নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিশির

ব্যতিক্রমি কিছু লেখাই আমার উদ্দেশ্য

শিশির চক্রবর্তী

শিশির চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিশ্বে উদাহরণযোগ্য

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

http://www.shikkhabarta.com

শিশির চক্রাবর্তী|: শিক্ষা ব্যক্তির উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন এবং দেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর সেই শিক্ষার ভিত তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা। স্বাধীনতার ৪২ বছরে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দৌড়ে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের মডেল দেশে পরিণত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাক্ষিত লক্ষ্য পূরণের পথ খুব বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল এডজয়েন্ট গেটাচিউ বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সমতা, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই দেয়া, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ইত্যাদি বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে উদাহরণযোগ্য দেশে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের প্রাথমিক শিক্ষার বয়সী সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য। না পাঠালে আইন অনুসারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। সরকারও বাধ্য ৬-১১ বছর বয়সী সব শিশুর শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিতে।

বিশ বছরে অগ্রগতি : গত বিশ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা একটি দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছেছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সবার জন্য শিক্ষা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিটমেন্টের কারণে সরকারকে এ সেক্টরে বিশেষ নজর দিতে হয়েছে। দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করতে, বিশেষত দরিদ্র পরিবারের ঝরে পড়া ছেলেমেয়েদের পুনরায় শিক্ষার ব্যবস্থা

করতে এনজিওরাও এ সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাছাড়া এ সময়কালে বিদেশি সহায়তার সিংহভাগই প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতা ঈর্ষণীয় স্থানে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি, প্রাথমিক-মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা অর্জন, শিক্ষাবর্ষের প্রথম ক্লাসে পাঠ্যবই প্রদান ও ক্লাস শুরুসহ নানা ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার সর্বোচ্চ।

ঝরে পড়ার হার আস্তে আস্তে কমছে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের প্রভাব আস্তে আস্তে মাধ্যমিক শিক্ষাসহ অন্য স্তরগুলোতেও পড়ছে।

অগ্রগতির চিত্র : ১৯৯১ সালে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১ ভাগ। কিন্তু ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২ ভাগ এবং ২০১২ সালে ৯৯ দশমিক ৪৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ৪০ বছরে বাংলাদেশে মেয়ে শিক্ষার্থীর প্রাথমিকে ভর্তির হার ৩২ থেকে ৫১ ভাগ এবং মাধ্যমিকে ১৮ থেকে ৫৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে। গত দুদশক ধরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ২০১২ সালে ২.৯ মিলিয়ন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা লক্ষাধিক। তার ওপর স্কুল না থাকা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন আরও এক হাজার ৫০০ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারের সহায়তায় পাবলিক-প্রাইভেট অংশগ্রহণে বেসরকারি সংস্থা র্ব্যাক আট লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে স্কুলে ভর্তি করেছে। সাত দশমিক আট মিলিয়ন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৯৯১ সালের ৫৭ ভাগ থেকে ২০১১ সালে ২৯ দশমিক সাত ভাগে নেমে এসেছে।



গুণগত মান : এদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান, সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা, ৫ম ও ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা চালু করা, সর্বস্তরে আইটির ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার এ পর্যন্ত প্রাথমিকে ৭১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছে। আগামী বছর থেকে সব বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে ছোট শিশুপার্কও করা হচ্ছে।



আইজিএসের প্রতিবেদন : আইজিএসের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১০-১১) প্রতিবেদনের একটি অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বছর দশেক আগেও যে পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে মাধ্যমিকে ভর্তি হতো, সেই সংখ্যা এখন বহুগুণে বেড়েছে। ফলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।



অনগ্রসরতা : এসব অগ্রগতির পরও কিছু অনগ্রসরতা থেকে গেছে। দেশে ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই । সরকার বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৭৫০ কোটি টাকায় ১৫শ গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।



বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষা : সরকারও বাৎসরিক বাজেটে শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং বাজেটের ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং বাজেটের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।



প্রাথমিক অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত কর্মসূচি প্রণয়ন, এ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করা, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞান-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নীতি প্রণয়ন জরুরি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। সর্বোপরি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবস¤পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।





শিক্ষা ব্যক্তির উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন এবং দেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর সেই শিক্ষার ভিত তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা। স্বাধীনতার ৪২ বছরে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দৌড়ে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের মডেল দেশে পরিণত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাক্ষিত লক্ষ্য পূরণের পথ খুব বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল এডজয়েন্ট গেটাচিউ বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সমতা, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই দেয়া, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ইত্যাদি বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে উদাহরণযোগ্য দেশে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের প্রাথমিক শিক্ষার বয়সী সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য। না পাঠালে আইন অনুসারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। সরকারও বাধ্য ৬-১১ বছর বয়সী সব শিশুর শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিতে।

বিশ বছরে অগ্রগতি : গত বিশ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা একটি দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছেছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সবার জন্য শিক্ষা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিটমেন্টের কারণে সরকারকে এ সেক্টরে বিশেষ নজর দিতে হয়েছে। দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করতে, বিশেষত দরিদ্র পরিবারের ঝরে পড়া ছেলেমেয়েদের পুনরায় শিক্ষার ব্যবস্থা

করতে এনজিওরাও এ সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাছাড়া এ সময়কালে বিদেশি সহায়তার সিংহভাগই প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতা ঈর্ষণীয় স্থানে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি, প্রাথমিক-মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা অর্জন, শিক্ষাবর্ষের প্রথম ক্লাসে পাঠ্যবই প্রদান ও ক্লাস শুরুসহ নানা ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার সর্বোচ্চ।

ঝরে পড়ার হার আস্তে আস্তে কমছে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের প্রভাব আস্তে আস্তে মাধ্যমিক শিক্ষাসহ অন্য স্তরগুলোতেও পড়ছে।

অগ্রগতির চিত্র : ১৯৯১ সালে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১ ভাগ। কিন্তু ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২ ভাগ এবং ২০১২ সালে ৯৯ দশমিক ৪৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ৪০ বছরে বাংলাদেশে মেয়ে শিক্ষার্থীর প্রাথমিকে ভর্তির হার ৩২ থেকে ৫১ ভাগ এবং মাধ্যমিকে ১৮ থেকে ৫৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে। গত দুদশক ধরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ২০১২ সালে ২.৯ মিলিয়ন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা লক্ষাধিক। তার ওপর স্কুল না থাকা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন আরও এক হাজার ৫০০ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারের সহায়তায় পাবলিক-প্রাইভেট অংশগ্রহণে বেসরকারি সংস্থা র্ব্যাক আট লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে স্কুলে ভর্তি করেছে। সাত দশমিক আট মিলিয়ন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৯৯১ সালের ৫৭ ভাগ থেকে ২০১১ সালে ২৯ দশমিক সাত ভাগে নেমে এসেছে।



গুণগত মান : এদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান, সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা, ৫ম ও ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা চালু করা, সর্বস্তরে আইটির ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার এ পর্যন্ত প্রাথমিকে ৭১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছে। আগামী বছর থেকে সব বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে ছোট শিশুপার্কও করা হচ্ছে।



আইজিএসের প্রতিবেদন : আইজিএসের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১০-১১) প্রতিবেদনের একটি অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বছর দশেক আগেও যে পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে মাধ্যমিকে ভর্তি হতো, সেই সংখ্যা এখন বহুগুণে বেড়েছে। ফলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।



অনগ্রসরতা : এসব অগ্রগতির পরও কিছু অনগ্রসরতা থেকে গেছে। দেশে ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই । সরকার বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৭৫০ কোটি টাকায় ১৫শ গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।



বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষা : সরকারও বাৎসরিক বাজেটে শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং বাজেটের ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং বাজেটের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।



প্রাথমিক অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত কর্মসূচি প্রণয়ন, এ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করা, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞান-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নীতি প্রণয়ন জরুরি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। সর্বোপরি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবস¤পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।



শিশির চক্রাবর্তী|:

শিক্ষা ব্যক্তির উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন এবং দেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর সেই শিক্ষার ভিত তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা। স্বাধীনতার ৪২ বছরে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দৌড়ে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের মডেল দেশে পরিণত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাক্ষিত লক্ষ্য পূরণের পথ খুব বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল এডজয়েন্ট গেটাচিউ বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সমতা, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই দেয়া, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ইত্যাদি বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে উদাহরণযোগ্য দেশে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের প্রাথমিক শিক্ষার বয়সী সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য। না পাঠালে আইন অনুসারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। সরকারও বাধ্য ৬-১১ বছর বয়সী সব শিশুর শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিতে।

বিশ বছরে অগ্রগতি : গত বিশ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা একটি দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছেছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সবার জন্য শিক্ষা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিটমেন্টের কারণে সরকারকে এ সেক্টরে বিশেষ নজর দিতে হয়েছে। দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করতে, বিশেষত দরিদ্র পরিবারের ঝরে পড়া ছেলেমেয়েদের পুনরায় শিক্ষার ব্যবস্থা

করতে এনজিওরাও এ সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাছাড়া এ সময়কালে বিদেশি সহায়তার সিংহভাগই প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতা ঈর্ষণীয় স্থানে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি, প্রাথমিক-মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা অর্জন, শিক্ষাবর্ষের প্রথম ক্লাসে পাঠ্যবই প্রদান ও ক্লাস শুরুসহ নানা ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার সর্বোচ্চ।

ঝরে পড়ার হার আস্তে আস্তে কমছে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের প্রভাব আস্তে আস্তে মাধ্যমিক শিক্ষাসহ অন্য স্তরগুলোতেও পড়ছে।

অগ্রগতির চিত্র : ১৯৯১ সালে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১ ভাগ। কিন্তু ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২ ভাগ এবং ২০১২ সালে ৯৯ দশমিক ৪৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ৪০ বছরে বাংলাদেশে মেয়ে শিক্ষার্থীর প্রাথমিকে ভর্তির হার ৩২ থেকে ৫১ ভাগ এবং মাধ্যমিকে ১৮ থেকে ৫৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে। গত দুদশক ধরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ২০১২ সালে ২.৯ মিলিয়ন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা লক্ষাধিক। তার ওপর স্কুল না থাকা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন আরও এক হাজার ৫০০ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারের সহায়তায় পাবলিক-প্রাইভেট অংশগ্রহণে বেসরকারি সংস্থা র্ব্যাক আট লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে স্কুলে ভর্তি করেছে। সাত দশমিক আট মিলিয়ন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৯৯১ সালের ৫৭ ভাগ থেকে ২০১১ সালে ২৯ দশমিক সাত ভাগে নেমে এসেছে।



গুণগত মান : এদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান, সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা, ৫ম ও ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা চালু করা, সর্বস্তরে আইটির ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার এ পর্যন্ত প্রাথমিকে ৭১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছে। আগামী বছর থেকে সব বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে ছোট শিশুপার্কও করা হচ্ছে।



আইজিএসের প্রতিবেদন : আইজিএসের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১০-১১) প্রতিবেদনের একটি অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বছর দশেক আগেও যে পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে মাধ্যমিকে ভর্তি হতো, সেই সংখ্যা এখন বহুগুণে বেড়েছে। ফলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।



অনগ্রসরতা : এসব অগ্রগতির পরও কিছু অনগ্রসরতা থেকে গেছে। দেশে ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই । সরকার বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৭৫০ কোটি টাকায় ১৫শ গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।



বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষা : সরকারও বাৎসরিক বাজেটে শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং বাজেটের ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং বাজেটের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।



প্রাথমিক অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত কর্মসূচি প্রণয়ন, এ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করা, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞান-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নীতি প্রণয়ন জরুরি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। সর্বোপরি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবস¤পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।





শিক্ষা ব্যক্তির উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন এবং দেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর সেই শিক্ষার ভিত তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা। স্বাধীনতার ৪২ বছরে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দৌড়ে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের মডেল দেশে পরিণত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাক্ষিত লক্ষ্য পূরণের পথ খুব বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল এডজয়েন্ট গেটাচিউ বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সমতা, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই দেয়া, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ইত্যাদি বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে উদাহরণযোগ্য দেশে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের প্রাথমিক শিক্ষার বয়সী সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য। না পাঠালে আইন অনুসারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। সরকারও বাধ্য ৬-১১ বছর বয়সী সব শিশুর শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিতে।

বিশ বছরে অগ্রগতি : গত বিশ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা একটি দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছেছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সবার জন্য শিক্ষা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিটমেন্টের কারণে সরকারকে এ সেক্টরে বিশেষ নজর দিতে হয়েছে। দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করতে, বিশেষত দরিদ্র পরিবারের ঝরে পড়া ছেলেমেয়েদের পুনরায় শিক্ষার ব্যবস্থা

করতে এনজিওরাও এ সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তাছাড়া এ সময়কালে বিদেশি সহায়তার সিংহভাগই প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতা ঈর্ষণীয় স্থানে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি, প্রাথমিক-মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা অর্জন, শিক্ষাবর্ষের প্রথম ক্লাসে পাঠ্যবই প্রদান ও ক্লাস শুরুসহ নানা ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার সর্বোচ্চ।

ঝরে পড়ার হার আস্তে আস্তে কমছে। প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের প্রভাব আস্তে আস্তে মাধ্যমিক শিক্ষাসহ অন্য স্তরগুলোতেও পড়ছে।

অগ্রগতির চিত্র : ১৯৯১ সালে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১ ভাগ। কিন্তু ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২ ভাগ এবং ২০১২ সালে ৯৯ দশমিক ৪৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ৪০ বছরে বাংলাদেশে মেয়ে শিক্ষার্থীর প্রাথমিকে ভর্তির হার ৩২ থেকে ৫১ ভাগ এবং মাধ্যমিকে ১৮ থেকে ৫৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে। গত দুদশক ধরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ২০১২ সালে ২.৯ মিলিয়ন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা লক্ষাধিক। তার ওপর স্কুল না থাকা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন আরও এক হাজার ৫০০ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারের সহায়তায় পাবলিক-প্রাইভেট অংশগ্রহণে বেসরকারি সংস্থা র্ব্যাক আট লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে স্কুলে ভর্তি করেছে। সাত দশমিক আট মিলিয়ন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৯৯১ সালের ৫৭ ভাগ থেকে ২০১১ সালে ২৯ দশমিক সাত ভাগে নেমে এসেছে।



গুণগত মান : এদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান, সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা, ৫ম ও ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা চালু করা, সর্বস্তরে আইটির ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার এ পর্যন্ত প্রাথমিকে ৭১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করেছে। আগামী বছর থেকে সব বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে ছোট শিশুপার্কও করা হচ্ছে।



আইজিএসের প্রতিবেদন : আইজিএসের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১০-১১) প্রতিবেদনের একটি অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বছর দশেক আগেও যে পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে মাধ্যমিকে ভর্তি হতো, সেই সংখ্যা এখন বহুগুণে বেড়েছে। ফলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।



অনগ্রসরতা : এসব অগ্রগতির পরও কিছু অনগ্রসরতা থেকে গেছে। দেশে ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই । সরকার বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৭৫০ কোটি টাকায় ১৫শ গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।



বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষা : সরকারও বাৎসরিক বাজেটে শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং বাজেটের ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং বাজেটের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।



প্রাথমিক অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত কর্মসূচি প্রণয়ন, এ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করা, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞান-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নীতি প্রণয়ন জরুরি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। সর্বোপরি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবস¤পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.