নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুল বানানে ভরা ব্লগ

বোকামানুষ

বিশ্বাস করে বারবার ঠকি তাই নিজেকে মাঝে মাঝে খুব বোকা মনে হয় কেন বারবার একি ভুল করি.........।

বোকামানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কিছু কবিতা পর্ব ৬........ হেলাল হাফিজ

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৩

দুঃসময়ে আমার যৌবন



মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে

এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই,

উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো

আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ

শুধু যদি নারীকে সাজাই।







অমিমাংসিত সন্ধি



তোমাকে শুধু তোমাকে চাই, পাবো?

পাই বা না পাই এক জীবনে তোমার কাছেই যাবো।



ইচ্ছে হলে দেখতে দিও, দেখো

হাত বাড়িয়ে হাত চেয়েছি রাখতে দিও, রেখো



অপূণতায় নষ্টে-কষ্টে গেলো

এতোটা কাল, আজকে যদি মাতাল জোয়ার এলো

এসো দু'জন প্লাবিত হই প্রেমে

নিরাভরণ সখ্য হবে যুগল-স্নানে নেমে।



থাকবো ব্যাকুল শর্তবিহীন নত

পরস্পরের বুকের কাছে মুগ্ধ অভিভূত।









মানবানল



আগুন আর কতোটুকু পোড়ে ?

সীমাবদ্ধ ক্ষয় তার সীমিত বিনাশ,

মানুষের মতো আর অতো নয় আগুনের সোনালি সন্ত্রাস।



আগুন পোড়ালে তবু কিছু রাখে

কিছু থাকে,

হোক না তা শ্যামল রঙ ছাই,

মানুষে পোড়ালে আর কিছুই রাখে না

কিচ্ছু থাকে না,

খাঁ খাঁ বিরান, আমার কিছু নাই।









ব্যবধান



অতো বেশ নিকটে এসো না, তুমি পুড়ে যাবে,

কিছুটা আড়াল কিছু ব্যবধান থাকা খুব ভালো।

বিদ্যুত সুপারিবাহী দু'টি তার

বিজ্ঞানসম্মত ভাবে যতোটুকু দূরে থাকে

তুমি ঠিক ততোখানি নিরাপদ কাছাকাছি থেকো,

সমূহ বিপদ হবে এর বেশী নিকটে এসো না।



মানুষ গিয়েছে ভূলে কী কী তার মৌল উপাদান।

তাদের ভেতরে আজ বৃক্ষের মতন সেই সহনশীলতা নেই,

ধ্রুপদী স্নিগ্ধতা নেই, নদীর মৌনতা নিয়ে মুগ্ধ মানুষ

কল্যাণের দিকে আর প্রবাহিত হয় না এখন।



আজকাল অধঃপতনের দিকে সুপারসনিক গতি মানুষের

সঙ্গত সীমানা ছেড়ে অদ্ভুত নগরে যেন হিজরতের প্রতিযোগিতা।



তবু তুমি কাছে যেতে চাও? কার কাছে যাবে?

পশু-পাখিদের কিছু নিতে তুমুল উল্লাসে যেন

বসবাস করে আজ কুলীন মানুষ।









ফেরীঅলা



কষ্ট নেবে কষ্ট

হরেক রকম কষ্ট আছে

কষ্ট নেবে কষ্ট !

লাল কষ্ট নীল কষ্ট কাঁচা হলুদ রঙের কষ্ট

পাথর চাপা সবুজ ঘাসের সাদা কষ্ট,

আলোর মাঝে কালোর কষ্ট

‘মালটি-কালার' কষ্ট আছে

কষ্ট নেবে কষ্ট ।

ঘরের কষ্ট পরেরর কষ্ট পাখি এবং পাতার কষ্ট

দাড়ির কষ্ট

চোখের বুকের নখের কষ্ট,

একটি মানুষ খুব নীরবে নষ্ট হবার কষ্ট আছে

কষ্ট নেবে কষ্ট ।

প্রেমের কষ্ট ঘৃণার কষ্ট নদী এবং নারীর কষ্ট

অনাদর ও অবহেলার তুমুল কষ্ট,

ভুল রমণী ভালোবাসার

ভুল নেতাদের জনসভার

হাইড্রোজনে দুইটি জোকার নষ্ট হবার কষ্ট আছে

কষ্ট নেবে কষ্ট ।

দিনের কষ্ট রাতের কষ্ট

পথের এবং পায়ের কষ্ট

অসাধারণ করুণ চারু কষ্ট ফেরীঅলার কষ্ট

কষ্ট নেবে কষ্ট ।

আর কে দেবে আমি ছাড়া

আসল শোভন কষ্ট,

কার পুড়েছে জন্ম থেকে কপাল এমন

আমার মত ক'জনের আর

সব হয়েছে নষ্ট,

আর কে দেবে আমার মতো হৃষ্টপুষ্ট কষ্ট ।









হৃদয়ের ঋণ



আমার জীবন ভালোবাসাহীন গেলে

কলঙ্ক হবে কলঙ্ক হবে তোর,

খুব সামান্য হৃদয়ের ঋণ পেলে

বেদনাকে নিয়ে সচ্ছলতার ঘর



বাঁধবো নিমেষে। শর্তবিহীন হাত

গচ্ছিত রেখে লাজুক দু'হাতে আমি

কাটাবো উজাড় যুগলবন্দী হাত

অযুত স্বপ্নে। শুনেছি জীবন দামী,



একবার আসে, তাকে ভালোবেসে যদি

অমার্জনীয় অপরাধ হয় হোক,

ইতিহাস দেবে অমরতা নিরবধি

আয় মেয়ে গড়ি চারু আনন্দলোক।



দেখবো দেখাবো পরস্পরকে খুলে

যতো সুখ আর দুঃখের সব দাগ,

আয় না পাষাণী একবার পথ ভুলে

পরীক্ষা হোক কার কতো অনুরাগ।









যাতায়াত



কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো।

কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না

রাত কাটে তো ভোর দেখি না

কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না কেউ জানেনা।

নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম

পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক

দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও,

কেই বলেনি ভালো থেকো সুখেই থেকো

যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি

মাথার কসম আবার এসো

জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো

শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,

চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি

বললো না কেউ তরুন তাপস এই নে চারু শীতল কলস।

লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম।

ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়

আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই

দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন।

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।











নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়




এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়

এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়

মিছিলের সব হাত

কন্ঠ

পা এক নয় ।



সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,

কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার ।

কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার

শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে

অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে

অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে,

কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে

কোনো কোনো প্রেম আছে প্রেমিককে খুনী হতে হয় ।



যদি কেউ ভালোবেসে খুনী হতে চান

তাই হয়ে যান

উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায় ।



এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়

এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় ।









ইচ্ছে ছিলো



ইচ্ছে ছিলো তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো

ইচ্ছে ছিলো তোমাকেই সুখের পতাকা করে

শান্তির কপোত করে হৃদয়ে উড়াবো।



ইচ্ছে ছিলো সুনিপুণ মেকআপ-ম্যানের মতো

সূর্যালোকে কেবল সাজাবো, তিমিরের সারাবেলা

পৌরুষের প্রেম দিয়ে তোমাকে বাজাবো, আহা তুমুল বাজাবো।



ইচ্ছে ছিলো নদীর বক্ষ থেকে জলে জলে শব্দ তুলে

রাখবো তোমার লাজুক চঞ্চুতে,

জন্মাবধি আমার শীতল চোখ

তাপ নেবে তোমার দু'চোখে।



ইচ্ছে ছিলো রাজা হবো

তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো,

আজ দেখি রাজ্য আছে

রাজা আছে

ইচ্ছে আছে,

শুধু তুমি অন্য ঘরে।









তুমি ডাক দিলে



একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল,

কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার।

তুমি ডাক দিলে



নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে

শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো

পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব

পথে এতোটুকু দেরিও করবো না।

তুমি ডাক দিলে

সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো,

তুমি রাজি হলে

যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো।



একবার আমন্রণ পেলে

সব কিছু ফেলে

তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল,

অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে

লোকালয়ে থাকবো না আর

আমরণ পাখি হয়ে যাবো, -খাবো মৌনতা তোমার









প্রস্থান



এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পএ দিও



এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালীর তাল পাখাটা

খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পএ দিও।

ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত

ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পএ দিও।

কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে

কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে

পএ দিও, পএ দিও।



আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেও, আপত্তি নেই।

গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?

আমি না হয় ভালবাসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,

নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে

পাঁচ দুপুরে নির্জনতা খুন করেছি, কি আসে যায়?

এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,

এক মানবী কতোটা বা কষ্ট দেবে!









৫ম পর্ব

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৭

মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: বরাবরের মতোই ভালো লাগলো।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫০

বোকামানুষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

আমার ব্লগে স্বাগতম

ভাল থাকবেন সব সময়

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৫১

বৃতি বলেছেন: হেলাল হাফিজের অন্যান্য কবিতাগুলোও কি শেয়ার করতে পারবেন?

শো-কেসে রাখলাম। ধন্যবাদ জানবেন।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:২৫

বোকামানুষ বলেছেন: হেলাল হাফিজ আমার প্রিয় কবিদের একজন

''যে জলে আগুন জ্বলে'' বইয়ের বেশিরভাগ কবিতাই ভাল লাগে

চেষ্টা পরবর্তী কোন পর্বে আবার উনার কবিতা দিতে


মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

ভাল থাকবেন

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৪২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


+++

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৮

বোকামানুষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য

ভাল থাকবেন সব সময়

৪| ১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ১:০৪

এহসান সাবির বলেছেন: ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ তে শিমুল মোস্তফার একক কবিতা আবৃতির আয়োজন ছিল ধানমন্ডি রবীন্দ্র শরবরে, ওখানে প্রথম আমি সরাসরি প্রিয় কবি হেলাল হাফিজ দেখি।




অঃটঃ কাল ইনশাল্লাহ আপডেট দেব গাছ টা নিয়ে।

১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭

বোকামানুষ বলেছেন: প্রিয় কবিকে দেখে নিশ্চয়ই অনেক ভাল লাগছে একটা মাত্র কবিতার বই নিয়ে কেউ এত জনপ্রিয় হতে পারে উনি না থাকলে জানা যেত না


ঠিক আছে ভাইয়া গাছ ভাল করে দেখে ফুলের অনেক ছবি তুলে আনবেন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.