![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা সময় ছিল যখন সোনার বাংলায় কেউ মরলেই সংবাদপত্রের কল্যাণে "মেধাবী ছাত্র" টাইটেল পেয়ে যেত। রোজ সকালেই সংবাদপত্রে দু চারটা মেধাবী ছাত্র মরার খবর নিশ্চিত ছিল। ব্যাপার দেখে মনে হতো সোনার বাংলায় মেধাবী ব্যাতিত অন্য কোন প্রকার ছাত্রই পয়দা হয়না। রাম, শ্যাম, যদু কিংবা মধু মরলেই মেধাবী ছাত্র। হোক সে তৃতীয় বারের মত অষ্টম শ্রেণীতে থাকা রোল নং ৩২। মরসে তো, নাকি ? তাইলে অবশ্যই মেধাবী ছাত্র। ওই একই সময়ে আরও একটা ট্রেনড ছিল। পুলিশ (অনেকে ফুলিশ ও বলে থাকেন) মামারা কাউকে ধরতে পারলেই "দুর্ধর্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসী" টাইটেল একেবারে নিশ্চিত। হোক সে পকেটমার অথবা সিঁধেল চোর, ছাড়া পাবার আগে তার পেশাগত প্রোমোশন "টপ টেরর" পদে নিশ্চিত। ধরসে তো, নাকি? তাইলে অবশ্যই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে গেছে। বাংলা এখন ডিজিটাল। ডিজিটাল বাংলায় ডিজিটাল ট্রেনড। এখন কেউ মরলেই হয় সে "মুক্তমনা" আর না হয় "বিজ্ঞানমনস্ক লেখক"। সঠিক স্থানে ভালোভাবে তেল দিতে পারলে দুইটাই। এবং একই সাথে পুলিশ মামারা কাউকে ধরলেই এখন "মৌলবাদী"। যদিও এই সকল "বিজ্ঞানমনস্ক" লেখকদের প্রোফাইল, ব্লগ বা কোনকিছুতেই একটাও বিজ্ঞান বিষয়ক মৌলিক লেখা পাওয়া যায় না, যা পাওয়া যায় তার সবই বিদেশী আর্টিকেল এর কপি পেস্ট। কিন্তু মরসে তো, নাকি? তাইলে অবশ্যই মুক্তমনা বিজ্ঞানমনস্ক। না মরলেও সমস্যা নাই, একটা কোপ খাইতে পারলেই চলবে। হাজার হোক ডিজিটাল বাংলা বলে কথা। একই কথা বলা যায় মৌলবাদ এর ক্ষেত্রেও। যদিও টুপি মাথায় কোন মৌলবাদী সুধীর ভায়ার "পিছুয়ারে সে আঙুল ঘুসায়া" বলে জানা কিংবা শোনা যায় নাই, তারপরও এই বিষয়ে "আমি আজ ঘোষণা দিয়ে ধর্ম ত্যাগ করলাম" অথবা "সাম্প্রদায়িকতা মুক্তি পাক, আসুন আমরা মানুষ না হয়ে মুসলিম হই" মার্কা জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস সেলিব্রেটির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাড়বেই তো, দেশ ডিজিটাল হইসে না?? তাইলে ??...দেশ এগিয়ে যাবেই।
মায়ানমার এর বৌদ্ধরা মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক না, ওনারা সরল সোজা ভেজিটেরিয়ান এক জাতি যাদের ধর্মের মুল কথা জীব হত্যা মহাপাপ। বিহার আর গুজরাট এর হিন্দুরাও কেউ মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক না, ওনারা মঙ্গল প্রদীপ এর সুযোগ্য সন্তান এবং এ কারণেই একটু আগুন লাগিয়ে বেড়ান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জার্মান খ্রিষ্টানরাও কিন্তু মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক ছিলেন না, তারা শুধুমাত্র জাতিগত বিশুদ্ধিকরণ এর মহৎ ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন। এমনকি শান্তিবাহিনীর স্রষ্টা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরাও নিতান্তই অসাম্প্রদায়িক একটা জাতি, তাদের একমাত্র চাহিদা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশের ভূখণ্ডের একটা অংশ তাদেরকে বিনা রক্তপাতে হস্তান্তর করে দেয়া হোক। বেশি কিছু কিন্তু তারা চায় নাই। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক হইল খালি মুসলমানেরা। তাদের পায়ুপথ নির্গত বায়ুতেও সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পাওয়া যায়। মুসলমান তো, নাকি? তাইলেই স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শক্তি। কারণ, দেশ কে এগিয়ে নিতেই হবে... দেশ এগিয়ে যাবেই... এটাও যে একটা সপ্ন... মানলে মানেন, নাইলেও তাল গাছ আমারই।
©somewhere in net ltd.