স্বাদহীন আঁতাত।। চাষা হাবিব

২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০৬

স্বাদহীন আঁতাত।। চাষা হাবিব

ধরো, তোমাকে মৃতদের শহরে কোন এক রাখাল ছেলে কাছে এসে সজোরে এক চড় মেরে বলে, তুমি তো মরোনি–জীবিত, তবে কেন তুমি মৃতদেহে। তুমি তো মানোনি তোমার জন্মসূত্র। তুমি তো ভিটের দামে ভাটফুল আর কলঙ্ক বেচে দিয়েছো না ভেবেই জীবিতদের হাটখোলায়, তাহলে কেন আহবান করো কোরাসে শ্লোগান তুলে মৃতদের শহরে। এ শহরে আজ আর জ্বলে না আলো, জমে না আর মোল্লা ভান্তে কিংবা পুরোহিতের কাহার। এখানে মাংস বড়বেশি দামী, এখানে আজ মুলোর দামে কেনা হয় আওয়াজ, শরীরের দামে এখানে বেচা হয় আলু পটল আরও কত কি। যদিও এ শহর মৃত আর জীবিত সবের কাফন নাকি বেচে খায় দারোয়ান। ঘুটে অন্ধকার এখানে জমাট বেঁধে আলোরা ছুটে বেড়ায় দিকবিদিক গলা ধরে অন্ধ পোড়া হাওয়ায়। আফসোস এ শহরে সব ফসল খেয়ে ফেরে চড়ুই যেন ফেরারি দিগন্তে জমে মেদ আর তুমি চকচকে রোদ মেখে শিশিরে ভিজে একবাক্যে খোঁজো বনেদি বিকেল।

বাতাস মাটি আর গন্ধ
এখানে বড় আপন
বালিতে জমা হয় নুন পানি স্রোত

এখানে গায়ের গন্ধে ধুপকাঠি রোদ্দুর চিরে দেয় সবুজ টুপির ঝুপিঘর, এখানেই নহর আলোর পর অন্ধকার পঁচা শামুকে বালিশ কাধে ঘুমায় দিনভর। মৃতদেহে বংশবৃদ্ধিতে জেগে ওঠে এখানে শিশ্মচর সভ্যতা। যেখানে তরতর করে বেড়ে চলে গভীর জল, সে জলে বুনো দীর্ঘশ্বাস লতানো বসন্ত নিয়ে যায় দূরের খোলা নর্দমায়। এখানে নেই কোন বুক পেট আর হৃদয় গড়, নেই কোন আরোধ্য চিন্তামন, আছে শুধু মৃত দেহে অশরীরী দেশপ্রেম যেনো ফেলে আসা কাহার–দাঁদরা তাল ছন্দ বা ছন্দহীন। তাই তো তোমার এ শহরে থাপ্পড়ে দাঁত পড়ে, যেখানে গন্ধ ভরা হয় চৌদ্দ শিকে আর এখানে আমিষ খাওয়া বড়ই দায়,এখানে পাওনা ঋণ শোধ হয় রক্ত মুছে, খেলাপি ন্যাপকিন ছিড়ে।

যাও ফিরে–যাও তুমি মৃতের শহরে গায়ে আতর চাদরে, কেননা এখানে মাংসের দাম বড় যে বেশি আর স্বাদহীন মৃত আঁতাত যুগলবন্দী চিরদিন।

০ টি +০/-০