
৫ মে, ২০০৭। চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি আর্মি ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনা ভিডিও করার সময় আর্মি সদস্যরা শিবিরের ২ নেতাকে ভিডিও ফুটেজসহ আটক করে।
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬। পাথরঘাটা উপজেলা শিবিরের সভাপতি সোহাগ খান ও সাধারণ সম্পাদক মারফত উল্লাহকে জেএমবি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব সদস্যরা আটক করে।
৮ জানুয়ারি, ২০০৬। শিবির ক্যাডার আব্দুলস্নাহ আল মামুন ও তার পিতা জামায়াত নেতা ইউনুস আলীর বাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যরা ২টি গ্রেনেড উদ্ধার করে।
২২ ডিসেম্বর, ২০০৫। কুষ্টিয়ার মাদ্রাসা ছাত্র, শিবিরের এক ক্যাডারের কাছ থেকে পুলিশ বোমা বানানোর সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
২৫ নবেম্বর, ২০০৫। জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য জাকারিয়া হোসেন রনি রাজশাহীতে গ্রেপ্তার হয়। সে আগে শিবিরের একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ছিল বলে পুলিশ জানায়।
২০ জুলাই, ২০০৫। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা থেকে শিবির ক্যাডার মাহমুদুল চৌধুরীকে পুলিশ সদস্যরা একে-৪৭ এর ৩৩টি বুলেটসহ গ্রেপ্তার করে। যার মধ্যে ১৭টি দেশীয় কোনো কারখানায় তৈরি হয়েছে বলে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল মত প্রকাশ করে।
১৮ জুলাই, ২০০৫। চট্টগ্রামের ডিসি রোড থেকে র্যাব সদস্যরা শিবির ক্যাডার আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করে।
১২ জুলাই, ২০০৫। খুলনা মহানগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শেখ বেলালুদ্দিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শিবির ক্যাডার এখলাসকে রূপসা ফেরিঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১০ জুন, ২০০৫। শিবিরের নাসির বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড দুলাল উদ্দিন ওরফে মুন্নাকে ১টি একে- ৪৭ রাইফেলসহ চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকা থেকে আটক করা হয়।
৬ জুন, ২০০৫। ঢাকা থেকে আগত শিবির ক্যাডার সাজ্জাদকে র্যাব সদস্যরা গ্রেপ্তার করে। সাজ্জাদ ছিল শিবিরের চট্টগ্রামের হাজারিকা বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড।
২ জুন, ২০০৫। শিবিরের হাজারিকা বাহিনীর প্রধান গিয়াসউদ্দিন হাজারিকা এনকাউন্টারে নিহত।
৭ মে, ২০০৫। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের হাতে শিবির ক্যাডার দেলোয়ার ওরফে আজরাইল দেলোয়ার এনকাউন্টারে নিহত হয়।
৬ মাচê, ২০০৫। রায়গঞ্জে ছাত্রলীগের সমাবেশে যোগদানকালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রাখার দায়ে পুলিশ সদস্যরা শিবির ক্যাডার আকিলকে গ্রেপ্তার করে।
২৮ ফেব্রম্নয়ারি, ২০০৫। র্যাব সদস্যরা চট্টগ্রামের শিবির ক্যাডার গিট্টু নাসিরকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে একটি একে- ৪৭ রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৩ ফেব্রম্নয়ারি, ২০০৫। খুলনায় র্যাবের হাতে শিবির ক্যাডার হোসাইন আহমেদ ওরফে ফয়েজ মুন্না ক্রসফায়ারে নিহত হয়।
২৮ জানুয়ারি, ২০০৫। চট্টগ্রামের শাহনগর থেকে র্যাব সদস্যরা অস্ত্র স্মাগলিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ১ শিবির ক্যাডারসহ ৪ জনকে আটক করে।
১৭ জানুয়ারি, ২০০৫। শিবির ক্যাডার আফতাব হামিদকে র্যাব সদস্যরা ঢাকার কাকরাইল থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী অভিযান চালিয়ে র্যাব চট্টগ্রামের কেরুনতলি থেকে ৬টি অস্ত্র, রাইফেলের ১০টি বুলেট ও ৬টি কিরিচসহ ২টি ড্যাগার উদ্ধার করে।
১৫ জানুয়ারি, ২০০৫। চট্টগ্রামের গোধারপাড় থেকে ৪ শিবির ক্যডারকে ১টি এসবিবিএল গান, ৩টি এলজি গান ও ২৩ রাউন্ড গুলি এবং অনেকগুলো ধারালো অস্ত্রসহ আটক করা হয়।
১৫ ডিসেম্বর, ২০০৪। চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকা থেকে র্যাব সদস্যরা ৫ শিবির ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করে।
৯ এপ্রিল, ২০০৪। শিবির নিয়ন্ত্রিত ইয়াকুব বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আব্দুল হামিদ পুলিশ হেফাজতে মারা যায়। পুলিশ তাকে ইতোপূর্বে আরো ৭ শিবির ক্যাডারের সঙ্গে গ্রেপ্তার করে।
৭ এপ্রিল, ২০০৪। শিবির পরিচালিত ইয়াকুব বাহিনীর প্রধান ইয়াকুব চট্টগ্রামে পুলিশের হাতে এনকাউন্টারে নিহত হয়।
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৩। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে পুলিশ সদস্যরা শিবির ক্যাডার এনামুল হক ওরফে এনাইম্যা এবং ফরিদুল আলম ওরফে ফরিদ্যাকে ১টি একে-৪৭সহ আটক করে।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৩। কুমিল্লার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে শিবিরের ৪ নেতাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৩। বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী জামালউদ্দিনকে অপহরণের দায়ে শীর্ষ শিবির ক্যাডার কালা মাহবুব ও আলমগীরসহ ২৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
৬ আগস্ট, ২০০৩। বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৭ শিবির ক্যাডার গ্রেপ্তার।
২৯ জুন, ২০০৩। অস্ত্র মামলায় বগুড়ায় ১ শিবির ক্যাডারসহ ৩ জন গ্রেপ্তার।
১৭ এপ্রিল, ২০০৩। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩ শিবির ক্যাডারকে পুলিশ বোমাসহ গ্রেপ্তার করে।
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৩। চট্টগ্রামে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা মামলার শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে হত্যার দায়ে শিবির ক্যাডারদের অভিযুক্ত করা হয়।
১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৩। সাতকানিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত- শিবিরের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের হাতে ১ শিবির ক্যাডার নিহত হয়।
২৯ জুন, ২০০১। নারায়ণগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ শিবিরের ১ ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করে। ১৫ জুনের ঐ হামলায় আওয়ামী লীগের ২১ নেতাকর্মী নিহত ও শতাধিক গুরুতর আহত হয়।
১১ এপ্রিল, ২০০১। বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগে রংপুরে জামায়াত ও শিবিরের ২ জন গ্রেপ্তার।
৯ এপ্রিল, ২০০১। সাতকানিয়ায় ৭ এপ্রিল ছাত্র যুবলীগের ২ জনকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৯ শিবির ক্যাডারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
৯ মাচê, ২০০১। যশোর উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলা করে ৮ জনকে হত্যার দায়ে পুলিশ কতৃক ৪৬ জামায়াত- শিবির কর্মী গ্রেপ্তার।
২১ জুলাই, ২০০০। গোপালগঞ্জে হাসিনার সমাবেশে বোমা পুঁতে রেখে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালানোর দায়ে পুলিশ শিবিরের ৪ ক্যাডারকে আটক করে।
১৯৯৯ [তারিখ পাই নাই]। রাবি ছাত্র শিবির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর পাকিস্তানে তৈরী রিভলবার, গুলি ও গান পাউডার সহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়।

মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ

+++

শয়তান শয়তান শয়তান

রাজশাহীর যত শিবির ক্যাডার

গত ৮ ফেব্রয়ারির ঘটনার পর পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতারের জন্য ৫৪ শিবির ক্যাডারের একটি তালিকা তৈরি করেছে। তালিকার প্রথম নামটি হলো রাবি শাখা শিবির সভাপতি শামসুল আলম গোলাপের। বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামে। রাবি শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেনের নাম রয়েছে দুই নম্বরে। বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বালিনা গ্রামে। তালিকার বাকি ৫২ ক্যাডারের মধ্যে রাজশাহীর শিবির ক্যাডার আছে মাত্র ৩ জন। এরা হচ্ছে রাজশাহীর পবা উপজেলার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সোহেল, বাঘারছাতারী গ্রামের রায়হান ওরফে আবু রায়হান ও রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিব। এ ছাড়া ডাঁসমারীর দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার জাফর বাবুকেও পুলিশ খুঁজছে বলে জানা গেছে। কিন্তু রাজশাহীর শিবির ক্যাডার কি শুধু এরাই? বিগত ২৫ বছর ধরে যারা ধীরে ধীরে রাজশাহীকে একটি নরকে পরিণত করেছে তারা কি ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে?

অধ্যাপক তাসনীম আলম খান। বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা, প্রচার সম্পাদক। ইতোপূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ছিলেন। শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি। ১১ মার্চ, ১৯৮২-তে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৩ বাস বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের ওপর পরিচালিত হামলার নেতৃত্বে তাকে দেখা যায়।

লতিফুর রহমান। ’৮৮-তে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাসদ নেতা জালালকে তার নিজ বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যার সময় নেতৃত্বে ছিল পরবর্তীতে চারদলীয় জোটের পক্ষ থেকে জামায়াতের এমপি নির্বাচিত হওয়া তৎকালীন শিবিরের কুখ্যাত এই ক্যাডার।

২০| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৯

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: রফিকুল ইসলাম খান। বর্তমানে ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমির। ইতোপূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি এবং পরবর্তীতে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি। ’৮৮ সালে জুলাইয়ের ১ম সপ্তাহে আরো প্রায় শতাধিক শিবির ক্যাডারের সঙ্গে রাবির আমির আলী হল ছাত্র সংসদের জিএস ও জাসদ ছাত্রলীগ নেতা প্রিন্সসহ ২০-২৫ জনের ওপর হামলার সময় এবং এর ক’দিন বাদেই ১৭ জুলাই ভোরে রাবির এস এম হলে ঢুকে জাসদ ছাত্রলীগের আইয়ুব আলী, বাদল এবং হল সংসদের ভিপি নওশাদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার সময় তাকে হামলার পুরোভাগে দেখা যায়। প্রায় ৪ বছর বাদে আবার তাকে এ্যাকশনে দেখা যায় ’৯২-এর ১৭ মার্চে। রাবির ইতিহাসে ’৯২-এর এই হামলাই ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা।

শামসুল আলম। রফিকুল ইসলাম খানের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। শিবিরের রাবি এলাকার প্রধান ক্যাডার। ’৮৮ সালে জুলাইয়ের ১ম সপ্তাহে রাবির আমির আলী হলে এবং ১৭ জুলাই রাবির এস এম হলে হামলার পুরোভাগে থাকা রফিকুল ইসলাম খানের পাশে তাকে দেখা যায়। এরপর ’৯২-এর ১৭ মার্চের হামলাতেও তাকে রফিকুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা যায়।

মোজাম্মেল। শিবিরের বুধপাড়া এলাকার মেসগুলোর নিয়ন্ত্রক। শিবিরের তৎকালীন সাথী। বাসা রাবি সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকায়। শিবির ক্যাডার হিসেবে তার ব্যাপক নাম ডাক ঐ এলাকায়। ১৯৯২ সালের আগস্টে তার বাড়িতে বোমা বানানোর সময়ই শিবির ক্যাডার আজিবরসহ অজ্ঞাতনামা অন্তত আরো তিনজন নিহত হয়। ঐ বিস্ফোরণে পুরো ঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং টিনের চাল কয়েকশ গজ দূরে গাছের ডালে ঝুলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে পুলিশ মহলস্নার একটি ডোবা থেকে অনেকগুলো খণ্ডিত হাত-পা উদ্ধার করে। যদিও শিবির আজিবর ছাড়া আর কারো মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি। পুলিশ বাদী হয়ে মতিহার থানায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলকে প্রধান আসামি করে বিস্ফোরক ও হত্যা মামলা দায়ের করে। প্রায় ৫ বছর পলাতক থাকার পর মামলা ম্যানেজ করে মোজাম্মেল এলাকায় ফিরে আসে এবং জামায়াতের রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হয়। রাবিতে শিবিরের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরম্ন করে ১৯৯২-এর ১৯ জুনে জাসদ নেতা মুকিমকে হত্যার অভিযান পর্যন্ত সবগুলো হামলাতেই তাকে দেখা যায়। ১৯৮৮ সালের জুলাইয়ে দুই দফায়, ১৯৮৮ সালের আগস্টে, ১৯৮৯ সালের রমজান মাসে, ১৯৮৯ সালের নবেম্বরে এবং ১৯৯২ সালের ১৭ মার্চের হামলায় তাকে দেখা যায় সামনের সারিতে। রগ কাটা, বোমা বানানো এবং নিক্ষেপ করা, হাতের কব্জি কেটে নেয়া, কুপিয়ে মানুষ খুন করাসহ শিবির কতৃক পরিচালিত বিভিন্ন পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের নায়ক এই মোজাম্মেল।

সামাদ। রাবি সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার আলোচিত আরেক শিবির ক্যাডার। মেহেরচন্ডী এলাকার মেসগুলোর নিয়ন্ত্রক। বর্তমানে জামায়াতের রোকন। জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮-তে রাবির আমির আলী হল ছাত্র সংসদের জিএস প্রিন্সসহ ২০-২৫ জনের ওপর হামলায়, ১৭ জুলাই, ১৯৮৮-তে ভোররাতে জাসদ ছাত্রলীগের আইয়ুব আলী, আহসানুল কবির বাদল এবং হল সংসদের ভিপি নওশাদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতিহাসের ভয়াবহতম হামলাটির সময়, ১৯ জুন, ১৯৯২-তে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং ২৪ জুন তিনি মারা যান। তার ওপর হামলার সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপনসহ ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ক্রিকেটার জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৪ সালে পরীক্ষা দিতে আসার পথে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় ছাত্রমৈত্রী নেতা প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে রাবির পার্শ্ববর্তী চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে হাত ও পায়ের রগ কাটার পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দসহ প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময়, ১৯৯৭ সালে গভীর রাতে রাবি ক্যাম্পাসে এবং এরপর রাবি জিমনেসিয়াম পুলিশ ক্যাম্পে বোমা হামলা চালানোর সময় এবং ১৯৯৮ সালে শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করার সময় তাকে দেখা যায় সামনের সারিতে।

গিয়াস। রাজশাহী মহানগরের ২৮ নং ওয়ার্ড সাবেক কমিশনার। বর্তমানে জামায়াতের রোকন। জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮-তে রাবির আমির আলী হলে হামলার সময়, ১৭ জুলাই, ১৯৮৮-তে আইয়ুব আলী, বাদল ও নওশাদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে রাবির ইতিহাসের ভয়াবহতম হামলাটির সময় তাকে হামলার পুরোভাগে দেখা যায়।

শাহীন। শিবিরের তৎকালীন সাথী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর মসজিদ মিশন একাডেমির পাশের বাসাটি তার। শিবির ক্যাডার হিসেবে এলাকায় তার ব্যাপক নাম ডাক। রগ কাটা, বোমা বানানো এবং নিক্ষেপ করা, হাতের কব্জি কেটে নেয়া, নৃশংষভাবে খুন করাসহ শিবির কতৃক পরিচালিত বিভিন্ন পৈশাচিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার সুবাদে ঐ এলাকার অপরাধ জগতের অঘোষিত ‘বড় ভাই’ হিসেবে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছে। জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮-র জুলাইয়ে দুই দফা হামলার সময়, ১৯৮৮ সালের আগস্টে রাবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের বাসভবনে ছাত্র শিবির কতৃক বোমা হামলার সময়, ১৯৮৯ সালের রমজান মাসে ছাত্র ইউনিয়নের রাবি শাখার সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফাকে বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী চকপাড়ায় ইফতারের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে হাতের রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৯৮৯ সালের নবেম্বরে রাবির নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে সন্ধ্যায় ছাত্র শিবির কতৃক বোমা হামলার সময়, ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে রাবির ইতিহাসের ভয়াবহতম হামলাটির সময়, ১৯ জুন, ১৯৯২-তে মুকিমের ওপর হামলার সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে রাবির ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে শেরেবাংলা হলে ঢুকে জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হত্যা করার সময়, ১৯৯৪ সালে ছাত্রমৈত্রী নেতা প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে ছাত্রমৈত্রী নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৭ সালে বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময়, ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলার সময় এবং ২০০১ সালে রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে কমান্ডো হামলা চালিয়ে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত ও আহত করার সময় তাকে হামলার নেতৃত্বসারিতে দেখা যায়।

আজিবর। শিবিরের তৎকালীন সাথী। মিডিয়ার কল্যাণে ’৯২ সালে সারা দেশবাসীর কাছে তার নামটি পরিচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, এত নাম ডাক সে কাজে লাগাতে পারেনি। কারণ, ১৯৯২ সালের আগস্টে আরেক শিবির ক্যাডার বুধপাড়ার মোজাম্মেলের বাড়িতে বোমা বানানোর সময় অজ্ঞাতনামা অন্তত আরো তিনজন শিবির ক্যাডারের সঙ্গে আজিবরও প্রাণ হারায়। ঐ বিস্ফোরণে পুরো ঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং টিনের চাল কয়েকশ গজ দূরে গাছের ডালে ঝুলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে পুলিশ মহলস্নার একটি ডোবা থেকে অনেকগুলো খণ্ডিত হাত-পা উদ্ধার করে। যদিও শিবির আজিবর ছাড়া আর কারো মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি। ১৯৮৮-র জুলাইয়ে দুই দফা হামলার সময়, ১৯৮৮ সালের আগস্টে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের বাসভবনে বোমা হামলার সময়, ১৯৮৯ সালের রমজান মাসে ছাত্র ইউনিয়নের রাবি শাখার সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফার রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৯৮৯ সালের নবেম্বরে বোমা হামলার সময়, ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে রাবির ইতিহাসের ভয়াবহতম হামলাটির সময় এবং ১৯ জুন, ১৯৯২-তে মুকিমের ওপর হামলার সময় সামনের সারিতে ছিল শিবিরের এই কুখ্যাত ক্যাডার আজিবর।

নূরম্নল ইসলাম বুলবুল। শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি। বর্তমানে ঢাকা মহানগর জামায়াতের সহ-সাধারণ সম্পাদক। সাবেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির ক্যাডার। বর্তমানে পল্টনে বায়তুল খায়ের ভবনে প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। জুলাই প্রথম সপ্তাহ, ১৯৮৮-তে রাবির আমির আলী হলে হামলায় এবং ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে রাবিতে হামলার সময় তাকে সামনের সারিতে থেকে হামলায় নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।

জাফর বাবু। ডাঁসমারী এলাকার বাসিন্দা। শিবিরে যোগ দেয় ’৯১ সালে। ২০০৬ সাল থেকে সে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। কুখ্যাত শিবির ক্যাডার হিসেবে রাজশাহীজুড়ে তার নাম ডাক রয়েছে। মতিহার থানাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক, অস্ত্র, নারী নিপীড়ন ও অধ্যাপক ইউনুস হত্যা মামলাসহ অসংখ্য মামলার আসামি এই শীর্ষ শিবির ক্যাডার জাফর বাবু। ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবরে তাকে পুলিশ রাজশাহী শহরের কাটাখালি মিউনিসিপ্যালিটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এর আগেও সে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও তাকে আটকে রাখা যায়নি। শিবিরের অন্য ক্যাডারদের এই জাফর বাবুই অস্ত্র প্রশিড়্গণ দিয়ে থাকে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া শিবির ক্যাডাররা রিমান্ডে বলেছে যে ঐ রাতের হামলায় ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যাসহ এসএম হলের রগ কাটা মিশনে জাফর বাবুই নেতৃত্ব দিয়েছে। এ ছাড়া ১৯৮৮ সালের আগস্টে রাবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের বাসভবনে ছাত্র শিবির কতৃক বোমা হামলার সময়, ১৯৮৯ সালের রমজান মাসে ছাত্র ইউনিয়নের রাবি শাখার সভাপতি গাজী গোলাম মোস্তফাকে বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী চকপাড়ায় ইফতারের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে হাতের রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৯৮৯ সালের নবেম্বরে রাবিতে বোমা হামলার সময়, ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে রাবির ইতিহাসের ভয়াবহতম হামলাটির সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে শেরেবাংলা হলে ঢুকে জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হত্যা করার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে ছাত্রমৈত্রী নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রূপমকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৭ সালে প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময় হামলার নেতৃত্বে ছিল জাফর বাবু ও তার ক্যাডার বাহিনী।

মাইনুল এবং জব্বার। জব্বার ছিল শিবিরের রাবি শাখার সভাপতি। মাইনুল ছিল সেক্রেটারি। মাইনুল বর্তমানে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে জমজম ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর। জব্বার বর্তমানে যশোরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর। দুজনের বর্তমান পেশার মতোই আর সবকিছুতেই রয়েছে গভীর মিল। শিবিরের হয়ে ক্যাডারবৃত্তিতে দুজনকেই প্রথম দেখা যায় ’৯২-এর ১৭ মার্চে। চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতিহাসের ভয়াবহতম যে হামলাটি চালায়, রাত ৩টায় বিডিআর নামানোর আগ পর্যন্ত যে হামলা বন্ধ হয়নি, সেই হামলার সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপনসহ ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ক্রিকেটার জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৪ সালে পরীক্ষা দিতে আসার পথে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় ছাত্রমৈত্রী নেতা প্রদুৎ রুদ্র চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫তে রাবির পাশে চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে হাত ও পায়ের রগ কাটার পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দসহ প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময়, ১৯৯৮ সালে শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করার সময় মাইনুল এবং জব্বার দুজনে একসঙ্গে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেয়।

খুশী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতিহাসের ভয়াবহতম যে হামলাটি চালায়, রাত ৩টায় বিডিআর নামানোর আগ পর্যন্ত যে হামলা বন্ধ হয়নি, সেই হামলার সময়, ১৯ জুন, ১৯৯২-তে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং ২৪ জুন তিনি মারা যান, তার ওপর হামলার সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপনসহ ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের মেধাবী ত্র্নিকেটার জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে রাবির পাশে চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে হাত ও পায়ের রগ কাটার পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দসহ প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময় এবং ২০০১ সালে রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে কমান্ডো হামলা চালিয়ে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত ও আহত করার সময় তাকে হামলার নেতৃত্বসারিতে দেখা যায়।

আলমগীর। সাবেক রাবি ছাত্র শিবির সাংগঠনিক সম্পাদক। ১৭ মার্চ, ১৯৯২-তে পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের কুখ্যাত সিরাজুস সালেহীন বাহিনীসহ কয়েক হাজার সশস্ত্র বহিরাগত শিবির সন্ত্রাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতিহাসের ভয়াবহতম যে হামলাটি চালায়, রাত ৩টায় বিডিআর নামানোর আগ পর্যন্ত যে হামলা বন্ধ হয়নি, সেই হামলার সময়, ১৯ জুন, ১৯৯২-তে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং ২৪ জুন তিনি মারা যান। তার ওপর হামলার সময়, ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, সাধারণ ছাত্র নতুন এবং ছাত্র ইউনিয়নের তপনসহ ৫ ছাত্রকে হত্যা করার সময়, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩-তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রমৈত্রী নেতা জুবায়েদ চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৪ সালে পরীক্ষা দিতে আসার পথে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় ছাত্রমৈত্রী নেতা চৈতীর হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে রাবির পাশে চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে হাত ও পায়ের রগ কাটার পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৮ সালে শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করার সময় তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো।

রবি। রাবির একজন কর্মচারী। শিবিরের সাংগঠনিক তৎপরতায় সহযোগিতা করার জন্য তাকে ঐ পদে ঢোকানো হয়। তার বাড়ি রাজশাহী শহরের মির্জাপুর এলাকায়। ২০০১ সালে রাবি ছাত্রীদের বিক্ষোভ মিছিলে শিবিরের সশস্ত্র হামলার সময়, ৯ ডিসেম্বর, ২০০৫ রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রীদের বিক্ষোভ চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলার সময় এবং ২৫ জুলাই, ২০০৪ রাবি ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সিনহার ওপর হামলার সময় তাকে দেখা যায়।

শাহাদাত হোসেন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে প্রাকটিস করছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-তে রাবির পাশে চৌদ্দপাই নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সকাল-সন্ধ্যা বাসে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী নেতা রূপমকে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে হাত ও পায়ের রগ কাটার পর তাকে কুপিয়ে হত্যা করার সময়, ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছাত্রনেতা ফরহাদের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার সময়, ১৯৯৬ সালে জাসাস রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আমান উলস্ন্লাহ আমানকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং ছাত্রদল নেতা ডুপেস্নর হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার সময়, ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল খালেক, জিয়া পরিষদ নেতা হাবিবুর রহমান আকন্দসহ প্রায় বিশজন শিক্ষকের বাসায় বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময় এবং ১৯৯৮ সালে শিক্ষক সমিতির মিটিং থেকে ফেরার পথে রাবি শহীদ মিনারের সামনে অধ্যাপক মোঃ ইউনুসের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করার সময় তাকে হামলার নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।

রেজাউল। বর্তমানে শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা। ২০০১ সালে রাবি ছাত্রী হলে বহিরাগত অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত ছাত্রী বিক্ষোভে কমান্ডো হামলা চালিয়ে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত ও আহত করার সময় হামলার পুরোভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল এই রেজাউল।

এরা ছাড়াও রাজশাহী জেলার যুব কমান্ডের সাবেক আহ্বায়ক, বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা শওকত, বিনোদপুরের সালেকীন, ধরমপুরের হাসান, রাবির শেরে বাংলা হলের মুজাহিদ, বর্তমানে গাজীপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত হানিফ, ডাঁসমারী এলাকার বাসিন্দা, বর্তমানে রাবির কর্মচারী তোফা, সাবেক রাবি শিবির সভাপতি মাসুদ এবং মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা আলতাফসহ আরো অনেক আলোচিত শিবির ক্যাডারের নিরাপদ আবাসস্থল ছিল রাজশাহী। ৫৪ জনের তালিকায় তাদের নাম রাখা হয়নি। এখন দেখার বিষয় সরকার তাদের নিয়ে কি করে।

হাসি কানতেছি হাহাপগে

দেশের শীর্ষ সংবাদ ম্যাগাজিন 'সাপ্তাহিক' [www.shaptahik.com]-এ প্রকাশীত একটি প্রতিবেদন নাগরিকদের জন্য তুলে দিলাম -আনিস রায়হান

মহিউদ্দিন নিলয় এবং আব্দুল্লাহ্ নূহ [গ্রন্থনা করেছেন আমার দুই সিনিয়র সহকর্মী]

‘ওয়াজিবুল কতল’- এর ঘোষণা দিয়ে শুরু হয় মানুষ হত্যার রাজনীতি। এই রাজনীতি চলছে এখনো। চলবে হয়তো সামনের দিনগুলোতেও। অন্তত সরকার বা প্রশাসনের আচরণে সে রকমই মনে হয়। এখন পর্যন্ত জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কোনো সরকারেরই কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। গণমাধ্যমে অনেকদিন প্রচার-প্রকাশের পর সরকার কিছু গ্রেপ্তারের নমুনা দেখায়। এরপর আর কোনো ধারাবাহিকতা থাকে না। চলে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, চলে জঙ্গিদের উন্মত্ততা।
ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে ফতোয়া প্রচার করে ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। প্রকাশ্যে তারা ওয়াজ বা বক্তৃতায় এসব ফতোয়া দেয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের ওয়াজগুলোতে রাষ্ট্রবিরোধী অনেক বক্তব্যও পাওয়া যায়। এসব সরকারের খুব একটা নজরে আসে না। ওয়াজ বলেই হয়তো সরকার এটাকে আমলে নেয় না। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়াজের মাধ্যমেই গড়ে উঠছে বিশাল নেটওয়ার্ক। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী তার বাকপটুতা দিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে টেনে আনছে ধর্মীয় রাজনীতির কাতারে। এই ধর্মীয় রাজনীতির দোহাই দিয়েই তৈরি হচ্ছে জঙ্গি, রক্তাক্ত হচ্ছে দেশের জনপদ, লেখা হচ্ছে খুন ও লোমহর্ষকতার ইতিহাস। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে অসংখ্যবার সংবাদ হয়েছে, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হয়েছে। আদতে কোনো কার্যকর ফল হয়নি। কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি ও কিছুদিন পর পর কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেই বিষয়টিতে যেন তুষ্ট থাকছে সরকার।
নির্বাচনের আগে জঙ্গি নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সরকার গঠনের পর এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। জঙ্গি নিধনে কার্যকারিতা দেখা যায়নি, দেখা যায়নি তেমন কোনো উদ্যোগ। আলোচনা হয়েছে বিস্তর। শীর্ষ জঙ্গি মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই তথ্য ধরে অগ্রগতি হবার কথা ছিল অনেক, হয়নি কিছুই।
জঙ্গিবাদ সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে গত জোট সরকারের সময়ে। জামায়াত জঙ্গিবাদকে মিডিয়ার সৃষ্টি বলে দাবি করলেও পরে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জামায়াতেরই সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে। জামায়াত জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, বিএনপি-জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। এভাবেই এগিয়ে চলছে জঙ্গিবাদ। মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে জানা যায় বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির এক কালো অধ্যায়ের কথা। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা নিয়ে হাওয়া ভবনে মিটিংয়ের কথা, জড়িতদের কথা। এসব অস্বীকার করছে বিএনপি। বিভিন্ন প্রমাণাদি এখন বেরিয়ে আসছে, বিএনপির তাই অস্বীকারের উপায় নেই। শুধু জোটের রাজনীতি ধরে রাখার জন্যই বিএনপি জড়িয়ে যাচ্ছে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতার সঙ্গে, জড়িয়ে যাচ্ছে জামায়াতের ফাঁদে। গত নির্বাচনে বিএনপি এর সমুচিত জবাব পেয়েছে ভোটারদের কাছ থেকে। তাতে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি বিএনপির রাজনীতিতে। বরং বিএনপিতে প্রতিক্রিয়াশীলদের আধিপত্য বাড়ছে, বাড়ছে জামায়াতনির্ভরতা। এভাবে চলতে থাকলে বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনি ভেবে দেখা দরকার। জামায়াতী গ্রাস মুক্ত হতে না পারলে বিএনপির অস্তিত্ব নিয়েই সামনে হুমকি আসার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সঙ্গে পুরোপুরিভাবে জড়িত জামায়াতে ইসলামী। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর। মূলত জামায়াতী জঙ্গিবাদের বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল নিয়েই নির্মিত হয়েছে ‘জিহাদের প্রতিকৃতি’। শাহরিয়ার কবিরের এই প্রামাণ্যচিত্রটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৬০ মিনিট। মাত্র ৬০ মিনিটেই তথ্য-প্রমাণসহ জঙ্গিবাদের বিস্তৃত বিবরণ আছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। তথ্য-প্রমাণের পাশাপাশি আছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎকার। আছে সমাজ ও ধর্ম গবেষকদের বিশ্লেষণ। আছে জঙ্গিবাদের নমুনা... জঙ্গিদের বর্বরতা... আক্রান্তদের আহাজারি... স্বজনদের কান্না...
প্রামাণ্যচিত্রটি ইতোমধ্যেই কয়েকটি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হয়েছে। দেশেও দু’দফা প্রদর্শিত হয়েছে। আগামী মাসে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হবে, তারপর ডিভিডি হয়ে আসবে বাজারে। সাপ্তাহিক তার পাঠকদের জন্য পুরো প্রামাণ্যচিত্রটির ধারা বিবরণী তৈরি করেছে। এতে কোনো ধরনের পরিবর্তন না এনে একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ। ২১ আগস্ট ২০০৪। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভা শেষ হওয়ার মুহূর্তে আরম্ভ হলো সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড-বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণ। মুহূর্তের ভেতর টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়া আর আহতদের আর্তচিৎকারে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আকাশ আচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ আহত হলেন ৩ শতাধিক।

শেখ হাসিনা
২১ আগস্ট আমাদের যে র্যালি ছিল তা ছিল শান্তির জন্য এবং গ্রেনেড হামলার বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে, আমরা যেখানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে র্যালি করলাম সেই র্যালিটাকে আক্রমণ করা হলো গ্রেনেড দিয়ে। প্রায় ১ ডজন মতো গ্রেনেড ছোড়া হয়েছিল। আমরা এটা কল্পনাও করতে পারিনি। আমি সেদিন একটু দেরিতে পৌঁছেছি। সকলের বক্তব্য প্রায় শেষ। তাদের একজন থাকতেই আমি রওনা হলাম, গিয়ে পৌঁছলাম এবং পৌঁছেই আমি বক্তব্য রাখতে শুরু করলাম। কিছু বোঝা বা বলার আগেই হঠাৎ আওয়াজ, গ্রেনেডের। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সবাই তাড়াতাড়ি বসিয়ে দিল নিচে। আমার সামনে একটা টেবিলও ছিল। বসে পড়লাম। একটার পর একটা গ্রেনেড হামলা হয়েই যাচ্ছিল।

২১| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৯

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: তখন ক্ষমতাসীন চারদলীয় জোট সরকার। এই গ্রেনেড-বোমা হামলার জন্য যথারীতি আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করলেও জঙ্গি মৌলবাদী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের দাবি এই হামলা তারাই করেছে।

টিভি প্রতিবেদন
গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে প্রথম জবানবন্দি দেন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান।

হরকাতুল জিহাদের গ্রেপ্তারকৃত নেতা মুফতি হান্নান বলেছেন কীভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শীর্ষ নেতা, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু হরকাতুল জিহাদ ও ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে বসে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।

মুফতি হান্নান : প্রথম মিটিং হয় ১৪ তারিখে, মিটিং ছিল হাওয়া ভবনে। সে হাওয়া ভবনে বিভিন্ন আলোচনা হয়। ওই হাওয়া ভবনের মিটিংয়ে শরিক ছিল তারেক জিয়া, আলী আহসান মুজাহিদ সাহেব, হারিছ চৌধুরী, আব্দুস সালাম পিন্টু সাহেব এবং হরকাতুল জিহাদের আমির, মাওলানা আব্দুস সালাম সাহেব, শেখ ফরিদ সাহেব এবং আল মারকাজুল ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি আব্দুর রশিদ সাহেব। সেখানে তারেক জিয়া সাহেব আলোচনা করেন যে, বর্তমান অবস্থায় দেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা এদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এরপর আলী আহসান মুজাহিদ সাহেব বললেন যে, আপনার কথা সত্য। শুধু তাই নয়, তারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সাহেব বললেন যে, কথাগুলো সবই সত্য এবং পরিষ্কারভাবে আপনারা বলেন কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার?
তিনি বললেন যে, এখানে দুটা পদক্ষেপ। হয়ত এদেশে যে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের ব্যাপক রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা দরকার নচেৎ তাকে এদেশ থেকে চিরবিদায় করে দেয়া দরকার অর্থাৎ তাকে শেষ করে দেয়া দরকার।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর নূর, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি মেজর নূরও উপস্থিত ছিলেন। তাকে তিনি বললেন যে, আপনি কিছু বলেন। তখন মেজর নূর বললেন, আপনারা অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবেন এটা আমি জানি। আমি তো রাজনীতি করি না কিন্তু আমি জানি তার মোকাবেলা করতে হলে তিনটা পদক্ষেপ নিতে হবে। একটা হলো, তার বাড়িতে আক্রমণ করতে হবে, অথবা তার আসা-যাওয়ার পথে তাকে আক্রমণ করে মেরে ফেলতে হবে নচেৎ তার কোনো মিটিংয়ে আক্রমণ করে তাকে শেষ করতে হবে।

টিভি প্রতিবেদন
মুফতি হান্নান জানিয়েছেন ২০ আগস্ট সকাল ১১টায় পিন্টু তার ভাই তাজউদ্দিন, হরকাতুল জিহাদ নেতা আবু তাহের জান্দাল ও কাজলের উপস্থিতিতে ১৫টি গ্রেনেড দেন শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য।

আপনাদের এই অপারেশন ব্যর্থ হলো এটা কখন জানতে পারলেন আপনারা?
মুফতি হান্নান : আমরা তখন অফিসে ছিলাম। অপারেশন হওয়ার পর ওরা মোবাইল করে জানায় যে, এ ধরনের অবস্থা হয়েছে এবং এ কারণেই হয়েছে। কোনো ডিসিপ্লিন ছিল না এবং স্টেজ কখন কোথায় হবে এ ব্যাপারে জানা ছিল না। হঠাৎ করে স্টেজ হয় এবং মানুষজনের খুব ভিড়ের কারণে এরা পশ্চিম দিকে এবং দক্ষিণ দিকে অবস্থান করে এবং অন্যরা, জামায়াতে ইসলামীর যারা লোকজন ছিল তারা প্রায় ১৫ জন। তারা কে কোথায় অবস্থান নিয়েছে, কেউ কাউকে খুঁজে না পাওয়াতে। হঠাৎ করে ওরা বলল যে, দক্ষিণ দিক থেকে একটা গ্রেনেড আসে। আসার পরই মানুষ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরে যারা গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে তারা ওপরের দিকে নিক্ষেপ করেছে এবং ওপরেই গ্রেনেডগুলো ফেটেছে। ওরা বলেছে প্রায় ২০ থেকে ৩০টা গ্রেনেড ওপরে ফেটেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ফেটেছে। ফলে মানুষ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ওই সময় ওরা গুলি করেছে। ওরা বলল যে, রাইফেলের গুলি আসছে কিন্তু শেখ হাসিনার কোনো সমস্যা হয়নি। এবং ওরা ফিরে আসছে। তখনই আমরা যাই।

শেখ হাসিনা
আমার ওপর অনেক বারই আক্রমণ হয়েছে। যে কারণে আমাদের সরকার থাকতে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়ে একটা আইন করেছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পরই সে আইনটা প্রত্যাহার করে নেয়। এবং প্রত্যাহার করে নেয়ার পর পরই কিন্তু এ আক্রমণটা হয়। এর সঙ্গে যে তদানীন্তন জোট সরকারের একটা মদদ ছিল তা কিন্তু পুলিশ বা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সবার আচার-আচরণ থেকে সেটা স্পষ্ট বোঝা যায় যে, তাদের একটা যোগসাজশ নিশ্চয় ছিল।

বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে অভ্যুদয় ঘটেছে শতাধিক জঙ্গি-মৌলবাদী সংগঠনের। হরকাতুল জিহাদসহ এসব সংগঠনের লক্ষ্য সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামী হুকুমত ও কোরআনের আইন কায়েম করা। (প্রথম পর্ব জিহাদের ডাক, জিহাদ কি ও কেন? বইয়ের প্রচ্ছদ) কারা এই হরকাতুল জিহাদ? বাংলাদেশে আমরা তাদের শেকড় অনুসন্ধান করেছি।

হাসান রফিক
হরকাতুল জিহাদের প্রাক্তন কর্মী
হরকাতুল জিহাদ যেদিন প্রতিষ্ঠিত হয় সেদিন ১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল। জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে বলা হয়েছিল হরকাতুল জিহাদ এমন একটা প্ল্যাটফরম যেখানে বাংলাদেশের যত মুজাহিদ আছে, আফগান ফেরত যত সশস্ত্র যোদ্ধা আছে তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা প্ল্যাটফরম। তাছাড়া সমগ্র বিশ্বে যারা জিহাদভিত্তিক কাজ করে যেমন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলাম, আল আলামী, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ইসলামী হরকাতুল জিহাদ, আল কায়েদা এবং আল উখওয়ানুল ইসলাম মিসর। সবার মাধ্যমে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইসলামী শাসন করার ইচ্ছা ছিল হরকাতুল জিহাদের।
আমি ১৯৯১ সালে গিয়েছিলাম আফগানিস্তানে এবং ১৯৯২ সালে ফিরে আসি। প্রথমে পটিয়া মাদ্রাসায় ট্রেনিং করেছিলাম। বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ নিয়েছি, অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়েছি আরাকান পাহাড়েÑ প্রায় ৬ মাস। পাহাড়ে কীভাবে উঠব, কীভাবে নামব। শরীরের মধ্যে প্রায় ৬/৭টা ইট দিয়েছে। হাত উঁচু করে তাতে অস্ত্র ধরে পানির মধ্যে সাঁতার কেটেছি।

মুফতি হান্নান
৮৭ সালের শেষ দিকে আমি পাকিস্তান যাই। পাকিস্তানের করাচিতে জামিয়া ইউসুফ নিউ টাউন মাদ্রাসায় মুফতি অর্থাৎ ডিগ্রি পড়ার জন্য আমি যাই। ভর্তি হওয়ার পর আমি যখন তৃতীয় বছরে অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে হামলা করে। আমাদের বাংলাদেশি মাওলানা আব্দুর রহমান শহীদ (রঃ) এবং আরো অনেক পাকিস্তানি ওলামায়ে একরাম, মুজাহিদরা নিউ টাউন মাদ্রাসায় আসে। ওখানে বক্তৃতা হয়, জিহাদী আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা আফগানিস্তানে যাই। আফগানিস্তানের খোস্ত শহরে ইয়াবাহ্ ট্রেনিং সেন্টারে প্রথম প্রশিক্ষণ নিই।

মুফতি ওবায়দুল্লাহ
কর্মী, লস্কর-ই তৈয়বা
হরকাতুল জিহাদুল ইসলামী আলামী পাকিস্তানÑ এটা হলো সংগঠনের নাম। ওই সংগঠনের মাধ্যমে নুরুল কবির আমাকে এখান থেকে বলে যে, আপনি লাহোরে চলে যান। লাহোরে হরকাতুল জিহাদের অফিস আছে মুজাহিদদের। একটা চিঠি আমার হাতে দিয়ে বললেন, এই চিঠিটা আপনি দেখাবেন। এরপর আপনার আর চিন্তা করা লাগবে না। তারাই সব নিয়ে যাবে।
লাহোরে গেলাম। সেখানে যাবার পর ওরা আবার আমাকে তাদের লোক দিয়ে পেশোয়ারে পাঠিয়ে দিল। পেশোয়ারে মুজাহিদীনদের অফিস আছে। ওখানে যাবার পর ওরা আবার চেক করে। ভারতীয় মানুষ হলে আবার বেশি চেক করে, কারণ ভারতের সঙ্গে ওদের একটু শত্রুতা আছে। তারপর আমাকে যখন দেখল যে, ভালো তখন আমাকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। গাড়িতে করে নিয়ে গেল খোস্ত শহরে। সেখানে গিয়ে ট্রেনিং নিয়েছি। প্রায় এক মাস। ওই এক মাসে আজ এক রকম অস্ত্র, কাল আরেক রকম অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

হাসান রফিক : বাংলাদেশ হরকাতুল জিহাদ জেলাভিত্তিক, থানাভিত্তিক যারা কমান্ডার ছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ওরা একদিন আমাদের মাদ্রাসায় এলো ছাত্রদের হরকাতুল জিহাদের দাওয়াত দেয়ার জন্য। তারা যখন বলল যে, হরকাতুল জিহাদ এমন একটি প্ল্যাটফরমের নাম যাদের সঙ্গে থাকলে খুব সহজভাবে বেহেস্তে যাওয়া যায়। আমরা এখানে শুধু জিহাদের কাজ করব। আমরা দেশে ইসলাম কায়েম করব। ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করব।

প্রতিবেশী বার্মা থেকে আরাকানের মুসলিম যুবকেরা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসেছে জিহাদের প্রশিক্ষণের জন্য।

মোহাম্মদ শাকিল জিহাদি
প্রাক্তন কর্মী, রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)
২০০০ সালে এসে সাডিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছি, ওখানেই ট্রেনিং নিয়েছি। এক বছর পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছি। তিন বছর পর লিবিয়ায় যাই লেখাপড়া করার জন্য। ওখানে দু’বছর লেখাপড়া করার পর বাংলাদেশে চলে আসি।

হাসান রফিক
আমাদের ব্যাচে ছিল প্রায় ৩০০ জন। যেগুলো ছাত্র শিবিরের ছিল, হরকাতুল জিহাদে ছিল, রোহিঙ্গা অর্থাৎ আরএসও ছিল, আইটিএম বা ইতহাদাতুল মুসলিম ছিল। সে সময় তো ওখানে জোরেশোরে জামায়াতে ইসলাম এবং হরকাতুল জিহাদ, আরএসওÑ সবাই মিলে আরাকানে ইসলাম কায়েম করার জন্য জিহাদের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।

মুফতি হান্নান
হরকাতুল জিহাদে থেকে আফগানিস্তানে জিহাদ করেছি এবং চেচনিয়ার ভেতরে অনেক সাথী ছিল এবং ফিলিস্তিনে গিয়েছি। আর কাশ্মীরে গিয়েছে আমাদের মাওলানা মঞ্জুর হাসান। উনি ওখানে শহীদ হয়েছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের অনেকে কাশ্মীরে যাতায়াত করেছে।

বাংলাদেশের মোট কতজন আপনারা আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন?
মুফতি ওবায়দুল্লাহ (কর্মী লস্কর-ই তৈয়বা) : পাঁচ হাজারের ওপর গিয়েছে।
প্রশিক্ষণ কে দিয়েছে?
উত্তরদাতার ছায়া : ওখানে আরএসও, তারপর আইটিএমের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতারা, জামায়াতের নেতারা আমাদের প্রশিক্ষণ দিত।
মুফতি ওবায়দুল্লাহ : আমার অধীনে ৪-৫ হাজার জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এভাবে সারা বাংলাদেশে লাখের ওপরে ট্রেনিংপ্রাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম স্থান হলো চট্টগ্রাম এবং দ্বিতীয় স্থান সিলেট।

হাসান রফিক
প্রথমে আমরা জিহাদের যে বাস্তব পাঠ নিই সেটা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, যিনি জামায়াতের একজন এমপি, তার ওয়াজ থেকে।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
‘ইসলাম হচ্ছে একটি বিপ্লবী মতবাদ। একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। আর এই জীবন ব্যবস্থাকে যারা দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় সেই রেভুলিউশনারি পার্টির নাম হচ্ছে ইসলাম।’

হাসান রফিক
দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী একেবারে আমাদের অন্তরের ভেতরে গেঁথে দেন। একটা হচ্ছে নিজে পাঠ করা আর আরেকটা হচ্ছে অন্যে বলার পর সেটা দিলের ভেতর ঢুকে যাওয়া। যেটা আমাদের দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ শুনে আমাদের হৃদয়ে রেখাপাত করত যে জিনিসটা। দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মাহফিলে যাওয়াটা একটা বাধ্যতামূলক পাঠ।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
‘আমি আল্লাহ্র দিন কায়েম করতে চাই। এই আন্দোলনকে পরিচালিত করতে গিয়ে যদি সশস্ত্র হামলার মোকাবেলা করতে হয় তাহলে সশস্ত্রভাবেই মোকাবেলা করাটাই হচ্ছে জিহাদের চূড়ান্ত রূপ। ইমানকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে পৃথিবীর বুকে। সেজন্য সংগ্রাম করতে হবে। সে সংগ্রাম যত প্রকারেরই হোক সব জিহাদের অন্তর্ভুক্ত।’

সাইফুল্লাহ
প্রাক্তন কর্মী, ইসলামী ছাত্রশিবির
আমরা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ শুনতে যেতাম। ওনার ওয়াজ আমাদের খুব ভালো লাগত।

উত্তরদাতার ছায়া : সাঈদী সাহেব জিহাদ সম্পর্কে যা বলতেন তা আমার ভালো লাগত।

সাইফুল্লাহ
প্রাক্তন কর্মী, ইসলামী ছাত্রশিবির
দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী এবং জামায়াতের অন্যান্য নেতা আমাদেরকে সব সময় বলতেন যে, তোমরা মাদ্রাসায় যাও, জিহাদে যাও। কিন্তু তার ছেলেমেয়েরা কখনো মাদ্রাসায়ও যায়নি, জিহাদেও যায়নি।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
মোনাফেক তো সহজেই চেনা যায় না। কয় যে হুজুর এই যে বার বার জিহাদ, এই মারামারি, এই ঠেঙ্গাঠেঙ্গি এগুলো আছে নাকি ইসলামের মধ্যে? কোথায় আছে যে মারামারি করা লাগবে, মিছিল করা লাগবে, ধর্মঘট করা লাগবে? এ ধরনের জিহাদে অংশ নিতে হবে। এগুলো কি? এগুলি বাদ দিয়ে শান্তভাবে যদি করা যায়। অল্প অল্প, ছোট ছোট দোয়া শিক্ষা দেন, যাতে করে সহজে বেহেস্তে চলে যাওয়া যায়। আমি বলছি ভাই, রসুলুল্লাহ্ আমাদেরকে এ রকম শেখান নাই যে, এ রকমের চোরাগলি বেহেস্তে যাওয়ার জন্য আবিষ্কার করে দেব, ছোট্ট একটা দোয়া পড়বেন আর আপনারা বেহেস্তের বারান্দায় গিয়েই কলা খাওয়া শুরু করলেন! এত সহজে বিষয়টা আসবে না। বিষয়টা খুবই কঠিন।’

একটি আরবি পত্রিকায় দেখা যায় পর্দায় এবং কথা শোনা যায়
এখানে যে একটি পত্রিকা দেখা যাচ্ছে এর নাম হলো ‘জরবে মোমিন’। এ পত্রিকাটা আন্তর্জাতিক হরকাতুল জিহাদ ইসলাম অর্থাৎ পাকিস্তান থেকে এই পত্রিকা প্রতি সপ্তাহে বের হয়। সারা বিশ্বে যারা হরকাতুল জিহাদ করে তাদের জন্য একটা মুখপত্র হিসেবে এটা ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাংলাদেশেও যারা হরকাতুল জিহাদ করে তাদের হাতেও চলে আসে।’

হরকাতুল জিহাদসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জঙ্গি, মৌলবাদী সংগঠন ইসলামের নামে নরহত্যায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে সৌদি ওহাবীবাদের অনুসারী মওলানা মওদুদী ও তার দল জামায়াতে ইসলামীর অন্যান্য নেতার বই পড়ে, কিংবা ওয়াজ শুনে। কি আছে এসব জিহাদী বইয়ে?
সাইফুল্লাহ
(ওয়াকাতিলুফি ছাবিলিল্লাহিল্লাদি ওকাতিলুনাকুম ওয়ালা তায়াবাদু ইন্নালাহা আলা লিমুন ) কতল কর আল্লাহ্র রাহে তাদের বিরুদ্ধে, যারা লড়াই করে তোমাদের বিরুদ্ধে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি কর না। তাদেরকে হত্যা কর, যেখানে পাও সেখানেই। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা করজোড়ে জিজিয়া প্রদান না করে।

আরাকানের শাকিল জিহাদীকে না পেলে আমরা জানতাম না যে, লিবিয়ায় এখনো বিভিন্ন দেশের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয়।
উত্তরদাতার ছায়া : লিবিয়াতে এক বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখানে প্রশিক্ষণ চলাকালীন অবস্থায় আমার হাঁটু ভেঙে যায়। এরপর বাংলাদেশে চলে আসি।

আরাকানে জিহাদ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে হরকাতুল জিহাদের মীর আহম্মদ। তার পিতার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমরা গিয়েছিলাম চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এক দুর্গম গ্রামে।
আহমেদ হোসেন
হুজির ‘শহীদ’ মীর আহম্মদের বাবা
আমার ছেলে মীর আহম্মদ তালীমুদ্দীন মাদ্রাসায় পড়ত। (আল-জামিয়াতুল ফোরকানিয়া তা’লীমুদ্দীন) মাদ্রাসায় গিয়ে আমি ওদেরকে জিজ্ঞাসা করি, আপনাদের কাছে আমার ছেলের কোন খোঁজখবর আছে কি না? তখন ওরা আমাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে যে আপনি শহীদের আব্বা। আপনার ছেলে শহীদ হয়েছে। কোথায়? বলে, আরাকানে, বার্মায়। যাওয়ার পথে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে সে শহীদ হয়েছে। তারা তিনজন শহীদ হয়েছে। একজন ঢাকার কাজী কাওসার, আরেকজন সিলেটেরÑ আমি তার নাম ভুলে গেছি।
১৯৯৬ সালের আগেই মাসিক দাওয়াত নামে মুফতি জয়নাল ইসলাম একটা পত্রিকা বের করেছিল। লাদেনের সঙ্গে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল তা ছবিসহ এ পত্রিকায় বের হয়েছে।
মুফতি জয়নাল কোথায় জিহাদ করেছে?
মীর আহম্মদের বাবা : সে কিসের জিহাদ করেছে? সে শুধু মাদ্রাসার ছেলেদের নিয়ে জিহাদে পাঠিয়ে দিত। তার ছেলেকে করাচি পড়াচ্ছে। মানুষের ছেলেদের বয়ান করে, কুরআন হাদিস দিয়ে বয়ান করে, আতঙ্কিত করে জিহাদে পাঠিয়েছে।
আপনি কি খুশি যে, আপনার ছেলে আরাকানে গিয়ে শহীদ হয়েছে?
মীর আহম্মদের বাবা : খুশি কি আর অখুশি কি? সে শহীদ হয়ে গেছে। আমার তো আর বলার কিছু নেই। কাকে বলব? আল্লাহকে বলছি।
আপনি কি চেয়েছিলেন যে, আপনার ছেলে এভাবে শহীদ হোক?
মীর আহম্মদের বাবা : না। আমি আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় পড়তে দিয়েছি। সে শহীদ হবেÑ আমার কি ভালো লাগছে? মনটা কি ভালো আছে?

মীর আহম্মদ শহীদ হবার পর তালীমুদ্দিন মাদ্রাসা থেকে শুধু এই সনদটি দেয়া হয়েছে তার পিতা আহম্মদ হোসেনকে।
মীর আহম্মদের বাবা : আর কিছুই দেয়নি। না, টাকা পয়সা, অর্থ সাহায্যÑ কিছুই করেনি। দেখতেও আসেনি। মুফতি ইজহার দেখতেও আসেনি। আমি অনেক আলেমকে বলেছিÑ কিয়ামতের ময়দানে, হাশরের ময়দানে মুফতি ইজহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেব আল্লাহর দরবারে। তখন বহু আলেম আমার ওপর রেগে যায়। কেন তুমি অভিযোগ দেবে?
আমাদের হযরত ওমর (রাঃ) জিহাদে লোক পাঠিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ মারা গেছেÑ শহীদ হয়েছে। ওদের বাড়িতে আটার বস্তা মাথায় নিয়ে হযরত ওমর রুটি বানিয়ে খাইয়েছেন। কিন্তু মুফতি ইজহার আমাকে দেখতেও আসেনি। আমার বিবিকেও দেখতে আসেনি। আমরা কোন অবস্থায় আছি।

স্যার আপনার গবেষণায় জঙ্গি মৌলবাদীদের সঙ্গে জামায়াতের কি সম্পর্ক প্রমাণ হয়েছে?
ড. আবুল বারকাত (অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) : গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে প্রায় তিন হাজারের ওপর জঙ্গি বিভিন্নভাবে গ্রেপ্তার হয়েছে। এবং যেসব জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছিল তাদের শতকরা ৯০ ভাগ ছাত্র অবস্থায়, যদি ছাত্র হয়ে থাকে অথবা গ্রেপ্তারকৃত অবস্থায় হয় জামায়াতের রাজনীতি অথবা জামায়াতের রাজনীতির যে ছাত্র সংগঠন তার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল।

হাসান রফিক
আগে ছাত্রশিবিরের একটা স্লোগান ছিল জিহাদ, জিহাদ, জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই। আমি হরকাতুল জিহাদ করেছি ঠিকই, আজও পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আমার খুব একটা ভালো সম্পর্ক। সে সময় আমি ছাত্রশিবিরও করতাম, হরকাতুল জিহাদও করতাম। হরকাতুল জিহাদ থেকে জাগো মুজাহিদ পড়ে আমরা জিহাদের উৎসাহ নিতাম আর শিবিরের বইতে তো জিহাদের কথা আছেই।

ড. আবুল বারকাত : যারা ধরা পড়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, গত নির্বাচনের সময় তারা কার জন্য কাজ করেছে? সেখানে স্পষ্টভাবে তাদের প্রথম চয়েস ছিল জামায়াতের সরাসরি প্রার্থী যদি থেকে থাকে সেটা অথবা জামায়াতের সঙ্গে যে চারদলীয় জোট, সে জোটের পক্ষে তারা কাজ করবে।

কীভাবে সাহায্য করত তারা?
মুফতি ওবায়দুল্লাহ : টাকা দিয়ে, সাহস দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করত তারা।
কোন নেতা আসত?
মুফতি ওবায়দুল্লাহ্ : আমি শাহজাহান চৌধুরীকে (জামায়াতের এমপি) দেখেছি।
কোথায়?
মুফতি ওবায়দুল্লাহ্ : মাদ্রাসায়।
কি কারণে গিয়েছিল?
মুফতি ওবায়দুল্লাহ্ : প্রশিক্ষণ দেখতে এসেছিল। প্রশিক্ষণের সময় আলাপ-আলোচনা করত, বাংলাদেশে যেভাবে নাস্তিক, মুরতাদ, ইহুদী নাসারারা যেভাবে জাল বুনছে, সেই জাল থেকে যেন আমরা পরিত্রাণ পাই। সে জন্য আমরা ছাত্রদের গড়ে তুলি। টাকার মাধ্যমে, অস্ত্রের মাধ্যমে। কারণ হযরত মুহম্মদ (সাঃ) বলেছেন, ইসলাম টিকিয়ে রাখার জন্য যদি নাচ দেশে দিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিতে হয় তোমরা চীনে গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে আস। মানে ইসলামের স্বার্থে।
হাসান রফিক
জামায়াতে ইসলাম, হরকাতুল জিহাদ আরএসও ওদের যে কি সম্পর্ক তা যদি আমি মৌখিকভাবে বলি তবে তা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু আমার প্রমাণ আছে আরএসও-র একটা মুখপত্র আরবিতে বের হয়। আরেকটা বাংলা। আরবিটার নাম হলো ‘আল তাদাম’। ১৯৯১ সালে ও আল তাদাম পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদনে বের হয়েছে যে, জামায়াতের চৌদ্দগ্রামের এমপি ড. আব্দুল্লাহ্ মোঃ তাহের, তিনি ১৯৮৭ থেকে ৮৯ পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিল। আরেকজন- আমীরুল ইসলাম বকুল ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। এরা দু’জন সেখানে ভারি অস্ত্রই কেবল নয়, একে ফোরটি সেভেনসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র যা চিহ্নিত করতেও অনেকের হিমশিম খেতে হবে এবং আইআইএফএসও অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্ট। যেটা সারা বিশ্বে যারা ইসলামিক রাজনীতি করে এবং জিহাদভিত্তিক কাজ করে এটা তাদের একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ সংস্থার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামের ছাত্রশিবিরের আব্দুল্লাহ্ মোঃ তাহের ঠিক করতে হবে কি অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, কি অস্ত্র আনতে হবে সবকিছু তত্ত্বাবধান হতো।

মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী
চেয়ারম্যান, ইসলামী ঐক্যজোট
১৯৭৭ সালে শিবির বিভক্ত হওয়ার পর আলবদর বাহিনীর সদস্য মীর কাশেম আলীকে কান্ট্রি ডিরেক্টর করে দেয়া হলো। এই যে ফান্ডটা এসেছে, সবটুকুই শুধুমাত্র জামায়াতের দলীয় ফান্ড হিসেবে পরিচিত হয়েছে, আর কোনো খাতেই ব্যবহার হয়নি।

ড. আবুল বারকাত : এটা একটা ত্রিভুজ। এই ত্রিভুজের মাথায় রয়েছে হেডকোয়ার্টার। প্রকাশ্য একটি সংগঠন যা এখন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আর অন্য দুই ভুজের মধ্যে এক বাহুতে আছে ওই উগ্র ধর্মীয় ১২৫টা জঙ্গি গ্রুপ। এবং এই জঙ্গি গ্রুপের আর্থিক যে লেনদেন সেই লেনদেনের জন্য ইসলামী ব্যাংককে কিন্তু একবার এবং বাংলাদেশের একটি ব্যাংকই এ পর্যন্ত মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে শাস্তি পেয়েছিল। যদিও শাস্তি তেমন কিছু নয়, এক লাখ টাকা জরিমানা মাত্র। কিন্তু সেটা হয়েছিল জঙ্গিদের সঙ্গে সংযোগ থাকার কারণেই।
জঙ্গিরা যখন চারদলীয় জোটের আমলে ধরা পড়ে তখন তাদেরকে ছাড়ানোর জন্য জামায়াতের দুইজন মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং মুজাহিদ হেন কাজ নাই যা তারা করেনি। এবং ছাড়াতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে তখনই শুধুমাত্র বলেছে যে, এদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিলে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্রের যে বিশাল চোরাচালান ধরা পড়েছে তার সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকারের নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশের দুটি গোয়েন্দা সংস্থা এবং পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছেন এই মামলার গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

ড. আবুল বারকাত : চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র যে জেটিতে ভিড়ল এই জেটিটা কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ছিল। শিল্পমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বা জানা ছাড়া অস্ত্র চট্টগ্রামের জেটিতে ভিড়তে পারে এটা হতে পারে না। আর তখন শিল্পমন্ত্রী হলেন জামায়াতে ইসলামের মতিউর রহমান নিজামী।

মুফতি হান্নান : এরা হচ্ছে মাফিয়া চক্র। যারা স্মাগলিং করত তারা ভারতে উলফাদের এবং কাশ্মীরীদের মাল দেয়। এখানে যারা সরকার ছিল তাদের সঙ্গে একটা চুক্তির মাধ্যমে এবং বিভিন্ন জায়গায়- আর্মি, বিডিআর, নৌবাহিনীকে টাকা পয়সা দিয়ে এগুলো নেয়া হতো। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু মাল চলে গেছে এবং কিছু মাল গ্রেপ্তার হয়েছে। এই মালগুলো দেশের ভেতর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে জামায়াতের অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আপনার গবেষণায় কি পেয়েছেন?
ড. আবুল বারকাত : জামায়াত ইসলাম ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতাটা দখল করতে চায় এবং এটা নতুন কোনো পরিকল্পনা না। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা ধর্মের যে বিষয়াদি আছে তার সঙ্গে বাস্তব জীবনÑ এ দুটোকে এক জায়গায় করে শক্তিশালী অর্থনীতিভিত্তিক একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া তারা চালু করতে চেয়েছে। যেটার সমান্তরাল কোনো প্রক্রিয়া বাংলাদেশে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেই।

মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী
এখন বাংলাদেশে তাদের নিজস্ব অনেক সোর্স আছে। কিন্তু প্রথম তারা টাকাটা আনে তিনটা কথা বলে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব তাদেরকে বেশি টাকা দিয়েছে। সৌদি আরব সরকারের যিনি ধর্ম (?) ছিলেন, আব্দুল ওহাব তার লেখা-লেখনি আর মওলানা মওদুদীর লেখালেখনি খুব কাছাকাছি। উনার এই লেখালেখির সুবাদে সৌদি সরকার জামায়াতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক রাখতে চাইত।
এই সুযোগটায় বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এমন একটা প্রচার তারা করলেন যে, আমাদের দেশে একটা মসজিদও আর অবশিষ্ট নেই। তখন সৌদি দূতাবাসও এখানে ছিল না। যে মসজিদগুলো সব মুক্তিযোদ্ধারা ভেঙে দিয়েছে। এখানে যে মক্তবগুলো ছিল যেখানে কোরআন পড়ানো হতো, মাদ্রাসাগুলো ছিল যেখানে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হতো- সব তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। সব আলেম ওলামাকে জেলে নিয়ে দেয়া হয়েছে।
সৌদি আরবের ধর্মের আবেগটাকে তারা কাজে লাগিয়ে প্রথম ‘মসজিদ নির্মাণ করতে হবে, সংস্কার করতে হবে, মাদ্রাসাগুলোকে খুলতে হবে, কোরআন শরীফ মানুষকে পুনর্বণ্টন করতে হবে’ এগুলো বলে একটা টাকার উৎস তারা তৈরি করে।

ড. আবুল বারকাত
ওই একটা সেক্টরে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন গত ৩৫ বছর ধরে এবং মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এ রকম যে, এই সেক্টরগুলো যে তারা চালান, এখানে কিন্তু কর্পোরেট যে ব্যবস্থাপনা সেটা, খুব বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনাটা আছে। কিন্তু পরিচালিত হয় একটা মতাদর্শ থেকে।
যারা এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছেন তাদের প্রায় সবাই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে ওই রাজনীতির সঙ্গে আছেন বা অতীতে ছিলেন।
দ্বিতীয় যেটা দেখা যায় সেটা হল যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমার হিসেবে বর্তমানে বছরে ১৫শ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়। এই টাকার শতকরা ২০ শতাংশ অর্থাৎ তিন শ কোটি টাকা তারা তাদের ফুল টাইমার বা রাজনীতিতে পূর্ণকালীন সদস্য পোষার জন্য ব্যবহার করেন।
মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী : ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতের হাজার কোটি টাকার ওপর ইনকামের সোর্স। আমরা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম বলব তার সম্পর্ক নাই এটা তো একটু দুর্বল মনে হয়। আমি যদি বলি ওগুলো জামায়াতের প্রজেক্ট নয় জামায়াত ক্ষমা চাইতে বলতে পারে তবে আমি হাত জোড় করে তাদের কাছে ক্ষমা চাব। এই প্রজেক্টগুলো জামায়াতে ইসলামীর। এর একটা বড় অংশ জামায়াতের ওই যে নেতারা আলবদর বাহিনীতে ছিলেন। সরাসরি অধ্যাপক গোলাম আযমের সঙ্গে। এরকম ১২-১৪ জন বার বার পরিচালক, এমডি, চেয়ারম্যান। সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তারা, ইসলামিক ব্যাংক তারা, ইবনে সিনা তারা, ইসলামী ব্যাংক হসপিটাল তারা, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন তারা। এদের বাইরে আপনি তালিকা নিয়ে দেখুন যে আর কেউ পরিচালনায় আছে কি না?

হাসান রফিক
বাংলাদেশ হরকাতুল জিহাদের একাউন্টে যত টাকা আসত, এমন কোনো সংগঠন পৃথিবীতে নেই যার মধ্যে জঙ্গিবাদের টাকা নেই। কিন্তু এ বাংলাদেশে হরকাতুল জিহাদ সরাসরি হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামের নামে এবং বাংলাদেশ জাগো মুজাহিদ পত্রিকার নামে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট করেছে। বোমা মারামারির আগ পর্যন্ত তা সচল ছিল।

জামায়াত ও মৌলবাদীরা বিদেশি এনজিওর বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে কয়েকশ ইসলামী এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছে জঙ্গিদের মদদ দেয়ার জন্য। ২ অক্টোবর ২০০৫ এশিয়া টাইমসের সূত্র মতে ইসলামী এনজিওকে অর্থ সরবরাহকারী মধ্যপ্রাচ্যের ১০টি দাতা সংস্থা হলো- রাবেতা আল ইসলামী, রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটি, সোসাইটি অব সোশ্যাল রিফর্ম, কাতার চ্যারিটেবল সোসাইটি, আল মুনতাদা আল ইসলামী, ইসলামিক রিলিফ এজেন্সি, আল-ফোরকান ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশন, কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি, মুসলিম এইড বাংলাদেশ।
শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, ইউরোপ থেকে পাঠানো দাতাদের অর্থে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে মসজিদ ও মাদ্রাসা এবং মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে জঙ্গির গ্রোথ অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটিশ ইসলামী এনজিও গ্রিন ক্রিসেন্টের অর্থ সাহায্যে ভোলার এক মাদ্রাসায় ২০০৯ এর ২৪ মার্চ র্যাব খুঁজে বের করেছে এক বিশাল অস্ত্র ভা-ার।

দ্বিতীয় পর্ব (জিহাদের লক্ষ্য)

হরকাতুল জিহাদের জঙ্গিরা বাংলা ভাষার বরেণ্য কবি শামসুর রাহমানকে হত্যার জন্য হামলা করেছিল ১৯৯৯ সালের ১৮ জানুয়ারি।

মুফতি হান্নান : কবি শামসুর রাহমান। শুনেছি যে, ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু বই-পুস্তক লিখেছেন। আজান সম্পর্কে কটূক্তি করে বলেছেন যে, আজানটা হলো পতিতালয়ের ডাক। এ ধরনের কথা শোনার পর কিছু মুজাহিদ অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে মারার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার লেখা পড়িনি।
জাগো মুজাহিদ পত্রিকাতে তো আপনারা শামসুর রাহমানসহ বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীকে নাস্তিক-মুরতাদ এগুলো বলেছেন?
মুফতি হান্নান : যদি কেউ, যে কোনো অবস্থায় ইসলামের বিরুদ্ধে বলেছে তবে তার বিরুদ্ধে আমরা লেখনী করেছি।
মুরতাদের শাস্তিটা কি?
মুফতি হান্নান : মুরতাদের শাস্তি হলো, যদি মুসলমান হয় তবে ইসলামের দৃষ্টিতে ওয়াজিবুল কতল (মৃত্যুদণ্ড দেয়া ওয়াজিব)।

আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠস্বর : ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান অধ্যাপক ও প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছিল হরকাতুল জিহাদের জঙ্গিরা।

হুমায়ুন আজাদ
প্রথাবিরোধী বলতে আমি যা বুঝি তা হচ্ছে গত চার হাজার বছর ধরে যে বিশ্বাসগুলো, যে বিধি-বিধানগুলো আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে এবং যেগুলোকে সত্য, তুল্য, অবশ্য মান্য বলে আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বলা হয় এগুলো কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি। সেটা ধর্মের ক্ষেত্রে তো আমি বিন্দুমাত্র গ্রহণ করিনি, সমাজের ক্ষেত্রে গ্রহণ করিনি।

তলোয়ারের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে এই প্রতিবাদী লেখকের সারা শরীর। হামলার ছয় মাস পর তিনি জার্মানিতে মৃত্যুবরণ করেন।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
মুক্তচিন্তার নামে আল্লাহ্ এবং রাসুলের নামে আজেবাজে কথা বলতে পারবে না। তাহলে ইমান আর এই দুনিয়াতে থাকল না। এ রকম একটা লোক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে, আল্লায় তারে বিদায় করি দিছে।

২২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪০

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: আমরা ওইটার নাম নিলাম না পবিত্র মাহফিলে। দেশে মরলে খুবই অসুবিধা হইত। আল্লাহ্ শয়তানেরে বিদায় করছে। ওর কবরে আগুন জ্বলুক কেয়ামতের আগে পর্যন্ত।

হাসান রফিক
আমি সে সময় জামায়াতে ইসলামীর একটা মাদ্রাসায় ছিলাম। ওই মাদ্রাসায় আমার সহকর্মী যারা ছিল শিবিরের ওদের কাছে গিয়ে বললাম, হুমায়ুন আজাদ তো মারা যেতে পারে। তো তারা বলল, ‘ওই একজন নাস্তিক মারা গেলে তোমার অসুবিধা কি? তুমি এর ভালোটা কি করে বুঝবে? নাও মিষ্টি খাও।’ ওরা আমাকে মিষ্টি খাওয়ালো।

শুধু হুমায়ুন আজাদ নয়, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, মানবাধিকার নেত্রী জাহানারা ইমাম, অধ্যাপক আহমেদ শরীফ, লেখক তসলিমা নাসরিন, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও অধ্যাপক আবুল বারকাতসহ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সকল ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী জঙ্গি মৌলবাদীদের বিবেচনায় নাস্তিক ও মুরতাদ অর্থাৎ হত্যার যোগ্য।

তসলিমা নাসরিন
ওরাই তাহলে পৃথিবী শাসন করুক। ওদেরই তাহলে স্বাধীনতা দেয়া হোক। ওদের জন্যই খুলে দেয়া হোক অতঃপর অস্ত্রাগার। তলোয়ারগুলো তুলে নিক, কোমরে গুঁজে নিক পিস্তল, হাতে হাত বোমা। দারুল ইসলামের মন্ত্র মাথায় নিয়ে ওরা না হয় বেরিয়ে পড়–ক। যেদিকে যত মুরতাদ পাক মুণ্ডু কেটে নিক। মেয়েদের মারুক, মেরে ফেলুক। নত মস্তক নারীদের গায়ে বোরখা চাপিয়ে দিক, ঘরবন্দি করুক। ঘন ঘন পুত্র পয়দা করতে ঘরে ঘরে ধর্ষণ চলুক। পৃথিবীর যত পুরুষ আছে একযোগে সবাই না হয় তালেবান হয়ে যাক। আর্জেন্টিনা থেকে আইসল্যান্ড, মালদ্বীপ থেকে মরক্কো, বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন ওদের দখলে চলে আসুক। ইসলামের পবিত্র জমিতে পরম শ্রদ্ধায় মাথা ঠেকাক আমাদের জননেতাগণ। মুকুট পরিয়ে দিক একেকটা জঙ্গির মাথায়। কৃতকর্মের জন্য করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করুক জননেতাগণ। ধর্মান্ধের পা ধোয়া পানি পান করে পুণ্যবান হোক আমাদের জননেতাগণ।

মৌলবাদীদের হুমকির কারণে প্রতিবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সাল থেকে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

তসলিমা ফিরে এলে কি আপনারা কতল করবেন তাকে?
মুফতি হান্নান : কতল তো তসলিমার জন্য ওযাজিব হয়ে থাকবে। যদি রাষ্ট্র তাকে আহ্বান জানায়, যদি সরকার এ আহ্বানকে সাড়া না দেয় তাহলে তার ওপর কর্তব্য আসবে যে সে নিজেই এটাকে পদক্ষেপ নেয়।

তসলিমা নাসরিন
আমি নিজের জীবনের কথা ভাবি না। আমি দেশটার কথা বেশি ভাবি। যখন দূর থেকে খবর পাই দেশে মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তখন খুব কষ্ট হয় যে, এই দেশের স্বপ্ন কি আমরা দেখেছিলাম?

১ বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। ৩০ কোটি বাঙালির প্রাণের প্রিয় উৎসব। মৌলবাদীর আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনায় ভাস্বর বাঙালি সংস্কৃতি। মৌলবাদীরা বারবার হামলা চালিয়েছে ছায়ানট ও উদীচীর অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। হরকাতুল জিহাদ এবং অন্যান্য জঙ্গিদের হত্যা ও বোমা হামলার খতিয়ানে আমরা পাই ৬ মার্চ ১৯৯৯-তে যশোরে উদীচীর সম্মেলনে বোমা বিস্ফোরণ, সেখানে নিহত হয় ১০, আহত শতাধিক। ৯ অক্টোবর ১৯৯৯ খুলনায় আহমদীয়া মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ৭, আহত ৫০। ২০ জুলাই ২০০০তে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বোমা স্থাপন সভা আরম্ভের পূর্বে নিরাপত্তা বাহিনী এই বোমা অকেজো করে দেয়। ২০ জানুয়ারি ২০০১-এ ঢাকার পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সমাবেশে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ৭, আহত শতাধিক। ১৪ মার্চ ২০০১ রমনার বটমূলে ছায়ানটের বাংলা নব বর্ষবরণ অনুষ্ঠানো বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ১১, আহত শতাধিক। ৩ জুন ২০০১-এ গোপালগঞ্জের বানিয়ারচরের গির্জায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ১০, আহত ৩০। ১৭ জুন ২০০১ নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ২১, আহত শতাধিক। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০১ বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের নির্র্বাচনী প্রচার সভায় বোমা বিস্ফোরণ। নিহত হয় ৯, আহত শতাধিক। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আলোচনা সভায় বোমা বিস্ফোরণ। সেখানে নিহত হয় ৪, আহত ১৫। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০২-এ সাতক্ষীরার গুরপুকুরের রক্সি সিনেমা হলে এবং সার্কাস প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে নিহত হয় ৩, আহত ২শ। ৭ ডিসেম্বর ২০০২ ময়মনসিংহের তিনটি সিনেমা হলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। নিহত হয় ১৯, আহত ৪৫। ১৭ জানুয়ারি ২০০৩-এ টাঙ্গাইলের সখীপুরের ফালুচাঁদ ফকিরের মাজারের মেলায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে নিহত হয় ৭, আহত হয় ৮। ১ মার্চ ২০০৩ খুলনায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর বোমা হামলা হয়। তাতে নিহত হয় ১, কিছু সংখ্যক আহত হয়। ১২ জানুয়ারি ২০০৪ সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজারে আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। নিহত হয় ৭, আহত ৭০। ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ খুলনায় সাংবাদিক মানিক সাহা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়। ২১ মে ২০০৪ সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর আর্জেস গ্রেনেড হামলা হয়। তাতে নিহত হয় ২, হাইকমিশনারসহ আহত হয় ৭০। ২৭ জুন ২০০৪ খুলনায় দৈনিক জন্মভূমির অফিসে বোমা বিস্ফোরণে সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু নিহত হন। ৭ আগস্ট ২০০৪ সিলেটে গুলশান হোটেলে আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণে ১ জন নিহত ও ৪০ আহত হয়। ২১ আগস্ট ২০০৪ আওয়ামী লীগের জনসভায় আর্জেস গ্রেনেড ও বোমা হামলায় কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হন ২৪, শেখ হাসিনাসহ আহত হয় ৫শ’র অধিক। ১৬ নবেম্বর ২০০৪ মৌলভীবাজারে যাত্রা প্রদর্শনীতে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয় ১০ জন। ১৭ জানুয়ারি ২০০৫-এ গোপালগঞ্জে এনজিও ‘ব্র্যাক’-এর অফিসে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয় ২১ জন। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ খুলনা প্রেসক্লাবে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন ১ জন সাংবাদিক। আহত হন ৩ জন। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালোবাসা দিবসের অনুষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। আহত হয় ৮ জন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আলোচনাসভায় বোমা বিস্ফোরণ ২০০৫-এর ১৭ আগস্ট জঙ্গিরা সারা দেশের তেষট্টিটি জেলায় একসঙ্গে পাঁচ শ বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল তারা কত শক্তিশালী। ৩ অক্টোবর ২০০৫ সালে লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং চট্টগ্রামের কোর্টে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ৩ জন, লক্ষ্মীপুর কোর্টের ১ জন বিচারকসহ আহত হন ৩৮ জন। ১৪ নবেম্বর ২০০৫ সালে ঝালকাঠি জেলা কোর্টে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, সেখানে নিহত হন ২ জন বিচারক, আহত হন ৩ জন। এভাবে ২৯ নবেম্বর ২০০৫, ১ ডিসেম্বর ২০০৫, ৮ ডিসেম্বর ২০০৫ এর তিনটি বোমা হামলায় নিহত হন ১৯ জন আর আহত হন ১৫৮ জন।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
জাতীয়তাবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? পুঁজিবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? সমাজতন্ত্র কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? মানুষের তৈরি করা এসব মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যারাই সংগ্রাম করে, যারাই লড়াই করে আল্লাহ্পাক বলেছেন তারা লড়াই করে শয়তানের পথে।

বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী
সভাপতি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ক নাগরিক কমিশন
বাংলাদেশের জনগণ একটা ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৯৫২ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছে। এবং তারই ফলশ্রুতিতে ৭২-এ সংবিধান হয়। এ বাহাত্তরের সংবিধানকে অস্বীকার করা মানেই হলো বাংলাদেশকে অস্বীকার করা, মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা।

আয়েশা খানম
সভানেত্রী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
ওরা কোন ধরনের মুক্তচিন্তা পছন্দ করে না এবং সেদিক থেকে মুক্তচিন্তার মানুষ, মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী সংগঠনগুলো এবং মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাহিত্যিক, কবি, রাজনীতিবিদ, নারীকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক বাংলাদেশে তো সবাই এদের আক্রমণের শিকার।

অধ্যাপক অজয় রায়
ওদের বিশ্বাসের বাইরে সে হিন্দু হোক, বৌদ্ধ হোক, খ্রিস্টান হোক তাদের মতকে তারা সহ্য করবে না। (ফ্ল্যাশব্যাকে দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী : আমাদের দেশের রেডিও এবং টেলিভিশনে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পড়া হয়। তারপর বলে, ‘বিশ্বের সকল সৃষ্টির মঙ্গল হোক। ওং শান্তি, ওং শান্তি’। আমি বলেছি এভাবে যদি কেউ ‘ওং ওং’ করতে করতে রক্তবমিও করে তবুও শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে না।) এবং মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটা তালেবানি ধরনের রাষ্ট্রে পরিণত করা। যেখানে নন-মুসলিম থাকলেও তারা একটা নির্জীব, ক্লিব হয়ে থাকবে। তাদের কোনো মত থাকবে না, পথ থাকবে না। আমরা যেটা বলে দেব বা স্টেট যেটা বলে দেবে সেটাই মানতে হবে। এদের কোনো রাষ্ট্রীয় অধিকার থাকবে না, নাগরিক অধিকার থাকবে নাÑ এটাই তারা চায়।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
যদি শান্তি পেতে হয় তবে খ্রিস্টান আর ইহুদিদের জাতিসংঘের মুখে লাথি মেরে মুসলমানদের জাতিসংঘ করতে হবে।
রাজশাহীতে জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই সর্বহারা ও মাওবাদী কমিউনিস্টদের দমনের জন্য শরিয়া আদালত গঠন করলেও তার বাহিনী যাদের হত্যা ও নির্যাতন করেছে তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী সংগঠনের কর্মী ও সমর্থক। রাজশাহীর নওগাঁ জেলার হামির কুৎশা গ্রামের এই বাড়িতে বাংলা ভাই তার শরিয়াহ্ আদালত বসিয়েছিল। যে বাড়ির মালিক ’৭১-এর রাজাকার রমজান কয়া।
রমজান কয়া : বাংলা ভাই এখানে থাকত। কয়েকবার এসেছিল। আসার পর বলল, তোমরা সরে যাওÑ ধানের কামলাদের বলল, আমি বুঝতে পারিনি...
একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা : আমাকে প্রকাশ্যে এই রমজান কয়া এখানে নিয়ে এসে তিনটি বাঁশের খুঁটিতে আমার দুই পা রশি দিয়ে বেঁধে টানিয়ে আমার দুই পা, ডান হাতের কব্জি, হাতের আঙ্গুল এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে মারাত্মকভাবে মারপিট করে, হাড়গোড় ভেঙে ফেলে।
একজন স্থানীয় : আমার এই বাড়িতে একদিন বাংলা ভাই প্রায় এক দেড় শ লোক সঙ্গে নিয়ে এসে আমার বাড়ি ভেঙে ফেলে। আমার অপরাধ যে, আমার ছোট ছেলে সিরাজ ইফতেখার মিঠু যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। বিপুল এবং বাংলা ভাইয়ের ক্যাডাররা সাত্তার মাস্টারের নেতৃত্বে শিকাদারি জামে মসজিদে ট্রেনিং দিচ্ছিল। সেখানে আমার ছেলেটা বিরোধিতা করেছিল বলে তারা আমার ছেলেকে হত্যা করার জন্য ধরেছিল। আমার ছেলেটা জানে বেঁচেছে কোনোরকমভাবে। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ করার অপরাধে আমার বাড়িঘর এবং সব আসবাবপত্র যা কিছু কিছু সব ভেঙে শেষ করে দিয়েছে। এই নৃশংসতা যা এখানে হয়েছে, আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগেও বোধহয় এ রকম হয় না। সেই অত্যাচার তারা করেছে। রাজশাহীর মানুষ জানে যে, বাংলা ভাই কি নৃশংস অত্যাচার করেছে এ অঞ্চলে।

বাংলা ভাই কি রকম লোক ছিল?
রমজান কয়া : ভালো লোক ছিল। ভালো না হলেÑ সর্বহারারা মানুষ জবাই করত। বাংলা ভাই আসার পর আর একটা মানুষও জবাই হয়নি।
ও জবাই করেনি মানুষ?
রমজান কয়া : না, দেখিনি।

মোহাম্মদ মুসা
নিহত সিপিবি কর্মী আব্দুল কাইয়ুম বাদশার ভাই
ঘটনাটা ১৯ মে ২০০৪ সালের। তারা মাইকিং করে যে, বাদশাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাকে প্রকাশ্য দিবালোকে বিচার করে জবাই করা হবে। আপনারা উপস্থিত থাকবেন। আমরা খবর শোনার পর প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলি। প্রশাসন তখন বলে যে, এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে। এটা খুব হাইলি পলিটিক্যাল একটা বিষয়, রাজনৈতিক হাইকমান্ডের নিষেধ আছে। ২০ মে নন্দীগ্রাম উপজেলার ক’জন সাংবাদিক নওগাঁয় ফোন করে জানায় যে, এখানে বামুনগ্রাম নামে একটি গ্রামে একটি লাশ ঝুলানো আছে, এটা আপনাদের নিখোঁজ বাদশার লাশ হতে পারে। নওগাঁর সাংবাদিকরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যায়। যাওয়ার পর তারা উল্টো করে ঝোলানো লাশের ছবিটা তুলে নিয়ে আসে। আনার পর আমাদেরকে দেয়। আমরা তখন চিহ্নিত করি যে, এটা আমার ভাই বাদশা।

কোহিনূর বেগম
নিহত জানবরা সরদারের স্ত্রী
আমার স্বামী ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। আমার স্বামীকে জেএমবির লোকরা খোঁজাখুঁজি করে। আমি আমার স্বামীকে লুকিয়ে রাখি। ১টার দিকে খবর আসে দীপশংকর মারা গেছে। সন্ধ্যাবেলা সেই লাশ দেখতে যখন সবাই গেছে তখন আমার স্বামী বিলের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যায়। আজ দীর্ঘ তেইশ মাস হচ্ছে, সে কোথায়, কীভাবে আছে বলতে পারব না। তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। আমি তার খবর জানি না।
তার চলে যাওয়ার পর বাংলা ভাইয়ের লোকজন আমার বাসায় আসে সব ভেঙেচুরে দিতে। তখন আমি আমার সন্তানদের তাদের সামনে দাঁড় করিয়ে বলি, দেখুন, আমার স্বামী কোনো অন্যায় করেনি। তিনজন বিএনপি প্রার্থী আছে, সে একা আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আওয়ামী লীগ করা যদি তার অপরাধ হয়ে থাকে তবে তার সাজা আইনের হাতে হবে। তার জন্য আইন আছে, আপনারা আইনের আশ্রয় নেন। আপনারা এসব কি করছেন?
তখন তারা বলে, আইনের আশ্রয় নেয়া যাবে না। ও কোথায় আছে বের করে দাও। তখন আমি বলি, ভাই ও কোথায় আছে তা আমি বলতে পারব না। তখন দুই দিন ধরে আমার বাড়ি লুট করে। বাড়িতে যা ছিল সব নিয়ে যায়।

রেবেকা সুলতানা
নিহত আওয়ামী লীগ কর্মী খেজুর আলীর স্ত্রী
বাংলা ভাইয়ের লোক তাকে রামদা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ওই রক্তাক্ত অবস্থায় তার হাত-পা বেঁধে তাকে প্রচ- মারে। উপুড় করে ফেলে রেখে মারে আর আমার শাশুড়িকে বলে যে, আপনার ছেলেকে শেষবারের মতো দেখে নেন, তাকে উপরে পাঠিয়ে দেয়া হবে। ওকে জবাই করা হবে, আর ফেরত পাবেন না। তারপর হাত-পা বেঁধে ভ্যানে করে নিয়ে যায়। ৮ দিন পর আমরা খবর পেলাম যে, বিএটি ক্যাম্পে একটা লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে, কিন্তু কার লাশ তা বুঝতে পারা যাচ্ছে না।
আমরা সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখি চার টুকরো করে তাকে মাটির নিচে রাখা হয়েছে।

রাবেয়া বেওয়া
নিহত আবু তালেবের মা
আমার দিকে কেউ দেখে না বাবারে...। এখন আমাকে কে দেখবে? আমার ছেলেটি বেঁচে থাকলে কত কিছু করত, আমাকে দেখাশোনা করত। আমার বাছাকে এত শাস্তি দিয়েছে- এত মেরেছেÑ একটু পানিও খেতে দেয়নি।

দ্বিজেন্দ্রনাথ সাহা
নিহত দীপশঙ্কর সাহার পিতা
আমার সন্তানকে ওরা মেরে ফেলেছে।

জঙ্গি-মৌলবাদীদের হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ সব সময় সোচ্চার ছিল। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকারী সেক্রেটারি ক্রিস্টিনা রোকা ঢাকা এসে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীকে সরাসরি বাংলা ভাই সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন।

ক্রিস্টিনা রোকা : অবশ্যই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।

মতিউর রহমান নিজামী : বাংলা ভাই সম্পর্কে, তথাকথিত বাংলা ভাই সম্পর্কে আমি এ্যাড করছি। এ সম্পর্কে আমি পরিষ্কার বলেছি যে, এটা সম্পর্কে আমার কোনো কিছু জানা নেই। এ লোককে আমি চিনি না, আমার দলও চেনে না। এটাকে পত্র-পত্রিকায় বেশি ফলাও করে বলা হয়েছে। এর তেমন কোনো ভিত্তি নেই। এখানে সন্ত্রাসের ঘটনার সঙ্গে মূলত জড়িত হলো বামপন্থী, চরমপন্থী কিছু দল। যেটার একটা সর্বহারা নামে পরিচিত, আরেকটা জনযুদ্ধ নামে পরিচিত।

হাসান রফিক
শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, সানি, আব্দুল আওয়াল ওরা সবাই একসময় ছাত্রশিবির করত। ছাত্রশিবির থেকে ওরা পরবর্তীতে শায়খ আব্দুর রহমানকে নিয়ে বাইরে চলে গিয়েছিল। তাও সেটা জামায়াতে ইসলামীর মাধ্যমে মদীনা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য। মদীনা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অনুমতি লাগে। অর্থাৎ জামায়াতে ইসলামীর যারা বড় পদে কাজ করে তাদের।

ড. মুনতাসীর মামুন
ইতিহাসবিদ, লেখক, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
যে সময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে এসেছে তখন জঙ্গি-মৌলবাদের বিস্তার ঘটেছে। জনমতের চাপে বাংলা ভাই এবং আরো দু-একজনকে ফাঁসি দিতে বাধ্য হয়েছে বটে এবং অনেকে মনে করেছিলেন যে, তাতে বোধহয় জঙ্গিবাদের সমাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু আমরা সব সময় বলে এসেছি এ জঙ্গিবাদের সমাপ্তি এখনো ঘটেনি।

একুশে টেলিভিশনে জেএমবির এই জঙ্গির সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে ২০ মে ২০০৯ তারিখে।
‘আক্রমণ হবে কমান্ডো স্টাইলে। সেটা হতে পারে হঠাৎ গুলিবিনিময়, গ্রেনেড-বোমা, মাইন বিস্ফোরণ, আত্মঘাতী গাড়ি আক্রমণ, আত্মঘাতী ও গুপ্ত হত্যা। আর সেজন্য অর্থপ্রাপ্তির জন্য বিদেশি দাতাগোষ্ঠীসহ দেশীয় আনসার সদস্য এবং মোহাজির গ্রুপ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে শহীদী গ্রুপে। সরকারকে বাধ্য করা হবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে।
আমাদের পরিকল্পনার আংশিক জানিয়ে দিয়ে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে চাই যে, আমীরুল মুজাহিদীন শায়খ আব্দুর রহমান ও অন্য নেতৃবৃন্দের শাহাদৎ বরণের মধ্য দিয়েও আমাদের শক্তির অবস্থান কোথায়?

আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠস্বর : বাংলাদেশে জামায়াত ও তার সহযোগী মৌলবাদীদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়। (ফ্ল্যাশব্যাকে দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজÑ গোলাম মোহাম্মদ কাদিয়ানী কাফের আর তার অনুসারীরাও কাফের। সুতরাং বাংলাদেশে যত কাদিয়ানী আছে সমস্ত কাদিয়ানীই কাফের।

মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী
নায়েবে আমির, আহমদিয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশ
যারা মুসলমান তাদের মূল সংজ্ঞা হচ্ছে নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করতে হবে, পবিত্র কলেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহতে বিশ্বাস করতে হবে। যারা এ সংজ্ঞার অধীনে আসবে তারা আল্লাহ এবং রাসুলের প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী মুসলমান। তাদেরকে কাফের বলতে পারে এ রকম কেউ এ জগতে নেই। জামায়াতে ইসলামী ইসলামের নাম ভাঙিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে বিশ্বাস করে। অথচ ইসলাম এ ধরনের কোনো বিশ্বাস আমাদের সামনে উপস্থাপন করে না।

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ
রাসুল (সাঃ)-এর পর যদি কেউ নব্যুয়াতের দাবি করে তবে সে কাফের। তাকে হত্যা করা ওয়াজিব। তার বিরুদ্ধে লড়াই করা ওয়াজিব।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের ওপর মৌলবাদীদের হামলার খতিয়ান
২৯ অক্টোবর, ১৯৯২ ঢাকার বখশীবাজারে আহমদিয়া মসজিদে হামলা। আহত ৩৫।
২৭ নবেম্বর ১৯৯২ রাজশাহীর আহমদিয়া মসজিদ ও মিশন ধ্বংস।
৮ অক্টোবর ১৯৯৯ খুলনায় আহমদিয়া মসজিদে বোমা হামলা। নিহত ৭, আহত ৫০।
২১ অক্টোবর ২০০৩- ৩১ নবেম্বর ২০০৩ কুষ্টিয়ার ভেড়ামার গ্রামে আহমদিয়া পরিবারদের বিরুদ্ধে সামাজিক অবরোধ।
৩১ অক্টোবর ২০০৩ যশোরের ঝিকরগাছায় আহমদিয়া মসজিদের ইমাম শাহ আলম হত্যা।
২১ নবেম্বর ২০০৩ ঢাকার নাখালপাড়ায় আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
৮ জানুয়ারি ২০০৪ আহমদীয় প্রকাশনা নিষিদ্ধ ঘোষণা।
১৯ মার্চ ২০০৪ বরগুনার খাকদান আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
১২ মে ২০০৪ পটুয়াখালীর আহমদিয়া মসজিদে হামলা, আপত্তিকর সাইনবোর্ড উত্তোলন।
২৮ মে ২০০৪ চট্টগ্রামের আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
১৩ আগস্ট ২০০৪ খুলনার আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
২০ আগস্ট ২০০৪ ঢাকার কেন্দ্রীয় আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
৮ অক্টোবর ২০০৪ নারায়ণগঞ্জের আহমদিয়া মসজিদে হামলা।
২৮ অক্টোবর ২০০৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাদুঘর মসজিদে হামলা। আহত ১১।
১১ মার্চ ২০০৫ বগুড়া আহমদিয়া মসজিদে হামলা এবং পুলিশ কর্তৃক বেআইনি সাইনবোর্ড স্থাপন।
১৭ এপ্রিল ২০০৫ সাতক্ষীরার সুন্দরবন আহমদিয়া মসজিদে হামলা। নারী এবং শিশুসহ কিছুসংখ্যক আহত।
২৪ জুন ২০০৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আহমদিয়া মসজিদে বোমা হামলা।
২৯ জুলাই ২০০৫ জামালপুরের সরিষাবাড়ী আহমদিয়াদের ওপর হামলা।
১৫ আগস্ট ২০০৫ ভাদুঘর আহমদিয়া আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা। এক মহিলা বাম হাত হারান।
২৩ ডিসেম্বর ২০০৫ ঢাকার কেন্দ্রীয় মসজিদে হামলা।
১৭-১৮ জানুয়ারি ২০০৬ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আহমদীয় বিধবার দাফনে বাধা প্রদান।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ ময়মনসিংহের ধানিখোলা মসজিদে হামলা।
২০ মার্চ ২০০৮ দিনাজপুরের বৈরাগী বাজারে আহমদিয়া পাঠাগারে হামলা।

মওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী
বাংলাদেশে যখনই আহমদিয়া বিরোধী আন্দোলন করানোর চেষ্টা করা হয়েছে মৌলবাদীদের পক্ষ থেকে, জামায়াতে ইসলামীদের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যম সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে।
(২০০৫ সালের ২১ এপ্রিল শাহরিয়ার কবির এবং বিচারপতি এম সোবহান সাতক্ষীরার আহমদিয়া জামাতের সদস্য রহিমা খাতুনকে হাসপাতালে দেখতে এসেছেন। এই সাক্ষাৎকারটি ধারণ করেছে ‘এম টি এ ইন্টারন্যাশনাল’।)
রহিমা খাতুন : এই মৌলবাদীরা তো মসজিদে শুধু পোস্টার লাগানোর জন্য যাচ্ছে না, এরা মা-বোনদের ইজ্জত, জানমাল হরণ করার জন্য যাচ্ছে। আমাদের বালবাচ্চা যেন শান্তিপ্রিয়ভাবে এদেশে ইসলাম নিয়ে বসবাস করতে পারে।
শাহরিয়ার কবির : এর বিচার হবে।
রহিমা খাতুন : আমরা তো অনেক ক্ষুদ্র। পিঁপড়ের মতো ওরা পিষে ফেলবে।
শাহরিয়ার কবির : আমরা সারা দেশের মানুষ আছি আপনাদের সঙ্গে। সারা দেশের মানুষ বর্বর হয়ে যায়নি। দুনিয়ার মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে।

লর্ড এরিক এভবরি
ভাইস চেয়ারম্যান, সর্বদলীয় মানবাধিকার কমিটি, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট
তার পরও আশাবাদী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটা নির্ভর করছে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর। বিশেষভাবে যারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করেন। আরো নির্দিষ্টভাবে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি যারা বিশ্বাসী। তাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে বর্ণবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে লড়বার জন্য। একটু আগে নিচের তলার মসজিদে আমি যেমন বলেছিÑ সকলের জন্য ভালোবাসা, কারো প্রতি ঘৃণা নয়। এটা শুধু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় শিক্ষার ভেতর সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, এ বিশ্বাস সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। আপনারা যদি এ বিশ্বাস ধারণ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যাবে।

অধ্যাপক কবীর চৌধুরী
বাংলাদেশ যে প্রত্যাশিতভাবে সামনে এগিয়ে যেতে পারছে না তার একটা বড় কারণ হচ্ছে জঙ্গি-মৌলবাদ। এই জঙ্গি-মৌলবাদ নানাদিক থেকে আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের মাদ্রাসায় যেভাবে জঙ্গি-মৌলবাদকে বিকশিত করা হয় সেটা দেশের অগ্রগতির পথে একটা বড় বাধা।

হাসান রফিক
মাদ্রাসা শিক্ষার কারণে আমরা ভীষণ একটা অন্ধত্বের মধ্যে আছি। জীবনের অর্ধেকটা সময়, আমাদের মূল্যবান যৌবনখানা আমি যে শিক্ষার মধ্যে কাটিয়ে দিলাম তাতে কি শিখলাম? প্রথমে ওখানে শিখলাম অন্ধ শিক্ষা। তারপর শিখলাম জিহাদ।

অধ্যাপক কবীর চৌধুরী
আমরা যে শিক্ষানীতি সম্প্রতি প্রণয়ন করেছি তাতে আমরা এই জিনিসটার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা প্রাথমিক পর্যায়েÑ যেটা এখন আছে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত কিন্তু আমরা সুপারিশ করছি যে, এটা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নেয়া হবে। এই ধারাতে মাদ্রাসা শিক্ষা বলে কোনো আলাদা রকম কিছু শিক্ষা থাকবে না। এই পর্যায়ে একমুখী শিক্ষা হবে। যার একটা লক্ষ্য হবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া যায়, একটা বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়া যায়, একটা ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গড়া যায়।

মুনতাসীর মামুন
উপমহাদেশে জঙ্গি-মৌলবাদের যে বিস্তার আমরা দেখছি তার পেছনে একটি মাত্র দেশই সম্পূর্ণভাবে দায়ী, তার নাম হচ্ছে পাকিস্তান। আমি যদি আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলি তবে বলতে হবে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং পাকিস্তানের সমরতন্ত্র। এ দুটো অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাংলাদেশে আইএসআইয়ের তৎপরতার কথা আমরা জানি। কেননা, ১৯৭১ সালের প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই তারা এ কার্যক্রম শুরু করেছিল। এবং এখানেও আমরা দেখছি সমরতন্ত্রের সঙ্গে জঙ্গিবাদের একটা সংযোগ আছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহজেট সরকারের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের সিদ্ধান্তের প্রতি ১৫ জানুয়ারি ২০১০ ঢাকায় জামায়াত ও সহযোগী মৌলবাদীদের বিক্ষোভ।
জামায়াত নেতা : শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতি চলবে, নাস্তিকবাদী রাজনীতি চলবে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রাজনীতি চলবে আর মুসলমানের রাজনীতি চলবে নাÑ এটা হতে পারে না।
জামায়াত নেতা : এদেশে যতদিন পর্যন্ত মুসলমানরা থাকবে ততদিন পর্যন্ত এদেশে ইসলামী রাজনীতি থাকবে, থাকবে, থাকবে। কোনো শক্তি তা প্রতিহত করতে পারবে না।

হাসান রফিক
ইসলামের রাজনীতি যতদিন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হবে না ততদিন পর্যন্ত এ জিহাদ বা জঙ্গিবাদের নামে জটিলতাগুলো বন্ধ হবে না।

মুনতাসীর মামুন
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্ম এসেছে। ইসলাম এসেছে, খ্রিস্টান ধর্ম এসেছে, বৌদ্ধ ধর্ম এসেছে আর সনাতন ধর্ম তো ছিলই। একেক সময়ে একেক ধর্মের বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু পাশাপাশি সব ধর্মই একসঙ্গে সহাবস্থান করেছে এবং রাজন্যবর্গেরাও ধর্মের ব্যাপারে সেইভাবে হস্তক্ষেপ করেননি। কিন্তু উনিশ শতকের দিকে যখন শুদ্ধিকরণের বিষয়টি এলো এবং সেই ওহাবী আন্দোলনের সূত্র ধরেই কিন্তু এখানে ইসলাম শুদ্ধিকরণের আন্দোলনটা হয়েছে। মজার বিষয় যেটা অনেকে জানেন না যে, এই শুদ্ধিকরণ আন্দোলনের বিপরীতে কিন্তু তৃণমূল পর্যায় থেকে সবসময় প্রতিরোধ হয়েছে।
এমন মানব সমাজ কবে সৃজন হবে, যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান জাতি-গোত্র নাহি রবে। এমন মানবসমাজ কবে সৃজন হবে...
কুষ্টিয়ার লোকগায়ক নিজামউদ্দিনের গান শুনে মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠন আহলে হাদিসের প্রধান তাকে দলে এনেছিলেন জিহাদের গান গাওয়ার জন্য।

ওখানে থাকতে গিয়ে আপনি কি কোনো জিহাদী গান লিখেছিলেন, গেয়েছিলেন?
নিজামউদ্দিন : ওখানে থেকে অনেক গান আমি লিখেছিলাম এবং ওখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমি গান গাইতাম। যেমন : ‘আয় ওরে ছুটে আয়, মুক্তির গান গায়, ছুটে ছুটে আয় ওরে আয় মুজাহিদ আয়।’
কীভাবে আপনি বুঝলেন যে, আহলে হাদিস জঙ্গি সংগঠন?
নিজামউদ্দিন : আমি তাদের যে কার্যকলাপ দেখলাম তাতে তাদের জঙ্গি কর্মকা-গুলো যেন আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল। তারা সঠিক দ্বীন-ই কথা থেকে একটু বাঁকা করে অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। যেমন বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানের লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেখতে লাগলাম। তখন দেখলাম যে, না এখানে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব হবে না। আমি থাকব না।

জঙ্গি- মৌলবাদীদের ইসলামবিরোধী কর্মকা- সম্পর্কে জানতে পেরে নিজামউদ্দিন ফিরে এসেছেন তার মূল জায়গায়, সূফী সাধক লালনের দেশে। যে দেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবতার গর্বিত উত্তরাধিকার।
নিজামউদ্দিনের কণ্ঠস্বরে লালনের গান : সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে? সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, লালন বলে জাতির কি রূপ আমি দেখলাম না দুই নজরে, সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে...

শয়তান শয়তান শয়তান দেখুম না মাথা নষ্ট পার্টি মন খারাপ মুগ্ধৈছি লইজ্জা লাগে
শিবিরের কিলিং মিশন - বেঁচে যাওয়া দুইজন

শিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্নের আগে থেকেই এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির নাম ধারণ করে পুনর্জন্মের মধ্য দিয়ে পুনরায় এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে তারা তাদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই রক্তপিপাসু হায়েনারা সততা, ন্যায়, প্রজ্ঞা, প্রগতি, মননশীলতা, মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে হামলে পড়েছে অসংখ্যবার। তাদের হাতে এ পর্যন্ত জাতির অসংখ্য শ্রেষ্ঠ সন্তান প্রাণ হারিয়েছেন। শিবিরের নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে এখনো অনেকেই অসুস্থতায় কাল কাটাচ্ছেন, জীবনকে বয়ে বেড়াচ্ছেন। রাজপথের টগবগে অনেক প্রতিবাদী যুবক এখন মাথা ঠুকছেন অন্ধকার ঘরের দেয়ালে। রাষ্ট্রযন্ত্র শিবিরের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি, মাঝে মাঝে কিছু হম্বিতম্বি ছাড়া। শিবিরের কুখ্যাত সেই ক্যাডাররা এখনো রাজপথে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রায়ই তারা হুঙ্কার দেয়, তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নাকি মিথ্যা। মিথ্যা নাকি সত্যি তা প্রমাণ হয়ে যায় ঘটনা বাস্তবত কি ঘটেছিল তা জানা গেলেই। শিবিরের দুটি নৃশংস-ভয়ঙ্কর কিলিং মিশনের মধ্য থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া দুজন ছাত্রনেতার ভাষ্য থেকে ঘটনা দুটির পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরা হল।

১.
সময়টা ৯০ দশকের মাঝামাঝি। রাবিতে শিবির তখন বর্ধিষ্ণু শক্তি। ঈমানী জোর দিয়ে শিবির অন্যদের মোকাবেলা করে বলা হলেও ক্যাম্পাসে ড়্গমতা সংহত করার জন্য তারাই সবচেয়ে বেশি ছল-চাতুরি, দু’নম্বরি করেছে। বাংলাদেশের অন্য কোনো সংগঠনকে নিজেদের বিকাশের জন্য এত ছলা-কলা ষড়যন্ত্র পাকাতে হয়নি। তখনকার দিনে শিবির নানাভাবে অপরাপর সংগঠনের কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাতো। যেমন, রাজনীতিতে নতুন সক্রিয় হওয়া ছেলেদের দেখিয়ে দেখিয়ে শিবির ক্যাডাররা তরবারি ধার দিত। রাতে হয়ত তার মাথার কাছে ভয়ঙ্কর কিছু একটা রেখে গেল। কিংবা বাইরে দু’একজন আড্ডায় থাকলে তখন শিবির ক্যাডাররা বোরখা পরে হাতে কুড়াল কিরিচ-তরকারি নিয়ে তাদের সামনে হঠাৎ করে উদয় হত। কিছুক্ষণ পর আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যেত তারা। এরকম ভীতি ও আতঙ্কের সময়ে রাবিতে অর্থনীতি বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়তেন মাহবুবুল আলম ফরহাদ। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। হবিবুর রহমান হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। সবশেষে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯৫ সালের ২২ ফেব্রম্নয়ারি শিবির রাবি ক্যাম্পাস দখল করে নেয়। ছাত্রদলকে তখন ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়া হয়। ২২ জুলাই ছাত্রদল ক্যাম্পাসে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা জানান, ক্যাম্পাস প্রত্যেকের। প্রত্যেক ছাত্রেরই ক্যাম্পাসে থাকার, রাজনীতি করার অধিকার আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা সেরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ক্ষমতাসীন বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের নেতা কর্মীরা। দীর্ঘদিন পরে হলে ঢুকে সবাই যে যার কড়্গে চলে যায়। হাবিবুর রহমান হলের ৮৮ নং কক্ষে থাকতেন ফরহাদ। ছাত্রদলের ঐতিহ্যবাহী এই কক্ষটিতে ইতোপূবর্বে ফজলুর রহমান পটল, হারুণুর রশীদ হারুণসহ অনেক বড় বড় নেতার সিট ছিল।

২৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪০

ওরাকল বলেছেন: আর যে সরকারের কথা বললেন সেই সময়কার (পূর্ব পাকিস্তানের) মন্ত্রী পরিষদের তালিকা -

তা এই পূর্ব পাকিস্তানের প্রাক্তন গভর্ণর ডাঃ এ এম মালেক ও তাহার মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দ হলেন - (কৃতজ্ঞতা: ব্লগার এহহামিদা [আমু ব্লগ])

১)ড: এ.এম. মালিক
২)আবুল কাশেম
৩)আব্বাস আলী খান (জামাতের প্রাক্তন সেক্রেটারী জেনারেল, মুজাহিদ যার স্থলাবিষিক্ত হয়)
৪)আখতারুদ্দিন আহমেদ
৫)এ.এস.এম. সোলায়মান
৬)ওবায়দুল্লাহ মজুমদার
৭)প্রফেসর শামসুল হক
৮)মাওলানা মোহাম্মদ ইশহাক
৯)নওয়াজিশ আহমেদ
১০)মাওলানা এ.কে.এম ইউসুফ (তত্ব আমলে নিজামী গ্রেফতার হওয়ার পরে এই লোক ছিল ভারপ্রাপ্ত আমির)
১১) মং সু প্রু চৌধুরী!!

এই ১১ জনের অধিনেই সারা বাংলায় ৬ ডিভিশন পাকিহানার ৯ মাস ধংশলীলা চালিয়েছে। তাই ৭১ এর জামাত ও এর নেতারা কোন ভাবেই গনহত্যার দায় এড়াতে পারবে না।

২৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪০

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: কড়্গে প্রবেশের কিছুক্ষণ পর হাত মুখ ধুয়ে একটু আরাম করে ফরহাদ যখন বসতে গিয়েছিল তখনই শিবির ক্যাডাররা তার ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। সেসময় তিনি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বড় নেতা না হলেও প্রধান সংগঠকদের একজন ছিলেন তিনি। এজন্য তিনি ছিলেন শিবিরের বিশেষ টার্গেট। ফরহাদ ঘুণাক্ষরেও জানতেন না শিবির ক্যাডাররা সংঘবদ্ধভাবে হলের ভেতর ওৎ পেতে বসে আছে। হঠাৎ শিবির ক্যাডাররা কড়্গের ভেতর ঢুকে পড়ে। এবং তারা ‘ফরহাদকে পেয়েছি’ বলে উল্লাস ধ্বনি দিতে থাকে। ফরহাদ তখন তার বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আবিভূত হন। চেষ্টা করেন সময় পার করার। যাতে তার বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করতে আসতে পারে। তিনি তাদের সঙ্গে আলাপ জড়াতে থাকেন। কিন্তু শিবির ক্যাডাররা তার কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তার ওপর হামলে পড়ে।
প্রথমেই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কতগুলো আঘাত করে তারা। ফরহাদের মাথায় দেখা গেছে অনেকগুলো গভীর ক্ষতচিহ্ন। মাথায় আঘাতের পরই ফরহাদ চেতনা হারিয়ে ফেলেন। ঠিক এ সময় শুরম্ন হয় তুমুল বৃষ্টি। শিবির ক্যাডাররা ফরহাদকে হল থেকে বের করে হাবিবুর রহমান হলের পেছনে নিয়ে যায়। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে তার সারা দেহ। সবশেষে তারা ফরহাদের বাম হাতের কব্জি পুরোটা কেটে নিয়ে যায়। তার মুখের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে তারা পরখ করে সে বেঁচে আছে কি না। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই তারা নারায়ে তকবির- আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিতে দিতে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর বাংলা চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যের মতো সব ঘটনার শেষে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিএনপি তখন ক্ষমতাসীন দল। তবু শিবির ক্যাডাররা তাকে হত্যার উদ্যোগ নিতে পিছপা হয়নি। এ ঘটনার পর মামলা করা হয়েছিল ফরহাদের পক্ষ থেকে। মামলা পরিচালনা করা হয়েছিল দলীয়ভাবে। আর সব রাজনৈতিক মামলার মতোই এ মামলারও একই অবস্থা হলো। রাজনৈতিক মামলাগুলো সাধারণত ২-৪ বছর চলে। সাক্ষী হয় না। বাদী থাকে না। অবশেষে এক পর্যায়ে মামলাটির অপমৃত্যু হয়। শাহদাৎ, জব্বার, সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি তুষার, রাবি শিবিরের সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দ, সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল মাইনুলসহ আরো অনেককেই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই মামলার আসামি করা হয়। যদিও জানা যায় যে, শিবির ক্যাডারদের অস্ত্র প্রশিক্ষণদাতা, অসংখ্য মামলার আসামী ডাসমারি এলাকার বাসিন্দা কুখ্যাত ক্যাডার জাফর বাবু; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা, শিবিরের কিলার বাহিনীর সদস্য খুশী; মেহেরচণ্ডী এলাকার শিবিরের মেসগুলোর নিয়ন্ত্রক, বর্তমানে জামায়াতের রোকন, রাবি সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার আলোচিত শিবির ক্যাডার সামাদ; শিবিরের তৎকালীন সাথী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর মসজিদ মিশন একাডেমির পাশের বাসাটির অধিবাসী কুখ্যাত শিবির ক্যাডার শাহীন; শিবিরের রাবি শাখার সভাপতি জব্বার, মাইনুল (মাইনুল বর্তমানে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে জমজম ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আর জব্বার বর্তমানে যশোরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর); বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা শিবির ক্যাডার সালেকীন এবং সাবেক রাবি ছাত্র শিবির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীরসহ আরো প্রায় শতাধিক শিবির ক্যাডার সেদিন তার ওপর হামলায় জড়িত ছিল।
তখন শিবিরের তেমন কেউ গ্রেফতার হয়নি। বরং বিএনপি ক্ষমতা ছাড়লে হাবিবুর রহমানের আমলে ফরহাদকেই জেলে যেতে হয়। এমনকি ফরহাদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া ১ লাখ টাকাও তসরূপকৃত বলে অভিযোগ এনে ফরহাদকে অপমানিত করা হয়েছিল। অসুস্থতার সময় বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাদেক হোসেন খোকা, আমানউল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলনসহ অনেকেই তাকে হাসপাতালে দেখতে যান। প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক কার্যতালিকাতেও তাকে দেখতে যাওয়ার সময় নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পাটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ডাকা হরতালের কারণে প্রধানমন্ত্রী আর তাকে দেখতে যেতে পারেননি। ফরহাদ আহত হওয়ার পর বিবিসি ও ভয়েজ অব আমেরিকা টানা ৪ দিন ধরে একের পর এক সিরিজ প্রতিবেদন প্রচার করে। অচল এক হাত নিয়ে ফরহাদ এখনো স্বপ্ন দেখেন পরিশুদ্ধ রাজনীতির।

২.
দেশ ও জাতির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা ছিল প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতীর। বেড়ে উঠেছেন খুলনা শহরে। সেই বোধই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের প্রতি তার অন্তরে তৈরি করেছিল ব্যাপক ঘৃণা। তাই খুলনা অঞ্চলে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন নিয়মিত। কিন্তু জামায়াত-শিবির চক্র সেখানে তাদের শক্তি প্রদর্শন করত। কোনো ধরনের কর্মসূচি তারা সফল হতে দিত না। লাঠি, দা, কুড়াল, কিরিচ, তরবারি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত ঘাতকের দল। ফলে কোনো ধরনের কর্মসূচি নিয়ে এগুতে পারত না নির্মূল কমিটি। চৈতী এর প্রতিবাদ করতেন। কর্মসূচিতে গেলেই তিনি শিবিরের বাধার বিরুদ্ধাচরণ করতেন এবং কখনো কখনো তাদের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়তেন। এরই রেশ ধরে ঘাতক শিবির ক্যাডাররা চৈতীকে চিরদিনের জন্য পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। চৈতীকে হত্যার উদ্দেশ্যে দু’দুবার তার ওপর হামলা চালালেও তখন তারা ব্যর্থ হয়।
এরপর চৈতী চলে আসেন রাজশাহীতে। ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে মাস্টার্স কোর্সে। সেখানে এসেই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী রাবি শাখার হাল ধরেন। ছাত্রমৈত্রীর কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি এবার শিবিরের আরো বড় শত্রুতে পরিণত হন। ’৯৪ সালের ২০ ডিসেম্বর ছিল রাবিতে চৈতীর শিক্ষাজীবনের শেষ দিন। তখন তিনি ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক। ক্যাম্পাসে তখন শীতকালীন ছুটির মধ্যবর্তী সময়ে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। তীব্র শীত। রাজশাহীতে সেদিন তাপমাত্রা ৫/৬ ডিগ্রি। রিকশায় করে তিনি যাচ্ছিলেন। দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে হঠাৎ মাথার পেছনে কিসের যেন ছোঁয়া লাগল। ঘুরে তাকাতেই দেখেন পিস্তল। গুলিও বের হলো সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু ততক্ষণে কিছুটা সরে গেছেন চৈতী। গুলিটা তার কোনো ক্ষতি করতে পারল না। রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নেমে তিনি রাস্তার বাঁ দিকে দৌড়াতে শুরম্ন করেন। শিবির ক্যাডাররা তখন আর তাকে গুলি করতে পারছিল না। কারণ সামনে-পেছনে, চতুর্দিকে তাদের নিজেদের লোক। তাছাড়া শিবিরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে, পিস্তল-গুলির চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কুপিয়ে-কুপিয়ে যন্ত্রণা দিয়ে কাউকে মারাটা তাদের কাছে অনেক বেশি পছন্দসই। একই ঘটনা ঘটল চৈতীর বেলায়ও। আগে থেকে প্রস্তুত শিবির ক্যাডাররা তখন চারদিক থেকে বোমা ফাটাতে শুরু করে। যাতে এদিকে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস না পায়। পরিকল্পনা মাফিক চতুর্দিক থেকে তারা ঘিরে ফেলে চৈতীকে। তারপর সমস্বরে আল্লাহু আকবর ধ্বনি তুলে তাকে একের পর এক আঘাত করতে থাকে। ইঞ্চি মেপে মেপে তাকে আঘাত করা হয়। তার সারা শরীরে প্রতি এক ইঞ্চি পরপর দেখা গেছে লম্বা-গভীর কোপের দাগ। সারা শরীরে তিনি এই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। শিবির প্রথমে তার পায়ে যে কোপটি দিয়েছিল, তাতে ডান হাঁটুর একটু ওপর থেকে পুরো পা’টিই প্রায় আলাদা হয়ে গিয়েছিল। কোনোমতে এক পাশে একটু চামড়ার সঙ্গে ঝুলেছিল পা’টি। এক সময় কোপাকুপির মধ্যেও কোনো একজন গুলি চালায় তার ওপর। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সেই গুলিটি না ফোটায় তখনই তাকে মরতে হয়নি। সারা শরীর থেকে তীব্র রক্তের স্রোত বেরিয়ে আসছিল তার। মাথা মুখ থেকে গড়িয়ে পড়া রক্তে নাকের ছিদ্রটাও প্রায় বুজে গিয়েছিল। চৈতীর কানে যেন দূর পরবাস থেকে তখন ভেসে আসতে থাকে তাদের বাক্য বিনিময়। তার মধ্যে একটি বাক্য এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে। যেন খুব দূর থেকে কেউ একজন বলছে, ‘ভালো করে চেক করে দেখ, মারা গেছে কিনা?’ সারা পৃথিবী তখন ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে আসছে চৈতীর কাছে। তার পরও সজাগ হয়ে ওঠে মস্তিষ্ক। নিশ্বাস-প্রশ্বাস কিছুক্ষণের জন্য হলেও জোর করে বন্ধ রাখার চেষ্টা চালায় সে। শিবির ক্যাডাররা তাই তখন তার হাল্কা প্রশ্বাস নির্গমনটা ধরতে পারেনি। মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে তারা বোমা ফাটাতে ফাটাতে উল্লাস করে আল্লাহু আকবর ধ্বনি তুলে ফিরে গিয়েছিল।
মেহেরচণ্ডী এলাকার শিবিরের মেসগুলোর নিয়ন্ত্রক, বর্তমানে জামায়াতের রোকন, রাবি সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার আলোচিত শিবির ক্যাডার সামাদ; শিবিরের তৎকালীন সাথী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর মসজিদ মিশন একাডেমির পাশের বাসাটির অধিবাসী কুখ্যাত শিবির ক্যাডার শাহীন; শিবিরের রাবি শাখার সভাপতি জব্বার, সেক্রেরি মাইনুল (মাইনুল বর্তমানে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে জমজম ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আর জব্বার বর্তমানে যশোরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রজেক্ট ডিরেক্টর); এবং সাবেক রাবি ছাত্র শিবির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীরসহ আরো প্রায় শতাধিক শিবির ক্যাডার সেদিন তার ওপর হামলায় জড়িত ছিল।
এর কিছুক্ষণ বাদেই বাইরে থেকে রাবিতে আসা একটি ট্যুর গাড়ি এগিয়ে আসতে থাকে ঘটনাস্থলের দিকে। এতক্ষণ বোমার জন্য আটকা পড়ে থাকা গাড়িটি শিবির ক্যাডারদের বেরিয়ে যেতে দেখে দ্রুত তখন এলাকা ছাড়তে চাইছিল। গাড়িতে বসা নারীরা প্রথম লক্ষ্য করে লাশটির দিকে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তবু তারা চৈতীর অচেতন দেহটি গাড়িতে তুলে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যায়।
ইতোমধ্যে রাবিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। সাধারণ ছাত্ররা তখন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিবির সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়া হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য। রাবির সেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। ছাত্ররা দলে দলে ছুটতে থাকে মেডিকেলের দিকে। শক্তিহীনতার জন্য বর্বরতার বিরুদ্ধে তারা রুখে দাঁড়াতে না পারলেও টাকা-পয়সা যার যা ছিল, নিয়ে ছুটে যায় চৈতীর চিকিৎসার জন্য। রক্ত দেয়ার জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে থাকে ছাত্ররা। ভাগ্য প্রসন্নই বলা যায়। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। অর্থোপেডিক্সের ডাক্তাররা সবাই অপারেশন থিয়েটারে তৈরি ছিল তাদের নিজস্ব রুটিন অনুসারেই। চৈতীকে হাসপাতালে নেয়া মাত্র ডাক্তাররা তার জীবন বাঁচানোর জন্য একযোগে কাজে নেমে পড়ে। রাত ১০টার দিকে একবার ঘোষণা করা হয় মারা গেছে চৈতী। কিন্তু না, নিজের অদম্য প্রাণশক্তির জোরে বেঁচে থাকেন তিনি বুকে দ্রোহের বীজ নিয়ে। দুই দিন পর জ্ঞান ফেরে তার।
রাবির প্রগতিশীল শিক্ষকরা তখন আতঙ্কে কাঁপছেন। অনেক শিক্ষক রাজশাহী মেডিকেলে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন চাদর মুড়ি দিয়ে। শিবিরের ভয়ে প্রকাশ্যে অনেকেই তখন তার পাশে দাঁড়াতে পারেননি। পরে তাকে ঢাকায় আনা হলে পান্না কায়সার, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, হায়দার আকবর খান রনো, ভাষা মতিনসহ ভারতে চিকিৎসার সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, মাদার তেরেসা, জ্যোতি বসু প্রমুখ দেশি-বিদেশি নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাকে হাসপাতালে গিয়ে সমবেদনা জানান।
এদিকে চৈতীকে আর রাজশাহী রাখাটা নিরাপদ মনে হয় না অনেকের কাছে। দ্রুত তাকে সরিয়ে আনা হয় ঢাকার পিজি হাসপাতালে। এরপর একবার তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। বিদেশি ডাক্তারদের একটি দল তার হাড়ে অপারেশন চালায়। ইতোমধ্যে তার শরীরে হাজারখানেক সেলাই করা হয়েছে। শত শত সেলাইবিহীন ব্যান্ডেজ মোড়া ক্ষত ঢেকে ফেলেছে তার সারা দেহ। কৃত্রিম রগ জুড়ে দেয়া হয়েছে শরীরের অনেক জায়গায়। মৃত্যুর মুখোমুখি চৈতীকে এরপরও শিবিরের নিয়োগকৃত এজেন্টরা হাসপাতালের মধ্যে বার দুয়েক হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বন্ধুদের অক্লান্ত রাতজাগা পাহারা তাদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে।
ঠিক এই সময়টাতেই ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেননের অনুরোধে ভারতের কমিউনিস্ট পাটি (সিপিএম) চৈতীর চিকিৎসার দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। নিয়ে যাওয়া হয় তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতলে। টানা ২ বছর হাসপাতালে থাকতে হয় তাকে। এরপর তিনি দেশে ফেরেন। কিন্তু এখনো প্রতি ৬ মাস অন্তর তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে রক্ত সঞ্চালনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখার জন্য ইলেকট্রোথেরাপি গ্রহণ করতে হয়।

সেই হতভাগা ডাক্তারের নাম রতন। কী তার দোষ? সে মৈত্রী করত, আর এমন দিনে তাকে তারা একা পেয়েছে, আর বাগে পেয়ে আক্রমন করেছে। তাকে ক্যাম্পাসের বড় রাস্তার উপর আক্রমন করে শিবিরের কিছু নরঘাতক, তারপর তার সকল গিরা ধরে ধরে কাটতে থাকে তারা দা দিয়ে। তার হাত কাটা হয় কব্জিতে, কনুইয়ে, স্কন্ধে। দুই হাত কাটে তারা, তারপর শুরু করে পা, একজন জীবিত মানুষকে পশুর মত করে জবাই করে মারা এক জিনিষ, আর অত্যাচারের উদ্দেশ্য নিয়ে হাত পা কাটা আরেক জিনিষ। কাজেই পা কাটে এই নরপিশাচের প্রতিটি গিরা ধরে, অর্থাৎ গোড়ালী, হাটু, কোমর, সব আলাদা করে ফেলে। তারপরে তারা অপেক্ষা করতে থাকে, কতক্ষন তার দেহ নড়াচড়া করে, তা দেখার জন্যে। এক পর্যায়ে তার রক্তক্ষরনের কারনে মস্তিস্কে রক্তসরবরাহ কমে যায় বলে, তিনি জ্ঞান হারান। তারপর এই নরপিশাচেরা চলে যায় রাস্তার উপরে ডাঃ রতনকে ফেলে। এরপরে তাকে হাস্পাতালে নিয়ে আসা হয়, তার বাঁচার প্রশ্নই আসে না, তারপরেও যুদ্ধ চলতে থাকে, কিন্তু কিছুই করার ছিলনা কারো। ব্যাগের পর ব্যাগ রক্ত দেওয়া হতে থাকে, কিন্তু ততক্ষনে তার মস্তিস্কের কোষগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে যে কোন ভাবেই আর তাকে ফেরানো সম্ভব ছিলো না।

শিবির নিয়ে আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা জানাতে চাই -

১। এরশাদের আমল

এটা সেই সময়ের কথা যখন এরশাদ প্রবল প্রতাপে দেশ শাসন করে যাচ্ছে। আমি তখন পুরান ঢাকায় স্কুলে পড়ি। আমাদের টিফিনে ছুটি দিত ৪৫ মিনিট - টিফিন পিরিয়ড শুরু হয়েছে কি হয় নাই, পাশের কবি নজরুল কলেজের শিবিরের কয়েক বান্দা এসে হাজির - কি মিস্টি মিস্টি তাদের কথাবার্তা, কিন্তু আমরা ছটফট করতাম ক্লাশ থেকে বেরিয়ে খেলতে যাওয়ার জন্য। প্রথম প্রথম আমরা ক্লাসরুমের ২য় দরজা দিয়ে ভেগে যেতাম কিন্তু এরপর দুই দরজাতেই লোকজন দাড়িয়ে থাকত যাতে আমরা শুনতে বাধ্য হই তাদের কথাবার্তা, আর সব শেষে ফরম দিত পূরন করে দিতে বলত। স্কুলের টিচাররা কিছু বলতে পারত না কারন সিনিয়র মৌলভী স্যারের অনুমতি নিয়ে এরা এসব করছে - যার জন্য স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত পর্যন্ত গাওয়া যেত না। চরম বিরক্ত হয়ে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রদের কাছে বিচার দেয়া হল। তারা এসে পরে আমাদের রক্ষা করে। সেসময় লীগ আর দলের ছেলেপেলে শিবির পেটানোর জন্য একে অন্যকে সহায়তাই করত। আর আজ পুরানো ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে (এখন ইউনি) শিবিরের ব্যাকবোন হল দলের ছেলেপেলে।

২। আওয়ামী লীগের আমলে ('৯৬-'০১)

আমি তখন বুয়েটের আহসানউল্লাহ হলের ছাত্র। অন্য কোন ইউনিতে জানি শিবির-লীগ মারামারি লাগছে, ফলে লীগের পোলাপান সারা বুয়েটের সবগুলো হলে শিবির পেটানো শুরু করেছে। আহসানউল্লাহ হলের একটা রুম থেকে পাওয়া গেল শিবিরের তথ্যের খনি। তাদের সদস্যদের লিস্ট সহ নানারকম কাগজ পত্র। সেই কাগজ-পত্র ঘেটে দেখা গেল যে এদের নিয়মিত রিপোর্ট দিতে হয় তাদের হাইকমান্ডের কাছে। হলে এবং ক্লাসে কে কে প্রগতিশীল, কার কার ধর্মের প্রতি সফট কর্নার আছে, কার আর্থিক অবস্থা কি ইত্যাদি। আর হিন্দু ছাত্রদের জন্য একেবারে আলাদা কলাম। তাদের ব্যপারে বিস্তারিত। ছাত্র সংগঠন না তো যেন কোন যুদ্ধের প্ল্যানিং টিম।

তখন বুয়েটে শিবির বিরোধী ছিল বামপন্থীরা, লীগ, দলের লায়ন ভাই অংশের ছাত্ররা। ছাত্রদলের মুকি (বুয়েট ছাত্রী সনি হত্যার সাথে জড়িত) অংশ ছিল চট্টগ্রামের সাকা আর লালবাগের পিন্টু সমর্থিত। এই অংশ ছিল শিবিরের বি-টিম। মূলত এদের ব্যাকিং এর জন্যই শিবির ২০০১ জাতীয় ইলেকশনের পর বুয়েটে প্রকাশ্যে আসার সাহস পেয়েছিল। তারা আলাদা প্যনেলও দিয়েছিল ইউকসু নির্বাচনে। শিবির প্যনেলের ভিপি প্রার্থী ছিল আওরঙ্গজেব (ব্যাচ ১৯৯৫, কম্পু)। পরে সে সিংগাপুরে গিয়েছিল মাস্টার্স করতে, তারপর অস্ট্রেলিয়ার মোনাশে ছিল। সামহোয়ারইনের মোটামুটি নিয়মিত ব্লগার সে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় আস্তমেয়ে, ফারজানা সহ শিবিরের যে নিউক্লিয়াস টা আছে তার কেন্দ্রে সে ছিল। জানিনা এখন সে কই। বুয়েটের ১৯৯৫ ব্যচের আরেক মার্কামারা শিবির ছিল মোকাররম। খুব সম্ভবত সে এখন জার্মানীতে আছে। যা খবর পাই, সে এখনও জার্মানীর বাংলাদেশী ছাত্রদের ইয়াহূগ্রুপে ভালই একটিভ।

আর আমি শিবিরদের নিয়া কোন ঢাক ঢাক গুড়ে বিশ্বাসী না। এই ফ্যসিস্ট গুলার নাম, ঠিকানা পরিস্কার করে জানতে ও জানাতে আমি আগ্রহী। তাই উপরের কমেন্টে নাম সহই লিখলাম। এখন এই কমেন্ট ছাড় পাবে কিনা তা মডারেটর উপর বিবেচনা।

২৬.১ | ধুসর গোধূলি | মঙ্গল, ২০০৯-০৮-১৮ ০২:৪৫

- এরশাদের আমলে চট্টগ্রাম বিশ্বিদ্যালয়ের একটা ঘটনা আছে। সেটা সিনিয়র কারও আলোচনায় আসছে না এখনো।

হামিদ (পুরা নাম মনে নেই) এরশাদ সমর্থিত ছাত্র শাখার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলো। তার কারণে ক্যাম্পাসে শিবির মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারছিলো না কোনো ভাবেই। পরে খুব সম্ভবত এরশাদ যখন ছাত্রদের গুটিয়ে নিলো তখন সুযোগ বুঝে শিবিরের পোলাপাইন হামিদকে ক্যাম্পাসে সবার সামনে আক্রমন করে বসে। তারা হামিদের বাম হাতের কবজি কেটে নেয়। তারপর সেই কাটা কব্জি নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসে মিছিল করে। শ্লোগান দেয়, যারা আল্লাহ্'র আইন প্রয়োগকারী শিবিরের বিপক্ষে যাবে তাদেরও একই হাল হবে।

আমাদের এলাকায় কুখ্যাত রাজাকার কালামুদ্দিন জাফরী। সে নরসিংদী শহরের গাবতলী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। তার তত্বাবধানে শিবিরের পোলাপান তাদের মতের বিরুদ্ধে কেউ গেলেই ধরে নিয়ে গিয়ে রগ কেটে দেয়। একবার স্থানীয় নরসিংদী সরকারী কলেজের আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন ছেলেকে ধরে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির। এই ঘটনা ঘটে গাবতলী মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে। ফ্লোরের রক্ত কামালুদ্দিন জাফরী নিজের হাতে মোছে। তখন বিএনপি নতুন ক্ষমতায় এসেছে। এই ঘটনার পর দল-লীগ এক হয়ে প্রতিবাদ করলে জাফরী গা ঢাকা দেয়। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য গাবতলী মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যায়।

মোকাররম ৯৩ ব্যাচের জার্মানির কাইজার্সলয়টার্নে থাকে। জার্মানিতে শিবিরের একটি গ্রুপ সুযোগসন্ধানী তৎপরতায় লিপ্ত, মোকাররম এদের নিউক্লিয়াস এবং জার্মানির ইয়াহুগ্রুপে এরা একসাথে একে অন্যকে সমর্থন করে বিপক্ষকে আক্রমন করে। এই দলে আছে হালে মার্টিন লুথার ইউনিভার্সিটির মোহাম্মাদ নুর, ষ্টুটগার্ট ইউনিভার্সিটির জাহাংগির কবির, রেগেন্সবুর্গ ইউনিভার্সিটির মারুফ হাসান ও আরো কয়েকজন। তারা ধর্ম ও সুশিল মুখোশে শিবিরের পক্ষে যায় এসব নিউজ ও বক্তব্য প্রচারের চেষ্টা করে। যেমন মোকাররম জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আর্টিকেল লেখে, চাকরীর সন্ধান নিয়ে পোষ্ট দেয়, ইজরাইলের আগ্রাসন নিয়ে মেইল করে, সোনারবাংলা ডট কমের লিংক দেয়, মন্তব্য প্রতিবেদন: কাদের বিচারের কথা কারা বলছে যু্দ্ধাপরাধীর বিচারের বিপক্ষের এই প্রতিবেদন দেয়। ইয়াহু গ্রুপে বেশ কয়েকবার মডারেটরের ঝাড়ি খেয়েও এদের লজ্জা নেই। শিবিরের কাছ থেকে লজ্জা আশা করাও যায় না। লজ্জাহিন মানুষ ভয়ংকর হতে পারে, লজ্জাহিন অমানুষ কেমন হবে আপনারা চিন্তা করে দেখবেন।
জোট সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল দুর্নীতির আখড়া, শীর্ষে
জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা
আমাদের সময়, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০০৭
তরিকুল ইসলাম সুমন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিগত জোট সরকারের আমলে ছাত্রভর্তি বাণিজ্য, দলীয় ছাত্রদের পরীক্ষায় অধিক নম্বর ও সুযোগ সুবিধা দেয়া এবং দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিনড়ব বিভাগে নিয়োগসহ নানান দুর্নীতির মাধ্যমে মালিক হয়েছেন অবৈধ সম্পদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক-দুর্নীতি, নিয়োগ-দুর্নীতি, ভর্তি-দুর্নীতিতে জড়িত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক এরশাদুল বারী (উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারিত সাবেক উপাচার্য), অধ্যাপক মো. খলিলুর রহমান (মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারিত সাবেক উপাচার্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য), অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান (কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য), অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার, তিনি বিশাল নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ লাভ করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে), অধ্যাপক আবুল খায়ের (নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য), অধ্যাপক এএফএম ইউসুফ
হায়দার (বর্তমান উপ-উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদের সিলেকশন বোর্ডের তিনি সভাপতি এছাড়াও বিভিনড়ব কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ডেরও তিনি সভাপতি), অধ্যাপক মো. মোর্শেদ (পিএসসিতে
নিয়োগ-বাণিজ্যে বিপুল অর্থের মালিক বলে শোনা যায়), অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম (পিএসসিতে নিয়োগ বাণিজ্যে বিপুল অর্থের মালিক বলে শোনা যায়), অধ্যাপক আতাউর রহমান (রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ, ৫২ জনকে প্রথম শ্রেণী পাইয়ে
দেয়ার হোতা), অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন (বিভিনড়ব নিয়োগ-বাণিজ্যে হাওয়া ভবনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন), ড. সাইফুল ইসলাম (বিভিনড়ব নিয়োগ বাণিজ্যে হাওয়া ভবনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অবৈধ অর্থের
মালিক হয়েছেন বলে শোনা যায়), অধ্যাপক হাবিবুর রহমান (ঔষধ নিয়ন্ত্রণ পরিদফতরের প্রাক্তন পরিচালক, দুর্নীতির দায়ে অপসারিত, বিভিনড়ব ঔষধ কোম্পানি থেকে বিএমএ নেতা ডা. জাহিদের সঙ্গে যৌথভাবে বিপুল অর্থ আয় করেছিলেন বলে জানা যায়), অধ্যাপক জাহিদ (সার্জেন্ট জহুরুল হকের প্রভোস্ট), ড. এটিএম ফখরুদ্দিন (আর্থিক দুর্নীতি একাধিকবার প্রমাণিত)।
অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় ব্যাপক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রশাসনিক পদে বিএনপি ও জামায়াতের ছাত্র নেতাদের সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়।
বহুল আলোচিত নামের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন সন্ত্রাসী ছাত্রনেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী এবং ছাত্রনেতা আমজাদ হোসেন শিশির। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকশ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অনেকগুলো সরাসরি অর্থের বিনিময়ে। ড. আনোয়ারের জীব বিজ্ঞান অনুষদে শিক্ষক নিয়েগে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। পূর্ববর্তী ডিন অধ্যাপক সালেহীন কাদরীর সময়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজের নিজ বিভাগ মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ এ লেকচারার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ঘটে। ড. আনোয়ার ডিন থাকাকালে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে সিলেকশন কমিটির সদস্য বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. আনোয়ারুল আজিম আখন্দ ও অনুষদের ডিন হিসেবে শিবির ক্যাডার মো. শাহিনূর হোসেনকে নিয়োগ দান করেন। যার বিরুদ্ধে তার নিজ বিভাগে (অনুজীব বিজ্ঞান) ছাত্র থাকাকালীন পরীক্ষায় জামায়াত ঘরানার শিক্ষকদের যোগসাজসে বেশি নম্বর প্রদান, একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকায় তদন্তকাজ চলছিল। এই নিয়োগ বোর্ডেরও সভাপতি অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিচ্ছ্বিদ্র ভর্তি পরীক্ষার সুনাম শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু বিগত জোট সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির ছোয়া ছাত্রছাত্রী ভর্তি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছিল। ভর্তি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রশাসনিক
বিভাগের ভর্তি শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা ও বিভাগপর্যায়ের কর্মকর্তারা। তবে দুর্নীতি গত ৫ বছরে যেভাবে পরিব্যপ্তি হয়েছিল, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ধারণা আছে যে, শিক্ষকরা (সরকার দলীয়) এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। অবৈধ ভর্তির দায়দায়িত্ব শীর্ষপ্রশাসন (উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার) এড়াতে পারেন না। ভর্তি-দুর্নীতির অন্যতম পথ পুনঃভর্তির সময় এবং মুক্তিযোদ্ধা ও ওয়ার্ড কোটায় ভর্তির সময় হয়ে থাকে। ভর্তি-দুর্নীতির সঙ্গে জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের গভীর যোগাযোগ এবং এর মাধ্যমে শিবির কর্মীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপকহারে ভর্তির ব্যবস্থা করার কথা বহুল আলোচিত। অনুষদের ডিন জামায়াতের সহযোগিতায় পরীক্ষার আগের দিন প্রেস থেকে প্রশড়বপত্র ছাপানের
সঙ্গে জামায়াত দলীয় শিক্ষকদের যুক্ত করে প্রশড়বপত্র সংগ্রহ, নির্দিষ্ট কেন্দ্রে সমেবেত শিবির কর্মীদের মধ্যে এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নপত্রের উত্তর দ্রুত জানিয়ে দেয়া এবং দলীয় তত্ত্বাবধানে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় যেন
শিবিরের বাইরে কোনওভাবেই তা ছড়িয়ে না পড়ে। ‘ক’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় এমন অভিযোগ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক শাহিনূর হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে। বর্তমানে ডিনদের মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক
তাজমেরী এসএ ইসলাম ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিনের নাম এ প্রসঙ্গে এসেছে। অধ্যাপক তাজমেরী এ বছরে ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষা সমন্বয়ক হিসেবে গোপনীয় কাজে ব্যাপকভাবে জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের নিয়োগ করেন
বলে জানা যায়। অধ্যাপক সদরুল আমিনের সময়ে বিশেষ একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীরা যাদের মধ্যে মাদ্রাসা থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের অধিক্য রয়েছে তারা কলা অনুষদে ভর্তি হতে পেরেছেন। অনৈতিকভাবে ছাত্রছাত্রীদের বেশি নম্বর দেয়া, প্রশড়বপত্র ফাঁস ইত্যাদি মাধ্যমে একাডেমিক দুর্নীতি হয়ে থাকে।

২৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪০

ক্র্যাক কমান্ডো বলেছেন: অতীতে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের দুর্নীতির কথা সচরাচর শোনা যেত। বিগত পাঁচ বছরে তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়। অত্যন্ত পরিকল্পিত ও দলীয়ভাবে জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। জামায়াতপন্থী
শিক্ষকরা প্রথম বর্ষ থেকেই তাদের রিক্রুট করা শিবির কর্মীদের বিভিন্ন ইনকোর্স পরীক্ষায় বেশি নম্বর দিতে শুরু করেন।
খুবই অনৈতিক এই কাজটি তারা করেন অর্থপ্রাপ্তির চাইতে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে। ফলে ৪ বছরে ধীর ধীরে শিবির কর্মীরা বেশি নম্বর পেয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় উপরের দিকে স্থান করে নেয়। এ বিষয়ে প্রকৃষ্ট উদাহরণ জেনেটিক ইঞ্চিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের বর্তমান প্রভাষক শাহানুর হোসাইন। অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন এই ছাত্র ও শিবির ক্যাডার ওই বিভাগের জামায়তপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক মোজাম্মেল হক (ফজলুল হক হলের বর্তমান প্রভোস্ট) অধ্যাপক
আনিসুর রহমান (অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান) ও অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সহযোগিতায় অনৈতিকভাবে ধাপে ধাপে বেশি নম্বর পেয়ে অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে তৃতীয় স্থান লাভ করে এবং মাস্টার্সে ওই
জামায়াতী শিক্ষকদের যোগসাজশে থিসিসে শতকরা ৯০ এর উপর নম্বর লাভ করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে যান।
জামায়াতপন্থী এই ৩ শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন জমায়াতপন্থী শিক্ষকের অন্যতম যারা পত্রিকায় যৌথস্বাক্ষরে বিবৃতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সংগঠনকে অন্যান্য সংগঠনের মতো কাজ করার দাবি করেছিলেন। একাডেমিক
দুর্নীতির ক্ষেত্রে জামায়াতপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক আতাউর রহমান সম্পৃক্ত।
শীর্ষমহল মনে করেন সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত জোট সরকার নিয়োজিত শীর্ষপর্যায়ে (উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার) শিক্ষকদের অপসারণ করে সৎ, যোগ্য এবং যতদূর সম্ভব দল-নিরপেক্ষ শিক্ষকদের নিয়োগ দান করা প্রয়োজন। দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ কাজটি শুরু করা উচিত। শীর্ষপর্যায়ে এই পরিবর্তনের পরপর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি, অনিয়ম তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা। শীর্ষপর্যায়ে পরিবর্তন না করে তদন্ত কমিটি গঠন করে কোনও ফল পাওয়া যাবে না। অনিয়ম, দুর্নীতির কথা প্রকাশের ভয়ে অনেকেই এগিয়ে আসবে না। তদন্ত কাজে তথ্য লাভের জন্য দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও সুবিধাজনক জায়গায় একটি বাক্সে ফেলার ব্যবস্থা বা সরাসরি তদন্ত কমিটির কাছে তথ্য প্রদানের আহ্বান, চিহ্নিত
দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, অবৈধ ভর্তির সঙ্গে চিহ্নিত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে রিমান্ডে এনে তথ্য সংগ্রহ, এতে অবৈধ ভর্তির সঙ্গে জড়িত অন্যদের সম্পর্কে জানা যাবে। বিগত জোট সরকার
কর্তৃক সকল শিক্ষক ও অফিসার নিয়োগ কমিটিতে দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ করা সদস্যদের অবিলম্বে অপসারণ এবং যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা প্রতিস্থাপন।
এছাড়া বিভাগওয়ারী নিয়োগ কমিটিতে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে বিভাগের মতকে গুরুত্বদান। প্রতিটি হলে দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ করা প্রভোস্টদের অবিলম্বে অপসারণ এবং যোগ্য, মর্যাদাবান শিক্ষক যারা ছাত্রছাত্রীদের আস্থাভাজন হবেন ও যারা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তাদের নিয়োগ প্রদান। জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের গোপন অপতৎপরতার ওপর গোয়েন্দা নজরদারি রাখা।

আমি রাজশাহীর ছেলে। শিবির ওরফে রগ কাটা পার্টির কথা শুনবো না সেটা তো হতেই পারেনা। তাদের অত্যাচারে রাজশাহী শহর কিভাবে প্রতিনিয়ত জর্জরিত হচ্ছে সেটা ছোট থেকেই দেখে আসছি। কিন্তু হায়! এতো বড় হয়ে গেলাম এই রগ কাটা হারামিদের কেউ তেমন কিছুই করতে পারলো না। তারা যেমন দাপটে বিশ-ত্রিশ বছর আগেও ছিল আজো সেভাবেই ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় রাস্তায়। ডাঃ রতনের ঘটনা আমার জানা। আমার এক মামা বামপন্থী ছিলেন। উনাকে রগ কাটা পার্টির হারামজাদারা একদিন বাজার করে বাসায় ফেরার সময় হাতের এবং পায়ের সবগুলো রগ কেটে রিক্সায় তুলে দিয়েছিল। অবস্থা যা হবার তাই। মামাকে আর কখনো দেখতে পাইনি আমি। লেখাটা পড়ে অনেকদিন পর মামার কথা খুব মনে পড়ছে। আর ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠছি নতুন করে এই রগ কাটা হারামিদের বিরুদ্ধে।
৩৫ | কীর্তিনাশা | মঙ্গল, ২০০৯-০৮-১৮ ১০:২৫
নব্বই দশকের মাঝামাঝি। তখন সবে SSC পাশ করে কলেজে ঢুকেছি। থাকি ফার্মগেটের তেজতরী বাজারে। আমাদের বাসার কাছেই ছিল রহমতে আলম ইসলাম মিশন ও মাদ্রাসা। সেই সময় খুব ভালা পোলা আছিলাম (দেঁতোহাসি)। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম। তাও মসজিদে গিয়া জামাতে। তকবিরুল উলা সহকারে।
সেই সময় মাদ্রাসার সমবয়সী কিছু ছেলের সাথে আমার মোটামুটি ঘনিষ্ঠতা হল। আছরের নামাজের শেষে মাঝেমাঝে তাদের সাথে আড্ডা দিতাম। চা, ডালপুরি খেতাম। এরকম চলতে চলতে এক সময় তারা আমাকে একটা তারিখের কথা বলে সেই দিন তাদের মাদ্রাসায় আসতে বলল। ইসলামিক আলোচনা হবে। আর সাথে ভাল আপ্যায়নের ব্যাবস্থা। আমি খুশি মনেই রাজি হলাম।
কিন্তু সেই দিন অথবা তার পরদিন বিকেলে আমার বাসায় হামেদ আসলো। আমার স্কুল-বন্ধু। তার বাসাও একই এলাকায়। সে এসে ইতস্তত করে বলল - দোস্ত তুই কি শিবিরে নাম লেখাইছিস? আমি তো অবাক, বললাম - না তো! কিন্তু এই প্রশ্ন করছিস কেন?
জবাবে সে যা জানালো তা হচ্ছে - ঐ ছেলেগুলা শিবির করে। মিষ্টি কথায় আমাকে ভোলাতে চেষ্টা করছে। আর কিছুদিন ওদের সাথে মিশলে নাকি আমিও শিবির হয়ে যাবো।
হামেদ আরো জানালো সে আমাকে আরো আগেই সাবধান করতে চেয়েছিল। তবে তার সন্দেহ হচ্ছিল আমি বোধহয় ইতিমধ্যেই শিবিরে নাম লিখিয়েছি। তারপর আমাকে সে খুব করে অনুরোধ করলো যাতে ওদের সাথে আর না মিশি। অবশ্য তার আর দরকার ছিল না। কারণ শিবির কী জিনিস তা ততদিনে আমারো জানা হয়েছিল কিছুটা। হামেদ আমাকে আরো সাবধান করলো যাতে ওদেরকে আমি কৌশলে এড়িয়ে চলি, কোন প্রকার খারাপ ব্যাবহার যাতে না করি।
সেই দিন থেকে মসজিদে যাওয়া ছেড়ে দিলাম। কিন্তু দু'দিন না যেতেই সেই বন্ধুরা আমার বাসায় হাজির। মসজিদে যাচ্ছি না দেখে তারা আমার খোঁজ নিতে এসেছে আমি অসুস্থ কিনা। আমি জানালাম কলেজে পড়াশোনার চাপ বেড়েছে তাই মসজিদে যাওয়ার সময় পাই না। তারা আমাকে মসজিদে নামাজ পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক জ্ঞান বিতরণ করে চলে গেল।
তবে এত সহজে শয়তানগুলা ছাড়েনি আমাকে। এরপরও চার পাঁচ দিন আমার বাসায় এসেছিল। শেষ যে দিন এসেছিল সেদিন তাদের হাতে ছিল একটা মোটা খাম, আমার জন্য উপহার। তাদের সামনেই খামটা খুলে দেখলাম সেখানে অনেকগুলো চটি বই। প্রত্যেকটা বই-এর উপরে ছাত্র শিবিরের নাম লেখা। সাথে কিছু ইস্টিগারও ছিল, কোরআনের আয়াত আর তাদের নানা শ্লোগান সংবলিত।
আমি বিনয়ের সাথে সেই খাম তাদের ফিরিয়ে দিয়ে বললাম - দেখেন আমার আব্বা স্কুল শিক্ষক। এসব রাজনীতি একদম পছন্দ করেন না। এই সব বই আমার কাছে দেখলে বাসা থেকে বের করে দেবেন। আমার জীবনটাই বরবাদ হয়ে যাবে। আপনাদের পরিচয় জানলেও তিনি ক্ষেপে যাবেন। দয়াকরে আপনারা আর আমার কাছে আসবেন না।
তারপর থেকে ওরা আর আমাকে ঘাটায়নি। আমিও ঐ মসজিদে যাওয়া একেবারে ছেড়ে দিয়েছিলাম। ওদেরকে মনে প্রানে ঘৃনা করলেও ওদের সাথে কেন খারাপ ব্যাবহার করতে পারিনি তা সহজেই অনুমেয়। কারণ আমি ছিলাম একা আর ওরা সংগঠিত। তার ওপর ওদের ঘাঁটির কাছাকাছিই থাকতাম। মওকা মতো একা পেয়ে আমার রগ কেটে দিতে ওদের কোনই সমস্যা হতো না।
শিবিররে পৈশাচিকতার প্রত্যক্ষদর্শী নই আমি। তবে ওদের বহু কুকর্মের কাহিনী জানা আছে। ওদের প্রতি তীব্র ঘৃনা ছাড়া আর কোন অনুভুতি নেই আমার। আর মনে প্রানে ওদের সমূলে ধ্বংস কামনা করি। আর ওদের প্রতি যারা সহানুভুতিশীল তাদের যদি বোধোদয় না হয় তবে তাদেরও ধ্বংস হোক।
৪৩ | বর্ষা [অতিথি] (যাচাই করা হয়নি) | মঙ্গল, ২০০৯-০৮-১৮ ২২:২৮
অত্যন্ত সময়োপযোগী লেখা... অসংখ্য ধন্যবাদ সাইফ তাহসিনকে। অতিথি লেখক ( মঙ্গল, ২০০৯-০৮-১৮ ০৮:২২ ) এর কথায় একমত,'শিবিরের অপকর্মগুলো কম্পাইল করে প্রকাশ করতে পারলে খুবই ভাল হয়।'
আমি সিরাত কে কিছু বলব না ঠিক করেছিলাম, কিন্তু ভাইয়া পারলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৮ম খন্ড টি পড়ে নিও।
উমম...আমি বুয়েটে থাকাকালীন সময়ে নিয়মিত টুইশ্যনি করেছি। আমি মেয়ে, আমার বাসা ঢাকা বোর্ড অফিসের কাছে এবং ইংলিশ মিডিয়াম পড়াতাম বলে বেশ অনেক রক্ষনশীল মুসলিম পরিবারের বাচ্চাদের পড়িয়েছি।মাদ্রাসার ইন্টার পরীক্ষার্থী, ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া রক্ষনশীল মুসলিম মেয়ে, জামাতের নেতার ছেলে মেয়ে ( আগ্রহ নিয়ে গিয়েছি, ওদের জীবনপ্রণালী দেখতে)এদের পড়িয়েছি। একজন প্রাক্তন জামাতের সদস্য মনে হয় আগের এক পোষ্টে তার মন্তব্য দিয়েছেন এবং এই পোষ্টে বার বার এসেছে-- জামাত গ্রামে, মফস্বলে বেশী সক্রিয়। আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু মন্তব্য করব------
* রগ কাটা উগ্রপন্থী দের দমন করতেঃ
এটা আমাদের জনগনের ক্ষমতার বাইরে। শুধু মাত্র সরকার এর পক্ষে এটা দমন করা সম্ভব। আমাদের দেশে মিলিটারি শাসন করলে চুরি, চামারি বন্ধ হয়ে যায় আর গণতান্ত্রিক সরকার এলে যেই কে সেই অবস্থা হয়...। তার মানে একই রাষ্টের কাঠামো দুই ভিন্ন তন্ত্রে দুই রকম ফল দিচ্ছে। সরকার ইচ্ছা করলেই গোড়া হতে শিবিরের মূল উৎপাটিত করতে পারে, কিন্তু করবে না। বি,এন,পি বা আওয়ামী লীগ হোলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক মেনে চলে। তাদের নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই বলেই তারা তৃণমূল পর্যায়ে একদম দুর্বল। তাই শিবির হোলো তাদের ভাড়া করা গুন্ডা। এই দুই দল আসলে শিবির নির্মূল করতে চায়না। আমার প্রিয় মুজিবের দল যখন ইলেকসনের আগে পোস্টারে প্রথমে আল্লাহ সর্ব শক্তিমান লিখে কারন সংখ্যা গুরু মুসলিম দের ভোট আদায় করতে হবে, তখন আমার দুঃখের সীমা থাকে না। আওয়ামী লীগের প্রধান নীতির মাঝে যে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল তা তারা মনে রাখেনি। ‘সন্ত্রাসকে সব রাজনৈতিক দলই ব্যবহার করে। বিএনপি - আওয়ামী লীগ করেছে, করবে। ফ্রীডম পার্টি - জাতীয় পার্টি একসময় সন্ত্রাসকে অন্য এক স্তরে নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু জামাত-শিবিরের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক। এই পার্থক্যটা সবার অনুধাবনের দরকার আছে।’ খুব সত্যি কথা।সরকারের সদিচ্ছাই পারে মাদ্রাসা গুলোর শিক্ষার মান উন্নত করে ওদেরকে মেইনস্ট্রীমের সাথে তাল মিলিয়ে চলার রাস্তা বানিয়ে দিতে। তাহলে জামাতের মূল শক্তির উৎস নষ্ট হবে। এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেনো জামাতকে জনগন আর নিজেদের রক্ষাকর্তা না ভাবে।মসজিদ রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
তাই আমাদের জনগনের হাতে যা অস্ত্র আছে, তাই নিয়ে দমনে ঝাপিয়ে পড়ই চলুন।
* সাধারণ জনগনকে শিবিরের আসল রূপ তুলে ধরাঃ
সিরাতরা আসলে একটি প্রজন্মের প্রতিধ্বনি। সিরাত চাইলেই ২য় মহাযুদ্ধ নিয়ে বই খুঁজে পড়ছে, শিবিরের অপকর্ম নিয়ে ওরা জানবে কিভাবে? শহরের ভালো অবস্থানে থেকে শিবিরের ভয়াবহতা বোঝা অনেক মুশকিল।ওর লেখার দুটি মূল সুর ছিলো হুমায়ুন আযাদ এর প্রকাশভংগি ওর পছন্দ হয়নি আর জামাতি পরিচিতের মিষ্টি ব্যবহার ওর পছন্দ হয়েছে। ‘এই পোষ্টের লেখা গুলো কি এক করে প্রকাশ করা যায়?’এই ধারনা বাস্তবে ফল নিতে নিতে লাখ লাখ শিবিরের পক্ষে বই বের হয়ে যাচ্ছে। তাই শিবিরের কুকর্মগুলো জনসাধারন জানছে যখন শুধু নিজের উপর আঘাত এসে পড়ছে তখন। সিরাত দের জানার ব্যবস্থা আমরা এখনো নেইনি।
আমি নিজে ধর্ম বিশ্বাস করি না। তবে ধর্ম বিশ্বাস যারা করেন তাদের প্রতি আমার প্রবল শ্রদ্ধাবোধ আছে। জীবনে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা আছে। জীবনের দুর্যোগময় সময়ে ঈশ্বরকে ডেকে মনের শান্তি পেতে পারলে বেঁচে যেতাম। দেশে ছোট থাকতে খুব গর্ব অনুভব করতাম আমি এইসব বিশ্বাস করি না দেখে, হু!! দেখো আমি তোমাদের চেয়ে বুদ্ধিমান!! এখন আর সেই মনোভাব নেই, শুধু জানি আমি এই আর্দশ বেছে নিয়েছি, অন্য একজন হয়ত আরেক আর্দশ বেছে নেবে। মানুষকে বিচার করা উচিত তার মনুষত্যবোধ দিয়ে, ধর্মবোধ দিয়ে নয়। আমাদের দেশের নাস্তিকেরা কোনো ভালো উদাহরন রেখে যেতে পারেননি। তাদের জিবনে অনুশাসনবোধের অভাব আছে।নাস্তিকতা মানে বল্গাহীন স্বেচ্ছাচার জীবন নয় এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। সাধারন মানুষ কেনো মুক্ত বুদ্ধির মানুষের দিকে আকৃষ্ট হবে যদি তারা দেখে তারা নিজেরাই নিজেদের জিবন নিয়ে টালমাতাল অবস্থা...। বেশীর ভাগ শিবির এবং জামতিদের পারিবারিক বন্ধন বেশ মজবুদ। যেটা সাধারন মুস্লিমদের বেশ টানে।
*মুক্তচিন্তাধারী মানুষদের সাংগাঠনিক দুর্বলতাঃ
জামাতের সাংগাঠনিক শক্তি ইর্ষনীয় পর্যায়ে ভালো। মহিলা ও পুরুষেরা প্রতি সপ্তাহে মিটিং করছে। বাচ্চাদের প্রতি সপ্তাহে একপাতা করে লিখতে হয় ইসলামের জন্য তারা ওই সপ্তাহে কি ভাল কাজ করেছে। শিশুদের ছোটো কাল হতেই ব্রেইন ওয়াশ করে দেয়া হচ্ছে। মেইনস্ট্রীমের জনগনের কাছে এদের গ্রহনযোগ্যতা অনেক বেশী বাড়ছে কারন এরা মিষ্টিভাষী এবং খুব সাহায্যপরায়ণ।বুয়েটে ছাত্রীহলে দেখতাম সিনিয়র আপুরা জুনিয়রদের নোট দিচ্ছে। মেয়েদের ভালো বিয়ে, চাকরীর সুবিধা সব দেবার চেষ্টা করে। এতোসব রেখে কার ঠ্যাকা পড়েছে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে?চার্চ, মসজিদ, মন্দিরে সুবিধা হোলো এদের একটি প্রতিষ্ঠান আছে, কোনো আর্দশ ছড়িয়ে দিতে বেশী বেগ পেতে হয়না। অন্যদিকে মুক্তচিন্তাধারীদের একটি কমন প্লাটফর্মের অভাব আছে। আমরা ব্লগ বা ইন্টারনেট এই গুতাবো, এর বেশী কিছু করার আমাদের মুরোদ নেই। ঐদিকে জামাতের একজন কর্মী হয়তো আরেকজনকে বোমা বানানো শিখিয়ে দিচ্ছে।
*সাধারন মানুষদেরকে ইসলাম ও জামাতের মাঝে পার্থক্য বোঝানোঃ
আমার এক ছাত্রীর বাবা জামাতি হয়ে গিয়েছিলেন যেনো অফিসে তার পদোন্নতি হয় এবং এতে তার মেয়েদের বিয়ে দিতে সুবিধা হবে। সৎ যোগ্য পাত্র পাওয়া যাবে জামাতিদের মাঝ হতে। ভদ্রবেশী রিক্রুটাররা এমন ভাবে ব্রেইন ওয়াশ করেছিলো যে উনি ইহকাল, পরকাল নিয়ে পুরোই নিশ্চিত ছিলেন। জামাতি হলে যেই সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় তা অনেক লোভনীয়। ব্যাপারটা আসলেই বাঁদরকে কলা দেখিয়ে কাজ করানোর মতো।সৎ উপায়ে দেশে থাকার যো নেই। জামাত সাধারন মানুষকে ইহকাল পরকাল দুটোই পার করা সহজ করার রাস্তার লোভ দেখিয়ে রিক্রুট করছে। এই কারনেই ফ্রিডম ফাইটার এবং অনেক মুক্তিযোদ্ধার ছেলেমেয়েরা পরবর্তীতে জামাতি হয়ে গেছে।এইটা বন্ধ করতে হলে বিকল্প পথ মানুষ্কে দেখাতে হবে। নইলে আমাদের কোনো অধিকারই নেই জনগনকে বলা তোমরা জামাতে যোগ দিওনা। আমরা যদি জামাতের মতো সুযোগ সুবিধা দেবার বিকল্প ব্যবস্থা করতে না পারি তাহলে কেনো মানুষ আমাদের কথা শুনবে জামাতি রিক্রুটারদের লোভনীয় প্রস্তাব না শুনে?
*ইসলামের ফায়দা নেয়া বন্ধ করতে ইসলাম কে দূরে ঠেলে না দেয়াঃ
আমার এক ছাত্রের মা আমাকে গ্রামের হিন্দু মেয়েরা কতো নোংরা বোঝাতে গিয়ে তার ২য় শ্রেনী ইংলিশ মিডিয়াম ছেলের সাম্নেই বলছিলো, জানো না তো ওরা *** করে পানি নেয় না এবং ওইটার বিসদ বর্ণনা। আমরা মুসলিম্রা কতো ভাল জীবন যাপন করি...ইত্যাদি। এই ছেলে বড়ো হয়ে যদি কোনো হিন্দু মেয়েকে গণিমতের মাল মনে করে তাকে কি দোষ দেয়া যাবে? জামাতি মা বোনদের নিজেদের সম্পর্কে অনেক উচুঁ ধারনা আছে। আর বাকি মেয়েরা হলো ভোগের জন্য নিজেকে সাজিয়ে রাখা বস্তু। তাই এইসব মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু হওয়া মানে হোলো এইতা তাদের প্রাপ্য।
আর কুরান শরীফ ও ওই এলাকার ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে প্রাথমিক ভাবে ধর্ম প্রচারের জন্য অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। ওইগুলো ঐতিহাসিক কাহিনী। ওই কাহিনী গুলোর উপর ভর করে জামাত শুকনো পটকা মাদ্রাসার ছাত্র গুলোকে রগকাটতে পটু মাস্তান বা খুনী বানাচ্ছে। তাই ইসলামের সাম্যের বানীগুলোকে ঠিক মতো প্রচার করতে হবে।জনসাধারন বোঝাতে হবে ইসলাম এবং জামাত দুটো আলাদা ব্যাপার।

মগজ ধোলাই ব্যাপারটি যে কত ভয়ংকর তা শিবিরের কর্মকান্ডে বোঝা যায়। এবং ওদের কর্মকান্ডে বোঝা যায় ওরা কতটা সুদূরপ্রসারী চিন্তা ভাবনা করে শত্রুদের(ওদের ভাষায়) ধবংসে। যেমন ওদের ক্ষতির একটা ছোট উদাহরণ দেই, ওরা মাথায় কম্বল পেঁচিয়ে হকিস্টিক দিয়ে মাথায় আঘাত করে যাতে চিরস্থায়ী ক্ষতি হয় এবং কোনো প্রমাণও না থাকে। কিন্তু মানুষটা চিরদিনের মত শেষ হয়ে যায়। আমার এক পরিচিত জনের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে।
শিবির এমন পরিকল্পিতভাবে নিজেদের দল ভারী করে তা শুনলে অবাক হতে হয়। আমি তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে আসা সব নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের সাবধান করে দিতে চাই যাতে তারা অন্তত শিবির থেকে সাবধান থাকতে পারে।

জামাত এবং ৭১ এর পাক বাহিনীর সহকারী দলগুলি কেন নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়া উচিত?

অনেক জরুরী লেখা পড়ে আছে। সময়ের অভাবে হচ্ছেনা। অনুবাদ, গল্প, উপন্যাসের চেয়ে এখন দেখছি এর প্রয়োজনীয়তা আরো বেশী।
আল্লাহ আমাদের প্রভূ
কোরান আমাদের সংবিধান
রসুল (সাঃ) আমাদের নেতা।
বিপ্লব বিপ্লব, ইসলামী বিপ্লব।
এগুলি জামাতের পরিচিত শ্লোগান, আর এখানেই সমস্যা।
প্রথমতঃ ইসলামী বিপ্লব আমরা আফগানিস্থানে, ইরানে দেখেছি, তথাকথিত ধর্মীয় বিপ্লব গুলো একটা জাতীকে অনেক শতাব্দী পিছিয়ে দেয়। মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বারণ। বেনামাজীদের প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় কতল। তালেবান আফগানিস্থানে আমরা এর নমুনা দেখেছি। দুই হাজার বছরের পুরানো ভগবান বুদ্ধের মূর্তি ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে তালেবান।
দ্বিতীয়তঃ রসুল (সাঃ) আমাদের নেতা। সেটা মসজিদে যত মধুর মনে হয়, বাস্তবে তার প্রয়োগ প্রায় অসম্ভব। কারণ: একটা রাষ্ট্র ধর্মের মত চলেনা। এখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে অনেক ডিপ্লমেটিক ব্যাপার থাকে। অনেক রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা থাকে। যা কোরানের দাওয়াত হিসেবে কোন ভাবেই সব লোকের জন্য খুলে দেয়া যায়না।
কিন্তু মসজিদের দুয়ার অন্তত সব মুসলমানের জন্য উম্মুক্ত থাকা জরুরী।
তৃতীয়তঃ ধর্ম গ্রন্থ হিসাবে কোরান যতই পবিত্র হউক সংবিধান হিসাবে ততই অকেজো। মানুষের নতুন জীবন এবং তার চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই একটা সংবিধান রচিত হয়। এবং একটা রাষ্ট্রের সব মানে সব ধর্মের লোকের জন্য হতে হবে একটা সংবিধান। কোরান তো শুধু জামাতে ইসলামের জন্য হতে পারে (খুব উদার ভাবে সব মুসলমানের জন্য), কিন্তু সব মানুষের জন্য কি করে হবে?
আল্লাহ সব মানুষের প্রভূ (যারা বিস্বাস করে) জামাতের নিজস্ব সম্পত্তি নয়।
এটা আপনাদের সবারই জানা। এর পেছনে আছে একটা বিশ্বাস। একটা ফিলসফি। যা আরো ভয়ংকর (আল্লাহ সব মানুষের প্রভূ ?)।
এটা বাদ দিয়ে বলছি:
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের আগে হিটলার সব জার্মানদের বোঝালেন। খৃষ্টান (ক্যাথলিক) ধর্মই পৃথিবীতে একমাত্র শ্রেষ্ঠ ধর্ম। এবং জার্মান জাতিই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ। ইহুদিরা অনেক যন্ত্রনা দিয়ে যীশুকে হত্যা করে। তার প্রতিশোধ হিসাবে ইহুদি নিধন একটা পূন্যের ব্যাপার। শুরু হল ইহুদি নিধন এবং তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির লুন্ঠন। এর ইতিহাস আমি বলতে যাব না। কিন্তু এই ফিলসফিতেই জামাত, আল বদর আল শামস ৭১ এ কাজ করেছে। এবং এখন সুযোগের অপেক্ষায় আছে। যেহেতু অমাদের দেশে ইহুদি নেই, তাই তার যায়গায় বেছে নেয়া হয়েছে হিন্দু এবং সংখ্যালঘু পাহাড়ী এবং আদিবাসী সম্প্রদায়। এবং এরা এতই অন্ধ যে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের ভাগ্যের কথা ভাবেনা। ভারতের সব হিন্দু যদি জামাতীদের মত হয়, তবে সেই মানুষগুলির কি হবে।
আমারই দেশ সব মানুষের
হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ খৃষ্টান
দেশ মাতা এক সকলের।
এই কথায় আগে বিশ্বাস আনতে হবে। মুখে প্রকাশ, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করলে স্বাধীন বাংলায় যে কেউ রাজনীতি করতে পরবে। তার আগে নয়। (আমার জানামতে এই দলটি বাংলাদেশের সংবিধান মানে না) জামাতে ইসলামী তো কখনো নয় (অন্তত তাদের দলের স্বীয় উদ্যোগে ৭১ ঘাতক দালালদের বিচার করে তাদেরকে দল থেকে বহিস্কারের পরে ভেবে দেখা যেতে পারে, তার আগে নয়, এই অপশনটা খোলা থাকতে পারে শুধু যারা জামাতকে বা ধর্মীয় মৌলবাদকে রাজনৈতিক আলোচনার টেবিলে দাওয়াত দিতে চান তাদের জন্য)।
অনেকেই জামাত শিবিরের নৃশংসতা তুলে ধরেছেন। কিন্তু তারা যদি সন্ত্রাসবাদ আজ থেকে ছেড়ে দেয়, তাহলে তাদের রাজনৈতিক অধিকার দেয়া হবে?
এখানে দুটো ঘটনা বলতেই হয়;
এক:- জামাত যেভাবে ছেলে ধরে:
রশিদ আমার সাথেই এস.এস.সি পাশ করে শহরে গিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে।
এখন শহরে গিয়ে থাকার মত আর্থিক সংগতি রশিদ এবং আমার মত অনেকেরই থাকে না। সেখানে আমরা লজিং খুঁজি। আমার এস.এস.সির আগেই খেলাঘর এবং ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক থাকায়, তাদের সহযোগীতায় লজিং পেলাম। রশিদ পেল তাদের গ্রামের এক বড় ভাইয়ের সহযোগীতায়। সেই বড় ভাই শিবির করতেন। এবং রশিদের মতই শহরে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে শিবিরের সাহায্য পেয়েছেন। কাজেই রশিদ শিবিরের কাছে কৃতজ্ঞ। নামাজ রোজার বাইরে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে সে আমার কাছে এসেছিল। কিন্তু তখন রশিদকে ফেরানোর আর কোন পথ ছিলনা। ভর্তি থেকে শুরু করে লজিং, টিউশনি, ম্যাস, হোষ্টেল তার পর পড়া-লেখার সাহায্য এমনকি চাকরী পর্যন্ত পাওয়ার একটা নিশ্চয়তা শিবির দেয়।
এখন রশিদের মত ছেলেরা বেহেস্তের হুর আর এই দুনিয়ার এই সব নিশ্চিৎ মতব্বতে হাদিয়া ফেলে আমার সাথে শ্রেনী সংগ্রাম করতে আসবে? এবং শিবিরে প্রায় ৭০-৮০ ভাগ এই ভাবে রিক্রুট হতো।
দুই:-
ঠিক মনে নেই ৮৪ বা ৮৫ হবে চাবির ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী শিবিরের কর্মীর সাথে একই রুমে থাকতো। সোনায় সেহাগা আর কাকে বলে! শিবিরের ছেলেটির নাম মনে নেই। ছাত্র ইউনিয়নের ছেলেটির নাম শাহাদাত।
তাদের মধ্যে হয়তো রাজনীতির চেয়ে ধর্ম নিয়ে বেশী দন্ধ হয়ে থাকবে বলে আমার ধারনা। কারণ ছাত্র ইউনিয়নের কোন আস্তিক ছেলের সাথে আমার পরিচয় ছিল না।
তো একদিন জরুরী মিটিং-এ গিয়ে শুনলাম শাহাদাত রুম মেটের হাতে নিহত হয়েছে। রাতে ঘুমের ভেতর শিবিরের ঐ রুম মেট শাহাদাতকে ধাড়ালো দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। আমরা তার বিচারের দাবীতে শহরে মিছিল বের করেছিলাম।
শাহাদাত তুমি ভাল থেকো ভাই।
আমরা এখনো শিবির মুক্ত হতে পারি নাই।

CPG Production Home

২৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪১

রোবট ভিশন বলেছেন: তাশফী বলেছেন: যুদ্ধের সময় তাহলে জামায়াত নেতারা কি করেছে? যুদ্ধ করেছে? তাই? গদাম খা হালার পুত

২৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪২

জিসান শা ইকরাম বলেছেন:

জুতা মার ,যত পারো

২৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৪

কপালপোড়া বলেছেন: কমান্ডো ভাই , আপনের লেখাটা দিয়ে একটা পোষ্ট দেন ।


৩ মাংগির পুতের ভাল লাগছে এই রাজাকারের পুত এর পোষ্টডা !

২৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৫২

ওরাকল বলেছেন: ধন্যবাদ ক্র্যাক কমান্ডো।

গালা-গালি মারামারি করার চাইতে তথ্য ভিত্তিক প্রতিআক্রমণ অনেক বেশি কার্যকরী।

@লেখক : আশা করি প্রশ্ংুলোর উত্তর দেবেন। জবাব না জানা থাকলে জানুন এবং এর পর পোস্ট করুন।

৩০| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৫৬

বৃত্তবন্দী বলেছেন: আপনের কপাল ভালো আমি, গালি দেওয়া ছাইড়া দিছি। নইলে গালি দিয়া ব্লগানোর সাধ মিটায়ে দিতাম...

৩১| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:০৩

একলব্য১৯৭১ বলেছেন: কুত্তাচোদা রাজাকারী পোস্টে মাইনাস

৩২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:১৮

রাজীব দে সরকার বলেছেন: এপ্রিল ১৯৭১
# ঢাকায় নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত – দৈনিক পাকিস্তান- এপ্রিল ১১, ১৯৭১
# মিছিলে নেতৃত্ব দেন গোলাম আযম ও নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম -এপ্রিল ১৩, ১৯৭১
# পাকিস্তান রক্ষার জন্য গোলাম আযমের মোনাজাত – দৈনিক সংগ্রাম -এপ্রিল ১৩, ১৯৭১
# নুরুল আমিনের নেতৃত্বে শান্তি কমিটির প্রতিনিধি দল পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর টিক্কা খানের সাথে দেখা করে নাগরিকদের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতির কথা অবহিত করেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি তাদের সমর্থন পুন:ব্যক্ত করেন – ঢাকায় নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত – দৈনিক পাকিস্তান- এপ্রিল ১৭, ১৯৭১
# ভারত মুসলমানদের হিন্দু বানাতে চাচ্ছে তাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গুজব ছড়াচ্ছে – মৌলবী ফরিদ আহমেদ - – দৈনিক সংগ্রাম -এপ্রিল ১৬, ১৯৭১
# ‘যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আলবদর সেখানেই’ এই স্লোগান নিয়ে কুখ্যাত বদর বাহিনী গঠিত হয় ২২ এপ্রিল, ১৯৭১ -দৈনিক পাকিস্তান, পূর্বদেশ -এপ্রিল ২২/২৩, ১৯৭১
# সশস্ত্র বাহিনীকে সাহায্যে করার আহ্বান – আহ্বায়ক শান্তি কমিটি- দৈনিক পাকিস্তান -এপ্রিল ২৩, ১৯৭১

মে ১৯৭১
# নয়া সাম্রাজ্যবাদ নস্যাত করার জন্য শাহ আজিজের আহ্বান- দৈনিক পূর্বদেশ ৫ মে, ১৯৭১
# শান্তি কমিটির তৎপরতা, মুন্সিগন্জে পাক সেনাদের বিপুল সম্বর্ধনা – দৈনিক পূর্বদেশ ১২ মে, ১৯৭১
# সামরিক সরকার ২৫ মার্চ রাত্রে পাকিস্তানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেন; তিনি শ্রী তাজউদ্দিন হয়ে গেছেন – দৈনিক সংগ্রাম ৮ মে, ১৯৭১
# আল্লাহু আকবরের জায়গায় জয় বাংলা দখল করে নিয়েছে – দৈনিক সংগ্রাম ১২ মে, ১৯৭১
# শান্তি কমিটির আবেদন : দেশের শত্রুদের মোকাবেলা করুন – দৈনিক পূর্বদেশ ১৮ মে, ১৯৭১
# শান্তি কমিটির আবেদন -পাকিস্তানের শত্রুদের ধরিয়ে দেয়ার জন্যে সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করুন – দৈনিক আজাদ/পূর্বদেশ মে, ১৯৭১
# যে কোন মূল্যে ভারতের চক্রান্ত নস্যাৎ করব -মওলানা আশরাফ আলী – দৈনিক আজাদ, ১৯ মে, ১৯৭১
# জামাতে ইসলামী সেক্রেটারী জেনারেল রহমতে এলাহী বলেন- নতুন করে নির্বাচন চাই – দৈনিক পূর্বদেশ, ২৪ মে, ১৯৭১
# অতি সম্প্রতি আমাদের দেশের একদল লোক হিন্দুদের সাথে যোগ দিয়েছে – পাকিস্তানের দুশমনদের নিশ্চিন্হ করার আহ্বান – মওলানা সিদ্দিক আহমেদ – দৈনিক আজাদ, ২৪ মে, ১৯৭১
# জামাতের নেতা মওলানা ইউসুফ খুলনার শাহজাহান আলী রোডে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন জামাত কর্মী নিয়ে প্রথম রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলেন – দৈনিক পাকিস্তান/আজাদ, ২৫-২৭ মে, ১৯৭১

জুন, ১৯৭১
# বিশুদ্ধানন্দ মহাথেরো, হাফেজ্জী হুজুর ও মাওলানা মওদুদী বললেন মুজিব বিচ্ছন্নতাবাদী
# মওদুদীর বক্তব্য -শেখ মুজিবের দল গুন্ডামী ও মারামারী করে নির্বাচনে জয়ী হয় -পাকিস্তানী বাহিনীর হস্তক্ষেপ যৌক্তিক- দৈনিক পাকিস্তান, জুন ৬, ১৯৭১
# মুজিবের বিচ্ছন্নতাবাদী আন্দোলন জনতা সমর্থন করেনি – মাওলনা মওদুদী – দৈনিক সংগ্রাম ৭ জুন, ১৯৭১
# মীর জাফর কারা? – সম্পাদকীয় – দৈনিক সংগ্রাম ৮/৯ জুন, ১৯৭১
# তাজুদ্দিন ও তোফায়েলসহ অন্যান্যদের ফৌজদারী আদালতে বিচার করা হবে – দৈনিক সংগ্রাম ১০ জুন, ১৯৭১
# শান্তি কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য- দুস্কৃতিকারী গেরিলাদের গেরিলা স্টাইলে নির্মুল করা; ভারত ফেরত হিন্দুরা কড়া পাকিস্তান ভক্ত -সম্পাদকীয় – দৈনিক সংগ্রাম ১৩/১৪ জুন, ১৯৭১
# সরকারী প্রেসনোটে পহেলা বৈশাখ নববর্ষের ছুটি বাতিল, ২৪০টি রাস্তার নামকরন হিন্দু থেকে মুসলিম করন, ৬৯টি বই নিষিদ্ধ- হিন্দুরা মুসলমানদের অস্তিত্ব বিলোপের কাজ করেছে – এই সংবাদে দৈনিক সংগ্রামের উপসম্পাদকীয় জুন, ১৯৭১
# বিভিন্ন স্খানে শান্তি কমিটর সভা – ভারত ও তাবেদারদের বিরুদ্ভে প্রতিরোধের দৃঢ় সংকল্প – দৈনিক পাকিস্তান ১৭ জুন, ১৯৭১
# পূর্ব পাকিস্তানীরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানী ভাইদের সাথে একত্রে বসবাস করবে – গোলাম আযম দৈনিক সংগ্রাম -২৯শে জুন, ১৯৭১
# লাহোরে সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক গোলাম আজম:

“শেখ মুজিব প্রকাশ্যে কখনও স্বাধীনতার জন্যে চিৎকার করেন নি বরং মওলানা ভাষানীই বিচ্ছিন্নতাবাদের দাবী তোলেন। পূর্ব পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় রাখতে সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় ছিল না।”

- দৈনিক সংগ্রাম -২৯শে জুন, ১৯৭১

জুলাই ১৯৭১
# জয় বাংলা স্লোগানে পূর্ব পাকিস্তানের আকাশ বাতাস কলুষিত হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষদের ধর্ম বিরোধী অত্যাচার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানে রাজাকারদের ক্ষূদ্র অস্ত্র দিয়ে গুলী চালানোর ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে – দৈনিক সংগ্রাম – ১-৫ জুলাই, ১৯৭১
# জামাত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেকের আহ্বান- গ্রামে গ্রামে রক্ষীদল গঠন করুন – দৈনিক পাকিস্তান ৩রা জুলাই ১৯৭১
# জনগণ এখন স্বেচ্ছায় রাজাকার ট্রেনিং নিচ্ছে – জামাত নেতা আব্দুল খালেক – দৈনিক সংগ্রাম ৯ জুলাই, ১৯৭১
# ৭০ এর নির্বাচন প্রত্যক্ষভাবে ঘর ভাঙার নির্লজ্জ চক্রান্ত – দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয় ১২ জুলাই, ১৯৭১
# পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের জীবনের নিরাপত্তা নেই একথা ভিত্তিহীন – ড: সাজ্জাদ হোসেন – দৈনিক পাকিস্তান ৯ জুলাই, ১৯৭১
# বরিশালের শান্তি কমিটির সভায় আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বক্তৃতা – দৈনিক সংগ্রাম ১৮ জুলাই, ১৯৭১
# সেনাবাহিনী কুখ্যাত শহীদ মিনারটি ধ্বংস করে মসজিদ গড়েছে – দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয় ১৬ জুলাই, ১৯৭১
# ফজলুল কাদের চৌধুরী – পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে - দৈনিক পাকিস্তান ১৮ জুলাই, ১৯৭১
# ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রেসিডেন্টের ফর্মূলা বর্তমান সংকটের একমাত্র সমাধান, শেখ মুজিবের বিচার শূরুর আবেদন – জামাত অস্থায়ী আমীর মীর তোফায়েল মোহাম্মদ – দৈনিক পাকিস্তান ২৪ জুলাই, ১৯৭১
# আলেমদের প্রতি সশস্ত্র বাহিনীর সাথে সহযোগিতার আহ্বান – দৈনিক পাকিস্তান ২৬ জুলাই, ১৯৭১
# সামরিক আইনে রাজাকারদের যে কোন লোককে গ্রেফতার করার ক্ষমতা প্রদান- রাজাকারদের অত্যাচার বৃদ্ধি

আগস্ট ১৯৭১
# পাক সেনারা আমাদের ভাই, তারা জেহাদী চেতনায় উজ্জীবিত – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ৩রা আগস্ট, ১৯৭১
# সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়- দৈনিক সংগ্রাম ৭ই আগস্ট, ১৯৭১
# পাকিস্তান টিকলেই এদেশের মুসলমানরা টিকবে, দুনিয়ার কোন শক্তিই পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। গ্রামে গন্জের প্রতিটি এলাকা থেকে শত্রুর চিন্হ মুছে ফেলার আহ্বান – নিজামী -দৈনিক সংগ্রাম ৫ই আগস্ট, ১৯৭১
# পাকিস্তান অখন্ডতা ও সংহতি সংরক্ষণ এ্যাকশন কমিটি গঠন – দৈনিক সংগ্রাম ৯ই আগস্ট, ১৯৭১

তাদের এজেন্ডাগুলো ছিল:
× উর্দু একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, বাংলা সাইনবোর্ড ইত্যাদি অপসারন, রোমান হরফে বাংলা লেখার আহ্বান।
× কাফের কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচনা বর্জন।
× পূর্ব পাকিস্তানের রেডিও টিভিতে শতকরা ৫০% অনুষ্ঠান উর্দুতে হবে।
× জাতীয় স্বার্থে উচ্চপদ থেকে বাঙালী অফিসারদের অপসারন করতে হবে।
× রাজাকার বাহিণীর বেতন এবং শান্তি কমিটির ব্যয় নির্বাহের জন্যে হিন্দু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
× তিনমাসের জন্যে বিদেশী সাংবাদিকদের বহিস্কার করতে হবে।



# তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থকরা ইসলাম, পাকিস্তান ও মুসলমানদের দুশমন – গোলাম আযম – দৈনিক সংগ্রাম ১২ই

আগস্ট, ১৯৭১
# দুস্কৃতকারীদের এর পরিণাম ফল ভোগ করতে হবে – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ১২ই আগস্ট, ১৯৭১
# পাকিস্তান ভূখন্ডের নাম নয় একটি আদর্শের নাম – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ১৬ই আগস্ট, ১৯৭১
# পাকিস্তানের শত্রুর মোকাবেলার আহ্বান – নুরুল আমীন, গোলাম আযম, শফিকুল ইসলামদৈনিক সংগ্রাম
# পাকিস্তান অর্থ পবিত্র স্থান – গোলাম আজম- দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয় ১৬/১৮ই আগস্ট
# জামাতের একজন সদস্যও পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশ আন্দোলনে নিজেদের কোন ক্রমেই জড়িত করেনি – মওলানা আব্দুর রহিম – দৈনিক সংগ্রাম ১৮-২১ আগস্ট
# আনসার অর্ডিন্যান্স বিলুপ্ত করে রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারিদৈনিক ইত্তেফাক, ২২শে আগস্ট, ১৯৭১
# ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন সমাধান গ্রহণযোগ্য নয় – মাহমুদ আলীদৈনিক আজাদ, ২৪শে আগস্ট, ১৯৭১
# পাকিস্তানকে যারা বিচ্ছিন্ন করতে চায়- তারা ইসলামকেই উৎখাত করতে চায় – নিজামী
# সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান রক্ষা করেছে – গোলাম আজম- দৈনিক সংগ্রাম ২৭ আগস্ট, ১৯৭১
# হিন্দু ভারতের নিরপেক্ষ আদর্শের প্রচারক আওয়ামী লীগ – দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয় ৩০ আগস্ট, ১৯৭১
# নোয়াখালীর পল্লীতে জনসভা পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার আহ্বান- দৈনিক আজাদ, ২৯শে আগস্ট, ১৯৭১
# অধ্যাপক আতিকুজ্জামানের বক্তৃতা: পাকিস্তান কেয়ামত পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকবে -দৈনিক আজাদ, ৩০শে আগস্ট, ১৯৭১
# দেশে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্খা কায়েম না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর অর্থহীন – আব্দুর রহিমদেনিক সংগ্রাম, ২৯শে আগস্ট, ১৯৭১
# নিজামী ও গোলাম আজম – দৈনিক সংগ্রাম

সেপ্টেম্বর ১৯৭১
# বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষনার দাবী – গোলাম আযম দেনিক পাকিস্তান, ২রা সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিশ্বাসঘাতক – মিনহাজ শহীদ – দেনিক সংগ্রাম, ১ম সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ভারতীয় এজেন্ট – দেনিক সংগ্রাম
# রেজাকার ও বদর বাহিনীর মরনাঘাত
# পাক সেনানায়করা রেজাকারদের কৃতিত্ব আনন্দিত ও গর্বিত
# অপবাদ মূলত সামরিক সরকারকেই দেয়া হচ্ছে
# পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না
# পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দিবসে গোলাম আজম ও মতিউর রহমান নিজামী
# ছাত্রসংঘ কর্মীরা পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জায়গা রক্ষা করবে – মতিউর রহমান নিজামী
# যশোহরে ছাত্রনেতা মতিউর রহমান নিজামীর মন্তব্য : পাতা ১, পাতা ২ – দৈনিক সংগ্রাম – ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# আল্লাহ তাদের লাঞ্জিত করেছেন- মতিউর রহমান নিজামী : পাতা ১, পাতা ২
# পাকিস্তান হাসিলের লক্ষ্য বাস্তবায়িত না হওয়ায় বর্তমান সংকটের কারণ – আব্বাস আলী খান -দৈনিক সংগ্রাম – ২০শে
# যশোহরের রাজাকার সদর দফতরে মতিউর রহামন নিজামী : পাতা ১, পাতা ২
# জামাত বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ মেনে নিতে রাজী নয় : গোলাম আজম - দৈনিক পাকিস্তান ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# বিপদগামী তরুণদের সঠিক পথ দেখান : জেনারেল নিয়াজী -দৈনিক পাকিস্তান ২৮শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

গণতন্ত্র পুণ:প্রতিষ্ঠাই দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পূর্বশর্ত : নূরুল আমীন
# সংবর্ধনা সভায় গোলাম আযমের ভাষণ – দৈনিক সংগ্রাম ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# নিউইয়র্কে এ.টি. সাদী – বাংলাদেশ আন্দোলন ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র -দৈনিক পাকিস্তান ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
# আব্বাস আলী খান, মতিউর রহমান নিজামীর বক্তব্য

অক্টোবর ১৯৭১
# শান্তি কমিটি সদস্যরা ব্যক্তিগত শত্রুতা ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করছে
# রেজাকার বাহিনীর হাতে ভারী অস্ত্র দেবার আহ্বান
# আব্বাস আলী খান, আখতার উদ্দীন আহমদ, ওবায়দুল্লাহ মজুমদার ও গোলাম আজম বলেন স্বাধীন বাংলা জিগিরের উদ্দেশ্য মুসলমানদের হিন্দু বানানো - দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয়, ১০ অক্টোবর, ১৯৭১
# তথাকথিত মুক্তিবাহীনির শতকরা ৯০ জন হিন্দু – দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয়, ১৩ অক্টোবর, ১৯৭১
# আব্বাস আলী খান, ইউসুফ বলেন
# জামাতে ইসলামী নিরলসভাবে শান্তি কমিটির সাথে কাজ করে যাচ্ছে – গোলাম আজম
# দেশটা আল্লাহর ফজলে টিকে গেল
# বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে গণজমায়েতে অধ্যাপক গোলাম আজম, ভুট্রো বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ প্রশস্ত করছে
# ভারতের প্রচারণা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে – শাহ আজিজ- দৈনিক পাকিস্তান ২৫শে অক্টোবর, ১৯৭১
# জসীম উদ্দীন আহমেদ, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মওলানা ইউসুফ, ড: মালেক প্রমুখ বলেন
# ৬ নেতার যুক্ত বিবৃতি- দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭শে অক্টোবর, ১৯৭১
# দুস্কৃতিকারীদের গুলিত শান্তি কমিটির সদস্য আহত : পাতা ১, পাতা ২, পাতা ৩

নভেম্বর ১৯৭১
# রেজাকারদের হাতে ৪ ভারতীয় চর খতম- দৈনিক সংগ্রাম, ৫ নভেম্বর, ১৯৭১
# প্রেসিডেন্ট সকাশে নূরুল আমীন : রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের আরো অস্ত্র দেয়ার সুপারিশ পাতা ১, পাতা ২
# হয় শহীদ নয় গাজী
# আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও আব্দুল খালেক বলেন
# প্রদেশব্যাপি বদর দিবস পালিত -দৈনিক সংগ্রাম ১০ নভেম্বর, ১৯৭১
# ভারত আক্রমণ করলে কোলকাতা ও দিল্লীতে নামাজ পড়বো – আব্বাস আলী খান- দৈনিক সংগ্রাম ১০ নভেম্বর, ১৯৭১
# আল বদর বাহিনীর অভিযান: ৪০ মুক্তিযোদ্ধা গ্রেফতার- দৈনিক সংগ্রাম ১১ নবেম্বর, ১৯৭১
# বদর দিবসে বায়তুল মোকাররমে জনসভা: ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ মোকাবেলার আহ্বান
# বদর দিবসের ডাক-দৈনিক সংগ্রাম ১২ নভেম্বর, ১৯৭১
# রাজস্ব মন্ত্রীর সাতক্ষীরা রেজাকার শিবির পরিদর্শন- দৈনিক সংগ্রাম ১৩ নভেম্বর, ১৯৭১
# বিভিন্ন স্খানে বদর দিবস পালিত -দৈনিক সংগ্রাম ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১
# পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন ধ্বংস করতে হবে – জাামাতে ইসলামী
# সেনাবাহিনীর পরেই রাজাকারদের স্থান
# ৯৩ জন বাঙালী সিএসপি, ৪২ জন ইপিসিএস, এবং ৪ জন অধ্যাপকের ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
# কিছু রাষ্ট্রদ্রোহী কলকাতা থেকে বাবুদের ডেকে নিয়ে এসেছে
# গোলাম আজম শেখ মুজিবের জায়গা দখল করতে সবই করে যাচ্ছেন
# পাক সেনাবাহিনীর সহায়তায় বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে – নিজামী
# বদরবাহিনী হিন্দুস্তানকে খতম করবে -নিজামী
# রাজাকারদের জাতীয় বীর বলা উচিৎ
# দুস্কৃতিকারীদের চক্রান্ত বানচাল করার আহ্বান – জামায়াত
# প্রধানমন্ত্রীর পদ পূর্ব পাকিস্তানকে দিতে হবে – গোলাম আজম
# জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য – গোলাম আজম
# পাকিস্তান আল্লাহর ঘর – মতিউর রহমান নিজামী
# আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে ভুট্টোরও সে পরিণতি হবে – গোলাম আজম
# আত্মরক্ষার জন্য আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে – গোলাম আযম – দৈনিক সংগ্রাম, ২৪ নভেম্বর, ১৯৭১
# দেশপ্রেমিক জনগণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত – গোলাম আযম – দৈনিক সংগ্রাম, ২৮ নভেম্বর, ১৯৭১
# নেতৃবৃন্দের বজন্সকঠোর ঘোষণা : পাতা ১, পাতা ২ – দৈনিক সংগ্রাম, ৩০ নভেম্বর, ১৯৭১
# আক্রান্ত হলে জেহাদ ফরজ হয়ে যায় – মওদুদী
# রবিন্দ্র মার্কা লারেলাপ্পা গান

ডিসেম্বর ১৯৭১
# আল বদর আল শামস বাহিনীর সংখ্যা এক লাখেরও বেশী – ইউসুফ
গোলাম আজম, রাও ফরমান ও মালেক বুদ্ধিজীবি হত্যার নীল নক্সায় ব্যস্ত
# বুদ্ধিজীবি ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আব্বাস আলী খান বলেন, এদের নির্মূল করার ব্যপারে শান্তি বাহিনী ও সেনা বাহিনীকে সহায়তা করুন

× মুক্তিযুদ্ধে দৈনিক সংগ্রামের ভূমিকা – আলী আকবর টাবী
ডাউনলোড করুন পিডিএফ ফরম্যাটে (ক্লিক করুন) – প্রথম খন্ড, দ্বিতীয় খন্ড, তৃতীয় খন্ড

× একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট
ডাউনলোড করুন পিডিএফ ফরম্যাটে (ক্লিক করুন)

× একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের তালিকা -ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি:
এত্এ আরো আছেঃ
# রাজাকারদের তালিকা
# বিহারি যুদ্ধপরাধীদের নামের তালিকা
# শান্তি কমিটির সদস্য
# গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের তালিকা



সংগ্রহ ও সম্পাদনা - রাজীব দে সরকার


দেলোয়ার হোসেন সাইদীর কুকর্মময় অতীত

বিশিষ্ট আলেম, আলেমকুল শিরোমনি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী একজন রাজাকার তথা ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষদের খুন, পাক বাহিনীর নিকট ধরিয়ে দেয়া, নারী ধর্ষন, পাক বাহিনীর নিকট বাঙ্গালি নারীদের যৌনদাসী হিসাবে সরবরাহ,ধর্মের দোহাই দিয়ে পাড়ের হাট বন্দরের হিন্দু সমপ্রদায়ের ঘরবাড়ি লুট করেছেন ও নিজে মাথায় বহন করেছেন, দোকান লোটপাট, লুটের মাল বিক্রি সহ নানা পূণ্য কর্মে লিপ্ত ছিলেন। আসুন দেখি তার কি কি মহান কর্ম জাতিকে রক্ত আর অশ্রু দিয়ে বরন করতে হয়েছিল।

খুন সমুহঃ
এই মহান কর্মবীর একসময় গর্ব করতেন তিনি বলেশ্বর নদীর পাড়ের বধ্যভূমিতে ৫০০ জন মুক্তিকামী (তার ভাষায় বেইমান, কাফের) মানুষকে জবাই করে হত্যা করেছেন। সম্পতি গণতদন্ত কমিশন পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গিয়ে সরেজমিনে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে।

১। '৭১-এর ৬ মে পিরোজপুর থানার সামনে থেকে মহান সাইদী বাহিনী তত্কালীন মহকুমা এসডিপিওফয়জুর রহমান আহমেদকে ধরে বলেশ্বর নদীর পাড়ে বধ্যভূমিতে নিয়ে যায়।

২। এই মহান আলেম পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত এসডিও আবদুর রাজ্জাক কে হত্যা করেছেন।

৩। মহান আলেম সাইদীর সহযোগিতায় পিরোজপুর শহর এলাকার হিমাংশু বাবুর ভাই ও আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করা হয়েছে।

৪। পিরোজপুরের মেধাবী ছাত্র গণপতি হালদারকে সাঈদী ধরে নিয়ে গিয়ে বলেশ্বর নদীর পাড়ের বধ্রভূমিতে নিজে জবাই করে হত্যা করেছেন।

৫। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান

৬। স্কুল হেডমাস্টার আব্দুল গাফফার মিয়া,

৭। সমাজসেবী শামসুল হক ফরাজী

৮। অতুল কর্মকার

৯। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তথ্য সরবরাহকারী ভগীরথীকেও এই মহান আলেমের নির্দেশেই মোটরসাইকেলের পিছনে বেঁধে পাঁচ মাইল পথ টেনে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১০।তদানীন্তন ইপিআর সুবেদার আব্দুল আজিজ,

১১। পাড়ের হাট বন্দরের কৃষ্ণকান্ত সাহা

১২। বাণীকান্ত সিকদার,

১৩। তরুণীকান্ত সিকদার

১৪।'৭১-এর ১৬ আগস্ট সাঈদীর নেতৃত্বে গোপাল বণিক নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে পাকসেনাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

১৫। পাড়ের হাটের আনোয়ার হোসেন

১৬। আবু মিয়া,

১৭। নূরুল ইসলাম খান,

১৮। বেনীমাধব সাহা,(মৌসুমী ভৌমিকের গাওয়া সেই বেনীমাধব গানটা কি মনে পড়ে?)

১৯। বিপদ সাহা,

২০। মদন সাহা,

২১। হরি সাধু

২২। নিখিল পাল ও অন্যান্য

২৩। তালুকদার বাড়ির হত্যাযজ্ঞ
আরও নাম না জানা অজস্র শহীদ, অসংখ্য নাম। যাদের অনেকেই শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন, স্বজনেরা অপেক্ষায় থেকেছে আমার ফুফুর মতো আমৃত্যু, তার খোকা যে বাড়ি ফিরবে, ক্লান্ত খোকা!
যেন ফুরোবেনা এই তালিকা। বলেশ্বর নদীল শান্ত জল আজও সেই নির্মমতার স্বাক্ষী হয়ে আছে। যেন শোকবার বইতে না পেরে শুকিয়ে গেছে জলধার্আর ঘাতক প্রিয় মানুষদের খুনে রঞ্জিত করেছে তার দাড়ী!

লুটপাট
১। ৭১ সালের তিনি মদন নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাজারের দোকানঘর ভেঙে তার নিজ বাড়ি নিয়ে গেছেন। মদন বাবুর বাড়ি উঠিয়ে নিয়ে সাঈদী তার শ্বশুর বাড়িতে স্থাপন করেন।

২।পাড়ের হাটের আনোয়ার হোসেন, আবু মিয়া, নূর"ল ইসলাম খান, বেনীমাধব সাহা, বিপদ সাহা, মদন সাহা প্রমুখের বসতবাড়ি, গদিঘর, সম্পত্তি এই দেলোয়ার হোসেন সাঈদী লুট করে নেন বলে তিনি গণতদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন।

৩। পিরোজপুরের নিখিল পালের বাড়ি তুলে সাঈদী এবং তার সহযোগী ঘাতকেরা এনে পাড়ের হাট জামে মসজিদের গনিমতের মাল হিসেবে ব্যবহার করে।

৪।পাড়ের হাট বন্দরে লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, সেকান্দার শিকদার, মওলানা মোসলেহ উদ্দিন, দানেশ মোলা প্রমুখ। এ ছাড়াও সাঈদীকে একটি ঘরের আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যেতে দেখেছিলেন রুহুল আমীন।

নারী ধর্ষন ও পাকিদের হাতে তুলে দেয়া
অনেকেই আজও বেচে আছেন। মৃতের মতোই তাদের ত্যাগে অর্জিত স্বদেশে। মুখ খুলতে চান না সামাজিকতা চিন্তা করে, নষ্ট সমাজ বাচ্চাদের জারজ বলে ডাকবে ভেবে, সমাজ পরিত্যাক্তা হবেন ভেবে। তারপরও দু একজনের নাম তো বলতেই হয় যাদের নিজে ধর্ষন করেছে সাইদী, তারপর হত্যা করেছে। অনেক তথ্য প্রমান আছে এই মহান আলেম নিয়মিত পিরোজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের ধরে এনে তুলে দিয়েছেন তার পিতাদের হাতে। তিনশ জন রাজাকারের একটা বাহিনী ছিল তার। প্রতাপ ছিল জবর।

১। হরি সাধুর মেয়েকে নির্যাতন করেছেন তিনি ও তার বাহিনী।
২। বিপদ সাহার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন।
৩। বিখ্যাত তালুকদার বাড়ি থেকে 20-25 জন মহিলাকে ধরে এনে পাকসেনাদের ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছেন।


তারপরো জামাতে ইস্লামী নিরপরাধ ...
তাহলে লেখক আপনার পিতৃপরিচয় নিয়ে আমরা সন্দেহ করতেই পারি ...

৩৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:১৩

সাদাচোখ বলেছেন:
সব শালা হারামী।

একটা কমেন্টের উত্তর দিল না। জামাতি টাকার দাম নাই নাকি?

৩৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:১৫

মতিউর রহমান মিঠু বলেছেন: হায়রে সোনার বাংলা ! তোমার পবিত্র বুকে নর্দমা'র কিট (ব্লগ পোকা দের মতো) গুলো আজও পরিস্কার করতে আমরা পারি নাই, ক্ষমা কর জননী-জনম দুখিনী বাংলা আমার।




৭১' এর কিছু নষ্ট ভ্রুন থেকে কিছু প্রাণী'র জন্ম হয়েছে, জন্ম পরিচয়হীন এসব প্রাণী

৪০' বছর বেঁচে হয়তো আছে তবে বাঙালী বা মানুষ পরিচয়ে না, দুর্গন্ধ ছড়ানো পোঁকা কিম্বা "" জারজ"" (যেমন ব্লগ পোকা) পরিচয়ে ।

৩৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৩:৩৬

সাগরের বুকে ঢেউ........ বলেছেন: View this link

৩৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৯

কালীদাস বলেছেন: খানকির পোলা, বাল ফালানির জায়গা পাস না? দূরে যায়া মর শুয়রের বাচ্চা!

৩৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:১১

রোবোট বলেছেন: মাইনাস

৩৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:২৪

বল্টু মিয়া বলেছেন: সোনার বাংলায় গিয়া ল্যাদা।পাকিস্তানি জারজ X((

৩৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৩

সাগরের বুকে ঢেউ........ বলেছেন: ++++++++++++++

৪০| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৭

নাসের সরকার বলেছেন: সবাই দেখি চেইত্যা গেছে। আরে, একটু খাড়ান, আসল কথাটা আমি কই। ৭১ সালে জামায়াত পাকিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করছে। বেবাক পাকি মাইরা পাকিস্তানের জনসংখ্যা মাইনাস কইরা ফালাইছে( গোপন সূত্র হতে জানা যায়,জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় পাকিস্তান অহনও জামায়াতের কাছে ঋনী) । আর ৯টা মাস ৩০ লক্ষ মা বোইন তাগোরে রান্দা বান্দা কইরা খাওয়াইছে।
কি, ঠিক কইছিনা?
বিচারতো হইবো যুদ্ধাপরাধীদের, তাইলে জামায়াতের কোন টেনশন নাইক্যা। ভালা কথা, কিন্তু জামায়াতের লোকজন ডরাইতাছে কেন? আফসোস, বড়ই আফসোস।

৪১| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৭

নাসের সরকার বলেছেন: সবাই দেখি চেইত্যা গেছে। আরে, একটু খাড়ান, আসল কথাটা আমি কই। ৭১ সালে জামায়াত পাকিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করছে। বেবাক পাকি মাইরা পাকিস্তানের জনসংখ্যা মাইনাস কইরা ফালাইছে( গোপন সূত্র হতে জানা যায়,জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় পাকিস্তান অহনও জামায়াতের কাছে ঋনী) । আর ৯টা মাস ৩০ লক্ষ মা বোইন তাগোরে রান্দা বান্দা কইরা খাওয়াইছে।
কি, ঠিক কইছিনা?
বিচারতো হইবো যুদ্ধাপরাধীদের, তাইলে জামায়াতের কোন টেনশন নাইক্যা। ভালা কথা, কিন্তু জামায়াতের লোকজন ডরাইতাছে কেন? আফসোস, বড়ই আফসোস।

৪২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৮

কাউসার রুশো বলেছেন: @ব্ল্যাকম্যাজিশিয়ান: প্লিজ গালাগালি করবেন না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস ও জামাতের বেঈমানির ইতিহাস এত ছোট নয় যে গালাগালি করে তর্কে জিততে হবে।
সহমত

ব্লগ পোকোকে ব্যান করা হোক।

৪৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫৪

অবিরাম বাংলার মুখ বলেছেন: কি শয়তান!

৪৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০০

মুরুববী বলেছেন:
@লেখক : এইসব াবাইল্যা পোষ্ট না করলেই না ??

৪৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৩

কাউসার রুশো বলেছেন: ক্র্যাক কমান্ডো আপনি আপনার কমেন্টগুলো পোস্ট আকারে দেন।

৪৬| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:৪৫

মামুন বিদ্রোহী বলেছেন: Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link

৪৭| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: পাকি জাউরার পোস্ট রিপোর্টেড।

৪৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:৪১

সাদা ছায়া বলেছেন: তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা রতোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা রতোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা রতোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা রতোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে তোর মারে চুদ গিয়া কুত্তা চুদা বেশ্যা মাগীর জারজ পুত, আর তোগো বাপ রে পাগলা কুত্তা দিয়া চুদা চুত্ মারানীর পোলা , খাঙ্কি মাগির পুত,
পাকিস্তানে গিয়া তোর মারে চুদ !!!

তোর পাকিস্তানি মাগীর দালাল বাপ আর বেশ্যা মারে তো কুত্তা রাও চুদতে চায় না । বাংলাদেশে জন্ম নিসিস কেন খানকির মাগীর পোলা ?? গোলাম আজমের গোয়া দেখলে তোর ভাল লাগে ? পাকিস্তানে গিয়ে

৪৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:৪২

অরণ্য সৌভিক বলেছেন: সাদা ছায়া-এর সাথে একমত

৫০| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:৪২

রাতমজুর বলেছেন: টেনশন নাই, আগে পালের গোদা কয়টারে ঝুলামু, তারপর তোর মতন ছানা গুলারে। যে কয়দিন আছে বাকী প্রলাপ বকে যা।

৫১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৫৬

মামুন বিদ্রোহী বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.