![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাতে টিউশনি থেকে ফিরে বন্ধুদের সাথে আড্ডার ফাকে সময় পেলেই ছাদে অথবা পুকুর পাড়ে গিয়ে বসি।একা একা বসে থাকি।একা থাকতে ভালো লাগে।মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে বসে থাকা অথবা মোবাইলের নোট অপশনে নিজের কথাগুলো লিখে সেভ করা,সাথে কানে হেডফোন গুজিয়ে গান শোনা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ইদানিং বলা চলে মোবাইলটা আমার নিত্ত সঙ্গি হয়ে গেছে।কোন কাজ না পেলে মোবাইলটা হাতে নিয়ে গেমস খেলে অথবা ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে কথা বলে দুই এক ঘন্টা অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যায়।
বসে ছিলাম পুকুর পাড়ে।চারপাশের অসংখ্য গাছপালার মাঝে ছোট্ট একটি সান বাধানো পুকুর আর তার পাশেই মসজিদ।
গ্রাম্য পরিবেশ,তাই সন্ধ্যার পর পরই মাগরিবের আযান শেষ হলেই চারপাশে এক স্তব্ধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।অর্থাৎ সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত পরিবেশ আর তার মাঝে বেড়ে ওঠা জীবগুলো এখন বিশ্রাম নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হেডফোনের স্পিকার থেকে আস্তে আস্তে কানে ভেসে আসছিল একটি গান
"আসমানিরে দেখতে যদি তোমরা সবাই চাও,
রহিমুদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
ঘর তো নয় পাখির বাসা বেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি।
একটুখানি হাওয়া এলে ঘর নড়বড় করে,
তারই মাঝে আসমানিরা থাকে বছর ধরে।"
জসীম উদ্দিনের লেখা গানটির 'আসমানি'রা শহরের চার দেয়ালে বাস করে না,তারা গ্রাম্য পরিবেশে খড়কুটোর ছাউনি বানিয়ে বসবাস করে।জীবন সংগ্রামে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সন্ধ্যার পরে ভালোবাসার মানুষটির মুখে দু'মুঠ অন্ন তুলে দেয়ার মাঝেই তাদের সমস্ত সুখ।ঝড়,বৃষ্টি, তুফানে তাদের ঘড় ভেঙে গেলেও আবার তারা ঘর বাধে,নিজের মত স্বপ্ন সাজায়, ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে ছোট্ট জায়গায় খড়কুটো দিয়ে বাবুই পাখির মত বাসা বাধে।
দিন আসে দিন যায়,সূর্য ওঠে সূর্য ডোবে,সময়ের সাথে সাথে চারপাশের পরিবেশও পরিবর্তন হয় কিন্তু 'আসমানি'দের ভাগ্য কখনো পরিবর্তন হয় না।তারা যেন প্রকৃতির অভিশাপ হয়ে প্রতিটি দিন পাড় করে।
©somewhere in net ltd.