![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নামাজ পড়ে এসে খেয়ে দেয়ে আয়েশ করে ল্যাপটপ নিয়ে কেবলই বসেছি।ফেবু ওপেন করেই একটা ইভেন্ট দেখলাম "JUSTICE FOR DR.SAJIA AFRIN EVA"।ওখানে যাবার ইচ্ছা আগে থেকেই ছিল।কিন্তু ঘড়িতে তখন ৩.১০ মিনিট।ইভেন্টটি তে একটি মোবাইল নম্বর ছিল শান্ত ভাইয়ার।কল দিয়ে বললাম ভাইয়া এখন আসব কি না,কারন আমি আজিমপুর ছিলাম।তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলাম।টিএসসি তে গিয়ে দেখলাম বিভিন্ন বয়সের কিছু মানুষ জড় হয়েছে সাজিয়া আপুর খুনির শাস্তির দাবীতে।আমিও মিশে গেলাম।তবে হতাশ হলাম উপস্থিতি দেখে।চিকিৎসক সমাচার,মেডিকেলের টুকরো খবর ইত্যাদি পেজে হাজার হাজার লাইকার।অথচ মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ জনের মত মানুষ এতে অংশ নেন।এতে একটি মূল্যবান একটা উপলব্ধিও হল।নগরায়নের যুগে মানুষ বড় বেশি যান্ত্রিক হয়ে উঠছে।হয়ে উঠছে খুব আত্মকেন্দ্রিক।অন্যদের কি হল তা নিয়ে ভাববার সময় নেই।কেউ কি একবার চিন্তা করে না আজ সাজিয়া আপুর স্থলে যদি আমি হতাম তবে আমার পরিবারবর্গ বিচার না পেয়ে কি করত?তখন আমার কথা কেউ ভাবত না।এটা খুব ভাল অনুভূতি নয়।
আসলে আমরা ডাক্তাররা ড্যাব স্বাচিপের দালালি,প্রেশার দিয়ে কিছু করালে করব এই টাইপের চিন্তার চক্রে আটকে গেছি।নিজের মত করে প্র্যাকটিস,আর টাকা কামানোর যন্ত্র হতে পেরেই আমরা মহাখুশি।নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায় কে।নিজে একবার পাঁকে পড়লে দেখি নিজের পাশে কেউ নাই।তবুও শিক্ষা হয় না।শুধুমাত্র ডাক্তার সমাজই চূড়ান্ত বিভাজিত যেখানে প্রফেশনাল একাত্ববোধ সম্পূর্ন অনুপস্থিত।
এরপরও আশার আলো আছে।প্রেসক্লাবের কাছে যখন মানববন্ধনে দাড়িয়ে ছিলাম তখন দেখলাম সৌম্য দর্শন একজন মহিলা।পরিচিত হয়ে জানতে পারলাম উনি কার্ডিওলজির একজন প্রফেসর,ডা হাসনা বানু।উনি এসেছেন মানবব্ন্ধনের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করতে উনার মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে ।তখন ছোটবেলার একটা গল্প মনে পড়ল।গ্রামের শেষ মাথায় বসবাসকারী একজন হতদরিদ্র কৃষক তার ক্ষুদ্র একখন্ড জমি চাষ করে অনেক কষ্টে সংসার চালাত।প্রতিদিন চাষ শেষে জমির শেষপ্রান্তে থাকা একটি পাহাড় কাটত।লোকে তাকে পাগল বলত।বলত বোকামানুষটার কান্ড দেখো।পাহাড় কেটে শেষ করা কি সম্ভব।লোকটি মারা যাবার পর তার ছেলেরাও বাবার অভ্যাস বজায় রেখেছিল।তারাও পাহাড়টি কাটত।অবশেষে লোকটির নাতিরা পাহাড়টি কাটা শেষ করল এবং পাহাড়ের ওপাশে থাকা বিপুল জমির মালিক হল এবং তাদের দারিদ্রতার অবসান ঘটল।গল্পটি রূপক সন্দেহ নেই।কিন্তু এটির বিশাল একটি শিক্ষনীয় দিক আছে।ফেসবুকের একটি গ্রুপের আহবানে ১৫০-২০০ জন চিকিৎসাপরিবার একত্রিত হওয়া কম নয়।এ যেন পাহাড় কাটবার মতই কাজ।এতে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে আমরা যারা নতুন ডাক্তার তারা হয়ত দলমত নির্বিশেষে যে কোন ডাক্তারদের প্রতি অন্যায় বা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একই প্লাটফর্মে দাড়িয়ে প্রতিবাদ করতে পারব।এতে আমরা অন্তত এইটুকু নিশ্চয়তা পাব যে আমি অত্যাচারিত হলে আমার পাশে পুরো চিকিৎসক সমাজ আছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে।সেদিন বুঝি খুব দূরে নয়।কারন ফেসবুক ব্লগের মত বিকল্প মিডিয়াতে শুভাশীষ চয়ন,মুহিব নীরব এঁদের মত অসাধারন চিকিৎসক কাম অনলাইন এক্টিভিস্ট আছেন যারা চিকিৎসকদের হয়ে নিয়মিত কথা বলে যাচ্ছেন।তাই আমরা সুদিন এর আশা করতেই পারি।
©somewhere in net ltd.