![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল(৩/১১/২০১৪) তারিখে আমি ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে রোগী দেখছিলাম।হটাৎ ইনডোরে ভর্তি একটা বাচ্চার মা এসে আমার কাছে অভিযোগ করল যে স্যার আমার বাচ্চাকে সিস্টার রা দুধ দিচ্ছে না।এই বাচ্চাটার মা না থাকায় এই মহিলা লালন পালন করছে,তাই তার আগেরদিন সরকারী সাপ্লাই ডায়েট এফ-৭৫ এর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।বাচ্চাটা সিভিয়ার একিউট ম্যাল নিউট্রশন রোগে হাসপাতালে ভর্তি ছিল।তো আমি বাচ্চার মাকে আশ্বস্ত করলাম যে আপনি উপরে যান আমি আসছি।টারপর আউটডোরে রোগী দেখা শেষ করে উপরে যেতেই ইনচার্জ সিস্টার এর সাথে দেখা।উনি বললেন আরেকটা বাচ্চা খারাপ আছে সেটা দেখে দিতে।সেটা দেখে উনাকে বললাম স্যাম (সিভিয়ার একিউট ম্যাল নিউট্রশন) এর বাচ্চাটা নাকি দুধ পাচ্ছে না সিস্টার।তখন উনি বললেন আগের সিস্টারের কাছে চাবি না থাকায় দিতে দেরী হয়েছে,কিন্তু এখন দেয়া হয়েছে।তারপর ভাবলাম উপরে যখন এসেছি বাচ্চাটাকে একবার দেখে যাই,তো ওয়ার্ডে গিয়ে স্যাম কর্নারে গিয়ে দেখি আরেক সিস্টারের সহায়তায় মা বাচ্চাটাকে দুধ খাওয়াচ্ছে।আমাকে দেখে সিস্টার বলল স্যার এটা খাওয়াবার নিয়মটাতো জানি না।তখন আমি সিস্টার ও বাচ্চার মা কে ডায়েট এফ-৭৫ কিভাবে খাওয়াতে হয় এটা বোঝাচ্ছিলাম।হটাৎ পাশ থেকে একটা লোক বাচ্চাটার মা কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করল আমার সামনে।এরকম করে যে বাচ্চার আসল মা কই,তুই কে ,বাচ্চা কাদে কেন,বাচ্চাপালন করতে পারিস না তো নিছিস কেন..ইত্যাদি,মহিলাটি কাদো কাদো হয়ে বলছে আপনি এরকম করছেন কেন,এসব বলছেন কেন।এদিকে আমার ব্যবস্হাপত্রদেয়া চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হওয়ায় আমি লোকটিকে বললাম আপনি কে?ওমনি সে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে আমার কলার চেপে ধরে ধাক্কাদিয়ে রোগীর বেডে ফেলে দিল আর বলতে লাগল আমি কে মানে?তুই কে?আমাকে চিনিস না,এই হাসপাতাল আমার বলে চড় মারতে লাগল।তখন আমি বললাম আমি এই হাসপাতালের ডাক্তার,সিস্টার রোগীরলোক সবাই বলতে লাগল এটা আমাদের ডাক্তার,তখন সে বলল ডাক্তার তো কি হয়েছে,তখন ওয়ার্ডের কিছু লোকের সাহায্যে আমি নিচে নেমে এলাম এবং কলিগদের ও অফিসের লোকদের ডাকলাম।কয়েকজন মিলে ওয়ার্ডের কলাপসিবল গেট তালা দিয়ে দিল।এরপা আমি উপজেলা চেয়্যারমান,টিএইচও,লোকাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান,ইউএনও,সিভিল সার্জন সবাইকে কল দিলাম।উপজেলা চেয়্যারমান ২ মিনিটের ভেতর পুলিশ পাঠালেন।পুলিশ এসে ওকে থানায় নিয়ে গেল।এরপর আমি লোকাল প্রেসক্লাবের সভাপতিকে কল দিয়ে নিয়ে এসে পুরো ঘটনা তাকে বলে তার সাহায্য চাইলাম।এর মধ্যে আক্রমনকারীর পরিচয় পেলাম,সে স্হানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির ছেলে এবং চিহ্নিত বখাটে ও মাদকসেবী।তার ভাইও বখাটে এবং মাদক মামলায় জেলে আছে ।সাংবাদিকরা খুব সাহায্য করল।তারাই পরামার্শ দিল একটা মানব বন্ধন করতে ও ছবি উঠাল।এরপর উপজেলা চেয়্যারমান,পৌরসভা চেয়্যারমান,ইউনিয়ন পরিষদ চেয়্যারমান ও আসামীর বাবা লোকজন সহ এল মীমাংসা করবার জন্য।তারা প্রথমে এলাকাবাসীর পক্ষথেকে মাফ চাইল এবং ঘটনা শুনল।তারপর তারা আসামীর বাবাকে বলল আপনি বলেন কি করা যায়।তখন সে সব শুনে বললো এদেরতো দোষ নেই আপনারা যা ভাল মনেকরেন করেন।তখন উপজেলা চেয়্যারম্যান বললো আপনাদের লিখিত অভিযোগ করার দরকার নেই আমরা বিচার করব আইনী অনুসারে।তখন আমি বললাম যে স্যার আমরা যেহেতু অফিসিয়াল লোক সেহেতু আমরা অফিসিয়াল ভাবে এগুবো।তখন তারা রাজি হল এবং চলে গেল।এরপর ডেখি আমাদের টাইপিস্ট নেই,চলে গেছে।মানে ওরা চাচ্ছিল যেন কোন লিখিত ডকুমেন্ট না থাকে ।তবুও আমাদের অক্লান্ত চেষ্টায় ওসি বরাবর একটা লিখিত অভিযোগ তৈরী করে ইউএনও স্যারের সাথে দেখা করলাম।উনি বললেন আমিতো ভাবলাম আপনারা অভিযোগই করবেন না।এজন্য উনি দেখি মোবাইল কোর্ট বসিয়েছেন এবং ওসি সাহেব মাদক মামলায় সাজাদেবার জন্য প্রায় ব্যবস্থা করে ফেলেছেন যে ডাক্তাররা অভিযোগ না করলেও ওকে ছাড়ব না।তারপর ওসি সাহেব সরকারী কাজে বাধা দান ও লান্ছিত করবার অভিযোগ গঠন করে রাতেই পাবনা চালান দেবার ব্যবস্থা করলেন।এখানকার ইউএনও স্যার অসাধারন ভাল মানুষ,ওসি স্যারও খুবই সাহায্য করেছেন।সবচেয়ে মজার ব্যপার হল আমাদের টিএইচও স্যার ছুটিতে ঢাকায় ছিলেন এবং আমদের কোন সিনিয়র ডাক্তার নেই।সবাই ৩৩ বিসিএস এর নবীন ডাক্তার। বিএমএর সাথেও যোগাযোগ করতে পারি নি বা তারাও ফোন দেয় নি।আজকে আমি নিজে গিয়ে সভাপতির সাথে দেখা করে এলাম।তবে আমি সবচেয়ে বেশি কৃতগ্গ কলিগ কবির ভাই,ইউসুফ,লাভলু,দীপন,আয়েশা ,জাকিয়া,মুন আপু প্রমুখের কাছে সবসময় পাশে থাকার জন্য।আর লিখতে ইচ্ছা করছে না।কাল আবার লিখব।
২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৮
অচেনামন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৭
আজমান আন্দালিব বলেছেন: এসব কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান। সহায়তা পাবেন ইনশাল্লাহ।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩২
অচেনামন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ভাল লাগল!
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৪
নতুন বলেছেন: খুবই খারাপ লাগলো ভাই... দেশের মানুষ দিন দিন ভদ্রতা হারাচ্ছে.. জোর যার মুল্লুক তার এই মনভাব নিয়ে চলে অনেকেই...
আশা করি ঐ লোকের সাজা হবে..